Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

আজ নারী সমতা দিবস, জানুন তার ইতিহাস এবং কেন পালিত হয়ে আসছে এই দিনটি।।।।।।

 

আজকের যুগে নারীরা অনেক এগিয়ে। সমগ্র বিশ্ব দেখেছে নারীরা সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে সক্ষম। কোনও কাজেই আজ নারীরা পুরুষদের থেকে পিছিয়ে নেই। এখন বিশ্বব্যাপী এখন অনেক সংস্থা গড়ে উঠেছে, যারা নারীদের প্রতি নিপীড়ন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে, সমাজে বিদ্যমান বৈষম্যের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে নারীদের সমান সুযোগ প্রদান করে চলেছে। পুরুষের সঙ্গে সমান তালে পা মিলিয়ে এগিয়ে ছলছে নারীরা। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের অগ্রগতি অনস্বীকার্য। প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা তাদের যোগ্যতার ছাপ ফেলে যাচ্ছে। খেলা ধুলা, শিক্ষা দীক্ষা থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পরিচালনা সর্বক্ষেত্রে তারা নিজেদের যোগ্যতার সাক্ষর রেখে যাচ্ছে। পুরুষের থেকে তারাও যে কোনো অংশে কম নয় তা বুঝিয়ে দিচ্ছে তাদের সাফল্য দিয়ে। ফলস্ববরূপ তাদের এই জয়। সেদিনের আধিকার লড়াই এর সাফল্য।
আমেরিকান কংগ্রেস এবং আমেরিকার ৩৭তম রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭৩ সালের  ২৬ অগস্ট দিনটিকে ‘নারী সমতা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আমেরিকায় এই দিবস উদযাপন শুরু হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে নারী সমতা দিবস পালিত হয়ে আসছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ১৯২০ সালের ঊনবিংশ সংশোধনী (সংশোধন XIX) গৃহীত হওয়ার স্মরণে ২৬শে আগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীর সমতা দিবস উদযাপন করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং ফেডারেল সরকারকে নাগরিকদের ভোটের অধিকার অস্বীকার করা থেকে নিষিদ্ধ করে।  লিঙ্গ ভিত্তিতে রাষ্ট্র.  এটি প্রথম ১৯৭১ সালে পালিত হয়েছিল, ১৯৭৩ সালে কংগ্রেস দ্বারা মনোনীত হয়েছিল, এবং প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি দ্বারা ঘোষণা করা হয়।মহিলাদের অধিকার নিয়ে ৭২ বছরের কঠোর পরিশ্রম ও প্রচারের পর ১৯২০ সালে সফলতা পায় মহিলারা ৷
ইতিহাস—

যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধের আগেই শুরু হয়েছিল নারীদের ভোটাধিকারের জন্য আন্দোলন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ রাজ্যে কেবল ধনী শ্বেতাঙ্গ পুরুষদেরই ভোটের অধিকার ছিল ১৮৩০-এর দশকের দিকে । প্রথমবার নারী সমতা বা নারী সমানাধিকার নিয়ে প্রতিবাদ হয়েছিল ১৮৪৮ সালে নিউইয়র্কে Women’s Rights Convention-এ ।  পরবর্তী সময়ে এলিজাবেথ ক্যাডি স্ট্যানটন এর নেতৃত্বে ১৮৯০-এর দশকে, ন্যাশনাল আমেরিকান ওমেন স্যাফারেজ অ্যাসোসিয়েশন শুরু হয়। এই দশক শেষ হওয়ার আগে, আইডাহো এবং ইউটা মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার মিলেছিল। ১৯১০ সালে অন্যান্য পশ্চিমী রাজ্যগুলি মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার দিতে শুরু করে। তবে তখনো বেশ কয়েকটি পূর্ব এবং দক্ষিণী রাজ্যে মহিলাদের ভোটারাধিকারে স্বীকৃতি মেলেনি। এর পর, ১৯২০ সালের ২৬ অগস্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ১৯তম সংশোধনী গৃহীত হয়, যেখানে মহিলাদের ভোট দেওয়ার অধিকার পান।
তারিখটি ১৯২০ সালে সেই দিনটিকে স্মরণ করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল যখন সেক্রেটারি অফ স্টেট বেইনব্রিজ কোলবি আমেরিকান মহিলাদের ভোট দেওয়ার সাংবিধানিক অধিকার দেওয়ার ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন।  ১৯৭১ সালে, ১৯৭০ সালের দেশব্যাপী নারীদের সমতার জন্য ধর্মঘট এবং আবার ১৯৭৩ সালে, সমান অধিকার সংশোধনী নিয়ে লড়াই চলতে থাকলে, নিউইয়র্কের কংগ্রেসওম্যান বেলা আবজুগ ২৬শে আগস্টকে নারীর সমতা দিবস হিসেবে মনোনীত করার জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
১৯৭২ সালে, রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন ২৬ আগস্ট, ১৯৭২কে “নারী অধিকার দিবস” হিসাবে মনোনীত করেছিল এবং এটি ছিল নারীর সমতা দিবসের প্রথম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।  ১৯৭৩ সালে আমেরিকান কংগ্রেস এবং আমেরিকার ৩৭তম রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন আনুষ্ঠানিকভাবে ২৬ অগস্ট দিনটিকে ‘নারী সমতা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।  আমেরিকার মহিলাদের প্রথম ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছিল।  একই দিনে, রাষ্ট্রপতি নিক্সন নারী সমতা দিবসের জন্য ঘোষণা ৪২৩৬ জারি করেছিলেন, যা শুরু হয়েছিল, অংশে: “মহিলাদের ভোটাধিকারের সংগ্রাম, যাইহোক, আমাদের জাতির জীবনে মহিলাদের পূর্ণ এবং সমান অংশগ্রহণের দিকে প্রথম পদক্ষেপ মাত্র। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে,  আমরা আমাদের আইনের মাধ্যমে লিঙ্গ বৈষম্যকে আক্রমণ করে এবং মহিলাদের জন্য সমান অর্থনৈতিক সুযোগের জন্য নতুন পথ প্রশস্ত করার মাধ্যমে অন্যান্য বিশাল অগ্রগতি করেছি৷ আজ, আমাদের সমাজের কার্যত প্রতিটি ক্ষেত্রে, মহিলারা আমেরিকান জীবনের গুণমানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে৷ এবং এখনও,  এখনও অনেক কিছু করা বাকি আছে।”
২০২১ সাল পর্যন্ত, রিচার্ড নিক্সনের পর থেকে প্রতিটি রাষ্ট্রপতি প্রতি বছর ২৬ আগস্টকে নারী সমতা দিবস হিসাবে মনোনীত করে একটি ঘোষণা জারি করেছেন। তাই এই দিনটি মহিলাদের সমান অধিকার দিবস হিসেবে পালন করা হয়।আমেরিকায় এই দিবস উদযাপন শুরু হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে নারী সমতা দিবস পালিত হয়ে আসছে।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

