Categories
রিভিউ

আজ ১৫ মে, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ১৫ মে। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

দিবস—–

(ক) আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০২ – রিচার্ড ডি ডেলেই, শিকাগোর মেয়র।

১৯০৩ – মারিয়া রাইখ, জার্মান বংশোদ্ভূত গণিতবিদ এবং প্রত্নতত্ত্ববিদ।

১৯০৫ – (ক)  ভারতীয় বাঙালি লেখক ও সাহিত্যিক শ্যামলকৃষ্ণ ঘোষ।

(খ) জোসেফ কটেন, মার্কিন অভিনেতা।

১৯০৭ – সুখদেব থাপার, ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা।

১৯০৯ – জেমস মেসন, ইংরেজ অভিনেতা।

১৯১৫ – পল স্যামুয়েলসন, বিখ্যাত মার্কিন অর্থনীতিবিদ ও আধুনিক অর্থনীতির জনক।

১৯১৫ – চারু মজুমদার, ভারতীয় বিপ্লবীনেতা।

১৯৩২ – প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাগর সেন ।

১৯৩৫ – টেড ডেক্সটার, বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটার।

১৯৬৭ – মাধুরী দীক্ষিত, প্রখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

১৯৮১ – প্যাট্রিস এভরা, ফরাসি-সেনেগালীয় আন্তর্জাতিক ফুটবলার।

১৮১৭ – দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ভারতের ধর্মীয় সংস্কারক; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা।

১৮৪৮ – ভিক্টর ভাসনেতসভ, রুশ চিত্রশিল্পী।

১৮৫৬ – এল ফ্রাঙ্ক বাম, মার্কিন লেখক।

১৮৫৭ – উইলিয়ামিনা ফ্লেমিং, স্কটল্যান্ডীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

১৮৫৯ – পিয়েরে কুরি, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী।

১৮৬২ – আর্থার শ্নিজলার, অস্ট্রীয় নাট্যকার।

১৮৯০ – ক্যাথেরিন অ্যান পোর্টার, মার্কিন লেখক।

১৮৯১ – মিখাইল বুলগাকভ, রুশ লেখক।

১৮৯২ – জিমি ওয়াইল্ড, মুষ্টিযোদ্ধা ।

১৮৯৫ – প্রেসকট বুশ, মার্কিন সিনেটর এবং জর্জ ডব্লিউ বুশের পিতামহ।

১৮৯৫ – উইলিয়াম ডি বায়রন, মার্কিন কংগ্রেসম্যান।

১৮৯৮ – আর্লেট্টি ফরাসি মডেল এবং অভিনয়শিল্পী।

১৭২০ – ম্যাক্সিমিলিয়ান হেল, স্লোভাকীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

১৭৭৩ – ক্লেমেন্স ভন মেটরনিখ, জার্মান-অস্ট্রিয়ান রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রনায়ক এবং তার যুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ কূটনীতিক।

১৭৮৬ – জেনারেল ডিমিট্রিস প্লাপাউটিস, গ্রিসের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান বিপ্লবী সেনানায়ক।
১৮৯৯ – জিন ইটিন্নি ভ্যালুই, ফরাসি জেনারেল।

১৬০৮ – রেনে গোপিল, ফরাসি ক্যাথলিক ধর্মপ্রচারক।

১৫৬৭ – ক্লাউদিও মোন্তেভের্দি, ইতালীয় গীতিকার।

১৩৯৭ – রাজা সেজোং, কোরিয়ার রাজা।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৯৫১ – দৈনিক সংবাদ-এর আত্মপ্রকাশ।

১৯৫৪ – আদমজি মিলে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গা। সরকারি হিসাবে নিহত ৪০০, বেসরকারি মতে ৬০০।

১৯৬০ – কঙ্গো প্রজাতন্ত্র স্বাধীন হয়।

১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ব্রাজিল।

১৯৮৮ – আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহার শুরু।

১৮১৮ – বাংলা ভাষার প্রথম সংবাদপত্র বেঙ্গল গেজেট প্রকাশিত হয়।

১৭৭৬ – প্রথম বাষ্প চালিত জাহাজ বানানো হয়েছিলো।

১৬২৫ – অস্ট্রিয়ায় ১৬ বিদ্রোহী কৃষকের ফাঁসি হয়।

১০০৪ – দ্বিতীয় হেনরি ইতালির রাজা হিসেবে অভিষিক্ত।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯৩৬- স্যার রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়,ভারতের যশস্বী বাঙালী শিল্পপতি।

১৯৯৪ – সুরকার, কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক আবদুল আহাদ।

১৮৮৬ – মার্কিন নারী কবি এমিলি ডিকিনসন।

১৮৯৪-ভূদেব মুখোপাধ্যায়, একজন বিশিষ্ট লেখক এবং শিক্ষাবিদ।

১১৫৭ – রুশ যুবরাজ ইউরি ডলগোরুক।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ৭ এপ্রিল, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ৭ এপ্রিল। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

দিবস—-

 

(ক) বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯১১ – ফরাসি লেখক হেরভে বাযিন।

১৯১৫ – পঙ্কজ দত্ত, বাঙালি চলচ্চিত্র সাংবাদিক।

১৯২০ – রবি শংকর, প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ।

১৯২৮ – অ্যালান জে পাকুলা, আমেরিকান পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯৩৯ – ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা, আমেরিকান পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯৩৯ – ইংরেজ বিখ্যাত ইংরেজ সাংবাদিক, লেখক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ডেভিড প্যারাডাইন ফ্রস্ট।

১৯৪৪ – গেরহার্ট শ্রোডার, জার্মান রাজনীতিবিদ।

১৯৫৪ – হংকং ভিত্তিক অভিনেতা, মার্শাল আর্টিস্ট, পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার জ্যাকি চ্যান।

১৯৬৪ – নিউজিল্যান্ড বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ার অভিনেতা, গায়ক, পরিচালক ও প্রযোজক রাসেল আইরা ক্রো।

১৯৭৩ – সাবেক ইতালিয়ান ফুটবলার মার্কো ডালভেকিও।

১৯৮৩ – ফরাসি ফুটবলার ফ্রাঙ্ক বিলাল রিবেরি।

১৯৮৭ – মার্টিন কাকেরেস, উরুগুয়ের ফুটবলার।

১৯৯০ – রোমানিয়ান টেনিস খেলোয়াড় সরানা কিরস্টেয়া।

১৯৯২ – এন্নিমেরা শিমেল, জার্মানীর ইসলাম বিশেষজ্ঞ।

১৮৮৯ – গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল, ল্যাটিন আমেরিকার প্রসিদ্ধ কবি ও লেখক।

১৮৯৫ – জার্মান অভিনেত্রী মারগারেটে শন।

১৮৯৭ – তুলসী লাহিড়ী, নাট্যকার, অভিনেতা, সুরকার, বাংলা ছায়াছবির জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার।

১৭৭০ – উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ ইংরেজ কবি।

১৭৭২ – শার্ল ফুরিয়ে, ফরাসি কল্পবাদী সমাজতন্ত্রী।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৯৩৭ – ইতালী আলবেনীয়া দখলের জন্যে হামলা শুরু করে।

১৯৩৯ – ইতালির আলবেনিয়া দখল।

১৯৪৮ – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৫৩ – সুইডেনের কূটনীতিক ডাক হামারস্কজোল্ট জাতিসংঘ মহাসচিব নিযুক্ত।

১৯৫৬ – মরক্কোর স্বাধীনতা লাভ।

১৯৭৩ – বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু।

১৯৮২ – মেক্সিকোয় চিকোনল আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে দশ হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটে।

১৯৯৪ – বিক্ষুব্ধ সৈন্যরা রুয়ান্ডার ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী এবং ১১ জন বেলজীয় জাতিসংঘ সৈন্যকে হত্যা করে।

১৯৯৫ – উপমহাদেশের ইতিহাসে বৃহত্তম চাঞ্চল্যকর যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় ভারতের মহারাষ্ট্রে দুই কংগ্রেস দলীয় এমপি পণ্ডিত সাপকালে ও সঞ্চয় পাওয়ারকে দশ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান।

১৮১৮ – ব্রিটিশ সরকার ‘বিনা বিচারে আটক’ আইন কার্যকর করে।

১৭২১ – রাশিয়ার সম্রাট পিটার কাবির সুইডেন দখলের জন্যে দেশটির উপর হামলা শুরু করে ।

১৭৯৫ – ফ্রান্সে মিটারকে দৈর্ঘ্যের একক হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করা হয়।

১৭৯৮ – তুরস্কের তৃতীয় সেলিম রাজসিংহাসনে অধিষ্ঠিত।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০৪ – ভারতীয় ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী, গুরু ও ওডিশি নৃত্যশৈলীর উদ্গাতা কেলুচরণ মহাপাত্র।

২০০৭ – ব্যারি নেলসন, আমেরিকান অভিনেতা।

২০১২ – মিস রেড্‌, ইংরেজি লেখক।

২০১৪ – পিচেস হানিব্লসম গেল্ডফ , সাংবাদিক, টেলিভিশন উপস্থাপক ও মডেল ।

২০২১ – স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী।

 

১৯৪৭ – হেনরি ফোর্ড, মার্কিন মোটরযান উৎপাদক।

১৯৫২ – আবদুস সালাম, ভাষা শহীদ।

১৯৫৯ – মন্মথনাথ ঘোষ, প্রখ্যাত জীবনীকার।

১৯৭৪ – প্রখ্যাত বাঙালি অনুবাদক পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়।

