Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে বৈষ্ণব সাহিত্যের অন্যতম লেখক ও কবি বিমানবিহারী মজুমদার।

বৈষ্ণব সাহিত্যের এক অন্যতম লেখক ও কবি ভাগবতরত্ন বিমানবিহারী মজুমদার  ছিলেন বিংশ শতকের প্রথমার্ধে একাধারে ইতিহাস ও অর্থনীতির পণ্ডিত ।

 

জন্ম ও শিক্ষাজীবন———‐—-

 

বিমান বিহারী মজুমদার ১৯০০ সালের ৭ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের নদীয়া জেলার কুমারখালীতে জন্মগ্রহণ করেন।  পিতার নাম শ্রীশচন্দ্র মজুমদার।  বিমান বিহারীর স্কুল পড়াশুনা নবদ্বীপে।  ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে নবদ্বীপ হিন্দু স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজে ভর্তি হন।  এখান থেকে তিনি ইতিহাসে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন এবং বিএ পাস করেন।  ১৯২৩ সালে, তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে M.A. পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে দ্বিতীয় হন এবং পরে অর্থনীতিতে M.A. পাশ করেন।

 

কর্মজীবন—————-

 

বিমান বিহারী তখন পাটনার বি.এন. কলেজে ইতিহাস ও অর্থনীতি পড়ানোর মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন।  এখানে অধ্যাপনার সময় তিনি ঊনবিংশ শতাব্দীতে রাজা রামমোহন রায়ের আমল থেকে দয়ানন্দের সময়কাল পর্যন্ত রাজনৈতিক চিন্তার ইতিহাস এবং এর সহায়ক বই লেখেন এবং ১৯৩২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন।  ১৯৩৭ সালে তিনি বাংলায় ‘চৈতন্যচরিতের উপাদান’ গবেষণা গ্রন্থ রচনা করেন এবং পিএইচডি হন।  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।  বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে বাংলায় লেখা তাঁর গবেষণাপত্রই প্রথম এই সম্মান লাভ করে।  তার কর্মজীবনে, বিমানবিহারী ইতিহাস ও অর্থনীতিতে পাণ্ডিত্য এবং প্রতিষ্ঠা অর্জন করেছিলেন, তবে বৈষ্ণব সাহিত্যের উপর মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছিলেন এবং সময়ের সাথে সাথে বৈষ্ণব সমাজের সর্বোচ্চ সম্মানিত ব্যক্তিত্বের অবস্থান অর্জন করেছিলেন এবং ‘ভাগবতরত্ন’ উপাধিতে ভূষিত হন।

 

কর্ম জীবন—

 

জীবনের বেশিরভাগ সময় পাটনায় কাটিয়েছেন।  ১৯৪৫ সালে, হরপ্রসাদ দাস বিহারের আরাতে অবস্থিত জৈন কলেজের অধ্যক্ষ হন।  ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে বিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ-পরিদর্শক নিযুক্ত হন এবং ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন।  তিনি ১৯৬৪ সাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে UGC গবেষণা অধ্যাপক ছিলেন।  বিমানবিহারী বৈষ্ণব সাহিত্য ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে গ্রন্থ রচনা করেন।

 

রচনাবলি——-

 

History of Political Thought: From Rammohun to Dayananda: 1821–84,, History of Religious Reformatinion in India in the Nineteenth century,  ভারতের শাসন পদ্ধতি, শ্ৰীশ্ৰীক্ষণদাগীতচিন্তামণি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, চৈতন্যচরিতের উপাদান, চণ্ডীদাসের পদাবলী, ষোড়শ শতাব্দীর পদাবলী সাহিত্য, পাঁচশত বৎসরের পদাবলী, জ্ঞানদাস ও তাঁহার পদাবলী, রবীন্দ্রসাহিত্যে পদাবলীর স্থান, গোবিন্দদাসের পদাবলী ও তাঁহার যুগ।

 

১৮ নভেম্বর, ১৯৬৯ সালে তিনি প্রয়াত হন।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ৭ জানুয়ারী, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ৭ জানুয়ারি । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) গণহত্যা দিবস- কম্বোডিয়া।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০০ – বিমানবিহারী মজুমদার, ভাগবতরত্ন, বাঙালি সাহিত্যিক ও গবেষক।

 

১৯২৯ – টেরি মুর, মার্কিন চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেত্রী।

১৯৪৮ – কেন্নি লগ্গিনস, আমেরিকান রক গায়ক।

 

১৯৪৮ – ইচিরো মিযুকি, জাপানি কন্ঠ অভিনেতা।

 

১৯৬৪ – নিকোলাস কেজ, মার্কিন অভিনেতা।

 

১৯৬৭ – ইরফান খান, ভারতীয় অভিনেতা।

১৯৭১ – জেরেমি রেনার, মার্কিন অভিনেতা ও গায়ক।

 

১৯৭৯ – বিপাশা বসু, ভারতীয় অভিনেত্রী।

১৯৮২ – রুথ নেগা, ইথিওপীয়-আইরিশ অভিনেত্রী।

১৯৯১ – এদেন আজার, বেলজিয়ামের ফুটবল খেলোয়াড়।

১৮০০ – মিলার্ড ফিলমোর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি।

 

১৮৫১ – জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ার্সন, প্রাচ্যতত্ত্ববিদ ও ভাষাতাত্ত্বিক।

