Categories
প্রবন্ধ

রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী। রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।

রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব।  তিনি গোপন বিপ্লবী দলের সদস্য ছিলেন।  ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল, সূর্য সেনের বিপ্লবী দলের একজন বেসামরিক ব্যক্তি হিসাবে ১৯৩০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বোমা প্রস্তুত করার সময় চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমণে নেতা মারাত্মকভাবে আহত হন।  ১৯৩০ সালের ১২ জানুয়ারি, মাস্টারদারের নির্দেশে চাঁদপুর স্টেশনে ইন্সপেক্টর জেনারেল ক্রেগকে হত্যা করার সময় তিনি এবং কালী চক্রবর্তী তারিণী মুখার্জীকে হত্যা করেন।  তাকে ২২ মাইল দূরে ধরা পড়ে।

জন্ম—–

রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের জন্ম ১৬ জানুয়ারি, ১৯১০ সালে চট্টগ্রামের সারোয়াতলীতে। তার পিতার নাম দুর্গাকৃপা বিশ্বাস।

রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সান্নিধ্যে প্রীতিলতা—-

১৯৩০ সালে, টিজে ক্রেগ বাংলার পুলিশ মহাপরিদর্শক হিসাবে নতুন দায়িত্ব নিয়ে চট্টগ্রাম সফর করেন।  মাস্টার রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ও কালীপদ চক্রবর্তীকে হত্যার জন্য মনোনীত করেন।  পরিকল্পনা অনুযায়ী, তারা ২ রা ডিসেম্বর ১৯৩০ তারিখে চাঁদপুর রেলস্টেশনে রিভলবার নিয়ে আক্রমণ করে কিন্তু ভুলবশত তারা মিস্টার ক্রেগের পরিবর্তে চাঁদপুরের এসডি ও তারিণী মুখার্জিকে হত্যা করে।  ওই দিনই পুলিশ বোমা ও রিভলবারসহ রামকৃষ্ণ বিশ্বাস ও কালীপদ চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করে।  মনোরঞ্জন রায় এই বোমাগুলো কলকাতা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন।  তারিণী মুখোপাধ্যায় হত্যা মামলায় রামকৃষ্ণ বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ড এবং কালীপদ চক্রবর্তীকে নির্বাসনে দেওয়া হয়েছিল।  আলিপুর জেলের ডেথ সেলে মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকা রামকৃষ্ণকে দেখতে চট্টগ্রাম থেকে আসা স্বজনদের কারো পক্ষেই বেশি খরচ হওয়া সম্ভব হয়নি।  এই খবর শোনার পর মনোরঞ্জন রায় প্রীতিলতাকে চিঠি লিখে রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে দেখা করার জন্য অনুরোধ করেন।  মনোরঞ্জন রায়ের মা হিজলী জেলে ছেলের সাথে দেখা করতে গেলে গোপনে প্রীতিলতার হাতে লেখা চিঠি তুলে দেন।

গুনু পিসির পরামর্শে, প্রীতিলতা আলিপুর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষের কাছে “অমিতা দাস” ছদ্মনামে “চাচাতো ভাই” হিসাবে রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের সাথে দেখা করার জন্য আবেদন করেছিলেন।  জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তিনি প্রায় চল্লিশ বার রামকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করেন।  এই সাক্ষাত সম্পর্কে তিনি লিখেছেন “তাঁর (রামকৃষ্ণ বিশ্বাস) গম্ভীর চেহারা, খোলামেলা কথা, মৃত্যুকে অদম্য আলিঙ্গন, ঈশ্বরের প্রতি অটল ভক্তি, শিশুসুলভ সরলতা, মমতা এবং কৃতিত্বের তীব্র অনুভূতি আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল।  আমি আগের চেয়ে দশগুণ বেশি সক্রিয় হয়েছি।  এই আত্মত্যাগী তরুণ দেশপ্রেমের সাথে যোগাযোগ আমার জীবনের পরিপূর্ণতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।”  ১৯৩১ সালের ৪ আগস্ট রামকৃষ্ণ বিশ্বাসকে ফাঁসি দেওয়া হয়। এই ঘটনাটি প্রীতিলতার জীবনে এক আমূল পরিবর্তন আনে।

মৃত্যু—-

১৯৩১ সালের ৪ আগস্ট রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের ফাঁসী হয়।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

চিন্ময় রায় : সিনেমা প্রেমী মানুষের কছে তিনি আজও স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।

চিন্ময় রায় একজন বাঙালী অভিনেতা। বাংলা সিনেমায় চিন্ময় রায় এক অতি পরিচিত নাম। সিনেমা প্রেমী মানুষদের কছে তিনি আজও স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। স্বর্ণ যুগের এই কিংবদন্তি অভিনেতা তাঁর অভিনয় দক্ষতা দিয়ে মানুষের মনে জায়গা করে রেখেছেন আলাদা ভাবে। তাঁর সাবলীল অভিনয় মুগ্ধ করেছে সকলকে।

 

১৯৪০ সালের ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশের কুমিল্লায় জন্মগ্রহণকারী এই কৌতুক অভিনেতা প্রথমাশা কলকাতার থিয়েটার মঞ্চ থেকে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন।  একবার সিনেমায় অভিনয় করেছেন।  তিনি মূলত কমেডি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।

তপন সিংহের ‘গল্প হলেও সত্যি’ দিয়ে শুরু করে সবার নজর কাড়েন চিন্ময় রায়। এরপর ‘মৌচাক’, ‘হাটেবাজারে’, ‘ওগো বধূ সুন্দরী’, ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন-এর মতো অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন।টেনিদা চরিত্রে চারমূর্তি চলচ্চিত্রে তার অভিনয় তাকে বাংলা চলচ্চিত্র দর্শকদের মধ্যে আরও জনপ্রিয় করে তোলে।  ভারতের বাংলা সিনেমা নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।

 

তথাকথিত সাদামাটা চেহারা সত্ত্বেও নিজের অভিনয় প্রতিভায় রুপোলি পর্দায় নায়কদের পাশে রীতিমতো নজর কেড়েছেন। নবদ্বীপ হালদার, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় বা তুলসী চক্রবর্তীর মতো কিংবদন্তি অভিনেতাদের পর বাংলা ছবিতে কমেডিয়ানের ভূমিকায় রবি ঘোষ বা অনুপকুমারের সঙ্গে পাল্লাও দিয়েছেন সমানে সমানে।

 

চিন্ময় রায় ৭৯ বছর বয়সে ১৭ মার্চ ২০১৯ তারিখে রাত ১০:১০ টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মারা যান।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৬ জানুয়ারী, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ১৬ জানুয়ারি । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০১ – (ক)  সুকুমার সেন, ভারতীর বাঙালি ভাষাতাত্ত্বিক ও সাহিত্য বিশারদ।

(খ) পলাকান্ত ভট্টাচার্য, বাঙালি সাহিত্যিক সাংবাদিক সম্পাদক।

 