১৯৮৫ – কার্ল স্মিট, জার্মান দার্শনিক ও আইনজ্ঞ ।

১৯৮৬ – লিওনিদ ক্যান্টোরোভিচ, রাশিয়ান গণিতবিদ ও অর্থনীতিবিদ ।

১৮২৩ – জ্যাকুইস চার্লস , ফরাসি উদ্ভাবক, বিজ্ঞানী, গণিতবিদ এবং বেলুন বিশেষজ্ঞ।

১৮৩৬ – উইলিয়াম গডউয়িন, ইংরেজ সাংবাদিক ও লেখক ।

১৮৯১ – বেইলী সার্কাসের, আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং রাজনীতিবিদ, সহ-প্রতিষ্ঠিাতা বারনুম এবং ।

১৭৬১ – টমাস বেইজ, ইংরেজ মন্ত্রী ও গণিতবিদ।

১৬১৪- এল গ্রেকো, চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর ।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ৬ এপ্রিল, ইতিহাসের আজকের এই দিনে যা ঘটেছিল।

আজ ৬ এপ্রিল। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই।  ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-

 

দিবস—-

 

(ক) উন্নয়ন ও শান্তির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস ৷

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০৪ – জার্মান আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও ৩য় চ্যান্সেলর কার্ট গেয়র্গ কিসিঙ্গের।

১৯১১ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান প্রাণরসায়নী ফিওডর ফেলিক্স কনরাড লাইনেন।

১৯২০ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী চীনা বংশোদ্ভূত আমেরিকান প্রাণরসায়নী ও শিক্ষাবিদ এডমন্ড এইচ. ফিসার।

১৯২৮ – জেমস ওয়াটসন, মার্কিন আণবিক জীববিজ্ঞানী।

১৯৩০ – ডেভ সেক্সটন, ইংরেজ ফুটবলার ও ফুটবল ম্যানেজার।

১৯৩১ – সুচিত্রা সেন, ভারতীয় বাঙালি অভিনেত্রী।

১৯৪২ – আমেরিকান অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার ব্যারি লেভিনসন।

১৯৪৯ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জার্মান পদার্থবিদ হরস্ট লুডউইগ স্টরমের।

১৯৫৬ – সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার ও কোচ দিলীপ বলবন্ত ভেংসরকার।

১৯৫৬ – মুদাসসর নজর, পাকিস্তানি ক্রিকেটার।

১৯৬৩ – ইকুয়েডর রাজনীতিবিদ ও ৫৪ তম প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কররেয়া।

১৯৬৯ – আমেরিকান অভিনেতা, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার পল রুড।

১৯৭8 – রাশিয়ান ফুটবলার ইগর সেমশভ।

১৯৮৩ – জাপানি ফুটবলার মিটসুরু নাকাটা।

১৯৮৫ – লিয়াম প্লাঙ্কেট, ইংরেজ ক্রিকেটার।

১৮১২ – রাশিয়ান দার্শনিক ও লেখক আলেকজান্ডার হারযেন।

১৮২০ – ফরাসি ফটোগ্রাফার, সাংবাদিক ও লেখক নাডার।

১৮২৬ – ফরাসি চিত্রকর ও শিক্ষাবিদ গুস্টাভে মরেয়াউ।

১৮৪৯ – কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মুসলমান বিচারপতি সৈয়দ আমীর আলী।

১৮৮৩ – চার্লি রবার্টস, ইংরেজ ফুটবলার।

১৮৮৬ – নিজাম স্যার মীর উসমান আলি খান হায়দ্রাবাদ ও বেরার রাজ্যের শেষ নিজাম।

১৮৯০ – ডাচ প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী ও ফকার বিমান প্রস্তুতকর্তা অ্যান্থনি ফকের।

১৭৭৩ – স্কটিশ ইতিহাসবিদ, অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক জেমস মিল।

১৪৮৩ – রাফায়েল, চিত্রশিল্পের রেনেসাঁস যুগের অন্যতম প্রধান শিল্পী।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০৮ – এই দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংস ও ৯০ রানে ভারতের বিপক্ষে জয়ী হয়।

১৯১৭ – প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৩০ – ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে ভারতকে মুক্ত করতে মহাত্মা গান্ধী লবণ সত্যাগ্রহ অহিংস আন্দোলন শেষ করেন। সকাল সাড়ে ৬টার সময় গান্ধীজি লবণ আইন ভেঙে প্রথম লবণ প্রস্তুত করেছিলেন।

১৯৪২ – জাপানি বিমান সর্বপ্রথম ভারতে বোমাবর্ষণ করে।

১৯৪৮ – জিন্নাহর ঢাকা ত্যাগের পর রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার আন্দোলন আরো বেগবান হয়ে ওঠে।

১৯৬৬ – গণ দাবির মুখে ইরানের তৎকালীন শাসক রেজা শাহ বন্দি দশা থেকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেনী কে মুক্তি দিতে বাধ্য হন।

১৯৬৮ – জাতিগত সহিংসতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় শহরগুলিতে কয়েক ডজন মার্টিন লুথার রাজা হত্যায় জাতিগত দাঙ্গা তীব্রতাবৃদ্ধি পায়।

১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় গ্যাবন।

১৯৮৬ – ঢাকায় প্রথম এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়।

১৯৯২ – মুসলিম রাষ্ট্র বসনিয়া স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৯৩ – মস্কোর ১৭০০ মাইল পূর্বে অবস্থিত রাশিয়ার গোপন সামরিক পরমাণু ঘাটিতে মারাত্মক দুঘর্টনা ঘটে।

১৮৭৬ – কলকাতা কর্পোরেশন অনুমোদিত হয়।

১৮৯৬ – এথেন্সে আধুনিক অলিম্পিক ক্রীড়ার সূচনা হয়।

১৭১২ – নিউইয়র্কে নিগ্রো ক্রীতদাসরা শ্বেতাঙ্গ মালিকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।

১৭৯৩ – ফরাসি বিপ্লবের পর ফ্রান্সের রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ‘কমিটি অব পাবলিক সেফটি’ গঠিত হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০০ – টিউনিস্ রাজনীতিবিদ ও ১ম প্রেসিডেন্ট হাবিব বউরগুইবা।

২০১৪ – মিকি রুনি, মার্কিন অভিনেতা, কৌতুকাভিনেতা, প্রযোজক ও বেতার ব্যক্তিত্ব।

২০১৯ – টেলি সামাদ, বাংলা চলচ্চিত্রের শক্তিমান কৌতুকাভিনেতা।

১৯৩৭ – আন্তর্জাতিকখ্যাতি সম্পন্ন ভারতীয় কমিউনিস্ট বিপ্লবী বীরেন চট্টোপাধ্যায়।

১৯৬১ – নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বেলজিয়ান মাইক্রোবায়োলোজিস্ট জুলস বরডেট।

১৯৬৭ – কবিয়াল রমেশচন্দ্র শীল।

১৯৭১ – ইগর স্ট্রাভিনস্কি, রুশ সুরকার।

১৯৯০ – সাহানা দেবী,রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্যা গায়িকা।

১৯৯১ – বিল পন্সফোর্ড, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।

১৯৯২ – আইজাক আসিমভ, রুশ লেখক ও শিক্ষাবিদ।

১৯৯৪ – (ক) প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি নাট্যকার, পরিচালক ও অভিনেতা শেখর চট্টোপাধ্যায়।

(খ) রুয়ান্ডার ব্যাংকার, রাজনীতিবিদ ও ৩য় প্রেসিডেন্ট জুভেনাল হাব্যারিমানা।

১৮২৯ – নরওয়েজিয়ান গণিতবিদ ও তাত্তিক নিল্স হেনরিক আবেল।

১৮৮৩ – ব্রাজিলিয়ান কবি, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ হোজে বনিফাসিও দে আন্দ্রাদা।

১৮৯২ – নিল্‌স হেনরিক আবেল, নরওয়েজীয় গণিতবিদ।

১৫২০ – রাফায়েল, চিত্রশিল্পের রেনেসাঁস যুগের অন্যতম প্রধান শিল্পী।

১৫২৮ – আলব্রেখট ড্যুরার, জার্মান চিত্রকর, খোদকার ও গণিতবিদ।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
কবিতা রিভিউ

উপেক্ষিত ভাষাশহীদ : শুভঙ্কর দাস।

২১ শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবস।আন্তর্জাতিক ও আন্তরিক আলোর।
এই সূর্যস্মরণীয় দিনটির জন্য এ-ই মানুষটির অবদান অতুলনীয়। অথচ ভাষাদিবসের প্রেক্ষাপটে তাঁর কথা খুবই কম শোনা যায়,কম উচ্চারিত হতে দেখা যায় এবং কোনো সৃজনকর্ম তাঁকে নিয়ে রচিত হয় না!
কেন?
১৯ মার্চ প্রবল শক্তিশালী ও সর্বপ্রধান মহম্মদ আলি জিন্না ঢাকায় এসে চেঁচিয়ে উঠলেন,উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।তাঁর মুখের ওপর যাঁরা প্রতিবাদ করতে দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন,তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন ভাষাসৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।
ধীরেন্দ্রনাথের যুক্তি ছিল,দেশের ছয় কোটি নব্বই লক্ষ নাগরিকের মধ্যে চার কোটি চল্লিশ লক্ষ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন,অতএব বাংলাই হোক রাষ্ট্রভাষা।
কিন্তু মুসলিম লিগ তা খারিজ করে দেয়,তার কারণ সহজেই অনুমেয়।
সেই মহান ভাষাসৈনিককে এর জন্য মারাত্মক মূল্য চোকাতে হয়েছিল।১৯৭১ সালে পাকসেনারা অশীতিপর সমাজকর্মী ধীরেন্দ্রনাথকে কুমিল্লার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ময়নামতী ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
বাহান্নর ভাষা আন্দোলন শুধু মাতৃভাষার রক্ষা করেনি,একটা দেশের জন্ম দিয়েছল,সেই দেশের জন্মপরতে ধীরেন্দ্রনাথের নাম অবিচ্ছেদ্য।তাঁকে বিস্মৃত হওয়া মানে একটা ভাষাকে,একটা দেশকে অস্বীকার করা।
তাঁকে জানিয়ে অক্ষরের শ্রদ্ধা।

চার কোটি চল্লিশ লক্ষের সিংহাসন

শুভঙ্কর দাস

অক্ষরের কোনো ধর্ম হয়?
মায়ের মুখের ভাষায় কোনো কাঁটা,কোনো উদ্ধত আঙুল,কোনো স্বেচ্ছাচারীর মুর্খামি
কালো কালো রেখায় মাথা তুলতে পারে?

