Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

মেয়ে রা কেনো পায়ে নুপুর পরে? এর আধ্যাত্মিক, বৈজ্ঞানিক ও স্বাস্থ্যকর কি কি গুণ রয়েছে?

ভারতীয় ও বাংলাদেশী সংস্কৃতিতে মেয়েরা ও মহিলাদের দ্বারা পরিধান করা নূপুর, যাকে নূপুরও বলা হয়, তার তাৎপর্য সম্পর্কে এখানে একটি বিস্তৃত নিবন্ধ দেওয়া হল:

নূপুরের সাংস্কৃতিক তাৎপর্য—

নূপুর, যাকে নূপুর বা পায়েল নামেও পরিচিত, হাজার হাজার বছর ধরে ভারতীয় ও বাংলাদেশী সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। নূপুর পরার ঐতিহ্য সিন্ধু সভ্যতার প্রায় ২৫০০ অব্দে শুরু হয়। বাঙালি সংস্কৃতিতে, নূপুরকে নারীদের পোশাকের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, বিশেষ করে বিবাহ এবং উৎসবের মতো বিশেষ অনুষ্ঠানে।

নূপুরের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য—

হিন্দু ধর্মে, নূপুরে আধ্যাত্মিক শক্তি থাকে বলে বিশ্বাস করা হয় যা পরিধানকারীর চক্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। নূপুরের শব্দ একটি প্রশান্তিদায়ক প্রভাব তৈরি করে, চাপ এবং উদ্বেগ হ্রাস করে বলে মনে করা হয়। কিছু হিন্দু ঐতিহ্যে, নূপুরকে অশুভ আত্মাদের তাড়াতে এবং সৌভাগ্য বয়ে আনতে বিশ্বাস করা হয়।

নুপুরের বৈজ্ঞানিক উপকারিতা—-

যদিও নুপুরের সুনির্দিষ্ট উপকারিতা সম্পর্কে চূড়ান্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই, কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে নুপুর পরা ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার উপর সূক্ষ্ম প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ:

– নুপুরের শব্দ একটি শান্ত প্রভাব তৈরি করতে পারে, চাপ এবং উদ্বেগ হ্রাস করতে পারে।

– নুপুরের মৃদু নড়াচড়া পায়ে রক্ত ​​সঞ্চালনকে উদ্দীপিত করতে পারে।

পায়ের উপর নুপুরের চাপ নির্দিষ্ট চাপ বিন্দুকে উদ্দীপিত করতে পারে, শিথিলতা বৃদ্ধি করে এবং ব্যথা হ্রাস করে।

নুপুরের স্বাস্থ্য উপকারিতা—

বিকল্প চিকিৎসার কিছু অনুশীলনকারী বিশ্বাস করেন যে নুপুর পরার বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

– চাপ এবং উদ্বেগ হ্রাস
– রক্ত ​​সঞ্চালন উন্নত করা
– ব্যথা এবং প্রদাহ উপশম করা
– শিথিলতা এবং প্রশান্তি প্রচার করা

নকশা এবং উপকরণ—-

নুপুর সহজ থেকে জটিল বিভিন্ন ডিজাইনে আসে এবং রূপা, সোনা, তামা এবং এমনকি কাঠের মতো বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি। কিছু আধুনিক ডিজাইনে পুঁতি, পাথর এবং অন্যান্য সাজসজ্জার উপাদান অন্তর্ভুক্ত থাকে। উপাদান এবং নকশার পছন্দ প্রায়শই উপলক্ষ, ব্যক্তিগত পছন্দ এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর নির্ভর করে।

উপসংহার—

পরিশেষে, নূপুর ভারতীয় ও বাংলাদেশী সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা সৌন্দর্য, নারীত্ব এবং বৈবাহিক মর্যাদার প্রতীক। যদিও এর আধ্যাত্মিক ও বৈজ্ঞানিক উপকারিতা ব্যাপকভাবে নথিভুক্ত করা হয়নি, তবুও নূপুর পরার প্রথা হাজার হাজার বছর ধরে ভারতীয় ও বাংলাদেশী সংস্কৃতির একটি লালিত অংশ।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্বর্ণযুগের অন্যতম দাপুটে অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবী, বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক বর্ণময় চরিত্র।।।

সুপ্রিয়া দেবী (৮ জানুয়ারী, ১৯৩৩), একজন বাঙালী অভিনেত্রী, যিনি বাংলা চলচ্চিত্রে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করেন। তার আসল নাম কৃষ্ণা এবং ডাকনাম বেনু। উত্তম কুমারের সঙ্গে ‘বসু পরিবার’ ছবিতেই বড় পর্দায় তাঁর আত্মপ্রকাশ। ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ছবিতে তাঁর অনবদ্য অভিনয় এখনও সবার হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে ৷ মোট ৪৫টি ছবিতে তিনি অভিনয় করেন
সুপ্রিয়া দেবী মায়ানমারের মিয়িত্‌কিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা বিখ্যাত আইনজীবী গোপাল চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, বার্মায় বসবাসরত অনেক ভারতীয় ভারতে চলে আসেন। সুপ্রিয়া দেবীর পরিবার শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতায় বসবাস শুরু করেন।

