Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং পালনের গুরুত্ব।।।।।

সমগ্র বিশ্বে বাঘের সংরক্ষণের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রতি বছর ২৯ জুলাই তারিখে আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস বা বিশ্ব বাঘ দিবস পালন করা হয়।২০১০ সালে সেণ্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত ব্যাঘ্র অভিবর্তনে এই দিবসের সূচনা হয়। এই দিবস পালনের মুখ্য উদ্দেশ্য হল বাঘের প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা করা এবং বাঘের সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করে এর সম্পর্কে থাকা ভুল ধারণা ও ভয় দূর করা।

প্রতি বছর বিভিন্ন কার্যসূচীর মাধ্যমে এই দিবস পালন করা হয়। বাঘ ভারতের জাতীয় পশু হওয়ার কারণে এই দিবসের মহত্ব এখানে বেশি ধরা হয়।
২০১০ সালে নভেম্বরে প্রথম বাঘ দিবস উদযাপিত হয়। বিংশ শতকের গোড়া থেকেই বন্য বাঘের সংখ্যা ৯৫ শতাংশ কমে যায়। এই বিষয়টি উপলব্ধি করার পরেই বাঘ দিবস পালনের বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। রাশিয়ায় সেন্ট পিটার্সবার্গ টাইগাই সামিটে প্রথম বাঘ দিবস পালিত হয়। বাঘেদের স্বাভাবিক বাসস্থান রক্ষা করাই ছিল এই সামিটের মূল উদ্দেশ্য।
সামিটে যে ১৩টি দেশ অংশগ্রহণ করে, সেগুলি হল – ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, চিন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া এবং রাশিয়া। এই সামিটে ২০২২-এর মধ্যে বন্য বাঘের সংখ্যা ৬০০০-এর বেশি বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়।
সপ্তম বিশ্ব বাঘ দিবস গোটা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ভাবে পালন করা হয়। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল প্রভৃতি বাঘের বেশি ঘনত্ব থাকা দেশের সাথে ইংল্যান্ড ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রেও বিভিন্ন স্থানীয় কার্যসূচীর মাধ্যমে এই দিবস পালন করা হয়। কিছু জনপ্রিয় তারকা তাদের সোসাল মিডিয়ায় নিজেদের প্রোফাইল ছবি পরিবর্তন করে এতে অংশগ্রহণ করেন। বিশ্ব বন্যপ্রাণী সংস্থা (WWF) এর রেঞ্জারসমূহে বিনিয়োগ করে “দ্বিগুণ বাঘ” অভিযান চালায়। কয়েকটি কোম্পানী বিশ্ব বন্যপ্রাণী সংস্থার সঙ্গে মিলিতভাবে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন।
তথ্য অনুযায়ী বিংশ শতকের গোড়া থেকেই বন্য বাঘের সংখ্যা ৯৫ শতাংশ কমে যায়। বিষয়টি উপলব্ধি করার পরেই বাঘ দিবস পালনের বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়।প্রতি বছর বিভিন্ন কার্যসূচীর মাধ্যমে এই দিবস পালন করা হয়। বাঘ ভারতের জাতীয় পশু হওয়ার কারণে এই দিবস আমাদের দেশের একটু বেশিমাত্রায় উপযোগী। গোটা বিশ্বে নগরায়নের কারণে বাঘেরা তাদের স্বাভাবিক বাসস্থানের ৯০ শতাংশই হারিয়ে ফেলেছে। বর্তামানে বিশ্বে বাঘের সংখ্যা ৪০০০-এরও কম।
আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস বা বিশ্ব বাঘ দিবস সমগ্র বিশ্বে বাঘের সংরক্ষণের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রতি বছর ২৯ জুলাই তারিখে পালন করা হয়। ২০১০ সালে সেণ্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত ব্যাঘ্র অভিবর্তনে এই দিবসের সূচনা হয়। বিশ্ব বাঘ দিবস পালনের মুখ্য উদ্দেশ্য হল বাঘের প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা করা এবং বাঘের সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। এছাড়াও বাঘের সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে গেঁথে থাকা ভুল ধারণা ও ভয় দূর করাও আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস পালনের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্যে।
ভারতের জাতীয় পশু বাঘ হওয়ায় ভারতে এই দিনটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। বাঘেদের স্বাভাবিক বাসস্থান বৃদ্ধি ও বাঘের সংখ্যা বাড়ানো এই বাঘ দিবসের মূল উদ্দেশ্য।
।। তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস: ইতিহাস, তাৎপর্য ও জনসচেতনতায় এর গুরুত্ব।

 

🔶 ভূমিকা

প্রতিবছর ২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালিত হয়। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃত এক গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য বিষয়ক দিবস, যা জনসাধারণকে হেপাটাইটিস রোগ সম্পর্কে সচেতন করতে পালন করা হয়। হেপাটাইটিস এমন একটি নীরব ঘাতক রোগ যা প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে, অথচ সচেতনতা ও সঠিক প্রতিরোধে এটি প্রতিরোধযোগ্য ও অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময়যোগ্য।

এই প্রবন্ধে আমরা জানব—

  • হেপাটাইটিস কি এবং এর প্রকারভেদ
  • এই দিবস পালনের ইতিহাস
  • প্রতি বছরের থিম
  • হেপাটাইটিস প্রতিরোধ ও প্রতিকার
  • দিবসটির গুরুত্ব ও সমাজে এর প্রভাব

🔶 হেপাটাইটিস: এক সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

“হেপাটাইটিস” শব্দটি এসেছে গ্রিক ভাষা থেকে, যার “হেপার” অর্থ যকৃত এবং “ইটিস” অর্থ প্রদাহ। অর্থাৎ, হেপাটাইটিস হল যকৃতের প্রদাহ বা ইনফ্লেমেশন।

হেপাটাইটিস সাধারণত পাঁচটি প্রধান ভাইরাসের মাধ্যমে হয়:

  1. হেপাটাইটিস এ (HAV)
  2. হেপাটাইটিস বি (HBV)
  3. হেপাটাইটিস সি (HCV)
  4. হেপাটাইটিস ডি (HDV)
  5. হেপাটাইটিস ই (HEV)

এই ভাইরাসগুলি যকৃতের উপর বিভিন্ন মাত্রায় আক্রমণ করে এবং দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার জন্ম দিতে পারে, যেমন— সিরোসিস, লিভার ফেইলিওর বা লিভার ক্যান্সার।


🔶 হেপাটাইটিস-এর প্রকারভেদ

✅ হেপাটাইটিস A (HAV):

  • প্রধানত দূষিত খাদ্য ও পানি থেকে ছড়ায়
  • স্বল্পমেয়াদি কিন্তু সংক্রামক
  • বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ আরোগ্য সম্ভব

✅ হেপাটাইটিস B (HBV):

  • রক্ত, শুক্রাণু, মাতৃদুগ্ধ ও শরীরবিজড়িত তরলের মাধ্যমে ছড়ায়
  • যৌন সম্পর্ক, অসুরক্ষিত সূচ বা রক্তদান থেকে সংক্রমণ ঘটে
  • নবজাতকেরা মায়ের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে
  • দীর্ঘমেয়াদী এবং লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে
  • প্রতিরোধের জন্য টিকা রয়েছে

✅ হেপাটাইটিস C (HCV):

  • মূলত সংক্রামিত রক্তের সংস্পর্শে এসে সংক্রমণ ঘটে
  • যৌন সম্পর্ক বা রক্ত সংক্রমণে ছড়ায়
  • বহু বছর ধরে নীরবে যকৃতে ক্ষতি করে
  • প্রতিকারযোগ্য হলেও টিকা নেই

✅ হেপাটাইটিস D (HDV):

