Categories
প্রবন্ধ

বরবরিক: মহাভারতের এক বিস্মৃত অথচ অলৌকিক বীর।

নিশ্চয়ই, নিচে বরবরিক (Barbarika) সম্পর্কে একটি বিস্তারিত বাংলা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হলো, যাতে তার পরিচয়, মহাভারতে ভূমিকা, ধর্মীয় তাৎপর্য এবং বর্তমান সময়ের লোকবিশ্বাস সবই উঠে আসে।

🌟 বরবরিক: মহাভারতের এক বিস্মৃত অথচ অলৌকিক বীর

🔰 পরিচিতি

বরবরিক ছিলেন ঘটাৎকচ ও মোরভীর পুত্র এবং ভীমের পৌত্র। তিনি মহাভারতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অথচ প্রচলিত মূল কাহিনিতে অনেকটাই উপেক্ষিত চরিত্র। তিনি শক্তিশালী, বুদ্ধিমান এবং সর্বোপরি এক মহান ত্যাগের প্রতীক। বর্তমান ভারতে, বিশেষ করে রাজস্থানে, বরবরিক “খাটু শ্যাম” নামে পূজিত হন এবং ভক্তদের কাছে তিনি কৃষ্ণেরই এক রূপ হিসেবে বিবেচিত।

👨‍👩‍👦 পরিবার ও বংশপরিচয়

পিতা: ঘটোৎকচ (ভীম ও হিদিম্বার পুত্র)

মাতা: মোরভী (নাগ কন্যা)

দাদু: ভীম (পাণ্ডব ভাইদের একজন)

বংশ: কৌরব ও পাণ্ডব উভয়ের রক্তই তাঁর শরীরে বইছিল

বরবরিকের মধ্যে রাক্ষস ও নাগ বংশের সম্মিলিত শক্তি ছিল। সেই সঙ্গে তাঁর রক্তে ছিল কুরুরাজ্যের পাণ্ডবদের বীরত্বের উত্তরাধিকার।

⚔️ বরদান ও অসাধারণ শক্তি

বরবরিক ছিলেন এক পরম তপস্বী ও ভগবদ্ভক্ত। তিনি শিবের কঠোর তপস্যা করে তিনটি অদ্ভুত শক্তিশালী তীর লাভ করেন, যেগুলিকে বলা হয় “ত্রি-শক্তি বান”:

একটি তীর দিয়ে শত্রু চিহ্নিত করা যেত

দ্বিতীয়টি দিয়ে মিত্র চিহ্নিত করা হতো

তৃতীয় তীরটি সমস্ত শত্রুকে ধ্বংস করত

এই তিনটি তীর দিয়েই তিনি বলেছিলেন, যে কোনও যুদ্ধে তিনি মাত্র ১ মিনিটে জয় নিশ্চিত করতে পারেন।

🛡️ মহাভারতে অংশগ্রহণের সংকল্প

বরবরিক প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি কেবলমাত্র পরাজিত পক্ষের পক্ষে যুদ্ধ করবেন। যুদ্ধের ময়দানে এসে তিনি দেখেন, পাণ্ডবদের সেনা অপেক্ষাকৃত দুর্বল, তাই তিনি তাদের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিতে চান।
এই কথা শুনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আশঙ্কা করেন—বরবরিকের মত শক্তিশালী যোদ্ধা যদি কেবলমাত্র পরাজিতদের পক্ষ নেন, তবে ভারসাম্য বিঘ্নিত হবে, এবং যুদ্ধের প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণ হবে না।

🙏 বরদান ও আত্মবলি

কৃষ্ণ তাঁকে ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে পরীক্ষা করেন এবং জানতে চান যুদ্ধের সিদ্ধান্ত। শেষে কৃষ্ণ নিজ পরিচয় প্রকাশ করে বরবরিককে বলেন, তাঁকে আত্মবলিদান দিতে হবে, যাতে তাঁর শক্তি যুদ্ধকে প্রভাবিত না করে।
বরবরিক তৎক্ষণাৎ মাথা কাটে ও তা কৃষ্ণকে অর্পণ করে।
শর্ত ছিল, যুদ্ধ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যেন তিনি তা দেখতে পারেন। কৃষ্ণ তাঁকে আশীর্বাদ দেন, তাঁর কাটা মস্তক কুরূক্ষেত্র যুদ্ধ দেখবে।

👁️ যুদ্ধের সাক্ষী

পুরো মহাভারত যুদ্ধে, বরবরিকের কাটা মাথা যুদ্ধের প্রতিটি মুহূর্ত পর্যবেক্ষণ করে।
যুদ্ধশেষে পাণ্ডবরা যখন জানতে চায়, সবচেয়ে বড় যোদ্ধা কে ছিলেন, বরবরিক উত্তর দেন—
“আমি শুধু কৃষ্ণকেই দেখেছি—তাঁর কৌশল ও লীলাতেই জয় এসেছে।”

🛕 খাটু শ্যাম: বরবরিকের আধুনিক রূপ

বর্তমানে রাজস্থানের খাটু গ্রামে একটি বিখ্যাত মন্দিরে বরবরিক “খাটু শ্যাম জি” নামে পূজিত হন। সেখানে বিশ্বাস, তিনিই কৃষ্ণের এক রূপ।
ভক্তরা মনে করেন, তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন পরাজিতদের পাশে দাঁড়ানোর, তাই আজও কেউ বিপদে পড়লে “শ্যাম জি” তাদের পাশে থাকেন।

🕉️ ধর্মীয় গুরুত্ব ও ভক্তিভাব

খাটু শ্যাম ভক্তরা তাকে “হারে কা সহারা শ্যাম হামারা” নাম দিয়ে স্মরণ করেন।

তিনি অর্জুনের থেকেও বড় যোদ্ধা, কিন্তু ত্যাগের প্রতীক

তাঁর কাটা মাথা প্রতীক—ত্যাগ, ধৈর্য ও ভক্তির চূড়ান্ত রূপ

📿 উপসংহার

বরবরিক একাধারে যুদ্ধের শক্তি ও ভক্তির সমন্বয়। মহাভারতের মূল কাহিনিতে কম আলোচনায় থাকলেও, তাঁর ব্যক্তিত্ব ও আধ্যাত্মিক রূপ ভারতের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছে। তার আত্মত্যাগ প্রমাণ করে, প্রকৃত নায়ক শুধু শক্তিশালী নয়, ত্যাগেও শ্রেষ্ঠ।
আপনি চাইলে এই প্রবন্ধের একটি ছবি বা খাটু শ্যাম মন্দিরের চিত্র, বা বরবরিকের কাল্পনিক ছবি পেতে পারেন। আপনি কি সেটা চান?