সুপ্রিয়া দেবী তার বাবার নির্দেশিত দুটি নাটকে অভিনয় করে সাত বছর বয়সে তার অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেন।  তিনি ছোটবেলা থেকেই নাচের প্রতি খুব আগ্রহী ছিলেন, এমনকি তিনি থাকিন নু থেকে একটি পুরস্কার জিতেছিলেন।  শৈশবকাল থেকেই তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন নীহার দত্ত, যিনি গুহ ঠাকুরতা পরিবারের একজন সদস্যকে বিয়ে করেছিলেন এবং মিসেস নীহার গুহ ঠাকুরতা নামে পরিচিত ছিলেন, যিনি সেই সময়ে বার্মার একজন বিশিষ্ট সমাজসেবী ছিলেন।
১৯৪৮ সালে, ব্যানার্জি পরিবার ভালোর জন্য কলকাতায় পুনর্বাসিত হয়।  তারা ১৯৪২ সালে শরণার্থী শিবিরে বসবাস করত, যখন জাপান জোরপূর্বক বার্মা দখল করে।  যুবতী সুপ্রিয়া ও তার পরিবার জোর করে পায়ে হেঁটে কলকাতায় ফিরতে বাধ্য হয়।
কলকাতায়, তিনি তার নাচের প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখেন এবং গুরু মুরুথাপ্পান এবং পরে গুরু প্রহ্লাদ দাসের কাছ থেকে নৃত্যের প্রশিক্ষণ নেন।  সুপ্রিয়া দেবী এবং তার পরিবারের সাথে বিখ্যাত অভিনেত্রী চন্দ্রাবতী দেবীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।

১৯৫৪ সালে, সুপ্রিয়া দেবী বিশ্বনাথ চৌধুরীকে বিয়ে করেন এবং পরে তাদের একমাত্র কন্যা সোমা জন্মগ্রহণ করেন।  ১৯৫০ এর দশকের শেষের দিকে একটি বিখ্যাত চলচ্চিত্র দিয়ে ফিরে আসার আগে তিনি কিছু সময়ের জন্য চলচ্চিত্র থেকে অবসর নিয়েছিলেন।
নানা চরিত্র, সে সব চরিত্রের বৈচিত্রময়তা সুপ্রিয়া দেবীকে বসিয়েছে এক ভিন্ন আসনে। এর মধ্যে বহু ছবিতেই তাঁর বিপরীতে ছিলেন বাংলা ছায়াছবির আর এক কিংবদন্তি অভিনেতা উত্তম কুমার। তাঁর সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করাটা বড় সহজ কথা নয়। কিন্তু সুনিপুণ দক্ষতায় দু’জনের এক আশ্চর্য রসায়ন তৈরি হয়েছিল পর্দায়। এএর পর তাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে।  তারপর থেকে তারা বহু বছর ধরে একসাথে থাকতেন।

তাঁর চলচ্চিত্র সমূহ —–

দেবদাস, দুই পুরুষ, সন্ধ্যা রাগ, সন্ন্যাসী রাজা, যদি জানতেম, বাঘবন্দী খেলা, বনপলাশীর পদাবলী, চিরদিনের, দ্য নেমসেক, একটী নদীর নাম, শেষ ঠিকানা, মন নিয়ে, চৌরঙ্গি, তিন অধ্যায়, কাল তুমি আলেয়া, শুধু একটি বছর, হানিমুন, ইমান কল্যাণ, কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী, আপ কি পরিছাঁইয়া, দূর গগন কি ছাঁও মে, লাল পাত্থর, বেগানা, নতুন ফসল, শুন বর নারী, বসু পরিবার, সূর্য শিখা, কোমল গান্ধার, মধ্য রাতের তারা, মেঘে ঢাকা তারা। এত অজস্র চরিত্রের মধ্যেও সুপ্রিয়া চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন ঋত্বিক ঘটকের ছবি ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ও ‘কোমলগান্ধার’-এ তাঁর কাজের জন্য। বাঙালির বড় আপন এই অভিনেত্রী বেঁচে থাকবেন তাঁর অভিনীত চরিত্রগুলির মধ্যেই।

তিনি ২০১১ সালে বঙ্গভূষণ পুরস্কার অর্জন করেন, যা পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ বেসামরিক উপাধি। ২০১৪ সালে বাংলা চলচ্চিত্রে তার অবদানের জন্য ভারত সরকার সুপ্রিয়া দেবীকে, ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার “পদ্মশ্রী” তে ভূষিত করেন।

২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি এই মহান অভিনেত্রী কলকাতায় ৮৫ বছর বয়সে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। টলিউড ইন্ডাষ্ট্রির কাছে তিনি সকলের প্রিয় ‘বেনু দি’। কিংবদন্তি অভিনেত্রীর অভিনয় ক্যারিশ্মা নিয়ে আলোচনা নেহাতই বাতুলতা। তিনি চলে গিয়েছেন ছয় বছর হল৷ তবে সিনেপ্রেমী বাঙালির মননে তিনি থেকে যাবেন আজীবন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

আঙুরবালা, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ও মঞ্চাভিনেত্রী – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আঙুরবালা (১৯ অগস্ট, ১৯০০ – ৭ জানুয়ারি, ১৯৮৪) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী ও মঞ্চাভিনেত্রী। নজরুলগীতিতেও তার সমধিক প্রসিদ্ধি ছিল।

 

জন্ম ও পরিবার—–

 

তার পিতৃদত্ত নাম ছিল প্রভাবতী দেবী। তার জন্ম কলকাতার কাশিপুরে। পিতার নাম বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের নিবাস ছিল বর্ধমানের ইন্দাসে।

 

শিক্ষাজীবন—–

 

