Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্মরণে রানী ঝাঁসি ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী সরস্বতী রাজামণি।

সরস্বতী রাজামণি ছিলেন ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর (আইএনএ) একজন সৈনিক।  তিনি সেনাবাহিনীর সামরিক গোয়েন্দা শাখায় তার কাজের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।  তিনি রানী ঝাঁসি ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট হন।  নীরা আর্য ছিলেন তার সহকর্মী।

 

রাজামনির বার্মার রেঙ্গুনে (বর্তমান মায়ানমারের ইয়াঙ্গুন) জন্মগ্রহণ করেন।  তার বাবার একটি সোনার খনি ছিল এবং তিনি ছিলেন রেঙ্গুনের অন্যতম ধনী ভারতীয়।  তার পরিবার ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের কট্টর সমর্থক ছিল এবং অর্থ দিয়ে আন্দোলনে সাহায্য করত।
রেঙ্গুনে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর বক্তৃতায় অনুপ্রাণিত হয়ে, ১৬ বছর বয়সী সরস্বতী তার সমস্ত গহনা INA-কে দান করেছিলেন।  তরুণীটি বোকার মতো গয়নাটি দান করেছে বুঝতে পেরে নেতাজি তা ফেরত দিতে তার বাড়িতে যান।  কিন্তু রাজমণি অনড় ছিলেন যে তিনি এটি শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর জন্য ব্যবহার করবেন।  তার সংকল্পে মুগ্ধ হয়ে তিনি তার নাম রাখেন সরস্বতী।

 

১৯৪২ সালে, রাজামণি আজাদ আজাদ হিন্দ ফৌজেররানি ঝাঁসি রেজিমেন্টে জয়েন করেন এবং সেনাবাহিনীর সামরিক গোয়েন্দা শাখায় যোগদান করেন।  প্রায় দুই বছর ধরে, রাজামণি এবং তার কিছু মহিলা সহকর্মী তথ্য সংগ্রহের জন্য ছেলেদের মুখোশ পরেছিলেন।  ছেলের সাজে তার নাম ছিল মণি।  একবার তার এক সহকর্মী ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।  তাকে উদ্ধার করতে রাজমণি নর্তকীর সাজে ব্রিটিশ শিবিরে অনুপ্রবেশ করেন।  তিনি কর্তব্যরত ব্রিটিশ অফিসারদের মাদকাসক্ত করেন এবং তার সহকর্মীকে মুক্ত করেন।  তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় একজন ব্রিটিশ প্রহরী রাজামণির পায়ে গুলি করে, কিন্তু সে তখনও পালাতে সক্ষম হয়।

 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, রাজামুনির পরিবার সোনার খনি সহ তাদের সমস্ত সম্পত্তি দান করে ভারতে ফিরে আসে।  ২০০৫ সালে, একটি সংবাদপত্র রিপোর্ট করেছিল যে তিনি চেন্নাইতে বসবাস করছিলেন এবং একজন মুক্তিযোদ্ধার পেনশন পাওয়ার পরেও তিনি চরম কষ্টের জীবনযাপন করছেন।  তিনি তামিলনাড়ু রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন।  তামিলনাড়ুর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা তাঁকে এককালীন পাঁচ লক্ষ টাকা অনুদান এবং একটি ভাড়া-মুক্ত আবাসিক ফ্ল্যাট দিয়ে সাহায্য করেছিলেন।  ২০১৬ সালে, এপিক চ্যানেল তার গল্পটি টেলিভিশন সিরিজ অদ্রাস্যাতে প্রদর্শন করে।

 

স্বাধীনতা সংগ্রামী শ্রী সরস্বতী রাজামণি ১৩ জানুয়ারী, ২০১৮ তারিখে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। চেন্নাইয়ের রায়পেট্টাহের পিটার্স কলোনিতে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

শক্তি সামন্ত – ভারতীয় বাঙালী চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক – জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

শক্তি সামন্ত (জন্ম ১৩ জানুয়ারী ১৯২৬) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক এবং প্রযোজক।  তিনি ১৯৫৭ সালে শক্তি ফিল্মস নামে একটি প্রযোজনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। হাওড়া ব্রিজ, চায়না টাউন, কাশ্মীর কি কলি, অ্যান ইভিনিং ইন প্যারিস, কাটি পতঙ্গা এবং অমর প্রেমের জন্য তিনি সর্বাধিক পরিচিত।
তিনি আরাধনা , অনুরাগ এবং অমানুষের জন্য শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছিলেন।  অমানুষও বাংলা ভাষায় ছবিটি নির্মাণ করেছেন।  এছাড়া তিনি ১৯৮৪ সালে যৌথ প্রযোজনার ছবিসহ ছয়টি বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

 

চলচ্চিত্রের তালিকা——

 

তাঁর পরিচালনায় জনপ্রিয় ছবি গুলি—–

 

 

 

জালি নোট, সিঙ্গাপুর, ইসি কা নাম দুনিয়া হ্যায়, নটি বয়, চিনা টাউন, এক রাজ, কাশ্মীর কি কলি, সাওয়ান কি গাথা, বহু, ইন্সপেক্টর, হিল স্টেশন, শেরু, হাওড়া ব্রিজ, ডিটেক্টিভ, ইনসান জাগ উঠা, অ্যান ইভিনিং ইন প্যারিস, আরাধনা, কাটি পতং, চরিত্রহীন, আজনবী, অমানুষ, মেহবুবা, অনুরোধ, আনন্দ আশ্রম, দ্য গ্রেট গাম্বলার, খোয়াব, বরসাত কি এক রাত, আযাশ, আওয়াজ, আলাগ আলাগ, আর পার, অন্যায় অবিচার , পাগলা কঁহি কা, জানে-আনজানে, অমর প্রেম, অনুরাগ , অন্ধ বিচার , দুশমন , গীতাঞ্জলি, দেবদাস।