আজ ২৭ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।।।।

আজ ২৭ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক)  রাযী দিবস (ইরান)
(খ) স্বাধীনতা দিবস (মলদোভা)।
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০৮ – (ক) স্যার ডোনাল্ড জর্জ ব্র্যাডম্যান ,ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট তারকা ।
(খ) লিন্ডন বি.
জনসন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬তম রাষ্ট্রপতি।
১৯২৬ – ক্রিস্টেন নিগার্ড, নরওয়েজীয় গণিতবিদ, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা মুঘল ও রাজনীতিবিদ।
১৯৩১ – শ্রী চিন্ময়, বাঙালি মহাত্মা ও হিন্দুধর্মের সংস্কারক, লেখক, শিল্পী, কবি ও সঙ্গীতজ্ঞ।
১৯৭৪ – মোহাম্মদ ইউসুফ, পাকিস্তানের ক্রিকেটার।
১৮৪৭ – নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী, ভারতে ফুটবল খেলার জনক।
১৭৭০ – গেয়র্গ ভিলহেল্ম হেগল, জার্মান দার্শনিক।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৯১৬ – অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে রোমানিয়া।
১৯২৮ – প্যারিসে ১৭টি দেশের যুদ্ধ পরিত্যাগ করার ঘোষণা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
১৯৩২ – আমস্টারডামে যুদ্ধবিরোধী শান্তি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৪২ – ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় কংগ্রেসের গোপন বেতার কেন্দ্র কংগ্রেস রেডিও প্রচার শুরু করে।
১৯৫৮ – সোভিয়েত ইউনিয়ন দুটি কুকুরসমেত স্পুটনিক-৩ উৎক্ষেপণ করে।
১৯৬৯ – ইসরায়েলের কমান্ডোরা মিসরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নীল উপত্যকায় মিসরীয় সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরে মর্টার হামলা চালায়।
১৯৭১ – লন্ডনে বাংলাদেশ মিশন উদ্বোধন।
১৯৭৫ – বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ওমান।
১৯৮৮ – প্রবল বন্যায় বাংলাদেশে শতাধিক প্রাণহানি ঘটে।
১৯৯১ – (ক)  সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত মোলদাভিয়া পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।
(খ) – ইউরোপিয়ান কমিউনিটি এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়াকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১৮১৩ – ড্রেসডেনের যুদ্ধে নেপোলিয়ন অস্ট্রীয়দের পরাজিত করেন।
১৮৭০ – শশীপদ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম শ্রমজীবী সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন।
১৮৮৩ – ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা/জলোচ্ছ্বাসে ৩৬ হাজার প্রাণহানি ঘটে।
১৮৮৯ – প্রথম বারের মত সেলুলয়েড রোল ফিল্ম প্রস্তুত করা হয়।
১৭৮১ – পাল্লিলোরে হায়দার আলী ব্রিটিশ সৈন্যদের সঙ্গে যুুদ্ধে লিপ্ত হন।
১৭৮৯ – ফরাসী জাতীয় পরিষদে বিশ্বখ্যাত মানবাধিকার ঘোষণা।
১২২৭ – মুসলমানদের প্রথম নৌ যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০৬ – হৃষিকেশ মুখার্জী  হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি পরিচালক।
১৯৬৫ – সুইস স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ লে করবুসিয়ের।
১৯৭৬ – মুকেশ চন্দ মাথুর ,ভারতীয় হিন্দি চলচ্চিত্রের সঙ্গীত শিল্পী।
১৯৮২ – শ্রী আনন্দময়ী মা ,ভারতের বাঙালি হিন্দু আধ্যাত্মিক সাধিকা ।
১৯৯০ – তপোবিজয় ঘোষ, বিশিষ্ট বাঙালি সাহিত্যিক।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২৪ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।।

আজ ২৪ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০৮ – শিবরাম রাজগুরু, (ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী)।
১৯১১ – বীণা দাস (ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী ও অগ্নিকন্যা)।
১৯২৮ – টমি ডোচার্টি, ( স্কটিশ ফুটবলার ও ফুটবল ম্যানেজার)।
১৯২৯ – ইয়াসির আরাফাত, (ফিলিস্তিনী নেতা ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী)।  .
১৯৪৭ – অ্যান আর্চার, (মার্কিন অভিনেত্রী)।
১৯৫৯ – আদ্রিয়ান কুইপার, (দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার)।
১৯৬৫ – মার্লি ম্যাটলিন, (মার্কিন অভিনেত্রী, লেখিকা ও সমাজকর্মী)।
১৯৯১ – পুনম যাদব,( ভারতীয় প্রমীলা ক্রিকেটার)।
১৮০৮ – জয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় (বাঙালি সমাজসেবী ও শিক্ষাবিদ)।
১৮৫১ – টম কেন্ডল, (অস্টেলীয় ক্রিকেটার)।
১৮৯৩ – কৃষ্ণচন্দ্র দে (বাংলাসঙ্গীতের আদি ও প্রবাদ পুরুষ, কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী)।
১৮৯৮ – অ্যালবার্ট ক্লুঁদে (নোবেলবিজয়ী বেলজিয়ান-আমেরিকান চিকিৎসক ও কোষ জীববিজ্ঞানী)।
১৮৯৯ – হোর্হে লুইস বোর্হেস, (আর্জেন্টিনীয় সাহিত্যিক)।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৯০২ – জোয়ান অব আর্কের মূর্তি উন্মোচন করা হয় সেইন্ট পিয়েরে-লে-তে।
১৯১৩ – ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে এই দিনে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় পরস্পরকে আক্রমণ না করার।
১৯১৪ – প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান বাহিনী নামুর দখল করে।
১৯২৯ – বায়তুল মোকাদ্দাসে নুদবা প্রাচীর আন্দোলন শুরু হয়।
১৯৪৪ – জার্মান থেকে প্যারিস মুক্ত।
১৯৪৯ – উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (ন্যাটো) গঠিত হয়।
১৯৬৬ – ভারতীয় সাঁতারু মিহির সেন জিব্রাল্টার প্রণালী অতিক্রম করেন।
১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় পানামা ও উরুগুয়ে।
১৯৭৪ – ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ ভারতের পঞ্চম রাষ্ট্রপতি হন।
১৯৮৮- সাংবাদিক, সাহিত্যিক আবু জাফর শামসুদ্দীন মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৮৯ – ৪৫ বছরের কমিউনিস্ট শাসনের পর পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হলেন তাদেউজ মাজোউইকি।
১৯৯১ – তুর্ক মেনিয়ার সার্বভৌমত্ব ঘোষণা।
১৯৯১ – পূর্ব ইউরোপের দেশ ইউক্রেন সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
১৮১৪ – ব্রিটিশ সেনাদল ওয়াশিংটন ডিসি অধিকার করে এবং হোয়াইট হাউস জ্বালিয়ে দেয়।
১৮১৫ – নেদারল্যান্ডসের আধুনিক সংবিধান এই দিনে গৃহীত হয়।
১৮২১ – মেক্সিকো স্পেনের উপনিবেশ থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে ।
১৮৭৫ – ক্যাপ্টেন ম্যাথুওয়েব প্রথম ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেন সাঁতার কেটে।
১৬০৮ – প্রথম সরকারিভাবে ইংলিশ প্রতিনিধি ভারতের সুরাতে আসেন।
১৬৯০ – ইংরেজ ব্যবসায়ী জব চার্নক সদলে সুতানুটিতে ইংল্যান্ডের জাতীয় পতাকা ওড়ান। দিনটিকে কলকাতা নগরীর পত্তন দিবস হিসেবে ধরা হয়।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০৪ – আইভি রহমান, (বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী)।
২০১৩ – নিউটন ডি সর্দি, (ব্রাজিলীয় ফুটবলার।)
২০১৪ – রিচার্ড অ্যাটনবারা (ইংরেজ চলচ্চিত্র অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক)।
১৯২৭ -( মিশরের জাতীয় নেতা) সাদ জগলুল পাশা।
১৯৫০ – আর্তুরো আলেস্‌সান্দ্রি, (চিলির রাষ্ট্রপতি)।
১৯৫৪ – (ব্রাজিলিয়ান স্বৈরশাসক) গেতুলিও বার্গাস।
১৯৫৬ – কেনজি মিজোগুচি, (জাপানি চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার)।
১৯৬৮ – সিরিল ভিনসেন্ট, (দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার)।
১৯৮৮ – লিওনার্ড ফ্রে, (মার্কিন অভিনেতা)।
১৮৯৪ – (প্রথম বাঙালী স্থপতি) নীলমণি মিত্র।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
গল্প প্রবন্ধ

