Categories
কবিতা

একান্তে :: রাণু সরকার।।।

খেলেছি কত তোমার সাথে যখন আমার শুরু হলো বেলা,
তখন চিনতো কি আমাদের মন
কে তুমি আর কে আমি?
তবু অচেনাকে চেনা করে খেলেছি কত, তোমার কি মনে পড়ে?
হয়তো পড়ে মনে, আমার জানা নেই অনেক দিনের কথা তো!

ছিলোনা ভয় লজ্জা অপমানের জ্বালা, তাই না বলো!
মনটা ছিলো বিশ্রামহীন অস্থির উড়ুউড়ু,
এটাই তো হবার, ছোট বয়স বলে কথা!

সকালসন্ধ্যা রোজ আসতে তুমি ডাকতে,
ভীষণ ভালো লাগতো,
যেন তুমি আমার কোন এককালে ছিলে আপনজনা!
ছুটোছুটি করেছি কত তোমার হাত ধরে আবার কখনো হাত ছেড়ে!
অকারণে হেসে কতনা করেছি লুটোপুটি,
খেলেছি কত বনের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত।

সেসব দিনের কথা মনে পড়ে
আমার মতো তোমার কি?
তোমার পাঁচমিশালী গানের সুরে দিতাম আমি তাল-
করতো না তো একটুও আমার লজ্জা!
তখন নাচতো আমার মন, হতো চঞ্চল,
আমি তখন ছোট্ট খুকী, বুঝতাম না গানের মর্মার্থ।

আচমকা দিনের সূচনা হল স্তব্ধ,
প্রকৃতির এটাই বুঝি নিয়ম,
পশ্চিমেতে সূর্য রেগে ঠায় দাঁড়িয়ে,
যাচ্ছে না কেনো সে চলে!

বুঝেছি, এবার আমার থাকতে হবে একান্তে নিরালায়।
এখন আমি যে সেই ছোট্ট মেয়ে নই,
বড় হওয়ার গন্ধ সবার নাকে লাগে ওড়ে।।

Share This
Categories
কবিতা

স্বপ্নের রং : রাণু সরকার।

প্রাণের পাখি ভালোই তো-
শূন্যে বিচণ করছিলি
কেনো তোর-মন চাইলো যেতে-
অজানায়?

বন্ধনমুক্ত করে- দিলি উড়াল!
ভয়ে তোর হৃদযন্ত্রের কম্পন
হয়নি বুঝি?
প্রণয়াসক্ত ছিলি–
বিকৃতমস্তিষ্ক হলো-
কে করলো তোকে বিবর্ণ?
সেকি বাদ্যকর?

ডানার ভাঁজে আড়াল
রেখেছিলি অতীত!
মনে পড়ে স্বপ্নের রং
মেখেছিলি তুই গায়ে?

ঝড় তো ওঠেনি তবে কেনো
পথ হারালি?
দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে
বর্তমানে আষাঢ়ের প্রত্যাশায়
কাটে দিবারাত্রি!

তালগাছে যে- তোর অতীত
কি করে ফিরবি?
স্বয়ং ডানা নিয়েছিস ছেঁটে||

Share This
Categories
কবিতা

বন্দি জীবনের আখ্যান : রাণু সরকার।

অসুখে ঘরে বন্দি,
কালের কাছে নিজেকে
সযত্নে মুড়ে রাখা,
কার প্রত্যাশা করা কি ঠিক?

জানালা দিয়ে ধরণীকে দেখি,
বাতাসে ভেসে আসে বাণী শুনি,
সাথে থাকে মাটির গন্ধ।
খানিক বাদে স্বল্পবাক হয়ে যাই,
মাথা করি নিচু,
নিশ্বাস পড়ে বুকে।

পঙ্কিল সম্পর্কশূন্য
এভাবেই হয়তো অবস্থান নির্ণয়-
শব্দহীন সুচ দিয়ে সেলাই করে যাওয়া
অনাবৃত নির্বুদ্ধি,
কল্পনায় ভয়ে ভয়ে করে ঘুমের ঘোরে চুম্বন!

