Categories
কবিতা

গোয়ার মরজিম বিচ – প্রকৃতি, পাখি ও সমুদ্রের শান্তির রাজ্য।।

গোয়া মানেই সাধারণত পার্টি, সঙ্গীত আর ভিড়ভাট্টার সমুদ্রসৈকত। কিন্তু যারা ভিড়ের কোলাহল থেকে দূরে গিয়ে প্রকৃতির শান্ত সান্নিধ্যে কিছুটা সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য মরজিম বিচ এক স্বর্গীয় স্থান। উত্তর গোয়ার এই সমুদ্রতট পরিচিত তার শান্ত পরিবেশ, সাদা বালি, নারকেলগাছের সারি এবং অনন্য জীববৈচিত্র্যের জন্য।


📍 অবস্থান ও পরিচিতি

মরজিম বিচ গোয়ার আশেপাশের আরামবোল ও আশভেম বিচের কাছাকাছি, উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত। এটি বিদেশি পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়, বিশেষত রাশিয়ান পর্যটকদের জন্য এটি “লিটল রাশিয়া” নামে খ্যাত।


🐢 অলিভ রিডলি কচ্ছপের আবাসস্থল

মরজিম বিচের অন্যতম আকর্ষণ হলো অলিভ রিডলি কচ্ছপ (Olive Ridley Turtles)। প্রতি বছর শীতকালে এই সমুদ্রসৈকতে কচ্ছপেরা এসে ডিম পাড়ে। স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ সংরক্ষণ সংগঠনগুলির প্রচেষ্টায় এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষিত রাখা হয়।
পর্যটকরা সুযোগ পেলে এই বিস্ময়কর দৃশ্য প্রত্যক্ষ করতে পারেন, তবে কচ্ছপের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য নিয়ম মানা অত্যন্ত জরুরি।


🦜 পাখিদের স্বর্গ

মরজিম শুধু কচ্ছপ নয়, এটি বিরল প্রজাতির পাখিদেরও আবাসস্থল। বিশেষত শীতকালে এখানে বিভিন্ন অভিবাসী পাখি যেমন – কিংফিশার, প্লোভার, স্যান্ডপাইপার প্রভৃতি দেখা যায়। তাই প্রকৃতিপ্রেমী ও পাখি পর্যবেক্ষকদের জন্য মরজিম এক অনন্য গন্তব্য।


🌅 সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য

  • সাদা বালির বিস্তীর্ণ তটরেখা – হাঁটার জন্য আদর্শ।
  • নারকেল ও পাম গাছের সারি – প্রাকৃতিক ছায়ার পরশ দেয়।
  • শান্ত ঢেউ – অন্য বিচের তুলনায় এখানে ঢেউ তুলনামূলকভাবে শান্ত, ফলে স্নান বা হাঁটার জন্য নিরাপদ।
  • অপূর্ব সূর্যাস্ত – সন্ধ্যাবেলায় সোনালি আভায় ভরে ওঠে পুরো সৈকত।

🚤 করণীয় কার্যকলাপ

মরজিম বিচে পর্যটকরা নানা ধরনের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন –

  • বিচে যোগ ও মেডিটেশন – শান্ত পরিবেশ মানসিক প্রশান্তির জন্য উপযুক্ত।
  • ওয়াটার স্পোর্টস – যদিও খুব বেশি ভিড় নেই, তবুও জেট স্কি, বোট রাইড ইত্যাদি কিছু ব্যবস্থা আছে।
  • বিচ ওয়াক – সমুদ্রের ধারে দীর্ঘ হাঁটা, বিশেষত সূর্যাস্তের সময় অনবদ্য।
  • স্থানীয় বাজার – আশেপাশে ছোট বাজারে হস্তশিল্প ও রাশিয়ান প্রভাবিত সামগ্রী পাওয়া যায়।

