Categories
প্রবন্ধ

ভাষা দিবস নিয়ে কিছু কথা : দিলীপ  রায় ।

মাতৃভাষার মাধ্যমেই প্রথম বোধের উন্মেষ । মাতৃভাষার মধ্য দিয়ে শিশুর চেতনার বিকাশ ঘটে । শিশু যখন মাতৃভাষায় পড়া ও লেখা শুরু করে, তখন থেকে ভাষার মাধ্যমে চারপাশের জগৎ সম্পর্কে জানা ও বোঝার ক্ষমতার পাশাপাশি আরও অনেকগুলি সক্ষমতা বা দক্ষতা তৈরী হতে থাকে । বিশেষ করে, যুক্তি-বুদ্ধি খাটিয়ে চিন্তা করার ক্ষমতা । যাকে বলে ‘ক্রিটিক্যাল থিংকিং’ ।  শিশুর কাছে মাতার যেমন গুরুত্ব, শিক্ষার ক্ষেত্রে মাতৃভাষার তেমন গুরুত্ব । মাতৃভাষা ছাড়া শিক্ষা লাভ অসম্পূর্ণ থেকে যায় । এই মাতৃভাষাকে কেন্দ্র করেই তার জীবন নানাভাবে বিকাশ লাভ করে । মাতৃভূমির মতো মাতৃভাষাও মানুষের নিকট একান্ত প্রিয় । মাতৃভাষাকে আশ্রয় করেই মানুষের সার্বিক বিকাশ সম্ভব । মাতৃভাষাতেই মানুষের পরম তৃপ্তি । কারণ এই ভাষায় কথা বলে মনের ভাব প্রকাশ করে মানুষ যত আনন্দ পায় অন্যভাষায় কথা বলে তা পায় না । মাতৃভাষা শুধু প্রাত্যহিক জীবনের অবলম্বন নয় – এর মাধ্যমে সাহিত্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান সাধনার বিকাশ সম্ভব ।
সভ্যতা ও সংস্কৃতির ইতিহাস থেকে জানা যায়, মাতৃভাষার গুরুত্ব যাদের কাছে যত বেশি, তারা উন্নয়নের ধারায় তত বেশি এগিয়ে । আমরা জানি, শিক্ষা হলো মানব জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ । মানুষের সকল ধনসম্পত্তি মানুষকে ছেড়ে চলে গেলেও অর্জিত শিক্ষা ও জ্ঞান কখনো মানুষের সঙ্গ ছাড়ে না । তাই শিক্ষার সঙ্গে মানুষের অন্তরের আবেগকে যুক্ত করার জন্য প্রয়োজন মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের । একটা শিশুর মাতৃভাষা হলো তার ব্যক্তিগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ । মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য প্রসঙ্গে ইউনেস্কোর মতে, ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মুল তাৎপর্য হলো মাতৃভাষা নিয়ে সচেতন হওয়া ও বিশ্বব্যাপী সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বজায় রাখা । ইউনেস্কোর সম্মেলনে, “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখা করে বলা হয় – সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে ভাষা হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার । মাতৃভাষার প্রচলন কেবল ভাষাগত বৈচিত্র্য, বহুভাষাভিত্তিক শিক্ষাকেই  উৎসাহিত করবে না, তা  সাংস্কৃতিক      ঐতিহ্যের অনুধাবন ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও অবদান রাখবে ।
তাই  ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সহ সমস্ত বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন । একটি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে সুপরিচিত । বাঙালী জনগণের ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতি বিজড়িত একটি দিন ।
( ২ )
এবারে আসছি ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গে । ভাষা আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে । প্রথমে শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের কথায় আসা যাক । ভাষা আন্দোলনকারীর প্রবীণদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার  ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ।  তিনি ছিলেন সেই সময়কার পাকিস্তান গণপরিষদয়ের সদস্য । ১৯৪৮ সালের ২৫শে আগস্ট পাকিস্তান গণপরিষদে অধিবেশনের কার্যবিবরণীতে বাংলাকে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি উত্থাপন করেন । এখানে উল্লেখ থাকে যে, ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মিটিং, মিছিল, পিকেটিং আন্দোলন করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন তরুন রাজনীতিবিদ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ।  