কোনোদিন পারে না,যে মুহূর্তে অর্ধমের অন্ধকার বাংলা বর্ণে মিশিয়ে দেবে,যে মুহূর্তে রক্তচক্ষু মিশিয়ে দেবে আদুরে অক্ষরে,যে মুহূর্তে বন্দুকে বিচার করবে বিবেকের বাণী,সেই মুহূর্তে ধীরেন্দ্রনাথ শুধু উচ্চারণ করবেন,চার কোটি চল্লিশ লক্ষের মুখের ভাষা…

বাংলা,বাংলা এবং শেষ রক্তবিন্দুর সত্য, বাংলা

২১ ফেব্রুয়ারি একটা এমন দেশের নাম,যেখানে মায়ের আঁচলে সত্যিকারের ভুবন আঁকতে নিজের প্রাণ পর্যন্ত তুলে দিতে পারে
তেমন দেশের মাটিতে যদি সিংহাসন গড়ে ওঠে

তাতে হাসিমুখে বসে থাকবেন ধীরেন্দ্রনাথ।

—————-//———————-
২৯ মার্চ,২০২৩

Share This
Categories
রিভিউ

কবিতার সর্বস্ব ও কবির সর্বনাশ ::: শুভঙ্কর দাস।।।

‘কবিতা’ কথাটি উচ্চারণ করার আগে
অন্তত একটি এমন কবিতা পড়ুন,যাতে আপনার মনে হতে পারে,আয়না শুধু কাচের নয়,অক্ষরেরও হয়!
‘কবিতা’ নিয়ে কণামাত্র মতামত প্রকাশের আগে
অন্তত একজন কবির কথা আত্মজীবনীর মতো জানুন
যাতে আপনার মনে হতে পারে
আত্মীয়স্বজন বলতে শুধু রক্তের সম্বন্ধ বোঝায় না!

এই কবিতার মতো দেখতে সাজানো কথাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়াপদ ‘পড়ুন’।
অর্থাৎ পড়া।
এই পড়ার লোকের খুবই অভাব।
রক্তাল্পতার মতো পাঠকাল্পতার রোগে ভুগছে বাংলা কাব্য-কবিতা।
কবি জীবনানন্দ দাশ ইংরেজি সাহিত্যের পড়ুয়া শিক্ষক এবং বাংলা কবিতার মনন নক্ষত্রের প্রধান। তিনি যেমন শিরোধার্য রবীন্দ্রনাথের লেখা আত্মস্থ করার চেষ্টা করতেন,তেমনি সমসময়ের বন্ধুবর্গের লেখাও, যেমন দিনেশ দাসের লেখাও পড়তেন এবং পড়ার মতো পড়ে,সেই সব কবিতার মননশীল আলোচনা বা মতামত ব্যক্ত করতেন।
অনেকেই জানেন না,কবি জীবনানন্দ কবিতা চর্চার জীবনে কবি দীনেশ দাসের মুগ্ধ পাঠক এবং আলোচক। দীনেশ দাসকে চেনেন তো?
সেই যে যিনি লেখেন

” বাইরে অদূরে
থান-কাপড়ের মতো একটি পবিত্র দিন শুকায় রোদ্দুরে।”

অথবা

“তোমার পায়ের পাতা সবখানে পাতা
কোনখানে রাখব প্রণাম!”

অথবা

“বাঁকানো চাঁদের সাদা ফালাটি
তুমি বুঝি খুব ভালোবাসতে?
চাঁদের শতক আজ নহে তো
এ যুগের চাঁদ হল কাস্তে!”

যাক! এবার মনে পড়বেই।

একটি জায়গায় জীবনানন্দ কবি দীনেশ দাসের কবিতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেছিলেন,এখন বুঝতে পারি,কবিতা শুধু যে শিল্পকুশলতার নয়, আরোও ওপরের জিনিস।
পাঠক ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
শান্তিনিকেতনে কেউ যদি দুটি শব্দ লিখে পোস্টকার্ডও পাঠাতেন,রবীন্দ্রনাথ তাও পড়তেন।
প্রমথ চৌধুরী পড়ার জন্য গ্রন্থকীট বলে উপহাসের পাত্র হয়েছিলেন অথচ সেই পড়ার গুণে তিনি বঙ্গসাহিত্যের একজন শ্রেষ্ঠ গদ্যকার হতে পেরেছিলেন।
স্বামী বিবেকানন্দ মাত্র উনচল্লিশ আয়ুর সময়কালে যা পড়েছেন,তা একজন মানুষ শতায়ু জীবনে পারবে না!
সৈয়দ মুজতবা আলি তো গ্রন্থকেই জীবনের দরজা-জানালা এবং সোপান করেছিলেন।
বুদ্ধদেব বসু তো কবিতার ওপর ভবন ও ভুবন নির্মাণ করেছিলেন!
তারপর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সবাই লেখার পরিমাণ মাপতে ব্যস্ত,তাঁর সেই সময় বা প্রথম আলো উপন্যাসের সহকারী গ্রন্থসূচি তালিকা নিয়ে দুই ফর্মারই বই হয়ে যেতে পারে!
মোদ্দা কথা, সেই সব পাঠকধন্য সোনালি দিন কোথায় গেল!
কবিতার বইয়ের পাঠক কোথায়?
ক’জন গাঁটের কড়ি খরচ করে কবিতার বই কেনেন?
সর্বনাশ! কেনার কথা বলে ফেললাম, হা হরি! হায় আল্লা!
কোনো কবিতার বই প্রকাশের পর যদি পঞ্চাশজনকে বিতরণ স্টাইলে দেওয়া হয়,তাহলে দেড়জন মাত্র মতামত জানান,যদি সেই কবি অতিব সৌভাগ্যবান হন।
তারপর যদি সরকারি বা বেসরকারি ডাকযোগে কবিতার বই পাঠান,তাহলে তো কথাই নেই,ডাক নিশ্চিতভাবে পৌঁছে যাওয়ার দিন অতিক্রম করে কবি যদি ফোন করে জানতে চান,কবিতার বইটি পেয়েছেন? তাতে ফোনের অপর প্রান্তের উত্তর আসবে,আপনি কী পাঠিয়েছিলেন?আসলে এতো বইপত্র আসে,বুঝতে পারছি না! আচ্ছা, আপনাকে পরে জানাচ্ছি!
ব্যাস ফোনটা কেটে যাবে এবং এই ‘পরে জানাচ্ছি’ আর কোনোদিন ফিরবে না।
এই এতো কথার সার কথা এই,কবিতা পড়ুন এবং কবিতাই আপনাকে অনুভবের সঠিক পথ দেখাবে।
প্রশ্ন উঠবে, কবিতাই কেন?
সহজ উত্তর, কবিতারই মানবমনের সর্বোত্তম নির্যাস।কবিতার চোখ দিয়ে মানুষ এবং তার সম্পর্কের পরম অনুভব ব্যক্ত ও বিস্তার দান করতে পারে।
কবিতা পড়ুন এবং তাকে স্পর্শ করতে পারলে তারপর গদ্য, উপন্যাস, গল্প অথবা গান সবকিছুর অন্তর্নিহিত আলোর কাছে অতি সহজেই পৌঁছাতে পারবেন,শুধু অক্ষর সাধন নয়, আধ্যাত্মিক এবং সংসার সত্যও অনুধাবন করতে পারবেন।
কবিতা পড়ুন এবং পড়ার যোগ্য হয়ে ওঠুন। গভীরভাবে হৃদয়স্থ করতে থাকুন,তারপর ডাক্তারি,ইঞ্জিনিয়ারগিরি,মাস্টারি, ব্যবসায়ী,বিপ্লবী,সাংবাদিক, রাজনীতি,ফুচকা অথবা বেলুন ফাটানো, যা ইচ্ছে করুন।
সবকিছু কবিতার মধ্যে দিয়ে উত্তর এবং উর্বরতা খুঁজে পাবেন।
এটাই সত্য।
ধরুন,আপনি পিতা অথবা মাতা।
কর্মক্ষেত্রের শেষে যখন বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখলেন,সন্তানের জ্বর অথবা তার খাওয়া হয়নি, সেই মুহূর্তে আপনার বুকের বাঁদিক যেই ধক্ করে উঠল,তাই অনুভব।
তাই কবিতার পথ এবং কবিতার প্রকাশ।
এটা আনন্দের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে,সেই একই জিনিস।