  • শুধুমাত্র হেপাটাইটিস বি-র সংক্রামিত রোগীদের মধ্যেই এই ভাইরাস কাজ করে
  • সংক্রমণ বেশি মারাত্মক
  • টিকা সরাসরি না থাকলেও HBV-এর টিকা প্রতিরোধে সহায়ক

✅ হেপাটাইটিস E (HEV):

  • দূষিত পানি থেকে সংক্রমিত
  • গর্ভবতী নারীদের মধ্যে মারাত্মক হতে পারে
  • উন্নয়নশীল দেশে সাধারণ

🔶 বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস: ইতিহাস

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ২০১০ সাল থেকে ২৮ জুলাই তারিখটিকে বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এটি হেপাটাইটিস বি ভাইরাস আবিষ্কর্তা ও নোবেলজয়ী বৈজ্ঞানিক ডঃ বারুচ সামুয়েল ব্লুমবার্গ-এর জন্মদিন।

WHO-এর লক্ষ্য ছিল:

  • বিশ্বের সামনে হেপাটাইটিস জনিত বিপদের পরিমাণ তুলে ধরা
  • রোগ প্রতিরোধ, টিকাদান ও চিকিৎসার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা

এর আগে এই দিবসটি ১ অক্টোবর পালন করা হতো, কিন্তু পরে ব্লুমবার্গের সম্মানে এটি ২৮ জুলাই নির্ধারিত হয়।


🔶 বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস ২০২৫: থিম

প্রতি বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একটি নির্দিষ্ট থিমের মাধ্যমে এই দিবস উদযাপন করে।

👉 ২০২৫ সালের থিম এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি (আপডেট হলে যুক্ত করা যাবে)। তবে পূর্ববর্তী বছরগুলোতে ছিল:

  • ২০২4: “We’re not waiting” — প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি দেশ যেন সময় নষ্ট না করে হেপাটাইটিস নির্মূলে একসঙ্গে কাজ করে
  • ২০২3: “One life, One liver”
  • ২০২2: “Bringing hepatitis care closer to you”

🔶 হেপাটাইটিস প্রতিরোধের উপায়

✅ প্রতিরোধমূলক টিকা:

  • হেপাটাইটিস A ও B-এর জন্য কার্যকর টিকা রয়েছে
  • শিশুদের জন্মের পরপরই HBV টিকা দেওয়া শুরু হয়
  • HAV টিকাও বর্তমানে অনেক দেশে দেওয়া হয়

✅ ব্যক্তিগত সচেতনতা:

  • বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ
  • যৌন সম্পর্কের সময় সুরক্ষা ব্যবহার
  • অপ্রয়োজনীয় রক্ত গ্রহণ এড়িয়ে চলা
  • ট্যাটু বা পিয়ার্সিং করার সময় জীবাণুমুক্ত সরঞ্জাম ব্যবহার

✅ সঠিক চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণ:

  • হেপাটাইটিস C এর কার্যকর ওষুধ রয়েছে (DAA: Direct Acting Antiviral)
  • সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে লিভারের ক্ষয়রোগ ঠেকানো সম্ভব

🔶 বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসের গুরুত্ব

১. বিশ্বজুড়ে সচেতনতা সৃষ্টি:
এই দিনটি রোগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে তথ্য ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।

  1. নতুন টিকা ও ওষুধ প্রসঙ্গে তথ্য প্রদান:
    চিকিৎসা ক্ষেত্রে অগ্রগতির খবর প্রচারে সহায়তা করে।
  2. ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা:
    মাতৃগর্ভ থেকে নবজাতকের সংক্রমণ প্রতিরোধে উদ্যোগ জোরদার করা হয়।
  3. সরকারি পদক্ষেপ:
    স্বাস্থ্য নীতিতে হেপাটাইটিস সংক্রান্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চাপ বাড়ে।
  4. UN Sustainable Development Goals (SDG):
    ২০৩০ সালের মধ্যে হেপাটাইটিস নির্মূলের লক্ষ্যে কাজ করার অঙ্গীকারকে জোরালো করা হয়।

🔶 ভারতের প্রেক্ষিতে হেপাটাইটিস

ভারত হেপাটাইটিসে আক্রান্ত দেশের তালিকায় অন্যতম। বিশেষ করে গ্রামীণ ও দরিদ্র অঞ্চলে এখনও বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব, অজ্ঞতা, চিকিৎসার অপ্রতুলতা হেপাটাইটিস সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

ভারতে প্রতি বছর প্রায় ৪০ মিলিয়ন মানুষ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত হন। হেপাটাইটিস সি-র ক্ষেত্রেও সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য। সরকার ‘ন্যাশনাল ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম’-এর মাধ্যমে শিশুদের জন্য হেপাটাইটিস বি টিকাকরণ চালু করেছে।


🔶 পালন পদ্ধতি ও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি

প্রতিবছর এই দিনটিতে বিভিন্ন সংগঠন ও সরকার:

  • রক্তপরীক্ষার শিবির
  • টিকাদান ক্যাম্প
  • সচেতনতামূলক র‍্যালি
  • পোস্টার, লিফলেট, টিভি বিজ্ঞাপন প্রচার করে
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ কর্মসূচি চালু করে

🔶 আমরা কী করতে পারি?

  1. নিজের ও পরিবারের সদস্যদের টিকা দেওয়া
  2. সুরক্ষিত জীবনযাপন
  3. যে কোনও অসুস্থতার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
  4. আশেপাশের মানুষকে সচেতন করা
  5. ভুল ধারণা দূর করে সামাজিকভাবে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করা

🔶 উপসংহার

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস শুধুমাত্র একটি দিন নয়, এটি একটি বার্তা— সচেতন হোন, নিজের ও সমাজের জীবন রক্ষা করুন। সময় থাকতে ব্যবস্থা নিন। “এক জীবন, এক যকৃত”— যকৃতকে ভালো রাখলেই জীবন সুস্থ থাকবে।

এই দিনে আমরা যেন প্রতিজ্ঞা করি—

  • আমরা হেপাটাইটিস সম্পর্কে জানব
  • সময়মতো চিকিৎসা নেব
  • হেপাটাইটিসমুক্ত পৃথিবী গড়ব

📚 তথ্যসূত্র:

  • World Health Organization (WHO)
  • CDC – Hepatitis Overview
  • Indian Journal of Medical Research
  • Ministry of Health and Family Welfare, Govt. of India
Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

প্রথম রেডিও কম্পাস : এভিয়েশন নেভিগেশনে একটি মাইলফলক।।।

27 জুলাই, 1920-এ, একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন বিমান চলাচলের ন্যাভিগেশনে বিপ্লব ঘটিয়েছে – প্রথম রেডিও কম্পাস। এই অগ্রগামী প্রযুক্তিটি বিমান ভ্রমণের নিরাপত্তা এবং দক্ষতাকে পরিবর্তন করে, আরও নির্ভুলতার সাথে তাদের দিকনির্দেশ এবং অবস্থান নির্ধারণ করতে পাইলটদের সক্ষম করে। এই প্রবন্ধে, আমরা প্রথম রেডিও কম্পাসের ইতিহাস, বিকাশ এবং প্রভাব নিয়ে আলোচনা করব, যা বিমান চালনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