১৯১০ – রামকৃষ্ণ বিশ্বাস, বাঙালি, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী।

 

১৯১৯ – মোঃ মনসুর আলী, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

 

১৯৩১ – সুভাষ মুখোপাধ্যায় (চিকিৎসক), ভারতে প্রথম এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় নল-জাত শিশু দুর্গার সৃষ্টিকর্তা হিসেবে স্বীকৃত ভারতীয় চিকিৎসক।

 

১৯৩৩ – সুসান সনট্যাগ, খ্যাতিমান মার্কিন লেখিকা ও সাহিত্য সমালোচক।

 

১৯৪০ – চিন্ময় রায়, বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা।

 

১৯৮৭ – কাব্য বিশ্বনাথন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিতর্কিত মার্কিন সাহিত্যিক।

 

১৮৫৫ – গোবিন্দচন্দ্র দাস, এক বাঙালি স্বভাব কবি।

১৮৬৮ – খ্যাতিমান আইনজীবী, চিন্তাশীল লেখক এবং বিশিষ্ট পণ্ডিত হীরেন্দ্রনাথ দত্ত।

১৮৭৪ – রবার্ট সার্ভিস, বিখ্যাত কানাডীয় কবি।

১৮৮৮ – ড. প্রিয়দারঞ্জন রায়, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রসায়নবিদ।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০০০ – রিকার্ডো লাগোস চিলির প্রথম সমাজবাদী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

২০০১ – কঙ্গোর প্রসিডেন্ট লুরান্ট কাবালা নিজ দেহরক্ষির হাতে নিহত হন।

২০০২ – জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে ওসামা বিন লাদেন, আল-কায়েদা এবং অবশিষ্ট তালেবান সদস্যদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি এবং সম্পদ জব্দ করার সিদ্ধান্ত নেয়।

২০০৬ – আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে লাইবেরিয়ায় নারী প্রেসিডেন্ট অ্যালেন-জনসন সিরলিফের অভিষেক।

১৯২০ – লিগ অব নেশন্সের প্রথম সভা প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয়।

১৯২২ – কুমিল্লায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম গ্রেফতার হন।

১৯২৩ – চীনের মহান বিপ্লবী পথিকৃৎ ড: সুন জোংসানের নেতৃতাধীন সৈন্য বাহিনী দক্ষিণ চীনের গুওয়াংতং প্রদেশের রাজধানী গুওয়াংচৌ দখল করে নেয় ।

১৯২৯ – বিবিসির প্রথম পত্রিকা ‘দি লিসেনার’ প্রথম প্রকাশিত হয়।

১৯৩৩ – উত্তর চীনের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী দখলকারী জাপানী সৈন্যবাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়।

১৯৪১ – মহানিষ্ক্রমণের দিন। গৃহবন্দী সুভাষচন্দ্র বসু ব্রিটিশ পুলিসের নজর এড়িয়ে মধ্যরাতে কলকাতার এলগিন রোডের বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়লেন।

১৯৪৫ – অ্যাডলফ হিটলার ব্যাঙ্কারে অবস্থান গ্রহণ করেন।

১৯৫৬ – মিশরের প্রসিডেন্ট গামাল আবদেল নামের প্যালিস্টাইন মুক্ত করার ঘোষণা দেন।

১৯৬৬ – নাইজেরিয়ায় সামরিক শাসক জেনারেল আগুইয়ির ক্ষমতা গ্রহণ।

১৯৬৯ – প্রাক্তন সৌভিয়েত ইউনিয়নের দুটো নভোযানের প্রথম বার সংযোগ সম্পাদিত হয়। সংযুক্ত হওয়ার পর এ দুটো নভোযান মহাশুন্যে আরও ৪ ঘণ্টা পরিভ্রমন করে।

১৯৭০ – গাদ্দাফি লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় নেপাল।

১৯৭৩ – যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ভিয়েতনামের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা।

১৯৭৫ – পতুর্গাল অ্যাংগোলার স্বাধীনতা স্বীকৃতি দেয়।

১৯৭৯ – প্রচন্ড গণবিক্ষোভের মুখে শাহ মোহাম্মদ রেজা শাহ পাহলভী ইরান ত্যাগ করেন।

১৯৮২ – ৪৫০ বছর বিছিন্ন অবস্থা থাকার পর ভানটিকান আর ব্রিটেনের মধ্যে আবার কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৮৬ – ইন্টারনেট ইঞ্জিনিয়ারিং টাস্কফোর্সের প্রথম বৈঠক হয়।

১৯৮৭ – নেপালের কাঠমন্ডুতে সার্ক সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৯১ – পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধ: আমেরিকা ইরাকের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

১৯৯৬ – সিয়েরা লিওনে অভ্যুত্থান: সামরিক শাসক ক্যাপ্টেন ভ্যালেইন্টন অপসারিত।

১৭৬১ – ফরাসিদের কাছ থেকে পন্ডিচেরি দখল নেয় ব্রিটিশরা।

১৭৬৮ – কলকাতায় প্রথম ঘোড়া দৌড় শুরু হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০০১ – (ক) লরা কাবিলা, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি।

২০০১ – (খ) নেপালের যুবরাজ দীপেন্দ্র কর্তৃক রাজা বীরেন্দ্র বীর বীক্রম শাহদেব ও রানী ঐশ্বর্য সহ ১১ জন বন্দুকের গুলিতে নিহত হন।

 

২০১৮ – শাম্মী আখতার, বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী।

২০২১ – নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সাহায্য করার জন্য অনুষ্ঠিত ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’র কিংবদন্তি প্রযোজক, যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত রকস্টার ও প্রযোজক ফিল স্পেক্টর।

 

২০২২ – (ক)  শাঁওলি মিত্র, বাংলা থিয়েটার ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

 

(খ) ভারতের কিংবদন্তি কত্থক শিল্পী পণ্ডিত বিরজু মহারাজ।

১৯১৫ – খাজা সলিমুল্লাহ, ঢাকার নবাব।

১৯২৪ – রাজা প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায় প্রখ্যাত বাঙালি আইনজ্ঞ।

 

১৯৩৮ – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বাঙালি কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক।

 

১৯৪২ – ক্যারল লমবার্ড, মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

 

১৯৬১ – খান বাহাদুর আবিদুর রেজা চৌধুরী, বাঙালি রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক।

১৯৮৯ – চপলাকান্ত ভট্টাচার্য, বাঙালি সাহিত্যিক সাংবাদিক সম্পাদক।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

সুকুমার সেন : ভাষাবিদ ও সাহিত্যিক পণ্ডিত

সুকুমার সেন ছিলেন একজন ভাষাবিদ ও সাহিত্যিক পণ্ডিত।  বৈদিক ও ধ্রুপদী সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, বাংলা, আবেস্তা এবং প্রাচীন ফার্সি ভাষায় এর বিশেষ ব্যুৎপত্তি ছিল।  তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব এবং  পুরাণতত্ত্ব আলোচনাতেও তার দক্ষতা দেখিয়েছিলেন।