ত্রিলোকনাথ; তুমি আছ বিশ্বনাথ অসীম রহস্যমাঝে : শীলা পাল।।।।।।।

অনেক অনেকবছর আগে প্রায় চল্লিশ বছর তো হবেই ।তখন লাহুল স্পিতি উপত্যকা আমাদের কাছে একটা রহস্যময় অচেনা জগতের মতো ছিল।তবু ভবঘুরে মন আর পায়ের তলায় সরষে ।তাই বছরের কোনও না কোনও সময়ে হিমালয়ের ডাক কানে এসে পৌঁছতো আর আমরা ছয়জনের যে দলটি লোটা কম্বল নিয়ে  সব সময় রেডি থাকতাম বেরিয়ে পড়তাম।সেই বছর ত্রিলোকনাথ যেন আমাদের ডাক পাঠালেন।ব্যাস আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল।সেপ্টেম্বর মাস এমনিতেই বাতাসে শারদীয়ার সুর
আমরা চললাম মানালির উদ্দেশ্যে ।ওখান থেকেই যাত্রা শুরু করতে হবে।সেই সময়ের মানালি যেন কুমারী সুন্দরী।কী তার রূপ সবুজে শ্যামলে পাহাড়ে নদীতে যেন রূপসী অপ্সরা।আর তেমন পথঘাট সেইরকম সুন্দর ওখানকার লোকজন ।চোখফেরানো যায় না এমন সব রমণীয় রমণীদের পথে ঘাটে দেখি আর বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকি।আমাদের একসঙ্গী সবে কলেজে ঢুকেছে তার চোখে ঘোর ।ওকে নিয়ে কি মজাটাই করেছি আমরা দুই সখী স্বপ্না আর আমি।বিপাশার কলকল ধ্বনি প্রথম দিনেই আমাদের মন জয় করে নিল।কীভীষন ভালো লাগায় মন ভরে গেল যেন।প্রাথমিক কিছু রসদ কেনাকাটা করা হল।চাল ডাল ফল সব্জি ইত্যাদি এটা আমাদের পাহাড়ি পথে সবসময়ই মজুত রাখা হয়।অভ্যাস অনেক রকম অভিজ্ঞ।তা থেকে বুঝেছি এটা সঙ্গে থাকলে রাস্তাতেও দিন কাটানো যায় ।পাহাড়ের রাস্তা বড়ই খতরনক ।মানালী থেকে বাস ছাড়লো সকাল আটটায় ।বিপাশাকে বাঁয়ে রেখে যাত্রা শুরু ।পাহাড়ি পথে পাক খেতে খেতে বাস এগিয়ে চলে।উৎসুক মন কখন রোটাংপাস দেখবো।ভয়ংকর রোটাং  হিমশীতল রোটাং।কিন্তু রোটাংপাস এ পৌঁছে মন ভরলো না।রিক্ত রুক্ষ কঠোর কেমন যেন সর্বস্ব হারা রূপ ।রোটাংপাস থেকে অনেকটা পথ নেমে প্রায় বারোটার সময় এসে পৌঁছলাম চন্দ্র নদীর তীরে খোকসারে।এখানে হিমালয় যেন গৈরিক সন্ন্যাসী ।ভাবগম্ভীর প্রশান্তিময় মৌন গিরিরাজ।
খোকসার থেকে রাস্তা দু ভাগে ভাগ হয়ে গেছে ।একটি চন্দ্র নদীর উৎস অভিমুখে অন্য টি আমরা যে পথে যাবো ত্রিলোকনাথ এর দিকে যে পথে আমরা যাবো।
খোকসারের প্রণাম জনপদ শিশু।শিশু নামের বিশেষত্ব ছড়ানো আছে পাহাড়ের গায়ে গায়ে ।কোন্ অদৃশ্য নিপুন হাতে রোপিত অজস্র শিশুগাছের শ্যামল বনানী ।বাস রাস্তার নীচে র দিকে অনেক বর্ধিষ্ণু পাহাড়ি গ্রাম ।ক্ষেতে ক্ষেতে সর্বত্র ই ফসল তোলার সাড়া ।আসন্ন শীতের জন্য এই তোড়জোড় ।শীত এদের কাছে বিভীষিকা ।তাই চাষবাস পশুপালন শীতের আগেই সঞ্চয় করার অভ্যাস বা রীতি নিয়ম সবকিছু ।ছোট ছোট অনেক জনপদ পেরিয়ে বেলা তিনটে নাগাদ এসে পৌঁছলাম তান্ডি তে।এখানে  ভাগা নদী মিলিত হয়েছে চন্দ্র নাম হয়েছে চন্দ্রভাগা।নদীর জল ঘন নীল ।পুরো রাস্তা টাই কাঁচা তান্ডি থেকে।সংকীর্ণ এবড়োখেবড়ো পথ তার মধ্যে ই বড়বড় লরি চলাচল করছে।বেশ ভয়ে ভয়ে এই রাস্তা পার হয়েছি ।থিরোট হুয়ে কীর্তিং প্রায় পাঁচটা নাগাদ এসে পৌঁছলাম ।রাস্তার ওপরেই লোকালয় ।জায়গা টি বেশ জনবহুল ।সামনেই চা আর পকৌড়ার দোকান।গোবিন্দ চেঁচিয়ে উঠল ফুলকাকা সামনেই চা আর পাকৌড়া নামুন  নামুন ।আমরা সবাই হুড়মুড়িয়ে বাস থেকে নামলাম। উফ্ একটানা বাসের গোঁ গোঁ আওয়াজ মাথা যেন কাজ করছে না ।মুক্ত হাওয়ায় চা টা খেয়ে বেশ ভালো লাগছে।এমন সময়  মি ঠাকুর নামে এক ভদ্রলোক পাশেই তার বাড়ি আমাদের ডাকলেন নিজের হাতে আপেল পাড়ার জন্য ।কী অপূর্ব তার বাগান।ওইটুকু সময়ের মধ্যে তাঁর বাড়ি বাগান ঘুরে এত্তো আপেল নিয়ে বাসে উঠলাম ।কি খুশী ওনার চোখে মুখে ।এরকম আন্তরিক মধুর ব্যবহার আমাদের চিরদিন মনে থাকবে।চলার পথে এগুলো ই পাথেয় ।সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ ধূলিধূসরিত আমরা এসে হাজির হলাম চন্দ্র ভাগা উপত্যকার উদয়পুরে।রাস্তার ওপরেই পি ডব্লিউ ডির সুন্দর সাজানো বাংলো।জায়গাটা যেমন সুন্দর তেমনি নির্জন ।সামনেই চন্দ্র ভাগা চাঁদের আলোয় ঝলমল করছে ।মনোরম এই পরিবেশ আমাদের সব ক্লান্তি কোথায় মিলিয়ে গেল।স্বপ্না কি সুন্দর করে গাইল -পূর্ণ চাঁদের মায়ায় আজি ভাবনা আমার পথ ভোলে ।সব অবসাদ মুহূর্তে মুছে গেল ।
পরের দিন সকালে ত্রিলোকনাথ দর্শন ।উদয়পুর থেকে প্রায়  নয় কিলোমিটার ।ভোরের পাহাড় যে কি স্নিগ্ধ হয় মনে যেন কি শাস্তি আসে।চন্দ্রভাগার উপর সেতু পার হয়ে শুরু পাহাড়ি পাকদণ্ডি পথ।সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে মনে হল যেন তুষার শৃঙ্গের মুকুট পরে চন্দ্রভাগা উপত্যকা যেন তার সমস্ত সৌন্দর্য মেলে ধরেছে।একটা সরু নালার পাশ দিয়ে খুব পিচ্ছিল ভাঙাচোরা পথ।মাঝে মাঝে চড়াই ভেঙে দু তিনটে ছোট ছোট পাহাড় পেরিয়ে হঠাৎ দূর থেকে দেখতে পেলাম আমাদের বহু আকাঙ্ক্ষিত ত্রিলোকনাথ মন্দির ।জায়গাটির নাম ত্রিলোকনাথ ।পাহাড়ের মাথায় জনবসতির একপাশে দেবালয় ।এখানে দেবতা রুদ্ধ দ্বারে বসে নেই একান্ত আপনজনের মতো সকলের সাথে মিশে রয়েছেন।মন্দির প্রাঙ্গণে দেখা হল এখানকার অধিবাসীদের সাথে।পরদেশি দেখে সবাই  ভীড় করে এলো।কি হাসিখুশি সহজ সরল মানুষ গুলি মন্দিরের সামনেরঅংশটি ভেঙে গেছে।তিব্বতি ধাঁচের  মন্দির ।ভাঙা অংশ টি পেরিয়ে আমরা জুতো মোজা খুলে মন্দিরের ভেতরে প্রবেশ করলাম ।অসংখ্য প্রদীপের আলোয় মন্দির আলোকিত ।