*উন্নত নেভিগেশনের প্রয়োজন*
বিমান চালনার প্রথম দিকে, পাইলটরা তাদের ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ল্যান্ডমার্ক, কম্পাস এবং আকাশী নেভিগেশনের মতো চাক্ষুষ রেফারেন্সের উপর নির্ভর করতেন। যাইহোক, এই পদ্ধতিগুলি প্রায়শই অবিশ্বস্ত ছিল, বিশেষ করে প্রতিকূল আবহাওয়া বা অপরিচিত অঞ্চলগুলিতে। বিমান ভ্রমণ সম্প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে আরও সঠিক এবং নির্ভরযোগ্য ন্যাভিগেশন সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তা ক্রমশ চাপে পড়ে।
*রেডিও কম্পাসের বিকাশ*
20 শতকের প্রথম দিকে, রেডিও প্রযুক্তি নেভিগেশনের জন্য একটি সম্ভাব্য সমাধান হিসাবে আবির্ভূত হতে শুরু করে। প্রথম রেডিও কম্পাস, যা রেডিও ডিরেকশন ফাইন্ডার (RDF) নামেও পরিচিত, 1910 সালে তৈরি হয়েছিল। এই প্রাথমিক সিস্টেমটি একটি পরিচিত স্টেশন থেকে রেডিও সংকেতের দিক নির্ণয় করতে একটি ঘূর্ণায়মান অ্যান্টেনা ব্যবহার করেছিল। যাইহোক, এটি 1920 সাল পর্যন্ত ছিল না যে প্রথম ব্যবহারিক রেডিও কম্পাস তৈরি করা হয়েছিল এবং বিমান ব্যবহারের জন্য পরীক্ষা করা হয়েছিল।
*প্রথম ফ্লাইট*
27 জুলাই, 1920-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী এবং ন্যাশনাল ব্যুরো অফ স্ট্যান্ডার্ডের বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীদের একটি দল রেডিও কম্পাস ব্যবহার করে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করে। পরীক্ষামূলক বিমান, একটি কার্টিস JN-4 “জেনি” বাইপ্লেন, একটি রেডিও কম্পাস সিস্টেম দিয়ে সজ্জিত ছিল যা কাছাকাছি একটি স্টেশন থেকে রেডিও সংকেতের দিক সনাক্ত করতে একটি ঘূর্ণমান অ্যান্টেনা ব্যবহার করে। ফ্লাইটটি দিকনির্দেশ এবং অবস্থান নির্ধারণে রেডিও কম্পাসের কার্যকারিতা প্রদর্শন করেছিল, যা বিমান চালনায় এর গ্রহণের পথ প্রশস্ত করেছিল।
*কিভাবে কাজ করেছে*
রেডিও কম্পাস একটি সহজ কিন্তু বুদ্ধিমান নীতি ব্যবহার করেছিল। বিমানের একটি ঘূর্ণায়মান অ্যান্টেনা একটি পরিচিত স্টেশন থেকে রেডিও সংকেতের দিক সনাক্ত করে, যেমন একটি বাতিঘর বা একটি রেডিও বীকন। অ্যান্টেনাটি একটি রেডিও রিসিভারের সাথে সংযুক্ত ছিল, যা সংকেতকে প্রশস্ত করে এবং এটি একটি মিটারে প্রদর্শন করে। অ্যান্টেনা ঘোরানো এবং সংকেত শক্তি পর্যবেক্ষণ করে, পাইলট স্টেশনের দিকনির্দেশ এবং ফলস্বরূপ, তাদের নিজস্ব অবস্থান নির্ধারণ করতে পারে।
*বিমান চলাচলের উপর প্রভাব*
রেডিও কম্পাসের প্রবর্তন বিমান চলাচলে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। এটি পাইলটদের আরও বেশি নির্ভুলতার সাথে নেভিগেট করতে সক্ষম করে, এমনকি প্রতিকূল আবহাওয়া বা অপরিচিত অঞ্চলেও। এটি নিরাপত্তা এবং দক্ষতা বাড়িয়েছে, যা দীর্ঘতর ফ্লাইট এবং আরও নির্ভরযোগ্য বিমান ভ্রমণের অনুমতি দেয়। রেডিও কম্পাস আরও উন্নত ন্যাভিগেশন সিস্টেম, যেমন GPS এর বিকাশের পথ তৈরি করেছে।
*উপসংহার*
প্রথম রেডিও কম্পাস, 27 জুলাই, 1920-এ ব্যবহৃত, বিমান চলাচলে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত। এই অগ্রগামী প্রযুক্তি বিমান ভ্রমণে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে, যা পাইলটদের আরও নির্ভুলতার সাথে তাদের দিকনির্দেশ এবং অবস্থান নির্ধারণ করতে সক্ষম করেছে। যেহেতু আমরা বিমান চালনা উদ্ভাবনের সীমানাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, আমরা যারা প্রথম রেডিও কম্পাস তৈরি করেছেন তাদের বুদ্ধিমত্তা এবং অধ্যবসায়কে সম্মান জানাই, যা মানুষের বুদ্ধিমত্তা এবং অগ্রগতির সাধনার প্রমাণ।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

দ্য বার্থ অফ আ মিরাকল: লুইস ব্রাউন অ্যান্ড দ্য ফার্স্ট টেস্ট-টিউব বেবি।।।।

25 জুলাই, 1978, চিকিৎসা ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক চিহ্নিত যখন লুইস ব্রাউন, বিশ্বের প্রথম টেস্ট-টিউব শিশুর জন্ম হয়েছিল। এই যুগান্তকারী কৃতিত্ব প্রজনন ওষুধে বিপ্লব ঘটিয়েছে এবং বন্ধ্যাত্বের সাথে লড়াইরত লক্ষ লক্ষ দম্পতিদের জন্য নতুন আশার প্রস্তাব দিয়েছে।

পটভূমি—–

1970 এর দশকের গোড়ার দিকে, ডাঃ রবার্ট এডওয়ার্ডস, একজন ব্রিটিশ ফিজিওলজিস্ট এবং ডাঃ প্যাট্রিক স্টেপটো, একজন গাইনোকোলজিস্ট, শরীরের বাইরে মানুষের ডিম নিষিক্ত করার সম্ভাবনা অন্বেষণ শুরু করেন।

ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ)-এ তাদের অগ্রগামী কাজটি অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যার মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা সম্প্রদায়ের সংশয় এবং সীমিত অর্থায়ন।

যুগান্তকারী—–

10 নভেম্বর, 1977-এ, ইংল্যান্ডের ওল্ডহ্যামের 29 বছর বয়সী মহিলা লেসলি ব্রাউন প্রথম সফল আইভিএফ পদ্ধতির মধ্য দিয়েছিলেন। তার ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং তার স্বামীর শুক্রাণু দিয়ে একটি পরীক্ষাগারের থালায় নিষিক্ত করা হয়েছিল। দুটি ভ্রূণ তার জরায়ুতে স্থানান্তরিত হয়েছিল এবং একটি গর্ভাবস্থা নিশ্চিত হয়েছিল।

লুইস ব্রাউনের জন্ম—-

স্বাভাবিক গর্ভধারণের পর, লেসলি 25 জুলাই, 1978 তারিখে ওল্ডহাম জেনারেল হাসপাতালে রাত 11:47 মিনিটে লুইস জয় ব্রাউনের জন্ম দেন। শিশুটির ওজন 5 পাউন্ড 12 আউন্স এবং সুস্থ ছিল। টেস্টটিউব শিশুর আগমনের খবরটি মিডিয়ার ব্যাপক মনোযোগ ছড়িয়ে দেয় এবং লুইস রাতারাতি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে।

প্রভাব—-

লুইস ব্রাউনের জন্ম প্রজনন ওষুধে একটি নতুন যুগের সূচনা করে। IVF প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতি হয়েছে, এবং প্রথম IVF ক্লিনিক বিশ্বব্যাপী খোলা হয়েছে। তারপর থেকে, 8 মিলিয়নেরও বেশি শিশু IVF এর মাধ্যমে জন্মগ্রহণ করেছে, এবং পদ্ধতিটি বন্ধ্যাত্বের জন্য একটি সাধারণ চিকিত্সা হয়ে উঠেছে।