জীবনী—————

সুকুমার সেন ১৯০০ সালের ১৬ জানুয়ারি কলকাতার গোয়াবাগানের মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন।  বাবা হরেন্দ্রনাথ সেন ছিলেন বর্ধমান আদালতের আইনজীবী এবং মা নলিনী দেবী।  তাদের পৈতৃক নিবাস ছিল বর্ধমান জেলার গোতান গ্রামে।  এখান থেকেই সুকুমার সেনের পড়াশোনা শুরু।  1917 সালে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল ​​হাই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় এবং 1919 সালে বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে I.A.  বাংলা, সংস্কৃত, যুক্তিবিদ্যা এবং গণিতে অক্ষর সহ প্রথম বিভাগে।  পরীক্ষায় পাস.  1921 সালে কলকাতার সংস্কৃত কলেজ থেকে বি.এ.  পরীক্ষায় পাস.
1923 সালে, তিনি তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞানে প্রথম স্থানের সাথে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে M.A.  পরীক্ষায় পাস.  1925 সালে, তিনি “সিনট্যাক্স অফ বৈদিক প্রোজ” শিরোনামে একটি থিসিস লেখেন এবং প্রেমচাঁদ-রাইচাঁদ বৃত্তি লাভ করেন।  1926 সালে তার প্রথম গবেষণাপত্র “নোটস অফ দি ইউজ অফ কেসেস ইন দ্য কথক সংহিতা” এশিয়াটিক সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত হয়।  এরপর তিনি মধ্য ও আধুনিক (বাংলা) আর্য ভাষার ঐতিহাসিক উৎপত্তি নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি করেন।

গ্রন্থসমূহ————–

মিথ-ভিত্তিক ভাষাতত্ত্ব বা পৌরাণিক কাহিনীর পরিবর্তে সুকুমার সেন আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি গ্রহণ করেছিলেন।  তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, এশিয়াটিক সোসাইটি এবং বর্ধমান সাহিত্য সভার প্রায় বারো হাজার পাণ্ডুলিপি পরীক্ষা করেন।  তাঁর আবিস্কার হল জয়দেবের গীতগোবিন্দম কাব্যের প্রাচীন মূর্তি।  তিনি সেকশুভোদয়া পুঁথিও সম্পাদনা করেন।  ভাষাতত্ত্ব ও পুরাণ ছাড়াও রবীন্দ্র সাহিত্যেও সুকুমার সেনের বিশেষ জ্ঞান ছিল।  তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যিক ও রসায়নবিদ।

তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল—-

বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস (৫টি খণ্ডে, সুকুমার সেনের সবচেয়ে বিখ্যাত বই, বাংলা সাহিত্যের একটি পূর্ণাঙ্গ ও সামগ্রিক ইতিহাস) , বঙ্গভূমিকা (বাংলার আদি-ইতিহাস সংক্রান্ত গ্রন্থ), বাংলা স্থাননাম (বাংলা স্থাননাম নিয়ে ভাষাতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ), রামকথার প্রাক-ইতিহাস (রামায়ণ-সংক্রান্ত তুলনামূলক পুরাণতাত্ত্বিক আলোচনা), ভারত-কথার গ্রন্থিমোচন (মহাভারত-সংক্রান্ত তুলনামূলক পুরাণতাত্ত্বিক আলোচনা), A History of Brajabuli Literature (ব্রজবুলি সাহিত্যের ইতিহাস), ইসলামি বাংলা সাহিত্য, কলিকাতার কাহিনী, ক্রাইম কাহিনীর কালক্রান্তি, বাঙ্গালা সাহিত্যের কথা, বাঙ্গালা সাহিত্যে গদ্য , দিনের পরে দিন যে গেল ( আত্মজীবনীমূলক রচনা )

ভাষার ইতিবৃত্ত (বাংলা ভাষাতত্ত্বের একটি পূর্ণাঙ্গ আলোচনা)

Women’s Dialect in Bengali (বাংলা মেয়েলি ভাষা নিয়ে গবেষণামূলক রচনা)।

সম্মাননা—-‐-

রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৬৪ সালে ভারতীয় আর্য সাহিত্যের ইতিহাস বইটির জন্য), এশিয়াটিক সোসাইটি তাকে ‘যদুনাথ সরকার পদক’ প্রদান করে। রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র থেকে পান ‘রবীন্দ্র তত্ত্বাচার্য’ উপাধি,  দুবার আনন্দ পুরস্কার(১৯৬৬ ও ১৯৮৪ সালে), ১৯৯০ সালে ভারত সরকার তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ প্রদান করে ( সাহিত্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য )।

১৯৯২ সালের ৩ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

শুধু ফুটবল নয়, ক্লাবের হয়ে হকি স্টিক হাতেও মাঠে নেমেছেন চুনী গোস্বামী।

জন্ম:   বর্তমান বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে (১৫ জানুয়ারি, ১৯৩৮) চুনী গোস্বামী জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম সুবিমল গোস্বামী। চুনী গোস্বামী একজন বিখ্যাত বাঙালি ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি ভারতের জাতীয় দলেও খেলেছেন। ক্রিকেটার হিসেবেও তিনি সফল ছিলেন। বাংলা দলের হয়ে রনজি ট্রফি তে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। একই সঙ্গে ফুটবল ও ক্রিকেটে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সুবিমল ওরফে চুনী।

 

ফুটবলে প্রবেশ: ফুটবল-কে ভালবেসে ১৯৪৬ সালে মোহনবাগান জুনিয়ার দলে যোগ দেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত জুনিয়র দলে খেলেন। ভারতীয় ফুটবলার বলাইদাস চট্টোপাধ্যায় ও বাঘা সোমকে কোচ হিসেবে পান তিনি।

 

 

ফুটবল জীবন: এরপর ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ অবধি মোহনবাগানের মূল দলে খেলেন। তিনি মূলত স্ট্রাইকার পজিসনে খেলতেন। তিনি ১৯৬০ থেকে ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দ অবধি মোহনবাগানের অধিনায়ক ছিলেন। এই সময়ে মোহনবাগান ডুরান্ড কাপ সহ বহু প্রতিযোগিতায় ভাল ফল করেছিল।আজীবন মোহনবাগানকে ভালোবেসেই খেলে গেছেন তিনি, অন্য ক্লাব থেকে ডাক এলেও পা বাড়াননি।

 

১৯৫৬ থেকে ১৯৬৪ পর্যন্ত ভারতীয় দলে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। চিনা অলিম্পিক দলের বিরুদ্ধে জাতীয় দলে অভিষেক হয় চুনীর। তার ফুটবল জীবনের সবথকে বড় কৃতিত্ব ভারতের অধিনায়ক হিসাবে ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের সোনা জয়। ফাইনালে ভারত দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-১ গোলে পরাস্ত করেছিল।

