Categories
কবিতা

তুমি আমার উপন্যাস হবে : লাজু চৌধুরী।

তুমি আমার উপন্যাস হবে
যখন খুশি তখন তোমাকে নিয়ে বসবো।
কেউ স্পর্শ করবেনা তোমাকে
শুধু অধিক রাত জেগে তোমাকে নিয়ে ভাববো।
অসংখ্য সাদা পৃষ্ঠায় শুধু তোমাকে নিয়ে লিখবো
সত্যি বলছি বৃষ্টিতে তোমাকে বুকে জড়িয়ে শুধু পা ভিজাবো।

গতকাল রাতে তোমাকে বালিশের এক পাশে তোমাকে রেখেছিলাম।
কিন্তু আজ তা নয় –
তুমি আমার উপন্যাস হবে বলে আজ পূণিমা রাতে তোমাকে নিয়ে ছাদে বসবো।
বুকের ভিতর জমে থাকা অনেক শব্দ দিয়ে একটু একটু
করে তোমাকে উপন্যাস করে তুলবো।
তুমি যদি এক বার ভালোবাসো আমাকে
আমি তোমাকে পরিপূর্ণ উপন্যাস গড়ে তুলবো –

তোমার চোখে আমার স্বপ্ন দেখেছি
অসংখ্য শব্দ গুলো আমাকে স্পর্শ করে
তোমাকে সৃষ্টি করার জন্য
তুমি আমার সম্পূর্ণ উপন্যাস হবে।

আমি তোমাকে পুড়োপুড়ি নিজের করে চাই
মধ্য রাতে স্বপ্ন গুলো আশ্রয় দিয়েছ তুমি।
তুমি আমার উপন্যাস হবে
তোমাকে কোন নিয়োমের রেকে অথবা বিশাল গ্রন্থগারে
নয়।
তুমি থাকবে প্রতিটি শীরায়, নীঃশ্বাসে –
অনুভুতির সব জায়গায়।
কথা দিচ্ছি কেউ তোমাকে স্পর্শ করবেনা।

Share This
Categories
কবিতা

কালপুরষ : রাণু সরকার।

কালপুরুষ, আমি কে? চেনো আমাকে?
আমি যন্ত্রণাতুরা, এবার চিনেছো আমাকে?

আমার হৃদয়ে সদা বসবাস এক যন্ত্রণায় কাতর নারী।

আমার চোখ দেখে বুঝতে পারবে চোখের জলের আচ্ছাদন?

আমি আছি আমার মত-
আমার চোখের আচ্ছাদন গাঢ় রাতের মত- তাকে নিয়ে আমার বসবাস।

Share This
Categories
কবিতা

আশা : রাণু সরকার।

আশা এতো ক্ষুধাতুর কেঁদে মরে অন্তরে,
স্বাভাবিক নিয়মে দিনের পর দিন ;
ওর ক্ষুধা বেড়ে যাচ্ছে-
কষ্ট হলো বটে,
তবুও মনের কষ্টে কিছু বহিষ্কার করলাম-
যেতে কী আর চায়,
ঘুরেফিরে আবার এলো জ্বালাতে।
ওর এতো জ্বালা পাগোলের মতো লাগছিলো,
তখন ইচ্ছে হলো-
আশাকে আগুনে নিক্ষেপ করতে,
করলামও-
এতো প্রবঞ্চক অন্তর ভেঙে করছে হাজার খণ্ড কি করে ভালোবাসি?
আমি তো চিনি ওকে-
একরকম হত্যা করেছে আমাকে বাঁচিয়ে রেখে।

Share This
Categories
কবিতা

কালপুরষ : রাণু সরকার।

কালপুরুষ, আমি কে? চেনো আমাকে?
আমি যন্ত্রণাতুরা, এবার চিনেছো আমাকে?

আমার হৃদয়ে সদা বসবাস এক যন্ত্রণায় কাতর নারী।

আমার চোখ দেখে বুঝতে পারবে চোখের জলের আচ্ছাদন?