উত্তরাধিকার—–

লুইস ব্রাউনের উত্তরাধিকার তার ঐতিহাসিক জন্মের বাইরেও প্রসারিত। তিনি বন্ধ্যাত্ব সচেতনতা এবং IVF গবেষণার জন্য একজন উকিল হয়ে উঠেছেন। তার গল্প অগণিত দম্পতিকে IVF চিকিত্সা অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত করেছে, তাদের আশা এবং পিতৃত্বের সুযোগ প্রদান করেছে।

উপসংহার—-

প্রথম টেস্টটিউব শিশু লুইস ব্রাউনের জন্ম, চিকিৎসা ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত। এটি প্রজনন ওষুধে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে এবং বন্ধ্যাত্বের সাথে লড়াইরত লক্ষ লক্ষ দম্পতিদের আশার প্রস্তাব দিয়েছে। IVF প্রযুক্তির বিকাশ অব্যাহত থাকায়, লুইসের উত্তরাধিকার টিকে থাকবে, যা ভবিষ্যত প্রজন্মকে প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায় উদ্ভাবনী সমাধান অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত করবে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজকের দিনে কলকাতায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পূর্বতন বেঙ্গল একাডেমি অব লিটারেচার স্থাপিত হয়।।।।

বেঙ্গল লিটারারি সোসাইটি, 23 জুলাই, 1823 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, একটি অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান যা বাংলা সাহিত্য ও ভাষার প্রচার ও বিকাশে নিবেদিত ছিল। বেঙ্গল একাডেমি অফ লিটারেচার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত, এটি ছিল বাংলা ও ভারতের সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক ঐতিহ্যের একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।

19 শতকের গোড়ার দিকে, বাংলা একটি সাংস্কৃতিক নবজাগরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, এবং এই বৃদ্ধির জন্য সমাজ গঠিত হয়েছিল।

পণ্ডিত, লেখক এবং বুদ্ধিজীবী সহ একদল দূরদর্শী ব্যক্তি, সাহিত্যিক আলোচনা, বিতর্ক এবং অগ্রগতির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে একত্রিত হয়েছিল।
সমাজের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল বাংলা সাহিত্যের প্রচার, মৌলিক লেখাকে উৎসাহিত করা এবং সাহিত্য সমালোচনা ও বিশ্লেষণের জন্য একটি ফোরাম প্রদান করা। এর লক্ষ্য ছিল বাংলা সাহিত্যের ভান্ডার তৈরি করা, দুর্লভ পাণ্ডুলিপি সংগ্রহ ও প্রকাশ করা এবং জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য একটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা।
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পৃষ্ঠপোষকতায়, সমাজ তার যাত্রা শুরু করে, রাজা রামমোহন রায়, ডেভিড হেয়ার এবং উইলিয়াম কেরির মতো উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সোসাইটির প্রারম্ভিক সভাগুলি কলকাতা টাউন হলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে সদস্যরা সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা করতে, তাদের নিজস্ব লেখা শেয়ার করতে এবং বুদ্ধিবৃত্তিক বিতর্কে জড়িত হতেন।
বেঙ্গল লিটারারি সোসাইটির একটি উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রসার। যে সময়ে ইংরেজি প্রাধান্য লাভ করছিল, সমাজ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিল। তারা লেখকদের বাংলা ভাষায় মৌলিক রচনা তৈরি করতে উত্সাহিত করেছিল এবং তাদের প্রচেষ্টার ফলে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ট বাঙালি লেখকদের আবির্ভাব ঘটে।
বাংলা শিক্ষার বিকাশেও সমাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা বিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে কথা বলেছিল, যা অবশেষে স্কুল ও কলেজে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করে।
বছরের পর বছর ধরে, বেঙ্গল লিটারারি সোসাইটি বেশ কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে, কিন্তু বাংলা সাহিত্য ও ভাষাকে প্রসারে এর অঙ্গীকার অটুট রয়েছে। আজ, সমাজটি কলকাতার সাহিত্যিক ল্যান্ডস্কেপে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে অব্যাহত রয়েছে, সাহিত্য অনুষ্ঠান, সম্মেলন এবং কর্মশালার আয়োজন করে।
উপসংহারে বলা যায়, 23শে জুলাই, 1823 সালে প্রতিষ্ঠিত বেঙ্গল লিটারারি সোসাইটি বাংলা ও ভারতে সাহিত্যের শ্রেষ্ঠত্বের বাতিঘর। বাংলা সাহিত্য ও ভাষার বিকাশে এর অবদান অপরিসীম, এবং এর উত্তরাধিকার প্রজন্মের লেখক, পণ্ডিত এবং বুদ্ধিজীবীদের অনুপ্রাণিত করে চলেছে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

নির্ভীকতার আরেক নাম চন্দ্রশেখর আজাদ!!!

সাল ১৯১৪, সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বেজে উঠলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা! ভারতের জাতীয়তাবাদী রাজনীতি তখন আংশিক নয়, বরং প্রায় সম্পূর্ণ নিমজ্জিত হতাশা’র গহীন অন্ধকারে!

ব্রিটিশ অধীনতা’র দাসত্ব শৃঙ্খল ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে তা থেকে মুক্তি পাওয়ার একান্ত উদ্দ্যেশ্যে এমত পরিস্থিতিতে, বিশ্বযুদ্ধের এই সুযোগকে উপযুক্তভাবে কাজে লাগিয়ে ভারতীয় বিপ্লবীরা নিরন্তর ও নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, কিভাবে ভারতে একটি সুসংবদ্ধ ও জোরালো বিপ্লব করা সম্ভবপর হয়।