তারপর ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত  প্রসঙ্গে আরও জানা যায় — তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে হুঁশিয়ারী দিয়ে তিনি বলেছিলেন, “সমগ্র পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান জুড়ে ৫৬শতাংশের বেশী মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে । এমনকি শুধুমাত্র পূর্ব পাকিস্তানে ৯৫ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে । সুতরাং এই পরিস্থিতিতে আপনারা উর্দু ভাষাকে অনৈতিকভাবে চাপিয়ে দিতে পারেন না ।  আপনারা উর্দুর পাশাপাশি বাংলা ভাষাকেও রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিন ।“  কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী   লিয়াকত আলি খান তাঁর প্রস্তাব নাকচ করে দেন ।  শুধু তাই নয়, ১৯৬০ সালে ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের উপর “এডবো” (Elective Bodies Disqualification Order)  প্রয়োগ করেন । যার জন্য তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হন । ১৯৭১ সালে ২৯শে মার্চ রাতে ছেলে দিলীপ কুমার দত্ত সহ গ্রেপ্তার হন । ময়নামতি সেনানিবাসে থাকাকালীন তাঁর উপর অকথ্য নির্যাতন হয় এবং তারপরে তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় । তাই তাঁকে শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত নামে সকলে চেনে । আর মাতৃভাষার প্রথম দাবিদার এই শহীদ  ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ।
১৯৪৮ সালের ২১শে মার্চ পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা ও তদানীন্তন পাকিস্তানের প্রথম গভর্ণর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকার রেসকোর্স (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে এক জনসভায় ঘোষণা করেন সমগ্র পাকিস্তানে উর্দু হবে রাষ্ট্রীয় ভাষা (Urdu only, and Urdu shall be the state language of Pakistan) । এর তিনদিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি একই কথা জোরের সঙ্গে ঘোষণা করলে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গন তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়ে । কিন্তু শত প্রতিবাদ সত্ত্বেও জিন্নাহ এতে কোনো কর্ণপাত করেননি । ১৯৫০ সালে তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী লিয়াকত আলী খান এবং ১৯৫২ সালে পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রধান মন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন একই ঘোষণা দিলে ছাত্র সমাজ উত্তেজিত হয়ে ওঠে । এর প্রতিবাদে ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয় । ২০শে ফেব্রুয়ারি মধ্যরাত থেকে সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে । কিন্তু পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক একুশে ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা ১৪৪ ধারার বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে মিছিল করে । মিছিলে হাজার হাজার ছাত্র অংশ নেয় এবং কিছুক্ষণের মধ্যে সেটা উত্তাল জনসমুদ্রের রূপ ধারণ করে । মিছিলের ভয়াল রূপ দর্শন করে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর গুলি চালানোর নির্দেশ দেন । ঐদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার সাথে সাথে, আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায় । এতে আবুল বরকত, আব্দুল জব্বার, আব্দুস সালাম সহ কয়েকজন ছাত্র যুব হতাহত হন । এই ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্দ ঢাকাবাসী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হস্টেলে সমবেত হন । নানা নির্যাতন সত্ত্বেও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরা প্রতিবাদ জানাতে পরের দিন ২২শে ফেব্রুয়ারি পুনরায় রাজপথে নেমে আসে । ভাষা শহীদদের স্মৃতিকে অমর রাখার জন্য ২৩শে ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে গড়ে উঠে একটা স্মৃতিস্তম্ভ, যা সরকার ২৬শে ফেব্রুয়ারি গুড়িয়ে দেয় । একুশে ফেব্রুয়ারি এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয় । ১৯৫২ সালে ভাষা অন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জেলে । ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৭ই মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় । বাংলাকে পাকিস্তানের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয় ১৯৫৬ সালের ২৯শে ফেব্রুয়ারি । ১৯৮৭ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে “বাংলা ভাষা প্রচলণ বিল” পাশ হয় । যা কার্যকর হয় ৮ই মার্চ ১৯৮৭ সাল থেকে ।
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে পুলিশ ভাষা আন্দোলনকারী ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালায় । এতে তরতাজা ছাত্র-যুবকেরা হতাহত হন । সে সময় ঢাকা কলেজের ছাত্র আবদুল গফফার চৌধুরী ঢাকা মেডিকেল কলেজে যান আহত ছাত্রদের দেখতে । ঢাকা মেডিকেলের আউটডোরে তিনি মাথার খুলি উড়ে যাওয়া একটি লাশ দেখতে পান, যেটি ছিলো ভাষা সংগ্রামী রফিকের লাশ । লাশটি দেখে তার মনে হয় এটা যেন তার নিজের ভাইয়ের রক্তমাখা লাশ । তৎক্ষণাত তার মনে গানের প্রথম দুটি লাইন
জেগে  উঠেঃ  আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি আমি কি ভুলিতে পারি ।
( ৩ )
১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় ও এতে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘষণা করা হয় এবং ২০০০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতি সংঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে । ২০১০ সালের ২১ শে অক্টোবর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৫ তম অধিবেশন মোতাবেক এখন থেকে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করছে জাতিসংঘ । সুতরাং ১৯৫২ সাল থেকে প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি দিনটি শহীদ দিবস হিসাবে উদযাপন হয়ে আসছে ।
২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে ইউনেস্কো কর্তৃক । ১৯৭১ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদদের স্মরণে পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের গণআন্দোলনের প্রতীক, বাংলা ভাষা রাষ্ট্র এবং বাঙালি জাতিরাষ্ট্র তথা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সুমহানস্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতীর পিতা (বাংলাদেশ) শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ভাষণে বলেছিলেন, “যতদিন বাংলার আকাশ থাকবে, যতদিন বাংলার বাতাস থাকবে, যতদিন এদেশের মাটি থাকবে, যতদিন বাঙালির সত্ত্বা থাকবে শহীদদের আমরা ভুলতে পারবো না । আমরা কোনোক্রমেই শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না । এ বিজয় সাত কোটি বাঙালির বিজয়, দরিদ্র জনসাধারণের বিজয়” ।
পরিশেষে বাংলা ভাষা রক্ষার প্রেক্ষাপটে আমাদের করণীয় হলো, জ্ঞানের সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার প্রয়োগ বৃদ্ধিতে সাধ্যমতো প্রয়াস চালানো । মাতৃভাষার শক্তি বাড়িয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানে, শিক্ষায়-সংস্কৃতিতে নতুন শতকের জন্যে নিজেদের প্রস্তুত করা । বিশ্বের জ্ঞানভাণ্ডারকে মাতৃভাষা চর্চার মাধ্যমে দেশের সেবা করার পাশাপাশি বিশ্বের প্রতিটি মানুষের মাতৃভাষার প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো । সারা বিশ্বে বাঙালী জাতির কাছে ২১শে ফেব্রুয়ারি একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য দিন । তাই ২১ আমাদের গর্ব, ২১ আমাদের অহংকার ।
আজ এই পুণ্যদিনে মহান ভাষা শহীদদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি ।
————————–0—————————
এ১০ক্স/৩৪, কল্যাণী /