মেধাবী ছাত্রী হিসেবে স্কুলে ছাত্রিবৃত্তি পরীক্ষায় জলপানি লাভ। সঙ্গীত প্রতিভা তার সহজাত। সুকণ্ঠের অধিকারী হওয়ায় শৈশবেই সঙ্গীত সাধনায় আত্মনিয়োগ করেন। সাত বৎসর বয়সে পিতৃবন্ধু অমূল্য মজুমদারের কাছে গানে দীক্ষা। খেয়াল, ঠুংরি, দাদরা ও গজলে একাধিক গুণী ওস্তাদের কাছে তামিল গ্রহণ। কিশোরী বয়সেই গ্রামোফোন কোম্পানি থেকে গানের রেকর্ড প্রকাশ। তার প্রথম গানের রেকর্ড- ‘ বাঁধ না তরীখানি আমার এ নদীকূলে’। তার সঙ্গীত জীবনের উপর উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন জিৎপ্রসাদ, রামপ্রসাদ মিত্র, ঈষাণ ঠাকুর, জমীরুদ্দিন খাঁ এবং কাজী নজরুল ইসলাম। ঈষাণ ঠাকুরের কাছে কীর্তন, জমীরুদ্দিন খাঁর কাছে গজল ও দাদরা এবং কাজী নজরুল ইসলামের কাছে নজরুল গীতি শিখেন। অজস্র বাংলা, হিন্দি ও উর্দু গানে কণ্ঠদান করেন। তার গাওয়া রেকর্ডের সংখ্যা আনুমানিক পাঁচশত। তার রবীন্দ্র সংগীতের রেকর্ডও আছে। অভিনেত্রী হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেন। মিনার্ভা থিয়েটারের সংগে জড়িত থেকে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেন। তার অভিনীত একটি ছবির পরিচালক ছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। সংগীত শিল্পী হিসাবে বহু রাজা-মহারাজার দ্বারা আমন্ত্রিত হয়েছেন।

 

সম্মাননা——

 

১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিট এবং ভারত সরকারের সঙ্গীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেছিলেন।

 

মৃত্যু—–

 

তিনি ৭ জানুয়ারি ১৯৮৪ সালে মারা যান।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্মরণে, ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী রেণুকা দাশগুপ্ত।

রেণুকা দাশগুপ্ত (২২ আগস্ট ১৯১০ — ১ জানুয়ারি ১৯৯১) একজন বাঙালি গায়িকা ছিলেন, যিনি অতুলপ্রসাদ সেনের সেরা পরিচিত গায়িকা হিসেবে বিবেচিত ছিলেন। তিনি অতুলপ্রসাদ সেন, কাজী নজরুল ইসলাম ও দিলীকুমার রায়ের সরাসরি শিষ্য ছিলেন।

রেণুকা দাশগুপ্ত পশ্চিমবঙ্গের কোন্ননগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি গয়া, ঢাকা ও কলকাতায় বসবাস করতেন। তিনি সাহানা দেবী, অতুলপ্রসাদ সেন, কনক বিশ্বাসের খুডতুতো ভাই। রেণুকা দাশগুপ্ত ১৯২০ এর দশকের শেষদিকে ঢাকায় টিকাটুলিতে কামরুন্নেসা গার্লস হাই স্কুলে সঙ্গীত শিক্ষা নেন। তিনি হীরেন্দ্র চন্দ্র দাশগুপ্তকে বিয়ে করেন। তিনি ১৯৩০ দশকের প্রথম দিকে ভারতীয় প্রকৌশল বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান, শিবপুরে স্নাতক প্রকৌশলী সম্পূর্ণ করেন এবং কলকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। তিনি কলকাতার বিমান বাহিনীর রেডিও অডিশন কমিটির সাথে যুক্ত ছিলেন।

প্রারম্ভিক কাজ–

তের বৎসর বয়সে রেণুকা প্রথম শ্যামাসংগীতের রেকর্ড করেন। অধিকাংশ রেকর্ড ছিল কীর্তনের। তার কণ্ঠে গীত অতুলপ্রসাদী- পাগলা মনটারে তুই বাঁধ এবং কীর্তনগান – যদি গোকুলচন্দ্র ব্রজে নাহি এল এক সময় বাংলা গানে আলোড়ন এনেছিল। রবীন্দ্রসঙ্গীত ও নজরুল গীতিতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন। তবে একসময় খ্যাতির অন্তরালে চলে যান।

রবীন্দ্রসংগীত—-

দিনের পরে দিন যে ছিল (১৯৩৫)

আমার কি বেদনা (১৯৩৫)

বসন্তে বসন্তে তোমার কবিরে দাও ডাক

কত কথা তারে ছিল বলিতে

তোমার সুরের ধারা ঝরে যেথায়।

 

নজরুলগীতি–

 

কোন রস-যমুনার কূলে

শুকসারী সম তনুমন মম।

 

অতুল প্রসাদ—

 

পাগলা মনটারে তুই বাঁধ (১৯৩২)

এমনও বাদলে তুমি কোথা

নিদ নাহি আখিপাতে

এসো দুজনে খেলি

ওহে জগৎ কারণ (১৯৬৯/৭০)

চাঁদনী রাতে

আমর চোখ বেঁধে ভবের খেলায়

যদি তোর হৃদ-যমুনা

কে গো গাহিলে

ওগো সাথি মম সাথি

শুকতারা তোমার ছলো ছলো আখি

আমারও প্রাণ কোথা যায়

সে ডাকে আমারে

কি আর চাহিব বল

তব অন্তরও এত মন্থর

শ্রাবণ ঘনঘটা

আজ আমার শূন্য ঘরে

ক্রন্দসী পথচারিণী।

 

অন্যান্য গান (তালিকা অসম্পূর্ণ)—-

 

যদি গোকুলচন্দ্র ব্রজে না এলো – কীর্তন

আয়ে ভিকরিন প্রেম নাগর কি

কী রূপ দেখিনু কালা – জ্ঞানদাস – কীর্তন

দিনে দিনে দিন যে চলে যায় – ভাটিয়ালী

নন্দনান্দন চন্দে চন্দনা – কীর্তন

মাধব তুনু রাহালি আবার মধুপুর – কীর্তন

ক্ষমিও হে শিব।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্মরণে – প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি আবৃত্তিকার ও বাচিক শিল্পী গৌরী ঘোষ।

গৌরী ঘোষ (বিবাহের পূর্বে গৌরী মজুমদার) (৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৩৮ – ২৬ আগস্ট ২০২১) ছিলেন একজন খ্যাতনামা ভারতীয় বাঙালি আবৃত্তিকার তথা বাচিক শিল্পী। তিনি ও তার স্বামী পার্থ ঘোষ বাংলা আবৃত্তি জগতে ছিলেন অন্যতম জুটি। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধের সময় অসামান্য কাজের জন্য  বাংলাদেশ সরকারের “মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মান” ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের “কাজী সব্যসাচী সম্মান” লাভ করেন।