১৮৭৩ – শার্ল পিয়ের পেগি, ফরাসি কবি ও সমাজতন্ত্রী।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

২০১১ – বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর-দিনহাটা সীমান্তের খিতাবেরকুঠি এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর সদস্যরা ফেলানী খাতুন নামের এক কিশোরীকে গুলি করে হত্যা করে।

 

১৯২৪ – আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা হয়।

১৯২৭ – প্রথম ট্রান্সআটলান্টিক টেলিফোন সার্ভিস প্রতিষ্ঠিত। নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডন সংযোগের মাধ্যমে এটার কাজ শুরু হয়।

১৯৩০ – ডিজেল ইঞ্জিন চালিত প্রথম অটোমোবাইলের সফল যাত্রা সম্পন্ন হয়।

১৯৩৫ – ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৪০ – শীতকালীন যুদ্ধ: ফিনিস নবম ডিভিসন ফিনল্যান্ড আক্রমনকারী সোভিয়েত বাহিনীকে সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করে দেয়।

১৯৪২ – বিশ্বজুড়ে চলাচলকারী প্রথম বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে প্যান আমেরিকান এয়ারলাইন্স।

১৯৪৫ – তৎকালীন জেনারেল ফিল্ড মার্শাল র্বানাড মন্টেগোমারী সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটল অব বুলাগ জয়ের মূল কৃতিত্ব দাবী করেন।

১৯৫২ – আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুমেন হাইড্রোজেন বোমা তৈরির কথা জানান।

১৯৫৯ – আমেরিকা কিউবার ফিদেল কাস্ত্রোর নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়।

১৯৬৮ – বৈরুত বিমান বন্দররে ইসরাইলীকমান্ডো হামলার পর লেবানন সরকারের পদত্যাগ।

১৯৭৮ – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আটক হাঙ্গেরির পবিত্র ক্রাউন হিসেবে খ্যাত ক্রাউন অব সেন্ট স্টিফেনের হাঙ্গেরিতে প্রত্যাবর্তন।

১৯৮৪ – ব্রুনাই আসিয়ানের ৬ষ্ঠ সদস্যপদ গ্রহণ করে।

১৯৮৬ – লিবিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়।

১৯৮৬ – মিশরের সিনাই মরুভূমি এলাকার একটি বন্দীশিবিরে পুলিশ কর্মকর্তা সোলাইমান খাতের নিহত হন।

১৯৮৯ – জাপানি সম্রাট হিরোহিতোর মৃত্যুর পর আকিহিতো জাপানের নতুন সম্রাট নির্বাচিত হন।

১৯৮৯ – আকিহিতো, জাপানি সম্রাট হিরোহিতোর মৃত্যুর পর জাপানের নতুন সম্রাট নির্বাচিত হন।

১৯৯৩ – বসনিয়া যুদ্ধ: বসনিয়ার সেনাবাহিনী ক্রাভিকের স্রেব্রেনিচা গ্রামে আৎসিক অভিযান পরিচালনা করে।

১৯৯৫ – ফিলিপাইনের ম্যানিলায় একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে রাসায়নিক দ্রব্য থেকে সৃষ্ট আগুনের সূত্র ধরে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলা প্রজেক্ট বোজিনকা এর পরিকল্পনা ফাঁস।

১৯৯৮ – ১৫০ বছরের নির্যাতন-নিপীড়নের জন্যে দেশের আদিবাসীদের কাছে কানাডা সরকারেরর ক্ষমা প্রার্থনা।

১৯৯৯ – ১৩০ বছরের মধ্যে প্রথম মার্কিন সিনেটে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে ইমপিচ বিচার শুরু।

১৮২৯ – ভারতীয়রা এশিয়াটিক সোসাইটির সভ্য হওয়ার অনুমতি লাভ করে।

১৮৩৮ – স্যামুয়েল মোর্স প্রথমবারের মতো তার ইলেক্ট্রনিক টেলিগ্রাফের পরীক্ষা চালান।

১৮৬৬ – কলকাতায় প্রথম আদমশুমারি শুরু হয়।

১৭৬১ – ভারতের পানি পথে আফগানের সঙ্গে মারাঠাদেও পরাজয়।

১৭৮২ – আমেরিকার প্রথম কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংক অব নর্থ আমেরিকা চালু।

১৭৮৫ – ফ্রান্সের জন ব্যাল্ন্চার্ড ও আমেরিকার জন জেফার ইংল্যান্ডের ডোভার থেকে ফ্যান্সের ক্যালাস পর্যন্ত গ্যাস বেলুনে উড়ে যান।

১৭৮৯ – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

১৭৯৭ – বর্তমান ইতালির পতাকা প্রথম ব্যবহার করা হয়।

১৬১০ – গ্যালিলিও গ্যালিলি প্রথম তার আবিস্কৃত চারটি চাঁদকে পর্যবেক্ষণ করেন।

১৫৫৮ – সিপাহি বিদ্রোহে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহর বিচার শুরু।

১৫৫৮ – ব্রিটেনের কাছ থেকে ফ্রান্সের কার্লাইস দখল।

১৪৫০ – গালানগো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

২০১৬ – মুফতি মুহাম্মদ সাইদ, জম্মু কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী।

 