Share This
Categories
প্রবন্ধ

দ্য স্টার থিয়েটার : ভারতীয় পারফর্মিং আর্টসের অগ্রদূত।।।।

21 জুলাই, 1883, ভারতের সাংস্কৃতিক ল্যান্ডস্কেপে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত। এই দিনে, স্টার থিয়েটার, ভারতের প্রথম পাবলিক থিয়েটার, উদ্বোধন করা হয়েছিল, যা দেশের সমৃদ্ধ পারফর্মিং আর্ট ঐতিহ্যের পথ প্রশস্ত করেছিল। এই আইকনিক প্রতিষ্ঠানটি 135 বছরেরও বেশি সময় ধরে শৈল্পিক অভিব্যক্তি, বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির জন্য একটি আলোকবর্তিকা।

পুরনো দিনগুলো—-

স্টার থিয়েটার ছিল একদল দূরদর্শী বাঙালির মস্তিষ্কের উদ্ভাবন যারা বাংলা নাটক, সঙ্গীত এবং নৃত্য প্রদর্শনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চেয়েছিল। বাঙালি সংস্কৃতি ও শিল্পকে তুলে ধরার লক্ষ্যে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতার কেন্দ্রস্থলে থিয়েটারটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ছিল “দক্ষ যাত্রা” শিরোনামের একটি নাটক, যা তাৎক্ষণিক সাফল্য ছিল, যা থিয়েটারের ভবিষ্যত প্রচেষ্টার জন্য সুর স্থাপন করেছিল।

সোনালী যুগ—-

তার সোনালী যুগে, স্টার থিয়েটার সৃজনশীল অভিব্যক্তির একটি কেন্দ্র ছিল, যা সেই সময়ের সবচেয়ে প্রতিভাবান শিল্পীদের আকৃষ্ট করেছিল। থিয়েটারের ভাণ্ডারে পৌরাণিক মহাকাব্য থেকে শুরু করে সামাজিক নাটক পর্যন্ত বিস্তৃত প্রযোজনা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যার সবকটিই বাংলা ভাষায় সম্পাদিত হয়েছিল। থিয়েটারের সাফল্য মূলত এর প্রতিষ্ঠাতাদের প্রচেষ্টার কারণে, যারা বাংলা শিল্প ও সংস্কৃতির প্রচারে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন।

উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স—

স্টার থিয়েটার ভারতীয় থিয়েটার ইতিহাসের সবচেয়ে আইকনিক পারফরম্যান্সের আয়োজন করেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রযোজনাগুলির মধ্যে একটি ছিল “চৈতন্যলীলা”, শ্রদ্ধেয় বাঙালি সাধক চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনের উপর ভিত্তি করে একটি নাটক। এই প্রযোজনাটি একটি যুগান্তকারী কৃতিত্ব ছিল, কারণ এটি প্রথমবারের মতো একটি বাংলা নাটক পাবলিক মঞ্চে পরিবেশিত হয়েছিল। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রযোজনার মধ্যে রয়েছে “শকুন্তলা,” “মেঘদূত,” এবং “রত্নাবলী”, যার সবকটিই সংস্কৃত ক্লাসিক থেকে গৃহীত হয়েছিল।

ভারতীয় থিয়েটারের উপর প্রভাব—

ভারতীয় থিয়েটারে স্টার থিয়েটারের প্রভাব গভীর। এটি আধুনিক ভারতীয় থিয়েটারের বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছে, একটি নতুন প্রজন্মের নাট্যকার, অভিনেতা এবং পরিচালকদের অনুপ্রাণিত করেছে। বাংলা সংস্কৃতি এবং ভাষার উপর থিয়েটারের জোর আঞ্চলিক শিল্পের ফর্মগুলিকে উন্নীত করতে সাহায্য করেছিল, অন্যান্য অঞ্চলগুলিকে অনুসরণ করতে উত্সাহিত করেছিল। স্টার থিয়েটারের প্রভাব দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়া অসংখ্য আঞ্চলিক থিয়েটারে দেখা যায়, প্রত্যেকটিই ভারতীয় পারফর্মিং আর্টের সমৃদ্ধ ট্যাপেস্ট্রিতে অবদান রাখে।
চ্যালেঞ্জ এবং পুনরুজ্জীবন
সাফল্য সত্ত্বেও, স্টার থিয়েটার আর্থিক সংগ্রাম এবং সিনেমার উত্থান সহ অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল। যাইহোক, থিয়েটারের উত্তরাধিকার নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করে, যারা প্রতিষ্ঠানটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিল। 1970-এর দশকে, একদল নিবেদিতপ্রাণ শিল্পী এবং পৃষ্ঠপোষক থিয়েটারটিকে তার আগের গৌরব ফিরিয়ে আনতে একত্রিত হয়েছিল। তাদের প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হয়, এবং স্টার থিয়েটারের পুনর্জন্ম হয়, আবার শৈল্পিক অভিব্যক্তি এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির কেন্দ্র হয়ে ওঠে।

উত্তরাধিকার—

স্টার থিয়েটারের উত্তরাধিকার এর প্রাচীরের বাইরেও প্রসারিত। এটি ভারতীয় থিয়েটারের গতিপথকে আকারে শিল্পী, নাট্যকার এবং পরিচালকদের প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। থিয়েটারের আঞ্চলিক শিল্পের উপর জোর দেওয়া সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে উন্নীত করতে সাহায্য করেছে, দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। আজ, স্টার থিয়েটার ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের একটি প্রতীক, যা মানুষকে একত্রিত করতে এবং সীমানা অতিক্রম করার শিল্পের শক্তির প্রমাণ।

উপসংহার—–

1883 সালের 21 জুলাই স্টার থিয়েটারের উদ্বোধন ভারতীয় সাংস্কৃতিক ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। এই আইকনিক প্রতিষ্ঠানটি 135 বছরেরও বেশি সময় ধরে শৈল্পিক অভিব্যক্তি, বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির জন্য একটি আলোকবর্তিকা। ভারতীয় থিয়েটারে এর প্রভাব গভীর হয়েছে, শিল্পীদের একটি নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং আঞ্চলিক শিল্পের ফর্মগুলিকে প্রচার করছে। স্টার থিয়েটারের উত্তরাধিকার অনুপ্রাণিত করে চলেছে, যা মানুষকে একত্রিত করতে এবং আমাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করার জন্য শিল্পের রূপান্তরকারী শক্তির একটি অনুস্মারক।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