আমি আছি আমার মত-
আমার চোখের আচ্ছাদন গাঢ় রাতের মত- তাকে নিয়ে আমার বসবাস।

Share This
Categories
কবিতা

নৈরাশ্য : রাণু সরকার।

প্রতিটি ভোর মনোহরা,
সংগ্রাম করে করে নেমে এসেছে অবসাদ,
সীমাহীন নৈরাশ্য-
সাথে তীব্র বেদনা।

দুর্ভাবনার গভীর তলে তলিয়ে থাকা পলির সাথে
পলিতকেশ দিয়ে যায় ডাক,
থাকি যেন নিস্পন্দ উদ্ভিদ হয়ে।

শূন্য বালুকাময় বিস্তীর্ণ প্রান্তর-
কত প্রশ্ন জাগে মনে, উত্তরগুলো অতিশয় এলোমেলো মনে হয়।

স্বল্পায়ু জট পাকানো জীবন-
কত বাসনা, কিন্তু
পায় না পূর্ণতা।

এখনো আধো ঘুমে দেখি তারে, কল্পনাবিলাস,
শিহরণ জাগে!
জেগে দেখি কেউ নেই- শুধু মোহজনিত ভ্রান্তি,
তখন চলে যাই অতীতের আমিতে!

Share This
Categories
কবিতা

গণিকা : রাণু সরকার।

যাদের শরীরে কালো রেখাঙ্কনের ছাপ-
তারা হলো গণিকা,
সর্বসাধারণ তাদের ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখেন,
দেখারই কথা,
সব মানুষ তো সমান নয়
যে কর্ম করেন তারা, সমাজের চোখে ঘৃণার
আমি ওদের ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখিনা বা পরিবাত করি না বরং বাহবা দিই….

একবারও কী ভেবে দেখেছি?

রীতিনীতির বিরুদ্ধে তারা, বিকৃত বুদ্ধির
কিছু মানুষ আছেন তাদের আবশ্যকতা আপাতত নির্মল ও কলুষমুক্ত রেখেছেন সমাজকে।

কামনা বাসনা আপন শরীরে দিয়েছে আশ্রয়-
সেটা যেভাবেই হোক না কেনো-
অভাবে বা স্বভাবে দু’রকমের নারী আছে।
দুষ্কর্মকারীদের বিকৃত কামনা বাসনাকে বেঁধে তো রেখেছে তাদের শরীর দিয়ে।
যদি ওরা এই কর্ম না করতো
তাহলে তো সমাজটা নরক হয়ে যেত-
সাধারণের বসবাসের অযোগ্য হতো সমাজ।।

Share This
Categories
অনুগল্প কবিতা নারী কথা

যেতে হবে পরের ঘরে : রাণু সরকার।

প্রথম পর্ব

আমার এক পিসি বনগাঁ থাকে একটু ভেতরের দিকে গ্রামে। আমি সেখানে বছরে দু’একবার যাই। ঘুমিয়ে ছিলাম খুব ভোরে হঠাৎ কানে এলো উলুর ধ্বনি,আমি মনে মনে ভাবলাম-
এইরে- এবার না জানি কোন মেয়ের সর্বনাশ হতে চলেছে। আমার মনে আসার অনেক কারণ আছে।
আমার দেখা এরকম অনেক ঘটনা এখানে ঘটেছে।
এখানে আমার এক বন্ধবী সেও কত কষ্টে আছে। আমার বাড়ি কলকাতা আশে পাশেও দেখছি তাই খারাপ ভাবনা মনে আসাটাই স্বাভাবিক।

কোনো মেয়ের বিয়ের কথা শুনলে কিম্বা দেখলে
আমার ভীষণ ভয় লাগে কষ্টের পাশে রাগও থাকে।
আমি চলে গেলাম মেয়েটির বাড়ি আমার পিসির বাড়ির থেকে দশ পা- মেটিকে জিজ্ঞাসা করলাম-
এই মেয়ে, তোর নামটা কি যেন ভুলে গেছি সেই ছোটবেলায় তোকে এই ইছামতি নদীতে স্নান করতে দেখতাম আমি এখানে আসলেই।
গালে হলুদ মাখানো আজ তোর বিয়ে বুঝি?
মেয়েটি উত্তর দিলো তুমি এসব দেখে বুঝতে পারছো না, এটাও কি দিতে হবে বলে?

