Categories
বিবিধ রিভিউ

অপরাজেয় সংগঠনের সহযোগিতায় অনন্য উদ্যোগ, জন্মদিনে সামাজিক দায়বদ্ধতার নজির।

পশ্চিম মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- মেয়ের জন্মদিনকে সামনে রেখে শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা তিন নম্বর ব্লকের চন্দ্রকোনারোড শহর সংলগ্ন ডুকির তুঁতবাড়ীতে খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে বৃক্ষরোপণ, তিথি ভোজন সহ ক্ষুদে পড়ুয়াদের শিক্ষার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এই দিন জানা গিয়েছে বিশিষ্ট সমাজসেবী ঝুনু ঘোষের কন্যা লাজোরিকার ২০তম জন্মদিন উপলক্ষে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে,এই দিন তুঁতবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্ত ক্ষুদে পড়ুয়াদের নিয়ে সারাদিন ধরে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে,আর সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন অপরাজেয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, এই দিন উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা সহ সংগঠনের প্রসেনজিৎ কুণ্ডু, পলাশ ঘোষ,দিব্যেন্দু সিংহ রায়,সুমন বিসই, উদয় মাহাতো, প্রসেনজিৎ মাঝি, সমীর কোটাল সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।

Share This
Categories
বিবিধ রিভিউ

চন্দ্রকোনারোডে রেল বিপর্যয়, ঘণ্টাখানেক পর স্বাভাবিক চলাচল আপ লাইনে।

পশ্চিম মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়গপুর স্টেশন থেকে হাটিয়া স্টেশন যাওয়ার সময় শনিবার গড়বেতা তিন নম্বর ব্লকের চন্দ্রকোনারোড স্টেশনের কাছে বিকল হয়ে পড়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন,এর ফলে চরম সমস্যায় পড়ে যাত্রীরা, অন্যদিকে আপ লাইনে সমস্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল,প্রায় ঘন্টাখানেকের পর রেলের তৎপরতায় অন্য একটি রেল ইঞ্জিন এসে যাত্রীবাহী ট্রেনটিকে গন্তব্যস্থলে উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।

Share This
Categories
বিবিধ রিভিউ

‘প্রতি শুক্রবার হাট বসবে’— দোমুয়ানীতে শাকসবজি থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী।

পশ্চিম মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- শুক্রবার থেকে শুরু হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা তিন নম্বর ব্লকের চন্দ্রকোনারোড শহর সংলগ্ন দোমুয়ানী এলাকায় শুরু হয়েছে হাট, জানা গিয়েছে প্রত্যেক শুক্রবার সকাল থেকে বসবে হাট-বাজার, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সহ পাওয়া যাবে শাকসবজি, জানা গিয়েছে দোমুয়ানী ইসলামিয়া ক্লাবের সহযোগিতায় এবং স্থানীয় মানুষজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে প্রথম দিনে যথেষ্ট ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে হাট বাজারে।

Share This
Categories
বিবিধ রিভিউ

হাইকোর্টের নির্দেশে সচেতনতা প্রচার ও নিয়ন্ত্রিত বলি, জানালেন বোল্লা কালী মন্দির ট্রাস্টের আইনজীবী।