মৌণ মন্দির অভ্যন্তরে পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত কয়েক জন পাহাড়ি মেয়ে।এখানে সকলেই বৌদ্ধধর্মালম্বী।বুদ্ধকে স্মরণ করেই ত্রিলোকনাথ দেবের পুজো নিবেদিত হয়।ত্রিলোকনাথের মাহাত্ম্য এবং কিংবদন্তী অনেক  আছে।এই মুর্তিটি  অনেকবার চুরি করার চেষ্টা করা হয়েছে ।একবার কুলুর রাজা সেনা পাঠিয়ে বিগ্রহ তুলে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু কিছুতেই পারেন নি।এখনও নাকি মুর্তিটির ডান পায়ের নীচে তরোয়ালের দাগ দেখা যায় ।আমরা পুজো দেওয়ার জন্য পুরোহিতের খোঁজ করতে জানলাম উনি বাইরে আছেন ।পুরোহিতের ছেলে আমাদের পুজো নেবে।অর্ঘ্য  তো সামান্য ।কিছু ধূপের বান্ডিল আর নতুন কাপড়ের টুকরো।ভগবান বুদ্ধের চরণে এই সামান্য ডালি নিবেদন করে ডক্তিভরে সবাই  প্রণাম করলাম ।তারপর পুরোহিতের কানে কানে আমাদের মনোবাঞ্ছা জানালাম ।আমরা এক বিখ্যাত হিমালয়প্রেমীর কাছে যা জেনেছিলাম ।পুরোহিত একবার চকিতে চারিদিক দেখে নিল।মন্দির পুরো ফাঁকা ।ইসারায় আমাদের একদম বিগ্রহের সামনে নিয়ে গেল।অজস্র পাথর মনি মুক্তোর মালা তুলে উন্মোচন করলো পুরো মুর্তিখানি।কোথায় গেল সেই সৌম্য শান্ত বুদ্ধ এ যে ভুবন ভোলানো নৃত্যরত নটরাজ! এমন সৌম্য রূপের সঙ্গে সংহার রূপের মিলন ।আমরা বিমোহিত হতবাক।প্রতিটি আঙুলের মুদ্রা আর ভঙ্গিমা  এতো ছন্দময় এতো প্রাণবন্ত যেন স্বয়ং নটরাজ নৃত্যরত বালকের মতো আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছেন ।ধন্য আমরা।ধন্য আমাদের ত্রিলোকনাথ দর্শন ।জয় ত্রিলোকনাথ ।তুমি আছ বিশ্বনাথ অসীম রহস্য মাঝে।
একরাশ আনন্দ নিয়ে ফিরে এলাম উদয়পুর ।বেলা একটা নাগাদ ।চাল ডাল সামনের চায়ের  দোকানে দিয়ে সুন্দর খিচুড়ি আর ওখানকার সুস্বাদু আলু ভাজি আমাদের দুর্দান্ত লাঞ্চ হয়ে গেল।কিছুক্ষণ এখানকার লোকজনদের সঙ্গে গল্প গুজব  করে বিশ্রাম  নিতে গেলাম বাংলোর ভিতর ।
পরের  দিন ভোরে মানালি ফেরা।সবাই খুব হৈ হৈ  করে দিনটা কাটালাম।তখনও বুঝি নি এই  অপূর্ব চাঁদের আলো এই উচ্ছল সন্ধ্যা গানে গানে মুখরিত রাত্রি ঢেকে যাবে কালোমেঘে।মাঝ রাতে শুনি বাইরে তান্ডবলীলা ।এমনিতেই এখানে প্রচন্ড ঠান্ডা হঠাৎ যেন দশগুণ বেড়ে গেল।সারারাত কম্বলের তলায় ঠকঠক করে কেঁপেছি আর ফেরার কথা ভেবে আকুল হয়েছি ।ভোরবেলায় উঠে দেখি প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হয়েছে ।আর উত্তুরে হাওয়া যেন সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেবে।একরাতের মধ্যে সামনের পাহাড় গুলো মুহূর্তে বরফে ঢেকে গেছে।বাস আসতেই উঠে বসলাম ।সব যাত্রীদের মুখে এক কথা এভাবে বরফ পড়তে থাকলে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে ।রাহুল ও মানালির একমাত্র সংযোগ স্থল রোটাংপাস যদি বন্ধ হয়ে যায় আমরা এখানেই বন্দী হয়ে যাবো।বাস একটু একটু করে যায় আর থেমে যায় ।জিজ্ঞেস করলে ড্রাইভার বলে ডিজেল ফাঁস গিয়া।প্রচন্ড ঠান্ডাতে ডিজেল জমে যাচ্ছে । বাসের মধ্যে সবাই চুপচাপ বসে আছি।এত দুর্ভাবনার মধ্যে ও বাইরের দিকে তাকিয়ে অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সব ভুলে গেলাম ।কি হবে কি হতে পারে সব ভাবনা ভুলে দেখতে থাকি আকাশ থেকে ঝরে পড়া যেন মুঠো মুঠো শ্বেত টগরের পাপড়ির মতো তুষার বৃষ্টি ।আর চারিদিক সাদায় সাদা।ডিজেল ফাঁসতে ফাঁসতে অবশেষে বিকেল বেলা খোকসার এসে পৌঁছলাম ।চারিদিক অন্ধকার ।এরকম দুর্যোগে কোনও গাড়ি আর যেতে চাইছে না।সব লরি বাস বন্ধ ।আজ এখানেই রাত্রি বাস।স্থানীয় লোকজন বলছে এরকম আবহাওয়া চলতে থাকলে রোটাংপাস বন্ধ হয়ে যাবে।ছ দিন কি ছ মাস  কেউ বলতে পারবে না।উৎকন্ঠিত চিত্তে পি ডব্লিউ ডির  রেস্ট হাউসে রাত কাটানোর জন্য হাজির হলাম ।সেদিনের মতো পোড়া আলু আর পোড়া রুটি  ডিনারের জন্য চায়ের দোকানে পাওয়া গেল।এরপরে কি হবে জানা নেই।এর মধ্যে ই মলয় বললো কি আর হবে দিদি তোর মেয়েটা বড় হয়ে যাবে আর কাকীমার তোমার ছেলে এক ক্লাস এগিয়ে যাবে ।আর যত দিন কাফ সিরাপ আছে রুটি দিয়ে গুড়ের মত খেয়ে নেব।কি চিন্তা আমাদের ।উফ্ কি ছেলে রে বাবা ।আমরা একমনে বাবা ত্রিলোকনাথ কে ডেকে যাচ্ছি  আর প্রার্থনা করছি রক্ষা করো বাবা।রাত্রি নটার পর ঝড়ের বেগ একটু কমে গেল।বৃষ্টির আওয়াজ ও যেন কমেছে মনে হল।একটু রাতে হঠাৎ যেন কাঁচের জানালার ফাঁকে এক ঝলক আলো এসে পড়লো ।হৈ হৈ করে বারান্দায় বেরিয়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে দেখি পরিপূর্ণ জ্যোৎস্নায় তুষারাবৃত হিমালয় স্নান করছে।অবর্ণনীয় সেই আলো সেই সৌন্দর্য ।আলোর ঝর্ণা ধারায় আনন্দে চোখে জল এসে গেল।মলয় আনন্দের চোটে গান গাওয়া শুরু করল–প্রেমের জোয়ারে ভাসাব দোঁহারে বাঁধন খুলে দাও দাও দাও যতো হাসি আর বলি ওরে এ যে  শ্যামার গান  প্রেমের গান কে কার কথা শোনে হাসতে হাসতে আমরা বাঁধন খোলার আনন্দে ভেসে গেলাম ।পরদিন বেলা দশটা নাগাদ বাস ছাড়লো।বরফ কেটে কেটে মন্থর গতিতে সন্ধ্যা সাতটায় রোটাং পাসের ভয়ানক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে কখন যেন মানালি এসে গেলাম ।একশ আশি কিলোমিটার শুধু সাদা দেখে দেখে সবুজের ছোঁয়ায় মন ভরে গেলো।জয় ত্রিলোকনাথ ।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২৩ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।।।।