🍴 খাবার ও রেস্তোরাঁ

মরজিম বিচে প্রচুর বিচ শ্যাক ও ক্যাফে রয়েছে। এখানে –

  • তাজা সী-ফুড (চিংড়ি, কাঁকড়া, মাছ)
  • গোয়ান খাবার যেমন ফিশ কারি রাইস
  • আন্তর্জাতিক রন্ধনপ্রণালী, বিশেষ করে রাশিয়ান খাবার সহজলভ্য।

সৈকতের ধারে বসে সাগরের ঢেউয়ের শব্দ শুনতে শুনতে খাবার খাওয়ার অভিজ্ঞতা একেবারে অন্যরকম।


🏖️ ভ্রমণ টিপস

  • সেরা সময়: নভেম্বর থেকে মার্চ, যখন আবহাওয়া শীতল ও আরামদায়ক।
  • থাকার ব্যবস্থা: বিচের ধারে রিসোর্ট, হোটেল ও কটেজ পাওয়া যায়।
  • বিশেষ সতর্কতা: কচ্ছপের ডিম ফোটার সময় সৈকতে নির্দিষ্ট এলাকায় প্রবেশ নিষিদ্ধ, তাই নিয়ম মানা জরুরি।

🏁 উপসংহার

গোয়ার মরজিম বিচ হলো শান্তিপ্রেমী ভ্রমণকারীদের জন্য এক স্বর্গ। এখানে নেই অযথা কোলাহল, নেই অতিরিক্ত ভিড়—আছে শুধু প্রকৃতি, সমুদ্র, পাখি আর কচ্ছপের আবাস। যারা কিছুটা নিভৃত, প্রকৃতিনির্ভর ভ্রমণের খোঁজ করছেন, তাদের জন্য মরজিম বিচ এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে উঠবে।

Share This
Categories
কবিতা

তোমার চোখে প্রেমের নদী।

তোমার চোখে দেখি আমি অদ্ভুত এক নদী,
সেখানে ঢেউ উঠে শুধু আমার নাম খোদাই করে।
নীরব আকাশে হঠাৎ ঝরে তারার দল,
তোমার স্পর্শে যেন চাঁদ ডাকে রাতভর।

তোমার হাসি আমার হৃদয়ের একমাত্র গান,
যেন বসন্তের হাওয়া ছুঁয়ে যায় প্রাণ।
তোমার নীরবতা আমার কাছে অমূল্য রতন,
যেন পূর্ণিমার রাতে ভিজে থাকা বন।

তুমি আছো বলেই জীবন এত রঙিন,
তুমি ছাড়া আমি যেন অসমাপ্ত দিন।
প্রতিটি ভোরে সূর্যের আলোয় করি প্রতিজ্ঞা —
ভালোবাসব তোমায় যতদিন থাকবে প্রজ্ঞা।

Share This
Categories
কবিতা

বাস্তবতা : রাণু সরকার।।

ঘুমোলেই স্বপ্নেরা করে আমায় তাড়া,
শয্যা ত্যাগ করা মাত্রই জীবনটা হয় বাঁধনছাড়া।

চোখ মেলে দেখি বাস্তবতার সাথে করে সবাই গুঞ্জরণ,
দুঃখ-কষ্টের বাসস্থান কোথায়- কেউ কী জানেন?

দেখাই অতিশয় ব্যস্ততা তাই তাকিয়ে চলি সবার
দিকে সবাই,
কথা বলার সময়ের ভীষণ যে অভাব,
নিজের পথে চলাটা পছন্দ এটাই হলো আমাদের
স্বভাব।

হৃদয় হলো দুঃখের সাগর-ঝরে অশ্রুবর্ষণ রূপে
আসে যায় না কারোর কিছুই বন্দী তো সবাই অন্ধকূপে।

সাফল্যতায় আমাদের চোখ গেছে ধাঁধিয়ে
ভালো চিন্তা করতে গেলে ইন্দ্রিয় গুলো যায় হারিয়ে।

কারাগারে চেতনা রেখে চলছে সবাই গা ভাসিয়ে,
দেখায় কেমন দেখো যেন চিন্তায় বিভোর-
করতে কি পারলে কিছু তোমার সব চিন্তা দিয়ে?