দক্ষিণ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- উত্তরবঙ্গের প্রসিদ্ধ বোল্লা রক্ষাকালী মাতার পুজোর সময় পাঁঠা বলি নিয়ে গত ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫ (মঙ্গলবার) কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া অর্ডারের বিষয় নিয়ে প্রেস বিবৃতি দিলেন বোল্লা ঈশ্বরী শ্রী শ্রী রক্ষা কালী মাতা মন্দির ট্রাস্টের হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী ড. বিনয় ব্রত ভৌমিক, এই দিন তিনি বোল্লা কালী মাতা মন্দির ট্রাস্টের অফিস ঘরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান “গত ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৫,মহামান্য কার্যনির্বাহী প্রধান বিচারপতি শ্রী সুজয় পাল এবং মহামান্য বিচারপতি শ্রী পার্থ সরথি সেন কর্তৃক প্রদত্ত আদেশে কলিকাতা উচ্চ ন্যায়ালয় নির্দেশ প্রদান করেন যে, গত ৩রা শে নভেম্বর ২০২৫ তারিখে বালুরঘাট সদর Sub-Divisional Officer সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো কঠোরভাবে মেনে চলে এবং নিশ্চিত করে যে কোনো গণবলি অনুষ্ঠিত না হয়। বলিদান শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্থানে হতে হবে, অন্য কোথাও নয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে বোল্লা মন্দিরের বলি ঘরে কোন কালেই গণ বলি অনুষ্ঠিত হয় না। প্রতিটা পশু এক এক করে সরকারি পশু চিকিৎসক দ্বারা পরীক্ষিত হওয়ার পর অনুমোদিত লাইসেন্স প্রাপ্ত বলির স্থানে শুধুমাত্র মানবজাতিকে আহার পরিবেশন করার জন্য বলি হয়। এখানে কোন গর্ভবতী পশু বা বাচ্চাসহ পশু, তিন মাসের কম বয়সী বাচ্চা পশু অথবা অসুস্থ প্রাণীকে বলি দেওয়া হয় না। এগুলো আমাদের শাস্ত্রেও বারণ আছে। পশুগুলিকে কখনোই একে অপরের সামনে বলি দেওয়া হয় না। এই প্রসঙ্গে মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট লক্ষীনারায়ণ বনাম ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য ২০২৩ মামলার সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলী মেনে বলি দেওয়া হয়। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেন যে,এই আদেশটি সাধারণ মানুষের নিকট সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সরকার এবং বোল্লা কালী পূজা ট্রাস্টের কর্তৃপক্ষ গত ৫ই নভেম্বর তারিখের মধ্যে সকল স্তরে, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে উক্ত আদেশ প্রচারের চেষ্টা করবে।
মা বোল্লা কালী মাতার কৃপায় মাননীয় কলকাতা হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে অনুমোদিত লাইসেন্স প্রাপ্ত বলি ঘরেই এবারে বোল্লা কালী মাতা মন্দিরের বলি সুসম্পন্ন হবে।”

Share This
Categories
বিবিধ রিভিউ

কার্তিক পূর্ণিমায় ময়নাগড়ে ৪৬৫ তম রাসযাত্রার মহোৎসব, ধর্মীয় আচার ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন।।

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়নাগড়ের রাসযাত্রা
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী ময়নাগরের রাসযাত্রা এই বছর ৪৬৫ বছরে পদার্পণ করেছে |এই রাসযাত্রা ও রাসমেলা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম ও বৃহত্তম মেলা হিসেবে পরিচিত | এই মেলার অন্যতম আকর্ষণ হল কার্তিক পূর্ণিমার মধ্যরাতে রাজ পরিবারের কুল দেবতা শ্যামসুন্দর জীউকে নিয়ে রঙিন আলোক সজ্জার নৌবিহার, যা হাজার হাজার মানুষ এই রাসযাত্রা দর্শন করে আনন্দ উপভোগ করে থাকেন |কালিদহ ও মাকড়দহ দিয়ে ঘেরা ধর্মমঙ্গলে লাউসেন রাজপরিবার (বিতর্কীত)খ্যাত গোবর্ধন বাহুবলীন্দ্র ১৫৬১ সালে কালিদহে তীরে কুলদেবতা শ্যামসুন্দর জিউ মন্দিরে প্রথম রাস মেলা সূচনা করেন, সেই থেকে মেলা হয়ে আসছে | বর্তমান বছরে ময়না রাসমেলা কমিটির কার্যকর সভাপতি অশোকানন্দ বাহুবলীন্দ্র ও সাধারণ সম্পাদক স্বরূপানন্দ বাহুবলীন্দ্র জানান ধর্মীয় আচার অনুযায়ী কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের উত্থান একাদশী দিন অর্থাৎ আজ ২রা নভেম্বর থেকে নয় নভেম্বর পর্যন্ত আট দিন ভোর পাঁচটার সময় শ্যামসুন্দর জিও রাজবাড়ীর মূল মন্দির থেকে নৌকা বিহারে কালিদহের লাবণ্যময় জল পরিক্রম করে প্রবেশ করবেন |কেবল পূর্ণিমার দিন অর্থাৎ আগামী 5ই নভেম্বর সন্ধ্যে ছটার সময় রাজবাড়ীর কুল দেবতা শ্যামসুন্দর জিউ নৌকা বিহারে ফিরে যাবেন মূল মন্দিরে, যা দেখার জন্য হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমায় ঐদিন |আর ওই দিনই আনুষ্ঠানিকভাবে রাসমেলার শুভ সূচনা হবে |

