Categories
অনুগল্প

এক শ্রাবণের কথা : রাণু সরকার।

শ্রাবণের আকাশে কালো মেঘের পুঁজিতরাশি,
এই বুঝি এলো বর্ষা রাণী, স্বামী-পুত্র গেছে মাঠে,
ধেয়ে এলো ঘনকাল ও মাগো মা নিমেষে হলো এক হাঁটু জল মাঠ ঘাট হলো এক বোঝা দায়।
হায়-রে শ্রাবণের ধারা দেখো দেখো ধানের মাথা গুলো করছে যেন বিনয়ী বাতাসের তাড়নায়।

গরু-ছাগলের পাল দিচ্ছে কি হাঁক ডাক,গোগৃহ তো জলে ডুবুডুবু গা যাচ্ছে ওদের ভিঁজে। এতোগুলো গাই বাছুরের পাল রাখি কোথায়, কে যানতো এভাবে শ্রাবণেরধারা বৈবে অবিরাম।

সূর্য এই বুঝি দিলো ডুব তবে যায় না দেখা মনে হয় একটু আছে বাকি,
বোঝার কি উপায় আছে আঁধার রেখেছে যে ঘিরে।
এখনো কি পারছে না বুঝতে তারা হুঁশ নেই কি একদম,একা কি করে দেই সব সামাল বৃদ্ধা শ্বাশুড়িটাও পরে আছে বিছানায়।
দুয়ারে এক হাঁটুজল দাঁড়িয়ে দেখছি-কারুর দেখা নেই,ঘনঘন বিদ্যুতের চমকানি,
একা গৃহে ভয়ে ভয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত,
তাকে বলেছিলাম-বেলা না গড়ায় বাব,ছেলে এসো ফিরে তাড়াতাড়ি ঘরে, কে কার কথা শোনে,
সকাল থেকেই ছিলো মেঘেদের মুখ ভার করছিলো তারা কানাকানি।

তখনি বুঝেছি আসবে ধেয়ে নেবে সব ভাসিয়ে ক’দিন আগেই বলেছিলাম গোয়াল ঘরের চালটাতে ঘর চাপাতে হবে কানে নেয় নি কথা।

হঠাৎই কানে এলো কে যেন ডাকছে,বউঠান বাব-বেটা ফিরেছে কি ঘরে?
আমি বলি না গো দাদাঠাকুর ফেরেনি এখনো তারা।
আচ্ছা দাঠাকুর এই বর্ষার কচুপাতা মাথায় দিয়ে বেরিয়েছেন কেনো? কেনো জানো না বউঠান? আমাদের কালো গাইটা গাভিন ভীষণ ডাকছে-ওর খাবার যে নাই – কিছু ঘাস যদি পাই, এই বর্ষায় সব গেছে ডুবে কোথায় ঘাস পাবেন? দেখি হাতড়িয়ে কিছু তো পাবো- আমার কথা ছাড়ো।

দেখ দেখি কি মুশকিলের কথা,তারা কি বোঝে
না দু’কূল গেছে ভেসে, ঘরে ফিরলে খবর দিও বউঠান।
বলেছিলেম তো তারে বেলা থাকতেই যেন আসে ফিরে ঘরে।
গৃহিণীর কথা বাসি হলে লাগে কাজে।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *