আমার মনের বনে লাগালে আগুন,
একবার দেখনি তোমার মরমি চোখে?
হৃদয়টা পুড়ে হলো ভষ্যিভূত সে ব্যথা কি পারবো জানাতে লোককে।
যে প্রহার দ্বারা দণ্ডদান দিয়ে ছিলে
গাঢ় ছিলো তার ক্ষত,
কোনদিন লাগবেনা জোড়া, জ্বলন ধরবে অনবরত।।
মনের দহন : রাণু সরকার।

তুমি আমার স্বপ্নে থেকে ছিলে
চিরদিনের জন্য না বলে গেলে হারিয়ে,
তোমার এভাবে হারিয়ে যাওয়াটা আর পারছিনা নিতে মানিয়ে।
পেয়েছিলাম স্বপ্নে মুক্তো,হারিয়ে গেলো, পারলাম না বাস্তবে করতে সৃষ্টি,
গোপনে সবে শুরু করেছিলাম রাখা
যদি কারো পড়ে কুদৃষ্টি।
ভুলতে পারছি না
ক্ষণে ক্ষণে চোখে ভাসে তোমার মুখখান,
হৃদয় আমার মায়াময় তাই তো বিঁধলো পুষ্পবাণ।
স্বপ্নে তোমায় চুম্বন করি,মনে হয় পান করি মদিরা,
হয়ে যাই অবশ,
তোমার ঠোঁটে কি আছে গো,
পাগল হোলাম নেশা লাগা ঠোঁটের পরশ।
স্বপ্নেও ভাবিনি ক্ষণিকের জন্য এসে তুমি কাঁদিয়ে যাবে চলে,
আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেলো সকাল সন্ধ্যা সব উৎসবের আলো,
তুমি তো জানতে চলে যাবার সময় নিকটে
তবে কেনো এসেছিলে।।
পুরুষদের কি কাঁদতে নেই?
হ্যাঁ, আছে তো।
পুরুষদেরও কষ্ট আছে অনেক–
অব্যক্ত কষ্ট সাথে করে চলতে হয় সবসময়-
লোহার বর্মে তো পুরুষ আচ্ছাদিত নয় যে কাঁদবে না-
হ্যাঁ, পুরুষরাও কাঁদে।
তবে পুরুষের কাঁদা দিনের আলোর আড়ালে থাকে, অনেক কষ্টের বাসনা-
কষ্টের নানান প্রকাশভঙ্গি।
বৃষ্টি ভেজা দিনে অনেক পুরুষ কাঁদে
যাতে অশ্রুধারা মিশে যায় বৃষ্টিধারায় অন্যের অসাক্ষাতে।
রুটি-রুজির কথা ভাবতে ভাবতে ভাবতে কাঁদা তাদের ফুরিয়ে যায়-
রুজিরোজগার ভাবনা দেয় না তাদের কাঁদতে।
ভোরের আলো ফোটার আগেই শুরু হয় তাদের অভিযান রুজির সন্ধান।
রাতের অন্ধকারে তাদের ঘরে ফেরা
শুধু পরের দিনের আলো ফোটার অপেক্ষায়।
কাঁদতে গেলেই কে যেন টেনে ধরে তাদের,
এ বলে আমার এটা নেই,
ও বলে আমার ওটা নেই।
পরিবারের বায়না মেটাতে মেটাতেই ভুলে যায় নিজের জন্য একটু কেঁদে হালকা হওয়া।
এই নেইগুলো আনতে আনতেই ভুলে যায় তার নিজের কথা-
অর্ধেক কাঁদা যে রেখে এসেছিলো ওটা আর পরে খুঁজে পায় না-
তাই আর হয় না তাদের কাঁদা সারা।
সহ্য করতে যখন আর পারে না তখন ছিটকে বেরিয়ে এসে ডুকরে ডুকরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে-
আবার কখনো বুকে হাত রেখে বোবা চিৎকার করে-
কেউ যেন না দেখে।
কেউ না দেখুক একজন কিন্তু দেখে- সে হলো অন্তর্যামী।
সময়-রুটি-রুজি কাঁদতে দেয় না-
তাই পুরুষের কাঁদা কেউ দেখতে পায় না-
বুকে থেকে যায় কষ্টগুলো।
হয়তো খুঁজলে দেখা য়াবে বুকে কত পলির স্তর জমে আছে।
কিছু নারী স্তর দেখতে পায়-
শুধু দেখতে পেলে হবে না
হৃদয়ঙ্গম করতে ও তো হবে-
তা না হলে বোঝা যাবে না
তার কতটা কষ্ট।
পুরুষের পলির স্তর কত দূর পর্যন্ত
সেটা সব নারী দেখতে পায় না বা দেখতে চায় না-
এই স্তর দেখতে হলে দিব্যজ্ঞানী হতে হবে নচেৎ দেখতে পাবে না।
কিন্তু তাহলে নারীকে অনেক কিছু ত্যাগ করতে হবে।
হ্যাঁ কিছু নারী আছেন ত্যাগী তারা দেখতে পায়-
আবার কিছু নারী আছেন দেখতে পায় না।
আমার দেখা অনেক আছে বলিও তাদের মাথা নিচু করে রাখে কোন উত্তর করে না, এই গুণটা আছে ভালো- হয়তো বুঝেতে পারে তাই চুপ থাকে,
অনেকে সুধরেও গেছেন আমার বলাতে।
আজ ৮জুলাই। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই। ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক) ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’র উদ্যোগে, পালিত হয় ‘জ্যোতিষ বিরোধী দিবস’
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯১৪ – জ্যোতি বসু, ভারতীয় বাঙালি কমিউনিস্ট নেতা ও পশ্চিমবঙ্গের নবম মুখ্যমন্ত্রী।
১৯৩৯ – মার্কিন ধনকুবের ডেভিড রকফেলার।
১৯৪৯ – ইয়েদুগুরি সন্দিন্তি রাজশেখর রেড্ডি, ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
১৯৫১ – অ্যাঞ্জেলিকা হিউস্টন, মার্কিন অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র পরিচালক ও স্মৃতিকথাকার।
১৯৬৬ – রেবতী, ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯৭২ – সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, ভারতীয় ক্রিকেটার ও অধিনায়ক।
১৯৮১ – আনাস্তাসিয়া মিসকিনা, রুশ প্রমিলা টেনিস তারকা।
১৮৩৯ – জন রকফেলার,মার্কিন শিল্পপতি, উদ্যোক্তা ও জনদরদী।
১৮৭৫ – জার্মান দার্শনিক এর্নস্ট ব্লখ।
১৮৯২ – ইংরেজ লেখক রিচার্ড অলডিংটন।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
২০০৬ – দীর্ঘ ৪৪ বছর বন্ধ থাকার পর নাথুলা পাস সীমান্তপথটি ভারত চীনের সাথে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে খুলে দেয়।
২০১৮ – বাংলাদেশ সংবিধানের সপ্তদশ সংশোধনী পাশ হয়।
১৯১৮ – ভারতের সংবিধান সংস্কার সম্পর্কে মন্টেগু-চেমসফোর্ড রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
১৯২০ – ব্রিটেন কেনিয়া অধিগ্রহণ করে।
১৯৩৭ – তুরস্ক, ইরান, ইরাক ও আফগানিস্তান সান্দাবাদ চুক্তিতে সই করেছিল।
১৯৪৮ – আমেরিকা প্রথম বিমানবাহিনীতে মহিলা নিয়োগ করে।
১৯৭২ – প্রথম আরব মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় ইরাক।
১৯৯০ – আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে পশ্চিম জার্মানি বিশ্বকাপ ইতালিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়।
১৮০৭ – রাশিয়ার তিলসিত এলাকায় বিখ্যাত তিলসিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৮৫৮ – সিপাহি বিদ্রোহের অবসানের পর লর্ড ক্যানিং ‘শান্তি’ ঘোষণা করেন।
১৭৬০ – ফ্রান্স-ভারত যুদ্ধে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী শেষ নাভাল যুদ্ধে ফ্রান্সকে পরাজিত করে।