 

 

এছাড়া তিনি অধিনায়ক হিসাবে তেল আভিভে এশিয়া কাপের রৌপ্য পদক জয় করেছিলেন। ৫০টি ম্যাচ খেলেন দেশের জার্সিতে। দেশের হয়ে অলিম্পিক, এশিয়ান গেমস, এশিয়া কাপ ও মারডেকা কাপে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দুটি এশিয়া কাপ ও মারডেকা কাপে চুনী দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি।

 

কোচিং কেরিয়ার: ১৯৮৬ থেকে ১৯৮৯ পর্যন্ত টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর ছিলেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ ছিলেন চুনী।

 

 

সফল ক্রিকেটার: ফুটবল খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পরে তিনি ক্রিকেট খেলায় মনোনিবেশ করেন এবং রঞ্জি ট্রফিতে তিনি বাংলার অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৬২-৬৩ মরশুম থেকে ১৯৭২-৭৩ পর্যন্ত বাংলা ক্রিকেট দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। মূলত অল-রাউন্ডার ছিলেন। তিনি দুবার রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল খেলেছিলেন। তিনি ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন এবং ডানহাতে মিডিয়াম পেস বল করতেন। তিনি ৪৬টি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচ খেলে একটি সেঞ্চুরি সহ ১৫৯২ রান করেছিলেন। তিনি বল করে ৪৭টি উইকেটও নিয়েছিলেন।

 

অন্যান্য খেলা: শুধু ফুটবল নয়, ক্লাবের হয়ে হকি স্টিক হাতেও মাঠে নেমেছেন চুনী। সাউথ ক্লাবে টেনিস খেলতেন নিয়মিত। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি। সব খেলায় তিনি সমান দক্ষ ছিলেন।

 

 

পুরস্কার ও সম্মান: ১৯৬২ সালে এশিয়ার সেরা স্ট্রাইকারের পুরস্কার জেতেন।১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে চুনী গোস্বামী অর্জুন পুরস্কার এবং ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি মোহনবাগান রত্ন পান। বাংলার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন তাঁকে জীবনকৃতি সম্মানে ভূষিত করে। ২০০৫ সালে কলকাতারা শেরিফ নিযুক্ত হন।

 

মৃত্যু: ৩০ এপ্রিল, ২০২০ সালে ৮২ বছর বয়েসে হৃদরোগাক্রান্ত হয়ে কলকাতায় মারা যান চুনী গোস্বামী।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

শুভ উত্তরায়ণ সংক্রান্তিঃ বা মকর সংক্রান্তি বা পৌষ সংক্রান্তি কী ? কেন পালন করা হয়?

ওঁ নমঃ শ্রী ভগবতে প্রণবায়…!

শুভ উত্তরায়ণ সংক্রান্তিঃ বা মকর সংক্রান্তি বা পৌষ সংক্রান্তি কী ? কেন পালন করা হয়?

আগামী ২৯ শে পৌষ, ১৫ই জানুয়ারি সোমবার, শুভ উত্তরায়ণ সংক্রান্তিঃ বা মকর সংক্রান্তি বা পৌষ সংক্রান্তি।(15.01.2024) প্রতি মাসের শেষ দিন অর্থাৎ যে দিন মাস পূর্ণ হবে সে দিনকে সংক্রান্তি বলা হয়। সংক্রান্তি অর্থ সঞ্চার বা গমন করা। সূর্যাদির এক রাশি হতে অন্য রাশিতে সঞ্চার বা গমন করাকেও সংক্রান্তি বলা যায়। মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র, বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় এই ছয় মাস উত্তরায়ন কাল এবং শ্রাবণ, ভাদ্র, আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ ও পৌষ এই ছয় মাস দক্ষিণায়ন কাল। পৌষ মাসের শেষ দিনে সূর্য উত্তরায়ণের দিকে যাত্রা শুরু করে বলে এই সংক্রান্তিকে উত্তরায়ণ সংক্রান্তিও বলা হয়। শাস্ত্রমতে মানুষের এক বছর দেবতাদের একটি দিন-রাতের সমান অর্থাৎ মানুষের উত্তরায়ণের ছয়মাস দেবতাদের একটি দিন ও দক্ষিণায়নের ছয়মাস দেবতাদের একটি রাত। হিন্দু সনাতন বৈদিক শাস্ত্রে এই পবিত্র তিথিকে সূর্য ধনু রাশি থেকে মকর রাশিতে প্রবেশ করাকে উত্তরায়ণ সংক্রান্তি বা মকর সংক্রান্তি বলা হয়েছে ৷ এদিন থেকে দেবতাদের দিন শুরু হয় ৷

রাত্রে মানুষ যেমন সকল দরজা-জানালা, প্রধান ফটক ইত্যাদি বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন, তেমনি দেবতাগণও রাত্রে অর্থাৎ দক্ষিণায়ণে সবকিছু বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। এসময় বাহির থেকে প্রবেশ করার সুযোগ নেই, অর্থাৎ দক্ষিণায়ণে দেবলোক পুরোপুরি বন্ধ থাকে। আবার দেবগণের রাত পৌষ সংক্রান্তির দিন শেষ হয় বলে পরবর্তী উদয়ের ব্রাহ্মমুহূর্ত থেকে দেবগণের দিবা শুরু হয়। উক্ত সময়ে স্বর্গবাসী ও দেবলোকের সকলেই নিদ্রা ভঙ্গ হয় এবং নিত্য ভগবৎ সেবা মূলক ক্রিয়াদি শুরু হতে থাকে। এই জন্য হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীগণ ব্রহ্মমুহূর্তে স্নান,নামযজ্ঞ, গীতাপাঠ, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটিকে আনন্দময় করে তোলেন।

অন্যদিকে, গঙ্গা পুত্র ভীষ্ম তার পিতা শান্তনু থেকে বর পেয়েছিলেন যে তিনি যখন ইচ্ছা মৃত্যুবরণ করতে পারবেন। অর্থাৎ তাঁর নিজের ইচ্ছা ছাড়া কখনো মৃত্যু তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের বিশ্ববিখ্যাত বীর, মহাপ্রাজ্ঞ, সর্বত্যাগী ও জিতেন্দ্রিয় মহাপুরুষ ভীষ্মের মহাপ্রয়াণের স্মৃতির জন্য উত্তরায়ণ সংক্রান্তি আরও মর্যাদাপূর্ণ হয়েছে। উল্লেখ্য, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে কৌরব পক্ষের চারজন সেনাপতির মধ্যে তিনিই প্রধান সেনাপতি। উভয় পক্ষের আঠারদিন যুদ্ধের দশম দিবসে সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পূর্বে পাণ্ডব পক্ষের সেনাপতি অর্জুনের শরাঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে ভীষ্মদেব রথ থেকে মাটিতে পড়ে যান। কিন্তু তিনি মাটি স্পর্শ না করে আটান্ন দিন তীক্ষ্ম শরশয্যায় শুয়ে উত্তরায়ণের অপেক্ষা করে পৌষ সংক্রান্তির দিনে যোগবলে দেহত্যাগ করেছেন।