Share This
Categories
বিবিধ রিভিউ

আলো, মেলা আর দেবীমূর্তির জৌলুস — শুরু হচ্ছে বুলবুলচন্ডী বাজার সার্বজনীন কালীপুজো।

মালদা, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ —-মালদার হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচন্ডী বাজারে কালীপুজো মানেই বিশাল আকৃতির দেবীমূর্তি। চিরাচরিত সেই ঐতিহ্য বজায় রেখে এবছরও তৈরি হচ্ছে ৪২ ফুট দৈর্ঘ্যের বিশালাকায় কালী প্রতিমা। ইতিমধ্যেই পুজো প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে, উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র।

১৯৪৯ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা বুলবুলচন্ডী বাজার সার্বজনীন কালীপুজো এখন উত্তরবঙ্গবাসীর অন্যতম আকর্ষণ। বিশাল দেবীমূর্তিই এই পুজোর মূল আকর্ষণ। এবছর প্রতিমার উচ্চতা রাখা হয়েছে ৪২ ফুট। প্রতিমা গড়ছেন মালদার স্বনামধন্য মৃৎশিল্পী ভেলুচরণ পাল। আগে তাঁর বাবা এই প্রতিমা গড়তেন, বর্তমানে সেই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনিই। প্রতিমা নির্মাণে সহযোগিতা করছেন তাঁর ভাইপো অমিত কুমার পালসহ অন্যান্য সহকর্মীরা।

মৃৎশিল্পী ভেলু চরণ পাল রবিবার জানিয়েছেন প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রায় ৩ কাহন খড়, ৫০ কেজি সুতলি, ৫০ কেজি পেরেক এবং ১৫০টি বাঁশ। ইতিমধ্যেই প্রতিমা গড়ার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

পুজো কমিটির সভাপতি প্রশান্ত রায় জানান, “আজ থেকে বহু বছর আগে জমিদারি প্রথার সময় স্থানীয় কয়েকজনের উদ্যোগেই এই পুজোর সূচনা হয়। সেই ধারাবাহিকতা এখনও অটুট রয়েছে।”

এবছরও চন্দননগরের সুদৃশ্য আলোকমালায় সাজানো হচ্ছে গোটা এলাকা। পাশাপাশি থাকছে পনেরো দিনব্যাপী মেলা,সহ নানা আকর্ষণ।এই পুজোর সম্পর্কে আরো কি জানালেন কমিটির সম্পাদক পীযূষ মন্ডল ও যুগ্ম সম্পাদক চন্দন দাস বক্তব্য শুনুন তাদের।

পুজোকে ঘিরে গোটা বুলবুলচন্ডীজুড়ে এখন সাজো সাজো রব। স্থানীয় ব্যবসায়ী, পূজারি ও ভক্তদের মধ্যে উৎসাহ চোখে পড়ার মতো।

Share This
Categories
বিবিধ রিভিউ

শতবর্ষের ঐতিহ্যে টিকে আছে পাহাড়েশ্বরের শ্মশান কালী — ভক্তদের ঢল অমাবস্যা থেকে কালীপুজোয়।

