ব্রিটেনের রানীর স্বেচ্ছায় আয়কর দেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ২৭ নভেম্বর, ১৯৯২-এ, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ আয়কর দিতে শুরু করেন, ভবিষ্যতের রাজাদের জন্য একটি নজির স্থাপন করেন ।
১৯৯২ সালের আগে, ব্রিটিশ রাজা আয়কর প্রদান থেকে অব্যাহতি পেয়েছিলেন। যাইহোক, পরিবর্তিত সময়ের সাথে এবং ক্রমবর্ধমান জনসাধারণের যাচাই-বাছাইয়ের সাথে, রানী স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার দিকে একটি স্বেচ্ছামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এই সিদ্ধান্তকে রাজতন্ত্রের আধুনিকীকরণ এবং এটিকে সাধারণ মানুষের কাছে আরও সম্পর্কযুক্ত করার একটি পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হয়েছিল।
রানীর ব্যক্তিগত আয়, যার মধ্যে রয়েছে ডুচি অফ ল্যাঙ্কাস্টার থেকে রাজস্ব, একটি ব্যক্তিগত সম্পত্তি যেটি শতাব্দী ধরে রাজপরিবারে রয়েছে, আয়কর ² সাপেক্ষে। উপরন্তু, রানী তার ব্যক্তিগত ক্রয়ের উপর মূলধন লাভ কর এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রদান করে।
আয়কর প্রদানের সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র একটি প্রতীকী অঙ্গভঙ্গি ছিল না; এটা উল্লেখযোগ্য আর্থিক প্রভাব ছিল. রানীর ট্যাক্স পেমেন্ট যথেষ্ট, অনুমান অনুযায়ী তিনি বছরে প্রায় £25-30 মিলিয়ন ট্যাক্স প্রদান করেন।
আয়কর দেওয়ার জন্য রানীর সিদ্ধান্ত রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্যও নজির স্থাপন করেছে। প্রিন্স চার্লস, প্রিন্স অফ ওয়েলস, তার ব্যক্তিগত আয়ের উপরও আয়কর প্রদান করেন, যার মধ্যে ডাচি অফ কর্নওয়ালের রাজস্ব অন্তর্ভুক্ত ।
উপসংহারে, ব্রিটেনের রানীর স্বেচ্ছায় আয়কর দেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই সিদ্ধান্তটি ভবিষ্যতের রাজাদের জন্য একটি নজির স্থাপন করেছে এবং রাজতন্ত্রের আধুনিকীকরণে সাহায্য করেছে, এটিকে সাধারণ মানুষের সাথে আরও সম্পর্কযুক্ত করে তুলেছে।
রাজপরিবারের অর্থব্যবস্থা–
রাজপরিবারের অর্থসংস্থান জটিল এবং বহুমুখী। রানীর ব্যক্তিগত আয় সার্বভৌম অনুদান দ্বারা পরিপূরক হয়, যা ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বার্ষিক অনুদান রানীর দাপ্তরিক দায়িত্ব ও কার্যক্রমের জন্য তহবিল ।
সার্বভৌম অনুদান ক্রাউন এস্টেটের মুনাফা দ্বারা অর্থায়ন করা হয়, সম্পত্তি এবং বিনিয়োগের একটি বিশাল পোর্টফোলিও যা রাজার অন্তর্গত কিন্তু একটি পৃথক সত্তা দ্বারা পরিচালিত হয়। ক্রাউন এস্টেটের মুনাফা যথেষ্ট, অনুমান অনুসারে এটি বার্ষিক £200-300 মিলিয়ন উত্পন্ন করে।
কর এবং রাজপরিবার—
রাজপরিবারের কর ব্যবস্থাগুলি অনন্য এবং বছরের পর বছর ধরে অনেক বিতর্ক ও বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রানী এবং রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের ব্যক্তিগত আয়ের উপর আয়কর প্রদান করলেও, তারা কাউন্সিল ট্যাক্স এবং স্ট্যাম্প ডিউটি এর মতো অন্যান্য ধরনের কর প্রদান থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত।
রাজপরিবারের কর ব্যবস্থাগুলি সময়ের সাথে বিকশিত নিয়ম এবং নিয়মগুলির একটি জটিল সেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যদিও রানীর স্বেচ্ছায় আয়কর প্রদানের সিদ্ধান্ত স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বাড়াতে সাহায্য করেছে, রাজপরিবারের কর ব্যবস্থাকে ঘিরে এখনও অনেক বিতর্ক ও বিতর্ক রয়েছে।
উপসংহার–
উপসংহারে, ব্রিটেনের রানীর স্বেচ্ছায় আয়কর দেওয়ার সিদ্ধান্ত ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই সিদ্ধান্তটি ভবিষ্যতের রাজাদের জন্য একটি নজির স্থাপন করেছে এবং রাজতন্ত্রের আধুনিকীকরণে সাহায্য করেছে, এটিকে সাধারণ মানুষের সাথে আরও সম্পর্কযুক্ত করে তুলেছে। রাজপরিবারের অর্থব্যবস্থা জটিল এবং বহুমুখী, এবং তাদের কর ব্যবস্থা অনন্য এবং বছরের পর বছর ধরে অনেক বিতর্ক ও বিতর্কের বিষয়।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
Category: প্রবন্ধ
স্মরণে চীনা মার্শাল আর্ট শিল্পী ব্রুস লী।
ব্রুস ইয়ুন ফান লী (নভেম্বর ২৭, ১৯৪০ – জুলাই ২০, ১৯৭৩) একজন চীনা মার্শাল আর্ট শিল্পী, শিক্ষক, অভিনেতা এবং জিৎ কুন দো নামক নতুন ধরনের মার্শাল আর্ট ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাতা। তার জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিস্কোতে। তাকে সর্বকালের অন্যতম প্রভাবশালী এবং বিখ্যাত মার্শাল আর্ট শিল্পীদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। তার শিক্ষকের নাম ছিলো আয়প (ওয়াই আই পি) ম্যান।
ব্রুস লির জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোতে হলেও গায়ে বইছিল চিনা রক্ত। শৈশব থেকে শুরু করে জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে হংকংয়ে। ছোটবেলা থেকেই তিনি সিনেমা ও টিভিতে শিশু শিল্পী হিসেবে কাজ করেন। বারো বছর বয়সে এক দিন রাস্তার কিছু বখাটে ছেলে শত্রুতাবশত তাঁকে মারধর করে। আর এ ঘটনাটাই আমুলে পাল্টে দেয় তাঁর জীবন, সেই সঙ্গে মার্শাল আর্ট আর বিশ্ব চলচ্চিত্রের ভবিষ্যতও। পরবর্তী সময়ে মনপ্রাণ ঢেলে মার্শাল আর্টে তালিম নেন তিনি। এই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার আয়ু মাত্র পাঁচ বছর। এই শিল্পে যোগ করেন নিজস্ব ধাঁচের কুংফু কৌশল। মার্শাল আর্টের সঙ্গে আরও অনেক শারীরিক কলা জুড়ে দিয়ে তৈরি করেন নতুন আর্ট ‘জিৎ কুনে দো’। নাচে দক্ষ লি ১৮ বছর বয়সে জাতীয় প্রতিযোগিতায় হংকংয়ের ঐতিহ্যবাহী চা-চা নাচের জন্য শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন।