২০২২ – প্রশান্ত ভট্টাচার্য, বাংলার যাত্রাজগতের কিংবদন্তি সুরকার ও গায়ক।

 

১৯৪৩ – নিকোলা টেসলা, বিখ্যাত সার্বিয় – মার্কিন আবিষ্কারক, পদার্থবিজ্ঞানী, প্রকৌশলী।

 

১৯৫১ – নিরূপমা দেবী, মহিলা ঔপন্যাসিক।

 

১৯৭২ – যোগেশচন্দ্র বাগল, প্রাবন্ধিক ও গবেষক।

 

১৯৮৪ – (ক) আঙুরবালা, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ও মঞ্চাভিনেত্রী।

 

(খ) আলফ্রেড কাস্টলার, নোবেলজয়ী ফরাসি পদার্থবিদ।

১৯৮৬ – মিশরের সিনাই মরুভূমি এলাকার একটি বন্দীশিবিরে পুলিশ কর্মকর্তা সোলাইমান খাত ।

 

১৯৮৯ – হিরোহিতো, জাপান সম্রাট।

 

১৯৯৮ – রিচার্ড হ্যামিং, মার্কিন গণিতবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী।

১৪১৬ – দরবেশ নূর কুতুবুল আলম।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
কবিতা

বেলা শেষের শেষ বিকেল :: লাজু চৌধুরী।।।

সবার একটা “তুমি” থাকে।
আমার তুমি কোন শহরে কোন অলি গলিতে গড়ে নিয়েছে নিবাস।

আমাদের মাঝে বিশেষ কোন কথার আদান প্রদান ছিলো না
কিন্তু “তুমি” শব্দটা আমাদের কাছে খুব গরুত্বপূর্ণ ছিলো।

এক দিন বেলা শেষে জানতে পেলাম
আমার তুমি অন্য কারো তুমি হয়ে গেছে।
আমার নিজস্ব পৃথিবীতে তুমি টা অন্য ভুবনের বাসিন্দা হয়ে গেছে।
ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ যেদিন বুঝলাম
আমার নিজস্ব তুমির জন্ম হলো
তখন আমি সূর্যের খুব কাছাকাছি চলে গেছি।

সময়ের সর্তক প্রহর দরজায় কড়া নাড়ে মধ্যে রাতে।
কবিতার শৈশব পেড়িয়ে কবে “তুমি” আমি তুমি হয়ে গেলাম।

তোমার আমার মাঝে তৈরি হলো শিল্পিত বয়স্ক কবিতা।
ভুমিষ্ঠ হলো নব জাতকের মত তুমি আর আমি ।
আমার তুমি।

ভালোবাসার হচ্ছে কবিতার শরীর বুক ভরে নিঃশ্বাস নিবো বলে তোমার বুকে মাথা রেখে ছিলাম ।

বলেছিলাম আমায় প্রেম দাও আমি তার পরিচর্যা করবো।
মেঘাচ্ছন্য আকাশে মনের ক্যানভাসে
“তুমি” আমি ডুবে গেলাম।
এখন আমার একলা মনের রোদের ছায়ায় অসুখ ধরেছে।
আমার উপস্থিতিতে আমার অস্থিত্ব তোমাকে ছুঁয়ে যেতো।

ভেবে ছিলাম “তুমি” আর আমি সমুদ্র স্নান করবো।

হঠাৎ তুমি ঘুমন্ত শহর ছেড়ে চলে গেলে।
একাকীত্বের কাছে আমি পরাজয় হলাম।
পরাজয় আমার একদম সহ্য হয় না
আমার জীবনের সব কোলাহল থেমে গেছে।
হঠাৎ করেই বেলা শেষের শেষ বিকেলে
আমার তুমি অন্য কারো হয়ে গেছে।
আমি তোমার শেষের তুমি অথবা ঘড়ির কাটার মত বিরামহীন অপেক্ষায় থাকবো আমার “তুমির” জন্য।
তাই প্রতি রাতেই আমার ব্যালকণিতে মধ্যে রাতের আকাশে দিকে তাকিয়ে ভাবি একাকিত্বের কতটা সুন্দর আছে।
জীবনটা মনে হচ্ছে সেই পুরনো স্কুল ব্যাগটার মত ভারি ভারি লাগছে।
তোমার ভিন্ন তুমি টাকে আমি ভীষন ভয় পাই এখন আমি।

একটি অসমাপ্ত জীবনে যেখানে মন নেই।
যেখানে “তুমি” নেই।

Share This
Categories
রিভিউ

৬ জানুয়ারী, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ৬ জানুয়ারি । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) বাংলাদেশ কৃষি শুমারী দিবস।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৪১২ – জোন অব আর্ক, পরাধীন ফ্রান্সের মুক্তিদাত্রী বীরকন্যা।

 

১৭০৬ – বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন, মার্কিন লেখক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ও কূটনীতিবিদ।

 

১৮৫১ – অম্বিকাচরণ মজুমদার, বাঙালি রাজনীতিবিদ,আইনজীবী, সমাজসেবী এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন।

 

১৯১৩ – লরেট্টা ইয়াং, মার্কিন অভিনেত্রী।

১৯৩১ – গ্রেইম হোল, অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।

১৯৩৬ – বশীর আল-হেলাল, একজন বাংলাদেশী লেখক, কথা সাহিত্যিক এবং ঔপন্যাসিক।

১৯৪৩ – সাবেক যোগাযোগ ও তথ্যমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা।