১৪৯৭ – ভাস্কো দা গামা লিসবন থেকে ভারত অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০১ – অমিয়ভূষণ মজুমদার,বাঙালি কথাসাহিত্যিক।
২০০৩ – সুভাষ মুখোপাধ্যায় (কবি), বিংশ শতাব্দীর উল্লেখযোগ্য ভারতীয় বাঙালি কবি ও গদ্যকার।
২০০৬ – জুন অ্যালিসন, মার্কিন অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী ও গায়িকা।
২০১১ – আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী।
২০১৫ – আমজাদ খান চৌধুরী, ব্যবসায়ী, শিল্প উদ্যোক্তা এবং প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তা।
২০২২ – শর্মিলী আহমেদ বাংলাদেশী টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।
২০২২- খুরশিদ আলম খান, বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক।
২০২২ – শিনজো আবে, জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
১৯৩৩ – ইংরেজ ঔপন্যাসিক অ্যানথোনি হোপ।
১৯৪৮ – ডেভ নোর্স, দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার।
১৯৬৭ – ভিভিয়েন লেই,অস্কার বিজয়ী বৃটিশ অভিনেত্রী।
১৯৯৪ – উত্তর কোরিয়ার সাবেক নেতা ও সেদেশের কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব কিম ইয়েল সুং।
১৯৯৭ – আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, বাংলাদেশের ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি।
১৮২২ – পার্সি বিশি শেলি,ঊনিশ শতকের প্রথম দিকের ইংরেজ কবি।
১৮৫৫ – মেরু অভিযাত্রী স্যার উইলিয়াম এডওয়ার্ড পিয়ারি।
১৮৭৭ – বাংলা সংবাদপত্র জগতের অন্যতম পুরোধা জন ক্লার্ক মার্শম্যান।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।
ক্রিকেট ভালোবাসেনা এমন একজন ভারতীয় খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আমাদের দেশের মানুষ ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ। এখানে ফুটবল যতটা না জনপ্রিয় তার চেয়ে কয়েকগুন বেশী জনপ্রিয় ক্রিকেট। যখন দেশের খেলা থাকে মানুষ ভুলে যায় নাওয়া খাওয়া। আর যারা ক্রিকেট ভালবাসেন তাদের কাছে সৌরভ গাঙ্গুলী এক অতি পরিচিত, জনপ্রিয় ও আবেগের নাম। সকলের প্রিয় দাদা। শুধু ক্রিকেট ভক্তরা’ইবা কেন বলি, প্রতিটি ভারতবাসির কাছে তিনি এক অতিপরিচিত নাম। ভারতীয় ক্রিকেটের খোল নলচে পালটে দিয়ে ছিলেন তিনি। বলা চলে তার হাত ধরে ভারতীয় ক্রিকেটের আধুনিকতায় পৌঁছনর প্রথম ধাপ শুরু হয়ে যায়। চোখে চোখ রেখে কথা বলা, আগুনে আগ্রাসি মনোভাবের সঞ্চার ঘটিয়ে ছিলেন তিনি। সেই আমাদের সকলের প্রিয় সৌরভ ওরফে দাদা র আজ জন্মদিন। এই বিশেষ দিনে তার জীবনের কিছু কথা তুলে ধরলাম।
সৌরভ চণ্ডীদাস গাঙ্গুলী ( জন্ম ৮ জুলাই ১৯৭২), দাদা নামেও তিনি পরিচিত (অর্থাৎ “বড় ভাই” বাংলায়), এবং একজন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার। তাকে ভারতীয় ক্রিকেটের মহারাজা বলা হয়। তিনি ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ছিলেন এবং ভারতের অন্যতম সফল ক্রিকেট অধিনায়ক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অধিনায়ক হিসেবে, তিনি ভারতীয় জাতীয় দলকে ২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে নিয়ে যান।
সৌরভ গাঙ্গুলী ৮ জুলাই ১৯৭২-এ কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি চণ্ডীদাস এবং নিরূপা গাঙ্গুলীর কনিষ্ঠ পুত্র। চণ্ডীদাস একটি সমৃদ্ধ প্রিন্ট ব্যবসা চালাতেন এবং শহরের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ছিলেন। গাঙ্গুলির একটি বিলাসবহুল শৈশব ছিল এবং তার ডাকনাম ছিল ‘মহারাজা’, যার অর্থ মহান রাজা। গাঙ্গুলির বাবা চণ্ডীদাস গাঙ্গুলি দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে ৭৩ বছর বয়সে মারা যান।
যেহেতু কলকাতার মানুষের প্রিয় খেলা ছিল ফুটবল, তাই গাঙ্গুলি প্রথমে এই খেলার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। নিরূপা গাঙ্গুলি ক্রিকেট বা অন্য কোন খেলাকে ক্যারিয়ার হিসাবে গ্রহণ করার পক্ষে খুব বেশি সমর্থন করেননি। ততক্ষণে, তার বড় ভাই স্নেহাশীষ বাংলা ক্রিকেট দলের একজন প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার ছিলেন। তিনি গাঙ্গুলির একজন ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নকে সমর্থন করেছিলেন এবং গাঙ্গুলিকে একটি ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পে নাম লেখাতে বলেছিলেন।
গাঙ্গুলী তখন দশম শ্রেণীতে পড়ছিলেন।
ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও, গাঙ্গুলি বাঁ-হাতি ব্যাট করতে শিখেছিল যাতে তিনি তার ভাইয়ের খেলার সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে কিছু প্রতিশ্রুতি দেখানোর পর তিনি একটি ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হন। তাদের বাড়িতে একটি ইনডোর মাল্টি-জিম এবং কংক্রিটের উইকেট তৈরি করা হয়েছিল, যাতে তিনি এবং স্নেহাশিশ খেলাটি অনুশীলন করতে পারেন। তারা বেশ কিছু পুরানো ক্রিকেট ম্যাচের ভিডিও দেখতেন, বিশেষ করে ডেভিড গাওয়ারের খেলা, যাকে গাঙ্গুলি প্রশংসিত করেছিল। উড়িষ্যা অনূর্ধ্ব-১৫ দলের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করার পর, তাকে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক করা হয়, যেখানে তার বেশ কয়েকজন সতীর্থ তার অহংকার বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। তার প্লেম্যানশিপ তাকে ১৯৮৯ সালে বাংলার হয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ করার সুযোগ দেয়, যে বছর তার ভাইকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
তিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী ডোনা গাঙ্গুলীকে বিয়ে করেছেন, তার একটি কন্যা সানা (জন্ম ২০০১) রয়েছে।