লর্ডসে প্রথম টেস্ট ম্যাচ : ক্রিকেটে একটি ঐতিহাসিক দিন।।।।।

21শে জুলাই, 1884, ক্রিকেট বিশ্বের একটি উল্লেখযোগ্য তারিখ, যা খেলাধুলায় একটি নতুন যুগের সূচনা করে। এই দিনে, ইংল্যান্ডের লন্ডনের লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়। এই আইকনিক ইভেন্টটি শুধুমাত্র খেলার বৈপ্লবিক পরিবর্তনই করেনি বরং খেলাটির বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার পথও প্রশস্ত করেছে।

পটভূমি—

19 শতকের মাঝামাঝি সময়ে, ক্রিকেট ইংল্যান্ডে জনপ্রিয়তা লাভ করে, বিভিন্ন ক্লাব এবং দল একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। যাইহোক, খেলা পরিচালনার কোন আনুষ্ঠানিক কাঠামো বা সংস্থা ছিল না। 1787 সালে প্রতিষ্ঠিত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) ছিল ইংল্যান্ডের প্রধান ক্রিকেট ক্লাব এবং খেলার নিয়ম প্রতিষ্ঠার জন্য দায়ী ছিল। 1877 সালে, এমসিসি ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে একটি ম্যাচের আয়োজন করে, যা পরবর্তীতে প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হিসাবে স্বীকৃত হয়।

টেস্ট ক্রিকেটের জন্ম—

1877 সালের ম্যাচের সাফল্যের ফলে টেস্ট ক্রিকেট তৈরি হয়, যা বিশ্বের সেরা দল নির্ধারণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটের ধারণার জন্ম হয়েছিল খেলাটির আরও প্রতিযোগিতামূলক এবং কাঠামোগত রূপ তৈরি করার ইচ্ছা থেকে। প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, যেখানে এমসিসি নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে কাজ করছে।

প্রথম টেস্ট ম্যাচ—

1884 সালের 21শে জুলাই লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথম টেস্ট ম্যাচ শুরু হয়। উইলিয়াম অসক্রফটের নেতৃত্বে ইংরেজ দল বিলি মারডকের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ান দলের সঙ্গে লড়াই করে। ম্যাচটি তিন দিন ধরে খেলা হয়েছিল, ইংল্যান্ড পাঁচ উইকেটে জিতেছিল। ফ্রেডরিক স্পফোর্থ এবং জর্জ গিফেনের মতো খেলোয়াড়রা তাদের দক্ষতা প্রদর্শনের সাথে অস্ট্রেলিয়ান দলটি চিত্তাকর্ষক ছিল।
প্রথম টেস্ট ম্যাচের প্রভাব
প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক হিসেবে চিহ্নিত। এটি গেমের বিন্যাস প্রতিষ্ঠা করেছে, যা আজ পর্যন্ত অনেকাংশে অপরিবর্তিত রয়েছে। ম্যাচের সাফল্যের ফলে অ্যাশেজ সিরিজের সৃষ্টি হয়, যা ক্রিকেটের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। টেস্ট ম্যাচের বিন্যাস অন্যান্য দেশকেও এই খেলাটি গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করেছিল, যা ক্রিকেটের বিশ্বব্যাপী প্রসারের দিকে নিয়ে যায়।

প্রথম টেস্ট ম্যাচের উত্তরাধিকার—

1884 সালে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে খেলা প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ক্রিকেট খেলায় একটি দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকার রেখে যায়। এটি গেমটিকে একটি বৈশ্বিক ঘটনা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, বিশ্বের বিভিন্ন দল একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ম্যাচটি ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) গঠনের পথও প্রশস্ত করেছে।

উপসংহার—-

1884 সালের 21 জুলাই খেলা প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ছিল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যা ক্রিকেট খেলায় বিপ্লব ঘটিয়েছিল। এটি খেলার বিন্যাসকে প্রতিষ্ঠিত করেছে, অ্যাশেজ সিরিজ তৈরিতে অনুপ্রাণিত করেছে এবং ক্রিকেটের বিশ্বব্যাপী প্রসারের পথ প্রশস্ত করেছে। প্রথম টেস্ট ম্যাচের উত্তরাধিকার আজও অনুভূত হচ্ছে, ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হিসেবে রয়ে গেছে।

প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ছিল ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যা খেলাধুলায় একটি নতুন যুগের সূচনা করে। ইংল্যান্ডের লন্ডনের লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে খেলা হয়েছিল এবং ইংল্যান্ড পাঁচ উইকেটে জিতেছিল। ম্যাচের সাফল্য অ্যাশেজ সিরিজ তৈরির দিকে পরিচালিত করে এবং অন্যান্য দেশকে এই খেলাটি গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করে, যার ফলে ক্রিকেটের বিশ্বব্যাপী প্রসার ঘটে। প্রথম টেস্ট ম্যাচের উত্তরাধিকার আজও অনুভূত হচ্ছে, ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হিসেবে রয়ে গেছে।

প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ছিল একটি যুগান্তকারী ঘটনা যা খেলার বিন্যাসকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, যা আজ পর্যন্ত অনেকাংশে অপরিবর্তিত রয়েছে। ম্যাচটি তিন দিন ধরে খেলা হয়েছিল, ইংল্যান্ড পাঁচ উইকেটে জিতেছিল। ফ্রেডরিক স্পফোর্থ এবং জর্জ গিফেনের মতো খেলোয়াড়রা তাদের দক্ষতা প্রদর্শনের সাথে অস্ট্রেলিয়ান দলটি চিত্তাকর্ষক ছিল। ম্যাচটি ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক ছিল, যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) গঠন এবং খেলাটির বিশ্বব্যাপী বিস্তারের পথ প্রশস্ত করেছিল।
প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ছিল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যা ক্রিকেটে একটি নতুন যুগের সূচনা করে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে, যেটিকে আজও ক্রিকেটের হোম বলে মনে করা হয়। মাঠটির একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, যা 1814 সাল থেকে শুরু করে এবং বছরের পর বছর ধরে অসংখ্য আইকনিক ম্যাচ আয়োজন করেছে। প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ছিল গ্রাউন্ডের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যা বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত ক্রিকেট মাঠ হিসেবে এর স্থানকে সিমেন্ট করে।

উপসংহারে, 1884 সালের 21 জুলাই খেলা প্রথম টেস্ট ম্যাচটি ছিল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যা ক্রিকেট খেলায় বিপ্লব ঘটিয়েছিল। ম্যাচটি খেলার বিন্যাসকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, অ্যাশেজ সিরিজ তৈরিতে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং ক্রিকেটের বিশ্বব্যাপী প্রসারের পথ প্রশস্ত করেছিল। প্রথম টেস্ট ম্যাচের উত্তরাধিকার আজও অনুভূত হচ্ছে, ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হিসেবে রয়ে গেছে। ম্যাচটি ছিল খেলাধুলার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক, এবং এর প্রভাব এখনও সারা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীরা উদযাপন করে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতির উপর আওরঙ্গজেবের শাসনের প্রভাব।।।।