এই জিনিয়াসের মেজাজটা ছিল বেশ কড়া। সে কারণে বেশ কয়েক বার হংকং পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই বাবা-মা তাঁকে পাঠিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্রে । ১৯ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের চায়নাটাউনে আত্মীয়ের রেস্টুরেন্টে কাজ শুরু করেন। ক’দিন বাদেই তিনি ওয়াশিংটনের সিয়াটলে এসে দর্শনশাস্ত্রে পড়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সিয়াটলেই তিনি তাঁর প্রথম কুংফু স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় লি টিভিতে টুকটাক কাজ করতে থাকেন। ক্যালফোনির্য়ার ওকল্যান্ডে তিনি দ্বিতীয় কুংফু স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। টিভিতে কাজ করার সুবাদে তাঁর নামডাক হতে শুরু করে এবং তিনি আস্তে আস্তে হলিউডের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। সেখানে স্ট্যান্টম্যান ও পার্শ্বচরিত্রে কিছু কাজও করেন। সে ভাবে নজর কাড়তে না পারলেও আর্থিক ভাবে লাভবান হন। ফিরে আসেন হংকংয়ে। হংকংয়ে বেশ কয়েকটি ছবি নির্মিত হয় তাঁকে নিয়ে। দ্য বিগ বস (১৯৭১), ফিস্ট অফ ফিউরি (১৯৭২) ও দ্য ওয়ে অব দ্য ড্রাগন (১৯৭২) তার মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। রাতারাতি সর্বত্র হৈ চৈ পড়ে যায় তাঁকে নিয়ে। হলিউডে তাঁকে নিয়ে তৈরি হয় ‘এন্টার দ্য ড্রাগন’ (১৯৭৩)। হলিউডে ব্রুস লি তখন এক সিনেমা দিয়েই বিশাল তারকা।
সারা বিশ্ব যখন কাঁপছে ব্রুস লি জ্বরে, এন্টার দ্য ড্রাগনের প্রিমিয়ারের কিছু দিন আগে হঠাৎ হংকংয়ে মারা যান ব্রুস লি। ১৯৭৩ সালের ২০ জুলাই মাত্র ৩২ বছর বয়সে।
একের পর এক বক্স অফিস কাঁপানো ছবি, মুভিতে নতুনত্বের ছোঁয়া, সর্বোচ্চ দর্শক জনপ্রিয় এই অভিনেতার মাত্র ৩২ বছর বয়সের মৃত্যু কারোর পক্ষেই মেনে নেয়া সম্ভব ছিলো না। তাই স্বভাবতই ব্রুস লির মৃত্যু নিয়ে রয়েছে নানা সন্দেহ এবং বিতর্ক। হঠাৎ করেই ১৯৭৩ সালে একটি চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের সময় ব্রুসলির মস্তিষ্কে প্রদাহ শুরু হয় এবং মস্তিষ্ক ফুলে উঠতে শুরু করে এবং মাথা ব্যথায় কাতর হয়ে যান তিনি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় সেরিব্রাল এডেমা।
ডাক্তারদের সার্বিক চেষ্টায় ব্রুস লি সেই যাত্রায় মস্তিষ্কের সমস্যা থেকে মুক্তি পান কিন্তু সেই মুক্তি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি বরং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মস্তিষ্কের ফোলা কমতে শুরু করলেও আবারো ৬ সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে তা আবার পূর্বের রূপ ধারণ করে। ১৯৭৩ সালের ২০ জুলাই তার সহ-অভিনেত্রী বেটি টিং পেইর কাউলুনের বাড়িতে একটি সিনেমার শুটিং এর আলাপচারিতার উদ্দেশ্যে যান। হঠাৎ করেই তার সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে থাকা অবস্থায় ব্রুসলির মাথা ব্যথা শুরু হয় এবং তাকে ইকুয়াজেসিক নামে একটি পেইন কিলার খেতে দেয়া হয়। পেইনকিলারটি খাওয়ার পর ব্রুস লি ঘুমাতে যান কিন্তু ঘুম থেকে ব্রুস লিকে কোনোভাবেই উঠানো সম্ভব হচ্ছিল না বলে কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তাররা তার জ্ঞান ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও বারবার ব্যর্থ হয় এবং কয়েক ঘন্টা পর ঘোষণা করা হয় যে মার্শাল আর্ট কিংবদন্তী ব্রুস লি মারা গেছেন।
মার্শাল আর্ট কিংবদন্তী ব্রুস লির মৃত্যু নিয়ে অনেকগুলো বিতর্ক থাকলেও কোনো কারণকেই প্রকৃত কারণ হিসেবে ধরা যায় না। তাঁর মৃত্যু রহস্য আজও অমীমাংসিত। কেউ বলে ড্রাগ ওভারডোজ, কেউ বলে বিষ খাওয়ানো হয়েছিল। তবে মৃত্যু নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কের সূত্রপাত হয়। মার্শাল আর্ট জগতের কিংবদন্তী ব্রুস লির অকাল মৃত্যু এখনো পুরো পৃথিবীর কাছে আজও অমীমাংসিত একটি রহস্য হয়েই আছে।
ব্রুসলির সম্পর্কে মজার কয়েকটি তথ্য পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
১। ব্রুস লি চাইনিজ নন! অনেকের ধারণা তার জন্ম চীনে। কিন্তু তার জন্ম হয়েছিলো সানফ্রান্সিসকোতে। বেড়ে ওঠা হংকংয়ে। তার দাদী ছিলেন একজন জার্মান ভদ্রমহিলা।
২। ব্রুস লি অসাধারণ নাচতে পারতেন। ১৯৫৮ সালে তিনি একটি নাচের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়নও হন! তখন মাত্র হাই স্কুলে পড়তেন তিনি। অভিনয়, মার্শাল আর্টের ট্রেইনিংসহ দৈনন্দিন অন্যান্য কাজের বাইরে নাচের অনুশীলনের জন্য আলাদা সময় বের করতেন তিনি।
৩। ব্রুস লি বাতাসের চেয়েও বেশি গতিতে ফাইট করতে পারতেন! এত ক্ষীপ্র গতিতে তিনি হাত চালাতেন যে প্রতিপক্ষ আঘাত প্রতিহত করারও সময় পেত না! ১৯৬২ সালেই একটি ফাইটে তিনি মাত্র ১১ সেকেন্ডে তার প্রতিপক্ষকে পরাজিত করেন। এই ১১ সেকেন্ডে তিনি ১৫ টা ঘুষি আর একটা কিক করেছিলেন বেচারাকে।
৪। তার আসল নাম ছিলো লি-জান-ফান। কিন্তু তার পরিবার তাকে ডাকতো ম সি তুং যার অর্থ যে কখনো স্থির হয়ে বসে থাকতে পারে না। ব্রুস লি জন্মেছিলেন ড্রাগন বর্ষে। এটি প্রতি বারো বছর অন্তর অন্তর আসে। চীনাদের রাশিচক্রে যারা ড্রাগন বর্ষে জন্মায় তাদেরকে খুব ভাগ্যবান ও ক্ষমতার অধিকারী মনে করা হয়। যেহেতু সে ড্রাগন বর্ষে জন্মেছে , একারণে ব্রুস লিকে ছোট্ট ড্রাগন বলেও ডাকা হতো।