সৌরভ গাঙ্গুলি তার ওডিআই ক্যারিয়ারে ১১৩৬৩ রান করেছেন যা ওয়ানডে ম্যাচে সবচেয়ে বেশি রান করার জন্য বিশ্বের নবম অবস্থানে রয়েছে। শচীন টেন্ডুলকার এবং ইনজামাম উল হকের পর তিনি তৃতীয় ব্যাটসম্যান যিনি একদিনের ক্রিকেটে ১০০০০ রান পূর্ণ করেছিলেন। ওডিআই ক্রিকেট বিশ্বকাপে একজন ভারতীয় ব্যাটসম্যানের এক ইনিংসে সর্বোচ্চ স্কোর (১৮৩) করার রেকর্ড তার দখলে। ২০০২ সালে, উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমানাক তাকে সর্বকালের ষষ্ঠ সর্বশ্রেষ্ঠ ওডিআই ব্যাটসম্যান হিসেবে স্থান দেয়। তিনি ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এবং ২০১২ সালে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।
গাঙ্গুলি ২০০৪ সালে চতুর্থ সর্বোচ্চ ভারতীয় বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন। তিনি ২০১৯ সালে বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি আইপিএল স্পট ফিক্সিং এবং বেটিং কেলেঙ্কারির তদন্তের জন্য ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত তদন্ত প্যানেলেরও একজন অংশ।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া।।
চকলেট খেতে কে না ভালোবাসে। চকলেট অনেকের কাছেই এক দুর্বলতা। চকলেট শুধু স্বাদেই ভালো নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। ডার্ক চকলেট খাওয়া কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। হার্টের স্বাস্থ্য এবং রক্তচাপের উন্নতিও ডার্ক চকলেট থেকে দেখা যায়। চকলেটের অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে তা নিয়ম মেনে খাওয়া উচিৎ। একই সময়ে, এটি অতিরিক্ত ওজন হ্রাস এবং ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, স্ট্রোক, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, নার্ভাসনেস এবং অস্থিরতা, কিডনির উপর প্রভাবের ঝুঁকি সৃষ্টি করে। পেটে ব্যথা এবং হাড়ের ব্যথার মতো সমস্যাও হতে পারে। অতএব, এটি সীমিত পরিমাণে এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একটি জিনিস সকলের শরীরে সমান ভাবে প্রভাব ফেলে না।
পাশাপাশি চকলেট বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে প্রদানের চল আছে, যা আজও বহমান। তাই এই ভালোবসার জিনিসটির ওপরে আজকের দিনটি বিশেষ ভাবে পালিত হয়। আজ বিশ্ব চকলেট দিবস। বিশ্ব চকলেট দিবস, কখনও কখনও আন্তর্জাতিক চকলেট দিবস হিসাবে পালন করা হয়। বিশ্বব্যাপী ৭ জুলাই, বিশ্ব চকলেট দিবস ২০০৯ সাল থেকে পালন করা হয়।
প্রতি বছর এই দিনটিতে বিশ্বজুড়ে চকলেট প্রেমীরা তাদের প্রিয় খাবারে কোনো বাধন ছাড়াই খেতে দেখা যায় । চকলেট দুধ, গরম চকলেট, চকলেট ক্যান্ডি বার, চকলেট কেক, ব্রাউনিজ বা চকলেটে আচ্ছাদিত যেকোনো কিছু সহ চকলেট থেকে তৈরি সব ধরনের জিনিস দিয়ে দিনটি উদযাপন করে ।
জানা যায় চকলেট গ্রীষ্মমন্ডলীয় থিওব্রোমা ক্যাকো গাছের বীজ থেকে আসে। কোকো বিনগুলিকে অনেক জায়গায় ম্যাজিক বিন বলা হয়। কমপক্ষে তিন সহস্রাব্দ ধরে চাষ করা হয়েছে এবং মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা এবং উত্তর দক্ষিণ আমেরিকায় এটি বৃদ্ধি পায়। প্রায় ১১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কোকো বীজ ব্যবহার করার প্রথম পরিচিত পাওয়া যায় । বিশ্ব চকলেট দিবসে মেরিঙ্গু পাই, মিল্ক চকলেট পুডিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের চকলেট কেক বেকারি, কফি শপ এবং অনেক দোকানে দেখা যাবে। এই দিনটি উদযাপন করার জন্য, লোকেরা তাদের বন্ধু, আত্মীয় এবং পার্টনারকে চকলেট উপহার দেয়।
চকলেটের ইতিহাস প্রায় ২৫০০ বছরের পুরনো বলে জানা যায়। অ্যাজটেক (অ্যাজটেক ছিল একটি মেসোআমেরিকান সংস্কৃতি যা মধ্য মেক্সিকোতে ১৩০০ থেকে ১৫২১ সাল পর্যন্ত উত্তর-শাস্ত্রীয় যুগে বিকাশ লাভ করেছিল।) চকলেট আবিষ্কার করে প্রথম। তারা বিশ্বাস করত যে এটি জ্ঞানের দেবতা কোয়েটজালকোটল তাদের দিয়েছিলেন। তারা অন্যান্য জিনিস লেনদেনের জন্য কোকো ব্যবহার করত বা বলুন, কোকো বীজ মুদ্রা হিসাবে ব্যবহৃত হত।
জনা যায় ১৬ শতক পর্যন্ত, চকলেট তেঁতো ছিল। বলা হয় যে ১৫১৯ সালে, স্প্যানিশ অভিযাত্রী হার্নান কর্টেসকে একটি চকোলেট পানীয় দেওয়া হয়েছিল, যা তিনি তার সঙ্গে স্পেনে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং ভালো স্বাদের জন্য এতে ভ্যানিলা, চিনি এবং দারুচিনি যোগ করেছিলেন। স্বাদ পরিবর্তনের পর, চকলেট সারা বিশ্বে পছন্দ হতে শুরু করে। এর পরে, ১৫৫০ সালে, ইউরোপে প্রথমবারের মতো ৭ জুলাই চকলেট দিবস পালিত হয়। এর পরে, এটি বিশ্বের অনেক দেশে পালিত হতে শুরু করে।
অনেক বড় বড় চকলেট কোম্পানি ঊনিশ এবং বিংশ শতকে শুরু হয়েছিল। ১৮৬৮ সালে ক্যাডবেরি, ইংল্যান্ডে শুরু হয়েছিল। ২৫ বছর পরে, মিল্টন এস দ্বারা শিকাগোতে ওয়ার্ল্ডস কলম্বিয়ান এক্সপোজিশনে চকলেট প্রক্রিয়াকরণ সরঞ্জাম কেনা হয়েছিল। হার্শে এখন বিশ্বের বৃহত্তম এবং বিশ্বখ্যাত চকলেট নির্মাতাদের একজন। তিনি চকলেট-কোটেড ক্যারামেল উৎপাদন করে কোম্পানিটি শুরু করেছিলেন। নেসলে ১৮৬০-এর দশকে উদ্ভূত হয়েছিল এবং বিশ্বের বৃহত্তম খাদ্য গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটিতে পরিণত হয়েছে।
তবে আবার বিভিন্ন দেশে চকলেট দিবস বিভিন্ন সময় উদযাপন করাও হয়ে থাকে। যেমন ২৮ অক্টোবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় চকলেট দিবস। ইউএস ন্যাশনাল কনফেকশনার্স অ্যাসোসিয়েশন ১৩ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক চকলেট দিবস হিসাবে তালিকাভুক্ত করে, যা কাকতালীয়ভাবে চকলেট উৎপাদক মিল্টন এস. হার্শে (জন্ম: ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮৫৭) এর জন্ম তারিখের সাথে মিলে যায়। ঘানা, কোকোর দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদক, ১৪ ফেব্রুয়ারি চকলেট দিবস উদযাপন করে। লাটভিয়ায়, ১১ জুলাই বিশ্ব চকলেট দিবস পালিত হয়।