আওরঙ্গজেব, আলমগীর নামেও পরিচিত, ছিলেন ষষ্ঠ মুঘল সম্রাট এবং ভারতীয় ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত ব্যক্তিত্ব। তিনি 21শে জুলাই, 1658-এ সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং প্রায় 50 বছর শাসন করেন, উপমহাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ভূখণ্ডে স্থায়ী প্রভাব ফেলে।

প্রারম্ভিক জীবন এবং অ্যাক্সেস—

আওরঙ্গজেব 3শে নভেম্বর, 1618 সালে মধ্যপ্রদেশের উজ্জাইনে সম্রাট শাহজাহান এবং তার স্ত্রী মুমতাজ মহলের কাছে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন সম্রাটের তৃতীয় পুত্র এবং তার পিতার উত্তরাধিকারী হওয়ার সুস্পষ্ট পছন্দ ছিল না। যাইহোক, আওরঙ্গজেবের সামরিক দক্ষতা এবং কৌশলগত চিন্তাভাবনা অবশেষে তাকে সিংহাসনে আরোহণের দিকে নিয়ে যায়।
আওরঙ্গজেবের প্রাথমিক জীবন ইসলামিক অধ্যয়ন, সাহিত্য এবং সামরিক কৌশলে শিক্ষার দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল। তিনি তার পিতার দ্বারা যুদ্ধ ও শাসনের শিল্পে প্রশিক্ষিত হয়েছিলেন এবং পরে গুজরাট ও কাবুল সহ বিভিন্ন প্রদেশের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সিংহাসনে আরোহণ—-

আওরঙ্গজেবের সিংহাসনে আরোহণ তার চ্যালেঞ্জ ছাড়া ছিল না। তিনি তার ভাইদের কাছ থেকে কঠোর বিরোধিতার সম্মুখীন হন, যারা সিংহাসনের জন্য লড়াই করেছিলেন। যাইহোক, আওরঙ্গজেবের সামরিক বিজয় এবং কৌশলগত জোট শেষ পর্যন্ত তার বিজয়ের দিকে পরিচালিত করে। তিনি একাধিক যুদ্ধে তার ভাইদের পরাজিত করেছিলেন, সিংহাসনের সঠিক উত্তরাধিকারী হিসাবে তার অবস্থানকে মজবুত করেছিলেন।

রাজত্ব—–

আওরঙ্গজেবের শাসনামল একাধিক বিজয়ের দ্বারা চিহ্নিত ছিল, কারণ তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি দাক্ষিণাত্যের মালভূমি এবং বর্তমান আফগানিস্তানের কিছু অংশ সহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলকে সংযুক্ত করেন। তার সামরিক অভিযান প্রায়শই নৃশংস ছিল এবং তিনি তার নির্মম কৌশলের জন্য পরিচিত ছিলেন।

আওরঙ্গজেবের রাজত্বও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও নিপীড়নের দ্বারা চিহ্নিত ছিল। তিনি কঠোর ইসলামী আইন আরোপ করেছিলেন, যার ফলে হিন্দু, শিখ এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছিল। এই সময়কালে বেশ কয়েকটি মন্দির এবং অন্যান্য ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস হয়।

প্রশাসন ও সংস্কার—-

আওরঙ্গজেবের প্রশাসনিক সংস্কার মুঘল সাম্রাজ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। তিনি ক্ষমতাকে কেন্দ্রীভূত করেছিলেন, আঞ্চলিক গভর্নর এবং অভিজাতদের প্রভাব হ্রাস করেছিলেন। তিনি একটি নতুন কর ব্যবস্থাও চালু করেছিলেন, যা ছিল আরও দক্ষ ও কার্যকর।
আওরঙ্গজেবের শাসনামলে উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক অর্জনও দেখা যায়। তিনি পণ্ডিত ও শিল্পীদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন, যার ফলে ইসলামী শিল্প ও সাহিত্যের পুনরুত্থান ঘটে। তিনি লাহোরের বাদশাহী মসজিদ সহ বেশ কয়েকটি স্মৃতিস্তম্ভও নির্মাণ করেছিলেন, যা বিশ্বের বৃহত্তম মসজিদগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়।

উত্তরাধিকার—-

আওরঙ্গজেবের উত্তরাধিকার জটিল এবং বিতর্কিত। কেউ কেউ তাকে একজন মহান সামরিক নেতা এবং প্রশাসক হিসেবে দেখেন, আবার কেউ কেউ তাকে একজন নির্মম অত্যাচারী হিসেবে দেখেন। তার ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।
তবে ভারতীয় ইতিহাসে আওরঙ্গজেবের প্রভাব অস্বীকার করা যায় না। তিনি উপমহাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পটভূমি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার রাজত্ব ভারতীয় ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা করে এবং তার উত্তরাধিকার বিশ্বজুড়ে ইতিহাসবিদ এবং পণ্ডিতদের দ্বারা অধ্যয়ন করা অব্যাহত রয়েছে।

উপসংহার—

21শে জুলাই, 1658 সালে আওরঙ্গজেবের সিংহাসনে আরোহণ ভারতীয় ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা করে। তার শাসনকাল বিজয়, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং সাংস্কৃতিক অর্জন দ্বারা চিহ্নিত ছিল। তার উত্তরাধিকার জটিল এবং বিতর্কিত, কিন্তু ভারতীয় ইতিহাসে তার প্রভাব অস্বীকার করা যায় না। আমরা যেমন আওরঙ্গজেবকে স্মরণ করি, তেমনি আমাদের অবশ্যই ইতিহাসের পাঠগুলি মনে রাখতে হবে এবং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহনশীল সমাজের জন্য সংগ্রাম করতে হবে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ চাঁদে অবতরণ দিবস, জানুন দিনটির ইতিহাস।।।।

20 জুলাই, 1969-এ, নাসার অ্যাপোলো 11 মিশন ইতিহাস তৈরি করেছিল যখন মহাকাশচারী নীল আর্মস্ট্রং এবং এডউইন “বাজ” অলড্রিন চাঁদের পৃষ্ঠে পা রাখার প্রথম মানুষ হয়েছিলেন। এই স্মারক কৃতিত্বটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে একটি দশকব্যাপী মহাকাশ প্রতিযোগিতার সমাপ্তি চিহ্নিত করেছে এবং মহাকাশ অনুসন্ধানে আমেরিকার অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।