আজ ২৩ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক) আন্তর্জাতিক দাস প্রথা বিলোপ দিবস৷
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০৮ – রুশ-ফরাসি নাট্যকার আর্থার আদমভ।
১৯১৮ – ভারতীয় পদার্থবিদ ও আবহাওয়াবিজ্ঞানী আন্না মনি।
১৯২৩ – এডগার কড, ইংরেজ কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
১৯৩১ – নোবেলজয়ী [১৯৭৮] মার্কিন অণুজীববিজ্ঞানী হ্যামিলটন ও থানেল স্মিথ।
১৯৬৮ – ভারতীয় নেপথ্য সঙ্গীতশিল্পী, কে কে নামে সুপরিচিত কৃষ্ণকুমার কুন্নথ।
১৯৭৮ – কোবি ব্রায়ান্ট, প্রখ্যাত মার্কিন বাস্কেটবল খেলোয়াড়।
১৮৫২ -রাধাগোবিন্দ কর ব্রিটিশ ভারতের একজন খ্যাতনামা চিকিৎসক ।
১৭৪০ – রুশ সম্রাট ষষ্ঠ আইভান।
১৭৭৩ – জার্মান দার্শনিক জ্যাকব এফ ফ্রাইস।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
২০০৭ – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কালো দিবস নামে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে সেনাবাহিনী ও পুলিশের আক্রমণের প্রতিবাদে এ দিনটি কালো দিবস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
২০১৬ – ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় কলকাতার রাজভবনে আকাশবাণী মৈত্রী চ্যানেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
১৯১৪ – জাপান জার্মানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯২১ – প্রথম ফয়সাল ইরাকের বাদশা পদে অভিষিক্ত হন।
১৯২৫ – বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৩৯ – হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানী এবং ষ্ট্যালিনের নেতৃত্বে রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৪২ – স্তালিনগ্রাদের ঐতিহাসিক যুদ্ধ শুরু হয়।
১৯৪৪ – রুমানিয়ার সামরিক শাসক উৎখাত।
১৯৬২ – বাংলাদেশে প্রথম প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়।
১৯৭৩ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় আইভরি কোস্ট।
১৯৮৬ – পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য মস্কো ওয়াশিংটন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়
১৯৯১ – (ক) “ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন” প্রতিষ্ঠিত হয়।
(খ) – রুশ প্রজাতন্ত্রে কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ করেন।
(গ) – সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রাসাদ ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয় এবং গর্বাচেভ পুনরায় ক্ষমতা ফিরে পান।
১৮২১ – মেক্সিকো স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
১৮২৫ – বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৩৩ – ব্রিটেন তার উপনিবেশগুলোতে ক্রীতদাস প্রথা বাতিল করে। ফলে ৭০ লাখ ক্রীতদাস মুক্ত হয়।
১৮৩৯ – ব্রিটেন চীনের কাছ থেকে হংকং দখল করে নেয়।
১৮৬৬ – প্রুশিয়া এবং অষ্ট্রিয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক প্রাগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৮৭৫ – বাংলার প্রথম অভিনেত্রী-নাট্যকার গোলাপের সুকুমারী দত্ত সাহায্যার্থে তার রচিত ‘অপূর্ব সতি’ মঞ্চস্থ হয়। এটিই বাংলার প্রথম ফিল্মী-সহায়তা অভিনয় রজনী।
১৭৯৯ – নেপোলিয়ন মিসর ত্যাগ করে ফ্রান্সের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
১৬১৭ – লন্ডনে প্রথম ওয়ানওয়ে রাস্তা চালু হয়।
১৩২৮ – ফ্রান্সের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ সিংহাসনে অভিষিক্ত হন।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০১৮ – প্রথিতযশা প্রবীণ ভারতীয় সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার।
২০১৯ – (ক) অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ।
(খ) কারী আব্দুল গণী, বাংলাদেশি ইসলামি পণ্ডিত ও কারী।
১৯৪৪ – দ্বিতীয় আবদুল মজিদ, সর্বশেষ উসমানীয় খলিফা।
১৯৭৫ – অমল হোম, বাঙালি সাংবাদিক এবং সাহিত্যিক।
১৯৮৭ – সমর সেন, ভারতীয় বাঙালি কবি এবং সাংবাদিক।
১৮০৬ – চার্লস অগাস্টিন কুলম্ব, ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী।
১৮৮৬ – পণ্ডিত দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক এবং সমাজসেবক।
৬৩৪ – ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর সিদ্দিক।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২২ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।।

আজ ২২ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক) মাদ্রাজ (চেন্নাই) দিবস, ভারত।
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০২ – লিনি রিয়েফেন্সটাহল, জার্মান অভিনেত্রী ও পরিচালক।
১৯০৯ – জুলিয়াস জে. এপস্টাইন,মার্কিন চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক।
১৯১১ – দেবব্রত বিশ্বাস, স্বনামধন্য ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়ক ও শিক্ষক।
১৯১৫ – শম্ভু মিত্র,বাংলা তথা ভারতীয় নাট্যজগতের কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব ।
১৯২০ – রে ব্যাডবেরি, মার্কিন লেখক ও চিত্রনাট্যকার।
১৯৩৯ – ভালেরি হারপার, মার্কিন অভিনেত্রী ও গায়ক।
১৯৫৫ – চিরঞ্জীবি, ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক ও রাজনীতিবিদ।
১৯৫৮ – মুকুল চৌধুরী,বাংলাদেশী কবি ও গীতিকার।
১৯৬০- ফজলুর রহমান বাবু , একজন বাংলাদেশী অভিনেতা এবং সঙ্গীতশিল্পী।
১৯৬৩ – টোরি আমস, মার্কিন গায়ক, গীতিকার, পিয়ানোবাদক ও প্রযোজক।
১৯৭১- কে এম মোশাররফ করিম, একজন বাংলাদেশী অভিনেতা।
১৯৭১ – রিচার্ড আরমিটাগে, ইংরেজ অভিনেতা।
১৯৮৫- রুমানা রশীদ ঈশিতা , বাংলাদেশের একজন টেলিভিশন অভিনেত্রী, পরিচালিকা এবং লেখিকা।
১৯৯১ – ফেদেরিকো মাচেডা, ইতালীয় ফুটবলার।
১৮৬২ – ক্লাউড ডেবুসয়,ফরাসি সুরকার।
১৮৭৪ – মাক্স সচেলের,জার্মান দার্শনিক ও লেখক।
১৮৭৭ – এ কে কুমারস্বামীর,সিংহলী শিল্পী।
১৮৯৪ – প্রগতিবাদী লেখক ও প্রতিষ্ঠাবান কবিরাজ রমেশচন্দ্র সেন।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৯১০ – জাপান কোরিয়াকে চুক্তির মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করে নেয় ও এভাবে চলতে থাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত।
১৯৩২ – বিবিসি প্রথম নিয়মিত টিভি সম্প্রচার শুরু করে।
১৯৪২ – ব্রাজিল জার্মানি ও ইতালির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯৪২ – জার্মান নাৎসি বাহিনী স্তালিনগ্রাদে অবরোধ করে।
১৯৪৪ – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন রোমানিয়া দখল করে।
১৯৮৯: নেপচুন গ্রহে প্রথম বলয় দেখতে পাওয়া যায়।
১৬৪২ – ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধ শুরু।
১৬৯৮ – সুইডেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া, ডেনমার্ক ও পোল্যান্ডের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০০ – অরুণ মিত্র বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রথিতযশা কবি ও ফরাসি ভাষা ও খ্যাতনামা অধ্যাপক ও অনুবাদক।
২০০৫ – সংগীত,নৃত্য ও অভিনয়ে পারদর্শিনী অমিতা সেন (আশ্রমকন্যা)
২০১৩ – আন্ড্রেয়া শেরভি, ইতালীয় ফুটবল খেলোয়াড়।
২০১৫ – আর্থার মরিস, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।
১৯০৪ – কেট ছপিন, মার্কিন লেখক।
১৯২২ – মাইকেল কলিন্স, আইরিশ রাজনীতিবিদ ও ২য় মন্ত্রী।
১৯৫৮ – রজার মারটিন ডু গার্ড, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি লেখক।
১৯৭৭ – সেবাস্টিয়ান কাবট, ইংরেজ বংশোদ্ভূত কানাডীয় অভিনেতা ও গায়ক।
১৯৭৮ – কেনিয়ার নেতা জোমো কেনিয়াত্তা।
১৯৮২ – একনাথ রানাডে, ভারতের এক সমাজ সংস্কারক এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের সংগঠক।
১৮১৮ – ওয়ারেন হেস্টিংস, ভারতের ব্রিটিশ গভর্নর জেনেরেল।
১৮৫০ – নিকোলাস লেনাউ, রোমানীয় বংশোদ্ভূত অস্ট্রীয় কবি।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