তাঁর প্রযোজনায়  দুটি ছবি —

অচেনা অতিথি ও বালিকা বধূ ।

৯ এপ্রিল ২০০৯ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

আমার দৃষ্টিতে স্বামী বিবেকানন্দ — একটি পর্যালোচনা : দিলীপ রায় (+৯১ ৯৪৩৩৪৬২৮৫৪)।

স্বামী বিবেকানন্দ শুধু বাঙালির জীবনের এক আদর্শ মহামানবই নন, তিনি যুগাবতার । তিনি ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনবিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রিয়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের একমাত্র শিষ্য । তাঁর দেখানো আদর্শের রাস্তা যুক্তিবোধের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় মানুষকে। আধ্যত্মকে এক অন্য পর্যায়ে উন্নত করে বিবেকানন্দ সকলের জীবনকে আরও বেশি করে আলোর দিকে ঠেলে দিয়েছেন । স্বামী বিবেকানন্দ জীবপ্রেমের দীক্ষা পান শ্রীরামকৃষ্ণের কাছ থেকে, যেখানে তিনি বলেছেন ‘যত্র জীব, তত্র শিব’। জীবের সেবা করলে স্রষ্টারও সেবা করা হয় । স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ । সবার আগে মানব সেবা । সুতরাং মানুষের সেবার মাধ্যমে ঈশ্বরের সেবা করা সম্ভব। জীবপ্রেমের দর্শন প্রকাশ পেয়েছে তাঁর দুটি চমৎকার লাইনেঃ
“বহুরুপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর ?
জীবপ্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর ।“
তাই আমরা কেউ বিবেকানন্দকে পরিপূর্ণভাবে বুঝিনি । কারণ তিনি ছিলেন বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব । সংগীত, চিত্রকলা, দর্শন, রাষ্ট্রনীতি, ইতিহাস, অর্থনীতি, সমাজতত্ব, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ছিলো গভীর ব্যুৎপত্তি । তাই তিনি নিজেই বলেছেন, “বিবেকানন্দকে বুঝতে হলে আরেক বিবেকানন্দকে দরকার ।“ কর্মী বিবেকানন্দ, সন্ন্যাসী বিবেকানন্দ, গুরু বিবেকানন্দ, শিষ্য বিবেকানন্দ, জ্ঞানী বিবেকানন্দ, যোগী বিবেকানন্দ, কবি বিবেকানন্দ সবই এহ বাহ্য । কারণ এই সমস্ত গুণেই তিনি শীর্ষস্থানের অধিকারী হলেও তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় হল ভালোবাসায় ভরা হৃদয় বিবেকানন্দ ।
( ২ )
বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের “শিব জ্ঞানে জীব সেবা”র মন্ত্রে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বলেই তিনি মানুষের কল্যাণ সাধনকেই প্রকৃত ঈশ্বর সাধনা বলে মনে করেছিলেন । বিবেকানন্দ ছিলেন মানব প্রেমিক সন্ন্যাসী । মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি ধর্ম ও বিজ্ঞান উভয়কেই সমানভাবে প্রয়োজন বলে অভিহিত করেছিলেন । তাঁর মতে “ধর্ম”” মানুষের অন্তর্নিহিত দেবত্বকে ফোটাবে । বিজ্ঞান মানুষকে সুখ ও সমৃদ্ধি উপহার দেবে । শিক্ষার মাধ্যমে মানুষ প্রথমে আত্মবিশ্বাসী হবে । আর আত্মবিশ্বাস থেকে আসবে আত্মনির্ভরশীলতা । বিবেকানন্দের মতে, শিক্ষাই সমাজের সকল সমস্যা দূরীকরণের মূল চাবি কাঠি । শিক্ষার আলো মানুষের মনের অন্ধকারকে দূর করে, মানুষকে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করবে । বিবেকানন্দের শিক্ষা পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্যেই ছিল সমাজে যথার্থ “মানুষ” তৈরি করা –যাতে চরিত্র গঠিত হয়, মনের শক্তি বাড়ে । বুদ্ধি বিকশিত হয়, মানুষ নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াতে পারে । তা ছাড়া বিবেকানন্দের শিক্ষা ছিল সার্বজনীন । তিনি চেয়েছিলেন বিশেষভাবে যুব সমাজের নবচেতনার অভ্যুদয় । নিষ্ঠা, সততা ও আত্মনির্ভরতা ছিল তাঁর আরাধ্য । এসব গুণ জগতের সব সমাজের সবমানুষেরই সম্পদ ।
এখানে বিশেষভাবে প্রনিধানযোগ্য – বিবেকানন্দ যেভাবে ভারতবর্ষকে চিনেছিলেন বা অনুভব করেছিলেন, অন্য কোনো ব্যক্তি ঠিক সেভাবে ভারতবর্ষকে অনুভব করতে পারেননি । পুণ্যভূমি ভারতবর্ষে জন্মগ্রহণ করে বিবেকানন্দ ধন্য মনে করেছিলেন । ভগিনী নিবেদিতার ভাষায়, “তিনি নিজেই হয়ে উঠেছিলেন ভারতবর্ষ – রক্তমাংসে গড়া ভারত প্রতিমা ।“ আর কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ রোমাঁ রোলাঁকে (ফরাসী সাহিত্যিক) বলেছিলেন, “যদি ভারতবর্ষকে জানতে চাও বিবেকানন্দকে জানো । বিবেকানন্দের লেখা আগে পড়ো । “