বীরভূম, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- পাহাড়েশ্বর শ্মশান কালীর মাহাত্ম্য
মাঝে একটি দিন। তারপরেই কালীপুজো।চারিদিকে সাজো সাজো রব।
বীরভূম জেলার দুবরাজপুর পাহাড়েশ্বরের শ্মশান কালী সর্বজন বিদিত। শতাব্দী প্রাচীন এই কালী মন্দিরের নানান মাহাত্ম্য রয়েছে। কালীপুজোর দিন মায়ের পূজো হলেও বিসর্জন হয় প্রায় এক বছর পর দুর্গাপুজোর পর একাদশীর দিন। স্থানীয় দাস সম্প্রদায়ের মানুষরা বংশ পরম্পরায় বিসর্জন করে থাকেন।পরদিন শুরু হয় কাঠামো তৈরি ও ম্যাড় বাঁধা। ত্রয়োদশীর দিন মাটি লাগানো শুরু হয়। যেহেতু শ্মশান কালী তাই শ্মশানের বাঁশ , মাটি দিয়ে মায়ের প্রতিমা তৈরি হয়। এজন্য যে জলের প্রয়োজন তা মন্দিরের নিকট দু ফুট গর্ত খুঁড়ে পাওয়া যায় যেটা গঙ্গাকুণ্ড নামে খ্যাত। প্রতিমা তৈরি সম্পূর্ণ হলে গঙ্গা কুণ্ডের জল আপনা আপনি শুকিয়ে যায়।এছাড়াও মায়ের নির্ণীয়মান মাটি শুকানোর জন্য শ্মশানের অঙ্গার জ্বালিয়ে সেঁক দেওয়া হয় । সারা বছর মায়ের নিত্য সেবা হয়। তবে অমাবশ্যা তিথিতে ভক্তদের ভীড় বেশি থাকে।আর কালীপুজোর দিন তো ভীড় উপচে পড়ে।কালীপুজোর অমানিশিতে কাঁটার আসনে বসে পুজো করা হয় শ্মশান কালীর। বর্তমানের সেবাইত তন্ময় দাস জানান শতাধিক বছরের শ্মশান কালী তারা বংশ পরম্পরায় পুজো করে আসছেন। এবিষয়ে তিনি বিশদে জানান।

Share This
Categories
বিবিধ রিভিউ

“রাজনগর পর্যটন কেন্দ্র হলে এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত” — ইতিহাসপ্রেমীদের ঐক্যবদ্ধ দাবি।

বীরভূম, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- বীরভূম জেলা অতীত রাজধানী ও ঐতিহাসিক কেন্দ্র রাজনগরকে একটি পর্যটন কেন্দ্র রূপে গড়ে তোলা খুবই জরুরি৷ আগেও এই দাবি তুলে ধরা হয়েছে৷ পুনরায় একই দাবি জানাচ্ছেন রাজনগর রাজ পরিবারের সদস্য থেকে স্থানীয় বাসিন্দা ও ইতিহাসপ্রেমী মানুষজনেরা৷ এই রাজনগর এলাকায় প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির যথাযথ সংস্কারের দাবিও জানাচ্ছেন রাজবংশের প্রতিনিধি ও বাসিন্দারা৷ পর্যটন কেন্দ্র রুপে এটিকে গড়ে তোলা হলে এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়নও ঘটবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা৷ লেখক, গবেষক তথা ঐতিহাসিকদের বিবরণ থেকে জানা যায়, সুদূর অতীতে বীরভূমের রাজধানী ছিল রাজনগর৷ সেই সময় বর্তমানের বীরভূম সহ বিহার, সাঁওতাল পরগণা, বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের কিছুটা অংশ রাজনগর রাজ স্টেটের অন্তর্ভুক্ত ছিল৷ এখানে উড়িষ্যার রাজা নরসিংহ দেব, লক্ষণ সেনদের বংশের সেন রাজারা, বীররাজা ওরফে রাজা বীরচন্দ্র ও পরবর্তীতে সুদূর আফগানিস্তান থেকে আসা পাঠান রাজারা রাজত্ব করেন৷ পাঠান রাজ বংশের উত্তরসুরীরা আজও এখানে বসবাস করেন৷ রাজনগর রাজবাড়ি, ইমামবাড়া, হামাম, টেরাকোটার বীরভূমের রাজনগর – কারুকার্য মন্ডিত মতিচূড়া মসজিদ, ঐতিহাসিক কালীদহ পুকুর, পুকুরের মাঝে হাওয়াখানা বা হাওয়ামহল, সাঁওতাল বিদ্রোহের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক গাবগাছ, ফাঁসিঘর প্রভৃতি দেখতে আজও দেশ বিদেশের বহু পর্যটক ও ইতিহাসপ্রেমী মানুষজন প্রায়শ আসেন৷ ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির কয়েকটি সামান্য কিছু সংস্কার হলেও তা যথাযথ নয় বলে অভিযোগ৷ বাকিগুলিরও সংস্কার জরুরি৷ সেই দাবিতে সোচ্চার রাজ পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বাসিন্দা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যপ্রেমীরা৷ মাঝে মধ্যে দেশ বিদেশ থেকে আসা পর্যটকরা কেউ কেউ বলেন, “রাজনগর পর্যটন কেন্দ্র হলে সারা বছরই পর্যটকরা এখানে আসার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করবেন৷ তার আগে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির যথাযথ সংস্কার ও সেগুলিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে সরকারী প্রচেষ্টায়৷ একই সাথে পর্যটকদের সব ধরণের সুযোগ সুবিধা ও পরিষেবা প্রদানের বিষয়টিও সুনিশ্চিত করা দরকার৷”