Apollo 11 মহাকাশযানটি ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে 16 জুলাই, 1969 তারিখে আর্মস্ট্রং, অলড্রিন এবং মাইকেল কলিন্সকে চাঁদে 240,000 মাইল ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। চন্দ্র কক্ষপথে প্রবেশ করার পর, মহাকাশযান দুটি মডিউলে বিভক্ত হয়: কলিন্স দ্বারা চালিত কমান্ড মডিউল এবং আর্মস্ট্রং এবং অলড্রিন দ্বারা চালিত লুনার মডিউল।
20 জুলাই 20:17 UTC এ, লুনার মডিউল ঈগল প্রশান্তি সাগরে চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করে। আর্মস্ট্রং রেডিও করে মিশন কন্ট্রোল অন আর্থ-এ ফেরত পাঠালেন, “হিউস্টন, ট্রানকুইলিটি বেস এখানে। ঈগল অবতরণ করেছে।” ছয় ঘন্টা পরে, 21 জুলাই 02:56 UTC-এ, আর্মস্ট্রং চাঁদে পা রাখার প্রথম ব্যক্তি হয়ে ইতিহাস তৈরি করেন। তিনি বিখ্যাতভাবে ঘোষণা করেছিলেন, “মানুষের জন্য এটি একটি ছোট পদক্ষেপ, মানবজাতির জন্য একটি বিশাল লাফ।”
অলড্রিন খুব শীঘ্রই পৃষ্ঠে আর্মস্ট্রং-এর সাথে যোগদান করেন এবং দুই নভোচারী চন্দ্র ভূখণ্ড অন্বেষণ, নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ব্যয় করেন। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা লাগিয়েছে এবং একটি ফলক রেখে গেছে যাতে লেখা ছিল, “এখানে পৃথিবীর মানুষরা প্রথম চাঁদে পা রেখেছিল, জুলাই 1969 এ. আমরা সমস্ত মানবজাতির জন্য শান্তিতে এসেছি।”
অ্যাপোলো 11 মিশন ছিল একটি যুগান্তকারী কৃতিত্ব যা মহাকাশ প্রতিযোগিতায় একটি বড় মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। এটি আমেরিকান চতুরতা এবং সংকল্পের শক্তি প্রদর্শন করেছে এবং ভবিষ্যতের মহাকাশ অনুসন্ধানের পথ প্রশস্ত করেছে। মিশনটি 48 পাউন্ডেরও বেশি চন্দ্রের নমুনা ফেরত দিয়েছে, যা বিজ্ঞানীরা আজও অধ্যয়ন চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপসংহারে, অ্যাপোলো 11 মুন ল্যান্ডিং ছিল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যা মানুষের কৃতিত্বের প্রমাণ হিসেবে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এটি আমাদের দেখিয়েছে যে কঠোর পরিশ্রম, উত্সর্গ এবং একটি ভাগ করা দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আমরা এমনকি সবচেয়ে আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব কাজগুলিও সম্পন্ন করতে পারি। আর্মস্ট্রং এবং অলড্রিন যখন চাঁদের বিস্তীর্ণ, অনুর্বর ল্যান্ডস্কেপ দেখেছিলেন, তারা জানতেন যে তারা সত্যিই অসাধারণ কিছু সম্পন্ন করেছে – এবং তাদের পায়ের ছাপ চন্দ্র পৃষ্ঠে অনন্তকাল ধরে থাকবে।
তথ্য:
– মিশনের সময়কাল: জুলাই 16-24, 1969
– মহাকাশযান: অ্যাপোলো 11
– ক্রু: নীল আর্মস্ট্রং, এডউইন “বাজ” অলড্রিন, মাইকেল কলিন্স
– চন্দ্র মডিউল: ঈগল
– ল্যান্ডিং সাইট: শান্তির সমুদ্র
– অবতরণের সময়: 20:17 UTC, 20 জুলাই, 1969
– চাঁদে প্রথম পদক্ষেপ: 02:56 UTC, 21 জুলাই, 1969
– মিশনের উদ্দেশ্য: চাঁদে অবতরণ করা এবং নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসা
– উল্লেখযোগ্য অর্জন: প্রথম মানুষের চাঁদে অবতরণ, চাঁদে প্রথম বহির্মুখী কার্যকলাপ, চন্দ্রের নমুনা ফেরত।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

বঙ্গভঙ্গ ভারতীয় ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।।।।

বঙ্গভঙ্গ ভারতীয় ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা যা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় 1905 সালে সংঘটিত হয়েছিল। ভারতের ভাইসরয় লর্ড কার্জনের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকার বাংলা প্রদেশকে দুটি পৃথক সত্ত্বা – পূর্ব বাংলা ও আসাম এবং পশ্চিমবঙ্গে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

20 জুলাই, 1905-এ বিভাজন ঘোষণা করা হয়েছিল, এবং এটি 16 অক্টোবর, 1905-এ কার্যকর হয়েছিল।

ব্রিটিশ সরকার দাবি করেছিল যে প্রশাসনিক কারণে বিভাজনটি প্রয়োজনীয় ছিল, কারণ বাংলা ছিল একটি বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যার একটি বৃহৎ প্রদেশ। যদিও দেশভাগের পেছনের আসল উদ্দেশ্য ছিল রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক।
ব্রিটিশ সরকার বাংলায় ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করতে চেয়েছিল, যা ছিল বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল। প্রদেশকে বিভক্ত করে, ব্রিটিশরা আশা করেছিল হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করবে এবং এর ফলে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের শক্তি হ্রাস পাবে।
বিভাজন ভারতীয় জনগণের, বিশেষ করে হিন্দুদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিল। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং লালা লাজপত রায়ের মতো ব্যক্তিত্বদের নেতৃত্বে, বিভাজনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা শুরু করে। বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল, কিন্তু ব্রিটিশ সরকার শক্তির সাথে প্রতিক্রিয়া জানায়, যার ফলে ব্যাপক সহিংসতা ও গ্রেফতার হয়।
বঙ্গভঙ্গ ভারতীয় জনসংখ্যার জন্য উল্লেখযোগ্য ফলাফল ছিল। এটি লক্ষ লক্ষ লোকের বাস্তুচ্যুত হওয়ার দিকে পরিচালিত করেছিল, যারা এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাহত হওয়ায় বাংলার অর্থনীতিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিরোধিতার কারণে অবশেষে 1911 সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়। যাইহোক, ক্ষতি ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছিল, এবং বিভাজন হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে একটি ফাটল তৈরি করেছিল যা নিরাময়ে কয়েক দশক সময় লাগবে।
উপসংহারে, বঙ্গভঙ্গ ছিল ভারতীয় ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা যা ভারতীয় জনগণের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিণতি করেছিল। এটি ছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের “ভাগ করো এবং শাসন করো” নীতির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ, যা ভারতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করতে চেয়েছিল।
তথ্য:
– দেশভাগের তারিখ: 20 জুলাই, 1905
– ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশ: বাংলা
– ব্রিটিশ সরকারের উদ্দেশ্য: জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করা এবং হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করা
– ভারতীয় প্রতিক্রিয়া: ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিরোধিতা
– পরিণতি: লক্ষ লক্ষ লোকের বাস্তুচ্যুতি, অর্থনৈতিক বিপর্যয়, এবং হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি
– ঘটনাচক্রের ফলাফল: 1911 সালে বিভাজন বাতিল।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