আরতি গুপ্ত : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক সাহসী নারী বিপ্লবী।

ভূমিকা:- ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে নারী বিপ্লবীদের অবদান আজও অনেকাংশে অপ্রকাশিত থেকে গেছে। তাঁদের জীবন ও সংগ্রাম কেবলমাত্র রাজনৈতিক স্বাধিকার অর্জনের জন্যই ছিল না, বরং তা ছিল আত্মমর্যাদা, জাতীয়তাবোধ এবং সামাজিক পরিবর্তনের এক অদম্য প্রয়াস। আরতি গুপ্ত ছিলেন সেই ধরনেরই এক সাহসী নারী, যিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছিলেন। যদিও তাঁর নাম হয়তো অনেকের কাছে অপরিচিত, তবু তাঁর কর্মজীবন, সংগ্রামী মানসিকতা এবং আত্মত্যাগের ইতিহাস ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অমূল্য সম্পদ।

শৈশব ও পারিবারিক পটভূমি

আরতি গুপ্ত জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে (প্রায় ১৯১০–১৯১৫ সালের মধ্যে) তৎকালীন বেঙ্গল প্রদেশের (বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের) একটি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারে। তাঁর পিতা ছিলেন এক সুপরিচিত শিক্ষাবিদ ও সামাজিক কর্মী, যিনি জাতীয়তাবাদী চিন্তায় বিশ্বাসী ছিলেন। মা ছিলেন শিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনা নারী, যিনি আরতিকে ছোট থেকেই দেশপ্রেমের গল্প শুনিয়ে বড় করেছিলেন।
ছোটবেলা থেকেই আরতি সংস্কৃত ও বাংলা সাহিত্যে গভীর আগ্রহী ছিলেন এবং পড়াশোনার পাশাপাশি নাটক, আবৃত্তি ও দেশাত্মবোধক গান গাওয়ায় দক্ষ ছিলেন।

শিক্ষাজীবন ও রাজনৈতিক প্রেরণা

আরতির স্কুলজীবন কেটেছে কলকাতার একটি গার্লস’ স্কুলে। সেখানেই তিনি প্রথম গান্ধীজির অসহযোগ আন্দোলন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিপ্লবী কার্যকলাপ এবং বাঘা যতীনের মতো বীরদের গল্প শুনে অনুপ্রাণিত হন।
কিশোরী বয়সেই তিনি যুগান্তর দল ও অগ্নিবীণা সমিতি-এর মতো বিপ্লবী সংগঠনের প্রতি আকৃষ্ট হন। তাঁর এক সহপাঠিনীর মাধ্যমে তিনি গোপনে বিপ্লবী সাহিত্য পড়া শুরু করেন এবং অস্ত্র সংগ্রহ, গোপন বার্তা আদানপ্রদান ইত্যাদি কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন।

বিপ্লবী জীবনের সূচনা

আরতি গুপ্ত প্রথম সক্রিয় ভূমিকা নেন ১৯৩০ সালে সিভিল ডিসওবিডিয়েন্স মুভমেন্ট বা নাগরিক অবাধ্যতা আন্দোলনের সময়। তখন তিনি মাত্র কুড়ি বছরের এক তরুণী। কলকাতায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ মিছিলে তিনি সরাসরি অংশ নেন এবং পুলিশি লাঠিচার্জের মুখে দাঁড়িয়ে ব্রিটিশবিরোধী স্লোগান দেন।
এই সময় তিনি বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স ও মহিলা আত্মরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিপ্লবীদের জন্য গোপন আশ্রয়, অস্ত্র পরিবহন এবং গোপন নথি লুকিয়ে রাখার কাজে ভূমিকা রাখেন।

উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড

১. অস্ত্র পরিবহন অভিযান

১৯৩২ সালে বেঙ্গলে ব্রিটিশ পুলিশ যখন বিপ্লবী সংগঠনগুলোর উপর দমননীতি চালায়, তখন আরতি গুপ্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মিশনে অংশ নেন। তাঁকে কলকাতা থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত একটি রিভলভার ও কয়েক ডজন কার্তুজ পৌঁছে দিতে হয়। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে তিনি গৃহবধূর ছদ্মবেশ নেন এবং নিজের শাড়ির আঁচলে অস্ত্র লুকিয়ে সফলভাবে গন্তব্যে পৌঁছে দেন।

২. জেলবন্দী বিপ্লবীদের সহায়তা

ব্রিটিশ সরকার বহু বিপ্লবীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠালে, আরতি তাঁদের পরিবারের জন্য অর্থ সংগ্রহ ও চিঠি-পত্র পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেন। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও মহিলা কমিটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন।

৩. প্রচারণা ও নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি

তিনি বিশ্বাস করতেন স্বাধীনতা সংগ্রামে নারীর ভূমিকা অপরিহার্য। তাই তিনি কলকাতা ও হাওড়া অঞ্চলে গোপন বৈঠক আয়োজন করে তরুণীদের বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন।

গ্রেপ্তার ও কারাবাস

১৯৩৩ সালে ব্রিটিশ পুলিশ একটি অস্ত্র চক্রের খোঁজ পেয়ে বেশ কয়েকজন বিপ্লবীর সঙ্গে আরতি গুপ্তকেও গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে “ব্রিটিশবিরোধী ষড়যন্ত্র” ও “অস্ত্র আইন ভঙ্গ” করার অভিযোগ আনা হয়।
জেল জীবনে আরতি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। কিন্তু তিনি কখনও সহযোদ্ধাদের নাম প্রকাশ করেননি। তাঁর দৃঢ়তা দেখে অনেক জেলবন্দী নারী অনুপ্রাণিত হন। প্রায় ১৮ মাস কারাবাসের পর তিনি মুক্তি পান, তবে ব্রিটিশ সরকার তাঁর উপর নজরদারি চালিয়ে যায়।