Share This
Categories
বিবিধ রিভিউ

পতিরামের সাহিত্যচর্চার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে প্রকাশিত হলো “পতিভাষ”-এর নবম সংখ্যা, আসছে দশম সংখ্যা পঁচিশে বৈশাখে।

দক্ষিণ, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- আজ একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পতিভাষ সাহিত্য পত্রিকার নবম সংখ্যা প্রকাশিত হলো। এবারের সংখ্যায় প্রবাসীর চোখে পতিরাম বিভাগে লিখেছেন কলকাতা নিবাসী সুজয় মন্ডল, ফিরে দেখা পতিরাম বিভাগে লিখেছেন প্রাক্তন প্রধান রঞ্জিত মালাকার, ইতিহাসের পাতায় পতিরাম বিভাগে লিখেছেন নির্মল চৌধুরি। শিশু কিশোর কিশোরী বিভাগে অঙ্কণে রয়েছেন অণ্বেষা মন্ডল ও লেখাতে রয়েছেন অর্পিতা সাহা। গল্প লিখেছেন মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, শংকর সাহা, অনিরুদ্ধ মন্ডল। কবিতা লিখেছেন ঈশিতা চক্রবর্তী, অনন্যা মন্ডল, নার্গিস বেগম, প্রীতি শীল, ভূষণ বর্মণ, শ্যাম সাহা, সোহেল ইসলাম, কানাই চৌহান, দেবব্রত দাস, অলক কুমার মুখোপাধ্যায়, অপর্ণা দাস, ছবি বর্মণ, চুমকি সরকার, রাজশ্রী মালাকার, বিশ্বজিৎ প্রামাণিক, নির্মল রঞ্জন চৌধুরি। গল্পের প্রচ্ছদ এঁকেছেন নওসিন আলম। নবম সংখ্যার প্রচ্ছদ এঁকেছেন নার্গিস বেগম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রতণ কুমার ব্যানার্জি। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন রাজশ্রী মালাকার। আবৃত্তি পরিবেশন করেন সমৃদ্ধি মন্ডল, সুরশ্রী সরকার, রাতুল মুন্সী, জিতোশ্রী প্রামাণিক। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন ছবি বর্মণ। বক্তব্য রাখেন সোহেল ইসলাম, বিশ্বজিৎ প্রামাণিক, দেবজিৎ চৌধুরি, নার্গিস বেগম, সৌরভ চট্টোপাধ্যায় সহ অনেকেই। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সন্দীপ গোস্বামী, রানা সরকার, জলি মুন্সী, স্মৃতি প্রামাণিক, পূবালি সরকার, নিবেদিতা সাহা, শংকর সাহা, অঞ্জলি মন্ডল, সুধা বিশ্বাস, স্মৃতি বিশ্বাস, রাজু মালাকার সহ অনেকেই। এরপর দশম সংখ্যা প্রকাশিত হবে পঁচিশে বৈশাখ তারিখে। পত্রিকার সহ-সম্পাদক কবি সোহেল ইসলাম জানান, ‘আমরা ধারাবাহিক ভাবে বছরে দুটো সংখ্যা প্রকাশ করছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্যই হলো পত্রিকায় যেন ভেসে ওঠে পতিরামের ছবি, সেই চেষ্টায় করে চলেছি।’