৫। দর্শনের বিষয়ে ব্রুস লির ছিল প্রবল আগ্রহ! মার্শাল আর্ট ও অভিনয়ের বাইরে ব্রুস লি আরেকটু কাজে খুব সময় দিতেন। সেটি হচ্ছে ফিলোসফি পড়া ও লেখা। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে তার পড়ার বিষয়ও ছিলো দার্শনিকতা। অনেকে বিভিন্ন বিষয়ে তার কাছে মতামত জানতে চাইতো, এবং তার কথাকে গুরুত্বও দিতো খুব। “দ্যা ওয়ারিয়র উইথইন” নামে ব্রুস লি’র দার্শনিকতার ইতিবৃত্ত নিয়ে একটি অসাধারণ বইও আছে, যেখানে এই বিশ্বকে আরো গভীরভাবে বোঝা ও একটি সফল জীবন গড়ার জন্যে কী করা উচিৎ সে সম্পর্কে বলা হয়েছে।
৬। ব্রুস লি ছিলেন একজন সত্যিকারের শিল্পী! ব্রুস লির নানান দিকে আগ্রহ ছিল। অবসরে তিনি ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন। তাছাড়া কবিতাও লিখতেন তিনি! তার কবিতা সংকলিত হয়েছে “The Tao Of JeetKune Do”-এই বইটিতে। মার্শাল আর্ট আর ফাইটিংয়ের দৃশ্য বেশি আঁকতে পছন্দ করতেন তিনি। তার নিজের সংগ্রহের ২০০০+ বই নিয়ে একটি লাইব্রেরিও আছে। নতুন কিছু পড়তে তার খুবই ভালো লাগতো।
৭। ব্রুস লি ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন না! তিনি এমন এক পরিবারে জন্মেছিলেন যেখানে তার মা ছিলেন একজন ক্যাথলিক ধর্ম বিশ্বাসী। আর বাবা ছিলেন একজন বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। ছোটবেলায় তাকে ক্যাথলিক স্কুলে পাঠানো হলেও এক পর্যায়ে তাকে ধর্ম নিয়ে আর কোনো চাপ দেয়া হয় নি। একবার একটি সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেন, তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী নন।
৮। কিছু কাজ ছিল যা ব্রুস লি একদমই করতে পারতেন না! সাঁতার পারতেন না, পানি দেখলেই তার ভয় করতো। বাইক, গাড়ি কোনোটাই তিনি চালাতে পারতেন না। তার বন্ধুদের মতে, তিনে ছিলেন একজন জঘন্য ড্রাইভার এইজন্য ব্রুস নিজেই মাঝেমধ্যে বন্ধুদের অনুরোধ করতেন তার হয়ে গাড়ি কিংবা বাইক চালানোর জন্যে!
৯। ব্রুস লি’র মৃত্যু নিয়ে এখনো গুঞ্জন চলে।
১০। ব্রুস অসাধারণ একটি উক্তি –
সবসময় নিজস্বতা ধরে রাখো, নিজেকে প্রকাশ করো, নিজের উপর বিশ্বাস রাখো। সফল ব্যক্তিত্ব খুঁজে বেড়ানো আর তাদের নকল করে তাদের মতো হওয়ার চিন্তা বাদ দাও।
ব্রুস লির ২০টি অমিয় বাণী—
ব্রুস লি অবসরে তিনি ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন। মার্শাল আর্ট বা কারাতের দৃশ্য বেশি আঁকতেন তিনি। তার নিজের সংগ্রহের দুই হাজারের বেশি বই নিয়ে একটি লাইব্রেরিও ছিলো। কবিতাও লিখতেন, তার কবিতা রয়েছে তার লেখা ‘টাও অব জিত কুনে দু’ বা মার্শাল আর্টের কৌশল বইটিতে। এ বইয়ের কিছু কথা এখানে সংকলিত হলো-
১. ঘুসি বা লাথি মেরে কখনো জেতা যায় না।
২. টেলিস্কোপের চেয়ে চোখের জল দিয়েই মানুষ বেশিদূর দেখতে পায়।
৩. জ্ঞান মাত্রই নিজেকে জানা।
৪. পালাবে না, দৌড়াও।
৫. আমি খালি গা থাকতেই পছন্দ করি। মানুষ কাপড় পরে একে অপরকে মুগ্ধ করার জন্য।
৬. সুখি হও, কিন্তু অল্প সাফল্যে আত্মতুষ্টিতে ভুগো না।
৭. জ্ঞান তোমাকে শক্তি দেবে, কিন্তু সম্মান পেতে হলে দরকার ভালো চরিত্র।
৮. লক্ষ্য থাকলেই সেখানে পৌঁছে যেতে হবে এমন নয়, কখনও লক্ষ্য মানে নিশানা বা তাক করা।
৯. জ্ঞানীর কাছ থেকে বোকা যা শেখে, জ্ঞানী তারচেয়ে বেশি শেখে বোকার প্রশ্ন থেকে।
১০. জ্ঞানই শেষ কথা নয়, জ্ঞানের প্রয়োগ চাই। ইচ্ছাই যথেষ্ট নয়, কাজ করা চাই।
১১. অন্ধকারে হাঁটতে না চাইলে আলো প্রত্যাশা করা যায় না।
১২. পরাজয় মনের ব্যাপার, কেউ-ই পরাজিত নয় যতক্ষণ না সে মন থেকে পরাজয় মেনে নেয়।
১৩. সহজ জীবন চাও কেন? শক্তি চাও যেনো কঠিনকে মোকাবেলা করতে পারো।
১৪. ভুল ক্ষমা করে দেওয়া যায়, যদি তা স্বীকার করে সামনে এগুতে পারো।
১৫. স্বনির্ভরতাই সবচেয়ে বড় শক্তি।
১৬. যদি ভাবতেই থাকো, কাজ করতে পারবে না। জীবনের লক্ষ্যের দিকে প্রতিদিন অন্তত এক পা করে এগোও।
১৭. যদি আগামীকাল ব্যর্থ হতে না চাও, তাহলে আজ সত্যটা বলো।
১৮. সবচেয়ে শক্ত ঠাড়মোড় গাছটাই সবার আগে ভেঙে পড়ে, কিন্তু কঠিন বাতাসেও নিজের নমনীয়তা দিয়ে টিকে থাকতে পারে বাঁশ বা উইলো গাছ।
১৯ খারাপ বা নেতিবাচক চিন্তাকে মনে জায়গা দিও না, এগুলো হলো আগাছা যা তোমার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করবে।
২০. সত্যিকারের বেঁচে থাকা মানে অন্যদের জন্য বেঁচে থাকা।
তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।
বাংলা ও হিন্দি সিনেমার জগতে এক অতি পরিচিত নাম অসিতবরণ মুখোপাধ্যায়। অসিতবরণ পুরো নাম অসিতবরণ মুখোপাধ্যায় একজন বিখ্যাত ভারতীয় বাংলা চলচ্চিত্র অভিনেতা, গায়ক এবং থিয়েটার ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
অসিতাবরণ ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় ১৯১৩ সালের ১৯ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের কাছ থেকে তবলা শেখার পর তিনি কলকাতা বেতারে তবলা বাদক এবং পরে গ্রামোফোন কোম্পানিতে কাজ করেন। তিনি তার সুন্দর কণ্ঠের জন্য মাঝে মাঝে গানও করতেন। নিখিল ভারত সঙ্গীত সম্মেলনে তার তবলা বাজানো শোনার পর, পাহাড়ী সান্যাল তার সাথে কথা বলে এবং তাকে নতুন থিয়েটারে নিয়ে আসে পারফর্ম করার জন্য। তার আগে অবশ্য তবলা-বাজনার সঙ্গে ফিল্ম জগতের সম্পর্ক শুরু হয়।