(৩)
১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে নরেন্দ্রনাথের পিতা হঠাৎ মারা যান । এরপর তাঁর পরিবার তীব্র অর্থ কষ্টের মধ্যে পড়েন । একদা সচ্ছল পরিবারের সন্তান নরেন্দ্রনাথ কলেজের দরিদ্রতম ছাত্রদের অন্যতম ছাত্রে পরিণত হন । তিনি চাকরির অনুসন্ধান শুরু করেন । নরেন্দ্রনাথ রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কাছে অনুরোধ করেন, তিনি যেন তাঁর মা কালীর কাছে তাঁর পরিবারের আর্থিক উন্নতির জন্য প্রার্থনা জানান । রামকৃষ্ণ উল্টে তাঁকে বলেন, “তিনি যেন নিজে মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করেন ।“ রামকৃষ্ণ দেবের পরামর্শ অনুসারে নরেন্দ্রনাথ তিনবার মন্দিরে যান । কিন্তু জাগতিক প্রয়োজনের জন্য প্রার্থনার পরিবর্তে তিনি জ্ঞান ও বিবেকবৈরাগ্য প্রার্থনা করেন । এরপরে নরেন্দ্রনাথ ঈশ্বর উপলব্ধির জন্য সংসার ত্যাগ করেন এবং রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবকে গুরু বলে মেনে নেন । এমনই ছিলেন নরেন্দ্রনাথ, গুরুকেও যাচাই করে নিতে পিছপা হননি ।
এরপরে পরিব্রাজকরুপে তাঁকে আমরা কী দেখলাম । ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে পরিব্রাজকরুপে মঠ ত্যাগ করেন বিবেকানন্দ । পরিব্রাজক হিন্দু সন্ন্যাসীর এক ধর্মীয় জীবন — এই জীবনে তিনি স্বাধীনভাবে পর্যটন করে বেড়ান কোনো স্থায়ী বাসস্থান ও বন্ধন ছাড়াই । পাঁচ বছর ধরে ভারতের প্রত্যেক শিক্ষা কেন্দ্র দর্শন করেন । বিভিন্ন ধর্মসম্প্রদায় ও সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে সুপরিচিত হন । এই সময় ভিক্ষোপজীবী হয়ে সারা ভারত পদব্রজেই পর্যটন করেন বিবেকানন্দ । সেইজন্য বিবেকানন্দকে সারা বিশ্বের মানুষ “পরিব্রাজক” হিসেবে জানে । ভারতবর্ষ পর্যটনের সময় তিনি বিভিন্ন পণ্ডিত, দেওয়ান, রাজা এবং হিন্দু-মুসলমান, খ্রিষ্টান এমনকি নিম্নবর্গীয় ও সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গেও মেলামেশা ও একসঙ্গে বাস করেন ।
১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বারাণসী থেকে যাত্রা শুরু করেন । তখন সাক্ষাৎ হয় বিশিষ্ট বাঙালী লেখক ভূদেব মুখোপাধ্যায় ও বিশিষ্ট সন্ত ত্রৈলঙ্গস্বামীর সাথে । বৃন্দাবন, হথরাস ও হৃষীকেশে ভ্রমণের সময় হথরাসে তাঁর সঙ্গে স্টেশন মাস্টার শরৎচন্দ্র গুপ্তের সাক্ষাত হয় । তিনি পরে বিবেকানন্দের শিষ্যত্ব গ্রহণ করে সদানন্দ নামে পরিচিত হন । তিনি ছিলেন বিবেকানন্দের প্রথম যুগের শিষ্য । ১৮৯০ খ্রিষ্টাব্দে আবার নৈনিতাল, আলমোড়া, দেরাদুন, ঋষীকেশ, হরিদ্বার এবং হিমালয় ভ্রমণে যান । তারপর রওনা দেন দিল্লি । এইভাবে পশ্চিম ভারত, দক্ষিণ ভারত ভ্রমণ সারেন ।
(৪)
১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ৩০শে জুন থেকে ১৪ই জুলাই শিকাগো যাওয়ার পথে বিবেকানন্দ জাপান ভ্রমণ করেন । তিনি ঘুরে দেখেছিলেন কোবে, ওসাকা, কিওটো, টোকিও আর য়োকোহামা শহর । তারপর চীন, কানাডা হয়ে তিনি শিকাগো শহরে পৌঁছান ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে । কিন্তু শিকাগো শহরে পৌঁছে তিনি মূলত দুটি সমস্যায় পড়েন । মহাসভা শুরু হতে দেড় মাস বাকী । অন্যটা কোনো খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের প্রশংসাপত্র বা পরিচয়পত্র ব্যতিরেকে কোনো ব্যক্তিকে প্রতিনিধি হিসাবে বিশ্বধর্ম মহাসভায় গ্রহণ করা হবে না । তারপর তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন হেনরি রাইটের সংস্পর্শে এলেন । তাঁকে হার্ভার্ডে আমন্ত্রণ জানানোর পর এবং ধর্মসভায় বক্তব্যদানে বিবেকানন্দের প্রশংসাপত্র না থাকা প্রসঙ্গে রাইটের বক্তব্য, “আপনার কাছে প্রশংসাপত্র চাওয়াটা হচ্ছে স্বর্গে সূর্যের আলো দেওয়ার অধিকার চাওয়ার মতো অবস্থা ।“ রাইট তখন প্রতিনিধিদের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিকট এক চিঠিতে লিখলেন, “আমাদের সকল অধ্যাপক একত্রে যতটা শিক্ষিত ইনি তাঁদের থেকেও বেশী শিক্ষিত ।“
বিশ্বধর্ম মহাসভা ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই সেপ্টেম্বর শিকাগোর আর্ট ইনস্টিটিউটে উদ্বোধন হয় । তিনি ভারত এবং হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন । পাশ্চাত্যে অভিযানের নিরিখে যেসব অভিজ্ঞতা, তাতে শিকাগো বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ভারতীয় সনাতন ও বেদান্তের উপর ভাষণ দেওয়া ভীষন তাৎপর্যপূর্ণ । তাঁর বক্তব্য শুরু করলেন, “আমেরিকার ভ্রাতা ও ভগিনীগণ …।“ সম্ভাষন করে । তাঁর বক্তব্যে সহিষ্ণুতা ও মহাজাগতিক গ্রহণযোগ্যতা প্রসঙ্গ ওঠে । গীতা থেকে উদাহরণমূলক পংক্তি তুলে ধরেন । তাঁর বক্তব্যে বিশ্বজনীন চেতনা ধ্বনিত হয় ।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই বিবেকানন্দের সদর্থক ভূমিকা । রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের একনিষ্ঠ ভক্ত সুভাষ চন্দ্র বসু । সেই বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু বলেছিলেন, বিবেকানন্দ ছিলেন “আধুনিক ভারতের স্রষ্টা ।“ জাতীয়তাবাদ নিয়ে বিবেকানন্দের চিন্তাভাবনার প্রতি তিনি ছিলেন সতত সংবেদনশীল । সুতরাং বিবেকানন্দের স্বদেশমন্ত্র দেশ স্বাধীনতার প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ।
স্বদেশমন্ত্রে বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “ভুলিও না, নীচজাতি, মুর্খ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মুচি, মেথর তোমার রক্ত, তোমার ভাই । হে বীর, সাহস অবলম্বন করো, সদর্পে বলো —- আমি ভারতবাসী, ভারতবাসী আমার ভাই । বলো, মুর্খ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, ব্রাহ্মণ ভারতবাসী, চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই । সদর্পে ডাকিয়া বলো, ভারতবাসী আমার ভাই, ভারতবাসী আমার প্রাণ, ভারতের দেবদেবী আমার ঈশ্বর, ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা, আমার যৌবনের উপবন, আমার বার্ধক্যের বারাণসী । বলো ভাই, ভারতের মৃত্তিকা আমার স্বর্গ । ভারতের কল্যাণ, আমার কল্যাণ ।“
১৯০২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ই জুলায় রাত ৯.১০ মিনিটে ধ্যানরত অবস্থায় দেহত্যাগ করেন । তাঁকে বেলুড়ে গঙ্গা নদীর তীরে একটি চন্দন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া চিতার উপর দাহ করা হয় । যার বিপরীত পাশে ষোলো বছর আগে রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের মরদেহ দাহ করা হয়েছিল ।
আজ তাঁর জন্ম দিবসে (জন্মঃ ১২ই জানুয়ারী, ১৮৬৩) সেই স্বামী বিবেকানন্দকে আমার শতকোটি প্রণাম ।
———–০————–