অনুভবকে রূপ দেয় চূড়ান্ত কবিতা।
আর একথা সর্বজনগ্রাহ্য সত্যি, অনুভবহীন মানুষ মাত্রই বিপজ্জনক, শুধু বিপজ্জনক নয়,বিশ্বধ্বংসাত্মক।
মনুষ্যত্ব নির্মাণ করতে হলে কবিতা পড়তেই হবে।
যা এই দুঃসময়ে প্রচণ্ড অভাব।

এতো বড় বড় কথার কিছু নেই।
এবার অতি সহজ করে সংক্ষিপ্ত সার।
কবিতা পড়তে হবে।নতুনভাবে।নতুন চোখে।
আপনার পাশে বসে সাহিত্যসভায় যে কবিকে দেখছেন,তাকে সত্যিকারের চিনুন কবিতার মধ্য দিয়ে।
আপনি এতদিন কবিকে দেখেছেন,
সে কালো কি ফর্সা,সে মোটা কি রোগা,সে আমিষ না নিরামিষ, সে বিবাহিত নাকি ডিভোর্সী, সে বাসে ঘুমায় নাকি টিকিট কাটে না! খাওয়ার গপগপ করে খায় নাকি কাকের মতো ছড়ায়,সে বিড়ি ফোঁকে নাকি মদ খায়,সে প্রেম করে নাকি পরকীয়া,সে বহুমূত্র রোগী নাকি উচ্চরক্তচাপ, সে স্কুল মাস্টার নাকি কয়লা খনির শ্রমিক, সে লিটল ম্যাগাজিন করে নাকি ঢাউস ম্যাগাজিন,তার সঙ্গে সুবোধ নাকি জয়ের আলাপ আছে,সে নন্দনে চেঁচায় নাকি গন্ধমাদন তোলে, সে অন্তর্বাস পরে নাকি উলঙ্গ থাকে, এসব স্রেফ ছুঁড়ে ফেলুন,
ছুঁড়ে, মুড়ে এবং এমন নিরাপদ দূরত্ব ফেলুন,যাতে আপনাকে প্রকৃত পাঠক হতে বাধা দিতে না পারে!
এবার মন ও মনন বদলে ফলুন।
এবার কবিতা দিয়ে কবিকে দেখুন, চিনুন এবং বোঝার মতো বুঝুন।
দেখবেন আপনার জগৎ বদল হয়ে গেছে এবং সত্যিকারের জগতে আপনি বসবাস করা শুরু করে দিয়েছেন।
কারণ অনুভব বা চিন্তন

কবির পোশাকে
কবির দাঁতে
কবির হাসিতে
কবির বকবকাকিতে
কবির ফতুয়ায়
কবির চুলে
কবির টাকে
কবির টাকায়
কবির বাজারে ব্যাগে
কবির বউ-এ
কবির বোনে
কবির ফেসবুকে
কবির হোয়াটসঅ্যাপে
কবির সেলফিতে
কবির বইদোকানে মাথা চুলকানোতে
কবির মাইক্রোফোন ধরে হাঁপানোয়
কবির বই প্রকাশে
কবির গালিগালাজে
কবির ধূমপানে
কবির প্রেমিকায় নেই।
নেই।নেই।নেই।একদম নেই।
আছে শুধু কবিতায়।একমাত্র কবিতায়। তাই কবিতা পড়ুন।একথা মফস্বল ও মহানগর সবের ক্ষেত্রে সমান সত্য ও চরম চমৎকার।
কবিতা পড়ুন।
কবিতার মাধ্যমে কবিকে প্রতিষ্ঠা করুন অন্তরে এবং আকাশে….
কিন্তু কাকে বলি? কে যে বোঝে!

২১ শে মার্চ,২০২২. শুভঙ্কর দাস।

Share This
Categories
কবিতা রিভিউ

কবিতার পবিত্রতার ছুঁয়ে : শু ভ ঙ্ক র দা স।

বরিশালে জন্ম হলেও বালকটি বড় হওয়া কলকাতায়…
ইস্কুলের গণ্ডী পেরানোর অনেক আগেই কবিতায় নিমজ্জন। সেইভাব জাগ্রত হল,বরিশালে এক জমিদারের বৈঠকখানায় রবি বর্মার রামায়ণ-মহাভারতের ছবি দেখে,ভাবলেন চিত্রচিল্পী হবেন,কিন্তু ছবি আঁকা শুরু করলেন অক্ষরে…
সহসা মা মারা গেলেন।
বালকটি অসহায়,নিঃসঙ্গ এবং উদাস।
লিখলেন প্রথম কবিতা,মাকে নিয়ে,লিখে টাঙিয়ে রাখলেন দরজার পাশেই…
বরিশাল থেকে মাসির হাত ধরে মহানগরের পথে..
প্রচন্ড দারিদ্র্য এবং অসংখ্যবার বাসাবদল।
এর মধ্যে সেই বালক বড় হতে লাগলেন এবং মনেপ্রাণে এই বিশ্বাস প্রোথিত হল,কবিতার জন্য তাঁর জন্মগ্রহণ।
টিউশনির টাকায় পত্রিকা প্রকাশ।
নাম, কবিপত্র।
যেটি পরে সাহিত্যপত্রের ইতিহাস সৃষ্টি করে।
বাষট্টির বছর ধরে প্রকাশ হয়ে আসছিল। এক বিরাট বিস্ময়!
দেখা হল,বিষ্ণু দে,সুভাষ মুখোপাধ্যায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রাম বসু,নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, আলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত এবং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে..
আলাপ হল,প্রেরণা ও উৎসাহে পেলেন এক নতুন শক্তি।
তারপর মনে হল, কবিতার বই বের করতে হবে।
পান্ডুলিপি তৈরি হল,নাম দিলেন,’দর্পণে অনেক মুখ’।
কিন্তু ছাপতে কে? টাকা কোথায়?
কবির কী অবস্থা!
নিজে ভালো করে কবি খেতেই পান না!অন্য লোকের কাছে আশ্রিত।
অথচ তাঁর ধ্যানজ্ঞান,কবিতার বই বের করবেন।
এক বন্ধু কবিতা পড়ে বলল,আমি টাকা দেবো।
কবিযুবক ছুটলেন সিগনেটের কর্ণধার দিলীপ গুপ্তের কাছে।
প্রচ্ছদ আঁকলেন,পূর্ণেন্দু পত্রী।
সেই শুরু, আবির্ভাব হল এক নতুন কবিপুরুষের…
তিনি পবিত্র মুখোপাধ্যায়।
তিনি তো লিখতে পারেন—

“অনন্তকাল কেউ বেঁচে থাকবে না
খড়কুটোর রহস্য বেরিয়ে পড়বার আগেই
আমি
খুলে ফেললাম আনুগত্যের দস্তানা
হেলমেটের সবুজ ঢালুপথের ওপর দাঁড়িয়ে পড়লো সূর্য
আমি রেকাবে পা রাখলাম রেকাবে রাখলাম পা
রেকাবে”

কী আশ্চর্য!
কবি পবিত্র মুখোপাধ্যায় সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে পা রাখার ভুলে পড়ে যান,তারপর হাসপাতালে..
তারপর অশেষ কবিতার যাত্রায়..

অলংকরণ। ভগীরথ সর্দার।।

Share This
Categories
কবিতা রিভিউ

ঈশ্বরী পাটনির সন্ধানে; দুই : শুভঙ্কর দাস।

ঈশ্বরী পাটনির সন্ধানে। দুই

প্রতিটি পদক্ষেপে ব্যর্থতা।
ছাত্রজীবনে প্রবেশিকা পরীক্ষায় ফেল।
আবার চেষ্টা, আবার ফেল।
ক্রমাগত কয়েকবারের চেষ্টায় উত্তীর্ণ।
বি.এ. পরীক্ষা দেন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে,কিন্তু পরীক্ষা ভালো দেননি বলে,অনার্স টিকল না।
বিলেত গেলেন আইসিএস হবেন বলে,সেখানেও ব্যর্থ।
নিজের ব্যর্থতা নিয়ে রসিকতা করে বলতেন,I came out first in the unsuccessful list’
বিলেতে গেছিলেন আইসিএস হতে কিন্তু ফিরে এলেন ব্যারিস্টার হয়ে।
কলকাতায় ফিরলেন ১৮৯৩ সালে,আবার ব্যর্থ।পসার জমাতে।
এদিকে মারাত্মক বিপদ।পিতার মৃত্যু। এবং বিপুল ঋণের বোঝা পুত্রের কাঁধে।
আদালত তাঁদের পরিবারকে দেউলিয়া ঘোষণা করলেন।
কী করবেন?
শুরু করলেন পড়াশোনা। নানা ধরণের বই পড়তে লাগলেন।বেশি পড়লেন কবিতা।
লিখে ফেললেন কাব্যগ্রন্থ ‘মালঞ্চ’। পাঠকসমাজ পেল নতুন কবি।
সেই সঙ্গে সম্পাদনা করছেন সাহিত্যের পত্রিকা।
তারপর সহসা অলৌকিকভাবে হাতে আসে আলিপুর বোমার মামলা।জয়লাভ করলেন।রক্ষা করলেন ঋষি অরবিন্দকে।
ব্যাস,সেই শুরু, একজন মহামানবের পথচলা।
তারপর এমন বিখ্যাত ও প্রভাবশালী আইনজীবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাণপুরুষ হয়ে উঠলেন,লোকে তাঁর চোখে দেশ দেখতে শুরু করলেন।
শুধু বিরাট পিতৃঋণ শোধ করেননি,দানে-ধ্যানে-চরিত্রে-কর্মে হয়ে ওঠেন প্রবাদপ্রতিম।
মহাত্মা গান্ধি পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে লড়াই নেমে চোখের জল ফেলে বলে ওঠেন,হমে হারা দিয়া।
সেই যোদ্ধা, কবি, দানসাগর যখন পরলোকগমণ করলেন সারা দেশ মহাশূন্যতায় ডুবে গেছিল।
ডক্টর বিধানচন্দ্র রায় সেই মহামানবের ছবি নিয়ে ছোটেন রবীন্দ্রনাথের কাছে।
আবেদন, এই ছবির ওপর একটা কবিতা লিখে দিতে।
রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,ডাক্তার, এ তো প্রেসক্রিপশন করা নয় যে,কাগজ ধরলে আর চটপট লেখা হয়ে গেল।
বিধানচন্দ্র জানালেন,তিনি অপেক্ষা করবেন।
অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি।
রবীন্দ্রনাথ লিখে দিলেন,