প্রথম নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন ‘কাশীনাথ’ ছবিতে। হিন্দি ছবি “পরিণীতা” থেকে তিনি নায়ক হিসেবে সারা ভারতে পরিচিতি লাভ করেন এবং “Waps” চলচ্চিত্র থেকে তার জনপ্রিয়তা সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ছবিতে তাঁর কণ্ঠের গান হাম কোচোয়ান, হাম কোচোয়ান তাঁকে রাতারাতি বিখ্যাত করে তোলে। ‘চলচল’, ‘পাঁচতপা’, ‘মা’-এর মতো ছবিতে তাঁর দুর্দান্ত অভিনয় দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায়। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের মহানায়ক উত্তম কুমারের চোখে সেই সময়ে অসিতবরণ ছিলেন ‘আদর্শ নায়ক’। চলচ্চিত্র জগতে তার ডাক নাম ছিল ‘কালোদা’। মঞ্চ অভিনেতা হিসেবেও তার সুনাম ছিল। ‘রাসারঙ্গ’ নামে একটি থিয়েটার দল গঠন করেন। এই দলের মাধ্যমে তিনি শেষ জীবনে শোভাবাজার বি কে পালের বাড়িতে নুতু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে সঙ্গীত আকারে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের জীবন কাহিনী পরিবেশন করতেন। তিনি ঠাকুরের আখ্যান পরিবেশন করতেন। মাত্র চার বছরে টানা তিনটি সুপারহিট ছবিতে অসাধারণ গান গেয়ে দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করার বিরল নজির স্থাপন করেন তিনি।
তাঁর অভিনিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের তালিকা সমূহ—-
প্রতিশ্রুতি, ওয়াপস, কাশীনাথ, নার্স, দৃষ্টিদান, সুধার প্রেম’, প্রত্যাবর্তন, পরিণীতা, তিন বাতি চার রাস্তা, মন্ত্রশক্তি, হ্রদ, চলাচল, বন্ধু, আলোর পিপাসা, জোড়াদীঘির চৌধুরীপরিবার, এন্টনী ফিরিঙ্গী, পৃথিবী আমাদের চায়, স্মৃতিটুকু থাক, খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন, ৮০তে আসিওমানুষ না, বাঘবন্দী খেলা, কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী, সূর্যসাক্ষী।
জীবনাবসান—
১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ২৭ শে নভেম্বর এই খ্যাতনামা গায়ক-নায়ক কলকাতায় প্রয়াত হন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে কানাইলাল দত্ত প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। কানাইলাল দত্ত ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
কানাইলাল দত্ত (বাংলা: কানাইলাল দত্ত; ৩০ আগস্ট ১৮৮৮ – ১০ নভেম্বর ১৯০৮) ছিলেন যুগান্তর গ্রুপের অন্তর্গত ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন বিপ্লবী। তিনি পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সাথে, ৩১ আগস্ট ১৯০৮ তারিখে আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল হাসপাতালে ব্রিটিশদের অনুমোদনকারী নরেন্দ্রনাথ গোস্বামীকে হত্যার জন্য ব্রিটিশদের দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হন। সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে ২১ নভেম্বর ১৯০৮-এ মৃত্যু পর্যন্ত ফাঁসি দেওয়া হয়। কানাইল দত্ত পশ্চিমবঙ্গের চন্দন নগরে একটি তাঁতি (তাঁতি) পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা, চুনিলাল দত্ত, বোম্বেতে একজন হিসাবরক্ষক ছিলেন কানাইলালের প্রাথমিক বিদ্যালয় জীবন শুরু হয়েছিল গিরগাঁও আরিয়ান এডুকেশন সোসাইটি স্কুল, বোম্বেতে এবং পরে তিনি চন্দননগরে ফিরে আসেন এবং চন্দননগরের ডুপ্লেক্স কলেজে ভর্তি হন। ১৯০৮ সালে, তিনি হুগলি মহসিন কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, যা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অধিভুক্ত ছিল।
তার প্রথম কলেজের দিনগুলিতে, কানাইলাল চারু চন্দ্র রায়ের সাথে দেখা করেছিলেন, যিনি তাকে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় কানাইলাল দত্ত চন্দননগর গ্রুপ থেকে অগ্রণী ছিলেন। শ্রীশচন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে গন্ডোলপাড়া বিপ্লবী দলের সাথেও তিনি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে তোলেন। ১৯০৮ সালে, তিনি কলকাতায় চলে আসেন এবং কলকাতা ভিত্তিক বিপ্লবী গ্রুপ যুগান্তরে যোগ দেন। কিংসফোর্ডকে হত্যার লক্ষ্যে মুজাফফরপুর বোমা হামলার (৩০ এপ্রিল ১৯০৮) মাত্র দুই দিন পর, ২ মে ১৯০৮ সালে পুলিশ বাংলায় বেশ কয়েকজন বিপ্লবীকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে। ৩৩ জন বিপ্লবীর বিরুদ্ধে সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর অভিযোগ আনা হয়। কানাইলাল দত্ত তাদের একজন ছিলেন। এই ব্যক্তি, যারা ২ মে ১৯০৮-এ গ্রেফতার হয়ে আলিপুর জেলে আটক ছিলেন।
১৯০৮ সালের ২ মে কলকাতার ৩২ মুরারি পুকুর রোডে পুলিশ প্রাঙ্গণে অভিযান চালায় এবং একটি বোমা-ফ্যাক্টরি আবিষ্কৃত হয় যেমন অস্ত্রের মজুত, প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ, বোমা, ডেটোনেটর এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ছিল। তারা বিপ্লবী সাহিত্যও বাজেয়াপ্ত করে। সারা বাংলা ও বিহার জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে এবং আরও আটক করা হচ্ছে। অরবিন্দ ঘোষ, বারীন্দ্র কুমার ঘোষ, উল্লাসকর দত্ত, ইন্দু ভূষণ রায়সহ আরও অনেকে গ্রেফতার হন। এই সময়ে একজন বন্দী, নরেন্দ্রনাথ গোস্বামী (ওরফে নরেন্দ্র নাথ গোসাইন), ব্রিটিশদের অনুমোদনকারী হয়ে ওঠেন এবং পুলিশের কাছে অনেক ব্যক্তির নাম প্রকাশ করতে শুরু করেন, যার ফলে আরও গ্রেপ্তার করা হয়।
গোস্বামী ছিলেন চন্দননগরের কাছে শ্রীরামপুরের বাসিন্দা। তিনি বিপ্লবীদের সমস্ত পরিকল্পনা ও তৎপরতা জানতেন। সাক্ষী বাক্সে উপস্থিত হয়ে তিনি তার অনেক প্রাক্তন সহকর্মীর নাম উল্লেখ করে ফাঁসানো শুরু করেন। বারীন ঘোষ, শান্তি ঘোষ এবং উল্লাসকর দত্তের নাম ১৯০৮ সালে চন্দরনাগর স্টেশনে গভর্নরের ট্রেন উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টায় উল্লেখ করা হয়েছিল; মেয়রের বাড়িতে বোমা হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি চন্দননগরের বিপ্লবী দলের নেতা চারু চন্দ্র রায়ের নাম উল্লেখ করেন; এবং ২৪ জুন বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত অরবিন্দ ঘোষ এবং সুবোধ চন্দ্র মল্লিকের নাম উল্লেখ করেন।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