Share This
Categories
প্রবন্ধ

মাখনলাল সেন : ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বিপ্লবী, অনুশীলন সমিতির নেতা, সাংবাদিক ও সম্পাদক।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে মাখনলাল সেন ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী। মাখনলাল সেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। মাখনলাল সেন ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বিপ্লবী, অনুশীলন সমিতির নেতা, সাংবাদিক ও সম্পাদক । তিনি  বিপ্লবী সাংবাদিকতার আদর্শ স্থাপন করেছেন।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন——–

 

মাখনলাল সেন ১১ জানুয়ারী, ১৮৮১ সালে তার পিতার কর্মস্থল চট্টগ্রাম, বর্তমানে বাংলাদেশ, ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণ করেন।  বাবা গুরুনাথ সেন তখন সেখানে সহকারী সার্জন ছিলেন।  পৈতৃক বাড়ি ছিল মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারংয়ে।  পড়াশুনা চট্টগ্রামে।

 

বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপ———

 

এমএ পড়ার সময় মাখনলাল স্বদেশী আন্দোলনের সময় বিপ্লবী দলে যোগ দেন এবং ঢাকায় যান এবং অনুশীলন সমিতির নেতা পুলিনবিহারী দাস গ্রেফতার হওয়ার পর সমিতির নেতা হন।  ১৯১০ সালে ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে তিনি আত্মগোপন করেন এবং কলকাতায় চলে যান।  ১৯১৪ সালে বর্ধমান ও কাঁথিতে প্রবল বন্যা হলে তিনি বাঘা যতীনের সাহায্যে বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করতে এগিয়ে যান।  এ নিয়ে তৎকালীন বাংলা সরকারের সঙ্গে তুমুল বিরোধ শুরু হয়।  ১৯১৫ সালে ভারত রক্ষা আইন প্রণীত হলে মাখনলাল চট্টগ্রামের টেকনাফ অঞ্চলে গ্রেফতার হন। ১৯২০ সালে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি কলকাতায় আসেন এবং কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে যোগ দেন।  অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধীর সমর্থনে এগিয়ে যান।  এরপর নাগপুর কংগ্রেসে অসহযোগ নীতি গৃহীত হলে ১৯২১ সালে তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের অনুরোধে কলকাতায় গৌড়ীয় সর্ববিদ্যায়তনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।  তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের পূর্ববঙ্গে সোনারং ন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

 

সাংবাদিকতায় ভূমিকা————

 

তাঁর বিপ্লবী জীবনের বন্ধু সুরেশচন্দ্র মজুমদারের অনুরোধে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক হন কয়েকদিনের জন্য।  সেই বছরের ১২ই নভেম্বর, তিনি কলকাতা পুলিশ কমিশনারের আদেশ অমান্য করার জন্য গ্রেপ্তার হন এবং গোলটেবিল সম্মেলনের প্রতিবাদে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেন এবং ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।  ১৯৩৯ সালে, তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা ছেড়ে “সাংবাদিক কর্নার” নামে একটি সাংবাদিক সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ভারত নামে একটি সংবাদপত্র প্রকাশ করেন।  ১৯৪২ সালের ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের সময় তিনি “ভারত” পত্রিকার মাধ্যমে বিপ্লবী সাংবাদিকতার চূড়ান্ত আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।  কাগজটিও ক্ষোভের সাথে দেখা হয়েছিল এবং মাখনলালকে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল।  কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন।  মুক্তির পর তিনি আবার “ভারত” পত্রিকা প্রকাশ করেন, কিন্তু বেশিদিন চালাতে পারেননি।  দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মাখনলাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে যোগ দেন।

 

জীবনাবসান———

 

মাখনলাল সেন ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১১ই মে প্রয়াত হন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ছিলেন ভারতের ২য় প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের দলীয় নেতা।

লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ছিলেন ভারতের ২য় প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের দলীয় নেতা।
শাস্ত্রী ১৯০৪ সালের ২ শে অক্টোবর মুঘলসরাই, চন্দাউলিতে একটি কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  তার বাবা সারদা প্রসাদ শ্রীবাস্তব ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক এবং পরে এলাহাবাদের রাজস্ব অফিসে কেরানি ছিলেন।  মাত্র ১ বছর বয়সে তার বাবা মারা যান।  তার মা রামদুলারি দেবী তাকে তার বাবা ও বোনের কাছে নিয়ে যান এবং তারা সেখানে থাকতে শুরু করেন।

 

শাস্ত্রী মুঘলসরাই এবং বারাণসীর ইস্ট সেন্ট্রাল রেলওয়ে ইন্টার কলেজে পড়াশোনা করেছেন।  তিনি ১৯২৬ সালে কাশী বিদ্যাপীঠ থেকে প্রথম শ্রেণিতে স্নাতক পাস করেন। তিনি শাস্ত্রী (পণ্ডিত) উপাধিতে ভূষিত হন।  এই উপাধি তাকে কাশী বিদ্যাপীঠ দিয়েছিল কিন্তু সেতা আজীবন তার নামের সাথে রয়ে গেছে।  শাস্ত্রী গান্ধীজি এবং বাল গঙ্গাধর তিলক দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, একজন নেতৃস্থানীয় ভারতীয় জাতীয়তাবাদী।

 

১৯২০ সালে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন।  গভীরভাবে গভীরভাবে, তিনি মধ্যমণি মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর এবং পরে জহরলাল নেহের অনুগত হন।  স্বাধীনতার পর তিনি জহরলাল নেহেরু র প্রধান সহযোগী, ইন্টারমিডিয়েট রেলওয়ে কমিশন এবং পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দলে যোগদান করেন।  নেহেরুর কন্যা ইন্দিরা গান্ধী দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানালে শাস্ত্রীকে নেহরুর উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

 

শাস্ত্রী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেহরুর অ-দলীয়তা ও সমাজতন্ত্রের নীতি অনুসরণ করেছিলেন।  তিনি 1965 সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের নায়ক ছিলেন।  এই যুদ্ধের সময় তাঁর বিখ্যাত স্লোগান “জয় জওয়ান, জয় কিষাণ” খুব জনপ্রিয় ছিল।  এই স্লোগান আজও মানুষ মনে রেখেছে।  ১০ জানুয়ারী, ১৯৬৬, তাসখন্দে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।  আর পরের দিন সেখানেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় শাস্ত্রীকে।  সে সময় ভারত শাস্ত্রীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হলেও তার পরিবার তা অস্বীকার করে তদন্ত দাবি করে। ১১ ই জানুয়ারি ১৯৬৬ সালে তিনি মার যান।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে – বাসু চ্যাটার্জী, ভারতের বলিউডের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক।

বাসু চ্যাটার্জি ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকার। যদিও তিনি 1970 এবং 1980-এর দশকে মধ্যম সিনেমা বা মধ্যম রাস্তা সিনেমায় হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় এবং বাসু ভট্টাচার্যের সহকারী হিসাবে কাজ করেছিলেন। তাদের জনপ্রিয় ছবি ছিল তিসরি কসম (1966)।  বাসু চ্যাটার্জী ১৯৩০ সালে ভারতের রাজস্থান প্রদেশের অজমের শহরে জন্মগ্রহণ করেন।

 

পেশাগত জীবন———–

বাসু চ্যাটার্জি মুম্বাই থেকে প্রকাশিত একটি সাপ্তাহিক ট্যাবলয়েড ব্লিটজে একজন চিত্রকর এবং কার্টুনিস্ট হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।  চলচ্চিত্র পরিচালনা শুরু করার আগে, তিনি রাজ কাপুর এবং ওয়াহিদা রহমান অভিনীত তিসরি কসম ছবিতে বাসু ভট্টাচার্যের সহকারী হিসাবে কাজ করেছিলেন।  চলচ্চিত্রটি ১৯৬৬ সালে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। বাসু চ্যাটার্জির প্রথম পরিচালনা চলচ্চিত্র ছিল সারা আকাশ (১৯৬৯)।  এই ছবির জন্য তিনি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান।

চলচ্চিত্রের তালিকা———

সংলাপ লেখক——

Lakhon Ki Baat, Hamari Bahu Alka, Dillagi (১৯৭৮), Khatta Meetha (১৯৭৭), রজনীগন্ধা (১৯৭৪), Piya Ka Ghar (১৯৭২)।

পরিচালক——–

Trishanku (2 December 2011), Hochheta Ki (2008),  Kuch Khatta Kuch Meetha (2007), Prateeksha (2007), Hothat Brishti (1998), Gudgudee (4 April 1997), Triyacharittar (1997), Kamla Ki Maut (1990), Sheesha (3 October 1986), Chameli Ki Shaadi (21 February 1986), Ek Ruka Hua Faisla (1986), Kirayedar (1986), Lakhon Ki Baat (1984), Pasand Apni Apni (1983), Shaukeen (1982), Hamari Bahu Alka (1982), Jeena Yahan (1981), Apne Paraye (8 August 1980), Man Pasand (1980), Ratan Deep (21 December 1979), Prem Vivah (14 September 1979), Chakravyuha (29 June 1979), Manzil (14 May 1979), বাতোঁ বাতোঁ মেঁ (13 April 1979), Do Ladke Dono Kadke (1979), Dillagi, Tumhare Liye (1978), Swami, Safed, Jhooth (1977), Priyatma (1977), Khatta Meetha (1977), Chhoti Si Baat (1976), Chitchor (1976), রজনীগন্ধা (১৯৭৪), Us Paar (1974), Piya Ka Ghar (1972), Sara Akash (1969)।

চিত্রনাট্য——-

Lakhon Ki Baat (1984),  Hamari Bahu Alka (1982), Dillagi, Khatta Meetha (1977), Rajnigandha (1974), Sara Akash (1969)।

প্রযোজক——–

Ek Ruka Hua Faisla (1986), Lakhon Ki Baat (1984), Pasand Apni Apni (1983), বাতোঁ বাতোঁ মেঁ (13 April 1979)।

