Categories
কবিতা

কেউ আসে না : রাণু সরকার।

আজকাল তেমন একটা কেউ আসে না,
আসলে তাদের আসার অপেক্ষাতে তো আজ আর নেই,
কী আর থাকবো- ঝুড়িঝুড়ি প্রশ্ন নিয়ে আসে আমার কাছে।

আসলে এতো প্রশ্নের উত্তর রাখার মতো টুকরি নেই আমার-
আমি আবার এতো ভার বহন করতে পারিনা, কষ্ট হয় ভীষণ।

প্রাপ্তবয়স্ক হলে কি হবে- বহন করার ক্ষমতা আছে বেশ,এতোটুকুও ক্লান্তি নেই ওদের-
সেবার এসে অনেক প্রশ্ন রেখে গেলো, ভালোবেসে না রাগ করে জানিনা বাপু।

আলগোছে রেখেছি তুলে নাড়াচাড়া দেইনি-
আমি একটু আটপৌরে জীবন যাপন করে থাকি, জগৎ সম্পর্কে তেমন কোন কৌতুহল দেখাই না- যখন যা হবার হবে।
জীবন কী বুঝতে ঋতু লাগেনা।

Share This
Categories
কবিতা

পথ : শীলা পল।

আমার ভূষণগুলি একটি একটি করে খুলে দিলাম
অভ্যস্ত হতে হবে অলঙ্কার বিহীন এক নিরাভরণ মানুষ
একটু একটু করে জীবন থেকে চাওয়া পাওয়ার বোধ বিসর্জন দিতে পারলে তবেই তো মুক্ত মনে এক পাখি হতে পারব
সামনের পথ কতটা বাকী জানা নেই
অভ্যাস গুলো রপ্ত করে
চলতে হবে
সাথী পাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই এসব পথে সাথী থাকে না একাই চলতে হয় চলতে হবে
সঙ্গী তোমার মন
তাকে নিয়েই এই নতুন যাত্রা।
শেষ কোথায় জানা নেই
চলতে হয় চলতে হবে।

Share This
Categories
কবিতা

অলীককল্পা : রাণু সরকার।

কল্পায় যাকে রেখেছিলে
তার সন্ধান পেয়েছো কি?

কপটাচারিণী রূপবতীর ছলে
পড়েছো বুঝেছি,
দেখছি একটা মালাও তো রেখেছো
তার জন্য!
খোপায় জড়িয়ে দেবে বুঝি!
সে কি তোমার কল্পাসৃষ্ট নাকি বাস্তব?

এনেছো মনে যেন হয় কুমোরটুলি
থেকে রূপসী সে নারী-
পারছোনা বুঝি নিশ্চল থাকতে
মিথ্যা কল্পায়সৃষ্টি করোনা তারে-
যে মালা গেঁথেছো বাস্তব হলে
দাও না তাকে পড়িয়ে !

নিজের হাতে করো প্রাণ প্রতিষ্ঠা!
শুভ কাজে কখনো করতে নেই দ্বিধা?
একবার অনুমতি নিয়ে নাও-সে যদি রাজি
থাকে!

ধীরে ধীরে করো অনুপ্রবেশ-
অন্তর সঞ্চারিত করে কর বিভূষণ
রেখোনা তারে কল্পায়!
মিষ্টি স্পর্শ করো শিল্পকুশলে
নাড়া দাও তার অনুভূতিতে
প্রাণ প্রতিষ্ঠা করো নিজের হাতে!

Share This
Categories
কবিতা

আত্মদর্প : রাণু সরকার।

আমরা সবাই জানি সংসারের সার
অলক্ষ্যে নির্দেশ করেন ঈশ্বর-
সবকিছু রেখে চলে যেতে হবে এও সর্বসাধারণের জানা
সময় যে দ্রুত ফুরায় সেও নয় অজানা।

তবে কেন সর্বসাধারণের আত্ম অহংকারের ঘোর,
দরিদ্র কে দিতে হলে কিছু করে হাতজোড়
রক্তের তেজ যতদিন আছে ততদিন বুঝি ক্ষমতার জোর।

মানুষকে- কেন ভাবতে পারে না মানুষ ঈশ্বর, কেন করিনা নিবেদন নর-নারায়ন?

দেখ আমরা আসন পেতে কত রকমের করি পূজন-
আমাদের বিশ্বাস প্রাণের প্রবাহ,
ঈশ্বরের ছোঁয়াতে কাটে হৃদয়ের দাহ।

আমাদের আবার কিসের বাড়ি কিসের ঘর
আমার আমিকে চিনতে কেটে যায় কত প্রহর।

শোন বলছি আমার কিছু কথা,
আমার আমিকে নিয়ে কোর না মাথা ব্যথা।

Share This
Categories
কবিতা

দৃষ্টিশক্তিহীন : রাণু সরকার।

আমারি শহরে রেললাইনের গা ঘেঁষে বসবাস করে
সংখ্যাতীত অশ্রুসিক্ত মানুষ,
আমি বেড়িয়ে ছিলাম অশ্রুহীন চোখ দেখবো বলে,
তা আর হলো না দেখা-ওদের নেত্রপল্লব বিরামহীন সিক্ত থাকে। আমি ওদের পাশে দাঁড়াতেই নিষ্পাপ কিছু প্রাণ আমায় ধরে- নয়নীর গাল বেয়ে পড়ছে অশ্রুকণা-কিছু বলার সুযোগই পেলাম না। ওদের কথা নীরবে শুনে গেলাম আমি বাকরুদ্ধ ।