গ্রাম বাংলা সহ ভারতের বিভীন্ন জায়গায় ভোর বেলা আগুন লাগানো হয় খড় ও বাঁশ দিয়ে বা্নানো স্তুপে, এটি মূলত পিতামহ ভীষ্মের চিতার স্বরুপ। পৌষ সংক্রান্তির দিন সূর্য উত্তর মেরুতে হেলে পরতে থাকে যার জন্যে একে মকর সংক্রান্তি বা উত্তরায়ণ সংক্রান্তি বলে। শাস্ত্রমতে ভীষ্মদেব মৃত্যুর পরে ভগবদ্ ধামে যাননি। তিনি ছিলেন ‘দৌ’ মতান্তরে দ্যু নামক অষ্টবসু, যিনি মহর্ষি বশিষ্ঠের অভিশাপগ্রস্ত হয়ে ইহলোকে মনুষ্য হিসাবে কৃতকর্ম ভোগের জন্য জন্ম নিয়েছিলেন। তাই তাঁর পুনরায় দেবলোকেই যাবার কথা। কারণ তিনি
সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা দক্ষিণায়নের সময় দেবলোকে রাত্রি, সেই সময় সেখানকার সবকিছু বন্ধ থাকে। ভীষ্ম যদি দক্ষিণায়নে দেহত্যাগ করতেন, তবে তাঁকে তাঁর লোকে প্রবেশ করার জন্য বাইরে প্রতীক্ষা
করতে হত। তিনি ইচ্ছামৃত্যু বরণ করেছিলেন বলে ভেবে দেখলেন, দক্ষিণায়নে মহাপ্রয়াণ করলে দেবলোকে গিয়ে বাইরে প্রতীক্ষা করার চেয়ে এখানে থেকে উত্তরায়ণের প্রতীক্ষা করাই ভালো। কারণ এখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দর্শন লাভ হবে এবং সৎসঙ্গ হতে থাকবে, যার ফলে সকলেরই মঙ্গল হবে। দেবলোকে একলা প্রতীক্ষা করে কী হবে ? এইভেবে তিনি দক্ষিণায়নে শরীর ত্যাগ না করে উত্তরায়ণে শরীর ত্যাগ করেছিলেন।

দীর্ঘ ৫৬ দিন শরশয্যায় অবস্তানের পর অবশেষে উত্তরায়ণ বা পৌষ সংক্রান্তির নিশান্তে পিতামহ ভীষ্মদেব যোগবলে দেহত্যাগ করে দেবলোকে গমন করেন।
প্রায় ৫১৫৯ বছর পুর্ব হইতে আমরা প্রতিবৎসর উত্তরায়ণ বা পৌষ সংক্রান্তিতে প্রাতকালে খড়-কুটা জড়ো করে পিতামহ ভীষ্মদেবের প্রতীকি শবদাহ করে থাকি। অনেকে এই শবদাহকে মেড়ামেড়ির ঘর জ্বালানো বলে থাকেন এবং এই দিন *মাছ-মাংস আহার করে থাকেন, যাহা সম্পূর্ণ অনুচিত।* কারণ উত্তরায়ণ বা পৌষ সংক্রান্তি অন্তেষ্টিক্রিয়া ও শ্রাদ্ধ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান। অন্যদিকে এই দিবসটি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, এই দিন প্রাতকালে দেবলোকের সকল দেবতাগন ও স্বর্গবাসী পিতৃপুরুষগন নিদ্রা থেকে জাগ্রত হন। ভীষ্মদেবের এই মহাপ্রয়াণের স্মৃতির জন্য হিন্দু সনাতণ ধর্মাবলম্বীগণের নিকট উত্তরায়ণ সংক্রান্তি বেশী গুরুত্ব পেয়েছে।

এই জন্য হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বীগন ব্রাহ্ম মুহুর্থে স্নান, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, গ্রামে, নগরে সংকীর্ত্তন, গীতাপাঠ,
সাধু মহারাজকে দান, অন্নদান, বস্ত্রদান বা আর্থিক অনুদান দেওয়া সহ মঙ্গলজনক কাজ করে থাকেন। সবাই কে মহা-সংক্রান্তির প্রণাম, প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
(উত্তরায়ন) শুভ মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে জগৎ গুরু ভগবান স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের শুভ ও মঙ্গলময় আশির্বাদ আপনাদের সকলের শিরে বর্ষিত হোক… এই প্রার্থনা করি…!***
ওঁ গুরু কৃপা হি কেবলম্ ।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৫ জানুয়ারী, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ১৫ জানুয়ারি । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) সেনা দিবস (ভারত)।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

৩৭ – নিরো, রোমের রাজা।

১৬২২ – মলিয়রের, ফরাসি নাট্যকার।

 

১৯০৫ – নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়, বাঙালি শিশুসাহিত্যিক, লেখক ও বাংলা চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব।

 

১৯০৯ – কাজী কাদের নেওয়াজ, কবি ও শিক্ষাবিদ।

১৯১২ – রণেশ দাশগুপ্ত, বাঙালি সাহিত্যিক।

১৯১৮ – জামাল আবদেল নাসের, মিশরের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম রাষ্ট্রপতি।

১৯২১ – রাধাকৃষ্ণ চৌধুরী, ভারতীয় ইতিহাসবিদ ও লেখক।

 

১৯২৯ – মার্টিন লুথার কিং, নোবেলজয়ী কৃষ্ণাঙ্গ নেতা।

 

১৯৩৮ – (ক)  চুনী গোস্বামী ভারতীয় বাঙালি ফুটবল খেলোয়াড়।

(খ) সুবিমল গোস্বামী, বাংলাদেশী ফুটবল খেলোয়াড় ও ক্রিকেট খেলোয়াড়।

 

১৯৩৯ – হোসেন তৌফিক ইমাম, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

 

১৯৬৮ – সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আন্তর্জাতিক খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশী আইনজীবী ও পরিবেশকর্মী।

 

১৯৭৮ – রায়ান সাইডবটম, ইংরেজ ক্রিকেট খেলোয়াড়।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১২৫৬ – হালাকু খান দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার আলামুত (বর্তমান ইরানে অবস্থিত) দখল করে ধ্বংস করে ফেলেন।

১৭৫৯ – লন্ডনে মানুষের ইতিহাস ও সংস্কৃতির জাদুঘর ব্রিটিশ মিউজিয়ামের উদ্বোধন হয়। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৭৫৩ সালে।