সুনীতি দেবী ছিলেন ব্রিটিশ ভারতীয় রাজ্য কোচবিহারের রানী। তাঁর নিজের শহর কোচবিহারের একটি রাস্তা তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে, সুনি রোড। সুনীতি দেবী (সেপ্টেম্বর ৩০, ১৮৬৪ – ১০ নভেম্বর, ১৯৩২) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতীয় রাজ্য কোচবিহারের রানী। তাঁর নিজের শহর কোচবিহারের একটি রাস্তা তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে, সুনি রোড।
প্রাথমিক জীবন—
সুনীতি দেবীর পিতা ছিলেন কেশবচন্দ্র সেন, যিনি ব্রাহ্মধর্মের একজন বিখ্যাত প্রচারক। ১৮৭৮ সালে, তিনি ১৪ বছর বয়সে কোচবিহারের রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সুনীতি দেবী বিয়ের দুই বছর তার পিতামাতার বাড়িতে ছিলেন, কারণ তার স্বামী বিয়ের পরপরই উচ্চ শিক্ষার জন্য লন্ডন চলে যান। তিনি ভারতের প্রথম মহিলা যিনি ‘সিআইই’ খেতাব অর্জন করেছেন। তিনি সাহিত্য রচনা করেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম হল অমৃতবিন্দু (২ খণ্ড), কথাকতার গান এবং সতী (গীতিনাট্য)।
কর্মজীবন—
১৮৮৭ সালে তার স্বামী নৃপেন্দ্র নারায়ণকে GCIE পুরস্কৃত করা হয় এবং তিনি CIE উপাধি লাভ করেন। সুনীতি দেবী প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি সিআইই পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ১৮৯৮ সালে রানী ভিক্টোরিয়ার হীরক জয়ন্তী উদযাপন এবং পরে দিল্লি দরবারের স্বামী কোচবিহারের মহারাজায় যোগদান করেন। তিনি তার বোন সুচারু দেবীর সাথে তাদের মার্জিত পোশাকের জন্য পরিচিত ছিলেন।
তার স্বামী ১৮৮১ সালে সুনীতি কলেজ নামে একটি গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় সুনীতি একাডেমি। স্কুল প্রতিষ্ঠার পেছনে ছিলেন সুনীতি দেবী।
তিনি একজন শিক্ষাবিদ এবং হৃদয়ে একজন নারী অধিকার কর্মী ছিলেন, তিনি প্রতিষ্ঠানকে বার্ষিক অনুদান প্রদান করতেন, মহিলা শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি প্রদান থেকে অব্যাহতি দিতেন এবং সফল শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করতেন। তিনি মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আনা-নেওয়ার জন্য প্রাসাদের গাড়ির ব্যবস্থা করেছিলেন। কোনো বিতর্ক এড়াতে আরও একটি প্রয়াসে, তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন যে মেয়েদের স্কুলে যাতায়াতকারী গাড়ির জানালা পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
তিনি তার বোন সুচারু দেবীর সাথে ১৯০৮ সালে দার্জিলিং-এ মহারানী গার্লস হাই স্কুলের ফাউন্ডেশনে অর্থায়ন করেন। তিনি স্টেট কাউন্সিলের সভাপতি এবং অল বেঙ্গল উইমেনস ইউনিয়নের প্রথম সভাপতি ছিলেন এবং অন্যান্য মহিলাদের সাথে কাজ করেছিলেন। চারুলতা মুখোপাধ্যায়, সরোজ নলিনী দত্ত, টি. এবং নেলি এবং তার বোন সুচরা দেবী, ময়ূরভঞ্জের মহারানির মতো বাংলার ডান কর্মী।
তিনি রাঁচিতে ১০ নভেম্বর, ১৯৩১-এ হঠাৎ মারা যান।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
উদয়পুর, হ্রদের শহর, ভারতের রাজস্থানের একটি শ্বাসরুদ্ধকর সুন্দর গন্তব্য। তার অত্যাশ্চর্য স্থাপত্য, নির্মল হ্রদ এবং প্রাণবন্ত সংস্কৃতির জন্য পরিচিত, উদয়পুর যেকোন ভ্রমণকারীর জন্য অবশ্যই একটি দর্শনীয় স্থান। এই নিবন্ধে, আমরা আপনাকে শহরের রাজকীয় প্রাসাদ, শান্ত হ্রদ এবং রঙিন বাজারের মধ্য দিয়ে ভ্রমণে নিয়ে যাব।
*১ম দিন: আগমন এবং অনুসন্ধান*
উদয়পুরে পৌঁছানোর সাথে সাথে শহরের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হলাম। মহিমান্বিত আরাবল্লী পাহাড় শহরটিকে ঘিরে রয়েছে এবং শান্ত হ্রদ পিচোলা এর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। আমার হোটেলে চেক করার পরে, আমি শহরটি ঘুরে দেখতে বের হলাম।
আমার প্রথম স্টপ ছিল সিটি প্যালেস, প্রাসাদ এবং বাগানগুলির একটি দুর্দান্ত কমপ্লেক্স যা মেওয়ারের মহারানাদের রাজকীয় বাসস্থান হিসাবে কাজ করেছিল। প্রাসাদের জটিল স্থাপত্য, অত্যাশ্চর্য ফ্রেস্কো এবং নিদর্শনগুলির চিত্তাকর্ষক সংগ্রহ আমাকে বিস্মিত করেছে।
এরপরে, আমি পিচোলা লেকে নৌকায় চড়ে, জলের উপরে সূর্যাস্ত দেখলাম। হ্রদের নির্মল পরিবেশ এবং শহরের মনোরম স্কাইলাইন একটি জাদুকরী অভিজ্ঞতার জন্য তৈরি।
*২য় দিন: উদয়পুরের লুকানো রত্ন আবিষ্কার করা*
আমার দ্বিতীয় দিনে, আমি জগদীশ মন্দির পরিদর্শন করেছি, একটি সুন্দর হিন্দু মন্দির যা ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে নিবেদিত। মন্দিরের জটিল খোদাই এবং অত্যাশ্চর্য স্থাপত্য আমাকে মুগ্ধ করেছিল।
এরপরে, আমি সহেলিয়ন কি বাড়ি ঘুরে দেখলাম, রানী এবং তার মহিলাদের জন্য অপেক্ষা করা একটি সুন্দর বাগান। বাগানের সবুজ, ঝর্ণা এবং অত্যাশ্চর্য স্থাপত্য এটিকে একটি শান্তিপূর্ণ মরূদ্যান বানিয়েছে।
সন্ধ্যায়, আমি রাজস্থানের প্রাণবন্ত রঙ এবং জটিল হস্তশিল্পের প্রশংসা করে স্থানীয় বাজারের মধ্য দিয়ে ঘুরেছিলাম।
*৩য় দিন: ভ্রমণ এবং প্রস্থান*
আমার শেষ দিনে, আমি মহিমান্বিত সজ্জনগড় প্রাসাদ পরিদর্শন করেছি, শহরকে দেখা একটি পাহাড়ের উপরে। প্রাসাদের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য এবং চিত্তাকর্ষক স্থাপত্য আমাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিল।
আমি মনসুন প্যালেসও পরিদর্শন করেছি, বর্ষার মেঘ দেখার জন্য নির্মিত একটি সুন্দর প্রাসাদ। প্রাসাদটির অত্যাশ্চর্য স্থাপত্য এবং শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য এটিকে একটি অবশ্যই দেখার গন্তব্য করে তুলেছে।