১৯৫৪ – অ্যান্টনি মিনজেলা, ব্রিটিশ চলচ্চিত্র পরিচালক, নাট্যকার ও চিত্রনাট্যকার।

১৯৫৫ – রোয়ান অ্যাটকিনসন, ব্রিটিশ লেখক, অভিনেতা এবং কৌতুকাভিনেতা।

 

১৯৫৯ – কপিল দেব, ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম অলরাউন্ডার।

 

১৯৬৭ – এ আর রহমান, একজন ভারতীয় তামিল প্রবল জনপ্রিয় সঙ্গীত পরিচালক।

 

১৯৭৩ – রুদ্রনীল ঘোষ, একজন ভারতীয় বাঙালি অভিনেতা

১৯৮২ – এডি রেডমেইন, ইংরেজ মঞ্চ ও চলচ্চিত্র অভিনেতা।

১৯৮৬ – ইরিনা শায়ক, রুশ মডেল এবং অভিনেত্রী।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৮৩৮- হাতে কলমে টেলিগ্রাফের কার্যকারিতা প্রদর্শন করেন স্যামুয়েল মোর্স।

১৯৫০ – ব্রিটেন কমিউনিস্ট চীনকে স্বীকৃতি দেয়।

১৯৭২ – মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইরাস ভ্যান্স হাঙ্গেরীয় হাজার বছরের প্রতীক সেন্ট স্টিফেনের মুকুট হাঙ্গেরীকে ফিরিয়ে দেয়।

১৯৯৬ – যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিসহ পূর্ব উপকূলে মারাত্মক তুষার ঝড়ে ১৫৪ জন নিহত, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিনশ কোটি ডলার।

২০০১ – জর্জ ডব্লিউ বুশকে মার্কিন কংগ্রেস কর্তৃক নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা।

২০২০ – ২০০ বছর পর আমেরিকার কংগ্রেসের ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ে (মার্কিন পার্লামেন্ট) ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা হামলা চালায়। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিস্টোরিকাল সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৮১২ সালের যুদ্ধের পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটলে এই ধরনের আগ্রাসন হল। ১৮১৪ সালে ওয়াশিংটনে অভিযান চালানের সময় ব্রিটিশ বাহিনী নির্মাণাধীন ক্যাপিটল ভবনে আগুন জালিয়ে দেয়। প্রায় ২০০ বছর পর এ হামলা হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৮৫২ – লুই ব্রেইল, অন্ধদের শিক্ষা পদ্ধতির প্রবর্তক।

 

১৮৮৪ – গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল,অস্ট্রিয় ধর্মযাজক ও বংশগতির প্রবক্তা।

 

১৯১৮ – গেয়র্গ কান্টর, একজন জার্মান গণিতবিদ ও দার্শনিক।

 

১৯১৯ – থিওডোর রুজ্‌ভেল্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৬তম রাষ্ট্রপতি।

 

১৯৭১ – প্রতুল চন্দ্র সরকার পি সি সরকার নামে সুপরিচিত ভারতের প্রখ্যাত জাদুকর।

 

১৯৮০ – দিলীপকুমার রায়, বাঙালি সংগীতজ্ঞ, সংগীতালোচক, গীতরচয়িতা, সুরকার ও গায়ক।

 

১৯৮৯ – সৎবন্ত সিংহ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির দেহরক্ষী, হত্যাকারী।

 

২০০৪ – সুমিতা দেবী, বাংলাদেশের প্রথিতযশা চলচ্চিত্র শিল্পী।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে – ভারতের প্রখ্যাত জাদুকর প্রতুল চন্দ্র সরকার (পি সি সরকার) ।

P. C. সরকার  ছিলেন একজন বিখ্যাত ভারতীয় জাদুকর।  তাঁর পুরো নাম প্রতুল চন্দ্র সরকার। তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক জাদুকরদের মধ্যে একজন যিনি ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত তার জাদু প্রদর্শন করেছিলেন। তার প্রদর্শনীগুলির মধ্যে একটি ছিল ইন্দ্রজাল প্রদর্শনী।  তিনি প্রথমে মঞ্চে এবং তারপর টেলিভিশনে এই অনুষ্ঠানটি দেখান।

 

প্রতুল চন্দ্র সরকার ১৯১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বর্তমান বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার আশেকপুর গ্রামে একটি দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  শিবনাথ হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছেন।  তিনি গণপতি চক্রবর্তীর কাছ থেকে জাদুর প্রাথমিক ধারণা পেয়েছিলেন।  ১৯৩০ সালের দিকে তার জাদু জনপ্রিয় হতে শুরু করে। তিনি কলকাতা, জাপান এবং অন্যান্য অনেক দেশে জাদু প্রদর্শন করেছেন।

 

প্রতুলচন্দ্র সরকার কলকাতার বাসন্তী দেবীকে বিয়ে করেন।  তার তিন ছেলে, মানিক সরকার, পিসি সরকার জুনিয়র এবং পিসি সরকার ইয়াং।

 

পুরস্কার——

 