১৭৮৪ – স্যার উইলিয়াম জোন্সের উদ্যোগে কলকাতায় এশিয়াটিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮৩৯ – সেন্ট্রাল আমেরিকান ইউনিয়নের বিলুপ্তির পর এলসেলভাদর স্বাধীনতা লাভ করে।

১৮৭৩ – বাংলার দ্বিতীয় সাধারণ রঙ্গালয় ওরিয়েন্টাল থিয়েটারের উদ্বোধন হয়।

১৮৭৫ – কলকাতায় দ্য স্টেটসম্যান ইংরাজী দৈনিক পত্রিকা সংযুক্তরূপে প্রকাশ শুরু করে।

১৮৭৮ – লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারীরা প্রথম ডিগ্রি লাভের সুযোগ পান।

১৯১২ – ইতালিয়রা সর্বপ্রথম বিমান থেকে প্রচারপত্র বিলি করে লিবিয়ার আকাশে।

১৯২২ – নেদারল্যান্ডের রাজধানী হেগে স্থায়ী আন্তর্জাতিক আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৩৪ – ভারতের বিহারে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ২০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়।

 

১৯৬০ – নেপালের রাজা মহেন্দ্র সংবিধান বাতিল করে সরাসরি শাসনক্ষমতা হাতে তুলে নেন।

১৯৭২ – বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে মদ্যপান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।

 

১৯৭৩ – ভিয়েতনাম যুদ্ধ: প্রেসিডেন্ড রিচার্ড নিক্সন আক্রমণাত্মক যুদ্ধ স্থগিত করার ঘোষণা দেন।

১৯৭৮ – ইরানি জনগণের বিপ্লবী আন্দোলন যখন তুঙ্গে ওঠে,তখন ইরানের শাহী রাজবংশের সর্বশেষ শাসক রেজা শাহ পাহলভি চিকিৎসার অজুহাত দেখিয়ে ইরান থেকে পালিয়ে যায়।

 

১৯৭৮ – যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার পিপলস রিপাবলিক অব চীনকে স্বীকৃতি দেন এবং তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

১৯৮৬ – চীনের প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৯১ – যুক্তরাষ্ট্র কুয়েত থেকে ইরাককে তার সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেধেঁ দেয়, অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র।

১৯৯৭ – ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে হেবরন চুক্তিস্বাক্ষরিত হয়।

২০০১ – অনলাইনভিত্তিক বহুভাষার মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া যাত্রা শুরু করে।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

৬৫৭ – বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হুযাইফা (রা.) মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৮৮ – নোবেলজয়ী [১৯৭৪] আইরিশ মানবহিতৈষী সিন ম্যাক ব্রিজের মৃত্যু।

 

২০০৪ – মানিক সাহা, বাংলাদেশের খুলনা জেলার প্রখ্যাত সাংবাদিক।

 

২০০৯ – তপন সিংহ, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারজয়ী ভারতীয় চলচ্চিত্রের বিখ্যাত বাঙালি পরিচালক।

২০১২ – কার্লো ফ্রুটোরো, ইতালীয় প্রখ্যাত সাংবাদিক।

 

২০১৬ – ফ্রান্সিসকো এক্স এলার্কন, আমেরিকান কবি ও শিক্ষাবিদ।

 

২০১৬ – কেন জুজ, অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলার ও কোচ।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ভারতীয় সেনা দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় ও গুরুত্ব।

ভারতীয় সেনাবাহিনী হল ফ্রন্ট লাইন ফাইটিং ফোর্স যা বিদেশী আক্রমণের বিরুদ্ধে দেশকে রক্ষা করার সময় নিজের জীবনকে বিপদে ফেলে।  প্রতি বছর ১৫ জানুয়ারী, ভারতীয় সেনা দিবস পালন করা হয় ১৯৪৯ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রথম ভারতীয় দলে কমিশনিং করার জন্য।
দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহসিকতা, নিঃস্বার্থতা এবং অটল উত্সর্গ উদযাপন করার দিনটি।  ভারতীয় সেনাবাহিনী ১৫ জানুয়ারীতে তার বার্ষিক আর্মি ডে প্যারেড পরিচালনা করে। এটি দিল্লি এবং বেঙ্গালুরুতে তার প্রথাগত অবস্থানের পরিবর্তে এই বছর লখনউতে অনুষ্ঠিত হবে।
নাগরিকদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর জন্য সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টা এই পরিবর্তনের অন্তর্ভুক্ত।  সেনাবাহিনীর ছয়টি অপারেটিং কমান্ডেরই সামগ্রিক নাগাল বাড়ানোর ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টায় প্যারেড আয়োজন করার সুযোগ থাকবে।

ভারতীয় সেনাবাহিনী ধীরে ধীরে একটি আধুনিক বাহিনীতে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করছে যা পদাতিক, আর্টিলারি এবং সাঁজোয়া ব্যাটালিয়নে ড্রোন এবং কাউন্টার-ড্রোন সিস্টেম প্রবর্তনের জন্য একটি নতুন অপারেশনাল দর্শন পাবে।
অন্যান্য প্রচলিত অসামঞ্জস্যতা দূর করার পাশাপাশি, সেনাবাহিনী ২০২৪ কে “প্রযুক্তি শোষণের বছর” হিসাবে পালন করবে এবং কমান্ড সাইবার অপারেশন সাপোর্ট উইংস (CCOSWs) প্রতিষ্ঠা করবে।

 

২০২৪ সালের ভারতীয় সেনা দিবসের থিম—–

 

২০২৪ সালে ভারতীয় সেনা দিবসের থিম হবে “জাতির সেবায়”। অটল আবেগ, উত্সর্গ এবং পেশাদারিত্বের সাথে দেশের সেবা করার ভারতীয় সেনাবাহিনীর মিশন এই থিমের মধ্যে নিহিত।  এটি তাদের দেশের নিরাপত্তা এবং আদর্শ রক্ষার জন্য ভারতীয় সেনা সৈন্যদের নিঃস্বার্থ ত্যাগের উপর জোর দেয়।
বিষয়টি ভারতীয় সেনাবাহিনীর নীতির সাথে সারিবদ্ধ, “নিজের আগে সেবা” যা ব্যক্তিগত সাধনার চেয়ে জাতীয় সেবাকে অগ্রাধিকার দেয়।  এটি দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জনসংখ্যার মঙ্গল রক্ষায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর অটল প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেয়।

 

ভারতীয় সেনা দিবস ২০২৪ উদযাপনের তাৎপর্য—-

 

ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠাকে সম্মান জানিয়ে, ভারতীয় সেনা দিবসের স্মরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  এই দিনটি ১৯৪৯ সালে জেনারেল স্যার ফ্রান্সিস বুচার থেকে জেনারেল কে. ক্যারিয়াপ্পা, প্রথম ভারতীয় কমান্ডার-ইন-চিফ হয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের পরিবর্তনকে স্মরণ করে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ভারতীয়করণের প্রক্রিয়ায়, এটি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।  বিশ্ব একাই দেখতে পাবে যে ভারত এখন অন্য দেশের আক্রমণের বিরুদ্ধে তার সীমানা রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট আত্মনিশ্চিত।  চীন, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে, ভারতীয় সেনাবাহিনী বিশ্বের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
যেহেতু অনেক বংশোদ্ভূত সেনা সদস্যরা ইভেন্টে যোগ দিয়েছিল এবং একটি ইউনিট হিসাবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একটি একক বাহিনী প্রতিষ্ঠার জন্য একত্রিত হয়েছিল, দিবসটি জাতীয় সংহতিকেও সম্মানিত করেছিল।  এই দিনে, ভারতীয় সামরিক বাহিনী তার ঔপনিবেশিক যুগের শাসনের অবসান ঘটায় এবং দেশটিকে একটি নতুন সার্বভৌম রাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

মহাশ্বেতা দেবী  ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক এবং একজন কর্মী।

মহাশ্বেতা দেবী  ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক এবং একজন কর্মী। তার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে হাজার চুরাশির মা , রুদালী এবং অরণ্যের অধিকার । তিনি একজন বামপন্থী ছিলেন যিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ , বিহার , মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড় রাজ্যের উপজাতিদের ( লোধা এবং শবর ) অধিকার ও ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছিলেন । তিনি বিভিন্ন সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন যেমনসাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার ( বাংলায় ), জ্ঞানপীঠ পুরস্কার এবং র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার সহ ভারতের বেসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী এবং পদ্মবিভূষণ ।

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা—————

মহাশ্বেতা দেবী একটি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ১৪ জানুয়ারি ১৯২৬ তারিখে ঢাকা , ব্রিটিশ ভারতের (বর্তমানে ঢাকা , বাংলাদেশ )। তার বাবা মনীশ ঘটক ছিলেন কল্লোল আন্দোলনের একজন কবি এবং ঔপন্যাসিক  , যিনি ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন যুবনাশ্ব ( বাংলা : আত্মনাশ্ব ) । ঘটকের ভাই ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটক । দেবীর মা, ধরিত্রী দেবীও একজন লেখক এবং একজন সমাজকর্মী ছিলেন  যার ভাইদের মধ্যে রয়েছেন ভাস্কর শঙ্খ চৌধুরী এবং এর প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক।ভারতের ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলি , শচীন চৌধুরী।

দেবীর প্রথম শিক্ষা ছিল ঢাকায়,  ইডেন মন্টেসরি স্কুল । এরপর তিনি পশ্চিমবঙ্গে (বর্তমানে ভারতে) চলে যান। এরপর তিনি মেদিনীপুর মিশন গার্লস হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন। এরপর তাকে শান্তিনিকেতনে ভর্তি করা হয় । এর পরে, তিনি বেলতলা গার্লস স্কুলে পড়াশোনা করেন যেখানে তিনি তার ম্যাট্রিকুলেশন শেষ করেন। তারপর ১৯৪৪ সালে তিনি আসুতোষ কলেজ থেকে আই.এ. তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং ইংরেজিতে বিএ (অনার্স) সম্পন্ন করেন এবং তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এমএ সম্পন্ন করেন ।

মহাশ্বেতা দেবী বহুবার ভারতের উপজাতি মানুষদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। মহাশ্বেতা দেবীর বিশেষত্ব আদিবাসী, দলিত এবং প্রান্তিক নাগরিকদের অধ্যয়ন তাদের মহিলাদের উপর ফোকাস করে। তারা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতা , মহাজন এবং উচ্চ শ্রেণীর দুর্নীতি ও অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হিসেবে যুক্ত ছিল । তিনি বছরের পর বছর পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়ের আদিবাসী গ্রামে বসবাস করতেন, তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতেন এবং তাদের কাছ থেকে শিখতেন। তিনি তার কথা ও চরিত্রে তাদের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগকে মূর্ত করেছেন।  তিনি দাবি করেছিলেন যে তার গল্পগুলি তার সৃষ্টি নয়, সেগুলি তার দেশের মানুষের গল্প। যেমন একটি উদাহরণ তার কাজ “ছোট্টি মুন্ডি এবং তার তির”।তিনি লোধা এবং শবর , পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী সম্প্রদায়, মহিলা এবং দলিতদের অধ্যয়ন করেছিলেন ।

তার বিস্তৃত বাংলা কথাসাহিত্যে, তিনি প্রায়শই শক্তিশালী কর্তৃত্ববাদী উচ্চ-বর্ণের জমিদার, অর্থ-ঋণদাতা এবং ভেনাল সরকারী কর্মকর্তাদের দ্বারা উপজাতীয় জনগণ এবং অস্পৃশ্যদের উপর নির্মম নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেন।মহাশ্বেতা দেবী ভারতে উপজাতিদের দ্বারা ভোগা বৈষম্যের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার তার আওয়াজ তুলেছিলেন। দেবীর ১৯৭৭ সালের উপন্যাস অরণ্যের অধিকার (অরণ্যে অধিকার) ছিল বিরসা মুন্ডার জীবন নিয়ে । এবং ২০১৬ সালের জুন মাসে, দেবীর সক্রিয়তার ফলস্বরূপ, ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকার অবশেষে মুণ্ডার মূর্তি থেকে ম্যানাকলগুলি অপসারণ করতে দেখেছিল, যা উল্লেখযোগ্য তরুণ উপজাতীয় নেতার স্মারক ভাস্কর্যের অংশ ছিল। ব্রিটিশ শাসনের যুগের একটি ফটোগ্রাফের উপর ভিত্তি করে।

দেবী ১০০ টিরও বেশি উপন্যাস এবং ২০ টিরও বেশি ছোট গল্পের সংকলন লিখেছেন প্রাথমিকভাবে বাংলায় লেখা তবে প্রায়শই অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করা হয়। ঝাঁসির রাণীর জীবনী অবলম্বনে তার প্রথম উপন্যাস ঝাঁসির রানী, প্রকাশিত হয় ১৯৫৬ সালে ।

পুরস্কার এবং স্বীকৃতি—————–

সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার (১৯৭৯),  সমাজসেবায় পদ্মশ্রী (১৯৮৬), জ্ঞানপীঠ পুরস্কার (১৯৯৬), রামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার (১৯৯৭),  অফিসার দেল’ অর্ডার দেস আর্টস এত দেস লেটার্স (২০০৩), পদ্মবিভূষণ – ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা (২০০৬), সার্ক সাহিত্য পুরস্কার (২০০৭), ম্যান বুকার আন্তর্জাতিক পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন (২০০৯), যশবন্তরাও চবন জাতীয় পুরস্কার (২০১০), বঙ্গবিভূষণ – পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা (২০১১)।

