Categories
কবিতা

বায়স্কোপের নেশা : সৌগত রাণা কবিয়াল।

যদি কঠিন কিছু বলার থাকে,
তবে বলে দিতে পারো আমায়.. !
নিজেকে সুখী করতে একটু নির্লিপ্ত হতে দোষ কি..? ‘অনুভুতি’ বুঝি অংকের হিসেব কোন..?

ভালোবাসায় কোন দাগ দিতে নেই..
কোন আঁচড় দিতে নেই..
বড্ড কোমল সুখের এই ‘ভালোবাসা’..
হয়তোবা কখনো সখনো অনেক দুঃখের…!

আমাদের জন্য অনেক আছে..
তুমি কিংবা আমি ছাড়াও আরও অনেক…!
তুমি হয়তো দুরন্ত কোন মেঘের মতন…
আমি হয়তো মাঠের কোনে বৃষ্টি জমা জল…!

জীবন কখনো কাওকে দিব্যি দেয় না…
কঠিন নিয়মের শেকল বাঁধে না সমাজের মতো.!
চাইলে তুমি উড়ে যেতে পারো পুরোটাই…!
বাতাসের গায়ে কোন গন্ধই যে স্থায়ী নয় কোনদিন…!

এই যে নিয়ম করে লিখতে গেলে কত ব্যাকরণ..!
বাংলায় আমি বরাবরই ভালো..
শুধু সমাস টা মাথায় খেলে কম..
তবে এটুকু বুঝি,
চারপাশের সবকিছুই আমাদের জন্য নয়…
কেও আকাশের জন্য কাঁদে…
আবার কারো মন পড়ে থাকে ঘরের রঙিন পর্দায়..!

দিন শেষে কিন্তু আমরা সবাই একা,বড্ড একা..
অথচ মেনে নেয়ার সাহস হয়ে ওঠে না কারো..
‘মায়া’ জিনিসটা ভয়ানক কঠিন….
ভালোবাসা ছাড়া তাকে শেকলে বাঁধতে গেলে..
বুকে রক্ত জমাট বাঁধে…. !
লালের এই রুপে আমার ভীষণ ভয়…
বড্ড কঠিন ভয়….!

Share This
Categories
কবিতা

শব্দহীন ::: রাণু সরকার।।।

এমনটা তো চাইনি
আমার বলা শেষ!
তুমি এভাবে আসবে ভাবতেই
পারছিনা-

এসেই যখন পড়েছো এখনো
নির্ভীক আছো দাঁড়িয়ে-
তোমার শরীর ফেনাহীন কেনো?
এমনটা তো চাইনি-
চেয়েছিলাম বুদবুদের পুঞ্জ!

আমার চাওয়া নিশ্চয়ই তোমার
জানা আছে-
ক্লান্তিটাকে পর্দার আড়ালে রেখে
আসতে পারতে!
চেয়েছিলাম গুপ্ত আশ্রয়স্থল,
দীর্ঘকাল সাগ্রহে কামনা যায়-
গোলাপের গাছটি কেনো ঢেউয়ে
বাড়ি খাচ্ছে?
ফাঁকা জায়গায় এতো ঢেউ
কোথা থেকে এলো–
এমটা হতে পারে সেকথা জানা
ছিলো নিশ্চয়ই!

Share This
Categories
কবিতা

আদরের অনামিকা :: রাণু সরকার।।।

রাতে ঘুম আসেনি, ভাবনারা ছিলো প্রিয়র অভ্যন্তরে,
ভোরে একটু চোখ বুজে আসছিলো-
মনে হলো প্রিয় নিদ্রাতুর চোখে চুম্বন করলো।

গায়ে তার যৌনগন্ধ,
ঘুমের মধ্যে হৃদয়ে ঢেউ তুলে দিলো,
ঘুমের ঘোরে হাত ধরে নিয়ে যায় জ্যোৎস্নায় স্নান করবে বলে।

দু’জনেই স্নান করছিলো,
কাঁপা কাঁপা স্বরে করলো অঙ্গীকার,
দু’জনের হৃৎশব্দ একসুরে বেজে উঠল-
ঘুমের মধ্যে সে-কি সুখ, প্রেমানন্দে নানান স্পর্শ!

হিংস্রের মত নেশালাগা জ্যোৎস্নার রাত ব্যাকুল বিবস্ত্র শরীর দু’জনের,
এক নিঝুম জ্যোৎস্না রাতে নদীর ধারে ঘাসের কোমল শয্যায় হলো মিলন,
মিলনের অজান্তে বীজ রোপণ করা হয়ে গেলো, কি হবে এখন?

বীজ রোপণ করেছে যখন গাছটির কি নাম দেওয়া যায়,
ভয়ে ভয়ে গাছটির নামকরণ করলো-
নাম দিয়েছে অনামিকা।

গাছটি দু’জনের মিলনের খুব আদরের,
গাছটি স্বপ্নে রোপণ হলল,
কিন্তু দু’জনের খুব আদরের, স্বপ্নের অনামিকা!