তাই যদি দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে চান তবে প্রিয়জনদের বা কাছের মানুষ, বন্ধু বান্ধবদের চকলেট গিফ্ট করে সবাইকে চমকে দিন বা আপনার প্রিয়জনকে এক বাক্স চকোলেট এবং ফুল পাঠান উপহার হিসাবে। আর বিশ্ব চকলেট দিবস সম্পর্কে যারা জানেন না তারা আপনার সাথে উদযাপন করতে পেরে রোমাঞ্চিত হবেন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
আজ ৭ জুলাই। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই। ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
দিবস—–
(ক) বিশ্ব চকলেট দিবস
(খ) আজ বিশ্ব সমবায় দিবস।
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০১ – ভিত্তোরিও দে সিকা, ইতালীয় চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯০৫ – প্রবোধকুমার সান্যাল প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক সাংবাদিক ও পরিব্রাজক ।
১৯১৪ – অনিল বিশ্বাস, ভারতীয় সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক।
১৯২০ – দিলীপকুমার বিশ্বাস প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসের একজন দিকপাল ঐতিহাসিক ।
১৯৪৪ – আইভি রহমান, বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও সমাজকর্মী।
১৯৪৪ – ইয়ান উইলমুট, ইংরেজ ভ্রুণতত্ত্ব বিজ্ঞানী এবং এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কটিশ সেন্টার ফর রিজেনারেটিভ মেডিসিন বিভাগের সভাপতি।
১৯৬৩ – পাকিস্তানের টেস্ট অলরাউন্ডার নাভিদ আনজুম।
১৯৬৫ – আমেরিকান অভিনেত্রী কারেন মালিনা হোয়াইট।
১৯৬৭ – পল ফারব্রেস, ইংরেজ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার।
১৯৮১ – মহেন্দ্র সিং ধোনি, ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার এবং সাবেক অধিনায়ক।
১৯৮২ – মমতাজ আলীয়া আকবরী, বাংলাদেশী মডেল, উপস্থাপক, অভিনেত্রী।
১৯৮৪ – মোহাম্মদ আশরাফুল, বাংলাদেশী আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার এবং সাবেক অধিনায়ক।
১৯৮৮ – কেটি পার্কিন্স, নিউজিল্যান্ডীয় প্রমিলা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৯২ – স্প্যানিশ অভিনেত্রী ও গায়িকা নাথালিয়া রামোস।
১৮০৬ – ইতালিয়ান ইতিহাসবিদ ও মন্ত্রী মাইকেল আমারি।
১৮৮৭ – চিত্রশিল্পী মার্ক শাগাল।
১৮৮৮ – বাঙালি কবি ও সাহিত্যিক নরেন্দ্র দেব।
১১১৯ – জাপানের সম্রাট সোতুকু।
১০৫৩ – জাপানের সম্রাট সিরাকাওয়া।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
২০০৪ – ১২২ বছর পর শুক্র গ্রহের ট্রানজিট বাংলাদেশের আকাশে পরিষ্কার দেখা যায়।
২০০৫ – লন্ডনের তিনটি মেট্রো স্টেশন এবং একটি বাসষ্ট্যান্ডে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে ৫০ জন নিহত এবং ৭০০ এরও বেশি মানুষ আহত হয়।
১৯০৪ – নরওয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯০৫ – লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গ ঘোষণা করেন।
১৯২৭ – বিবিসি প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ডের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে।
১৯২৯ – ভ্যাটিক্যান সিটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করে।
১৯৩১ – বিশিষ্ট ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাস সাইকেলে চড়ে বিশ্ব পরিভ্রমণ শুরু করেন।
১৯৩২ – মন্ট্রিলের ক্রিকেট ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করেন স্যার ডোন্যাল্ড ব্র্যাডম্যান।
১৯৩৭ – উত্তর চীনে জাপান হামলা চালায়।
১৯৪৮ – বিশেষ আইন বলে স্বাধীন ভারতে প্রথম বহুমুখী নদী উপত্যকা প্রকল্প ‘দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন’ (সংক্ষেপে ডিভিসি) স্থাপিত হয়।
১৯৫০ – যুক্তরাষ্ট্রের সভাপতিত্বে কোরিয় বিষয় পরিচালনা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা।
১৯৫৭ – চীনের পর্বতারোহীরা নতুন বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেন।
১৯৭১ – জেড ফোর্স (বাংলাদেশ) গঠন দিবস
১৯৭২ – টানাকা কাখুই জাপানের প্রধানমন্ত্রী হন।
১৯৭৩ – ইরাকে সরকার উৎখাতে জড়িত থাকার দায়ে ২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড।
১৯৭৭ – সলোমন দ্বীপপুঞ্জের স্বাধীনতা লাভ।
১৯৭৮ – উত্তর পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত সোলাইমান দ্বীপপুঞ্জ স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৮২ – কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা গোষ্ঠীর ইংরেজী দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ প্রকাশিত হয়।
১৯৮৭ – ভারতে বাসে শিখ চরমপন্থীদের হামলায় ৪৬ হিন্দু নিহত।
১৯৯১ – বাংলাদেশে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইন পাস।
১৯৯১ – জর্দানে সামরিক শাসন প্রত্যাহার।
১৮৫৫ – ব্রিটিশবিরোধী সাঁওতাল বিদ্রোহ ব্যাপকতা ও বিস্তার লাভ করে।
১৮৯৬ – বোম্বাইয়ে ভারতের প্রথম সিনেমা প্রদর্শিত হয়।
১৪৯৫ – রাজা দ্বিতীয় ফার্দিনান্দ নেপলসে ফিরে আসেন।
১৭৬৩ – বাংলার নবাব হিসেবে মীরজাফর পুনরায় ক্ষমতা লাভ করেন।
১৬০৭ – ‘গড সেভ দ্য কিং’ গানটি প্রথম গীত হয়।
১৫৫০ – প্রথম চকোলেট বাজারে আসে।
১০৩৭ – সেলজুকি রাষ্ট্রের সূচনা।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০৭ – আহসান উল্লাহ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