১৯৬৪ সালে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করে, ভারত সরকার “জাদু সম্রাট পি.সি সরকার” নামে কলকাতাতে একটি সড়কের নামকরণ করেছে, ১৯৪৬ ও ১৯৫৪ সালে জাদুর অস্কার নামে পরিচিত “দ্য ফিনিক্স” (আমেরিকা) পুরস্কার লাভ করেন, জার্মান মেজিক সার্কেল থেকে “দ্য রয়াল মেডিলিয়ন” পুরস্কার পান, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সালে ভারতীয় সরকার তার প্রতি সম্মান জানিয়ে একটি ৫ টাকার স্ট্যাম্প চালু করে।

 

তিনি ৬ জানুয়ারী ১৯৭১ সালে প্রয়াত হন।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

প্রখ্যাত বাঙালি সংগীতজ্ঞ, সংগীতালোচক, গীতরচয়িতা, সুরকার ও গায়ক, দিলীপকুমার রায় – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

দিলীপকুমার রায় ২২ জানুয়ারি, ১৮৯৭ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বিখ্যাত বাঙালি সঙ্গীতজ্ঞ, সঙ্গীতালোচক, গীতরচয়িতা, সুরকার ও গায়ক। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্যও বিখ্যাত।  তাঁর পিতা ছিলেন বিখ্যাত নাট্যকার ও গীতিকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায়।

সঙ্গীতশিক্ষা———

তিনি সুরেন্দ্রনাথ মজুমদার, রাধিকাপ্রসাদ গোস্বামী এবং অচ্চন  বাঈ-এরকাছ থেকে উন্নত সঙ্গীত শিক্ষা লাভ করেন।  পাশ্চাত্য সঙ্গীতেও তার বিশেষ অধিকার ছিল।

 

সঙ্গীতে অবদান——–

তিনি রচনা এবং গান উভয় ক্ষেত্রেই একটি অনন্য এবং স্বতন্ত্র শৈলী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।  সবাই একে দিলীপী ঢং বলে ডাকত।  সঙ্গীতের উপর বহু গ্রন্থ রচনা করে তিনি বাংলা সঙ্গীত সমালোচনা সাহিত্যে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেন।  সঙ্গীত বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর আদান-প্রদান ঐতিহাসিক খ্যাতি লাভ করে।  দিলীপ কুমার রায়ের প্রতি অতুল প্রসাদ সেন ও কাজী নজরুল ইসলামের বিশেষ স্নেহ ছিল।  তিনি কলকাতার সুধীমহলে নজরুলের প্রথম দিকের সঙ্গীত রচনাগুলিকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।  নজরুল সম্পর্কে তাঁর স্মৃতিকথা নজরুল সঙ্গীত সমালোচনার ভিত্তি তৈরি করে।  নজরুলের গানের স্বরলিপি প্রকাশেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।

 

সন্ন্যাসজীবন——

তিনি ১৯২৮ সালে একজন সন্ন্যাসী হন এবং সঙ্গীত ও সাহিত্য সাধনায় নিযুক্ত হয়ে তার সমগ্র জীবন অতিবাহিত করেন।

মৃত্যু——-

১৯৮০ সালের ৬ই জানুয়ারি তাঁর দেহাবসান ঘটে।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

জোন অফ আর্ক : পরাধীন ফ্রান্সের মুক্তিদাত্রী বীরকন্যা এবং রূপকথাতুল্য এক নেত্রী ।

জোয়ান অফ আর্ক একজন পরাধীন ফ্রান্সের মুক্তিদাত্রী বীরকন্যা এবং রূপকথার নেতা, নিপীড়িত ফ্রান্সের ত্রাণকর্তা।   জান্ দার্ক, যিনি ইংরেজিতে Joan Of Arc নামে পরিচিত।  তিনি ইংরেজদের সাথে শত বছরের যুদ্ধে (1337-1453) ফরাসি সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দেন।  ফ্রান্সে তার স্মরণে অনেক স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।  তার বন্ধু ছিল আর্ক গুইন।  জোয়ান অফ আর্ককে ৩০ মে, ১৪৩১ খ্রিস্টাব্দে পুড়িয়ে মারা হয়েছিল।

 

তিনি ১৪১২ সালের ৬ জানুয়ারি মিউজ নদীর তীরে দঁরেমি গ্রামে একটি সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  ফ্রান্স তখন ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল।  ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম হেনরি এর পুত্র হেনরি VI যখন ফরাসি সিংহাসনে আরোহণ করেন, তখন ফ্রান্সের চার্লস সপ্তম পালিয়ে যান।

 

জন ছিলেন অশিক্ষিত।  কথিত আছে যে তেরো বছর বয়সে, একটি মাঠে ভেড়ার পাল চরানোর সময়, তিনি ভবিষ্যদ্বাণী পেয়েছিলেন যে তিনি মাতৃভূমির স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার এবং ফ্রান্সের সঠিক রাজাকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন।  এই প্রকাশ তার জীবনকে আমূল বদলে দেয়।  এর পরে, জন ফ্রান্সের পলাতক রাজা সপ্তম চার্লসের সাথে দেখা করার জন্য প্রচুর প্রচেষ্টা করেন এবং তাকে দেশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করার জন্য সৈন্য চেয়েছিলেন।  প্রথমে রাজা অপমানিত ছিলেন, কিন্তু পুরোহিত সম্প্রদায়ের পরামর্শে তিনি জোয়ানকে সামরিক সাহায্য দিতে রাজি হন।

 