জন্ম ও শিক্ষা জীবন—

গৌরী মজুমদারের জন্ম ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের অধুনা বিহার রাজ্যের কাটিহারে। সেদিন ছিল শারদীয়া দুর্গাপূজার মহাষষ্ঠী, তাই  নাম রাখা হয়েছিল গৌরী। পিতা অমূল্যকুমার মজুমদার ছিলেন ভারতীয় রেলের কর্মচারী। তার মা ছিলেন রবীন্দ্র কবিতা অনুরাগী। তাদের আদি নিবাস ছিল অধুনা পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চোপা গ্রামে। তার মেজদা ছিলেন প্রখ্যাত গায়ক ও চলচ্চিত্র অভিনেতা রবীন মজুমদার। পিতার বদলির কারণে তাকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে হয়। প্রাথমিক পাঠ শেষে কিছুদিন কলকাতায় অবস্থানের সময় মুরলীধর গার্লস হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন। সেখানে তার প্রিয় বান্ধবী ছিলেন ঋতু গুহ। পরে আবার কাটিহারে ফিরে গেলে বাড়িতেই পড়াশোনা করেন এবং প্রাইভেটে ম্যাট্রিক পরীক্ষা পাশ করেন। গৌরীর জীবনে তার মেজদা রবীন মজুমদারের প্রভাব ছিল অপরিসীম। তার সহযোগিতায় ও প্রশ্রয়ে তিনি কলকাতায় থেকে স্নাতক হন, এম.এও পাশ করেন।

কর্মজীবন—

এম.এ পাশের পর কিছুদিন শিক্ষকতাও করেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে উপস্থাপিকা-ঘোষিকা হিসাবে যোগ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। প্রায় তিন দশকের বেশী সময় ধরে কলকাতা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত আকাশবাণীর অনেক অনুষ্ঠানে গৌরীর কণ্ঠে সুরম্য উপস্থাপনা শুনেছেন বাংলার শ্রোতারা। ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিবাহ করেন আর এক সুস্নাত ব্যক্তিত্বের আবৃত্তিকার পার্থ ঘোষকে। বাংলার আবৃত্তি জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্রজুটি তথা গৌরী ঘোষ ও পার্থ ঘোষ দম্পতি জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। তারা আবৃত্তি ও শ্রুতিনাটককে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেন। তাঁদের যৌথ শ্রুতি নাটক ‘কর্ণকুন্তি সংবাদ’ জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে কিংবদন্তি হয়ে ওঠে সেসময়। আকাশবাণীতে দীর্ঘদিন কাজ করা ছাড়াও মঞ্চেও উপস্থাপনা করেছেন তারা। বাংলা কবিতা নিয়ে তাদের একাধিক সিডি-ক্যাসেট রয়েছে। এরমধ্যে ‘এই তো জীবন’সহ বেশ কয়েকটি জনপ্রিয়।
তিনি পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমির সদস্যও ছিলেন।
মূলত আবৃত্তিকার বা বাচিক শিল্পী হিসাবে পরিচিতি থাকলেও তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিপ্রাপ্ত ছায়াছবি ঋতুপর্ণ ঘোষের অসুখ (চলচ্চিত্র) রোহিনীর মা’র ভূমিকায় অভিনয় করেন।
সাংস্কৃতিক জগতের ব্যক্তি হয়েও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে বহু অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন গৌরী ঘোষ। স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনের পাশাপাশি শরণার্থীদের ত্রাণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন। তার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “উপমা” মাধ্যমে দুঃস্থদের  সাহায্যও করেছেন বিভিন্ন সময়ে।

মৃত্যু—

বেশ কিছুদিন গৌরী ঘোষ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। ২০২১ খ্রিস্টাব্দে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় এবং তখন থেকে অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সপ্তাহখানেকের বেশী সময়ে তিনি কলকাতার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কার্ডিয়াক সাইন্সে ভর্তি  ছিলেন। অবশেষে ২৬ আগস্ট  তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

পুরস্কার—

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মান’ প্রদান করে। তার অনবদ্য আবৃত্তি বাংলার শ্রোতাদের হৃদয়ে যে অনুভূতি জাগ্রত করে তারই স্বীকৃতিস্বরূপ পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে “কাজী সব্যসাচী পুরস্কার” প্রদান করে।
গৌরী ঘোষ ও পার্থ ঘোষের জীবন আধারিত তথ্যচিত্র – এমন তরণী বাওয়া মুক্তি পায় গৌরী ঘোষের জন্ম দিন উপলক্ষ করে ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর কলকাতার মধুসূদন মঞ্চে।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
নারী কথা রিভিউ

জীবন বদলে দেওয়া সারদা মায়ের কয়েকটি বিখ্যাত উক্তি।।।

সারদা মায়ের এমনই কয়েকটি বিখ্যাত উক্তি আজ জেনে নেব আমরা।

 

* ‘মনটাকে বসিয়ে আলগা না দিয়ে কাজ করা ঢের ভাল। মন আলগা হলেই যত গোল বাধায়।’

 

* ‘দয়া যার শরীরে নাই, সে কি মানুষ? সে তো পশু। আমি কখনও কখনও দয়ায় আত্মহারা হয়ে যাই, ভুলে যাই যে আমি কে।’

 

* ‘একশো জনকে খাওয়াতে হবে না, কিন্তু চোখের সামনে একজন ক্ষুধার্তকে দেখলে তাঁকে একটু খেতে দিও।’

 

* ‘যেমন ফুল নাড়তে নাড়তে ঘ্রাণ বের হয়, চন্দন ঘষতে ঘষতে সুগদ্ধ বের হয়, তেমনই ভগবত্‍ তত্ত্বের আলোচনা করতে করতে তত্ত্বজ্ঞানের উদয় হয়।’

 

* ‘ভাঙতে সবাই পারে, গড়তে পারে ক’জনে? নিন্দা ঠাট্টা করতে পারে সব্বাই, কিন্তু কী করে যে তাকে ভালো করতে হবে, তা বলতে পারে ক’জনে?’