সহ্য করা যাচ্ছে নারে আর ভাই-অভিনয়ের
স্বপ্ন মেলা
অনেক তো হলো এবার থামাও-হাস্যকর সব
অভিনয়ের খেলা খেলা–

দেখতে চাই-সবাই যেন থাকে দুধে ভাতে-
দেখো দেখো-চলেযাচ্ছে কেমন পাশ কাটিয়ে
হোক না সবার কার্যসিদ্ধি তবে নিজের
ভালো নয় ভেস্তে দিয়ে-
সকলের জীবন সকলের মত ভাই-আমার জীবন থাক আমার হয়ে।

দেখোনা ভাই আর চলার ফাঁকে
কি তুমি পেলে-কত টুকু দিলে কাকে?

জীবনের চলার পথে পেলাম তো অনেক
কিছু
হারিয়েছে অনেক-তবু ছুটি কেনো মৃগতৃষ্ণার পিছু?

শেষ জীবনে ভালোবেসে দেখবে চোখে ঠুলি আঁটা
করার কিছু থাকবেনা আর ভাই অর্থহীন সব শূন্যতাটা।

Share This
Categories
কবিতা

ব্যস্ত ছিলাম : রাণু সরকার।

অনেক দিন ওপাড়ে আঁধারে ছিলাম নিমজ্জিত,
কতদিন আর থাকা যায়-
তাই সময় বললো এপাড়ে আসতে,অনেক কাজ নাকি বাকি আছে- একরকম জোর করেই পাঠালো-
এলাম এক গোধূলিলগ্নে,
স্রোতের প্রবল বেগে ফেললো এপাড়ে।

কপালে কি যে লিখেছিলো বোঝার উপায় নেই,
চোখ দুটি তো কপালের নিচে কিকরে বুঝবো?
একে তো প্রচ্ছদে ঢাকা আবার সদ্যোজাত, কিকরে
বুঝবো কপালে কী আছে তখন কিছুই বুঝিনি।
তরর্জনীর ছাপ ছিলো বুঝলাম মন্থর গতিতে এতো বছর পর, আমাকে শাসানো হচ্ছে।
তোমার যতোটুকু কাজ ততটুকু করে তাড়াতাড়ি
ফিরে আসবে মায়া- মমতার সাথে বেশি বন্ধুত্ব করবে না, আসতে কষ্ট পাবে।

আমি বললাম এইতো এলাম রাতকে পিছে ফেলে
এখনো চোখেমুখে ক্লান্তির ঘোর কাটেনি এখনি
ফিরবো? তরর্জনীর সংকেত দিয়েই তো পাঠালাম
তুমি রাজি হলে, বললে ডাক দিলেই এক ছুটে চলে আসবে- ঠিক আছে ডাক এলেই চলে যাবো।
যাইহোক এ-পাড়ের রূপ দর্শন করে করে চোখে
এলো জল- কর্মে নিযুক্ত হোলাম, চোখ মুছে মুছে
চলছে দায়িত্ব পালন।

ভাবছি ওপাড়ে ভালোই ছিলাম- কেনো পাঠালো বা কেনো আসলাম? যত করি দর্শন তত হয় রাগ- পারি না সমুচিত জবাব দিতে করতে পারিনা বিরুদ্ধাচরণ, এভাবেই কেটে গেলো কতগুলো বছর।
হঠাৎ একদিন এলো ডাক ভাষাহীন এক সন্ধ্যায় তখন ক্লান্তিহীন পাকা কেশ, প্রণত শরীর চললাম গমনের গন্তব্যস্থলে।

অন্ত্যেষ্টি উৎসবের দিন তখন প্রশান্তচিত্তে করলো সবাই দায়িত্ব পালন, থাকতে পরিনি আমি তখন ছিলাম ও পাড়ের কাজে খুবই ব্যস্ত।

Share This
Categories
কবিতা প্রবন্ধ

অতীন্দ্রনাথ বসু : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকারী বাঙালি বিপ্লবী – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

ভূমিকা:—

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এমন ই এক বাঙালি বিপ্লবী ছিলেন অতীন্দ্রনাথ বসু।