বাংলা চলচ্চিত্র———

Trishanku,  হচ্ছেটা কি?, টক ঝাল মিষ্টি, চুপি চুপি

হঠাৎ বৃষ্টি।

পরিচালক (টিভি সিরিজ)——–

Rajani (1985), Darpan (1985), Ek Ruka Hua Faisla (1986), Kakkaji Kahin (1988), Byomkesh Bakshi (1993)।

সহকারী পরিচালক—–

Saraswatichandra (1968),  Teesri Kasam (1966)।

পুরস্কার——–

IIFA Lifetime Achievement Award(২০০৭),  Filmfare Best Screenplay Award – Kamla Ki Maut (১৯৯১), Filmfare Critics Award for Best Movie – Jeena Yahan ( ১৯৮০),  Filmfare Best Director Award – Swami (1977 film), Filmfare Best Screenplay Award – Chhoti Si Baat (১৯৭৬),  Filmfare Critics Award for Best Movie – Rajnigandha (১৯৭৫),  Filmfare Best Screenplay Award – Sara Akash (১৯৭২)।

মৃত্যু—–

০৪ জুন ২০২০সালে।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক , সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক বিনয়  মুখোপাধ্যায়।

বিনয়  মুখোপাধ্যায়   একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক , সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক। কর্মজীবনে ‘যাযাবর’ ছদ্মনামে তার লেখা ‘দৃষ্টিপাত’ গ্রন্থটি পঞ্চাশের দশকে বাঙালি পাঠক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।

 

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন———-

 

বিনয় মুখার্জি ১৯০৮ সালের ১০ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকার ফেগুনামার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  পিতার নাম ফণিভূষণ মুখোপাধ্যায় এবং মাতার নাম মনোরমা দেবী।  পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।  তার বাবাও সাহিত্যচর্চা করতেন।  পারিবারিক সাহিত্য পরিবেশ তাঁর সাহিত্যকর্মকে অনুপ্রাণিত করেছিল।  বিনয় জুবিলি হাই স্কুল, চাঁদপুর থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন, আই.এ.  সেন্ট পলস কলেজ থেকে এবং কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজ থেকে বি.এ.  তিনি তার ছাত্রাবস্থায় বেশ কিছু গান রচনা করেছিলেন এবং সুরকার হিমাংশু দত্তের সুর করা রেকর্ড হিসাবে সেগুলি প্রকাশ করেছিলেন।  এমন গানের রেকর্ড তালিকা ছয়টি।  উল্লেখযোগ্য গানগুলো হলো- শচীন দেববর্মনের “নতুন ফাগুনের দিনে” এবং উমা বসুর “ঝরানো পাতার পথে”।  যাইহোক, সুরকার হিমাংশু দত্তের অকাল মৃত্যু তার বিনয়ী গীতিকবিতাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল।

 

কর্মজীবন ও সাহিত্যকর্ম————-

 

১৯৩৭ সালে তিনি ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য ব্রিটেনে যান।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, গাওয়ার স্ট্রিটে ভারতীয় বাসভবন জার্মান বোমায় ধ্বংস হলে তিনি দেশে ফিরে আসেন।  ক্রিপস ভারতে এলে স্যার স্ট্যাফোর্ড লন্ডনের একটি সংবাদপত্রের ব্যক্তিগত প্রতিনিধি হিসেবে দিল্লিতে যান।  দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।  সেখানে তিনি ‘শ্রীপথচারী’ ছদ্মনামে লিখতেন।

 

এরপর, তিনি ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে দিল্লিতে চলে আসেন এবং দীর্ঘ কর্মজীবনের পর তিনি প্রেস কাউন্সিলের সচিব পদে উন্নীত হন এবং অবসর গ্রহণ করেন।  পরবর্তীতে তার কর্মজীবনে তিনি অনেক নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন, পাশাপাশি “যাযাবর” ছদ্মনামে লেখালেখি করেন।  তার কর্মজীবনে, তাকে 15 আগস্ট, 1947-এ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গান্ধীজির বক্তৃতা সংগ্রহ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। যখন তিনি সোদপুরে গান্ধীজির কাছে গেলেন, তিনি বলেছিলেন যে তার পক্ষে বার্তা দেওয়া সম্ভব নয় – তার মন ভেঙে গিয়েছিল।  গান্ধীজীর কাছ থেকে এমন কথা শুনে তার মনে হলো যেন তিনি কোনো ঐতিহাসিক ট্র্যাজেডির সাক্ষী।   যাযাবর নামে ‘দৃষ্টিপাত’ রম্য রচনা করে তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক হয়ে ওঠেন।

 

ছোটগল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ সংকলন মিলিয়ে তার গ্রন্থের সংখ্যা ছয় এবং প্রত্যেকটি গ্রন্থই সুরচিত ও সুখপাঠ্য।

দৃষ্টিপাত (১৯৪৬), জনান্তিকে (১৯৫২), ঝিলম নদীর তীরে (১৯৫৪), লঘুকরণ (১৯৬৪), হ্রস্ব ও দীর্ঘ (১৯৭৩), যখন বৃষ্টি নামল (১৯৮৩), যাযাবর অমনিবাস (২০১৪)।

 

এছাড়া ক্রিকেট খেলা নিয়ে বাংলা ভাষায় তার স্বনামে  লেখা গ্রন্থ দুটি হল – খেলার রাজা ক্রিকেট (১৯৫৩), মজার খেলা ক্রিকেট (১৯৫৩)।

 

চাকরি করে অবসর নেওয়ার পর তিনি সস্ত্রীক  ইউরোপ-আমেরিকায় চলে যান।  তাঁর স্ত্রী দুর্গা দেবী প্যারিসের ছাত্রী ছিলেন।  যামিনী রায়ের আদলে তিনি অনেক ছবি এঁকেছেন।  তাঁর লেখা ”পুষ্পপট” বাংলা ভাষায় ফুল বিন্যাসের প্রথম প্রকাশিত বই।

 

সম্মাননা————

 