উদয়পুর ত্যাগ করার সাথে সাথে আমি শহরের সৌন্দর্য এবং আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছিলাম। উদয়পুর আমার হৃদয় চুরি করেছে, এবং আমি জানতাম যে আমি শীঘ্রই ফিরে আসব।
*অবশ্যই দর্শনীয় স্থান:*
1. সিটি প্যালেস
2. পিচোলা হ্রদ
3. জগদীশ মন্দির
4. সহেলিওন কি বারি
5. সজ্জনগড় প্রাসাদ
6. বর্ষা প্রাসাদ
7. ফতেহ সাগর লেক
8. সুখদিয়া সার্কেল
*টিপস এবং প্রয়োজনীয়:*
1. ভ্রমণের সেরা সময়: অক্টোবর থেকে মার্চ
2. থাকার ব্যবস্থা: হ্রদের দৃশ্য সহ একটি হোটেল চয়ন করুন
3. পরিবহন: একটি স্থানীয় গাইড বা ট্যাক্সি ভাড়া করুন
4. রন্ধনপ্রণালী: ডাল বাটি চুর্মার মতো ঐতিহ্যবাহী রাজস্থানী খাবার চেষ্টা করুন
5. কেনাকাটা: স্থানীয় হস্তশিল্প, টেক্সটাইল এবং গয়না সন্ধান করুন
*সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা:*
1. একটি ঐতিহ্যবাহী রাজস্থানী লোকনৃত্য পরিবেশন করুন
2. ঐতিহ্যবাহী রাজস্থানী খাবার শিখতে রান্নার ক্লাস নিন
3. প্রাণবন্ত সংস্কৃতির অভিজ্ঞতা নিতে স্থানীয় বাজারগুলিতে যান
*অফবিট অভিজ্ঞতা:*
1. শহরের উপর দিয়ে একটি গরম বাতাস বেলুনে রাইড নিন
2. আরাবল্লী পাহাড়ে ট্রেকিং করতে যান
3. গ্রামীণ রাজস্থান অভিজ্ঞতার জন্য কাছাকাছি গ্রামে যান
*উপসংহার:*
উদয়পুর, হ্রদের শহর, এমন একটি গন্তব্য যা আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করবে। এর অত্যাশ্চর্য স্থাপত্য, নির্মল হ্রদ এবং প্রাণবন্ত সংস্কৃতি এটিকে যে কোনো ভ্রমণকারীর জন্য অবশ্যই একটি দর্শনীয় গন্তব্য করে তোলে। আপনি একজন ইতিহাসপ্রেমী, প্রকৃতি প্রেমী, বা খাদ্য উত্সাহী হোন না কেন, উদয়পুরে সবার জন্য কিছু না কিছু আছে।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে কানাইলাল দত্ত প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। কানাইলাল দত্ত ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
কানাইলাল দত্ত (বাংলা: কানাইলাল দত্ত; ৩০ আগস্ট ১৮৮৮ – ১০ নভেম্বর ১৯০৮) ছিলেন যুগান্তর গ্রুপের অন্তর্গত ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন বিপ্লবী। তিনি পশ্চিমবঙ্গের চন্দননগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সাথে, ৩১ আগস্ট ১৯০৮ তারিখে আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল হাসপাতালে ব্রিটিশদের অনুমোদনকারী নরেন্দ্রনাথ গোস্বামীকে হত্যার জন্য ব্রিটিশদের দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হন। সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে ২১ নভেম্বর ১৯০৮-এ মৃত্যু পর্যন্ত ফাঁসি দেওয়া হয়। কানাইল দত্ত পশ্চিমবঙ্গের চন্দন নগরে একটি তাঁতি (তাঁতি) পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা, চুনিলাল দত্ত, বোম্বেতে একজন হিসাবরক্ষক ছিলেন কানাইলালের প্রাথমিক বিদ্যালয় জীবন শুরু হয়েছিল গিরগাঁও আরিয়ান এডুকেশন সোসাইটি স্কুল, বোম্বেতে এবং পরে তিনি চন্দননগরে ফিরে আসেন এবং চন্দননগরের ডুপ্লেক্স কলেজে ভর্তি হন। ১৯০৮ সালে, তিনি হুগলি মহসিন কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, যা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অধিভুক্ত ছিল।
তার প্রথম কলেজের দিনগুলিতে, কানাইলাল চারু চন্দ্র রায়ের সাথে দেখা করেছিলেন, যিনি তাকে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় কানাইলাল দত্ত চন্দননগর গ্রুপ থেকে অগ্রণী ছিলেন। শ্রীশচন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে গন্ডোলপাড়া বিপ্লবী দলের সাথেও তিনি ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে তোলেন। ১৯০৮ সালে, তিনি কলকাতায় চলে আসেন এবং কলকাতা ভিত্তিক বিপ্লবী গ্রুপ যুগান্তরে যোগ দেন। কিংসফোর্ডকে হত্যার লক্ষ্যে মুজাফফরপুর বোমা হামলার (৩০ এপ্রিল ১৯০৮) মাত্র দুই দিন পর, ২ মে ১৯০৮ সালে পুলিশ বাংলায় বেশ কয়েকজন বিপ্লবীকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে। ৩৩ জন বিপ্লবীর বিরুদ্ধে সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর অভিযোগ আনা হয়। কানাইলাল দত্ত তাদের একজন ছিলেন। এই ব্যক্তি, যারা ২ মে ১৯০৮-এ গ্রেফতার হয়ে আলিপুর জেলে আটক ছিলেন।
১৯০৮ সালের ২ মে কলকাতার ৩২ মুরারি পুকুর রোডে পুলিশ প্রাঙ্গণে অভিযান চালায় এবং একটি বোমা-ফ্যাক্টরি আবিষ্কৃত হয় যেমন অস্ত্রের মজুত, প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ, বোমা, ডেটোনেটর এবং অন্যান্য সরঞ্জাম ছিল। তারা বিপ্লবী সাহিত্যও বাজেয়াপ্ত করে। সারা বাংলা ও বিহার জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে এবং আরও আটক করা হচ্ছে। অরবিন্দ ঘোষ, বারীন্দ্র কুমার ঘোষ, উল্লাসকর দত্ত, ইন্দু ভূষণ রায়সহ আরও অনেকে গ্রেফতার হন। এই সময়ে একজন বন্দী, নরেন্দ্রনাথ গোস্বামী (ওরফে নরেন্দ্র নাথ গোসাইন), ব্রিটিশদের অনুমোদনকারী হয়ে ওঠেন এবং পুলিশের কাছে অনেক ব্যক্তির নাম প্রকাশ করতে শুরু করেন, যার ফলে আরও গ্রেপ্তার করা হয়।
গোস্বামী ছিলেন চন্দননগরের কাছে শ্রীরামপুরের বাসিন্দা। তিনি বিপ্লবীদের সমস্ত পরিকল্পনা ও তৎপরতা জানতেন। সাক্ষী বাক্সে উপস্থিত হয়ে তিনি তার অনেক প্রাক্তন সহকর্মীর নাম উল্লেখ করে ফাঁসানো শুরু করেন। বারীন ঘোষ, শান্তি ঘোষ এবং উল্লাসকর দত্তের নাম ১৯০৮ সালে চন্দরনাগর স্টেশনে গভর্নরের ট্রেন উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টায় উল্লেখ করা হয়েছিল; মেয়রের বাড়িতে বোমা হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি চন্দননগরের বিপ্লবী দলের নেতা চারু চন্দ্র রায়ের নাম উল্লেখ করেন; এবং ২৪ জুন বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত অরবিন্দ ঘোষ এবং সুবোধ চন্দ্র মল্লিকের নাম উল্লেখ করেন।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