পরিবার—

অতীন্দ্রনাথ বসু ১৮৭৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতার জোড়াবাগানের বসু পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন।

তার পিতার নাম অপূর্বকৃষ্ণ বসু।অতীন্দ্রনাথের পুত্র উত্তর কলকাতার নেতৃস্থানীয় অমর বসু পিতার সকল কাজে যুক্ত ছিলেন।

কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন—

অতীন্দ্রনাথ নিজে একজন কুস্তিগীর ছিলেন। ময়মনসিংহের রাজা জগৎকিশোর আচার্য চৌধুরী ছিলেন তার শিক্ষাগুরু। সিমলা ব্যায়াম সমিতির প্রাঙ্গনে ভারতীয় প্রথায় কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন তিনিই প্রথম করেছিলেন।

স্বদেশী মেলার আয়োজন—

অতীন্দ্রনাথ বসু যুবকদের দেহে ও মনে শক্তিমান করে তোলার উদ্দেশ্যে সিমলা ব্যায়াম সমিতি।

বিপ্লবী কর্মকান্ড—।
যুগান্তর বিপ্লবী দলের অন্যতম নেতৃস্থানীয় ছিলেন অতীন্দ্রনাথ বসু । তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে কয়েকবার কারাবরণ করেছিলেন, পাশাপাশি তাঁকে ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পরবর্তী পাঁচবছর ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী কেন্দ্র পরিচালনার অপরাধে নির্বাসনদণ্ড ভোগ করতে হয়।১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ সরকার সিমলা ব্যায়াম সমিতিকে শরীরচর্চার আড়ালে বিপ্লবী তৈরির আখড়া সন্দেহ করে এটিকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, ডাঃ জে. এম. দাশগুপ্ত প্রভৃতি নেতৃবর্গ সিমলা ব্যায়াম সমিতির কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

বিদ্যালয় স্থাপন—

তিনি রবীন্দ্রনাথের পরামর্শে ‘মহেশালয়’ নামের একটি বিদ্যালয় স্থাপনা করেছিলেন। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘ভারত ভান্ডার’ নামের একটি সংস্থা তৈরি করেন।
অতীন্দ্রনাথ যুবকদের দেহে ও মনে শক্তিমান করে তোলার উদ্দেশ্যে ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ২রা এপ্রিল সিমলা ব্যায়াম সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন।

দুর্গা পূজা ও স্বদেশী মেলার আয়োজন—

১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সার্বজনীন দুর্গা পূজার প্রচলন করেন যাতে দেশের মানুষ বিভেদ ভুলে একত্রে উৎসবে মেতে উঠতে পারে। এই পূজা প্রাঙ্গনে স্বদেশী মেলারও আয়োজন হত। অতীন্দ্রনাথ যুবকদের দেহে ও মনে শক্তিমান করে তোলার উদ্দেশ্যে ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ২রা এপ্রিল সিমলা ব্যায়াম সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন।

মৃত্যু—

মহান এই বিপ্লবী ১৯৬৫ সালের ১০ জুন মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু আজও তিনি স্মরনীয় হয়ে রয়েছেন তাঁর কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
কবিতা

শূন‍্যতা : শীলা পাল।

খুঁজে পাচ্ছি না আমার অনেক কিছু
আমার আদুরে সকাল ,যখন চোখ বুজে
মনে হত আরেকটু শুয়ে থাকি
খুঁজে পাচ্ছি না সেই ভালোলাগার মুহূর্তগুলো ।

ছোট ছোট অনেক ভালো লাগা কেমন করে
হারিয়ে গেছে বুঝতে পারি নি ,প্রথম ভোরের
শিশিরে কতদিন যে পা ফেলি নি
ইচ্ছে গুলো কেমন করে যেন হারিয়ে যায় !