 

* ‘কাজ করা চাই বইকি, কর্ম করতে করতে কর্মের বন্ধন কেটে যায়, তবে নিষ্কাম ভাব আসে। একদণ্ডও কাজ ছেড়ে থাকা উচিত নয়।’

 

* ‘কর্মফল ভুগতে হবেই। তবে ঈশ্বরের নাম করলে যেখানে ফাল সেঁধুত, সেখানে সুঁচ ফুটবে। জপ তপ করলে কর্ম অনেকটা খণ্ডণ হয়। যেমন সুরথ রাজা লক্ষ বলি দিয়ে দেবীর আরাধনা করেছিল বলে লক্ষ পাঁঠায় মিলে তাঁকে এক কোপে কাটলে। তার আর পৃথক লক্ষ বার জন্ম নিতে হল না। দেবীর আরাধনা করেছিল কিনা। ভগবানের নামে কমে যায়।’

 

* ‘কত সৌভাগ্য, মা এই জন্ম, খুব করে ভগবানকে ডেকে যাও। খাটতে হয়, না-খাটলে কি কিছু হয়? সংসারে কাজকর্মের মধ্যেও একটি সময় করে নিতে হয়।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট ।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার ও প্রাবন্ধিক প্রতিভা বসু।

“প্রতিভা বসু (১৩ মার্চ, ১৯১৫ – ১৩ অক্টোবর, ২০০৬) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার ও প্রাবন্ধিক। পারিবারিক পরিচয়ে তিনি বুদ্ধদেব বসুর স্ত্রী।”
প্রতিভা বসু অবিভক্ত বাংলার (অধুনা বাংলাদেশের) ঢাকা শহরের অদূরে বিক্রমপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবার নাম আশুতোষ সোম ও মায়ের নাম সরযূবালা সোম। বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে বিবাহের আগে তিনি রাণু সোম নামে পরিচিত ছিলেন। তার দুই মেয়ে মীনাক্ষী দত্ত ও দময়ন্তী বসু সিং এবং এক ছেলে শুদ্ধশীল বসু। শুদ্ধশীল বসু মাত্র ৪২ বছর বয়সে মারা যান।
প্রতিভা বসু প্রথম যৌবনে সংগীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। তিনি দিলীপকুমার রায়, কাজী নজরুল ইসলাম, হিমাংশু দত্ত ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে গান শেখেন। রাণু সোম নামে তার একাধিক গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়। ১২ বছর বয়সে প্রথম তিনি গ্রামাফোন ডিস্কে রেকর্ড করেন।স্বাধীনতার আগে বড়ো হওয়ার ফলে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি। এমনকি নিজেও সেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামী লীলা নাগের অনুপ্রেরণায় বীর বিপ্লবী অনন্ত সিংহের ফাঁসি রদ করার জন্য গান গেয়ে অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন প্রতিভা বসু।
গান করার পাশাপাশি লিখতে শুরু করেন। প্রতিভা বসু’র জনপ্রিয়তা এমনই ছিল যে বই বিক্রেতা এবং প্রকাশকদের মধ্যে বই প্রকাশ ও বিতরণ নিয়ে ঝগড়ারও ঘটনা ঘটে। তার উল্লেখযোগ্য রচনাগুলি হল —–
উপন্যাস—-‐
মনোলীনা (১৯৪৪),
সেতুবন্ধ (১৯৪৭),
সুমিত্রার অপমৃত্যু,
মনের ময়ূর (১৯৫২),
বিবাহিতা স্ত্রী (১৯৫৪),
মেঘের পরে মেঘ (১৯৫৮),
মধ্যরাতের তারা (১৯৫৮),
সমুদ্রহৃদয় (১৯৫৯),
বনে যদি ফুটল কুসুম (১৯৬১),
‘ঘুমের পখিরা’ (১৯৬৫)
‘সমুদ্র পেরিয়ে (১৯৭৫)
‘ঈশ্বরের প্রবেশ’ (১৯৭৮)
‘পদ্মাসনা ভারতী’ (১৯৭৯)
‘প্রথম বসন্ত’
‘রাঙা ভাঙা চাঁদ’ (১৯৯৪)
‘মালতীদির উপাখ্যান (১৯৯৭)
‘উজ্জ্বল উদ্ধার’
‘সকালের সুর সায়াহ্নে’
‘দ্বিতীয় নক্ষত্র’
‘সাগরের স্বাক্ষর’ (১৯৯৮)
‘অগ্নিতুষার’
‘হৃদয়ের বাগান’
‘সোনালি বিকেল’
‘আলো আমার আলো’
‘অপেক্ষাগৃহ’
‘সমাগত বসন্ত’
‘আন্তোনিনা’
‘সূর্যাস্তের রং’
‘মাধুরীলতার ডায়েরী’
‘অতলান্ত’
‘পথে হল দেরী’
ইত্যাদি।

