Categories
কবিতা

প্রতিবিম্ব : রাণু সরকার।।।

সবসময় আমাকে আগলে রাখে,
আমার সাথে নীরবে কথা হয়-
সুখ দুঃখের-
আমাকে ও খুব ভালোবাসে!

আমার চলার পথ ও নিজেই ঠিক
করে দেয়-
অন্ধকারে যদি ভয় পাই-
তাই তো বুকে জড়িয়ে রেখে কত
স্নেহ কোরে!

আমি আনন্দে দিশাহারা
চোখ বন্ধ করে ওর বুকে
মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ি–

ও আমার প্রতিবিম্ব!

Share This
Categories
কবিতা

ব্যথা : রাণু সরকার।

ব্যথা বলছে, আমারও তো ব্যথা আছে- কেউ কি তা বোঝে?

হ্যাঁ, বোঝে তো–
কেনো স্পর্শেন্দ্রিয় তো বোঝে।

তবে ভাগিদার কে ?
যে ভাগ বা অংশ পায় সে-
সে কে?
সে হচ্ছে অনুভূতি,
তোমার দেহের বিভিন্ন অঙ্গকে
রক্ষা করছে ব্যথা।
ব্যথার উৎস থেকে ব্যথা দূরে সরে যাবার সময় আরো যে ব্যথারা আছে তাদেরকে সাথে করে নিয়ে যায়,
ব্যথা নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে না, সে ভীষণই ব্যস্ত
তাই তো তার এতো কষ্ট।

ব্যথার সৃষ্টি কেমন তুমি কি কখনো বুঝেছো?
ব্যথা আসে ধীরে ধীরে- তারপর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তখন সে আহত ক্ষুধিত হিংস্রের মতো হয়ে যায়।

Share This
Categories
কবিতা

আত্মম্ভরি :: রাণু সরকার।।

দৃষ্টিকোণের বোবা জলটা পীড়নকর,
উপলব্ধি করলে বৃহৎ এক কাব্য,
ঠোঁট জুড়ে অকথিত ভাষা,
অথচ নাচ ঘরে শ্রেষ্ঠ নৃত্যশিল্পী,
কিন্তু শরীর জুড়ে অঙ্কিত দাম্ভিকতা
সোহাগে বাড়ে আত্মম্ভরি!

Share This
Categories
কবিতা

ত্রিস্রোতা জীবন : রাণু সরকার।

জীবন কবিতার রচনানুবন্ধ
ত্রিস্রোতা- তাল ছন্দে নৃত্যপটিয়ান,

যখন ছন্দকানা হয় তখন পড়ে ধন্দে
অশান্ত বর্ণরাগে আচমকা ঝুড়বৃষ্টি
গল্প উপন্যাসের সাথে হরদম চলে
সহবাস!

পরিবর্তনপ্রবণ অঙ্গভঙ্গি দ্বারা নেয়
নাট্যরূপ-
উত্তেজনাপূর্ণ কিছু বাণী লক্ষ্যহীন
ঘরে করে ভ্রমণ–

একটি শব্দ সজোরে নিক্ষেপ করে
জানালার কাঁচে,
হয় হাজার খণ্ড রক্তাক্ত হয় আবালবৃদ্ধ-
কোন ভ্রুক্ষেপ নেই-
জ্যোৎস্না রাতে আসে গালভরা হাসি নিয়ে!

Share This
Categories
কবিতা

অজ্ঞাত : রাণু সরকার।

রাস্তায় চলছিলাম, হঠাৎ সম্মুখে বর্তমান
অশীতিপর একজনকে চারজনায়
কাঁধে নিয়ে চললো,
দেখে মনের কুটিরে বসে পড়লো
অসংখ্য খণ্ড খণ্ড বাণীর সাথে চিত্র।

কীভাবে এলাম এখানে, অজ্ঞাত
গন্তব্যস্থল কোথায়- সেও অজানা
সেটা কষ্টের না মুক্তির ?
আমার কাছে জ্ঞানের অতীত।

চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী
বয়োজ্যষ্ঠরা স্বস্তিবচন দেন-
দীর্ঘায়ু হও,
সেটার প্রকৃত ব্যাঞ্জনাও- অজ্ঞাত ||

Share This
Categories
কবিতা

ঝরা কুঁড়ি : রাণু সরকার।

রাস্তায় চলতে বিহান বেলায়
বাঁকা দৃষ্টিতে দেখেছিলাম মুকুল
কোনদিন হয়নি সংলাপ
হঠাৎ সন্ধ্যা হতে না হতেই গেলো
ঝড়ে-
কী তার কারণ?
হয়তো পড়েছিলো কুদৃষ্টি-
কেনো দেইনি সুদৃষ্ঠি পথের ধারে বলে?-
পড়শিরা যদি করে কানা-কানি-
ক্ষতবিক্ষত পাপড়ি ক্লান্ত কাঁদায়
আছে বিশ্রামে,
ঝড়া কুড়ি কী তার দোষ?
যত্নে ধুয়ে সাজাই হৃদয় পটে!