ভাবি সবকিছু র একটা সময় থাকে
তা পেরিয়ে গেলেই সব মলিন হয়ে যায়।

Share This
Categories
কবিতা

আমার মেঘলা দিন : শীলা পাল।

এতো মেঘ জমেছিল মনে ,জমেছিল বনে,
জমেছিল নতুন পাতায় ।
তুমি এলে বৈশাখী হাওয়ায় ভেসে ,এলে আনমনে
শিতলপাটি বিছিয়ে ডাকলে
একটু এসে বোস আমার পাশে।
কবরী খুলে এলোচুলে দুয়ারে খানিক দাঁড়ালে
দীঘল আঁখি মেলে প্রাণের সব সুখ টুকু ঢেলে
ভেসে গেলে পূবের হাওয়ায় ।
আজও বসে আছি অপেক্ষায়
সেই হাসিটি হৃদয়ে মাখবো বলে।

Share This
Categories
কবিতা

রূপজীবী :: রাণু সরকার।।

ওগো বধূ, তোমাকে দেবার মতো আছে তো কিছু কৃত্রিম গহনা–
আমি ধনহীন, তা তো তুমি জানোই-
যা আছে তাই নিয়ে কেনো খুশি থাকোনা;
তোমার কণ্ঠে এখন আর সেই সুমধুর ধ্বনি নেই- তুমি খুশি নও, তাই না?

আমার ঘরে পাবেনা সুখ, এই জীবনে
তোমায় ভীষণ ভালোবাসি, পড়ে নাকি মনে?
তুমি গৃহবধূ, কেনো তুমি যাও- আমার বন্ধুরে বাঁধতে, ঘুরে ঘুরে বেড়াও এ বনে ও বনে।

সোহাগের ভেলায় ভাসছ,
অন্তরে যে ব্যথা আছে- সেকি ভুলতে পেরেছ?
নিজের যাকিছু আছে তাই নিয়ে থাকো,
কি লাভ করে এনেছ?

কত সুন্দর ছিলো আমাদের সংসার,
অবহেলায় কেনো করছো পরিহার,
পরে কী হবে- ভেবেছো কি একবার?

তুমি হলে রূপজীবী, আমার সঙ্গে করলে ছলনা-
আমার কি ভুল ছিলো? ধনহীন তাই না?
যতই ভেলায় ভাসো, সফল তুমি হবে না!
দ্বিতীয়জন কখনো ভালো হয় না-
মধু খেয়ে পাপড়ি করে ছিন্নবিচ্ছিন্ন- এখন তুমি অচেতন, তাই বোঝালেও বুঝবে না!

মন উড়তে উদ্যত, শাসনে পারবে না আনতে, কেমনে থাকবে সংসারে?
পর্যুষিত ফুলে গৃহ দেবতার পূজা হবে কিকরে?
তুই বারনারী তোকে দিয়ে নিত্য পূজা হবে নারে-
বদগন্ধ ফুল জল নির্গমনের পথে অবিন্যস্ত হয় রে।

Share This
Categories
কবিতা

কৃষ্ণপক্ষের শেষ তিথি : রাণু সরকার।

কৃষ্ণপক্ষের শেষ তিথি, নিবিড় আঁধারে কে গো তুমি এলে অগোচরে,
খেজুরগাছের সারি তার আড়াল দিয়া দুইগুণ আঁধারে,
মিহি কেশ গলায় পলাশের মালা পরি,
মৃদু বেনার মদিরাক্ষি গন্ধে, গভীর রাতে নিখিল বিশ্ব গেলো ভরি,

কাজলে আঁকা উজ্জ্বল বাঁকা চাহনি, নিক্ষেপ করে তড়িৎ- মুখচন্দ্রিকা মধুর হাসি,
নীলাভ বস্ত্র পরিয়া শিয়রে দাঁড়ালো আসি!
বীণার ধ্বনির চেয়েও মধুর কন্ঠস্বর-হে অনুরাগী,
অবিদ্যমান শয্যা শয়নে জাগ্রত আজ্ঞা করে কিসের লাগি?

