Categories
কবিতা

মানবিকতা : রাণু সরকার।

অন্ধকূপে ডুবে যাচ্ছে মানবিকতা,
খুঁজে পাওয়া যাবে না ভবিষ্যতে পরিমাপন যন্ত্রের সাহায্যেও,
অধঃপতিত অবস্থায় এখন বর্তমান,
সংকটের বন্ধনে আছে আবদ্ধ।

মানব জীবনের সম্মুখে সংকটকাল-
জীবন্ত মানুষ ঘুরে বেড়ায় মৃত্যুর দরবারে,
গোপন পথেও চলছে প্রতারণা,
হারিয়ে ফেলছে সভ্যতার অঙ্গীকার।
মানুষের পরিচয় দিতে কষ্ট হয়-
নব প্রজন্মের কাছে,
বারেবারে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়।

মানবিকতা এখন ক্ষতবিক্ষত,
কারাবন্দি অবস্থায় জানা নেই তার গন্তব্যস্থল,
ঠায় দাঁড়িয়ে তাই দিন গোনে মুক্তির।
তবে, মুক্তি কি পাবে মনে সংশয় জাগে।

Share This
Categories
কবিতা

চির তরুণী : রাণু সরকার।।

ঊর্ধ্বে অসীম আকাশকুসুম-
প্রকৃত প্রেমের পাত্র,
নিম্নে বিপুলায়তন ভূখণ্ড-
যেন মনে হয় চির তরুণী
এক রমনী,
বহুদূরের অতীত থেকে নিগড়
প্রেমনদীর দিশেহারা ভাব,
আঁধারে চলে তাদের দুর্দমনীয়
রসজনিত শৃঙ্গার,
তখন ধরিত্রী হয়
রজঃস্বলা-
নিঃশব্দে অন্যের অলক্ষ্যে
অঙ্গবিক্ষেপ করে গোপনে।

তখন ধরাধাম বৃষ্টিমুখর–
তাদের যৌনমিলনে
গড়ে ওঠে প্রাণিজগৎ,
সৃষ্ট হয় জীবজগতের ধারণকারী মেদিনী-
তিনি হলেন পালিকা ধরিত্রী মাতা।

Share This
Categories
কবিতা

তৃষ্ণালু ::: রাণু সরকার।।

বশীকৃত এ মন কিসের ছলনে
হলো মতিভ্রংশ,
ইতস্তত ভ্রমণে দেখেছি বহুবিচিত্র
বর্ণের সমারোহ।

হায় রে- তটিনী তুমি গর্ভিণী,
এই তো বিহান বেলায় ছিলে
ঋতুমতী!
স্নেহদৃষ্টি আছে পরিপূর্ণ কিন্তু
বড্ড তৃষ্ণালু-
কোন ঘাটে মিটবে সম্ভোগ?
ক্ষরণশীল হলে রসসম্ভোগে
হতো পরিতৃপ্ত!

Share This
Categories
কবিতা

মন :: রাণু সরকার।।

মন থাকে অন্দরমহলে অন্তঃপুর
তার মনঃপূত স্থান,
প্রতীতিকে আলিঙ্গন করে থাকে
ভাবনার স্বপ্নাবেশ।

মনস্তাপ ও ক্লেশ সে তো নিজেরই
থাকে,
এদের বারংবার অনুরোধ উপরোধ
অন্তরের কাছে হয় বোঝা।

ভারবাহী অন্তর সহ্যশক্তি হারিয়ে সে
তখন কম্পমান,
তখন ত্যাগপূর্বক দেবতার শ্রীচরণে করে সমর্পণ।

Share This
Categories
কবিতা

ব্যাধি :: রাণু সরকার।।। 

দৃষ্টির অগোচরে যে ব্যাধি আছে
কোনদিনও কেউ পারবে না তার
অঙ্গে ধারণ করতে,

অপরিচিত কি নীরবে বেসুরে
অশ্রুকণা ঝরবে-
দিবারাত্রি সন্ধান করেও পাইনি তার
গোপন ঠিকানা,

নিষ্ফল দুরূহ প্রশ্ন ব্যাকুল বসবাস
করে গোপন মনে।
প্রকৃতির সাথে দৃষ্টিবিনিময় করে দেখা
সকলেই অত্যন্ত দ্বিধান্বিত–

সমব্যথী কি আছে ?
নিজের যন্ত্রণার ভার সহ্য করে
নিজেরই বহন করা।

Share This
Categories
কবিতা

বারিধরা :: রাণু সরকার।। 

তপ্ত রোদে মাঠঘাট বির্দীণ,
বর্ষার অপেক্ষায় থেকে থেকে অবশেষে সে এলো-
অবিরাম বারিধারা ঝরছে দেখে মনে হয় যেন কাঁচের
কুচি ঝরঝর করে ধরণীর স্তনগ্রন্থিতে
উপছে পড়ছে!