” এনেছিলে সাথে করে মৃত্যুহীন প্রাণ
মরণে তাহাই তুমি করে গেলে দান।”

আশা করি বুঝতে পারছেন,কার কথা বলছি,দেশবন্ধু।
চিত্তরঞ্জন দাশ।

তাই পড়াশোনা,সত্যিকারের পড়াশোনা, কার জীবন কীভাবে বদলে দেবে,সেটা কেউ জানেন না!
একমাত্র মা সরস্বতী ছাড়া!

শুভঙ্কর দাস। ০৬/০৭/২০২২

Share This
Categories
কবিতা রিভিউ

মৌরিফুলের কবির সুঘ্রাণ ও সৌন্দর্য : শু ভ ঙ্ক র দা স।

“ধুস,তাই কি কখনো হয়
রৌদ্রের সাথে বৃষ্টির পরিণয়”

এই অসামান্য আলোকময় প্রেমের কবিতাটি মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায়ের লেখা।
এবং হ্যাঁ,এই চরণগুচ্ছের মধ্যে একটি শব্দ ‘ধুস’ এর জন্য মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায়কে আমার প্রিয়তর কবি করেছে,প্রেমের কবি করেছে এবং আটপৌরে জীবনের সংবেদনশীল রচনাকার করেছে।
এক হাজার চরণের মহাকাব্যের পাশে এই দুটি চরণ সমানভাবে বসতে পারে,সসম্মানে এবং সাধনায়…
এটি আমার ব্যক্তিগত মতামত।
কিন্তু আমরা কজন কবি মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায়কে চিনি?
কজন তাঁর কবিতা পড়েছি?
কজন তাঁর সাধারণ, অতি সাধারণ জীবনযাত্রার মধ্যে এইসব অসামান্য অনুভবের কবিতা সৃষ্টির কাহিনি জানি!
জানি না!
তখন মল্লিনাথ নিজেই বলেন চায়ের বৈঠকী মজলিসি মুগ্ধতায়,

“চালচুলোহীন মানুষের কিছু কথা থাকে,কিছু প্রশ্ন থাকে।
কোনো কোনো গাঢ় দুপুরের আলোয় সে সব কথা
উথালিপাথালি ওড়ে
বানপুকুরের পাড় ধরে উড়ে যায় খাটপুকুরের দিকে
কোনোদিন তারা পাক খায় শহরের এমাথা ওমাথা
তারপর ফিরে আসে
ভিতরের ঘরে
এখানে চালও নেই, চুলোও নেই, সেখানে শুধুই
সে আর তার কিছু কথা,কিছু স্বপ্ন হামাগুড়ি
দিয়ে এপাশ ওপাশ করে”

হ্যাঁ,কবিতায় যে শহরের কথা বলা হয়েছে, তা হল পূর্ব মেদিনীপুরের ঐতিহাসিক শহর তাম্রলিপ্ত। এইখানে মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায় কবিতার বন্দর, মনের মালপত্র এইখানেই হিউয়েং সাংএর হাতে সঁপে দেবেন বলে ঘুরে বেড়ান সাদা পাজামা আর ফতুয়া পরে…
দিনরাত, রাতদিন।

আচ্ছা এই মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায় বললেন,কিছু কথা, কিছু স্বপ্ন, এইগুলো কেমন করে হামাগুড়ি দিয়ে পাঠকের বুকের মধ্যে সেঁধিয়ে গিয়ে তুমুল বেগে দৌড়াদৌড়ি করছে, একটু দেখে নিই,

এক

“বহু পুরাতন পয়ারের গায়ে যেখানে পড়েছে ধুলো
দিন শেষ করে সবে সাঁঝবেলা তরুণ সেখানে শুনলো”

দুই

“এমন করেই দিন কেটে যায়,উদাস হাওয়ায়
একলা একা বাঁচতে হবে তীব্র চাওয়ায়।’

তিন

” সহজ ছিল না আস্থা রাখা অপরিসীমে
তাই একা একা ভিজেছি হিমে ”

চার

“নদীর জলে নৌকা ভাসে
চোখের জলে তুমি
বুকের ভিতর বাড়ছে ব্যথার
নিবিড় মরুভূমি ”

পাঁচ

“রৌদ্র গন্ধ মেখে শুয়ে আছে নিঃসঙ্গ বিছানা
কেউ নেই তার বুকে আদরে সোহাগে
সে একা শুয়ে আছে একার ভিতরে”

আহ্ কী জ্যোৎস্নাধৌত অনুভব,” সে একা শুয়ে আছে একার ভিতরে ”
এ যেন কবি মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নিজের আয়না।তাই কবিকে অনায়াসে মৌরিফুলের কবি বলা যায়,মৌরিফুল যেমন সুগন্ধি ও সুস্বাদে ফুটে থাকে ছোট্ট ছোট্ট মাটিজুড়ে,তেমনই মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা সেইরকম মন ও মননের মাটি জুড়ে বিন্দু বিন্দু বোধশব্দ হয়ে জেগে থাকে।
তাই তিনি মৌরিফুলের কবি।
এমন একজন প্রেমের গভীরতা ও পেয় হয়ে ওঠানো অক্ষরকর্মীকে কবি মৃদুল দাশগুপ্ত বলেন

“আমার বন্ধু মল্লিনাথ মরিয়া জীবনযুদ্ধে সেই কিশোর বয়স থেকে সে লিখ চলেছে।এমনকি নিজের দিকে ভ্রূক্ষেপ না করে,চারিদিকে তাকিয়ে ”

কবি শ্যামলকান্তি দাশ বলেন,

“শত দুঃখের মধ্যেও কবিতা থেকে মল্লিনাথ সরে যায়নি।অনেক উৎকৃষ্ট কবিতা লিখেছে সে।কবিতাই এখন হয়তো তার সহায়,সম্বল।একমাত্র আশ্রয়। ”

কবি সত্যপ্রিয় মুখোপাধ্যায় লিখলেন,

“প্রায় ৪৫ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন কবিতা লিখে চলছেন মল্লিনাথ। গৃহশিক্ষকতার সামান্য অর্থকে সম্বল করে শুধু কবিতাকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থেকেছেন।কলেজ জীবনে এক সহপাঠিনীর প্রেমে ভেসে গিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধ বাবা ও অবিবাহিতা বোনকে নিয়ে সারাজীবন কাটিয়ে দিলেন,সেও কবিতাকে ভালোবাসেই”

সহদেব প্রধান শ্রদ্ধার সঙ্গে লিখেছেন,

“সমস্ত উচ্চাশা লোভ খ্যাতি সংবরণ করে শুধু কবিতার জন্য দারিদ্র্যের কণ্টকাকীর্ণ রুগ্ন অথচ মর্যাদার পথ বেছে নেওয়া,এ লড়াইটা সবাই লড়তে পারে না,তাই সাধারণ হয়েও কবি মল্লিনাথ অসাধারণ। ”

তাই বোধহয় মৌরিফুলের কবি মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায় এভাবে লিখতে পারবেন,

“তুমি তো কতই সহজে
গিয়েছ ভুলে
নির্জন সেই হঠাৎ প্রেমের হাওয়া
তোমাকে সাজানো
অনামা রঙিন ফুলে
সারাটা দুপুর, তোমাকেই শুধু চাওয়া।”

এখন যদি আমরা এই রকম মৌরিফুলের কবির সুগন্ধি ও সৌন্দর্য না চিনতে শিখি, না বুঝতে শিখি,তাহলে আমাদের প্রেমে পড়ার অর্থ কী?
আমাদের ভালোবাসা প্রকাশের অন্ধত্ব ও অন্ধকার দূর হবে কী করে?
আপনি যা ভেবেছেন,প্রেমের প্রতি, নিজের প্রেমিকার প্রতি,আবার অপরদিকের ক্ষেত্রেও তাই সত্য, তা কিন্তু অর্ধ,অসম্পূর্ণ এবং অবয়বহীন।
তাকে সুন্দর ও সাবলীল করতে হলে প্রেমের কবিতা পড়তে হবে এবং অবশ্যই মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায়কে পড়তে হবে।
আপনি কবিতা চর্চা করেন,আপনাকে আরও বেশি করে পড়তে হবে। হবেই।
তাহলে মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায়কে, যিনি মৌরিফুলের কবি তাঁকে পাবেন কীভাবে?
একটা উপায়,আপনি সোজা তমুলক চলে যান,সেখানে মাতা বর্গভীমার দর্শন করে রাস্তায় যাকে হোক জিজ্ঞেস করবেন, মৌরিফুলের কবিকে কোথায় পাওয়া যাবে?
কেউ না কেউ বলেই দেবেন।
আপনি দেখা করে নেবেন,কবিতাও শুনে নেবেন।
তারপর হয়তো আপনি সরাসরি কবি মল্লিনাথকেই না চিনেই জিজ্ঞেস করে বসলেন, তখন উত্তর একটু দেরিতে পাবেন।
তার কারণ আমি ভাঙব না!
আপনি নিজে অনুসন্ধান করুন।
উপায় দুই, একজন নবীন কবি আছেন,তাঁর নাম অরিন্দম প্রধান,নাটক তাঁর প্যাসন,কবিতা তাঁর প্রাণ। তিনি আবার সম্পর্কের কবিতায় অসাধারণ অনুভাবী, তিনি একটি দরজা তৈরি করেছেন।
তাঁর কাছে গিয়ে সবিনয়ে বলুন,কবিবর, একটু মৌরিফুলের কবির দরজাটা খুলে দেবেন?
অবশ্যই খুলে দেবেন,কারণ অরিন্দম প্রধান নিজেই তো মল্লিনাথ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে লিখেছেন,

