পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্র দর্শনের নাম এলেই সবার আগে মনে পড়ে দীঘা-র কথা। কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত এই সমুদ্রসৈকত শহর বছরের সবসময়ই জনপ্রিয়, তবে দুর্গাপুজোর ছুটিতে দীঘার আবহ থাকে একেবারে অন্যরকম।
🏖️ দীঘার সমুদ্রসৈকত – প্রকৃতির খোলা রূপ
দীঘার মূল আকর্ষণ হল তার দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত।
- ওল্ড দীঘা: এখানকার পাথরের বাঁধে বসে ঢেউয়ের শব্দ শোনা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
- নিউ দীঘা: এখানে রয়েছে প্রশস্ত বালুকাবেলা, যা হাঁটাহাঁটির জন্য আদর্শ। সন্ধ্যায় পুরো সৈকত ভরে ওঠে আলো, দোকান ও মানুষের ভিড়ে।
🪔 পুজোর ছুটিতে দীঘা – উৎসবের বাড়তি রঙ
পুজোর সময় দীঘায় পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে যায়।
- অনেক হোটেল ও রিসর্ট বিশেষ আলোকসজ্জা করে।
- সৈকতে প্যান্ডেলও তৈরি হয়, যেখানে ঢাকের বাজনা, ধুনুচি নাচ হয়।
- পর্যটক ও স্থানীয় মানুষ মিলে একসাথে পুজোর আনন্দ উপভোগ করে।
🚶 কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান
পুজোর ছুটিতে শুধুই সমুদ্র নয়, দীঘার আশেপাশের কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখা যায় –
- উদয়পুর সৈকত: নিরিবিলি পরিবেশ ও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আদর্শ।
- শঙ্করপুর: এখানে রয়েছে মৎস্যবন্দর ও নির্জন সৈকত।
- তাজপুর ও মন্দারমণি: যারা আরও কিছুটা দূরে যেতে চান তাদের জন্য এই সৈকতগুলো দারুণ পছন্দ।
- আমরাবতী পার্ক: শিশুদের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা।
- সায়েন্স সেন্টার: বিজ্ঞানপ্রেমীদের জন্য ছোট কিন্তু ইন্টারেস্টিং প্রদর্শনী।
🍤 দীঘার খাবার
সমুদ্রতীরের শহরে এসে সি-ফুড না খেলে ভ্রমণ সম্পূর্ণ হয় না।
- কাঁকড়া, প্রন, পোমফ্রেট – সবই তাজা ও সুস্বাদু।
- রাস্তার ধারে ভাজা মাছ, পকোড়া ও আইসক্রিমও সমান জনপ্রিয়।
🛍️ কেনাকাটা
দীঘার সৈকতের পাশে ছোট দোকানগুলোতে পাওয়া যায় –
- ঝিনুক ও শাঁখের তৈরি জিনিস
- বাঁশ ও কাঠের হস্তশিল্প
- শাড়ি, গামছা ও ছোট ছোট স্মারক
🚆 কিভাবে পৌঁছবেন
- ট্রেন: হাওড়া থেকে সরাসরি দীঘার ট্রেন চলে।
- রাস্তায়: কলকাতা থেকে প্রায় ৪-৫ ঘণ্টার ড্রাইভ (NH-116B)।
- পুজোর সময় আগে থেকে হোটেল বুক করে রাখা জরুরি, কারণ ভিড় অনেক বেড়ে যায়।
❤️ উপসংহার
দীঘা শুধুই সমুদ্র দেখার জায়গা নয় – এটি এক আবেগ, এক স্মৃতি। দুর্গাপুজোর ছুটিতে এখানে বেড়াতে গেলে পরিবার, বন্ধু বা প্রিয়জনের সঙ্গে এক অমলিন সময় কাটানো যায়। ঢেউয়ের শব্দ, ঠান্ডা হাওয়া, বালুকাবেলার হাঁটাহাঁটি আর সুস্বাদু সি-ফুড – সব মিলিয়ে দীঘা হল পুজোর ছুটির জন্য একদম পারফেক্ট গন্তব্য।