২০১৪ – এডুয়ার্ড শেভার্দনাদজে, জর্জীয় রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিক।
২০২১ – বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার।
১৯১০ – বাংলাদেশের ইসলামী চিন্তাবিদ, সমাজ সংস্কারক, সাহিত্যিক মুন্সী মেহেরুল্লাহ।
১৯৩০ – আর্থার কোনান ডয়েল, স্কটিশ সাহিত্যিক, শার্লক হোম্সের গল্পসমূহের জন্য বিখ্যাত।
১৯৩১ – দীনেশ গুপ্ত, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বাঙালি বিপ্লবী।
১৯৬৫ – ইংল্যান্ডের পেসার বিল হিথচ।
১৯৭২ – তালাল বিন আবদুল্লাহ, জর্ডানের দ্বিতীয় বাদশাহ।
১৯৯০ – ভারতের মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা লালডেঙ্গা।
১৯৯৮ – মাসুদ আবিওলা, নাইজেরিয়ায় শীর্ষ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা।
১৭১৮ – চক্রান্তের অভিযোগে পিতা রাশিয়ার পিটার দ্য গ্রেটের নির্দেশে পুত্র আলেঙ্সিকে পিটিয়ে হত্যা।
১৫৭৩ – ইতালির স্থপতি জাকোমা দা ভিনিওয়ার।
১৩০৪ – পোপ একাদশ বেনেডিক্ট।
১৩০৭ – ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম এডওয়ার্ড।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।
আজ ৬ জুলাই। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বছরের প্রতিটি দিনে ঘটেছে অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আসুন আজকের দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য কিছু বিষয় একনজরে দেখে নিই। ইতিহাসের আজকের এই দিনে কী কী ঘটেছিল, কে কে জন্ম নিয়েছিলেন ও মৃত্যুবরণ করেছিলেন——-
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৯০১ – ভারত কেশরী ড.শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, ভারতীয় শিক্ষাবিদ, লেখক এবং জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ।
১৯০৬ – ভারতীয় পদার্থবিদ এবং শিক্ষাবিদ দৌলত সিং কোঠারি।
১৯০৭ – ফ্রিদা কাহলো, মেক্সিকীয় চিত্রশিল্পী।
১৯২১ – ন্যান্সি রিগ্যান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগনের সহধর্মণী।
১৯২৩ – বয়সিয়েছ জারুজেলস্কি, পোলিশ সামরিক কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদ।
১৯২৪ – মহিম বরা, ভারতের অসমের গল্পকার, কবি সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ।
১৯৩০ – কর্ণাটকী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কণ্ঠশিল্পী এম বালামুরলীকৃষ্ণ।
১৯৩৫ – ক্যান্ডি বার, মার্কিন স্ট্রিপার, ব্যঙ্গাত্মক নর্তকী, অভিনেত্রী, এবং প্রাপ্তবয়স্ক মডেল।
১৯৩৫ – চতুর্দশ দলাই লামা, ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিব্বত থেকে প্রস্থান করে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন।
১৯৪০ – নুরসুলতান নাজারবায়েভ, কাজাখস্তানের প্রথম রাষ্ট্রপতি।
১৯৪১ – ডেভিড ক্রিস্টাল, ব্রিটিশ ভাষাবিজ্ঞানী, একাডেমিক এবং লেখক।
১৯৪৬ – জর্জ ডব্লিউ বুশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর ৪৩তম প্রেসিডেন্ট।
১৯৪৬ – পিটার সিঙার, অস্ট্রেলিয়ান দার্শনিক।
১৯৪৬ – সিলভেস্টার স্ট্যালোন, মার্কিন অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯৪৯ – নোলি দে কাস্ত্রো, ফিলিপিনো সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ।
১৯৫১ – জেফ্রি রাশ, অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা ও প্রযোজক।
১৯৫২ – হিলারি ম্যান্টেল, ইংরেজ মহিলা ঔপন্যাসিক, ছোট গল্প লেখিকা, প্রাবন্ধিক।
১৯৫৩ – মাহমুদুর রহমান, বাংলাদেশী প্রকৌশলি, সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ।
১৯৭৭ – মাখায়া এনটিনি, দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ফাস্ট বোলার।
১৯৮০ – এভা গ্রিন, ফরাসি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও মডেল।
১৯৮৫ – রণবীর সিং, ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা।
১৮৩৭ – রামকৃষ্ণ গোপাল ভাণ্ডারকর, ভারতীয় গবেষক, প্রাচ্যবিদ ও সমাজ সংস্কারক।
১৮৬৬ – নগেন্দ্রনাথ বসু, বাংলা ভাষায় প্রথম বিশ্বকোষের সংকলক,প্রত্নতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদ।
১৮৭৭ – নিথেতো আলকালা-থামোরা, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী।
১৮৮৭ – মার্ক শাগাল, বেলারুশীয়-রুশ-ফরাসি শিল্পী।
১৮৯০ – ধন গোপাল মুখোপাধ্যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম সফল ভারতীয় বুদ্ধিজীবী।
১২৬৫ – ইতালীর বিশ্বখ্যাত কবি দান্তে আলিঘিইরি।
১৭৮১ – সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠাতা স্যার টমাস স্ট্যামফোর্ড র্যাফলস।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৯১৯ – বিশ্বের প্রথম বিমান ‘ব্রিটিশ আর-৩৪’ আটলান্টিক পাড়ি দেয়। লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্ক যেতে সময় নেয় ১০৮ ঘণ্টা।
১৯৪৪ – সুভাষচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ রেডিও তে গান্ধীজিকে ‘জাতির জনক’ অভিধা প্রদান করেন।
১৯৪৫ – নিকারাগুয়ার প্রথম জাতিসংঘের সনদ গ্রহণ।
১৯৪৭ – সোভিয়েত ইউনিয়ন এ. কে. ৪৭ রাইফেল উৎপাদন শুরু করে।
১৯৫২ – লন্ডন শহরে শেষবারের মতো ট্রাম চলাচল।
১৯৫৩ – রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।
১৯৬৪ – তিয়াত্তর বছর ব্রিটিশ অধিকারে থাকার পর মালাউই স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৭১ – কামুজু বান্দার নিজেকে মালাবি’র আজীবন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা।
১৯৭৯ – মিশরে নীল নদের তীরে বিনানুল মূলক নামক গুহায় মিশরের ফেরাউন দ্বিতীয় রেমেসিসের মমি আবিষ্কৃত হয়।
১৯৯১ – জার্মান টেনিস তারকা স্টেফিগ্রাফ পর পর তৃতীয়বারের মতো উইম্বলডন জেতেন।