স্বাধীনতার পর জীবন

১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর আরতি গুপ্ত সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি সামাজিক ও শিক্ষামূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন। বিশেষ করে গ্রামীণ নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও স্বনির্ভরতা বৃদ্ধিতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তিনি কলকাতায় একটি মহিলা শিক্ষা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে নারীদের সাক্ষরতা শিক্ষা, সেলাই, হস্তশিল্প ও প্রাথমিক চিকিৎসা শেখানো হতো।

ব্যক্তিত্ব ও আদর্শ

আরতি গুপ্ত ছিলেন এক দৃঢ়চেতা, সাহসী ও ত্যাগী নারী। তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র ছিল— “দেশ আগে, নিজের জীবন পরে”। তিনি কখনও খ্যাতি বা পুরস্কারের জন্য সংগ্রাম করেননি, বরং নীরবে দেশের জন্য কাজ করে গেছেন।

উত্তরাধিকার

যদিও তাঁর নাম ভারতের মূলধারার ইতিহাস বইয়ে তেমনভাবে উল্লেখিত নয়, তবুও স্থানীয় পর্যায়ে ও বিপ্লবীদের স্মৃতিচারণায় তাঁর অবদান আজও সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করা হয়। অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবার তাঁকে “আরতি দি” নামে ডাকতেন।

উপসংহার

আরতি গুপ্তের জীবন আমাদের শেখায় যে স্বাধীনতার সংগ্রাম শুধু সামনের সারির নেতাদের দ্বারাই সম্ভব হয়নি; অসংখ্য অজানা নারী-পুরুষ গোপনে, নিঃস্বার্থভাবে, জীবন বাজি রেখে সেই সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছেন।
তাঁদের আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেম প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে। আজকের দিনে যখন জাতীয়তাবোধ প্রায়শই রাজনৈতিক স্লোগানে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে, তখন আরতি গুপ্তের মতো মানুষদের জীবনের শিক্ষা আমাদের আবার মনে করিয়ে দেয়— “সত্যিকার দেশপ্রেম মানে ত্যাগ, সততা ও নীরব সংগ্রাম”।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবস, জানুন কেন পালন করা হয় এবং দিনটির তাৎপর্য ।।।।।।

বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবস প্রতি বছর ২১ আগস্ট পালিত হয়।  ১৯৯১ সালে প্রথমবারের মতো উদযাপনটি হয়েছিল। স্বাস্থ্যের অবনতি এবং বয়স্কদের নির্যাতনের মতো বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের প্রভাবিত করে এমন কারণ এবং সমস্যাগুলির বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই দিনটি।  এটি সমাজে বয়স্ক ব্যক্তিদের অবদানকে স্বীকৃতি ও স্বীকৃতি দেওয়ারও একটি দিন।
মানব সমাজে প্রবীণদের অবদান তুলে ধরা এবং তাদের সম্মান জানানোর জন্য এই বিশেষ দিনটি পালন করা হয়ে থাকে। বয়স্কদের প্রভাবিত করে এমন বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য দিনটি উদযাপন করা হয়। যেমন, স্বাস্থ্য সমস্যা এবং অল্প বয়সী ব্যক্তিদের দ্বারা নির্যাতন, পরিবারে হোক কিংবা বহিরাগত ব্যক্তিদের দ্বারা নির্যাতন।  .
প্রবীণ মানুষের বিষয়গুলিকে আলাদা করে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবসটি পালন করা হয়।
এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় সিনিয়র সিটিজেনস ডে নামেও পরিচিত।প্রতি বছর সারা বিশ্বে এই দিনটি পালিত হয়। ভারতও ব্যতিক্রম নয়। এদেশেও পালন করা হয় বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবস।
বয়স্ক মানুষের জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকে প্রভাবিত করে এমন সমস্যাগুলি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এই দিনটি পালন করা হয়। কিন্তু এই দিনটি পালনের আরও কিছু উদ্দেশ্যও রয়েছে।
বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবসের তাৎপর্য —
এই দিনে প্রবীণ নাগরিকদের সম্মান জানানো উচিত, তাঁদের আত্মত্যাগ, উৎসর্গ, কৃতিত্ব এবং তাঁরা সারা জীবন যে পরিষেবা দিয়েছেন, তার জন্য। এই দিনটিতে তাঁদের প্রশংসা করতে হবে।
যে কোনও সমাজের জন্য অবশ্যই প্রবীণ নাগরিকরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ যে কোনও সমাজ তার প্রবীণ নাগরিকদের থেকে জ্ঞান অর্জন করে এবং এগিয়ে চলে। আমরা যে বিশ্বে বাস করি, তা নির্মাণে প্রবীণ মানুষের অবদান অনস্বীকার্য।তাঁদের সেই অবদানকে সম্মান করতে শিখতে হবে।
এই দিনটি জনগণ এবং সরকারকে কল্যাণের জন্য কাজ করার এবং প্রবীণ নাগরিকদের সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আমাদের সমাজের প্রবীণরা তাঁদের বয়সের কারণে যে সমস্যাগুলির সম্মুখীন হন, তা তরুণদের দ্বারা স্বীকার করা এবং সেই সমস্যাগুলি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার একটি প্রচেষ্টাও এই দিনের অঙ্গ।
বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবসের ইতিহাস—
বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবসের ইতিহাস ১৯৮৮ সালে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, রোনাল্ড রেগান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  তিনি ১৯ আগস্ট, ১৯৮৮-এ স্বাক্ষর করেছিলেন, ৫-এর৮৪৭ ঘোষণা, যা ২১ আগস্ট তৃতীয় যুগের জাতীয় দিবস হিসাবে উপস্থিত হয়েছিল।  রোনাল্ড রিগান ই প্রথম তৃতীয় যুগের প্রথম জাতীয় দিবস ঘোষণা করেন।রোনাল্ড রেগান বলেছিলেন, ‘আমাদের প্রবীণ নাগরিকরা সারাজীবনে যা অর্জন করেছেন এবং তাঁরা যা করে চলেছেন, তার জন্য আমরা তাঁদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা এবং আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।’ তার পর থেকেই এই দিনটি সারা পৃথিবী জুড়ে পালন করা হচ্ছে।
তাই বলা চলে ওয়ার্ল্ড সিনিয়র সিটিজেনস ডে হল একটি সুযোগ উদযাপন এবং প্রবীণ নাগরিকদের তাদের সেবা, কৃতিত্ব এবং উৎসর্গের জন্য প্রশংসা করার জন্য বিশেষ পালনীয় দিন যা তারা তাদের জীবনে দিয়েছে দেশ ও সমাজের জন্য।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবপেজ।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২১ আগস্ট, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।।।।।