পতিভাষ-পতিরামের সাহিত্য বিষয়ক পত্রিকা।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

নাটক নিয়ে দুটি কথা : দিলীপ রায় (৯৪৩৩৪৬২৮৫৪) ।

আমরা জানি, নাটক সাহিত্য ও সংস্কৃতির অঙ্গ । নাটক জীবনেরই সুদৃশ্য রূপায়ণ । যাকে বলে নাটক জীবনের দর্পন । মঞ্চে অভিনেতা অভিনেত্রীদের সাহায্যে মানবজীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা যখন সংলাপের আশ্রয়ে দর্শকের সামনে উপস্থিত করা হয়, তখন নাটক । “নাটক” শব্দটির মধ্যে রয়েছে সত্যের ইঙ্গিত । নট, নাট্য, নাটক এই তিনটি শব্দের মূল হলো নট । আর নট্‌ অর্থ হলো নড়াচড়া করা, অঙ্গচালনা করা, ইত্যাদি । নাটক বলতে আমরা বুঝি এমন একটা ফলিত শিল্পকলা, যা অভিনয়-মঞ্চসজ্জা-রূপসজ্জা—ধ্বনি-প্রেক্ষাপট-দর্শক দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কিত । নাটকের ইংরেজি প্রতিশব্দ “Drama“র মধ্যেই একই সত্য আমরা খুঁজে পাই । “Drama” শব্দের মূলে রয়েছে গ্রীক শব্দ Dracin, যার অর্থ “to-do“ অর্থাৎ কিছু করা । তাই নাটককে জীবনের দর্পন বলা হয় ।
( ২ )
বাংলা নাটকের উদ্ভব দুইশত বছরেরও পূর্বে । পাশ্চাত্য রঙ্গমঞ্চের অনুকরণে বাংলা রঙ্গমঞ্চ স্থাপিত হওয়ার ফলেই বাংলা নাটক বিদেশী নাটকের মৌলধর্মাবলম্বন করেই আত্মপ্রকাশ । সংস্কৃত ও ইংরেজি নাটকের অনুবাদের মধ্য দিয়েই বাংলা নাটকের সূচনা । তাই বাংলা নাটকের আবির্ভাবের সময়কাল তিনটে । ১৭৯৫ থেকে ১৮৭২ পর্যন্ত “আদি যুগ”, ১৮৭৩ থেকে ১৯০০ পর্যন্ত “মধ্যযুগ” এবং ১৯০০ থেকে “আধুনিক যুগ” । যতটুকু জানা যায়, ১৭৯৫ সালের ২৭শে নভেম্বর কাল্পনিক সংবদল নামক একটি বাংলা অনুবাদ — প্রথম বাংলা নাটক মঞ্চস্থ হয় (কলকাতা ডোমতলায়) । আবার কোথাও জানা যায়, বাংলা নাটক প্রথম মঞ্চে অভিনীত হয় ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে । এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, “শর্মিষ্ঠা”কে (১৮৫৯) প্রথম সার্থক ও আধুনিক নাটক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় , যার রচয়িতা মাইকেল মধুসূদন দত্ত । পরবর্তীকালের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য নাটকের নাম এখানে দেওয়া হলো । যেমন রামনারায়ণ তর্করত্নের “কুলীনকুলসর্বস্ব”, মধুসূদন দত্তের “কৃষ্ণকুমারী” ও “বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রো”, দীনবন্ধু মিত্রের “নীলদর্পন”, গিরিশ চন্দ্র ঘোষের “প্রফুল্ল”, দ্বিজেন্দ্র লাল রায়ের “সাহাজাহান”, ইত্যাদি ।