১৯৯৯ – ইসরাইলের পার্লামেন্টে ইহুদ বারাককে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন।
১৮৮৫- সালের এই দিনে বিখ্যাত ফরাসী চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর রোগ প্রতিরোধক টিকা আবিষ্কার করেন।
১৮৯২ – দাদাভাই নওরোজি ব্রিটেনে প্রথম ইনডিয়ান মেম্বার অব পার্লামেন্ট নির্বাচিত হন।
১৫০৫ – সিকান্দার শাহ লোদির রাজত্বকালে ভয়ানক ভূমিকম্পে আগ্রা বিধ্বস্ত হয়।
১৪১৫ – চেক ধর্মীয় সংস্কারবাদী জান হুসকে ক্যাথলিক কাউন্সিল কর্তৃক জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-
২০০২ – ধীরুভাই অম্বানী, ভারতীয় শিল্পপতি এবং রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এর প্রতিষ্ঠাতা।
২০০২ – জন ফ্রাঙ্কেনহাইমার, মার্কিন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পরিচালক।
২০১৪ – শঙ্করীপ্রসাদ বসু খ্যাতকীর্তি লেখক, সমালোচক, গবেষক ও ছাত্রপ্রিয় অধ্যাপক।
২০১৭ – হরিপদ কাপালী, বাংলাদেশী কৃষক, হরি ধানের উদ্ভাবক।
২০১৮ – শোকো আসাহরা, জাপানের নতুন ধর্মীয় সংগঠন ওম শিনরিকিও-এর প্রতিষ্ঠাতা।
২০২০ – এন্ড্রু কিশোর, বাংলাদেশী গায়ক।
১৯৪০ – জমিরুদ্দিন আহমদ, হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রধান পৃষ্ঠপোষক।
১৯৬২ – উইলিয়াম ফকনার, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন সাহিত্যিক।
১৯৭১ – লুইস আর্মস্ট্রং, মার্কিন ট্রাম্পেট বাদক ও জ্যাজ সঙ্গীতশিল্পী।
১৯৭৬ – ঝু দে, চীনের একজন সর্বাধিনায়ক, সেনাপতি, রাজনীতিবিদ, বিপ্লবী এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম অগ্রদূত।
১৯৮৯ – জানোস কাদার, হাঙ্গেরিয়ান কমিউনিস্ট নেতা।
১৮৫৪ – জর্জ সায়মন ও’ম, জার্মান পদার্থবিদ।
১৮৯৩ – গি দ্য মোপাসাঁ, ফরাসি কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক।
১৬১৪ – রাজা মানসিংহ, রাজা ভগবান দাসের পালিত পুত্র।
১৫৩৫ – থমাস মুর, ইংরেজ আইনজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানী, দার্শনিক, লেখক ও কূটনীতিক।
।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে প্রতুলচন্দ্র গাঙ্গুলী প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। প্রতুলচন্দ্র গাঙ্গুলী ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
প্রাথমিক জীবন—-
মহিমচন্দ্র গাঙ্গুলীর পুত্র প্রতুলচন্দ্র গাঙ্গুলী ঢাকার চাঁদপুরের কাছে চালতাবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ১৬ এপ্রিল ১৮৯৪। নারায়ণগঞ্জের চাঁদপুরের নিকটবর্তী চালতাবাড়ি গ্রামে প্রতুলচন্দ্র গাঙ্গুলী মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্র জীবনে নারায়ণগঞ্জ শাখায় অনুশীলন সমিতিতে বিপ্লবীজীবন শুরু করেন। নিষ্ঠা এবং কর্ম তৎপরতার জোরে নেতারূপে সুপ্রতিষ্ঠিত হন তিনি। তবে তার প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা সম্পর্কে সেভাবে কিছুই জানা যায়নি।
গৃহত্যাগ—-
জানা যায় ১৯০৮-১৯০৯ সালে বিপ্লবী প্রয়াসকে ব্যাপক করবার জন্য তিনি গৃহত্যাগ করেন।স্কুল ছাত্র হিসেবে তিনি অনুশীলন সমিতির নারায়ণগঞ্জ ইউনিটে যোগ দেন; ১৯৩০-এর দশকে এর মুখপাত্র হন। রাশবিহারী বসুর মতো প্রতুলচন্দ্রও তার পরিচয় গোপন করতে পারদর্শী ছিলেন; তাই পুলিশের নথিতে তিনি ভিন্নভাবে পরিচিত ছিলেন।
বিপ্লবী কর্মজীবন—-
ঢাকার অদূরে স্বদেশী ডাকাতির মামলায় তার নাম সবার আগে উঠে আসে; যেখানে তার বেশিরভাগ সিনিয়রকে সেলুলার জেলে পাঠানো হয়েছিল; রিভিউ পিটিশনের পর কলকাতা হাইকোর্ট তাকে অব্যাহতি দেয়। ১৯১৩ সালে, প্রতুলচন্দ্র রবীন্দ্র মোহন সেনের সাথে কলেজ স্কোয়ারে আইবি অফিসার হরিপদ দেকে হত্যা করেন; তারপর বিশ্বযুদ্ধের সময় রাসবিহারী বসুর সাথে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে বারাণসীতে চলে যান। তিনি ১৯১৪ সালে গ্রেফতার হন এবং ১৯২০ সাল পর্যন্ত বরিশাল কারাগারে বন্দী ছিলেন। চার বছর পরে, তাকে রাজনৈতিক বন্দী ঘোষণা করা হয় এবং বিনা বিচারে মিয়ানমারের (১৯২৭) কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি অসহযোগ আন্দোলনের সময় কংগ্রেসের প্রাদেশিক অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯৩০ সালে আবার গ্রেপ্তার হন, তিনি ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত রিমান্ডে ছিলেন; এক বছর পরে আবার গ্রেপ্তার হতে হয়, যখন নেতাজির সাথে জেলের ভিতরে অনশন করায় তার স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়, তাই পরবর্তীকালে মুক্তি পান। কিন্তু, বোসের গ্রেট পালানোর পর; প্রতুলচন্দ্রকে আবার গ্রেফতার করা হয় এবং ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত বাংলার বিভিন্ন কারাগারে পাঠানো হয়। দেশভাগের পর প্রতুলচন্দ্রের মতো একজন ব্যক্তিকেও কলকাতায় চলে যেতে হয়।
মৃত্যু—
সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে জেলে অনশন করে স্বাস্থ্য ভঙ্গ হওয়ায় সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে মুক্তি পান তিনি। এরপর সুভাষচন্দ্রের অর্ন্তধ্যানের সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় গ্রেপ্তার হয়ে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন জেলে আটক থাকেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তিনি কলকাতায় বসবাস করেন এবং ১৯৫৭ সালের ৫ জুলাই তাঁর মৃত্যু হয়।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।
বেনারসের এক মন্দির থেকে বের হওয়ার পথে একবার স্বামী বিবেকানন্দকে ঘিরে ধরেছিল
বেশ কিছু বানর ,
এমত পরিস্থিতিতে স্বামীজি অপ্রস্তুতরূপে ছুটতে লাগলেন দিগভ্রান্ত হয়ে , কিন্তু তা হলে হবে আর কি?