“হে প্রেম,ক্ষুধা নিবৃত্ত করো
ছাইটুকু ফেলে দিয়ে শুষে নাও শব্দের হাড়
মানুষ আগুন ধরানো এক ঋতু পাখি
রঙের ঝোলা
পুড়ে যাওয়া প্রেম থেকে বেরিয়ে আসে
জীবনের সুতো ”
সেই সময়
আপনি সরাসরি মল্লিনাথে প্রবেশ করতে পারবেন এবং মল্লিনাথ সঙ্গে সঙ্গে মৌরিফুলের মতো বলে উঠবেন,

“দৃশ্যত তোমার মুখোমুখি হই না
অথচ
আমাদের দেখা শোনা হচ্ছে প্রতিদিন ”

—————————-//———————–

নির্জন কবি মল্লিনাথ
সম্পাদনা। অরিন্দম প্রধান
প্রচ্ছদ। অঙ্কন মাইতি
প্রকাশ। লিপি
মূল্য। ২৫০ টাকা

ওহ্ একটা কথা বলার ছিল,এটা ঠিক আলোচনা নয়,যাঁরা মৌরিফুলের কবির কোনোদিন ছবি দেখেন অথবা সামনাসামনি হননি,তিনি অনায়াসে কবি ও শিল্পী অঙ্কন মাইতির অপূর্ব আলো দিয়ে আঁকা ছবিটি দেখুন,মুগ্ধ হবেনই।
লিপি প্রকাশনার কর্ণধার কবি গৌতম ভট্টাচার্য এতো মনোহর মুদ্রণ ও অসাধারণ প্রোডাকশন করেছে যে,মল্লিনাথ নামক মৌরিফুলের কবির ঘ্রান ও ঘনত্ব ধারণা করতে কোনোরূপ কষ্ট ও কাঠিন্য মনে হয় না!

Share This
Categories
নারী কথা রিভিউ

প্রাণে প্রাণে যে প্রদীপ জ্বলে : জয়তী ধর পাল।

একই বৃন্তে যেমন দুটি কুসুম ফুটে ওঠে , তেমনি একটি মহীরূহকে আশ্রয় করে রচিত হয়েছে দুটি সাহিত্যকুসুম। মহীরূহটি অবিভক্ত মেদিনীপুরের জনপ্রিয় গান্ধিবাদী নেতা শ্রী কুমারচন্দ্র জানা , আর সাহিত্যকুসুম দুটির একটি উপন্যাস ‘মাটিমাখা মহাপ্রাণ’ , অপরটি নাটক ‘সুতাহাটার গান্ধি’।
শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন , নাটকে লোকশিক্ষে হয়। এই লোকশিক্ষে যথার্থ না হলে , স্বাধীন দেশেও আমরা পরাধীন থাকব। আর তাই স্বাধীনতার স্বপ্ন আমাদের যারা দেখিয়েছিলেন তাদের অন্যতম পুরোধা দেশমিত্র কুমারচন্দ্র জানাকে আশ্রয় করে কবি শুভ্রাশ্রী মাইতি লিখেছেন নাটক ‘সুতাহাটার গান্ধি’ , যে নাটক আমাদের স্বাধীনতার যথার্থ চালচিত্রের সাথে পরিচিত করায় আলোর কলমে।
কুমারচন্দ্র জানার ব্যক্তিগত জীবন আর স্বাধীনতার সংগ্রামের বিস্তৃত প্রেক্ষাপটকে নাট্যকার খুব অল্প পরিসরে এই পাঁচ অঙ্কের নাটকে জীবন্ত করে তুলেছেন এক অসাধারণ দক্ষতায়। সময়ের প্রতীক হিসাবে গায়ে সাদা কাপড় জড়ানো চরিত্রগুলির ভাষ্য কোরিওগ্রাফির মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান সময়কে বহতা নদীর মতোই উপস্থাপন করেছেন । কোরিওগ্রাফি কোথাও কোথাও মঞ্চে জন্ম দেয় কবিতার…
(অন্ধকার মঞ্চ জুড়ে জোনাকির ছোট ছোট বৃত্ত আলোর নকশা তৈরি করবে তখন। সকলে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকবে সেই দিকে …। আবহ – ও জোনাকি কি সুখে ওই ডানা দুটি মেলেছ…)।
জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের মঞ্চ উপস্থাপনা দর্শক মনে জন্ম দেয় শিহরনের…
(ঝুঁকে থাকার সময়রূপী সামনের জন সামনের প্লেটে রাখা লাল আবির ছিটিয়ে দেবে চারপাশে। গুলির শব্দ । পেছনের পর্দায় আলোর ঝলকানি, লাল আলো। চিৎকার। আর্তনাদ। সময়রূপী পাঁচজন লাল কাপড়ের বাঁধনে নিজেদের জড়াতে জড়াতে প্রকাশ করবে যন্ত্রণার অভিব্যক্তি ও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে ধীরে ধীরে।)
ছোট্ট কুমার বিদ্যাসাগরের মতো মহাপুরুষদের গল্প হলেও সত্যি কথা পড়তে পড়তে বড় হয়ে ওঠে , অন্যকে শ্রদ্ধা তার ভেতরে এক আলোর জন্ম দেয় , আর সেই আলো হাজার কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়ার সময় বের করার অঙ্গীকারবদ্ধ করে তাঁকে। কুমার তার জীবনের মূলমন্ত্রে ‘ ঠকিলেও , ঠকাইব না ‘ ( যা বইটির প্রচ্ছদে ধ্রুবপদের মতো ব্যবহৃত হয়েছে ) দীক্ষিত করেন তার ছাত্রদের , যারা এই দেশের ভবিষ্যৎ। নাটকে পাই ,
কুমার : তা পারে। তবে একটা কথা মনে রেখো সবসময়- ‘ঠকিলেও ঠকাইব না’। এই দরিদ্র মাস্টারের আর কিছু না হোক , এই কথাটিকে জীবনের ধ্রুবতারা করে তোলো তোমরা।
সকলে : ঠকিলেও ঠকাইব না। ঠকিলেও ঠকাইব না।
তিনি প্রকৃতই একজন আদর্শ শিক্ষক হিসাবে মানুষ গড়ার কারিগরের ভূমিকা নেন তাই বালিগঞ্জ জগবন্ধু ইনস্টিটিউশন এর সভাপতি আশুতোষ চৌধুরী। বলেন,
আশুতোষ : এ একেবারে খাঁটি কথা মুরলীবাবু । কুমারবাবু শুধু পুঁথিপড়া বিদ্যাদিগ্গজ ছাত্র নয় , দেশের জন্য খাঁটি সোনার মানুষ গড়ার কাজে হাত লাগিয়েছেন জোরকদমে। উনি আমাদের স্কুলের সম্পদ।
কুমার অনুভব করেন ‘দেশ মানে শুধু বাহিরমহল নয় , দেশ মানে অন্দরমহলও , আমাদের অন্তরমহলও’। এই উপলব্ধি শ্রদ্ধায় আমাদের মাথা নত করে …
কুমার : মানে শুধু আমাদের , মানে পুরুষজাতির উন্নতি হলেই হবে না , আমাদের অন্তর ছুঁয়ে আছেন যাঁরা , অন্তর তৈরি করছেন যাঁরা , তাঁদেরও তুলে আনতে হবে ঘরের অন্ধকার কোন থেকে। সামিল করতে হবে এই দেশ গঠনের মহাযজ্ঞে।
তাই স্ত্রী চারুশিলার সাথে বিবাহবন্ধনকে নাট্যকার চিহ্নিত করেছেন ‘শ্রী যোগ হল শক্তির সাথে’ বলে।
হিন্দু মুসলমানের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ভালবাসা ফিরে ফিরে এসেছে নাটকটিতে। মুহুরি ভূদেব চক্কোত্তির হুমকির উত্তরে কুমার দৃঢ় স্বরে বলেন,
কুমার : আমাকে ভাঙবেন আপনি কি করে ? আমাকে ভাঙতে গেলে যে এই আশ্রম ভাঙতে হবে। এই দেশ ভাঙতে হবে , ভাঙতে হবে হিন্দু-মুসলমানের ভাই-ভাই সম্পর্ক। তা কি আর আমি হতে দেবো কখনো? তোমরা কি দেবে বলো?
কুমার যখন এ কথা বলেন তখন কুমারের মধ্যে যেন অখন্ড গোটা ভারতকে দেখতে পাই তাই। কুমারনারায়ন তথা কুমারচন্দ্র হয়ে ওঠেন মহম্মদ কুমারচন্দ্র ,
মৌলভী : ( ছুটে এসে বুকে জড়িয়ে ধরেন কুমারকে ) আপনি সাধারণ মানুষ নন কুমারবাবু , আজ আপনি চোখ খুলে দিলেন সবার। আপনাকে প্রণাম। আজ থেকে আপনার আরেক নাম হল মহম্মদ কুমারচন্দ্র ।
সকলে : জয় কুমারচন্দ্রের জয় , মহম্মদ কুমারচন্দ্রের জয়।
নাট্যকার প্রতিটি চরিত্রের মুখে যথাযথ সংলাপ প্রয়োগ করে তাদের করে তুলেছেন জীবন্ত রক্ত মাংসের মানুষ। তারই কয়েকটি নিদর্শন ,
১. মিস্টার স্মিথ : শাট্ আপ , রাস্কেল ! কে চায় টুমাদের সাহায্য ? ব্ল্যাক নিগার কোথাকার । টুমি যে হাসছিলে হামার ড্রেসের কাদা ডেকিয়া… সেটা কি অপমান নয় যথেষ্ট ?
২. গোমস্তা : খালি বিগ্ টক , বিগ বিগ টক্ , তাই না ! বুঝবে একদিন মজা… একটা ছোট জাতকে মাথায় তুলে নাচা…
৩. ফতেমা : (ছুটে এসে কুমারের পায়ে পড়ে কাঁদতে থাকে) দাঠাউর মুই কুন অন্যায় কাম করি নাই গো। প্যাটের জ্বালা নিভাতে , মেয়া লাতির মুখে দুটা অন্ন তুলি দিবার জন্য কাম করিতে চাইছিলি শুধু । এ গেরামে মোর খসমের ভিটাবাড়ি। মুই কখনো এর অমঙ্গল চাইতি পারি?
৪. কুমার : জানি না সূর্য । বুকের মধ্যে কে যেন ডাক দিয়ে যায় বারবার । গাঁয়ের ফকিরবাবার সুর ভেসে আসে কানে । গান্ধিজির গলার স্বর গমগম করে ওঠে, সুরেনবাবুর বক্তৃতায় শিরা-উপশিরায় আগুন ছোটে যেন… আমার বুকের মধ্যে উথাল পাথাল হয় খুব। কান্না দলা পাকিয়ে উঠে গলায়। আমার মা আমার দেশ – সব যেন একাকার হয়ে যায় আমার কাছে।
বেশিরভাগ দৃশ্য শেষ হচ্ছে গানের মধ্যে দিয়ে যা ঘটনা রেশকে দর্শকমনে অনুরণিত করে।
পরানচক স্কুলের মাস্টারমশাই মানসবাবু বলেন,
মানসবাবু : কুমার , তোমার মধ্যে আমি খাঁটি সোনা দেখেছি। আমি চাই তোমার মত ছেলেরা নিজেকে প্রস্তুত করে তুলুক । নিজেকে চিনুক। দেবদূত হয়ে ফিরে আসুক এ পোড়া দেশ গাঁয়ে। মানুষের সামনে আয়না ধরুক , নিজেকে চেনার নিজেকে জানার… আঁধার কেটে যাক সব নতুন দিনের আলোয় …ওই শোনো ফকির বাবা গান ধরেছেন কেমন…
নাটকটিও যেন দর্শকদের সামনে তুলে ধরে এক আয়না, যার মধ্যে প্রতিবিম্বিত হয় আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন।
নাটকের শেষে সময়ের হাত ধরে তৈরি হয়, এক অপূর্ব কবিতা …অপূর্ব আলো… অপূর্ব বন্দনা …অনন্ত …অফুরন্ত…
(সকলে একটি সুন্দর কোরিওগ্রাফিতে মাটিতে হাঁটু ঠেকিয়ে বসবে। প্রদীপজ্বলা হাত বাড়িয়ে থাকবে সামনে… নতুন দিনের আলো একটু একটু করে ছড়িয়ে পড়বে নাটকের মঞ্চেও। )
আবহে বাজবে –
ভেঙেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়
তোমারি হউক জয়…