দয়া হলো বুঝি তার- অন্তরে ছুড়েদিলো সুখের কিছু ব্যথা,
জুড়ি’ জোটালো বীণাপাণী আবেগ বাণী কন্ঠে বললো কথা,
চঞ্চল বসন্তবাস অন্তরে পুষ্প ফুটে,
তার পায়ের নুপুরের ধ্বনি হৃদয়ে বেজে ওঠে,

তার ছন্দে গন্ধে রচনা হলো গজল-গীতি
তার উপবনের দ্বারে প্রচার হলো প্রতিনিয়ত নিতি;
চাই না নাম যশ এতে কোন কাজ নেই, চাই না ধনমান,
তুমি কি পারো না গো তোমার মত করে শেখাতে স্তোত্র উচ্চারণ।

কোন কথা না বলে প্রমোদ কাননে দিলে বিরাগ ভরে
বীণাটি টেনে নিয়ে ধরলো কোমল বুকের পরে;
আঙুল স্পর্শ করে তারে মধুরকন্ঠসংগীতে দিলো ভরিয়া
থাকলে না আমার হৃদয়ে- কেনো যে গেলে ফিরিয়া!
পলাশ কুঁড়ি ভেবে ছিলো কি একবার ফুটতে হবে কিনা,
বৃষ্টিপ্রেমী পাখি পাখায় ঠোঁট গুঁজে, উন্মেষ চেতনা;

কৃষ্ণপক্ষের শেষ তিথিতে- নিবিড় আঁধারে গেলো মিলাইয়া–
দুইগুণ আঁধার খেজুর গাছের সারি নীহার মাথায় লয়ে চললো তার আড়াল দিয়া!
তার চলার পথে সংগীতের রাগ উঠলো বাজি
মহৎ প্রাণ কোমল পরশ রূপের দীপ্তি হারিয়ে গেলো বুঝি;
অল্প সময়ের ব্যবধানে কাঁপে অন্তর- শুধুই আকুলতা,
ঘুরে ঘুরে ফিরি সর্বদা এথা হোথা খুঁজি, তাহারে পাই কোথা!

Share This
Categories
কবিতা

জন্মদাত্রী : রাণু সরকার।

বাবুর বাড়ি বাসন ধোয়ার কাজ করে যে সে আমার জন্মদাত্রী মা–
অতীত বর্তমান ভুলতে পারি না।
দারিদ্রের কোনো পছন্দ আছে নাকি, খাই তো কাঁকর মেশানো খুদ,
দীর্ঘ উপবাসে ছিলো এক গাই, শীর্ণদেহ শুকিয়ে গেছে দুধ–
তারপরও
কিছুদিন বেঁচে ছিলো প্রাণে, চলে না আর জীর্ণদেহ,
ভাঙাচোরা মাটির দেয়াল, বাঁচবো কদিন তবুও হিসাব করি গেল,
কথাবলা, হাঁটা সবই তার কোলে, তার বুকে ছড়িয়েছি দু’পা,
বাবুর বাড়ির পান্তা এনে খাওয়ায়, কিকরে ভুলি তা?

সে আমার মা, স্বয়ং ভগবান,
কিকরে ঘুচাই, দুঃখ-কষ্টে ভরা ছিলো মায়ের মন।
গুমরে উঠতো হৃদয় কষ্ট-যন্ত্রণার বিষে,
এতো গুণবতী মায়ের কথা ভুলি কিসে।
প্রাণপণ প্রবল কর্মে নিষ্ঠা, কিন্তু অন্তরে ছিলো একটু ভয়,
কোথায় গেলো কষ্টেরা, শক্তিসাধন করেছিলো মৃত্যুঞ্জয়।

প্রচণ্ড মানসিক শক্তি ছিলো- এইরকম মা সবসময় চাই,
মায়ের কথা কিকরে ভুলি- এখনো মনে পড়ে ভুলি নাই।
মায়ের জঠরে জন্মে করি মায়ের নাম গান,
এই মাকে কেউ কি করে অপমান?
বাবুদের বাড়ি কাজ করেছে বলে কিকরে ভুলি মায়ের বাণী?
অব্যক্ত অন্তরের কষ্ট গুলো নিয়েই চলে গেলেন রাণী।

Share This