চলচ্চিত্রায়ন—————–

সংঘর্ষ,  রুদালি, হাজার চৌরাসি কি মা,  মাটি মায়,

গাঙ্গোর।

দেবীর প্রধান কাজগুলির মধ্যে রয়েছে——–

হাজর চুরাশির মা,  অরণ্যের অধিকার, অগ্নিগর্ভ, মূর্তি, নীড়েতে মেঘ,  স্তন্যদায়নী, চোট্টি মুন্ডা এবং তার তীর, বর্তিকা।

মৃত্যু———–

২৩ জুলাই ২০১৬ তারিখে, দেবী একটি বড় হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন এবং তাকে কলকাতার বেলে ভিউ ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় । জুলাই ২৮ তারিখে ৯০ বছর বয়সে একাধিক অঙ্গ ব্যর্থতার কারণে দেবী মারা যান।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৪ জানুয়ারী, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ১৪ জানুয়ারি । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) জাতীয় বন সংরক্ষণ দিবস (থাইল্যান্ড)।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৫৫১ – আবুল ফজল, মুঘল যুগের শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক।

 

১৮৩১ – তারাপদ সাঁতরা , বাঙালি পুরাতত্ত্ববিদ এবং লোকসংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ।

১৮৬১ – ষষ্ঠ মুহাম্মদ, উসমানীয় খলিফা এবং সর্বশেষ উসমানীয় সুলতান।

১৮৭৫ – আলবার্ট সোয়েৎজার, ফরাসি খ্যাতনামা চিকিৎসক এবং সঙ্গীতবিদ।

 

১৯০৩ – ইতিহাসবিদ ড.নীহাররঞ্জন রায় ।

১৯১৯ – কাইফি আজমি ভারতীয় প্রথিতযশা উর্দ্দুভাষী কবি ও সাহিত্যিক এবং বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব।

 

১৯২৪ – বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি অভিনেতা ও গায়ক সবিতাব্রত দত্ত।

১৯২৫ – ইউকিও মিশিমা, জাপানি ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার।

 

১৯২৬ – মহাশ্বেতা দেবী, ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক ও মানবাধিকার আন্দোলনকর্মী।

 

১৯২৯ – শ্যামল মিত্র, ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার।

১৯৪১ – ফে ডানাওয়ে, মার্কিন অভিনেত্রী।

১৯৬৫ – সীমা বিশ্বাস, ভারতীয় চলচ্চিত্রের ও অসমের থিয়েটার জগতের খ্যাতনামা অভিনেত্রী।

 

১৯৬৭ – এমিলি ওয়াটসন, ইংরেজ চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেত্রী।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৫১৪ – দাসপ্রথার বিরুদ্ধে পোপ লিও এক্স ঘোষণা দেন।

১৬৩৯ – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান গৃহীত হয়।

১৭৬১ – পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে আহমদ শাহ দুররানীর নেতৃত্বে আফগানরা মারাঠাদের পরাজিত করে।

১৮১৪ – ডেনমার্কের রাজা সুইডেনের রাজার হাতে নরওয়েকে ছেড়ে দেন।

১৮৫৮ – নেপোলিয়নের উপর ব্যর্থ হামলা চালানো হয়।

১৮৯৯ – স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দের সম্পাদনায় প্রথম উদ্বোধন (পত্রিকা) প্রকাশিত হয়। (১ মাঘ ১৩০৫ বঙ্গাব্দ)

১৯০৭ – জামাইকায় ভূকম্পনে কিংস্টন বিধ্বস্ত ও এক হাজার নিহত হয়।

১৯২৯ – আফগানিস্তানের রাজা আমানুল্লাহ সিংহাসন ছেড়ে দেন।

১৯৩৮ – আজকের মকর সংক্রান্তির দিনে বেলুড়মঠের রামকৃষ্ণ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করা হয়।

১৯৪৩ – মরক্কোর ক্লাসাব্লাকা শহরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইন্সটন চার্চিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফ্রাংকলিন ডি. রুজভেল্ট বৈঠকে বসেছিলেন।

১৯৬৯ – পূর্ব বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা কর্মসূচী গৃহীত হয়।

১৯৬৯ – ভারতের মাদ্রাজ রাজ্যের নতুন নামকরণ হয় তামিলনাড়ু।

১৯৭২ – ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নিহত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে স্বাধীন বাংলাদেশে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়।

১৯৭৫ – চীনে নতুন শাসনতন্ত্র ঘোষণা এবং প্রেসিডেন্ট পদ বিলোপ ঘটে।

১৯৮০ – জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ আফগানিস্তানে আগ্রাসন চালানোর জন্য অধুনালুপ্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল।

১৯৯১ – ইসরাইলের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের গুপ্তচরদের হাতে প্রাণ হারান পিএলও শীর্ষ স্থানীয় নেতা আবু আয়াদ সহ অপর তিন নেতা।

১৯৯৮ – যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা তাদের এক গবেষণায় প্রমাণ করেন, একটি এনজাইম কোষের মৃত্যু এবং বয়সবৃদ্ধির গতি মন্থর করে।

২০০০ – বসনিয়ার একটি গ্রামে ১৯৯৩ সালে ১০০ জনেরও বেশি মুসলমান বাসিন্দাকে হত্যার অভিযোগে জাতিসংঘের একটি ট্রাইব্যুনাল পাঁচ বসনীয় ক্রোটকে ২৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদান করেন।

২০০৫ – শনি গ্রহের চাঁদ টাইটানে হুইজেন্স প্রোবের অবতরণ।

২০০৮ – নাসার পাঠানো ম্যাসেন্জার নামের মহাকাশযান প্রথম বুধ গ্রহের অদেখা গোলাধের্র ছবি তুলতে সক্ষম হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৭৪২ – এডমুন্ড হ্যালি, ইংরেজ জ্যোতির্বিদ ও গণিতজ্ঞ।

১৭৫৩ – জর্জ বার্কলি, আইরিশ দার্শনিক।

১৮৯৮ – লুইস ক্যারল, হাস্যরস শিল্পী ও শিশুসাহিত্যিক।

 

১৯৫৪ – বিপিনবিহারী গঙ্গোপাধ্যায়, ভারতের ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামী।

 

১৯৬২- অমরেন্দ্রনাথ ঘোষ, কল্লোল, কালিকলম, প্রগতি পর্বের শক্তিমান লেখক।

 

১৯৬৯ – শিশু ও কিশোর সাহিত্যের সুপরিচিত লেখক মোহনলাল গঙ্গোপাধ্যায়।

 

১৯৭১ – দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রগতিবাদী সাহিত্যিক ও সংগঠক।

 

১৯৭২ – অনুভা গুপ্ত একজন ভারতীয় বাঙালি অভিনেত্রী।

১৯৭৮ – কুর্ট গ্যডল, মার্কিন যুক্তিবিদ ও গণিতবিদ।

 

২০০৮ – সেলিম আল দীন, বাংলাদেশি নাট্যকার।

২০২০ – কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This