১৯০৭ সালে সুরাট অধিবেশনে জাতীয় কংগ্রেসের মতাদর্শ নরমপন্থী ও চরমপন্থী নাম ধারণ করে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পৌঁছে যায় যথাক্রমে সুমেরু ও কুমেরু বিন্দুতে।
যেহেতু জাতীয় কংগ্রেস নামক সু-বৃহৎ বৃক্ষটির বীজ নিহিত ছিল নরমপন্থীতে, তাই চরমপন্থীরা কংগ্রেস থেকে হয়ে যান বিতাড়িত!
ফলস্বরূপ, রীতিমতন দুর্বল হয়ে পড়ে নরমপন্থী পরিচালিত জাতীয় কংগ্রেস।
এদিকে বিপিনচন্দ্র পাল, লালা লাজপৎ রায়, অরবিন্দ ঘোষ, কৃষ্ণকুমার মিত্র ও অশ্বিনীকুমার দত্ত প্রমুখ নেতৃবৃন্দের অভাবজনিত কারণে চরমপন্থীরাও নেতৃত্বহীনতার অভাবে হয়ে পড়েন দুর্বল ও হতাশাগ্রস্থ!
একদিকে সরকারের দমননীতি, অপরদিকে নেতৃত্বাভাব ও বার্ধক্যজনিত কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া, সব মিলিয়ে চরমপন্থী আন্দোলন যেন অসহায়ভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে ধূলিধূসর রাজপথে!
পরবর্তীকালে, সর্বভারতীয় মুসলিম লীগ, লক্ষ্মৌ চুক্তি, হোমরুল লীগ ও রাওলাট আইন বিরোধী আন্দোলনের হাত ধরে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের রাজনৈতিক ইতিহাস এসে পৌঁছায় ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত, ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে অন্যতম কুখ্যাত এক গণনিধন ‘জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড’-এর
দোড়গোড়ায়!
এখানে বলে রাখা ভালো, রাওলাট আইনের প্রতিবাদের উপরে ভিত্তি করে যে আন্দোলন সূচিত হয়, তারই চরম পরিণতি’র জীবন্ত দৃষ্টান্ত কিন্তু এই জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড!
লেফটেন্যান্ট গভর্নর মাইকেল ও’ ডায়ার এর স্বৈরাচারী শাসনের ফলস্বরূপ পাঞ্জাবের অমৃতসর সেসময় যথার্থই পরিণত হয় জ্বলন্ত এক অগ্নিকুন্ডে!
শুধু অমৃতসরেই তা কিন্তু থাকেনি সীমাবদ্ধ, এরপর পাঞ্জাবের আরো পাঁচ-পাঁচটি জেলাকে বন্দী করা হয় সামরিক আইন বলের ঘেরাটোপে।
এ পরিস্থিতিতে, খিলাফৎ আন্দোলন চিত্রে মহাত্মা গান্ধী’র রেটিনায় গঠিত হয় হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের সম্ভাবনার এক স্বচ্ছ
প্রতিবিম্ব, যা তিনি আগামী ১০০ বছরেও আর আসবেনা মনে করে, জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ইংরেজ সরকারের বিরূদ্ধে কর্মসূচি গ্রহণ করেন অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের।
সে বছরেই অর্থাৎ ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রতিষ্ঠিত হন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বে।
একদিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নির্মম আঘাতে দেশবাসীর বিশেষত অর্থনৈতিক সংকট চরমে!
ওষুধ, চাল, ডাল, চিনি, কাপড় প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যের সূচক চুড়ান্ত ঊর্ধ্বমুখী। কৃষিজাত দ্রব্যও অতি স্বল্প মূল্যে মহাজনদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয় কৃষকরা। বৃদ্ধি পায় শিল্পদ্রব্যের মূল্য কিন্তু শ্রমিকের মজুরী সেখানেই হয়ে থাকে স্ট্যাচু!
অন্যথায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে ভারতে ব্রিটিশদের বিভিন্ন পণ্যের আমদানী বন্ধ হওয়ায় সরকার ভারতীয়দের শিল্পবিস্তারের ক্ষেত্রে উৎসাহী হলেও, যুদ্ধ শেষে নানান বিধিনিষেধ আরোপ করা হলে, সেগুলির উপরে এবং নতুন শিল্প স্থাপনে সৃষ্টি করা হয় যথাসাধ্য বাধা’র! ফলতঃ, জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে ঘৃতাহুতি চিত্তে ভারতীবাসী হয়ে ওঠেন আরো বেশি ক্ষুব্ধ!
সব মিলিয়ে, সমকালীন আন্তর্জাতিক এ হেন পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে অসহযোগ আন্দোলনের পটভূমি যেন হয়েই যায় তৈরি।
এমনই এক ক্রান্তিকালীন মুহুর্তে, মধ্যপ্রদেশের আলিরাজপুর জেলার ভাওরা গ্রামের এক ১৫ বছরের এক অকুতোভয় তরুণ বিপ্লবী জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ড দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়ে অংশগ্রহণ করেন অসহযোগ আন্দোলনে।
সংস্কৃত ভাষায় গভীর জ্ঞান অর্জনের উদ্দ্যেশ্যে তাঁকে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হলে, সেই বছরই অর্থাৎ ১৯২১ সালে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এই আন্দোলনে।
স্বাধীনতা সংগ্রামের আত্মবিসর্জনকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে যুদ্ধে দক্ষতা বৃদ্ধি’র প্রশিক্ষণের জন্যে তিনি বেছে নিয়েছিলেন ঝাঁসি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরের একটি গোপন ও নিরাপদ স্থানকে। ঝাঁসিতে থাকাকালীন পণ্ডিত হরিশঙ্কর ব্রহ্মচারী ছদ্মনাম গ্রহণ করে গোপনে প্রশিক্ষণ চালানোর মধ্যে দিয়ে তিনি তাঁর গোষ্ঠীর সদস্যদের এ প্রকারেই বৃদ্ধি করেছিলেন রণকৌশল।
ব্রিটিশ রাজত্বকালে তিনি কখনই পুলিশ কর্মকর্তাদের হাতে জীবিত ধরা পড়বেন না, এমন দৃঢ়সংকল্পের দুর্ভেদ্য পোশাক পরিহিত এই সিংহপুরুষকে গ্রেপ্তার করে একবার এক ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে আনা হলে ম্যাজিস্ট্রেট চন্দ্রশেখরকে প্রশ্ন করে বসেন, ‘কি তোমার পরিচয়?’
সগর্বে ‘আজাদ’ হিসেবে তিনি নিজেকে
পরিচয় দেন, যার অর্থ ‘মুক্ত’ আর সেইদিন থেকেই তিনি পরিচিতি অর্জন করেন ‘চন্দ্রশেখর আজাদ’ নামে।
অবশেষে, এলাহাবাদের আলফ্রেড পার্কে পুলিশবাহিনী’র চক্রব্যূহকে মূল্যহীন ও তুচ্ছ প্রমাণিত এবং আত্মসম্মানকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেই ১৯৩১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, বিপ্লবী ভগৎ সিংয়ের আদর্শ গুরু হিসেবে পরিচিত এই বীর স্বাধীনতা সৈনিক নিজের শেষ বুলেটটি দিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করে লুটিয়ে পড়েন অবিভক্ত ভারত মায়ের বুকে।
ফ্লিপ কার্ড অথবা অ্যামাজন-এ অর্ডারের মাধ্যমে স্বাধীনতা আসেনি, এসেছে দীর্ঘ এক কঠিন সংগ্রাম ও রক্তবন্যায় ভেসে, এ আমরা সবাই কম-বেশি জানি কিন্তু ওইটুকুই ব্যাস!
এরপর জানা’র অ্যাপ্লিকেশন’টা অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকে ধুঁকে এক সময় স্থান পায় শশ্মান কিংবা কবরে!
রাজমিস্ত্রি আজও গেঁথে চলেছে দেওয়াল কিন্তু, বোধকরি সিংহভাগ অভিভাবকই তাঁদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দেওয়ালে এনাদের আদর্শ আজ আর গাঁথেন না, আজ শুধুই মুখস্থ করা হয় এনাদের, ফলে ঘরে ঘরে জন্ম নিচ্ছে আত্মকেন্দ্রিক ও শান্তিপ্রিয় সন্তান!
বিস্মৃতি’র অতল গহ্বরে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছেন এ সমস্ত গর্বিত বঙ্গ মায়ের বীর সন্তানরা! ইতিহাসও যেন আজ আর চাইছে না এনাদের সাথে কোনপ্রকার সম্পর্ক রাখতে!
কেমন যেন লন্ড-ভন্ড ও অগোছালো এ সময়!
মাঝে মধ্যেই মনে হয় মনুষ্যত্ব’টা তর্জনী উঁচিয়ে প্রশ্ন করে বসে, এ হেন হোমোস্যাপিয়েন্স-এর চেয়ে আমার ইজিপ্টোপিথেকাস ছিল অনেক ভালো!

