Categories
কবিতা

জানা নেই গন্তব্যস্থল : রাণু সরকার।

শরতের আকাশ দেখতে ভীষণ ভালো লাগে,
প্রতি শরতেই আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি
দল বেঁধে কারা যেন চলছে খড়ের আঁটি মাথায় নিয়ে।
অস্পষ্ট দৃষ্টিতে দেখি, অতোদূরে।
কষ্ট করে দৃষ্টিনিক্ষেপ করি,

ওদের গন্তব্যস্থল জানা নেই, চলছে তো চলছেই
দলের মধ্যে বৃদ্ধ বেশি,
কিশোর কম।
আবার কখন দেখি,
তুলোর পুঞ্জ মথায় নিয়ে ধীরগতিতে চলছে বৃদ্ধদের দল-
কিশোররা চলছে ক্ষিপ্রবেগে।

বৃদ্ধদের মুখ গম্ভীর দেখে মনে হচ্ছে অব্যক্ত
কত ভাষা অন্তরালে,
আমি ডেকেছিলাম-
একটু থমকে দাঁড়াল
কীজানি কী মনে হলো, আবার মন্থর গতিতে
চলতে লাগলো।

ওরা যাচ্ছে কোথায়?
আমায় ভাবনারা কুঁড়ে কুঁড়ে খায়!

Share This
Categories
কবিতা

এলে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে : রাণু সরকার।

চলে তো গিয়েছিলে,
আবার কেনো এলে-
কুড়ি বছর পর?
কষ্ট গুলোকে সংগ্রহ করতে গিয়ে আরো কষ্ট জন্ম নিলো।

দেখছোনা ওরা জ্বলছে–
দিলেতো সব ভণ্ডুল করে,

নমিত শরীর বারবার ওঠাবসা করতে পারি না যে–
কিছু কষ্ট কোথায় যে লুকিয়ে পড়লো কী জানি–
কিছুক্ষণ আগেও ওরা ছিলো।
ওদেরও ভয় আছে জ্বলার, যে কী জ্বালা একমাত্র আমিই জানি।
ভাবছিলাম বসে,
ওরা কোথায় থাকতে পারে।

তুমি এলে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে-
হয়তো তোমার ভয়ে তারা লুকিয়ে পড়েছে।
একটুও পালটাওনি তুমি, আগের মতই আছো।
এই বয়সে এসেও গর্হিত বস্ত্র পরিধান করেছো
যাগ্গে-আমার বলাটাই অপ্রয়োজনীয়,

কষ্ট গুলো ভালোই জ্বলছিলো-
প্রথমে তো আসতেই চাইছিলো না,
জোরপূর্বক জ্বালাতে হলো,
কেনো না এদের সান্নিধ্যে আর থাকতে
পারছি না।

কেনো এলে তুমি?

আমি তো অট্টালিকা ও মূল্যবান যাকিছু ছিলো সব তো দিয়ে এসেছি।
সাথে করে কিছুতো আনিনি,
তবে কেনো এলে আমার জীর্ণ কুটিরে?
এসেই আমার কষ্টের আগুনে দিলে জল ঢেলে।
এই ধোঁয়ায় কষ্ট গুলো ছটফট করছে-
একবারে পুড়ে গেলে এতো কষ্ট হতো না।

এ- তুমি কী করলে অর্ধমৃত করে রেখেদিলে !

Share This
Categories
কবিতা

তোমার কাছে চাওয়া : রাণু সরকার।

পিপাসিত হয়ে যখন আসবো-
বাদল হয়ে তুমি এসো–
আমায় ভিঁজিয়ে দিও,হবো পরিতৃপ্ত!

মন যখন প্রদীপ্ত
দূরদৃষ্ট–অন্তরঙ্গ করে প্রতিচ্ছায়া দিও
দু’হাত বিস্তার করে—
উফ্! কী তুষারপাত শান্তি!

মন যখন বিষাদযুক্ত হবে–
গভীর সোহাগে কঠিন করে
রেখো বেঁধে,
বিষাদ ভাবনাগুলো যেন যায় চলে–
সবটা জুড়ে থাকবে তুমি- শুধুই তুমি!

Share This
Categories
কবিতা

একটি রাত : রাণু সরকার।

আমি ঋণগ্রস্ত,
কে দেবে দেনার দায় থেকে রেহাই?
বিলম্ব হবে না পরিশোধ করতে!
পাওনাদার প্রতিদিন দৈহিক নির্যাতন করছে-

একটি রাতের জন্য চাই,
দেবে কী?
ঋণের পরিমাণের উপর যে মূল্য-
তার বেশি আমি দেবো!

নেবো শুধু তোমার হাতে-
ঋণের দায় থেকে তবেই পাবো
নিষ্কৃতি!
শুধু একটি রাতের জন্য!