এরাই তো ডোবায় পদ্ম ফোটায় তবুও এতোটুকু ক্লান্তি নেই ওদের মনে, চোখের জল সাথে নিয়ে শিটা ধরা দাঁতে করুণ এক গাল হাসি। হয়তো কষ্ট করে কয়েক লাইন বিদ্যা করেছে মুখস্থ – তবে সবাই নয় কেউ কেউ, লজ্জায় বা অর্থের অভাবে কিংবা ছোট ছোট ঝুপড়ির পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে থাকতে হয় যে-তাই আর হলো না বিদ্যা মুখস্থ করা।

তোমরা যারা ডোবায় ফোঁটাও পদ্ম আমার জন্য রেখে দিও হাজার ফোঁটা অশ্রুকণা-আমার অস্পষ্ট দৃষ্টি যদি
স্পষ্ট হয়ে নিবেদনের উপযুক্ত হয় তবে নিজেকে স্নেহধন্যা মনে হবে, আমি হাত প্রসারিত করে আছি তোমাদের জন্য।

Share This
Categories
কবিতা

অরণ্যে রোদন : রাণু সরকার।

এক বৃদ্ধ বাবা রিক্সা চালায় নিজের রুটিরুজির জন্য,
চলার পথে মনে মনে কষ্টের দর্পণ বিক্রয় চলে-
কিন্তু সেই আরশিতে হিংস্রের প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে না,
এতোটাই পাষাণ তার ঔরসজাতরা।

বৃদ্ধ বাবার কান্নাটা তো অরণ্যের রোদন।

যৌবনের উদযাপন সমাপ্তি-
এই বয়সে এসে মা-বাবা দু’ভাগে হয় বিভক্ত।
কিন্তু পারেনি বিভক্ত করতে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে,
তারা দূরে অনেক দূরে চলে যায়, লোকালয়ের আড়ালে।

Share This
Categories
কবিতা

হলো না দেখা : রাণু সরকার।

সুখ-দুঃখ-আনন্দ, আরো কত কি লিখলাম-
লেখার শেষে সবটাই দেখলাম কিন্তু শেষের লাইন কটা হলো দেখা,
জানেন খুঁজে পেলাম না শেষের কয়েকটা
লাইনের মানে–
তাই না বলুন-লেখা তো শুধু মন কলমের হয়!
মন কালির যে কত কষ্ট ভাবুন,কে তা বোঝে
তার আঘাতে কতটা ক্ষত হলো কেউ কি তা জানে!
শেষের লাইন কটা লিখলাম বটে নেশার ঘোরে ভয়ে আর দেখিনি যদি ক্ষতের গভীরতা যায় বেরে!
তাই ওদের সাধিন করলাম অন্যের দৃষ্টিপাত থেকে!!

Share This
Categories
কবিতা

এসো হে বৈশাখ :: অজয় কুমার রজক।

মাঠ- ঘাট ফুটি ফাটা জলাশয় শুন্য,
লু বয় চারিদিকে বিমর্ষ অরণ্য।
শুকিয়ে গেছে নদী- নালা- পুকুর,
পথপাশে ক্লান্তিতে ধুঁকছে কুকুর।
সারাদিন ঘাম ঝরে,
গাছের পাতা কই নড়ে?
শ্রমজীবী মানুষগুলির নিদারুণ কষ্ট,
কত কত শ্রম দিবস হচ্ছে নষ্ট।
পাখিরা উড়ে জলের খোঁজে,
তাদের ব্যথা কয়জন বোঝে?
স্কুল কলেজ বন্ধ আজ,
শিকেয় উঠেছে পড়াশোনার কাজ।
উগ্রমদ্য সম রৌদ্র, তপ্ত বালুকণা,
যেন বিষাক্ত কাল নাগিনীর উদ্ধত ফনা।
দুপুর রাতে ঘুম নেই গরমে জেরবার,
তারই মাঝে লোডশেডিং বারবার।
প্রাণ করে হাঁসফাঁস,
কি নির্মম বৈশাখ মাস।
এনো কালবৈশাখী, এনো শান্তির বারি,
তোমার সাথে নেই মোদের কোন আড়ি,
এসো হে বৈশাখ, এসো এসো।

Share This
Categories
কবিতা

তাপদগ্ধ ::: রাণু সরকার।।

নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় একা বসে-
পুরোন কিছু স্মৃতি দ্রুতবেগে
এসে বসলো মনের
কোণে,
লাগছিলো বেশ-

সযত্নে নিলাম তাদের-
রাত কাটে পুরোন কথা বলে বলে–
ভালোবেসে একসময় স্পর্শও
করেছিলো!
রেখেছি বুকের অগোচরে
বেঁধে ইতিবৃত্ত!

যে-মালাটি পরিয়েছিলো-
ফুলগুলো তাপদগ্ধ
ঝরে পড়তে দেইনি নিচে!

Share This
Categories
কবিতা

অব্যক্ত  ::: রাণু সরকার।।।

মাঝে মাঝে অব্যক্ত কথারা দেয় হানা
যায় না প্রকাশ করা-
একেবারেই একান্ত সংলাপ,
উচ্চারণ করলে ভ্রষ্টচরিত্র ভাবাটাই স্বাভাবিক,
মনের চোখে হয়তো সে- বাঁধা-
খুঁজে পেলে মন চাইবে ঘনিষ্ঠ হতে
যদিও সম্ভব না-

ইচ্ছেদের ভীষণ ধৈর্য্য হয়-
তবুও অপেক্ষা করা;
অপেক্ষা করে না পেলে হয় যন্ত্রণা-
মনের চাওয়া পাওয়া বোঝা কষ্টকল্পিত,
মন কোন দিন পাবে না যাকে
তাকেই চায়-
মন যমুনার জল ঢালের দিকে যায় গড়িয়ে।

Share This