ছোটোগল্প———-
মাধবীর জন্য (১৯৪২),
বিচিত্র হৃদয় (১৯৪৬),
প্রতিভূ’
‘ভালবাসার জন্ম’
‘ঘাসমাটি’
‘বিকেলবেলা’
‘স্বর্গের শেষ ধাপ’
‘রূপান্তর’
‘খন্ডকাব্য’
‘অন্তহীন’
‘স্বামী-স্ত্রী’
‘ইস্টিশানের মিষ্টিফুল’
‘সেইদিন সকালে’
‘গুণীজনোচিত’
‘উৎস’
‘শব্দব্রহ্ম’
‘নিখাত সোনা’
‘আয়না’
‘সকালবেলা’
‘ঈশ্বর ও নারী’
‘মাৎসুমোতো’
‘মিসেস পালিতের গার্ডেন পার্টি’
‘সত্য মিথ্যা,মিথ্যা সত্য’
‘প্রথম সিঁড়ি’
‘মাদমোয়াজেল গতিয়ে’
‘কাঁচা রোদ’
‘সন্ধ্যাবেলা’
‘স্বপ্ন ভেঙে যায়’
‘ভেজানো দরজা’
‘সত্যাসত্য’
‘ন্যায় অন্যায়’
‘গর্ভধারিণী
‘অন্ধকারে’
‘সুমিত্রার অপমৃত্যু’
‘মহাভোজ’
‘নতুন পাতা’
প্রবন্ধ——–
মহাভারতের মহারণ্যে।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

মাতঙ্গিনী হাজরা ভারতীয় বিপ্লবী, স্বাধীনতা আন্দোলনের শহীদ- একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে মাতঙ্গিনী হাজরা  প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধু শহীদ ভগৎ সিং-এর মতই নয় বরং শক্তিশালী নারীদের দ্বারা প্রশস্ত হয়েছিল যারা তাদের মাটিতে দাঁড়িয়েছিল এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ব্রিটিশদের সাথে লড়াই করেছিল। মাতঙ্গিনী হাজরা  ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা ছিলেন মাতঙ্গিনী হাজরা।

মাতঙ্গিনী হাজরা (১৯ অক্টোবর ১৮৭০ – ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৪২) ছিলেন একজন ভারতীয় বিপ্লবী যিনি ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।  তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৪২ সালে তমলুক থানা দখলের জন্য সমর পরিষদ (যুদ্ধ পরিষদ) দ্বারা গঠিত স্বেচ্ছাসেবকদের (বিদ্যুত বাহিনীর) পাঁচটি ব্যাচের একজনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, যখন তিনি ব্রিটিশ ভারতীয় পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হন।  থানার সামনে, মেদিনীপুরে প্রথম “ভারত ছাড়ো” আন্দোলনের শহিদ হন।  তিনি একজন কট্টর গান্ধীয়ান ছিলেন এবং “বৃদ্ধা গান্ধী” এর জন্য তাকে স্নেহের সাথে গান্ধী বুড়ি নামে ডাকা হত।

১৮৭০ সালে তমলুকের নিকটবর্তী হোগলা গ্রামের এক মহিষ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করা ছাড়া তার প্রাথমিক জীবন সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যায় না এবং কারণ তিনি একজন দরিদ্র কৃষকের মেয়ে ছিলেন, তাই তিনি আনুষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেননি।   দারিদ্র্যের কারণে বাল্যকালে প্রথাগত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন মাতঙ্গিনী। তিনি তাড়াতাড়ি বিয়ে করেছিলেন (১২ বছর বয়সে) এবং তার স্বামীর নাম ত্রিলোচন হাজরা এবং তিনি আঠারো বছর বয়সে কোন সন্তান না নিয়ে বিধবা হয়েছিলেন।  তার শ্বশুরের গ্রামের নাম আলিনান, তমলুক থানার। তিনি মাত্র আঠারো বছর বয়সেই নিঃসন্তান অবস্থায় বিধবা হয়েছিলেন।
মেদিনীপুর জেলার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল এই আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণ।  ১৯০৫ সালে, মাতঙ্গিনী হাজরা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে সরাসরি জড়িত হন।  আদর্শগতভাবে তিনি ছিলেন গান্ধীবাদী।  ১৯৩২ সালে, মাতঙ্গিনী আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দেন।  সে সময় তিনি লবণ আইন অমান্য করার জন্য জেলে ছিলেন।  তবে কিছুক্ষণ পরেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।  কিন্তু চৌকিদারি ট্যাক্স বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকলে তাকে আবার কারারুদ্ধ করা হয়।  এই সময় তিনি ছয় মাস বহরমপুর জেলে বন্দী ছিলেন।  হিজলী বন্দী নিবাসে কিছুদিন বন্দীও ছিলেন।  মুক্তির পর, তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন সক্রিয় সদস্য হন এবং নিজের হাতে চরকা ঘুরিয়ে খাদি কাপড় তৈরি করতে শুরু করেন।  ১৯৩৩ সালে, শ্রীরামপুরে একটি বিভাগীয় কংগ্রেস অধিবেশনে যোগদানের সময় পুলিশের লাঠিচার্জে মাতঙ্গিনী আহত হন।
ভারত ছাড়ো আন্দোলনের অংশ হিসেবে, কংগ্রেস সদস্যরা মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন থানা ও অন্যান্য সরকারি অফিস দখল করার পরিকল্পনা করেছিল।  এটি ছিল জেলায় ব্রিটিশ সরকারকে উৎখাত করে একটি স্বাধীন ভারতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটি পদক্ষেপ।  তখন ৭২ বছর বয়সী হাজরা তমলুক থানা দখলের জন্য ছয় হাজার সমর্থকের, বেশিরভাগ মহিলা স্বেচ্ছাসেবকদের একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেন।  মিছিলটি শহরের উপকণ্ঠে পৌঁছলে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারার অধীনে ক্রাউন পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার নির্দেশ দেয়।  সামনে এগোতেই একবার গুলিবিদ্ধ হন হাজরা।  স্পষ্টতই, তিনি এগিয়ে গিয়ে জনতার উপর গুলি না চালানোর জন্য পুলিশের কাছে আবেদন করেন।  জাতীয় সরকারের মুখপত্র বিলাব্বির মতে, ফৌজদারি আদালত ভবনের উত্তর দিক থেকে মাতঙ্গিনী একটি মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।  পুলিশ গুলি চালালে তিনি অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের পেছনে ফেলে নিজে নিজে এগিয়ে যান।  পুলিশ তাকে তিনবার গুলি করে।  তার কপালে ও দুই হাতে গুলি লেগেছে।  তারপরও সে চলতে থাকে।  বারবার গুলি চালানো সত্ত্বেও, তিনি বন্দে মাতরম, “মাতৃভূমির বিজয়” বলতে থাকেন।  ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও ওড়ানোর সময় তিনি মারা যান।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর, মাতঙ্গিনী হাজরার নামে অসংখ্য স্কুল, পাড়া এবং রাস্তার নামকরণ করা হয়।  কলকাতার দীর্ঘ হাজরা রোডের নামকরণ করা হয়েছে তাঁর নামে।  স্বাধীন ভারতে কলকাতা শহরে প্রথম কোনো নারীর মূর্তি স্থাপন করা হয় তা মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তি।  ১৯৭৭ সালে, এই মূর্তিটি কলকাতার ময়দানে স্থাপন করা হয়েছিল।  তমলুকের ঠিক যে জায়গায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল সেখানে তাঁর একটি মূর্তিও রয়েছে।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