‘দৃষ্টিপাত’ সমকালীন বাংলা সাহিত্যে সর্বশ্রেষ্ঠ পুস্তক হিসাবে বিবেচিত হওয়ায় বিনয় মুখোপাধ্যায় সাহিত্যকর্মের জন্য ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘নরসিংহ দাস পুরস্কার’ এবং ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে   পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘বিদ্যাসাগর পুরস্কার’ লাভ করেন।

 

জীবনাবসান———–

 

খ্যাতনামা সাহিত্যিক বিনয় মুখোপাধ্যায় ২০০২ খ্রিস্টাব্দের ২২ শে অক্টোবর দিল্লিতে প্রয়াত হন।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

রামকৃষ্ণ রায় : ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে  রামকৃষ্ণ রায়  ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী।  রামকৃষ্ণ রায়  ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।

রামকৃষ্ণ রায়  ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অক্লান্ত কর্মী। তাঁর আবাদান ভারতের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। আজ সেই বীর বিপ্লবীর জন্ম দিবস। জানব তাঁর সেই আত্মত্যাগের কিছু কথা। রামকৃষ্ণ রায়  ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব।

রামকৃষ্ণ রায় ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব। গোপন বিপ্লবী দলের সদস্য ছিলেন।

রামকৃষ্ণ রায় ৯ জানুয়ারি, ১৯১২ সালে মেদিনীপুরের চিরিমাতসাইতে জন্মগ্রহণ করেন।  তার পিতার নাম কেনরাম রায়।  মায়ের নাম ভবতারিণী দেবী।  রামকৃষ্ণ ১৯২২ সালে মেদিনীপুর টাউন স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন।  ছোটবেলা থেকেই ব্যায়াম করতেন।  ১৯২৪ সালে মহাত্মা গান্ধী মেদিনীপুরে এলে বালক রামকৃষ্ণ স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে যোগ দেন।  তিনি ১৯২৬ সালের পৌর নির্বাচনে বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের সাথে এবং ১৯২৮ সালে সুভাষ চন্দ্রের সাথে কাজ করেন।

১৯৩০ সালে তিনি জেলাশাসক পেডিকে ছুরি দিয়ে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৩ তারিখে মেদিনীপুরের জেলাশাসক বার্জকে হত্যা করার ব্যাপারে অংশগ্রহণ করেন। ধরা পড়ে হত্যার অভিযোগে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত হন। ২৫ অক্টোবর, ১৯৩৪ মেদিনীপুর জেলে তার ফাঁসি হয়।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

সুবিনয় রায়, প্রখ্যাত বাঙালি রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী।

সুবিনয় রায় ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী, যিনি কলকাতার ব্রাহ্ম পরিবারের আজন্ম ব্রহ্ম সঙ্গীত বর্ণে বেড়ে ওঠেন।

সুবিনয় রায় ৮ নভেম্বর, ১৯২১ সালে কলকাতা, ব্রিটিশ ভারতের জন্মগ্রহণ করেন।  পিতা বিমলাংশুপ্রকাশ রায় পেশায় রসায়নবিদ ও সাহিত্যিক ছিলেন।  বার্ড কোম্পানিতে চাকরি করেন।  মা সুখময়ী ছিলেন মেডিক্যাল কলেজের মেয়েদের হোস্টেলের সুপারিনটেনডেন্ট, পরে শান্তিনিকেতনের মেয়েদের হোস্টেল ‘শ্রীভান’-এর সুপার হন।  তিনি সুকুমার রায়ের “ননসেন্স ক্লাব” এর সদস্য ছিলেন।  মা সুখময়ী দেবী নিয়মিত সঙ্গীত চর্চা করতেন।  সুবিনয় রায় কলকাতার মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে সিটি কলেজে ভর্তি হন।  বিএসসি পাস করার পর, সঙ্গীতের প্রতি অদম্য আকর্ষণের কারণে তিনি ১৯৩৭-৩৮ সালের দিকে শান্তিনিকেতনে চলে আসেন।

কর্মজীবন—-

বিএসসি পাস করার পর তিনি কিছুকাল শান্তিনিকেতনের সঙ্গীত ভবনে শিক্ষকতা করেন।  তিনি কলকাতার “দক্ষিণী” সঙ্গীত একাডেমীতে শুরু থেকেই শিক্ষক ছিলেন।  এর মধ্যে তিনি শান্তিনিকেতন ছেড়ে লন্ডনে গিয়েছিলেন চার্টার্ড লাইব্রেরিয়ানশিপে ডিপ্লোমা নিতে।  দেশে ফিরে পিতৃবন্ধু প্রশান্ত চন্দ্র মহলনবীশ প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে দীর্ঘদিন কাজ করেন।  এর মধ্যে তিনি অনাদিকুমার দস্তিদারের কাছে নিয়মিত রবীন্দ্রসংগীত শিখেছিলেন এবং নিজেই প্রতিষ্ঠা করেন সঙ্গীত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘গীতাভিথি’।  কিছুদিন তিনি ‘গান্ধবী’ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।  তাঁর ছাত্রদের মধ্যে বিখ্যাত ছিলেন পঙ্কজকুমার মল্লিক।  মাসিক পঞ্চাশ টাকা বেতনে দীর্ঘকাল তাঁর কাছে রবীন্দ্রসংগীত শিখে তাঁকে ‘গুরুদেব’ বলে সম্বোধন করতেন।  সুবিনয় রায় চল্লিশের দশকে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে গান গাইতে শুরু করলেও দশ বছর সেখানে যাননি।  পরে, শুভ, গুঠাকুর্তার প্রচেষ্টায় রেডিওতে অডিশন না নিয়েই উচ্চ গ্রেডের শিল্পী হিসেবে গান গাইতে শুরু করেন।  ১৯৪৫ সালে, কলম্বিয়া রেকর্ডস তার প্রথম গানের রেকর্ড প্রকাশ করে – “এই করেছ ভালো নিথুর হে” এবং “তুম ডাক দিয়েছ কোন সভা”।  সুবিনয় রায় খুব হাসিখুশি মানুষ ছিলেন এবং আড্ডা দিতে পছন্দ করতেন।  ‘বুধবার’-এও তিনি ছিলেন সভ্য।
এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটে লাইব্রেরিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রবীন্দ্র সংগীতের উপর সুবিনয় রায়ের লেখা গ্রন্থ “রবীন্দ্রসংগীত সাধনা” ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থে তিনি প্রাঞ্জলভাবে রবীন্দ্রসঙ্গীতের গায়কি, স্বরলিপি, স্বরসাধনা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