কলমে : তন্ময় সিংহ রায়।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ভেনেরা 8 : শুক্র গ্রহে একটি ঐতিহাসিক অবতরণ।।।।

22শে জুলাই, 1972 সালে, সোভিয়েত ইউনিয়ন মহাকাশ অনুসন্ধানে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক অর্জন করে যখন তার মহাকাশযান ভেনেরা 8 সফলভাবে শুক্রের পৃষ্ঠে অবতরণ করে। এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি প্রথমবারের মতো একটি মহাকাশযান অন্য গ্রহে অবতরণ করেছিল এবং এটি ভবিষ্যতের আন্তঃগ্রহের মিশনের জন্য পথ তৈরি করেছিল।

পটভূমি——

ভেনেরা প্রোগ্রামটি ছিল সোভিয়েত মহাকাশযানের একটি সিরিজ যা শুক্র, পৃথিবীর নিকটতম গ্রহের প্রতিবেশী অধ্যয়নের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। প্রোগ্রামটি 1960-এর দশকে শুরু হয়েছিল, 1961 সালে ভেনেরা 1 উৎক্ষেপণের মাধ্যমে। যদিও ভেনেরা 1 শুক্র গ্রহে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছিল, পরবর্তী মিশনগুলি আরও সফল হয়েছিল, ভেনেরা 4 1967 সালে ভেনুসিয়ান পৃষ্ঠকে প্রভাবিত করার প্রথম মহাকাশযান হয়ে ওঠে।
ভেনেরা 8 27 মার্চ, 1972-এ কাজাখস্তানের বাইকোনুর কসমোড্রোম থেকে চালু করা হয়েছিল। মহাকাশযানটি শুক্রের বায়ুমণ্ডল এবং পৃষ্ঠ অধ্যয়নের জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, গ্রহের চরম পরিবেশের উপর ফোকাস রেখে।

শুক্র যাত্রা—–

ভেনেরা 8 100 মিলিয়ন কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব কভার করে চার মাসেরও বেশি সময় ধরে মহাকাশে ভ্রমণ করেছে। তার যাত্রার সময়, মহাকাশযানটি তীব্র তাপ এবং বিকিরণের সম্মুখীন হয়েছিল, যা এর যন্ত্র এবং ইলেকট্রনিক্সের জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল।

22শে জুলাই, 1972-এ, ভেনেরা 8 শুক্রের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে, প্যারাসুট ব্যবহার করে 11,000 কিমি/ঘণ্টা থেকে 900 কিমি/ঘন্টা গতিতে নেমে আসে। মহাকাশযানটি তখন দুটি মডিউলে বিভক্ত হয়: অবতরণ মডিউল এবং বায়ুমণ্ডলীয় অনুসন্ধান। বায়ুমণ্ডলীয় অনুসন্ধান ভেনুসিয়ান বায়ুমণ্ডলে ডেটা প্রেরণ করতে থাকে, যখন অবতরণ মডিউলটি পৃষ্ঠে নেমে আসে।

শুক্র গ্রহে অবতরণ—–

22 জুলাই, 1972-এ 11:37 UTC-এ ভেনেরা 8 ল্যান্ডিং মডিউল ভেনুসিয়ান পৃষ্ঠে নেমে আসে। অবতরণ স্থানটি গ্রহের নিরক্ষীয় অঞ্চলের পূর্ব অংশে সোভিয়েত সমভূমি নামে পরিচিত একটি এলাকায় অবস্থিত ছিল।
ল্যান্ডিং মডিউলটি শুক্র গ্রহের চরম পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, যার মধ্যে তাপমাত্রা 500 ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছানো এবং পৃথিবীর চেয়ে 92 গুণ বেশি পুরু বায়ুমণ্ডল। মডিউলটি তাপমাত্রা, চাপ এবং বায়ুমণ্ডলের সংমিশ্রণ পরিমাপ করার জন্য যন্ত্র দিয়ে সজ্জিত ছিল, সেইসাথে পৃষ্ঠের ছবি তোলার জন্য একটি ক্যামেরা।

ফলাফল এবং উত্তরাধিকার—-

ভেনেরা 8 ভেনুসিয়ান পৃষ্ঠ থেকে 50 মিনিটেরও বেশি সময় ধরে ডেটা প্রেরণ করেছে, যা গ্রহের পরিবেশে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছে। মহাকাশযানটি 470°C এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা, 90টি বায়ুমণ্ডলের চাপ এবং 96% কার্বন ডাই অক্সাইডের একটি সংমিশ্রণ প্রকাশ করেছে।
মিশনটি ভেনুসিয়ান পৃষ্ঠের বেশ কয়েকটি চিত্রও ফিরিয়ে দিয়েছে, যেখানে অসংখ্য প্রভাবের গর্ত সহ একটি পাথুরে ভূখণ্ড দেখানো হয়েছে। যদিও ছবিগুলি কম-রেজোলিউশনের ছিল, তারা শুক্রের পৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্যগুলির প্রথম সরাসরি চাক্ষুষ প্রমাণ সরবরাহ করেছিল।
ভেনেরা 8 মিশন অন্য গ্রহে অবতরণের সম্ভাব্যতা প্রদর্শন করে মহাকাশ অনুসন্ধানে একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য চিহ্নিত করেছে। মিশনটি 1975 সালে চালু হওয়া সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেনেরা 9 এবং 10 সহ ভবিষ্যতের আন্তঃগ্রহের মিশনগুলির জন্য পথ তৈরি করে।

উপসংহার—–

ভেনেরা 8 মিশন ছিল মহাকাশ অনুসন্ধানে একটি যুগান্তকারী কৃতিত্ব, প্রথমবারের মতো একটি মহাকাশযান অন্য গ্রহে অবতরণ করেছিল। মিশন শুক্রের চরম পরিবেশে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে এবং ভবিষ্যতের আন্তঃগ্রহের মিশনের জন্য পথ তৈরি করে। যেহেতু আমরা আমাদের সৌরজগতের অন্বেষণ চালিয়ে যাচ্ছি, ভেনেরা 8-এর উত্তরাধিকার মানুষের বুদ্ধিমত্তার শক্তি এবং মহাকাশ অনুসন্ধানের সীমানা ঠেলে দেওয়ার গুরুত্বের অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

বেলুড় মঠ : কলকাতার একটি পবিত্র তীর্থস্থান।।।

কলকাতার হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত, বেলুড় মঠ সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য একটি পবিত্র তীর্থস্থান। এই সুন্দর মন্দির কমপ্লেক্সটি হল রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনের সদর দফতর, স্বামী বিবেকানন্দ 1897 সালে প্রতিষ্ঠিত একটি আধ্যাত্মিক সংস্থা। বেলুড় মঠ হল আধ্যাত্মিকতা, সম্প্রীতি এবং মানবতার সেবার প্রতীক, এবং আধ্যাত্মিকতা খুঁজছেন এমন প্রত্যেকের জন্য এটি একটি অবশ্যই দেখার গন্তব্য।

জ্ঞান এবং শান্তি।

বেলুড় মঠের ইতিহাস——

1898 সালে, শ্রী রামকৃষ্ণের একজন বিশিষ্ট শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ হুগলি নদীর তীরে একটি জমি অধিগ্রহণ করেন এবং বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠা করেন। গণিতটি প্রথমে একটি ছোট কুঁড়েঘর ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে এটি বেশ কয়েকটি মন্দির, মঠ এবং পরিষেবা কেন্দ্র সহ একটি বড় কমপ্লেক্সে পরিণত হয়। কমপ্লেক্সের প্রধান মন্দির, শ্রী রামকৃষ্ণকে নিবেদিত, 1909 সালে পবিত্র করা হয়েছিল।

বেলুড় মঠের স্থাপত্য——

বেলুড় মঠের স্থাপত্যটি ভারতীয়, ইসলামিক এবং ইউরোপীয় শৈলীর একটি অনন্য মিশ্রণ। প্রধান মন্দির, শ্রী রামকৃষ্ণকে উৎসর্গ করা, ভারতীয় মন্দির স্থাপত্যের একটি অত্যাশ্চর্য উদাহরণ, যেখানে জটিল খোদাই এবং ভাস্কর্য রয়েছে। মন্দির কমপ্লেক্সে একটি সুন্দর মঠ, একটি জাদুঘর এবং একটি গ্রন্থাগার রয়েছে, যা শ্রী রামকৃষ্ণ এবং স্বামী বিবেকানন্দের জীবন এবং শিক্ষাগুলিকে প্রদর্শন করে।

বেলুড় মঠের তাৎপর্য–‐-

বেলুড় মঠ সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য একটি পবিত্র তীর্থস্থান। এটি ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আধ্যাত্মিক কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয় এবং এটি সমস্ত ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্যের প্রতীক। গণিতটি মানবতার সেবায় নিবেদিত, এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং দুর্যোগ ত্রাণ সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অফার করে।
বেলুড় মঠের আকর্ষণ
বেলুড় মঠ দর্শনার্থীদের জন্য বিভিন্ন আকর্ষণের প্রস্তাব দেয়, যার মধ্যে রয়েছে:
– শ্রীরামকৃষ্ণকে উৎসর্গ করা প্রধান মন্দির