বাংলা সাহিত্যে বাংলা “নাটক”এর উদ্ভব বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ । জীবনকে প্রত্যক্ষ দেখতে, জানতে, বুঝতে নাটকের বিকল্প নেই । নাটক মানুষের জীবন নিয়ে রচিত । তাই সমাজের জীবনের নানা সমস্যা ও সংকটের শিল্পীত রূপ নাটকে প্রতিফলিত হচ্ছে । বাংলা সাহিত্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি শাখা হচ্ছে বাংলা নাটক । গল্প, উপন্যাস, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ সাহিত্যের এইসব বিচিত্র শাখার মধ্যে নাটক এখন জনপ্রিয় শিল্পমাধ্যম । নাটক হচ্ছে একইসঙ্গে দেখার ও শোনার বিষয় ।
( ৩ )
এবার দেখা যাক, আগেকারদিনে নাটকের উৎপত্তি কীভাবে ঘটলো । নাটক শব্দ একটি গ্রীক শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ “কাজ” বা “কাজ” যা “I do” থেকে নেওয়া । নাটকের সাথে যুক্ত দুটি মুখোশ কমেডি এবং ট্রাজেডির মধ্যে প্রচলিত জেনেরিক বিভাজনের প্রতিনিধিত্ব করে । যাই হোক পাশ্চাত্য সাহিত্যের প্রথম নাট্যকার হলেন প্রাচীন গ্রীকরা । প্রাচীন গ্রীকদের জন্য নাট্য রচনার সাথে জড়িত ছিল পোয়েসিস, অর্থাৎ নির্মিত কাজ (poesis — the act of making) । খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে অ্যারিস্টটল নাটকের উপাদানগুলি বিবেচনা করেছিলেন — প্লট (mythos), চরিত্র (ethos), চিন্তা (dianoia i.e. thought), ডিকশন (lexis), সঙ্গীত (melodia ), ইত্যাদি । চরিত্র পছন্দ এবং কর্মধারা নির্ধারিত হয় ট্রাজেডি যেটা হলো মাইমেসিস – একটি কাজের অনুকরণ যা গুরুতর (Tragedy is mimesis – “the imitation of an action that is serious.) অ্যারিস্টটল স্থান-কাল-পাত্রের সুসম ঐক্যের কথা বলেছেন ।
এবার আসছি নাটকের উপাদান বলতে আমরা কী বুঝি ? আগেই বলি — বিষয় ও পরিণতির দিক থেকে নাটক দুই প্রকার – বিয়োগান্তক নাটক (Tragedy) এবং মিলনান্তক নাটক (Comedy) । উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম মূল ভাবনা, প্লট, চরিত্র, সংলাপ, দৃশ্য ও সঙ্গীত । অন্যদিকে নাটকের শ্রেণী বিভাগ যেমন — ভাব সংবেদনা রীতি অনুসারে (ট্রাজেডি, কমেডি,), বিষয়বস্তুর উৎসরীতি অনুসারে (পৌরাণিক, ঐতিহাসিক, সামাজিক, পারিবারিক), বৈশিষ্ট্য অনুসারে (গীতিনাট্য বা অপেরা, নৃত্যনাট্য ), আয়তন অনুসারে (মহানাটক, নাটক), গঠনরীতি অনুসারে (ক্লাসিক্যাল, রোমান্টিক), রচনারীতি অনুসারে (পদ্যনাটক, গদ্যনাটক), ইত্যাদি ।
( ৪ )
পরিশেষে বলা যায়, বাংলা নাটক এখন অনেক বেশী জনপ্রিয় । যদিও দর্শকদের রুচির পরিবর্তনের সাথে সাথে নাট্য ভাবনার, নাটকের প্লটের পরিবর্তন ঘটছে এবং সমান তালে দর্শকও বাড়ছে । ইদানীং আঞ্চলিক ভাষার নাটকের কদর বাড়ছে । সম্পূর্ণ মহিলাদের নিয়ে নাট্য গ্রুপ “সেঁজুতি” ভাল কাজ করছে, যার প্রভাব সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ছে । সুতরাং বাংলা সংস্কৃতিতে বাংলা নাটকের কদর দিন দিন বাড়বে বই কমবে না । (তথ্যসূত্রঃ সংগৃহীত) ।

Share This