অকালে নিভে যাওয়া স্বর্নালী কন্ঠের শিল্পী গীতা দত্তের প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

গীতা দত্ত একজন বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী। তিনি মূলত ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে হিন্দি ছবিতে আবহ সঙ্গীত এবং বাংলা আধুনিক গান গাওয়ার জন্য পরিচিত।

জন্ম ও পরিবার—-

১৯৩০ সালের ২৩ নভেম্বর তৎকালীন ফরিদপুর জেলার মাদারীপুর মহকুমার ইদিলপুরে এক ধনী জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন গীতা দত্ত ।

পরিচালক, অভিনেতা গুরু দত্তের সাথে বিয়ের আগে তাঁর নাম ছিল গীতা ঘোষ রায়চৌধুরী। বিয়ের আগে গীতা রায় নামেই পরিচিত ছিলেন। ১৯৪২ সালে তিনি তাঁর বাবা-মায়ের সাথে বোম্বের দাদারে একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে শুরু করেন।

সঙ্গীত জীবন—

সুরকার হনুমান প্রসাদ একসময় গীতার সঙ্গীতে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তিনি ১৯৪৬ সালে ভক্ত প্রহ্লাদ নামে একটি ছবিতে প্রথমবার গীতাকে গান গাওয়ার সুযোগ দেন। এই ছবিতে গীতা কোরাসে মাত্র দুটি লাইন গেয়েছিলেন কিন্তু এর মধ্যেই তার কৃতিত্ব প্রকাশ পায়। পরের বছর গীতা দো ভাই ছবিতে প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে কাজ পান। আর এই ছবিতে তার গান তাঁকে হিন্দি চলচ্চিত্রের জগতে একজন গায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। প্রথম দিকে গীতা ভজন এবং দুঃখের গান গাওয়ার জন্য পরিচিত ছিল। ১৯৫১ সালে, শচীন দেববর্মনের বাজি চলচ্চিত্রে তার গাওয়া তাঁর সঙ্গীতজীবনে একটি নতুন দিক নিয়েছিল। শচীন দেববর্মণ প্রথম গীতার কণ্ঠের জাদু প্রকাশ করেন দো ভাই ছবিতে। তিনি দেবদাস এবং পেয়াসা ছবিতে গীতার কন্ঠের বাংলা টুংটা সুন্দরভাবে ব্যবহার করেছিলেন। সুরকার হিসেবে শচীনদেব বর্মনের প্রথম দিকের গানগুলি গায়কদের মধ্যে গীতাই সেরা গেয়েছিলেন। ওপি নায়ারের সুরে গীতা সব ধরনের সঙ্গীতে পারদর্শী। হিন্দি গান ছাড়াও, গীতা দত্ত গুজরাটি চলচ্চিত্রের নেতৃস্থানীয় প্লেব্যাক গায়িকাও ছিলেন। তিনি বিখ্যাত সুরকার অবিনাশ ব্যাসের সুরে গুজরাটি ভাষায় বেশ কয়েকটি গান গেয়েছেন। গীতা ১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৬০-এর দশকের শুরুতে বেশ কয়েকটি বিখ্যাত বাংলা গান গেয়েছিলেন। এ সময় বাংলা চলচ্চিত্র ও সঙ্গীত জগতে স্বর্ণযুগ চলছিল। তাঁর অধিকাংশ বাংলা গান হেমন্ত মুখোপাধ্যায় রচিত হলেও তিনি নচিকেতা ঘোষ এবং সুধীন দাশগুপ্তের সুর করা কিছু গানও গেয়েছিলেন।

কিছু মনে রাখার মত গান—

বাবুজি ধীরে চলনা, থান্ডি হাওয়া কালি ঘটা, মেরে জিন্দেগী কে হামসফর, চোর লুটেরে ডাকু, মেরা নাম চিন চিন চু, ক্যায়সা জাদু বালাম তুনে দারা, মেরা সুন্দর সপনা বীত গয়া, আজ সাজন মুঝে অঙ্গ লাগালো, হাওয়া ধীরে আনা, বক্ত নে কিয়া কেয়া হাসিন সিতম, জরা সামনে আ, জব বাদল লেহরায়া, ও সপনেবালি রাত, তদবির সে বিগড়ি হুয়ি তকদির, আন মিলো আন মিলো প্রভৃতি।

তাঁর কিছু মনে রাখার মত বাংলা গান–

নিশি রাত বাঁকা চাঁদ আকাশে, ওগো সুন্দর জানো নাকি, এই মায়াবী তিথি, আমি শুনেছি তোমারি গান, তুমি যে আমার , এই সুন্দর স্বর্ণালি সন্ধ্যায়।

প্রয়াণ —

গীতা দত্ত ১৯৭২ সালে ২০ জুলাই লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে বোম্বেতে মৃত্যুবরণ করেন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বটুকেশ্বর দত্ত – ভারতের স্বাধীনতা অন্দোলনের অগ্নিপুরুষ -প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে বটুকেশ্বর দত্ত একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।