আমার একটু চাওয়া আছে-
যেভাবে অসত্য বলো-
সব শিখবো এক রাতে,
উড়ে বেড়াতে পটু-
প্রচরণশীল বিহগের মতো-
কখন অমতে ঐকাত্ম্য হতে চাওয়া!

Share This
Categories
কবিতা

হইনি আশাহত : রাণু সরকার।

দুঃখ, তুমি কত সুন্দর
হৃদয়টাকে ভেঙে কত না করছো খণ্ড বিখণ্ড,
তবুও হইনি আশাহত, নিজেই ভাঙা হৃদয়টাকে দিয়েছি জোড়াতালি।

তুমি আমার জীবনে আসাতে হয়েছি লাভবান,
তোমার থেকে পেয়েছি অনেক শিক্ষা।
মনে রাখার জন্য কিছু রেখেছি আলগাভাবে।
এই ক্ষতচিহ্ন গুলো আমায় উৎসাহ দেয়
দ্রুতগতিতে চলতে আমার গন্তব্যপানে।

দুঃখ, সত্যিই তুমি সুন্দর, তুমি তো নাও আসতে পারতে আমার জীবনে, ভাগ্যিস তুমি পাশে ছিলে
তাই তো সব কিছুর মানে আমার কাছে আজ হয়েছে সহজবোধ্য।

Share This
Categories
কবিতা

সে : রাণু সরকার।

সে খুব ভালো, সত্যিই ভালো,
—আমার বলা ভুল হবে।

কোন একদিন ছিল মেঘের ঘনঘটা-
ঠিক সন্ধ্যায় সে আমাকে স্পর্শ করে।
কিন্তু আমার একটুও ভালো লাগেনি,
ভালো কিছু করলে হৃদয়ে থাকতো।

সে আমার উদ্দেশ্যে গানের দু’কলি গেয়েছিলো,
কিন্তু আমার কাছে এসে তো গায়নি-
সেই সুর আমার কানে আজো বাজে, যন্ত্রণা দেয়।

Share This
Categories
কবিতা

মনের দহন : রাণু সরকার।

আমার মনের বনে লাগালে আগুন,
একবার দেখনি তোমার মরমি চোখে?
হৃদয়টা পুড়ে হলো ভষ্যিভূত সে ব্যথা কি পারবো জানাতে লোককে।
যে প্রহার দ্বারা দণ্ডদান দিয়ে ছিলে
গাঢ় ছিলো তার ক্ষত,
কোনদিন লাগবেনা জোড়া, জ্বলন ধরবে অনবরত।।

Share This
Categories
কবিতা

স্বপ্নে পাওয়া প্রেম : রাণু সরকার।

তুমি আমার স্বপ্নে থেকে ছিলে
চিরদিনের জন্য না বলে গেলে হারিয়ে,
তোমার এভাবে হারিয়ে যাওয়াটা আর পারছিনা নিতে মানিয়ে।

পেয়েছিলাম স্বপ্নে মুক্তো,হারিয়ে গেলো, পারলাম না বাস্তবে করতে সৃষ্টি,
গোপনে সবে শুরু করেছিলাম রাখা
যদি কারো পড়ে কুদৃষ্টি।

ভুলতে পারছি না
ক্ষণে ক্ষণে চোখে ভাসে তোমার মুখখান,
হৃদয় আমার মায়াময় তাই তো বিঁধলো পুষ্পবাণ।

স্বপ্নে তোমায় চুম্বন করি,মনে হয় পান করি মদিরা,
হয়ে যাই অবশ,
তোমার ঠোঁটে কি আছে গো,
পাগল হোলাম নেশা লাগা ঠোঁটের পরশ।

স্বপ্নেও ভাবিনি ক্ষণিকের জন্য এসে তুমি কাঁদিয়ে যাবে চলে,
আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেলো সকাল সন্ধ্যা সব উৎসবের আলো,
তুমি তো জানতে চলে যাবার সময় নিকটে
তবে কেনো এসেছিলে।।

Share This
Categories
কবিতা

পুরুষ কথা : রাণু সরকার।

পুরুষদের কি কাঁদতে নেই?
হ্যাঁ, আছে তো।
পুরুষদেরও কষ্ট আছে অনেক–

অব্যক্ত কষ্ট সাথে করে চলতে হয় সবসময়-
লোহার বর্মে তো পুরুষ আচ্ছাদিত নয় যে কাঁদবে না-
হ্যাঁ, পুরুষরাও কাঁদে।

তবে পুরুষের কাঁদা দিনের আলোর আড়ালে থাকে, অনেক কষ্টের বাসনা-
কষ্টের নানান প্রকাশভঙ্গি।

বৃষ্টি ভেজা দিনে অনেক পুরুষ কাঁদে
যাতে অশ্রুধারা মিশে যায় বৃষ্টিধারায় অন্যের অসাক্ষাতে।