সুনীতি দেবী ছিলেন ব্রিটিশ ভারতীয় রাজ্য কোচবিহারের রানী। তাঁর নিজের শহর কোচবিহারের একটি রাস্তা তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে, সুনি রোড। সুনীতি দেবী (সেপ্টেম্বর ৩০, ১৮৬৪ – ১০ নভেম্বর, ১৯৩২) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতীয় রাজ্য কোচবিহারের রানী। তাঁর নিজের শহর কোচবিহারের একটি রাস্তা তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে, সুনি রোড।
প্রাথমিক জীবন—
সুনীতি দেবীর পিতা ছিলেন কেশবচন্দ্র সেন, যিনি ব্রাহ্মধর্মের একজন বিখ্যাত প্রচারক। ১৮৭৮ সালে, তিনি ১৪ বছর বয়সে কোচবিহারের রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সুনীতি দেবী বিয়ের দুই বছর তার পিতামাতার বাড়িতে ছিলেন, কারণ তার স্বামী বিয়ের পরপরই উচ্চ শিক্ষার জন্য লন্ডন চলে যান। তিনি ভারতের প্রথম মহিলা যিনি ‘সিআইই’ খেতাব অর্জন করেছেন। তিনি সাহিত্য রচনা করেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম হল অমৃতবিন্দু (২ খণ্ড), কথাকতার গান এবং সতী (গীতিনাট্য)।
কর্মজীবন—
১৮৮৭ সালে তার স্বামী নৃপেন্দ্র নারায়ণকে GCIE পুরস্কৃত করা হয় এবং তিনি CIE উপাধি লাভ করেন। সুনীতি দেবী প্রথম ভারতীয় মহিলা যিনি সিআইই পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ১৮৯৮ সালে রানী ভিক্টোরিয়ার হীরক জয়ন্তী উদযাপন এবং পরে দিল্লি দরবারের স্বামী কোচবিহারের মহারাজায় যোগদান করেন। তিনি তার বোন সুচারু দেবীর সাথে তাদের মার্জিত পোশাকের জন্য পরিচিত ছিলেন।
তার স্বামী ১৮৮১ সালে সুনীতি কলেজ নামে একটি গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যার নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় সুনীতি একাডেমি। স্কুল প্রতিষ্ঠার পেছনে ছিলেন সুনীতি দেবী।
তিনি একজন শিক্ষাবিদ এবং হৃদয়ে একজন নারী অধিকার কর্মী ছিলেন, তিনি প্রতিষ্ঠানকে বার্ষিক অনুদান প্রদান করতেন, মহিলা শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি প্রদান থেকে অব্যাহতি দিতেন এবং সফল শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করতেন। তিনি মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আনা-নেওয়ার জন্য প্রাসাদের গাড়ির ব্যবস্থা করেছিলেন। কোনো বিতর্ক এড়াতে আরও একটি প্রয়াসে, তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন যে মেয়েদের স্কুলে যাতায়াতকারী গাড়ির জানালা পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
তিনি তার বোন সুচারু দেবীর সাথে ১৯০৮ সালে দার্জিলিং-এ মহারানী গার্লস হাই স্কুলের ফাউন্ডেশনে অর্থায়ন করেন। তিনি স্টেট কাউন্সিলের সভাপতি এবং অল বেঙ্গল উইমেনস ইউনিয়নের প্রথম সভাপতি ছিলেন এবং অন্যান্য মহিলাদের সাথে কাজ করেছিলেন। চারুলতা মুখোপাধ্যায়, সরোজ নলিনী দত্ত, টি. এবং নেলি এবং তার বোন সুচরা দেবী, ময়ূরভঞ্জের মহারানির মতো বাংলার ডান কর্মী।
তিনি রাঁচিতে ১০ নভেম্বর, ১৯৩১-এ হঠাৎ মারা যান।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি (নভেম্বর ১০, ১৮৪৮ – ৬ আগস্ট, ১৯২৫) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম দিকের একজন বিশিষ্ট নেতা। তিনি ১৯ শতকের রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। পরে তিনি এই দলের সঙ্গে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। তিনি রাষ্ট্রগুরু সম্মানে ভূষিত হন।
পারিবারিক জীবন—
সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৮৪৮ সালের ১০ নভেম্বর কলকাতায় । তার বাবা দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক।
শিক্ষা ও কর্মজীবনের সূচনা—
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি ইংল্যান্ডে চলে যান এবং ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (ICS) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ১৮৭১ সালে সিভিল সার্ভিস কর্মজীবনে সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সিলেটে আসেন। তিনি তার অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেননি এবং অগ্রসর হতে চান না এই অজুহাতে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। জাতীয় নেতৃত্বে জোরালোভাবে অংশগ্রহণের জন্য তিনি ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন। তিনি ছিলেন একজন স্বাভাবিক লেখকের পাশাপাশি একজন বাগ্মী বক্তা।
১৮৭৫ সালের জুন মাসে মাতৃভূমি ভারতে ফিরে আসেন এবং শিক্ষকতার মহান পেশায় আত্মনিয়োগ করেন। ইংরেজির অধ্যাপক, প্রথমে মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে এবং পরে ফ্রি চার্চ কলেজে। অবশেষে রিপন কলেজে পড়ি। পরে এই রিপন কলেজের নামকরণ করা হয় সুরেন্দ্রনাথ কলেজ।
রাজনৈতিক জীবন—-
১৮৭৬ সালের ২৬শে জুলাই, সুরেন্দ্রনাথ সর্বভারতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারত সভা বা ভারতীয় সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৭৮ সাল থেকে তিনি দ্য বেঙ্গলি নামে একটি গবেষণাপত্র সম্পাদনা করেন এবং নিয়মিতভাবে জাতীয় স্বার্থ, বিশেষ করে জাতীয় সংস্কৃতি, ঐক্য, স্বাধীনতা ও মুক্তির বিষয়ে সাহসী ও আবেগপ্রবণ মনোভাব নিয়ে লিখতেন।
এছাড়াও, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ভারতীয় আইনসভার অন্যতম সদস্য ছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৮৭৬-১৮৯৯ সাল পর্যন্ত কলকাতা কর্পোরেশনের সদস্য ছিলেন।