‘মাটিমাখা মহাপ্রাণ’ এক আলোমাখা উপন্যাস , এ আলো ভোরের সূর্যোদয়ের মতোই আশাবাদী , দুপুরের তেজদীপ্ত গগনের মতোই অগ্নিময় , সন্ধ্যের গোধূলির মতোই স্নিগ্ধ শান্তি বর্ষণকারী।
একজন মহামানবের জীবনের ছবি আঁকতে গিয়ে লেখক শুভঙ্কর দাস যে চালচিত্র রচনা করেছেন …যে স্বদেশী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এঁকেছেন… তাতে সমকালীন দেশ কালকে নিপুন বুনোটে সাজিয়েছেন। লেখনীর অমোঘ আকর্ষণে সময়দেবীর সুতোতে টান পড়েছে , সেই টানে যেমন জীবন্ত হয়ে উঠেছেন বিদ্যাসাগর , গান্ধীজি , বীরেন্দ্র শাসমল , আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র , মদনলাল ধিংড়ার মতো অসামান্য চরিত্ররা , তেমনি বিধবা হররমা পতি বা রমানাথের মত আড়ালে থেকে যাওয়া নিঃস্বার্থ মানুষেরা তাদের আপন মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে আছেন। আর আছেন রবীন্দ্রনাথ , প্রতিটি অধ্যায়ের পথ চলার শুরুতে তাঁর আলোকোজ্জ্বল উদ্ধৃতি নিয়ে পথপ্রদর্শক হয়ে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে লেখকের মনের মাধুরী মিশিয়ে কিছু কাল্পনিক চরিত্র , যারা উপন্যাসটিকে মাটির রূপকথা করে তুলেছে এক আশ্চর্য রূপটানে। যেমন আব্দুল ফকিরের চরিত্রটি বারবার ফিরে ফিরে এসেছে , যে গানে গানে প্রকৃত মানুষ হবার শিক্ষা দেয় , যে বলে ,
‘মনকে বলো , জগতে সবই সুন্দর , কালো এলে আলো করব , আর কান্না এলে পান্না দেখব , এইভাবেতে বাঁচতে চাই…।’
রবীন্দ্রনাথের কথায় , ‘ ঐতিহাসিক উপন্যাসের মূলরস হবে মানবরস ‘। এই উপন্যাসের প্রতিটি অক্ষরে সেই মানবরসের ধারা নদীর মতই বহমান। দেশের জন্য আত্মোৎসর্গের দৃঢ় পণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সন্তানস্নেহ , ভ্রাতৃপ্রেম ,সহধর্মিণীর আত্মত্যাগ , বন্ধুবাৎসল্য , গুরুজনকে শ্রদ্ধার দৃঢ় ভিত্তি প্রস্তরের উপর। কুমারের বাবা গরিব চাষী ঠাকুরদাস একটা ছেঁড়া বইয়ের পাতা নিয়ে ঘোরেন বইটি সংগ্রহের চেষ্টায় , যার জন্য তিনি নিজের সারা বছরের অন্নসংস্থানে চাল বিলিয়ে দিতেও প্রস্তুত। এই উত্তরাধিকারই বহন করেন কুমার। শিশু কুমার ঝড় জলের সারারাত কেঁদে কেঁদে খোঁজে বর্ণপরিচয় , উঠোনকে স্লেট করে লিখে চলে অ আ। কুমারের মা লক্ষ্মীদেবী পানাভর্তি পুকুর পরিষ্কার করে , পুকুরপাড়ে ডাঁই হয়ে ওঠা কচুরিপানা দেখিয়ে বলেন ,
‘এই হচ্ছে দুঃখ কষ্ট আর আঘাত , পুকুর হলো জীবন , এইভাবে এগুলো সরিয়ে আলো আনতে হবে , এগিয়ে যেতে হবে , বুঝলি…’
এমন শিক্ষা যে মায়ের , তাঁর সন্তানই তো হয়ে ওঠেন অন্ধকারে নিমজ্জিত পরাধীন জাতির আলোর দিশারী। স্ত্রী চারুশীলাদেবী স্বামীর জন্য ভাত সাজিয়ে বসে থাকেন , মৃদু হেসে বলেন ,
‘যে অপেক্ষা করতে জানে, সে যার জন্য অপেক্ষা করছে , তার পদধ্বনি শুনতে পায়।’
এরকম সহধর্মিনীকে যিনি পাশে পান , তিনিই তো পারেন… একদিন ঘর ও বাহির মিলে এই দেশকে সোনার দেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতে…। মাস্টারমশাই ক্ষীরোদচন্দ্র কুমারের হাতে ‘আনন্দমঠ’ তুলে দিয়ে বলেন,
‘ মানুষের মতো মানুষ হও , তুমি যেন নিজেই একটা পথ হয়ে উঠতে পারো।’
এইরকম মাস্টারমশায়ের আশীর্বাদ মাথায় নিয়েই কুমারচন্দ্র বন্ধু গঙ্গাধরকে বলে ,
‘ ভাই , আমি ধুলোর মতো হতে চাই , মাড়িয়ে যাক , থুতু ফেলুক , কিন্তু আমি তো জানি , সেই ধুলোতে জল ঢেলে কখনো মূর্তি , কখনো শস্য ফলানো যায় ! এই বিশ্বাস আমার কোনদিন হারাবে না ! ‘
এই মাটিমাখা মহাপ্রাণের ছোঁয়ায় তাই মাটি জাগে , সেইসঙ্গে জাগে মাটিমাখা মানুষগুলো , যাদের কেউ কোনদিন সম্মান করেনি , মানুষ ভাবেনি !
উপন্যাসিক শুভঙ্করের প্রথম পরিচয় তিনি একজন কবি , তাই কবির কলমে উপন্যাসের কাহিনী বর্ণনা কোথাও কোথাও কবিতার ব্যঞ্জনায় হয়ে উঠেছে এক এক টুকরো উজ্জ্বল হীরকখন্ড ! উপন্যাসটি শুরু হয় রবীন্দ্রনাথের উদ্ধৃতির পর কবিতার ব্যঞ্জনায়…
‘চার্চের সুউচ্চ ঘন্টা-তোরণের পেছনে অস্তমিত সূর্য । দেখলে মনে হয় , সুদীর্ঘ ও সুতীব্র অন্ধকার দূর করতে করতে নিজেই তীরবিদ্ধ যোদ্ধার মতো ক্লান্ত , রক্তাক্ত এবং একাকী । সেই চার্চে এখনই ঈশ্বর-বন্দনা শুরু হবে। তার জন্য ঘন্টাধ্বনি হচ্ছে।’
অথবা , বালক কুমারের অধ্যয়নমগ্নতার বর্ণনা…
‘দূর থেকে দেখলে মনে হতো এ যেন সেই তপোবনের একটি খণ্ড দৃশ্য । সেখানে ছিল অপরূপ সবুজ গাছগাছালির সৌন্দর্য , এখানে মাঠের পর মাঠে রোদ মেঘের লুকোচুরি খেলা।
তার মধ্যে একজন একলব্যের মতো সেই রোদ-মেঘকে গুরু কল্পনা করে পড়াশুনা করে চলেছে।’
এইভাবে হাত ধরাধরি করে পাশাপাশি চলে কবিতা আর উপন্যাস …তৈরি করে এক খন্ড মানব ইতিহাস !