জন ২৮ এপ্রিল, ১৪২৯ তারিখে ৪০০০ সৈন্য নিয়ে, সাদা পোশাক পরা, একটি সাদা ঘোড়ায় চড়ে এবং একটি পঞ্চক্রুশধারী তলোয়ার নিয়ে অবরুদ্ধ শহর অরলেয়াঁয় প্রবেশ করেন।  তারা প্রথম আক্রমণে জয়লাভ করে এবং এরপর একের পর এক সাফল্য পায় তারা।  কিছুদিনের মধ্যেই তারা ব্রিটিশ সৈন্যদের হাত থেকে তুরেলবুরোজ শহর উদ্ধার করে।  এরপর পাতের যুদ্ধে ব্রিটিশরা পরাজিত হয়।  জুন মাসে, জন এবং তার বাহিনী শত্রুদের ভেদ করে এবং রিমস শহর দখল করে।  তারপর ১৬ জুলাই, চার্লস সপ্তম ফ্রান্সের রাজা হিসাবে পুনরায় সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন এবং জন এইভাবে ফ্রান্সকে স্বাধীনতার পথে নিয়ে যান।  জোন ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে শত বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটায়।

 

ফ্রান্সের স্বাধীনতার পর ব্রিটিশরা  জোনকে জব্দ করার ফন্দি আঁটতে থাকে। ।  ফরাসি রাজনৈতিক দল, বারগুন্ডিয়ানদের বিশ্বাসঘাতকতার সুযোগ নিয়ে, ইংরেজরা কঁপিঞ্যান্ এর বাইরে শত্রু বাহিনীর উপর আক্রমণ করার সময় জোনকে বন্দী করতে সক্ষম হয়।  তারপর একজন ইংরেজ পাদ্রীর অধীনে তার বিচার হয়।  বিচার তাকে ‘ডাইনি’ ঘোষণা করে, তার কার্যকলাপকে প্রচলিত ধর্মের বিরুদ্ধে বলে।  আইনে শাস্তি জীবন্ত পোড়ানো হচ্ছিল।  এই রায় অনুসারে জনকে ৩০ মে, ১৪৩১ খ্রিস্টাব্দে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল।  তার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর, ফরাসিরা ফ্রান্সে ইংরেজদের অধিকারের সমস্ত চিহ্ন চিরতরে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি বিপ্লবী, সাহিত্যিক এবং শ্রমিক-সংগঠক সত্যেন সেন।

সত্যেন সেন প্রগতি লেখক ও শিল্পী সংঘ উদীচী সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কিংবদন্তি বিপ্লবী, সাহিত্যিক ও শ্রমিক-সংগঠক।

সত্যেন সেন ১৯০৭ সালের ২৮ মার্চ বিক্রমপুরের (বর্তমান মুন্সীগঞ্জ জেলা) টঙ্গীবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামের সেন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর ছোটবেলার ডাক নাম ছিল লস্কর।  তাঁর পিতার নাম ধরনিমোহন সেন এবং মায়ের নাম মৃণালিনী সেন। চার সন্তানের মধ্যে সত্যেন ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ।
কলেজে পড়ার সময় বিপ্লবী দল যুগান্তরে যোগ দেন।  ১৯৩১ সালে একজন ছাত্র হিসাবে, তিনি একটি ষড়যন্ত্রের শিকার হন এবং প্রথমবারের মতো কারাবরণ করতে বাধ্য হন।  বহরমপুর জেল ক্যাম্প থেকে তার বন্দিজীবন শুরু হয়।  এ সময় তিনি তিন মাস কারাগারে ছিলেন।  ১৯৩৩ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনে জড়িত থাকার জন্য তিনি দ্বিতীয়বার গ্রেফতার হন।  এ সময় তার ৬ বছরের জেল হয়।  ১৯৩৮ সালে সত্যেন সেন জেল থেকে মুক্তি পান। সেই বছর তাকে শান্তিনিকেতন থেকে ‘গবেষণা বৃত্তি’ দেওয়া হয়।  ১৯৪২ সালের ৮ মার্চ ফ্যাসিবাদবিরোধী বিপ্লবী কবি সোমেন চাঁদ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক সমাবেশে শহীদ হন।  সে সময় সত্যেন সেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।  ‘কৃষক সমিতি’র মাধ্যমে ১৯৪৩ সালের মহাদুর্ভিক্ষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য।  দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় কৃষক সমিতির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কাজ করেছেন।  ১৯৪৬ সালে, কমিউনিস্ট নেতা ব্রজেন দাস ঢাকা থেকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন।  সত্যেন সেন ব্রজেন দাসের পক্ষে প্রচারণা চালান।  তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে ১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারত সৃষ্টি পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৪৮ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করা হয়।  ১৯৪৯ সালে, তিনি বিপ্লবী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্য পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক গ্রেফতার হন।  আবার দীর্ঘ কারাবাস।  সে সময় কমিউনিস্টদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা ছিল অনেক বেশি।