বটুকেশ্বর দত্ত ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
বটুকেশ্বর দত্ত ছিলেন একজন বাঙালি ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী এবং ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি ভগৎ সিং-এর সাথে ৮ এপ্রিল ১৯২৯ সালে নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় সংসদ ভবনে বোমা হামলার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা দুটি বোমা ফেলে, যাতে কেউ আহত না হয়। ফরাসি নৈরাজ্যবাদী বিপ্লবী বেইলআউটের মতো, ভগৎ সিং-এর বক্তব্য ছিল ‘বধিরকে শোনাতে উচ্চকণ্ঠ প্রয়োজন’। বটুকেশ্বর দত্ত এবং তিনি তাদের বক্তব্যের সমর্থনে লিফলেট বিতরণ করেন, স্লোগান দেন এবং নীরবে গ্রেফতার হন।
বটুকেশ্বর দত্ত ছিলেন একজন বাঙালি ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী এবং ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা।১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল ভগৎ সিংয়ের সাথে নয়া দিল্লীর কেন্দ্রীয় সংসদ ভবনে বোমা ফাটানোর জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। তাঁরা পরিকল্পনা মোতাবেক দুটি বোমা ফেলেন, যাতে কারো কোনো ক্ষতি না হয়। ফরাসী নৈরাজ্যবাদী বিপ্লবী বৈলেয়ন্টের মতোই ভগৎ সিংহের বক্তব্য ছিল ‘বধিরকে শোনাতে উচ্চকণ্ঠ প্রয়োজন’। বটুকেশ্বর দত্ত ও তিনি ইস্তাহার ছড়িয়ে দেন নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে, স্লোগান দেন এবং শান্তভাবে গ্রেপ্তারবরণ করেন।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন—

বটুকেশ্বর দত্ত ১৯১০ সালের ১৮ নভেম্বর বর্তমান ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার খন্ডঘোষ থানার ওঁয়াড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা গোষ্টবেহারী দত্ত। শৈশবে তিনি গ্রামে ‘মোহন’ নামে পরিচিত ছিলেন। জন্মের পর কিছুদিন ওয়াদি গ্রামে থাকার পর বটুকেশ্বর ব্যবসার কাজে উত্তরপ্রদেশের কানপুরে গেলে বাবার সঙ্গে চলে যান। ১৯২৫ সালে তিনি সেখান থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। সেখানেই তিনি বিপ্লবী চন্দ্রশেখর আজাদ এবং ভগৎ সিং-এর সংস্পর্শে আসেন এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। বিপ্লবী দলে যোগ দিয়ে তিনি প্রথমে আগ্রা, পাঞ্জাব এবং অন্যান্য স্থানে গিয়ে দলকে সংগঠিত করেন। তাদের সংগঠনের নাম ছিল হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন। কানপুরে কলেজে পড়ার সময় তিনি বিপ্লবী চন্দ্রশেখর আজাদ এবং ভগত সিং-এর সংস্পর্শে আসেন এবং বিপ্লবী রাজনীতিতে যোগ দেন। বিপ্লবী সদস্যদের কাছে বটুকেশ্বর দত্ত বি.কে নামে পরিচিত ছিলেন।

বন্দী জীবন—

তাদের গ্রেপ্তারের পর, ব্রিটিশ সরকার তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইন লঙ্ঘন এবং হত্যার চেষ্টার জন্য একটি বিচার চালায়। জেলে থাকাকালীন, তিনি এবং ভগত সিং ভারতীয় রাজনৈতিক বন্দীদের প্রতি দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে এবং রাজবন্দীদের অধিকারের জন্য ঐতিহাসিক অনশন শুরু করেছিলেন এবং তাদের জন্য কিছু অধিকার অর্জন করতে সক্ষম হন। এই অনশনে শহীদ হন বিপ্লবী যতীন দাস। বটুকেশ্বর ১৯৩৮ সালে মুক্তি পায়, কিন্তু বাংলা, পাঞ্জাব এবং উত্তর প্রদেশে তাঁর প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৪২ সালে তাঁকে আবার গ্রেফতার করা হয় এবং তিন বছর গৃহবন্দী রাখা হয়।

মৃত্যু—–

যক্ষ্মাজনিত কারণে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েও স্বাধীন ভারতে তিনি সমাদৃত হননি এবং দারিদ্র্যের সাথে সংগ্রাম করে জীবন কাটিয়েছেন। ২০ জুলাই, ১৯৬৫ তারিখে, তিনি দিল্লির একটি হাসপাতালে প্রায় নীরবে প্রয়াত হন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

পশ্চিমবঙ্গ : ভ্রমণ গন্তব্যের একটি ভান্ডার।।।।

পশ্চিমবঙ্গ, পূর্ব ভারতের একটি রাজ্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি গলে যাওয়া পাত্র। কোলকাতার কোলাহলপূর্ণ রাস্তা থেকে দার্জিলিং এর নির্মল পাহাড় পর্যন্ত, পশ্চিমবঙ্গে ভ্রমণ গন্তব্যের আধিক্য রয়েছে যা সমস্ত ধরণের ভ্রমণকারীদের পূরণ করে। এই নিবন্ধে, আমরা পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্পটগুলির কিছু অন্বেষণ করব, তাদের তাত্পর্য এবং আকর্ষণগুলি সহ।

কলকাতা: জয়ের শহর—

কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহর, যে কোনো ভ্রমণকারীর জন্য অবশ্যই একটি দর্শনীয় স্থান। ঔপনিবেশিক এবং ভারতীয় স্থাপত্যের সংমিশ্রণ সহ এই প্রাণবন্ত শহরটি ইতিহাস এবং সংস্কৃতিতে পরিপূর্ণ। কলকাতার কিছু জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে:

– ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল: রাণী ভিক্টোরিয়াকে উত্সর্গীকৃত একটি অত্যাশ্চর্য সাদা মার্বেল স্মৃতিস্তম্ভ
– ভারতীয় জাদুঘর: ভারতের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম জাদুঘরগুলির মধ্যে একটি, নিদর্শন এবং ধ্বংসাবশেষের একটি বিশাল সংগ্রহ প্রদর্শন করে
– হাওড়া ব্রিজ: হুগলি নদীর উপর একটি আইকনিক ক্যান্টিলিভার ব্রিজ
– ইডেন গার্ডেন: বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলির একটি
দার্জিলিং: পাহাড়ের রানী
দার্জিলিং, হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত, একটি মনোরম হিল স্টেশন তার চা বাগান, টয় ট্রেন এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা চূড়ার শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্যের জন্য বিখ্যাত। দার্জিলিং-এর কিছু জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে:
– টাইগার হিল: একটি দৃষ্টিকোণ যা হিমালয়ের অত্যাশ্চর্য সূর্যোদয়ের দৃশ্য দেখায়
– দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে: একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এবং ভারতের প্রাচীনতম খেলনা ট্রেনগুলির মধ্যে একটি
– হ্যাপি ভ্যালি টি এস্টেট: একটি চা বাগান যা চা স্বাদ এবং ট্যুর অফার করে
– পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্ক: একটি চিড়িয়াখানা যেখানে হিমালয়ের বিস্তৃত প্রাণী রয়েছে