তখন তরুলতাপাতা তৃপ্ত হয়ে মনের হরষে করে নৃত্য!
গ্রীষ্মের দহনের পর চারিধার নবরূপে
অলঙ্কার স্বরূপ,
শুকনো মাটির গুঁড়োতে মাখা মলিন রূপ।
পিপাসিত মাঠঘাট রসবতী হয়ে হয় ঋতুমতী-
নতুন বীজের আশায় শ্রীঅঙ্গে ধারণ করে।
নতুন করে সাজিয়ে তোলে সম্পূর্ণরূপে তৃপ্ত
চারিধার তখন সে রূপবতী।

Share This
Categories
কবিতা

বাদলগগন :: রাণু সরকার।।

ভাবতে পারিনি, সেদিন আচমকা দেবে
আমায় বিদায়-
অব্যক্ত কিছু কথা বলার ছিলো
বলতে গিয়েও পারিনি বলতে সেথায়-

এলে তো লোভাতুরের মতো,আনলে নীরদবাহনকে সাথে করে
যদি বাদল আসতো সাথে সত্যি বলছি নিতাম তাকে প্রিয় করে!

কেনো জানো বলতে গিয়েও থেমে গেলাম-
ভেবে ছিলাম বৃষ্টিবাদল আসবে, এলে বর্ণচ্ছটা ছড়িয়ে দিতাম!

তোমার আচরণে হচ্ছিল গাত্রদাহ-
সাথে যদি আসতো ঘূর্ণিবায়ু- তবে থাকতে দিতাম এক সপ্তাহ।

Share This
Categories
কবিতা

চৈতিপবন : রাণু সরকার।

মেঘজালের আবরণ সড়িয়ে এসো
করি খেলা-
মনে পড়ে যে আনন্দ হারিয়ে গেছে
খুঁজে নিই চলো-
যা গেছে খোয়া তা নিয়ে অনুশোচনা
করে কি লাভ বলো-

এসেছিলে হৃদয়ে-সে এক যুগান্তে
বাদলগগনে ধূসর দিনে,
পড়েছে কি মনে?
যেদিনের বিচ্ছেদবেদনা ছিলো হনন
তুল্য,
তুমি অনুভূতিহীন-
আজ যখন এলে অন্তরালে কেনো?
তোমার হয়তো মনে নেই এখন চৈতির
শেষের দিক,
আসবো শ্রাবণধারায়-

অন্তরের পাড় ভেঙে প্রকাশিত করো
আধাঁর ঘরের প্রদীপ প্রখররূপে উজ্জ্বল!
তুমি এখন ভিন্ন দিকের দুরত্বে আছো,
এসেছিলে যে?
তবে কার প্রতিক্ষায় ছিলে নীরদের
পশ্চাদপসরণে?
হে আমার ক্ষণিকের সন্তুষ্টি প্রীতি।।

Share This
Categories
কবিতা

ঝরা কুঁড়ি : রাণু সরকার।।

বিহান বেলায় পদচারণ করতে গিয়ে
রাস্তায় কত না কি দেখি কিন্তু প্রসন্নচিত্তে
অনেক কিছুই দেখা হয়ে ওঠে না-
সেদিন বাঁকা দৃষ্টিতে দেখেছিলাম আগাছার
মাঝে মুকুলিকা,
কোনদিন হয়নি সংলাপ।

হঠাৎ একদিন দেখি দিবাবসানে অর্ধবিকশিত ফুল
গেলো ঝড়ে-
কি তার কারণ?
হয়তো পড়েছিলো কুদৃষ্টি-

কেনো সেদিন দেইনি সুদৃষ্ঠি পথের ধারে অবিন্যস্ত বলে?-
পড়শিরা যদি করে কানা-কানি-
সে ভয় যে ছিলো না তা বলবো না-
ক্ষতবিক্ষত পাপড়ি অনুজ্জ্বল ক্লান্ত কাঁদায়
আছে বিশ্রামে, কারোর দয়ার অপেক্ষায়।

দেখে কি থাকা যায়? অপরিণত বুদ্ধি নৈপুণ্য নয়,
ভোজনশালায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি-
আসলে আকারবিশিষ্ট সম্মানি তো –
গাছের গোড়াতেই চললো তাণ্ডবলীলা
কি তার দোষ? জঞ্জালে অবস্থান বলে?

দুরবস্থা দেখে সযত্নে ধুয়ে সাজাই হৃদয় পটে,
যে যা খুশি বলুক সে থাকবে পুষ্পধারে!

Share This
Categories
কবিতা

ভালোই আছি একলা : সোনাই পরামানিক।

আড়াবনী বাঁকুড়া
সমীরের সেই মায়া,
আজ আঁকে না কল্পনায় আল্পনা।
নিছক বস্তুর স্বাদ পেতে,
হলে অন্যের ঘরনি, বিবাহিত ললনা।
আমার হৃদয় প্রান্তর,
ছিল পূর্ণ বিকশিত প্রস্ফুটিত কানন।
মেঘখানি নিয়ে যেয়ে,
করিলে অন্যের আঙনে ঝিরিঝিরি বর্ষণ।
মরিচিকা মনকে ধরিতে,
ধাবিত হতে চায় না আমার ক্ষন জীবন।
দিঘি ভেবে করে ভুল,
সাঁতার না জানা প্রান তীরে একা এখন।
ভালোই আছি একলা,
শান্ত পবনে আলোড়িত দোলায়মান বন।
ক্ষুদ্র কুঠির যেমন ভবন,
সেথা বসে নিজ হাতের অন্নে দিয়েছি মগন।

Share This