Share This
Categories
কবিতা

আদরের অনামিকা : রাণু সরকার।

রাতে ঘুম আসেনি, ভাবনারা ছিলো প্রিয়র অভ্যন্তরে,
ভোরে একটু চোখ বুজে আসছিলো-
মনে হলো প্রিয় নিদ্রাতুর চোখে চুম্বন করলো।

গায়ে তার যৌনগন্ধ,
ঘুমের মধ্যে হৃদয়ে ঢেউ তুলে দিলো,
ঘুমের ঘোরে হাত ধরে নিয়ে যায় জ্যোৎস্নায় স্নান করবে বলে।

দু’জনেই স্নান করছিলো,
কাঁপা কাঁপা স্বরে করলো অঙ্গীকার,
দু’জনের হৃৎশব্দ একসুরে বেজে উঠল-
ঘুমের মধ্যে সে-কি সুখ, প্রেমানন্দে নানান স্পর্শ!

হিংস্রের মত নেশালাগা জ্যোৎস্নার রাত ব্যাকুল বিবস্ত্র শরীর দু’জনের,
এক নিঝুম জ্যোৎস্না রাতে নদীর ধারে ঘাসের কোমল শয্যায় হলো মিলন,
মিলনের অজান্তে বীজ রোপণ করা হয়ে গেলো, কি হবে এখন?

বীজ রোপণ করেছে যখন গাছটির কি নাম দেওয়া যায়,
ভয়ে ভয়ে গাছটির নামকরণ করলো-
নাম দিয়েছে অনামিকা।

গাছটি দু’জনের মিলনের খুব আদরের,
গাছটি স্বপ্নে রোপণ হলল,

কিন্তু দু’জনের খুব আদরের, স্বপ্নের অনামিকা!

২৬|০৪|২০১৮

Share This
Categories
কবিতা

রিপুর দল : রাণু সরকার।

পাঁজরের হাড় গুলোকে ঝাঁঝরা করেছে কিছু রিপুর দল,
আমি তো কখনো ডাকিনি নিজে থেকে,
এসেছে ওরা নিজেই!
সকাল সন্ধ্যা ওদের সাথে বাধ্য থাকতে!

সূর্যের তাপের চেয়েও বেশি তাপ যেন ওদের গায়ে,
মন্থর গতিতে শুকিয়ে যাচ্ছে বাহিরটা,
রোজ গোপনে কাঁদে।

একসময় সুন্দর সুর ছিলো, এখন দুর্বলচিত্ত,
সুখের কুটিরে প্রদীপ জ্বলে না আর,
তেলবিহীন পলতে আপন মনে জ্বলে গেলো!
শক্তিহীন ভেবে ভুলে থাকা যায়?
প্রতিটি ঠোক্কোরে-
যে যন্ত্রণা সেটা কিভাবে হবে নিরাময়!

দিনে দিনে বেড়ে ভারি হচ্ছে রিপুর দল!

Share This
Categories
কবিতা

কদম : রাণু সরকার।

গত বছর আমার অজান্তেই জন্ম নেয় কদম গাছটা,
ফুল ধারণ করতে পারবে কিনা ভাবছিলাম-
তবে ফুল ফুটেছিলো গোলাপী রঙের
এই তো এই বর্ষায়!

ভাবনায় ছিলো একান্ত আপনজনকে উপহার দেবার!
অকপটে একদিন খুলেছিলো তার হৃদয়-

সে যন্ত্রণা উৎপাঠিত করেছে আমার অন্তর-
যদিও তারই দয়ায় বেঁচে থাকা।

মান্দার গাছও তো জন্ম নিতে পারতো!
সেটা তো হয়নি, জন্ম হলো কদম গাছের, তাতে আবার ফুটল গোলাপী কদম-
ফুলটা অনেকদিন ছিলো গাছে, কারর স্পর্শ পায়নি-
আকাঙ্ক্ষা যে ছিলো না- এমনটা তো বলতে পারবো না,
একদিন সে নিজের ইচ্ছেতেই ঝরে পড়ে গেল!

এখনো রাখা আছে আমার মনের আয়নায়
শুকিয়ে যাওয়া সেই কদম ফুলটি!

Share This