রাগ করে কথা বলছিস যে-জোর করে দিচ্ছে নাকি বিয়ে?
একটু বড় হলে বাপের ঘরে থাকতে নেই- এটাও কি বুঝিয়ে দিতে হবে?
তোর বাপ মা তোকে ছেড়ে থাকতে পারবে? তুই তো তাদের একটিই মেয়ে।
বাপ-মা যদি মায়া কাটিয়ে থাকতে পারে-
আমারও পারতে হবে।

আমি বোঝালাম-
শোন মেয়ে, বাবের ঘর ছেড়ে শ্বশুর ঘরে যেতে হয় সব মেয়েদের পাগলামী করিস না মেয়েদের যদি বিয়ে না হতো তাহলে কি করে ফুল ফুটতো ও ফল পেতো?

কষ্টের হাসি হেসে সে বললো- মেয়েদের বেলায় নিয়ম-নিষেধ যত- তাই না, তুমি বলো?
ধুর পাগলি, কাঁদিস কেন-বাপের ঘরের মায়া ত্যাগ করতে কষ্ট হচ্ছে বুঝেছি?
ত্যাগ না করলে শ্বশুর ঘর চিনবি কি করে
সেই জন্য সব মেয়েকে যেতে হয় শ্বশুরবাড়িতে
মেয়েটির বিয়ে হয়ে গেলো।

____________________________

যেতে হবে পরের ঘরে
(দ্বিতীয় পর্ব)

কয়েক মাস পর আবার গিয়েছিলাম সেই পিসির বাড়ি,
গভীর রাতে কানে এলো চিৎকার ও কান্নার শব্দ।
মনে খুব কষ্ট হচ্ছিল-
কী জানি কার আবার কী হলো।

শুয়ে ভাবছি কখন ভোর হবে-
দেখতে যাবো কার কী হলো।

ভোর হতেই তাড়াতাড়ি উঠে
হাঁটা দিলাম সেই বাড়ির দিকে
গিয়ে দেখি, সেই বাড়ি সেই মেয়ে
ঘরে ঢুকে দেখি, মেয়েটি চুপ করে শুয়ে আছে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম-
এই মেয়ে কী হলো রে তোর,
মরতে গেলি কেন?

কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো,
মরতে গিয়েছিলাম, পারলাম কই মরতে,
খেতে গিয়েছিলাম ইঁদুর মারা বিষ
যমের কাছেও আমি অরুচি।

তবে এসব নাটক করলি কেনো-
মরতে তো পারলিই না,
গ্রামের লোকের সুযোগ করেদিলি কানা-কানি, হাসা-হাসি করতে।
তোর মা-বাপের কি হুশ এলো?
তখনই বোঝা উচিত ছিলো যে- আমার কালো মেয়ে।

তখন বলেছিলি বিয়ে করবিনা-
জোর করে ঠেলে দিলো তাদের হাতে। পণ যা চেয়েছিলো ছেলের বাড়ি থেকে তা দিতে পারলো না তোর বাবা। কালো মেয়ের দিলো বিয়ে।
তখন তোর মানা শোনেনি।

কয়েক মাস আগে তোর বিয়ের দিন আমি এসেছিলাম। দেখ কি ভাগ্য আমার এবারো আমি এসেছি।
কিছু বলবো ভেবেছিলাম সেদিন পারিনি বলতে,
আমি জানতাম এরকম কিছু একটা ঘটবে-
ঠিক ঘটলো। যেহেতু তুই কালো আবার পণ দিলো কম।