১৯৬৯ সালে বিপ্লবী কথাশিল্পী সত্যেন সেন, রণেশ দাশগুপ্ত, শহীদুল্লা কায়সারসহ একঝাঁক তরুণ উদীচী গঠন করেন। জন্মলগ্ন থেকে উদীচী অধিকার, স্বাধীনতা ও সাম্যের সমাজ নির্মাণের সংগ্রাম করে আসছে। উদীচী ’৬৮, ’৬৯, ’৭০, ’৭১, সালে বাঙালির সার্বিক মুক্তির চেতনাকে ধারণ করে গড়ে তোলে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম। এ সংগ্রাম গ্রামবাংলার পথেঘাটে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় উদীচীর কর্মীরা প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়।
উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী এদেশে সুস্থ সাংস্কৃতিক ধারার সংস্কৃতি নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সত্যেন সেনের সৃষ্টিকর্ম ও সাহিত্য হলো সমাজ বাস্তবতার স্পষ্ট প্রকৃতি-স্বরূপের প্রতিচ্ছবি।

 

ছোটদের জন্য লিখিত গল্প— পাতাবাহার (১৯৬৮) অন্যতম।

 

উপন্যাস—–

 

ভোরের বিহঙ্গী (১৯৫৯), রুদ্ধদ্বার মুক্ত প্রাণ (১৯৬৩), অভিশপ্ত নগরী(১৯৬৯), পাপের সন্তান (১৯৬৯), সেয়ান (১৯৬৯), পদচিহ্ন (১৯৬৯), পুরুষমেধ(১৯৬৯), আলবেরুনী(১৯৭০), সাত নম্বর ওয়ার্ড(১৯৭০), বিদ্রোহী কৈর্বত(১৯৭০), কুমারজীব(১৯৭০), অপারেজয়(১৯৭০), মা(১৯৭০), উত্তরণ(১৯৭০), একুল ভাঙ্গে ওকুল গড়ে (১৯৭১)।

 

ইতিহাস আশ্রিত গল্প-উপন্যাস-সাহিত্য——–

 

গ্রামবাংলার পথে পথে (১৯৬৬), আমাদের পৃথিবী (১৯৬৮), মসলার যুদ্ধ (১৯৬৯), এটোমের কথা(১৯৭০), অভিযাত্রী (১৯৭০), মানবসভ্যতার উষালগ্ন (১৯৭১), মনোরমা মাসিমা (১৯৭১), প্রতিরোধ সংগ্রামে বাংলাদেশ (১৯৭১), বিপ্লবী রহমান মাষ্টার (১৯৭৩), সীমান্ত সূর্য আবদুল গাফফার (১৯৭২), জীববিজ্ঞানের নানা কথা (১৯৭৭) ইত্যাদি।

 

পুরস্কার—–

 

১৯৬৯ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮৬ সালে সাহিত্য মরণোত্তর একুশে পদক।

 

শান্তি নিকেতনের গুরুপল্লীতে ১৯৮১ সালে ৫ জানুয়ারি তিনি মারা যান।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বিশ্ব ব্রেইল দিবস দিনটি কেন পালিত হয় এবং দিনটির গুরুত্ব।

বিশ্ব ব্রেইল দিবস ৪ জানুয়ারী পালিত হয় যা স্বীকার করে যে যারা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তারা অন্য সকলের মতো মানবাধিকারের একই মানের প্রাপ্য।

বিশ্ব ব্রেইল দিবস ২০২৪: ব্রেইলের উদ্ভাবক লুই ব্রেইলের জন্মের স্মরণে, ৪ জানুয়ারিকে বিশ্ব ব্রেইল দিবস হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।  দিবসটি আরও স্বীকৃতি দেয় যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মানবাধিকারে অন্য সবার মতো একই অ্যাক্সেস থাকা উচিত।

ব্রেইল সিস্টেম কি?

ব্রেইল নামে পরিচিত স্পর্শকাতর লিখন পদ্ধতিতে বর্ণমালার প্রতিটি অক্ষর এবং প্রতিটি সংখ্যা ছয়টি বিন্দু দ্বারা উপস্থাপিত হয়।  উপরন্তু, বিন্দুগুলি গাণিতিক, বৈজ্ঞানিক এবং বাদ্যযন্ত্রের প্রতীকগুলির জন্য দাঁড়ায়।  অন্ধ বা আংশিক দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন লোকেরা এই সিস্টেমটি ব্যবহার করে পড়তে এবং লিখতে পারে।  তারা ব্রেইল ব্যবহার করে ভিজ্যুয়াল ফন্ট সহ বই পড়তে সক্ষম।

বিশ্ব ব্রেইল দিবস ২০২৪: ইতিহাস—

৪ জানুয়ারী, ২০২৪, বিশ্ব ব্রেইল দিবস হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে যোগাযোগের একটি ফর্ম হিসাবে ব্রেইলের গুরুত্ব বোঝার জন্য এবং যারা আংশিকভাবে দৃষ্টিহীন বা অন্ধ তাদের জন্য মানবাধিকারের পূর্ণ উপলব্ধি প্রচার করতে।  জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ নভেম্বর 2018-এ ৪ জানুয়ারীকে বিশ্ব ব্রেইল দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। পরের বছর, প্রথমবারের মতো বিশ্ব ব্রেইল দিবসকে বিশ্বব্যাপী ছুটির দিন হিসেবে স্মরণ করা হয় এবং স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