– মঠ যেখানে স্বামী বিবেকানন্দ থাকতেন এবং ধ্যান করতেন
– যাদুঘরটি শ্রী রামকৃষ্ণ এবং স্বামী বিবেকানন্দের জীবন ও শিক্ষাকে প্রদর্শন করে
– আধ্যাত্মিক বই এবং ধর্মগ্রন্থের বিশাল সংগ্রহ সহ লাইব্রেরি
– সুন্দর বাগান এবং মাঠ, ধ্যান এবং বিশ্রামের জন্য উপযুক্ত
কিভাবে বেলুড় মঠে পৌঁছাবেন
বেলুড় মঠ কলকাতা থেকে প্রায় 16 কিমি উত্তরে অবস্থিত এবং এটি সড়ক, রেল এবং আকাশপথে সহজেই অ্যাক্সেসযোগ্য। নিকটতম বিমানবন্দর হল নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যা বেলুড় মঠ থেকে প্রায় 20 কিলোমিটার দূরে। নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হল হাওড়া রেলওয়ে স্টেশন, যা বেলুড় মঠ থেকে প্রায় 10 কিমি দূরে।

উপসংহার–‐-

বেলুড় মঠ হল একটি পবিত্র তীর্থস্থান যা সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান, শান্তি এবং সম্প্রীতি প্রদান করে। এর সুন্দর স্থাপত্য, অত্যাশ্চর্য উদ্যান, এবং মানবতার সেবা এটিকে আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি এবং আত্ম-উপলব্ধির জন্য যেকোন ব্যক্তির জন্য একটি অবশ্যই দেখার গন্তব্য করে তোলে। আপনি একজন আধ্যাত্মিক অন্বেষণকারী, একজন ইতিহাসপ্রেমী, বা কেবল একজন কৌতূহলী ভ্রমণকারীই হোন না কেন, বেলুড় মঠ এমন একটি স্থান যা আপনাকে শান্তি ও প্রশান্তি দিয়ে চলে যাবে যা চিরকাল আপনার সাথে থাকবে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

কলকাতা — ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও আধুনিকতার এক অপূর্ব মেলবন্ধনের শহর।

ভূমিকা

কলকাতা — একটি নাম, একটি আবেগ, একটি সংস্কৃতি। এটি শুধু পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীই নয়, বরং একসময়ের ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী হিসেবেও ইতিহাসে স্বীকৃত। “City of Joy” নামে খ্যাত এই শহরটি আজও তার ঔপনিবেশিক ঐতিহ্য, সাহিত্যের গন্ধ, আড্ডার খোলামেলা পরিবেশ, অসাধারণ রন্ধনপ্রণালী এবং হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া মানুষের জন্য বিখ্যাত। এ শহরের প্রতিটি কোণে ইতিহাস আর গল্প লুকিয়ে আছে।

এই প্রবন্ধে আমরা জানবো কলকাতার দশটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রের বিস্তারিত, ইতিহাস ও অভিজ্ঞতার কথা, যা ভ্রমণপ্রেমীদের মন কেড়ে নেয়।


১. ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল — এক ব্রিটিশ ঐতিহ্যের স্মারক

সাদা মার্বেলের তৈরি বিশাল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল কলকাতার সবচেয়ে পরিচিত দর্শনীয় স্থান। ১৯০৬ সালে নির্মাণ শুরু হয়ে ১৯২১ সালে শেষ হয়। এটি রানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতিতে গঠিত। স্থাপত্যের ধরনটি মুগল ও ইউরোপীয় রীতির সংমিশ্রণ।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • রানীর ব্রোঞ্জ মূর্তি
  • বিভিন্ন ঐতিহাসিক শিল্পকর্ম ও ফটোগ্রাফ
  • ৬৪ একর জমির উপর বিস্তৃত সুন্দর বাগান
  • আলোক ও শব্দ প্রদর্শনী

পরামর্শ: সন্ধ্যাবেলায় বাগানে হাঁটা ও লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো দেখার জন্য একবার অবশ্যই আসুন।


২. হাওড়া ব্রিজ — ইস্পাতের নির্মিত জীবনরেখা

হুগলি নদীর উপর নির্মিত হাওড়া ব্রিজ শুধুমাত্র একটি সেতু নয়, কলকাতার প্রাণ। এটি বিশ্বের ব্যস্ততম ক্যানটিলিভার সেতু। আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৪৩ সালে উদ্বোধন হয়।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • গোধূলিতে হুগলির উপর সূর্যাস্তের দৃশ্য
  • নৌকাবিহার
  • ব্রিজের নিচে থাকা ফুলবাজার

পরামর্শ: ভোরবেলায় হাওড়া ব্রিজ থেকে শহর দেখলে মুগ্ধ হবেন।


৩. বেলুড় মঠ — রামকৃষ্ণ পরমহংসের আদর্শে গড়া তীর্থভূমি

শ্রীরামকৃষ্ণ, সারদাদেবী ও স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শকে তুলে ধরে বেলুড় মঠ। ১৯০৯ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি রামকৃষ্ণ মিশনের মূল কেন্দ্র।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • গঙ্গার ধারে নির্মিত মূল মন্দির
  • বিবেকানন্দের কক্ষ
  • মননশীল শান্ত পরিবেশ

পরামর্শ: সন্ধ্যায় আরতির সময় এলে এক অনন্য অভিজ্ঞতা পাবেন।


৪. ভারতীয় জাদুঘর — ভারতের ইতিহাসের প্রাচীনতম সংগ্রহশালা

১৮১৪ সালে স্থাপিত, এটি ভারতের প্রাচীনতম এবং এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ জাদুঘর। এখানে প্রত্নতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, প্রাণিবিজ্ঞান ও ভূতত্ত্ব বিভাগে বিশাল সংগ্রহ রয়েছে।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • মমি
  • অশোক স্তম্ভ
  • বৌদ্ধ শিল্পকর্ম

পরামর্শ: বাচ্চাদের নিয়ে গেলে শিক্ষা ও আনন্দ দুটোই হবে।


৫. ইডেন গার্ডেন — ক্রিকেটের ঐতিহাসিক মঞ্চ

১৮৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্টেডিয়ামটি ৬৬,০০০ দর্শক ধারণক্ষমতার জন্য পরিচিত। আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছাড়াও এটি বাংলার রঞ্জি দল এবং আইপিএলের হোম গ্রাউন্ড।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • আন্তর্জাতিক ম্যাচের উত্তেজনা
  • গাছ-গাছালির ঘেরা প্রাঙ্গণ
  • মাঠ ঘিরে থাকা প্যাভিলিয়নগুলি

পরামর্শ: খেলার দিন হলে অবশ্যই টিকিট সংগ্রহ করে অভিজ্ঞতা নিন।


৬. সেন্ট পল’স ক্যাথেড্রাল — ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের নিদর্শন

১৮৪৭ সালে তৈরি এই গথিক রিভাইভাল শৈলীর গির্জাটি নিঃসন্দেহে কলকাতার সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ জায়গাগুলির একটি। এর দাগযুক্ত কাঁচের জানালা ও চুনাপাথরের দেয়াল এক ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা দেয়।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • গির্জার বিশাল গম্বুজ
  • ধর্মীয় চিত্র ও প্রতিমা
  • মধ্যাহ্ন প্রার্থনা