বানর কি আর আধুনিক মানুষ?
স্বভাবতই বানরগুলো সে অবস্থাতে দাঁড়িয়েও অব্যাহত রেখেছে এঁদের বাঁদরামি কর্মকাণ্ড।
কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একজন বৃদ্ধ সন্ন্যাসী তা লক্ষ্য করে তাঁকে বলে বসলেন , ‘মশাই! থামুন এবং ওদের মুখোমুখি হোন।’
তা শুনে বিবেকানন্দ তৎক্ষণাৎ ঘুরে এগোতে লাগলেন বানরগুলোর দিকে ,
আর এই মনোভাবের কারণে সব বানর পালিয়েও গেল সেখান থেকে।
শেষে এই ঘটনা থেকে তিনি শিখলেন যে , ভয়ে পালিয়ে না গিয়ে তার মুখোমুখি হতে হবে , অর্থাৎ পিছনে না হটে , জয় করতে হবে ভয়কেই।
এর বহু বছর পর তিনি এক সম্বোধনের মাধ্যমে বলেছিলেন , ‘যদি কোনও কিছু কারণ হয় তোমার ভয়ের , তবে তা থেকে পালিয়ে যেও না , ভয়ের মুখোমুখি হও আর জিতে নাও ভয়কে।’
বিদেশ যাওয়ার সময় স্বামী বিবেকানন্দকে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে , ‘আপনার পরিধেয় বাকি জিনিসগুলো কোথায়?’
‘এইতো সব’ , তিনি উত্তর দিলেন।
কেউ কেউ তো আবার ব্যঙ্গ করে বসলেন বলেই , ‘আরে! আপনার সংস্কৃতি কেমন? শরীরে শুধু জাফরানের চাদর জড়ানো?’
এ নিয়ে তিনি হেসে বললেন , ‘আমাদের সংস্কৃতি তোমাদের সংস্কৃতি থেকে আলাদা।
আপনাদের সংস্কৃতি গড়ে তোলে আপনাদের
দর্জিরা , অন্যদিকে আমাদের সংস্কৃতি আমাদের চরিত্র দ্বারা তৈরি।
সংস্কৃতি পোশাকে গড়ে ওঠে না , গড়ে চরিত্রের বিকাশে।’
তো এমনই ছিল স্বামীজির জীবন দর্শন।
যাইহোক , জাহাজ ও খান দুয়েক ট্রেন পাল্টে অবশেষে ৩০ শে জুলাই রাত ১১ টায় তিনি উপস্থিত হলেন শিকাগোয়।
ক্লান্ত , অবসন্ন শরীরটা সম্পূর্ণ অপরিচিত পরিবেশে তাঁকে ফেলেছে এক চরম অস্বস্তিজনক পরিস্থিতিতে , এমনটাই যেন তাঁর মনে হচ্ছিল।
অবশেষে পরিস্থিতি ধারণ করলো আরো জটিল আকার যখন তিনি জানতে পারলেন যে , ধর্মমহাসভায় পরিচয়পত্র আবশ্যক ও যোগদানের তারিখও গেছে রীতিমতন পেরিয়ে।
এ হেন সংবাদ কানে প্রবেশ করা মাত্রই মুহুর্তের মধ্যে তাঁর মনে হতে লাগলো যে , অতি যত্নে সাজানো সমস্ত রঙীন স্বপ্নগুলো তাঁর চোখের সামনেই হয়ে যাচ্ছে ভেঙে-চুরে , দুমড়ে-মুষড়ে!
একদিকে শিকাগোর মতন বড়লোকি শহরে থাকার খরচ ,
অন্যদিকে সামান্য পুঁজি , তাও আবার ফুরিয়ে আসার মুহুর্তে।
হঠাৎই তিনি আবিষ্কার করলেন বস্টন নামক এক শহর , যেখানে থাকা-খাওয়ার খরচ অনেকাংশে কম। অবশেষে বস্টন অভিমুখে রওনাকালীন ট্রেনে স্বামীজির পরিচয় হয় ক্যাথেরিন স্যানবর্ন নামক এক ধনী ও প্রভাবশালী মহিলার সাথে।
প্রতিভাদীপ্ত , সুদর্শন ও সুঠামদেহী এক পুরুষের সাথে তিনি নিজেই এসে পরিচয় করে দু-এক কথায় মুগ্ধ হয়ে তাঁর বাড়িতে থাকার জন্যে সেই মহিলা স্বামীজিকে জানালেন হার্দিক আমন্ত্রণ।
এমনই এক সুযোগের একান্ত ইচ্ছায় যেন অপেক্ষা করছিলেন অধীর আগ্রহে তিনি , অতএব সেমত অবস্থায় স্বামীজি সাদরে গ্রহণ করলেন সে আমন্ত্রণ।
ক্যাথেরিন স্যানবর্নের বাড়িতে থাকাকালীন স্বামীজি তাঁর এক শিষ্যকে চিঠিতে জানালেন ,
‘এখানে থাকায় আমার প্রতিদিনের এক পাউন্ড করে বেঁচে যাচ্ছে , আর তাঁর (ক্যাথেরিন স্যানবর্ন) প্রাপ্তি হল এই যে , তিনি তাঁর বন্ধুদের আমন্ত্রণ করে দেখাচ্ছেন আমি নামক ভারতের এক বিচিত্র জীবকে!’