UN উল্লেখ করেছে: “নভেম্বর ২০১৮ (রেজোলিউশন A/RES/73/161), সাধারণ পরিষদ ৪ জানুয়ারীকে বিশ্ব ব্রেইল দিবস হিসাবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই স্বীকৃতি দিয়ে যে মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার সম্পূর্ণ উপলব্ধি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক লিখিত প্রচারের উপর নির্ভর করে৷  ”
UNGA একটি ঘোষণায় উদযাপনের জন্য দিনটিকে বেছে নিয়েছে, যেটি লুই ব্রেইলের জন্মদিনও।  লুই ব্রেইল যখন একটি ছোট শিশু ছিলেন, তিনি ঘটনাক্রমে তার বাবার আউল দিয়ে নিজের চোখে ছুরিকাঘাত করেছিলেন, যার কারণে তিনি তার দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন।  তিনি ১০ বছর বয়সে ফ্রান্সের রয়্যাল ইনস্টিটিউট ফর ব্লাইন্ড ইয়ুথ-এ সময় কাটিয়েছেন, যেখানে তিনি উত্থাপিত-ডট সিস্টেমের বিকাশ ও নিখুঁত করেছেন যা অবশেষে ব্রেইল নামে পরিচিতি লাভ করে।  দুর্ভাগ্যবশত, ব্রেইল তার সৃষ্টির উপযোগিতা প্রত্যক্ষ করতে পারেনি।  রয়্যাল ইনস্টিটিউট ব্রেইল শিক্ষা শুরু করার দুই বছর আগে, ১৮৫২ সালে, তিনি মারা যান।

 

বিশ্ব ব্রেইল দিবস ২০২৪: তাৎপর্য—

 

ব্রেইল ধীরে ধীরে বিশ্বজুড়ে অন্ধদের জন্য প্রাথমিক লিখিত তথ্য বিন্যাস হিসাবে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে।  দিবসটির উদ্দেশ্য হল যোগাযোগের হাতিয়ার হিসাবে ব্রেইলের মূল্য বোঝা এবং যারা অন্ধ বা আংশিকভাবে দৃষ্টিশক্তিহীন তাদের জন্য মানবাধিকারের পূর্ণ উপলব্ধি প্রচার করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের দারিদ্র্যের হার বেশি এবং আজীবন অসমতা সহ্য করে।  খবরে বলা হয়েছে, মহামারীর পর থেকে বিষয়টি আরও গুরুতর হয়ে উঠেছে।
বিশ্ব ব্রেইল দিবস প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার আইন, এবং চোখের রোগ প্রতিরোধ, সনাক্তকরণ এবং চিকিত্সা সম্পর্কে কথোপকথন প্রচার করার সুযোগ দেয়।  অন্ধ এবং আংশিক দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিরা প্রতিদিন যে চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হয় তাও বিশ্ব ব্রেইল দিবসের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।  ব্রেইল দিবস কর্তৃপক্ষের দ্বারা অন্ধদের প্রতি অবহেলার দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
আজ, বিশ্ব ব্রেইল দিবস শুধুমাত্র লুই ব্রেইলের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনই নয়, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জীবনে ব্রেইল যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সে সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করে৷  ব্রেইল সাক্ষরতা এবং অন্তর্ভুক্তি প্রচারের জন্য বিশ্বজুড়ে ইভেন্ট, কর্মশালা এবং শিক্ষামূলক উদ্যোগ অনুষ্ঠিত হয়।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
কবিতা

মৃত্যুই মিত্র : রাণু সরকার।।

জীবন শুরু থেকেই মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায় প্রতি পদক্ষেপে, জীবন-মৃত্যুর অন্তরঙ্গতা এতই গভীর যে কেউ কোনদিন কারো হাত ছাড়বে না।
এসব যখন মনে পড়ে ভেবে ভয় হয়, আবার ভুলেও যাই ভাবতে, প্রতিদিনই জীবনের শেষ দিন হতে পারে।

জীবনটা তো চলছে সরল অঙ্কের মতো-
মন্থর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি সমাপনের দিকে এটা কিন্তু মনে থাকে না, যখন কারোর মৃত্যু দেখি তখনই মনে হয় আমারও তো একদিন এই গতি হবে।

এই যে বেঁচে আছি সংসারে- ছেলে, মেয়ে, নাতি, নাতনি এদের নিয়ে মেতে আছি আনন্দখেলায়- এতো ক্ষণিকের তামাশা ছাড়া কিছুই নয়।
বেঁচে থাকতে হলে কঠিন লড়াই একাই লড়তে হবে,
কাছের জনেরা কেবল সান্ত্বনা দেবে, দুঃসময়ে পাশে কেউই থাকবে না।

সময় বড়ই মূল্যবান আবার মূল্যহীনও।
সংসারের খেলায় আত্মহারা- প্রিয়জন যদি কিছু জানতে চায় কখনো হ্যাঁ আবার কখনো না বলি,
এই হ্যাঁ বা না শব্দটি খুবই পুরাতন কিন্তু ছোট্ট এই দুটিকে ব্যবহার করতে হয় অনেক ভেবেচিন্তে। অনেক সময় দেখা যায় এই ছোট্ট শব্দ দুটি ভুল জায়গায় ব্যবহার করি ভুল করে- তখনই বিপত্তি দেখা দেয়।
এই সংসার খেলায় জেতার স্বপ্ন থাকে, কিন্তু জেতা একমাত্র লক্ষ্য নয়, যতদিন বেঁচে থাকবো স্বপ্নও সাথে সাথে চলবে- একে ত্যাগ করতে পারছি না।

Share This