২৬|০৪|২০১৮

Share This
Categories
কবিতা

এক শ্রাবণের কথা : রাণু সরকার।

শ্রাবণের আকাশে কালো মেঘের পুঁজিতরাশি,
এই বুঝি এলো বর্ষা রাণী, স্বামী-পুত্র গেছে মাঠে,
ধেয়ে এলো ঘনকাল ও মাগো মা নিমেষে হলো এক হাঁটু জল মাঠ ঘাট হলো এক বোঝা দায়।
হায়-রে শ্রাবণের ধারা দেখো দেখো ধানের মাথা গুলো করছে যেন বিনয়ী বাতাসের তাড়নায়।

গরু-ছাগলের পাল দিচ্ছে কি হাঁক ডাক,গোগৃহ তো জলে ডুবুডুবু গা যাচ্ছে ওদের ভিঁজে। এতোগুলো গাই বাছুরের পাল রাখি কোথায়ও, কে যানতো এভাবে শ্রাবণেরধারা বৈবে অবিরাম।

সূর্য এই বুঝি দিলো ডুব তবে যায় না দেখা মনে হয় একটু আছে বাকি,
বোঝাও কি উপায় আছে আঁধার রেখেছে যে ঘিরে।
এখনো কি পারছে না বুঝতে তারা হুঁশ নেই কি একদম,একা কি করে দেই সব সামাল বৃদ্ধা শ্বাশুড়িটাও পরে আছে বিছানায়।
দুয়ারে এক হাঁটুজল দাঁড়িয়ে দেখছি-কারুর দেখা নেই,ঘনঘন বিদ্যুতের চমকানি,
একা গৃহে ভয়ে ভয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত,
তাকে বলেছিলাম-বেলা না গড়ায় এসো ফিরে তাড়াতাড়ি ঘরে, কে কার কথা শোনে,
সকাল থেকেই ছিলো মেঘেদের মুখ ভার করছিলো তারা কানাকানি।

তখনি বুঝেছি আসবে ধেয়ে নেবে সব ভাসিয়ে ক’দিন আগেই বলেছিলাম গোয়াল ঘরের চালটাতে ঘর চাপাতে হবে কানে নেয় নি কথা।

হঠাৎই কানে এলো কে যেন ডাকছে,বউঠান বাব-বেটা ফিরেছে কি ঘরে?
আমি বলি না গো দাদাঠাকুর ফেরেনি এখনো তারা।
দেখ দেখি কি মুশকিলের কথা,তারা কি বোঝে
না দু’কূল গেছে ভেসে,
বলেছিলেম তো তারে বেলা থাকতেই যেন আসে ফিরে ঘরে।
গৃহিণীর কথা বাসি হলে লাগে কাজে।

Share This
Categories
কবিতা

কোরক : রাণু সরকার।

আমার জন্ম জন্মান্তরের
কিছু সুখ দুঃখের স্মৃতি‐
অত্যাচারিত তারা-
তোমার ঠোঁটে বা হৃদয়ে
কি করে তাদের রাখি!
আমি কোন চিহ্ন রেখে
যাবো না-

তুমি কি আমার?
না—
আমার নও অন্য কারোর!
যদি ভুল বলি করো খমা-

আমার কোন স্মৃতি
থাকে যদি মনে!
ধরা দেবে তুমি নিজে-
ধূর্ত কপটচারী–
খুলতে হবে না দ্বার!

ঠোঁটে যদি পুষ্পকোরকের
অনুভূতি হয়ে থাকে-
সেটা আমার নিবিড় প্রখরতা কদাচ-
দীর্ঘকালের আকাঙ্ক্ষিত
সোহাগের অভ্যর্থনা!

তবে তুমি কি আমার?
না–
ছিলে একসময় এখন
অন্য কারো!
প্রকৃতি সাক্ষী রখেছে-
তবে আকাঙ্ক্ষিত যুগল
ঠোঁট ভরাট হলোনা!
মদিরার কামনা বাসনার চুম্বনে!

Share This
Categories
কবিতা

আদুল : রাণু সরকার।

প্রতিদিন মধ্যাহ্নে তটিনীর জলে স্নান সেরে
আদুল যৌবন
ভেজা কাপড়ে মুড়ে কলসীতে জল ভরে হেঁটে যাও-
চুলে মাখা চন্দন তেলের গন্ধ ভেসে আসে নাকে, মন হয় চঞ্চল!

জলপরীর সাজে দেখায় বেশ জলের বিন্দু চোখেমুখে,
ঠোঁট দুটি যেন মদিরা ঢালা!

এতো সুন্দর দৃশ্য হোতনা দেখা
যদি না থাকতাম আড়ালে অপেক্ষায়!

Share This
Categories
কবিতা

ছোট শিশুর কষ্ট : রাণু সরকার।

বাপটা আমার থেকেও নেই মনে
করি মারা গেছেন
চোখ মেলে দেখিনি বাপের মুখ কেমন,
কোন ভোরে মা গেলো চলে
বাবুর বাড়ির বাসন ধুতে
আমরা এখন তিনজন থাকি রেললাইনের ঝুপরিতে।

আমার কাছে ভাইকে রেখে
কি করে যাই ইস্কুলেতে
খিদের জ্বালায় শুয়ে পড়ে
ভাই যে আমার সারা হলো কেঁদেকেটে।

কাল রাতে পেটে আমার
ব্যথা ছিলো
খাইনি,আমার ভাতটা থেকে গেলো-
পান্তা করে নুন দিয়ে ভাই আমার খেয়ে
নিলো
দাড়িয়ে আছি নিয়ে কোলে
কান্না ভাইয়ের থেমে গেলে।
ইস্কুলের যাবার সময় হলো
এই বুঝি,ঘন্টা বেজে থেমে গেলো-
কি করে যাবো,মা যে এলো না এখনো
হয়তো গিন্নীমা কাজের চাপে রেখে দিলো
এমন তো করেনি কখনো
আমারা গরিব বলে করলো এমন
বাপটা যদি থাকতো এখন।

Share This
Categories
কবিতা

ঋতু : রাণু সরকার।

আধোঘুমন্ত অবস্থায় ভেসে এলো গানের সুর কানে,
কে গাইছিলো এতো রাতে?
আমার দৃষ্টির শেষ সীমায় ফুটেছে কমলকলিকা।

বাংলার তৃতীয় ঋতু-
ভরেছে সূর্যের চুম্বকীয় রশ্মিতে,
বেলা শেষ, নামলো ছায়া ধরণীতে,

শিশিরবিন্দুতে ভাসে চোখ-
হয়নি দেখা কোনদিন নয়ন মেলে।
অন্তর লতাবেষ্টিত, কানন মুকুলিত-
অত্যন্ত মিষ্টি মনোহর,
ওগো শেফালিকা, তুমি মনের কামনাপীড়িত!

Share This
Categories
কবিতা

একান্তে :: রাণু সরকার।।।

খেলেছি কত তোমার সাথে যখন আমার শুরু হলো বেলা,
তখন চিনতো কি আমাদের মন
কে তুমি আর কে আমি?
তবু অচেনাকে চেনা করে খেলেছি কত, তোমার কি মনে পড়ে?
হয়তো পড়ে মনে, আমার জানা নেই অনেক দিনের কথা তো!

ছিলোনা ভয় লজ্জা অপমানের জ্বালা, তাই না বলো!
মনটা ছিলো বিশ্রামহীন অস্থির উড়ুউড়ু,
এটাই তো হবার, ছোট বয়স বলে কথা!

সকালসন্ধ্যা রোজ আসতে তুমি ডাকতে,
ভীষণ ভালো লাগতো,
যেন তুমি আমার কোন এককালে ছিলে আপনজনা!
ছুটোছুটি করেছি কত তোমার হাত ধরে আবার কখনো হাত ছেড়ে!
অকারণে হেসে কতনা করেছি লুটোপুটি,
খেলেছি কত বনের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত।

সেসব দিনের কথা মনে পড়ে
আমার মতো তোমার কি?
তোমার পাঁচমিশালী গানের সুরে দিতাম আমি তাল-
করতো না তো একটুও আমার লজ্জা!
তখন নাচতো আমার মন, হতো চঞ্চল,
আমি তখন ছোট্ট খুকী, বুঝতাম না গানের মর্মার্থ।

আচমকা দিনের সূচনা হল স্তব্ধ,
প্রকৃতির এটাই বুঝি নিয়ম,
পশ্চিমেতে সূর্য রেগে ঠায় দাঁড়িয়ে,
যাচ্ছে না কেনো সে চলে!

বুঝেছি, এবার আমার থাকতে হবে একান্তে নিরালায়।
এখন আমি যে সেই ছোট্ট মেয়ে নই,
বড় হওয়ার গন্ধ সবার নাকে লাগে ওড়ে।।

Share This
Categories
কবিতা

স্বপ্নের রং : রাণু সরকার।

প্রাণের পাখি ভালোই তো-
শূন্যে বিচণ করছিলি
কেনো তোর-মন চাইলো যেতে-
অজানায়?

বন্ধনমুক্ত করে- দিলি উড়াল!
ভয়ে তোর হৃদযন্ত্রের কম্পন
হয়নি বুঝি?
প্রণয়াসক্ত ছিলি–
বিকৃতমস্তিষ্ক হলো-
কে করলো তোকে বিবর্ণ?
সেকি বাদ্যকর?

ডানার ভাঁজে আড়াল
রেখেছিলি অতীত!
মনে পড়ে স্বপ্নের রং
মেখেছিলি তুই গায়ে?

ঝড় তো ওঠেনি তবে কেনো
পথ হারালি?
দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
বর্তমানে আষাঢ়ের প্রত্যাশায়
কাটে দিবারাত্রি!

তালগাছে যে- তোর অতীত
কি করে ফিরবি?
স্বয়ং ডানা নিয়েছিস ছেঁটে||

Share This