রুটি-রুজির কথা ভাবতে ভাবতে ভাবতে কাঁদা তাদের ফুরিয়ে যায়-
রুজিরোজগার ভাবনা দেয় না তাদের কাঁদতে।

ভোরের আলো ফোটার আগেই শুরু হয় তাদের অভিযান রুজির সন্ধান।
রাতের অন্ধকারে তাদের ঘরে ফেরা
শুধু পরের দিনের আলো ফোটার অপেক্ষায়।

কাঁদতে গেলেই কে যেন টেনে ধরে তাদের,
এ বলে আমার এটা নেই,
ও বলে আমার ওটা নেই।
পরিবারের বায়না মেটাতে মেটাতেই ভুলে যায় নিজের জন্য একটু কেঁদে হালকা হওয়া।
এই নেইগুলো আনতে আনতেই ভুলে যায় তার নিজের কথা-
অর্ধেক কাঁদা যে রেখে এসেছিলো ওটা আর পরে খুঁজে পায় না-
তাই আর হয় না তাদের কাঁদা সারা।

সহ্য করতে যখন আর পারে না তখন ছিটকে বেরিয়ে এসে ডুকরে ডুকরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে-
আবার কখনো বুকে হাত রেখে বোবা চিৎকার করে-
কেউ যেন না দেখে।
কেউ না দেখুক একজন কিন্তু দেখে- সে হলো অন্তর্যামী।

সময়-রুটি-রুজি কাঁদতে দেয় না-
তাই পুরুষের কাঁদা কেউ দেখতে পায় না-
বুকে থেকে যায় কষ্টগুলো।
হয়তো খুঁজলে দেখা য়াবে বুকে কত পলির স্তর জমে আছে।

কিছু নারী স্তর দেখতে পায়-
শুধু দেখতে পেলে হবে না
হৃদয়ঙ্গম করতে ও তো হবে-
তা না হলে বোঝা যাবে না
তার কতটা কষ্ট।

পুরুষের পলির স্তর কত দূর পর্যন্ত
সেটা সব নারী দেখতে পায় না বা দেখতে চায় না-
এই স্তর দেখতে হলে দিব্যজ্ঞানী হতে হবে নচেৎ দেখতে পাবে না।
কিন্তু তাহলে নারীকে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হবে।
হ্যাঁ কিছু নারী আছেন ত্যাগী তারা দেখতে পায়-
আবার কিছু নারী আছেন দেখতে পায় না।
আমার দেখা অনেক আছে বলিও তাদের মাথা নিচু করে রাখে কোন উত্তর করে না, এই গুণটা আছে ভালো- হয়তো বুঝেতে পারে তাই চুপ থাকে,
অনেকে সুধরেও গেছেন আমার বলাতে।

Share This
Categories
কবিতা

তুমি আমার উপন্যাস হবে : লাজু চৌধুরী।

তুমি আমার উপন্যাস হবে
যখন খুশি তখন তোমাকে নিয়ে বসবো।
কেউ স্পর্শ করবেনা তোমাকে
শুধু অধিক রাত জেগে তোমাকে নিয়ে ভাববো।
অসংখ্য সাদা পৃষ্ঠায় শুধু তোমাকে নিয়ে লিখবো
সত্যি বলছি বৃষ্টিতে তোমাকে বুকে জড়িয়ে শুধু পা ভিজাবো।

গতকাল রাতে তোমাকে বালিশের এক পাশে তোমাকে রেখেছিলাম।
কিন্তু আজ তা নয় –
তুমি আমার উপন্যাস হবে বলে আজ পূণিমা রাতে তোমাকে নিয়ে ছাদে বসবো।
বুকের ভিতর জমে থাকা অনেক শব্দ দিয়ে একটু একটু
করে তোমাকে উপন্যাস করে তুলবো।
তুমি যদি এক বার ভালোবাসো আমাকে
আমি তোমাকে পরিপূর্ণ উপন্যাস গড়ে তুলবো –

তোমার চোখে আমার স্বপ্ন দেখেছি
অসংখ্য শব্দ গুলো আমাকে স্পর্শ করে
তোমাকে সৃষ্টি করার জন্য
তুমি আমার সম্পূর্ণ উপন্যাস হবে।

আমি তোমাকে পুড়োপুড়ি নিজের করে চাই
মধ্য রাতে স্বপ্ন গুলো আশ্রয় দিয়েছ তুমি।
তুমি আমার উপন্যাস হবে
তোমাকে কোন নিয়োমের রেকে অথবা বিশাল গ্রন্থগারে
নয়।
তুমি থাকবে প্রতিটি শীরায়, নীঃশ্বাসে –
অনুভুতির সব জায়গায়।
কথা দিচ্ছি কেউ তোমাকে স্পর্শ করবেনা।

Share This