‘অপরাজিতা দেবী’ ছদ্মনামে সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মহিলা কবি – রাধারাণী দেবী — একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।

রাধারাণী দেবী বিশ শতকের অন্যতম বাঙালি কবি। ভাষার মাধুর্যে ভাবের স্নিগ্ধতায় আর ছন্দের সাবলীল দক্ষতায় ‘অপরাজিতা দেবী’ ছদ্মনামে সাহিত্য জগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মহিলা কবি। আজ তাঁর জন্ম দিন।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন—-
রাধারানী দেবী ১৯০৩ সালের ৩০ নভেম্বর কলকাতা, ব্রিটিশ ভারতের জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পিতা আশুতোষ ঘোষও ছিলেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট, পণ্ডিত, সাহিত্যপ্রেমী এবং রবীন্দ্রনাথের গভীর ভক্ত।  রাধারাণী ছিলেন তাঁর এবং নারায়ণী দেবীর দশম সন্তান।  তার শৈশব কেটেছে কোচবিহার জেলার দিনহাটায়, যেখানে তার বাবা কাজ করতেন।  তিনি  ছবিরউন্নিসা গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং মাইনর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।  এরপর স্ব-শিক্ষার মাধ্যমে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন।  পারিবারিক শিক্ষার পরিবেশে তার শৈশব কেটেছে আনন্দে।
বাড়িতে প্রত্যেক সদস্যদের জন্য আসত ‘প্রবাসী’, ‘শিশু’, ‘মৌচাক’ , ‘সন্দেশ’, ‘সোপান’, ‘ভারতবর্ষ’ প্রভৃতি নানান পত্র পত্রিকা। তার সেজদার হাতে-লেখা ভাইবোনদের পত্রিকা ‘সুপথ’-এ দশ বছর বয়সে লেখা দেন তিনি। তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় ‘মানসী ও মর্মবাণী’ পত্রিকায়।
কিন্তু তেরো বছর বয়সে প্রকৌশলী সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।  তার স্বামী যখন কয়েক মাসের মধ্যে ‘এশিয়াটিক ফ্লু’-তে আকস্মিকভাবে মারা যান, তখন তিনি স্বেচ্ছায় কঠিন বিধবা জীবন যাপন করেন।
সাহিত্যজীবন—-
সাহিত্যক্ষেত্রে কবিতা দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করতে লাগলেন রাধারাণী দত্ত নামে ‘ভারতবর্ষ’, ‘উত্তরা’,’কল্লোল’, ‘ভারতী’ প্রভৃতি পত্রিকায়। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে তার প্রথম গল্প ‘বিমাতা’ প্রকাশিত হয় ‘মাসিক বসুমতী’তে। প্রথম প্রবন্ধ ‘পুরুষ’ প্রকাশিত হয় ‘কল্লোল’-এ। এর পাঁচ বছর পরে প্রকাশিত হয় প্রথম কাব্যগ্রন্থ –  ‘লীলাকমল’।
১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে তার ও নরেন্দ্র দেবের যুগ্ম সম্পাদনায় বাংলা কাব্য সংকলন ‘কাব্যদীপালি’ প্রকাশিত হয়। একবার এক সান্ধ্য আড্ডায় রাধারাণীর রচনার পরিপেক্ষিতে প্রমথ চৌধুরী মন্তব্য করেন –
” ‘…আজ পর্যন্ত কোনও মেয়ের লেখায় তার স্বকীয়তার ছাপ ফুটে উঠলো না।’
এই অভিযোগের প্রতিবাদে তিনি ‘অপরাজিতা দেবী’ ছদ্মনামে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ছায়াপাতে শুরু করেন রচনা। তাঁর কবিতার মধ্যে অন্তঃপুরের অন্তরঙ্গ জগত আত্মপ্রকাশ করেছে বিশ্বস্ততার সাথে। যেমন মাধুর্য ও কৌতুক, তেমনই প্রতিবাদ আর বিদ্রোহে সাহিত্যজগৎে এক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, যা কিনা সেসময় যেকোনো মহিলা কবির কলমে প্রায় অসম্ভব ছিল। ১৯৩০-৩৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তাঁর প্রকাশিত ভালোবাসার কাব্যগ্রন্থ গুলি হল – —‘বুকের বীণা’ (১৯৩০), ‘আঙিনার ফুল’ (১৯৩৪), ‘পুরবাসিনী’ (১৯৩৫), ‘বিচিত্ররূপিনী’ প্রভৃতি।
রাধারাণী ছোটদের জন্য লিখেছেন ‘নীতি ও গল্প’ এবং ‘গল্পের আলপনা’। স্বামীর সম্পাদনায় ছোটদের জন্য মাসিক পত্রিকা ‘পাঠশালা’ প্রকাশে সহায়তা ছাড়াও যৌথভাবে সম্পাদনা করেছেন বাংলা গ্রন্থের সংকলন ‘কথাশিল্প’। বিবাহের মন্ত্রগুপ্তির স্বচ্ছন্দ অনুবাদ করা তাঁর বইটি হল ‘মিলনের মন্ত্রমালা’। এছাড়া বারোয়ারি উপন্যাসও লিখেছেন তিনি।
সম্মাননা—
১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ভুবনমোহিনী স্বর্ণপদক ও লীলা পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে ‘অপরাজিতা রচনাবলী’র জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার রবীন্দ্র পুরস্কারে সম্মানিত করে।
মৃত্যু—-
রাধারাণী দেবী ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে ৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় নিজ বাসভবন ‘ভালো-বাসা’য় প্রয়াত হন।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ রিভিউ