আজ ২১ আগস্ট। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক) বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবস।
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯৭৩ – সের্গেই ব্রিন (রুশ বংশোদ্ভুত মার্কিন কম্পিউটার প্রকৌশলী ও সার্চ ইঞ্জিন গুগল এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা)।
১৯৮৬ – (বিশ্বের দ্রুততম মানব) উসাইন বোল্ট।
১৯৮৯ – আলেক্স ভিদাল, (স্প্যানিশ ফুটবলার)।
১৭৮৯ – অগুস্তাঁ লুই কোশি, (ফরাসি গণিতবিদ)।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
২০০৪ – ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় গ্রেনেড হামলা হয়, সেই হামলায় ২৪ জন নিহত হয় এবং তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা সহ প্রায় ৩০০ লোক আহত হয়। এই হামলায় নিহতদের মধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নারী নেত্রী মিসেস আইভি রহমান অন্যতম, যিনি বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী।
২০০৭ – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কালো দিবস নামে পরিচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সাথে সেনাবাহিনী ও পুলিশের আক্রমণের প্রতিবাদে এ দিনটি কালো দিবস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।
১৯১১ – লিওনার্দো দা ভিঞ্চির চিত্রকর্ম মোনা লিসার ছবিটি আজকের দিনে লুভারস মিউজিয়াম থেকে চুরি হয়ে যায়।
১৯১৫ – ইতালি তুরস্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯৫৯ – হাওয়াই আমেরিকার ৫০তম রাজ্যে পরিণত হয়।
১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় প্যারাগুয়ে।
১৯৯১ – লাটিভা সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
১৮৭৮ – প্রথম আমেরিকান বার অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠা।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০৬ – ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান সাহেব, (ভারতীয় সানাই বাদক)।
২০১৭ – নায়ক রাজ রাজ্জাক, (বাংলাদেশের একজন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা)।
১৯৪০ – (রুশ বিপ্লবী নেতা) লিও ট্রটস্কি।
১৯৪৩ – (সাহিত্যে নোবেলজয়ী [১৯১৭] ডেনিশ লেখক) হেইনরিক পন্টোপপিডান।
১৯৭৮- বিনু মানকড়, (ভারতীয় ক্রিকেটার)।
১৯৯৫ – সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর (ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণকারী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী)।
১৬১৩ – (বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম) ঈশা খাঁ।
১৬১৩ – (বাংলায় শাসনকর্তা) ইসলাম খাঁ।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব মশা দিবস, জানুন দিন’টি কেন পালিত হয় এবং দিনটির গুরুত্ব।

বিশ্ব মশা দিবস বা বিশ্ব মশক দিবস প্রতিবছর ২০শে আগস্ট পালিত একটি দিবস। মশা বাহিত রোগগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিপজ্জনক, এ কারণে প্রতিবছর বহু মৃত্যু হয়। ভারতবর্ষে শুধু নয় সারা বিশ্বে শুধু মশার আক্রমণে প্রতিবছর বহু মানুষের মৃত্যু হয়। তাই বিশ্বজুড়ে ম্যালেরিয়া মুক্ত বিশ্ব গড়ার টার্গেট নিয়েই এই মশা দিবস পালন করা হয় ।
২০শে আগস্ট ‘মশা দিবস’ পালন করা হয় মূলত চিকিৎসক রোনাল্ড রসের আবিষ্কারকে সম্মান জানানোর জন্য।
দীর্ঘদিন গবেষণার পর ভারতীয় মেডিকেল সার্ভিসের মেডিকেল অফিসার রোনাল্ড রস ১৮৯৭ সালে প্রমাণ করেন অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া পরজীবী বহন করতে পারে। তিনি ২০ আগস্ট তার আবিষ্কারের এই দিনটিকে ‘মশা দিবস’ বলে অভিহিত করেন।  পরবর্তীকালে তিনি এই আবিষ্কারের জন্য ‘নোবেল’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।১৯৩০-এর দশক থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন তার আবিষ্কারের তাৎপর্য তুলে ধরতে ২০ আগস্ট বিশ্ব মশা দিবসের নামকরণ করেন।
বিভিন্ন ভয়াবহ অসুখের মধ্যে মশা বাহিত ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু উল্লেখযোগ্য। তাই ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ইত্যাদি মশাবাহিত রোগের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে বিশেষভাবে সচেতন করার জন্য এই দিন সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয়। মশা বাহিত রোগ থেকে সাবধান হওয়ার জন্য, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এই দিনে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বেশ কিছু সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়।
দিন দিন মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। এর জন্য চাই সচেতনতা। সচেতন না হলে এর পরিসংখ্যান বাড়বে। আমরা জানি মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বেশী দেখা দেয় বর্ষায়। আর
বর্ষাকালের সময় মশাবাহিত রোগশোক গুলি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। বর্ষাকাল মশাদের প্রজননের সময়। অতএব বর্ষার সময় মশার উপদ্রব দেখা যায় বেশি। তাই এই সময় আমাদের সচেতন থাকতে হবে অনেক বেশি।  তাই মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য কিছু জরুরী বিষয় মেনে চলা আমাদের দরকার–
(ক) মশার হাত থেকে বাঁচতে হলে আমাদের প্রথম পালনীয় কর্তব্য হলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। আমাদের আশপাশে সর্বদা পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।  বাড়ি ও তার আশেপাশে কোথাও জল জমতে দেবেন না জমা জল বা আবর্জনা জমতে দেওয়া মানেই মশার বংশবৃদ্ধির সুযোগ করে দেওয়া। তাই কেবল বাড়ি পরিষ্কার রাখলেই চলবে না, সতর্ক দৃষ্টি রাখুন আশপাশের এলাকার প্রতিও। ঠিকমতো জঞ্জাল পরিষ্কার করুন, ড্রেন পরিষ্কার করে রাখতে হবে। বাড়ির মধ্যে থাকা টবে জল জমতে দেবেন না, অ্যাকোয়ারিয়াম এর জল নিয়মিত পরিষ্কার করুন, ছেড়ে রাখুন গাপ্পির মতো মাছ যা মশার লার্ভা খেয়ে নেয়৷
(খ) বাড়ীর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বজায় রাখুনঃ বাড়ির ছাদে, বাগানে বা বাড়ি সংলগ্ন স্থানে জল জমা হতে দেবেন না। কারণ এই জলেই প্রজনন করে মশা। তা ছাড়াও অপ্রয়োজনে দরজা, জানালা খোলা রাখবেন না। সপ্তাহে একদিন অন্ততঃ আমাদের বাড়ির ভেতর এবং বাইরে ঘুরে দেখা উচিৎ কোথাও কোন পাত্রে জল জমা আছে কিনা, যদি থাকে তাহলে সেটি ফেলে দেই অথবা উল্টিয়ে রাখি অথবা সেখানে মশা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
(গ) পাশাপাশি বর্ষাকালে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ দেখা যায় সবচেয়ে বেশি। তাই জ্বর, ঠান্ডা লাগা, গাঁটে ব্যথা, বমির মতো লক্ষণ দেখা গেলে একদম দেরী না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যথা সময়ে সঠিক পরামর্শ নিয়ে নিজেকে সুস্থ রাখুন।
মশা থেকে বাঁচতে কিছু ঘরোয়া উপায়—
তুলসী গাছ লাগান—
অনেকেই বিশ্বাস করে যে বাড়িতে তুলসী গাছ থাকলে নাকি মশা বা মাছি ঘরে ঢুকতে পারে না। ব্যালকনিতে বা জানলার কাছে তুলসী গাছ রেখে দেখতে পারেন।
মশা তাড়াতে রসুন কার্যকর–
কয়েক কোয়া রসুন নিয়ে থেঁতো করে নিন। তার পর সেটা খুব ভালো করে ফুটিয়ে নিন তিন কাপ জলে। জল ফুটে অর্ধেক হলে নামিয়ে ছেঁকে বোতলে ভরে রাখুন। ঠান্ডা হলে ঘরের কোণে কোণে স্প্রে করে দিন এই মিশ্রণ।
মশারি খাটিয়ে ঘুমোনো উচিৎ—
মশার কামড় থেকে বাঁচে হলে অতি অবশ্যই মশারি ব্যবহার করুন। এর কোন বিকল্প নেই। এখনো অনেকেই রাতে ঘুমোনর সময় মশারি ব্যবহার করেন না। এটা মোটেই ঠিক নয়। ঘুমোনোর সময় নিয়মিত মশারি খাটিয়ে ঘুমোনো উচিৎ এবং সকল মানুষ কে এই বিষয়ে সচেতন করা উচিৎ।
সর্বপরি বলাচলে সাধারণ মানুষের সচেতনতা এবং সম্পৃক্ততা মশা নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে এবং মশাবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকবে পরিবার, পরিবেশ ও দেশ।
তাই, বিশ্বব্যাপী মশাবাহিত রোগের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে বিশেষভাবে সচেতন করার জন্য প্রতিবছর ২০ আগস্ট দিবসটি পালন করা হয়ে আসছে।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।

Share This