তুই পালিয়ে গেলিনা কেনো?
কাজ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারতিস,
বাপের ঘরে যখন এলি তখন মরতে গেলি কেনো?
তুই তো পড়াশুনা জানিস,রাগে তোকে অনেক কথা বলেছি রাগ করিস না। তোকে দেখে আমার রাগ ও কষ্ট হচ্ছে ।

জানিস মেয়ে,
এ পৃথিবীতে ভালবাসা দিয়ে যাবি আর ঝিয়ের মতো,
খাটবি, সংসারের মানুষের কাছে থেকে মন্দ কথা শুনবি তাও মুখ বুজে-
কিন্তু কোনো উত্তর করা যাবে না।
তাহলে তুই ভালো থাকলেও থাকতে পারিস।

কোনো নিশ্চয়তা নেই, এটাই নিয়ম-
এবার তুই ভেবে দেখ কী করবি, আমাকে জানাস।

আমি আসি রে মেয়ে,
এরকম আর করিস না,
বেঁচে থেকে লড়াই কর-
মরে জিতিয়ে দিস না ওদের।

Share This
Categories
কবিতা

তীব্র দহন : রাণু সরকার।

প্রখর রোদের তাপে বিদীর্ণ জমি,
ফসলের বুক জলের অভাবে তৃষ্ণার্ত,
প্রনত বৃক্ষশাখা কিছু যেন বলতে চাইছে।
বোবা ভাষা আমার অনুভবে রাখা,
কেউ যদি করে একটু স্নেহের সিঞ্চন
ক্রমাগত সে হাসবে।

গাছ গুলো ক্রমেই হচ্ছে দুর্বল-
পাখিদের নেই আলিঙ্গন-কলতান।
তীব্র দহনে মানুষ জীব-জন্তু দগ্ধ, শক্তিহীন, কর্মক্ষমতা পাচ্ছে হ্রাস।

বাদল নিখোঁজ-
তার ঠিকানা খুঁজে পাওয়া বড্ড কঠিন,
কোথাও একটু আধটু জমে থাকা জল দেখলে প্রাণভরে স্নান সারে বিহগের দল।
ডায়েরি খুলে অনুভব করি এই বুঝি ছুটে এলো
বাদল প্রেমের পত্র নিয়ে, এবার আমার বর্ণেরা ভাসবে বুঝি প্রেমের প্লাবনে!
টুপটাপ করে ভরে যাবে হীরের টুকরোতে ডায়েরির পৃষ্ঠা!

Share This
Categories
কবিতা

নির্ঘুমের রাত : শীলা পাল।

আজকে আমার আবার জেগে থাকা
ঘুম আসে না চোখে
ইচ্ছে করে একটু ঘুরে আসি
না হয় খানিক বসি তোমার সাথে
কথা বলার লোক যদি বা আছে
মনের কথা বলি এমন কেউ নেই যে আশেপাশে
অনেক যুগ পেরিয়ে এসেছি মেলে না মন মেলে না ভাবনারা
এখন সেই যে নদীর তীর
ছিপছিপে এক শ্যামলা মেয়ের মত
ডাকে কেবল ছলছল সুরটিতে
রোদের তাপে অবসরের
নিবিড় সবুজ বন হাতছানি দেয় ইচ্ছে মতন যখন তখন
কেমন করে বোঝাই আমার সাধ্য নেই যে আর
ইচ্ছে হলেই চলে যাব হবে না দিন আর
মনের মধ্যেই রেখে দিই
সব যা ছিল একদিন।

Share This
Categories
কবিতা

আনমনে : শীলা পাল।

ভাবনারা ছুটে চলে
হাল্কা পাখির মত কখনও আকাশ কখনও মাটিতে
তোমার রূপোলী চুলে
ঢেউ লাগে অলস হাওয়ার
বৃদ্ধ গাছটি সস্নেহে ছায়া মেলে বলে ভাল আছ
তুমি মৃদু হেসে বললে
এখন যেমন থাকা যায়।
জগতের নিয়মে সবাই চলেছি
ভাল মন্দ চাওয়া পাওয়া
একদিন সব ভেসে যাবে
জানি তবু থামতে পারি না।

Share This