১৯০৫ সালে, সুরেন্দ্রনাথ বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেন এবং স্বদেশী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ফলে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং জাতীয়তাবাদের উদ্ভব হয়। পরবর্তীতে মতবিরোধের কারণে তিনি ১৯১৮ সালে কংগ্রেস থেকে সরে আসেন। এবং একজন মধ্যপন্থী হিসেবে তিনি হিন্দু ও মুসলিম উভয় পক্ষকে একত্রিত করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ১৯২১ সালে নাইট উপাধি লাভ করেন এবং ১৯২১ থেকে ১৯২৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বাংলা সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দেশের সেবা করেন।
সমাজ সংস্কার—-
একজন শিক্ষক হিসেবে স্যার সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ভারতীয় জাতীয়তাবাদের চেতনায় শিক্ষার্থীদের উদ্দীপনা, অনুপ্রাণিত ও অনুপ্রাণিত করতে অত্যন্ত মূল্যবান ভূমিকা পালন করেছিলেন। একই সঙ্গে তিনি ভারতীয়দের ঐক্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে বক্তৃতা দিতে থাকেন। ১৯,, শতকে, তিনি রাজা রামমোহন রায়ের নেতৃত্বে সামাজিক-ধর্মীয় নবজাগরণ আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে বিশেষভাবে আগ্রহী ছিলেন।
কিন্তু সুরেন্দ্রনাথের অনুসৃত সমাজ সংস্কারে সমাজসচেতন মানুষের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ থাকলেও রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে সে সব উদ্যোগ তেমন একটা সফলতা পায়নি! তিনি সামাজিক পুনর্গঠন, বিশেষ করে বিধবা বিবাহ, মেয়েদের বাল্যবিবাহ ইত্যাদি কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন।
মৃত্যু—-
স্যার সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ৬ই আগস্ট, ১৯২৫ সালে ৭৭ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী মাওলানা আবুল কালাম আজাদের জন্মবার্ষিকী স্মরণে প্রতি বছর ১১ নভেম্বর জাতীয় শিক্ষা দিবস পালন করা হয়। এই উদযাপন শিক্ষার মৌলিক অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এর সর্বোত্তম গুরুত্বের উপর জোর দেয়।
শিক্ষা প্রতিটি ব্যক্তির জন্য একটি সহজাত অধিকার হিসাবে দাঁড়িয়েছে এবং একটি স্থিতিস্থাপক এবং আলোকিত সমাজের ভিত্তি হিসাবে কাজ করে। এটি আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, আমাদের জীবন এবং বৃহত্তর সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জ্ঞান অর্জনের সুবিধার মাধ্যমে, শিক্ষা আমাদের শেখানো পাঠগুলিকে কার্যকর পদক্ষেপে রূপান্তর করার ক্ষমতা দিয়ে সজ্জিত করে, যার ফলে আমাদের সাফল্যের দিকে পরিচালিত করে। একজন শিক্ষিত এবং সুপরিচিত নাগরিক দায়িত্বশীল নাগরিকত্বের আদর্শকে মূর্ত করে তোলে, সক্রিয়ভাবে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য ব্যক্তিগতভাবে এবং বিশ্বব্যাপী অবদান রাখে।
জাতীয় শিক্ষা দিবস ২০২৪ এর থিম–
জাতীয় শিক্ষা দিবস বার্ষিক একটি থিমের সাথে স্মরণ করা হয় যা শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি জটিল সমস্যা বা অধ্যয়নের ক্ষেত্রে মনোযোগ আকর্ষণ করে। শিক্ষা মন্ত্রকের মতে, 2024 বিষয় সম্ভবত ভারতীয় শিক্ষার বর্তমান সমস্যা এবং উদ্বেগের সমাধান করবে।
পূর্ববর্তী থিমগুলির মধ্যে “সকলের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা”, “টেকসই উন্নয়নের জন্য শিক্ষা,” এবং “অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা” অন্তর্ভুক্ত ছিল, যার সবগুলিই গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন তৈরি করতে এবং শিক্ষার মান, সমতা এবং অ্যাক্সেসযোগ্যতা বাড়াতে প্রচেষ্টাকে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করেছিল।
জাতীয় শিক্ষা দিবসের
ইতিহাস—
মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, যিনি ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ভারতে শিক্ষার উন্নতি এবং অ্যাক্সেসযোগ্যতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন।তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার অগ্রগতি, বৈজ্ঞানিক শিক্ষার প্রসার, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, এবং গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষাকে উৎসাহিত করার জন্য অসংখ্য উদ্যোগ প্রবর্তন করেন। তার প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ, মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ২০০৮ সালে তার জন্মদিনটিকে জাতীয় শিক্ষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে।
জাতীয় শিক্ষা দিবসের তাৎপর্য—
দিনটি স্কুল, কলেজ এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উদযাপনের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়। শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, সাক্ষরতার মূল্য এবং দেশের সকল নাগরিকের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সেমিনার, সম্মেলন এবং কার্যক্রমের মতো বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
জাতীয় শিক্ষা দিবসের লক্ষ্য হল মৌলানা আবুল কালাম আজাদের জন্মবার্ষিকী এবং প্রথম শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে সম্মান জানানো। দিবসটির উদ্দেশ্য হল শিক্ষার তাৎপর্য এবং জাতির উন্নয়ন ও কল্যাণে এর ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে আলোকিত করা। এটি শেখার চেতনার গুরুত্বকে বোঝায়।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।