আজকের এই দিশেহারা সমাজে নিজেকে দীপ করে জ্বালতে হবে , সেই আলোয় পথ দেখে চলতে হবে … নব প্রাণের আলোয় সমাজকে করতে হবে কলুষমুক্ত। আর সেই জীবনদীপে সলতে পাকানোর কাজটি করে দেয় , কুমারচন্দ্র জানার মত সৎ কর্মযোগী দেশপ্রেমিক সাধক মহামানবদের জীবনীপাঠ। দেশকে ভালো না বাসলে দেশের মানুষকে ভালো না বাসলে কখনোই প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠা যায় না , তাইতো মানবজমিন পতিত রয়ে যায়। এইরকম নাটক , উপন্যাস , কবিতা, গল্প , প্রবন্ধ গ্রন্থ লেখা ও পাঠের মধ্যে দিয়ে সেই মানবজমিনে সোনা ফলানোর আশায় অপেক্ষায় থাকে সময় …

সুতাহাটার গান্ধি
শুভ্রাশ্রী মাইতি
লিপি প্রকাশন

মাটিমাখা মহাপ্রাণ
শুভঙ্কর দাস
লিপি প্রকাশন

Share This
Categories
রিভিউ

সাহিত্যের নিরিখে সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরের এক ঝলক : দিলীপ রায়।

প্রথমেই বলি, এবার ভিন্ন-ভিন্ন স্বাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম যেটা সাহিত্যের নিরিখে ভীষণ প্রাসঙ্গিক !
বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতির আমন্ত্রণে আমার বাংলাদেশ সফর ।
একুশে ফেব্রুয়ারি (২০২৩) ফ্লাইট থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে নেমে সোজা গিয়েছিলাম “আসমান-জমিন” পত্রিকা অফিস উদ্বোধনে । সেখানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৭ বারের সংসদ সদস্য এবং বঙ্গবন্ধুর স্নেহভাজন ছাত্র নেতা শ্রদ্ধেয় আ স ম ফিরোজ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বার্তা সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আয়ুব ভুঁইয়া এবং কলামিস্ট, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক মীর আব্দুল আলীম । স্বল্প পরিসরে সাংবাদিক-সাহিত্যিকদের নিয়ে সুন্দর একটি উচ্চ-মানের অনুষ্ঠান । তারপর সোজা যাই শহীদ মিনার । সেখানে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করি । এটা ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধাঞ্জলি ।
বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতি একটি সমৃদ্ধশালী সাহিত্য সংগঠন । সংগঠনটি এপার-বাংলা ও ওপার-বাংলার কবি সাহিত্যিকদের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরী করার নিরিখে এবং ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীবন্ধন দৃঢ় করার অভিপ্রায়ে একুশে বইমেলা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে “ভারত-বাংলাদেশ জাতীয় সাহিত্য উৎসব-২০২৩” গত ২২শে ফেব্রুয়ারী (২০২৩) সংঘটিত করলো । যে অনুষ্ঠানের ভারতের পক্ষ থেকে আমি ছিলাম যুগ্ম আহ্বায়ক । সুন্দর একটি উচ্চ-মানের সাহিত্য অনুষ্ঠান । সারাদিন ব্যাপী কবিতা, আবৃত্তি, ছড়া, গান, আলোচনায় অনুষ্ঠানটি সর্বাঙ্গসুন্দর হয়ে উঠেছিল । বাংলাদেশ সরকারের দুইজন গুরুত্বপূর্ণ ক্যাবিনেট মিনিস্টার উপস্থিত ছিলেন । একজন মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ও অন্যজন মাননীয় পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী । অনুষ্ঠানটি ফিতে কেটে উদ্বোধন করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য মোঃ আখতারুজ্জামান । সারাদিন অনুষ্ঠানের মাঝে একান্ত কাছে পেয়েছিলাম বরিষ্ঠ কবি ও একুশের পদক জয়ী অসীম সাহা, শিশু সাহিত্যিক ও একুশের পদক জয়ী আসলাম সানী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বার্তা সম্পাদক আয়ুব ভুঁইয়া ও বাংলা একাদেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনকে । পরে দেখা হয়েছিল ভ্রাতৃসম জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক ড. মাসুদ পথিকের সাথে । সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ভ্রাতৃসম আবু হানিফ হৃদয় । উল্লেখ থাকে যে, ভারত থেকে আমরা যথেষ্ট সংখ্যায় কবি, লেখক, বাচিক শিল্পী, সাহিত্যিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম । তাঁদের মধ্যে অন্যতম ড. রামপদ বিশ্বাস, পার্থসারথি ঝা, দিলীপ কুমার প্রামাণিক, বুলু রায়, সুমিতা পয়ড়্যা, নন্দিনী লাহা, প্রমুখ । এই ধরনের বরিষ্ঠ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে এবং যথোপযুক্ত সম্মান পেয়ে আমি “নারায়নগঞ্জ জেলা সমিতি”এর কাছে নতমস্তকে কৃতজ্ঞ । অনুষ্ঠানটি সফলভাবে পরিচালনার জন্য অনুষ্ঠানের মধ্যমণি ও সদস্য-সচিব মীর আব্দুল আলীমকে (কলামিস্ট, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক) আমার অন্তরের ভালবাসা ও শুভকামনা ।


পরেরদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভুলতায় অবস্থিত আল-রফি হাসপাতাল পরিদর্শন করার পর হাজির ছিলাম “ব্রাইট শিশু কানন হাই স্কুল” এর অনুষ্ঠানে । অনুষ্ঠানটি সংঘটিত হয়েছিল নগরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে । শিশুদের নাচ-গান সহ হৃদয়গ্রাহী একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । এক কথায় বাচ্চাদের সুন্দর একটি মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান । এখানে রাসেল আহমেদ (সাংবাদিক) ভাইয়ের আতিথেয়তা ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক । ১৩টি রসনা তৃপ্ত দেশি মাছের ডিস দিয়ে দুপুরের আহারের ব্যবস্থা, একটি চরম পাওয়া । পরেরদিন সকালে পৌঁছালাম “রক্তের বন্ধন ফাউন্ডেশন” প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক অনুষ্ঠানে । এই প্রতিষ্ঠানটি সমাজের হিতার্থে রাত-দিন সমানে কাজ করে চলেছে । এইজন্য রক্ত-যোদ্ধাদের আমার হার্দিক অভিনন্দন । রক্ত-যোদ্ধাদের অনুষ্ঠানটি শেষ হওয়ার সাথে সাথে ছুটলাম “দৈনিক দিন প্রতিদিন” পত্রিকার বার্ষিক অনুষ্ঠানে । বাংলাদেশের বরিষ্ঠ সাংবাদিকরা সেখানে হাজির ছিলেন । সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলতে গিয়ে আমি বললাম, “আপনারা অর্থাৎ সাংবাদিকেরাই পারেন দেশ উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা নিতে ।“ সুন্দর একটি অনুষ্ঠানের সাক্ষী রইলাম । শেষদিন হাজির ছিলাম “রূপগঞ্জ সাহিত্য পরিষদ” আয়োজিত দুই বাংলার সাহিত্য সম্মেলনে । সেখানে অনেক গুণী কবি-সাহিত্যিকেরা উপস্থিত ছিলেন । এছাড়া ছিল বন্ধুবর মীর আব্দুল আলীমের বাড়িতে স্বল্প সময়ের জন্য আতিথেয়তা গ্রহণ !
পরিশেষে ভারতের কথা সাহিত্যিক হিসাবে আমার উপলব্ধি, “বাংলাদেশ সফরের ফলে দুই দেশের মানুষের ভালবাসার বাঁধন আরও মজবুত হলো ।“

Share This