পরামর্শ: বড়দিনের সময় এলে সজ্জিত গির্জা ও সংগীত শুনে মুগ্ধ হবেন।


৭. পার্ক স্ট্রিট — কলকাতার নাইট লাইফের প্রাণকেন্দ্র

বিখ্যাত রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, বার ও লাইভ মিউজিকের জন্য পার্ক স্ট্রিট অত্যন্ত জনপ্রিয়। এখানেই প্রথম আধুনিক ডিস্কো সংস্কৃতি শুরু হয়েছিল।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • পিটার ক্যাট, ফ্লুরিস, ট্র্যাম্পসের মতো বিখ্যাত রেস্তোরাঁ
  • ডিসেম্বরে আলো দিয়ে সাজানো রাস্তা
  • লাইভ জ্যাজ বা ব্যান্ড মিউজিক

পরামর্শ: সন্ধ্যায় ঘুরতে এলেই বুঝবেন এর জাদু।


৮. নিউ মার্কেট — কেনাকাটার এক ঐতিহাসিক ঠিকানা

১৮৭৪ সালে নির্মিত, এটি কলকাতার সবচেয়ে পুরনো ও ব্যস্ততম বাজার। প্রায় ২০০০ দোকানে মেলে জামাকাপড়, গয়না, খাবার থেকে শুরু করে স্থানীয় হস্তশিল্প।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • ভারতীয় পোশাকের বিশাল সংগ্রহ
  • মিষ্টির দোকান ও খাদ্য সামগ্রী
  • মূল্য দরাদরির চমৎকার পরিবেশ

পরামর্শ: হালকা পকেটেও প্রচুর জিনিস কেনা সম্ভব।


৯. বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম — মহাবিশ্বের রহস্যে ভ্রমণ

এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্ল্যানেটোরিয়াম। এখানে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে বিভিন্ন প্রদর্শনী হয়।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • দৈনিক থ্রিডি শো
  • সৌরজগতের তথ্যচিত্র
  • আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান দিবসে বিশেষ আয়োজন

পরামর্শ: শিশুরা সবচেয়ে বেশি উপভোগ করবে, তবে বড়রাও শিখতে পারবেন।


১০. মার্বেল প্রাসাদ — শিল্প ও অলংকারের অদ্ভুত সমাহার

১৮৩৫ সালে জমিদার রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক নির্মিত মার্বেল প্রাসাদ এক সত্যিকারের শিল্পভাণ্ডার। ফরাসি, ইংরেজি ও ভারতীয় চিত্রকলা, ভাস্কর্য, আয়না, ঝাড়বাতি ইত্যাদির বিশাল সংগ্রহ রয়েছে।

দর্শনীয় বিষয়সমূহ:

  • প্রাসাদের ভেতরের গ্রীক ও রোমান মূর্তি
  • পাশেই পশুপাখির চিড়িয়াখানা
  • বিরল সংগ্রহশালার অভ্যন্তরভাগ

পরামর্শ: আগে থেকে অনুমতি নিয়ে গেলে ভেতরে ছবি তোলা যেতে পারে।


উপসংহার

কলকাতা একটি জীবন্ত ইতিহাসের শহর, যেখানে প্রতিটি অলিগলি একেকটি গল্প বলার অপেক্ষায়। আধুনিকতার স্পর্শ থাকলেও তার শিকড় ছড়িয়ে আছে অতীতে, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতায়। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য কলকাতা নিঃসন্দেহে একবার নয়, বারবার ঘুরে দেখার মতো শহর।


আপনি যদি কলকাতা ঘুরে দেখতে চান, তবে শুধু ক্যামেরা নয়, সঙ্গে করে নিয়ে আসুন বিস্ময় ও কৌতূহল — কারণ এই শহর চমকে দেওয়ার মতো গল্প লুকিয়ে রাখে তার প্রতিটি কোণে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ভারতীয় জাতীয় পতাকা : ঐক্য ও স্বাধীনতার প্রতীক।।।

22শে জুলাই, 1947-এ, ভারতের গণপরিষদ ভারতের জাতীয় পতাকা হিসাবে তেরঙা পতাকা গ্রহণ করে। এই গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষটি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের দিকে ভারতের যাত্রায় একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক চিহ্নিত করেছে।

ভারতীয় জাতীয় পতাকা, তিরাঙ্গা নামেও পরিচিত, জাফরান, সাদা এবং সবুজ রঙের একটি অনুভূমিক ত্রিবর্ণ।

জাফরান রঙ সাহস, ত্যাগ এবং ত্যাগের চেতনার প্রতিনিধিত্ব করে। সাদা রঙ বিশুদ্ধতা এবং সত্যের প্রতিনিধিত্ব করে, যখন সবুজ রঙ বিশ্বাস, উর্বরতা এবং সমৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করে। পতাকাটিতে একটি নীল চক্রও রয়েছে, যা অশোক চক্র নামে পরিচিত, যা আইনের চিরন্তন চাকাকে প্রতিনিধিত্ব করে।

পতাকার ইতিহাস—–

ভারতীয় জাতীয় পতাকার একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে যা 20 শতকের প্রথম দিকের। পতাকার প্রথম সংস্করণটি 1916 সালে ডক্টর অ্যানি বেসান্ট এবং লোকমান্য তিলক দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল। পতাকাটিতে পাঁচটি লাল এবং চারটি সবুজ ফিতে রয়েছে, যার কেন্দ্রে একটি অর্ধচন্দ্র এবং একটি তারা রয়েছে।
1921 সালে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস মহাত্মা গান্ধীর ডিজাইন করা একটি নতুন পতাকা গ্রহণ করে। পতাকাটিতে একটি চরকা ছিল, যা চরকা নামে পরিচিত, যা স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করে। পতাকাটিকে পরে পরিবর্তিত করে জাফরান, সাদা এবং সবুজ তেরঙা, যার কেন্দ্রে চরকা ছিল।

পতাকা গ্রহণ—–

22 শে জুলাই, 1947-এ, ভারতের গণপরিষদ শীঘ্রই স্বাধীন হওয়া জাতির জন্য একটি নতুন পতাকা গ্রহণ করার জন্য মিলিত হয়েছিল। সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ, যিনি পরে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।
অন্ধ্র প্রদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং শিল্পী পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া দ্বারা ডিজাইন করা তেরঙা পতাকা গ্রহণ করার আগে সমাবেশ বেশ কয়েকটি নকশা বিবেচনা করেছিল। পতাকাটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়, নকশার পক্ষে বিধানসভার সকল সদস্য ভোট দেন।

পতাকার তাৎপর্য—–

ভারতীয় জাতীয় পতাকা ভারতের জনগণের জন্য ঐক্য ও স্বাধীনতার প্রতীক। এটি দেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং এর জনগণের সংগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করে। পতাকাটি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ এবং স্বাধীনতার দিকে দেশটির যাত্রার একটি স্মারক।
পতাকা দেশের মূল্যবোধ ও নীতিরও প্রতীক। জাফরান রঙ সাহস ও ত্যাগের প্রতি দেশের প্রতিশ্রুতির প্রতিনিধিত্ব করে, যখন সাদা রঙ বিশুদ্ধতা এবং সত্যের প্রতি তার অঙ্গীকারকে প্রতিনিধিত্ব করে। সবুজ রঙ বিশ্বাস, উর্বরতা এবং সমৃদ্ধির প্রতি দেশটির অঙ্গীকারের প্রতিনিধিত্ব করে।

উপসংহার—-

22শে জুলাই, 1947-এ ভারতীয় জাতীয় পতাকা গ্রহণ ভারতের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত। পতাকাটি দেশের ঐক্য, স্বাধীনতা এবং মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করে এবং ভারতের জনগণের জন্য গর্বের প্রতীক। পতাকা গ্রহণের কথা যেমন আমরা মনে রাখি, তেমনি আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রাম ও স্বাধীনতার দিকে দেশের যাত্রার কথাও মনে রাখতে হবে।

Share This