ব্রিটেনের রানী র আয়কর দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ব্রিটেনের রাজপরিবারের জন্য।

ব্রিটেনের রানীর স্বেচ্ছায় আয়কর দেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ২৭ নভেম্বর, ১৯৯২-এ, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ আয়কর দিতে শুরু করেন, ভবিষ্যতের রাজাদের জন্য একটি নজির স্থাপন করেন ।
১৯৯২ সালের আগে, ব্রিটিশ রাজা আয়কর প্রদান থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন। যাইহোক, পরিবর্তিত সময়ের সাথে এবং ক্রমবর্ধমান জনসাধারণের যাচাই-বাছাইয়ের সাথে, রানী স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার দিকে একটি স্বেচ্ছামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্তকে রাজতন্ত্রের আধুনিকীকরণ এবং এটিকে সাধারণ মানুষের কাছে আরও সম্পর্কযুক্ত করার একটি পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হয়েছিল।
রানীর ব্যক্তিগত আয়, যার মধ্যে রয়েছে ডুচি অফ ল্যাঙ্কাস্টার থেকে রাজস্ব, একটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি যেটি শতাব্দী ধরে রাজপরিবারে রয়েছে, আয়কর ² সাপেক্ষে। উপরন্তু, রানী তার ব্যক্তিগত ক্রয়ের উপর মূলধন লাভ কর এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রদান করে।
আয়কর প্রদানের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র একটি প্রতীকী অঙ্গভঙ্গি ছিল না; এটা উল্লেখযোগ্য আর্থিক প্রভাব ছিল. রানীর ট্যাক্স পেমেন্ট যথেষ্ট, অনুমান অনুযায়ী তিনি বছরে প্রায় £25-30 মিলিয়ন ট্যাক্স প্রদান করেন।
আয়কর দেওয়ার জন্য রানীর সিদ্ধান্ত রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্যও নজির স্থাপন করেছে। প্রিন্স চার্লস, প্রিন্স অফ ওয়েলস, তার ব্যক্তিগত আয়ের উপরও আয়কর প্রদান করেন, যার মধ্যে ডাচি অফ কর্নওয়ালের রাজস্ব অন্তর্ভুক্ত ।
উপসংহারে, ব্রিটেনের রানীর স্বেচ্ছায় আয়কর দেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই সিদ্ধান্তটি ভবিষ্যতের রাজাদের জন্য একটি নজির স্থাপন করেছে এবং রাজতন্ত্রের আধুনিকীকরণে সাহায্য করেছে, এটিকে সাধারণ মানুষের সাথে আরও সম্পর্কযুক্ত করে তুলেছে।
রাজপরিবারের অর্থব্যবস্থা–
রাজপরিবারের অর্থসংস্থান জটিল এবং বহুমুখী। রানীর ব্যক্তিগত আয় সার্বভৌম অনুদান দ্বারা পরিপূরক হয়, যা ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বার্ষিক অনুদান রানীর দাপ্তরিক দায়িত্ব ও কার্যক্রমের জন্য তহবিল ।
সার্বভৌম অনুদান ক্রাউন এস্টেটের মুনাফা দ্বারা অর্থায়ন করা হয়, সম্পত্তি এবং বিনিয়োগের একটি বিশাল পোর্টফোলিও যা রাজার অন্তর্গত কিন্তু একটি পৃথক সত্তা দ্বারা পরিচালিত হয়।  ক্রাউন এস্টেটের মুনাফা যথেষ্ট, অনুমান অনুসারে এটি বার্ষিক £200-300 মিলিয়ন উত্পন্ন করে।
কর এবং রাজপরিবার—
রাজপরিবারের কর ব্যবস্থাগুলি অনন্য এবং বছরের পর বছর ধরে অনেক বিতর্ক ও বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রানী এবং রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের ব্যক্তিগত আয়ের উপর আয়কর প্রদান করলেও, তারা কাউন্সিল ট্যাক্স এবং স্ট্যাম্প ডিউটি ​​ এর মতো অন্যান্য ধরনের কর প্রদান থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত।
রাজপরিবারের কর ব্যবস্থাগুলি সময়ের সাথে বিকশিত নিয়ম এবং নিয়মগুলির একটি জটিল সেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যদিও রানীর স্বেচ্ছায় আয়কর প্রদানের সিদ্ধান্ত স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বাড়াতে সাহায্য করেছে, রাজপরিবারের কর ব্যবস্থাকে ঘিরে এখনও অনেক বিতর্ক ও বিতর্ক রয়েছে।
উপসংহার–
উপসংহারে, ব্রিটেনের রানীর স্বেচ্ছায় আয়কর দেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই সিদ্ধান্তটি ভবিষ্যতের রাজাদের জন্য একটি নজির স্থাপন করেছে এবং রাজতন্ত্রের আধুনিকীকরণে সাহায্য করেছে, এটিকে সাধারণ মানুষের সাথে আরও সম্পর্কযুক্ত করে তুলেছে। রাজপরিবারের অর্থব্যবস্থা জটিল এবং বহুমুখী, এবং তাদের কর ব্যবস্থা অনন্য এবং বছরের পর বছর ধরে অনেক বিতর্ক ও বিতর্কের বিষয়।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This