সুন্দরবন: ম্যানগ্রোভ বন—

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। এই অনন্য ইকোসিস্টেমটি বেঙ্গল টাইগার সহ বিস্তৃত উদ্ভিদ এবং প্রাণীর আবাসস্থল। সুন্দরবনের কিছু জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে:
– সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান: একটি সংরক্ষিত এলাকা যা নৌকা সাফারি এবং ট্রেক অফার করে
– সজনেখালি ওয়াচ টাওয়ার: একটি দৃষ্টিকোণ যা ম্যানগ্রোভ বনের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখায়
– সুধন্যাখালী ওয়াচ টাওয়ার: একটি দৃষ্টিকোণ যা বেঙ্গল টাইগার এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীর দৃশ্য দেখায়।

দিঘা: বিচ টাউন—

পশ্চিমবঙ্গের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত দিঘা একটি জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত শহর যা সারা দেশ থেকে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। দীঘার কিছু জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে:
– দীঘা সৈকত: একটি মনোরম সৈকত যা বঙ্গোপসাগরের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখায়
– উদয়পুর সমুদ্র সৈকত: একটি নির্জন সৈকত যা শান্তি ও প্রশান্তি দেয়
– চন্দনেশ্বর মন্দির: শিবকে উৎসর্গ করা একটি প্রাচীন মন্দির
মুর্শিদাবাদ: ঐতিহাসিক শহর
মুর্শিদাবাদ, পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় অংশে অবস্থিত, একটি ইতিহাস এবং সংস্কৃতির শহর।
মুর্শিদাবাদের কিছু জনপ্রিয়

পর্যটন আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে:
– হাজারদুয়ারি প্রাসাদ: একটি অত্যাশ্চর্য প্রাসাদ যা মুঘল যুগের মহিমা প্রদর্শন করে
– ইমামবাড়া: একটি ঐতিহাসিক মসজিদ যা শহরের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখায়
– কাটরা মসজিদ: একটি ঐতিহাসিক মসজিদ যা শহরের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখায়

উপসংহারে, পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ গন্তব্যগুলির একটি ভান্ডার যা প্রত্যেকের জন্য কিছু অফার করে। কলকাতার কোলাহলপূর্ণ রাস্তা থেকে দার্জিলিং এর নির্মল পাহাড়, এবং সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বন থেকে শুরু করে সমুদ্র সৈকত শহর দিঘা পর্যন্ত, পশ্চিমবঙ্গের বিস্তৃত আকর্ষণ রয়েছে যা তার সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রদর্শন করে।

তথ্য:
– পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণের সেরা সময়: অক্টোবর থেকে মার্চ
– ভাষা: বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি
– মুদ্রা: ভারতীয় রুপি
– পরিবহন: ট্রেন, বাস, ট্যাক্সি, অটো
– থাকার ব্যবস্থা: হোটেল, লজ, গেস্টহাউস, হোমস্টে
– খাবার: বাঙালি খাবার, রাস্তার খাবার, সামুদ্রিক খাবার, মিষ্টি
– কার্যক্রম: ট্রেকিং, হাইকিং, বার্ডওয়াচিং, বোট সাফারি, চা খাওয়া, টয় ট্রেন রাইড।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

কমলা দাশগুপ্ত : ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের নারী বিপ্লবী ও সাহিত্যিক।।।।

ভূমিকা— কমলা দাশগুপ্ত (১১ই মার্চ ১৯০৭ – ১৯শে জুলাই ২০০০) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের নারী বিপ্লবী ও সাহিত্যিক।

জন্ম—

কমলা দাশগুপ্ত ১৯০৭ সালে ঢাকার বিক্রমপুরে এক বৈদ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৪ সনে তিনি ঢাকার ব্রাহ্মবালিকা শিক্ষালয় থেকে প্রবেশিকা পাশ করেন।

এর পরে তার পরিবার কলকাতায় গমন করে। কলকাতায় তিনি বেথুন কলেজে ভর্তি হন। ১৯২৮ সনে বেথুন কলেজ থেকে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন এবং পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইতিহাসে এম.এ পাস করেন।

রাজনৈতিক জীবন—

এম.এ শ্রেণির ছাত্রাবস্থায় তিনি রাজনৈতিক মনস্ক হয়ে ওঠেন। সে সময় যুগান্তর দল এর কতিপয় সদস্যের সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। তিনি বিপ্লবী দীনেশ মজুমদারের কাছে লাঠিখেলা শিখতে আরম্ভ করেন। ১৯২৯ সালে যুগান্তর দলের নেতা রসিকলাল দাসের প্রেরণায় গান্ধীর অহিংসবাদ ছেড়ে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য যুগান্তর দলে যোগ দেন। সহপাঠী হিসাবে ছিল কল্যাণী দাস। তিনি বীণা দাসকে রিভলবার সরবরাহ করেন যা দিয়ে তিনি ফেব্রুয়ারি ১৯২২ সালে গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে হত্যার চেষ্টা করেন। তিনি বোমা হামলার সাথে জড়িত থাকার কারণে বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হন কিন্তু প্রমাণের অভাবে প্রত্যেক সময় মুক্তি পান। ১৯৩২-৩৮ তিনি প্রেসিডেন্সি ও হিজলী বন্দী নিবাসে আটক থাকেন। হিজলি বন্দি নিবাসে বন্দি থাকা অবস্থায় তিনি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন।
১৯৩০ সালে তিনি বাড়ি ছেড়ে দরিদ্র নারীদের জন্য একটি হোস্টেলের ম্যানেজার হিসেবে চাকরি নেন। সেখানে তিনি বিপ্লবীদের জন্য বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংরক্ষণ করতেন এবং বহন করে আনতেন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়েও কারাবাস করেছেন তিন বছর (১৯৪২-৪৫)। দাংগা বিধ্বস্ত নোয়াখালী তে ত্রানের কাজ করেছেন এই বিপ্লবী।

প্রকাশিত গ্রন্থ–

কর্মজীবনে শিক্ষকতা ছাড়াও মন্দিরা পত্রিকা সম্পাদনা করতেন কমলা দাশগুপ্ত। দেশ ভাগের পরে লিখেছিলেন তার আত্মজীবনী রক্তের অক্ষরে যা ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি পরে লিখেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার নারী (১৯৬৩) নামে আরো একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ। গ্রন্থ দুটিতে তার বিপ্লবী ও রাজনৈতিক জীবনের নানা বিষয় উঠে এসেছে।

মৃত্যু—

কমলা দাশগুপ্ত ২০০০ সালের ১৯ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This