পারিবারিক জীবন—-

সুবিনয় রায় শিশুসাহিত্যিক অমরেন্দ্রনাথ দত্তের কন্যা ইন্দিরাকে বিবাহ করেন। তাদের দুই পুত্র- সুরজিৎ ও সুরঞ্জন। সুরঞ্জন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী।

সম্মাননা—

সুবিনয় রায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশিকোত্তম ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত আকাদেমি র আলাউদ্দিন পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাঁকে “রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য” উপাধিতে ভূষিত করে।

জীবনাবসান—

সুবিনয় রায় ৯ জানুয়ারী, ২০০৪ তারিখে কলকাতার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

প্রবাসী ভারতীয় দিবস ২০২৪।

প্রবাসী ভারতীয় দিবস ২০২৪ বা NRI এনআরআই দিবস ২০২৪ (অনাবাসী ভারতীয়)  এটি জানুয়ারি মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।  NRI দিবস ২০২৪ (অনাবাসী ভারতীয়) বা প্রবাসী ভারতীয় দিবস ২০২৪, ৯ ই জানুয়ারী পালন করা হয়।  NRI দিবস ২০২৪ হল সেই দিন যখন মহাত্মা গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে এসেছিলেন।  ভারতের অগ্রগতিতে অনাবাসী ভারতীয় সম্প্রদায়ের অবদানও এই দিনে স্মরণ করা হয়।  ভারতীয় প্রজাতন্ত্র 2003 সালে প্রথমবারের মতো এনআরআই দিবস উদযাপন করেছে।

প্রবাসী ভারতীয় দিবসের ইতিহাস—-

এটি ২০০০ সালে যখন ভারত সরকার প্রবাসী ভারতীয় দিবস পালন করে ৯ জানুয়ারী এনআরআই সম্প্রদায়কে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।  মহাত্মা গান্ধী ৯ জানুয়ারী, ১৯১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন, যা এনআরআই দিবস হিসাবে নবম জানুয়ারীকে তাৎপর্য দেয়। ২০০০ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও, এই দিনটি আসলে ২০০৩ সাল পর্যন্ত পালন করা হয়নি। প্রবাসী ভারতীয় দিবসের পটভূমি সম্পর্কে আরও তথ্য এখানে দেওয়া হয়েছে:

 

এনআরআই দিবসের ধারণাটি ভারতীয় আইনজীবী, কূটনীতিক এবং লেখক এলএম সিংভির কাছ থেকে এসেছে।

তারপরে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী ৯ জানুয়ারী, ২০০২ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে দিনটি ঘোষণা করেছিলেন।

৯ই জানুয়ারী ২০০৬-এ, প্রবাসী ভারতীয় দিবসে OCI (ভারতের বিদেশী নাগরিক) ধারণাটি চালু করা হয়েছিল।

 

এনআরআই দিবস ২০২৪ বা প্রবাসী ভারতীয় দিবস ২০২৪ থিম—-

 

এনআরআই দিবস ২০২৪ বা প্রবাসী ভারতীয় দিবস ২০২৪ থিম এই বছর বিদেশ মন্ত্রকের দ্বারা সেট করা হয়েছে তা এখনও ঘোষণা করা হয়নি।

 

এনআরআই দিবস ২০২৪ বা প্রবাসী ভারতীয় দিবস ২০২৪ তাৎপর্য——-

 

আসুন এনআরআই দিবস বা প্রবাসী ভারতীয় দিবস ২০২৪ এর তাৎপর্য বিস্তারিতভাবে দেখি।

এনআরআই দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ যা ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিদেশে বসবাসরত ভারতীয় সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টাকে স্মরণ করে।  ভারত সরকার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মহাত্মা গান্ধীর ভারতে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে এই দিনটি তৈরি করেছিল।  প্রবাসী দিবস অবশেষে ভারতের অগ্রগতিতে ভারতীয় প্রবাসীদের অবদানকে সম্মান জানাতে তৈরি করা হয়।

প্রবাসী ভারতীয় দিবস উল্লেখযোগ্য যে এটি তাদের ঐতিহ্যের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় জনগণের প্রচেষ্টাকে প্রদর্শন করে।  ভারতের স্বাধীনতার লড়াইকে সমর্থন করার জন্য মহাত্মা গান্ধী নিজেই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে এসে কঠিন যাত্রা করেছিলেন।

 

এনআরআই দিবস বা প্রবাসী ভারতীয় দিবস ২০২৪ এর উদ্ধৃতি—

 

“যা করা কঠিন তা হল মানুষ, স্থান এবং আমার সংস্করণের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা যা দীর্ঘস্থায়ী হবে।”  – রঞ্জনী রাও

“এমনকি অন্ধকারেও আলো আছে এবং সেটাই আধ্যাত্মিকভাবে আলোকিত ভারত।”  – শুভাঙ্গী গোপাল কাম্বলে

“প্রতিটি জীবনই একটি যাত্রা, তা নির্বিশেষে আপনি এক জায়গায় থাকুন না কেন, বিশ্ব যাযাবরের মতো জীবনযাপন করুন বা এর মধ্যে কিছু হয়ে উঠুন।”  – রঞ্জনী রাও

“সর্বশ্রেষ্ঠ জাতিগুলিকে সংজ্ঞায়িত করা হয় কিভাবে তারা তাদের দুর্বলতম বাসিন্দাদের সাথে আচরণ করে।”-জর্জ রামোস

“বাড়ি হাঙরের মুখ না হলে কেউ বাড়ি ছেড়ে যায় না।”- ওয়ারসান শায়ার।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This