বস্টনে থাকাকালীন ক্যাথেরিন স্যানবর্নের সূত্রে সেখানকার শিক্ষিত সমাজে স্বামীজি ক্রমশই হয়ে উঠেছিলেন ভীষণভাবে পরিচিত।
আর এভাবেই কোনো এক মাহেন্দ্রক্ষণে অকস্মাৎ ক্যাথেরিনের মাধ্যমে স্বামীজির পরিচয় হয় হাভার্ড ইউনিভার্সিটির এমন একজন সুবিখ্যাত প্রফেসার জন হেনরি রাইটের সাথে , যাকে বলা হত ‘বিশ্বকোষতুল্য জ্ঞানভাণ্ডারের অধিকারী।’
কিন্তু স্বামীজির তেজোদীপ্ত প্রতিভার আলোকরশ্মির বিচ্ছুরণে বিষ্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন তিনি নিজেই। পরিচয়পত্র না থাকায় তিনি (স্বামীজি) মহাধর্মসম্মেলনে যোগ না দিতে পারার সংক্ষিপ্ত কারণ বিশ্লেষণে প্রফেসার প্রত্যুত্তর করলেন ,
‘মহাশয় , আপনার কাছে পরিচয়-পত্র চাওয়ার অর্থ এমন যে , সূর্যকে প্রশ্ন করা যে তাঁর কিরণ দেওয়ার অধিকার আছে কিনা?’
অতঃপর মহাধর্মসম্মেলনের এক কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে প্রফেসার রাইট লিখলেন :
‘ইনি (স্বামীজি) এমন একজন ব্যক্তি যে , আমেরিকার সমস্ত প্রফেসারের পান্ডিত্য এক করলেও এঁর পান্ডিত্যের সমান হবে না।’
অতঃপর বস্টনে সপ্তা তিনেক থাকার পর শেষে তিনি রওনা হলেন শিকাগো অভিমুখে।
১১ সেপ্টেম্বর ১৮৯৩ , শিকাগোর কলম্বাস হলে সকাল ১০ টায় বিশ্ব ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা ভূমিষ্ঠ হয়েছিল যে আধিদৈবিক , সিংহপুরুষের দ্বিতীয় অধিবেশনের কালজয়ী ও ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে তিনি আর কেউ নন , স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ।
“সিস্টার্স এন্ড ব্রাদার্স অব আমেরিকা”……
হাজার হাজার দর্শকমণ্ডলীর হর্ষধ্বনি ও করতালিতে ফেটে পড়েছিল সে মঞ্চ।
মনে হচ্ছিল এক সংক্ষিপ্ত কিন্তু শক্তিশালী আঁধি সেই মুহুর্তে , সেই স্থানের উপস্থিতজনেদের উপর দিয়ে গেল বয়ে।
না , কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের জয়ঢাক তিনি বাজাননি। মহাধর্মসম্মেলনে যেখানে সবাই নিজ নিজ ধর্ম সম্বন্ধেই বক্তৃতা দিয়েছিলেন , সেখানে স্বামীজি দেখিয়েছিলেন , সব ধর্মই সত্য , কারণ প্রতিটা ধর্মই মানুষকে পৌঁছে দেয় একই সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কাছে।
১৯৯২ সালে স্বামীজির শিকাগো বক্তৃতার একশত বছর পূর্তির আগে এলেনর স্টার্ক নামক এক আমেরিকান মহিলা স্বামীজিকে নিয়ে ‘দ্য গিফট্ আন-ওপেন্ড.. এ নিউ আমেরিকান রেভলিউশন’ নামক একটি বই লিখেছিলেন , যাতে লেখিকা স্বামীজির বাণীকে বর্ণনা করেছেন ‘উপহার’ বলে অর্থাৎ , ভারতবর্ষ থেকে আমেরিকাকে দেওয়া উপহার।
তিনি বলেছেন , ‘সেই উপহারের প্যাকেট আমেরিকা খুলে পর্যন্ত দেখেনি , স্বামীজির বাণীকে তাঁরা জীবনে ব্যবহারও করেননি।
যদি তাঁরা তা করত , একটা নতুন ধরণের বিপ্লব ঘটে যেত সমগ্র আমেরিকাবাসীদের জীবনে।’
ঐ বইতেই তিনি উল্লেখ করেছেন এও যে ,
‘কলম্বাস আবিষ্কার করেছিলেন আমেরিকা মহাদেশের ভূখন্ডটা , কিন্তু বিবেকানন্দ আবিষ্কার করেছিলেন আমেরিকার আত্মাকে।’
‘আমি মুসলমানের মসজিদে যাব , খৃষ্টানদের গির্জায় প্রবেশ করে ক্রুশবিদ্ধ যীশুর সামনে হব নতজানু , বৌদ্ধদের বিহারে প্রবেশ করে আমি বুদ্ধের শরণাপন্ন হব , আবার অরণ্যে প্রবেশ করে হিন্দুদের পাশে বসে ধ্যানমগ্নও হব ,
শুধু তাই নয় , ভবিষ্যতে যে সব ধর্ম আসতে পারে ,
সেগুলোর জন্যেও আমার হৃদয় আমি উন্মুক্ত রাখবো সর্বদাই।’
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আজ ,
একবিংশ শতাব্দীতে এই প্রথম ভাগে দাঁড়িয়েও আমরা চুড়ান্ত সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন , আত্মকেন্দ্রিকতায় নিমজ্জিত ও চরম ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা যেন বইছে আমাদের রক্তে।
রাজনীতি আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
বইয়ের পাতা ও মূর্তিতেই অসহায়ভাবে যেন আটকে আছে তাঁর অমূল্য সব আদর্শগাথা।
তাঁর আদর্শের পরমানুটুকুও যেন ক্রমশঃ আমাদের শরীর থেকে হতে চলেছে নিশ্চিহ্ন!
শরীরের লজ্জা আমরা সহজেই ঢাকতে পারি পোষাক দিয়ে কিন্তু মনুষ্যত্বের এ লজ্জা আমরা ঢাকবো কোন পোষাকে??
এলেনর স্টার্ক চিনেছিলেন স্বামীজি নামক
কোহিনূরকে , প্রফেসর জন হেনরি রাইট জেনেছিলেন
বিবেকানন্দকে , চিনেছিলেন ক্যাথরিন স্যানবর্ণ ,
কিন্তু আমরা তাঁকে জেনেছি কি তাঁকে আজও?
তাঁর দেখানক পথ কি বাস্তবে আদৌ আমরা করি মিনিমাম অনুসরণ?
মহাসমাধী দিবসের এই পূণ্যলগ্নে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি ও
সশ্রদ্ধ প্রণাম , পাশ্চাত্যে যোগ ও বেদান্ত দর্শনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যে।