Share This
Categories
কবিতা

বাগযন্ত্র : রাণু সরকার।

ছাইরঙের কিছু শব্দ
তারা বাঁচতে চায়!
সবেগে তাড়িত করে গভীর রাতে-
মস্তিষ্কে নিষ্ঠুরের মতো করে আঘাত-
তখন আর্তনাদে ধ্বনিত হয়।

শব্দগুলো এখন ভীষণ বিরক্তিকর লাগে,
মাঝে মাঝে ক্লান্ত ক’রে তোলে,
বিদ্রূপ রোষে সংঘর্ষ চলে এদের সাথে আমার।

তাই নিক্ষেপ করলাম অগ্নিতে।
ভেবে ছিলাম ধোঁয়ার সাথে সব উড়ে যাবে-
গেলো না তবে-কিছু থেকে গেলো-
দিনলিপিতে অক্ষরের পরিচয়ে
চিরকালের মতো মুদ্রিত স্মৃতি পটে।

অলক্ষিত ভাবে চলে আসে শব্দহীন
থাকলে মস্তিষ্কে,
তখন অনুসন্ধান করতে আমাকে বাধ্য করায়,
এদের ছেড়ে কী করে বাঁচা যায়-
এরা তো আমার বাগযন্ত্র!

Share This
Categories
কবিতা

অপেক্ষা : রাণুর কবিতা।

তুমি এসেছিলে বুঝি?
আমি দেখিনি,
তবে তোমার পায়ের চিহ্ন রেখে গেছো।

এখন তুমি কোথায়, কত দূরে?
দু’জনের একসাথে যাবার কথা ছিলো এক নৌকায়!
কেনো আগে নিলে বিদায়,
পারঘাটে বাঁধা আছে একটি নৌকা-
হয়তো হবে আমারই,
মাল্লার নেই,
জেলেরা ফেলেছে জাল, অপেক্ষায় থাকা|

Share This
Categories
কবিতা

ঋতু করেছে বিধ্বস্ত : রাণু সরকার।

বেলা শেষে তরুণ রোদে পিঠ ঠেকিয়ে
সেলাই করছিলে বুঝি অতীতের কাব্য?

ঐ আর কী- কোন রকমে চালানোর মতো
জোড়াতালি দেওয়া!
কতদিন আর চলবে তাপ্পিতে?

বহু ব্যবহারে হয়েছে জ্যালজেলে-
তাপ্পি দেওয়ার আর ব্যবধান নেই।
কুটিরের অবস্থা দুর্বল- হবেই বা না কেনো,
ঋতু গুলো করেছে বিধ্বস্ত,
কারণটা জানা আছে নিশ্চয়ই!

অভিমানের আঘাতে নিজেকে করেছো
ক্ষতবিক্ষত!
বিরক্তির কারণ কে দিলো জোগান?

অষ্টপাদের জালে পড়েছি জড়িয়ে,
দিবারাত্র ঝাপসা!
সংযোগস্থল ভঙ্গুর হয়তো সহজেই
পড়বে ভেঙে!
কুটিরটি মন্থর গতিতে হচ্ছে নতশীর,
অস্পষ্ট দৃষ্টিতে কবে যেন অদৃষ্টের গর্ভে
হবো বিলীন।

প্রবীণ রাতের সমাপ্তি,
যুবতি ভোর অতীতের দোষগুণের
করে সম্যক বিচার ।

Share This
Categories
কবিতা

দায়িত্ব থেকে মুক্তি : রাণু সরকার।

পুরানোর প্রতি নেই কোনো মমতা,
মায়ার বন্ধনে আর করবো না বিজড়িত

প্রতিদিন যাকে দিতে হয় তাপ্পি।
তাকে পোষণ করে লাভ কী ?
পরিহার করাই শ্রেয়।

বছরশেষে নতুন বস্ত্র করবো পরিধান
অশ্রুসজল নেত্রে,
সে অশ্রুবিন্দু আমার চিত্তপ্রসাদ ও পরমানন্দের!
কেউ করোনা যেন কটাক্ষ দৃষ্টিপাত,
ক্রন্দনধ্বনি কর্ণে এলে গোপন যন্ত্রণার
উদ্ভাবন হবে।
গতিপথ হবে কর্দমতুল্য পিচ্ছিল।

পুরাতন বছরসকল ছিলো যখন পাশে
ছিলাম তখন শোকাভিভূত।
স্নেহমমতায় হবো না আবদ্ধ হবো দায়মুক্ত।

Share This