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৯ ফেব্রুয়ারী, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ১৯ ফেব্রুয়ারী । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

দিবস—–

 

(ক) শিবাজী জয়ন্তী (মহারাষ্ট্র, ভারত)।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৪৭৩ – নিকোলাউস কোপার্নিকাস, বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী ছিলেন।

 

১৬৩০ – ভারতের মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা যোদ্ধা রাজা ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ জন্ম গ্রহণ করেন ।

 

১৭৩২ – ইংরেজ নাট্যকার রিচার্ড কাম্বারল্যান্ড জন্মগ্রহণ করেন।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৩৮৯ – সুলতান গিয়াসউদ্দিন তুঘলক (দ্বিতীয়) দিল্লীতে নিহত হন।

১৬১৮ – ডেনিস-অস্ট্রেলিয়া যুদ্ধের অবসান। মাদ্রিদ শান্তি চুক্তি অনুমোদন।

১৮০৩ – সুইজারল্যান্ডে মধ্যস্থতা আইন পাস (যে আইনের অধীনে ক্যান্টনস পুনরায় স্বাধীনতা অর্জন করে)।

১৮৫৫ – লিভারপুলে খাদ্যা দাঙ্গা শুরু।

১৮৭৮ – টমাস আলভা এডিসন ফনোগ্রাফ পেটেন্ট করেন।

১৮৯১ – ‘অমৃত বাজার পত্রিকা’ দৈনিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হয়।

১৯০৪ – ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড কার্জন ঢাকাতে কার্জন হলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

১৯২৪ – জেনেভায় আন্তর্জাতিক মাদক কনভেনশন স্বাক্ষরিত হয়।

১৯৪১ – কেনিয়ায় অবস্থানরত ব্রিটিশ বাহিনী ইতালীয় সোমালিল্যান্ড দখল করে নেয়।

১৯৪২ – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখন্ডে জাপানের প্রথম বিমান হামলা। ২৪৩ কর্মকর্তা নিহত। ২৩ টি বিমান বিধ্বস্ত ৮টি জাহাজডুবি।

১৯৫১ – নেপালে গণঅভ্যুত্থানে ১০৪ বছরের পুরনো রানা শাসনামলের পতন এবং রাজ পরিবারের ক্ষমতায় পুনঃঅধিষ্ঠিত।

১৯৫১ – বিখ্যাত ফরাসি লেখক, নৈতিকতাবাদী, দার্শনিক আন্দ্রে জিঁদ পরলোকগমন করেন।

১৯৬৩ – সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবা থেকে সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যাহারে সম্মত হয়।

১৯৭৪ – বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রমনা থানার সেগুনবাগিচায় প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৯৮০ – ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রতিষ্ঠাতা ইমাম খোমেনী ইরানের প্রথম অভিভাবক পরিষদের জন্য ইসলাম বিষয়ক বিশেষজ্ঞ বা ফকিহদের মনোনয়ন দান করেন।

১৯৮৮ – ইরানের একটি যাত্রীবাহী বিমানের উপর ইরাকের সাবেক স্বৈরশাসকের সেনাবাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় হোজ্জাতুল ইসলাম ফাজল্লাহ মাহলাদী শহীদ হন।

১৯৯৩ – হাইতিতে ১৫শ যাত্রীবাহী ফেরীডুবি। জীবিত উদ্ধার মাত্র ২৮৫ জন।

২০১৮ – বাংলাদেশে ফোরজি সেবা চালু হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৮৬১ – কলকাতার দক্ষিণেশ্বর কালীমন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ও জন হিতৈষী লোকমাতা রাণী রাসমণি প্রয়াত হন ।

 

১৯১৫ – গোপালকৃষ্ণ গোখলে, ভারতীয় রাজনীতিবিদ।

 

১৯৪৭ – সমাজসেবক স্যার আজিজুল হক মৃত্যুবরণ করেন।

 

১৯৭৮ – পঙ্কজ কুমার মল্লিক, ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক ও অভিনেতা।

 

১৯৯০ – মাইকেল পাওয়েল, ইংরেজ চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।

 

১৯৯৭ – চীনের শীর্ষ নেতা দেন শিয়াও পিং মৃত্যুবরণ করেন।

 

১৯৯৯ – ভারতের বাঙালি সাহিত্যিক ও বাংলা সাহিত্য পত্রিকা ‘দেশ’ র প্রখ্যাত সম্পাদক সাগরময় ঘোষ প্রয়াত হন ।

 

২০১৭ – বনশ্রী সেনগুপ্ত, প্রবাদপ্রতিম ভারতীয় বাঙালি গায়িকা।

 

২০১৯ – (ক) মুহম্মদ খসরু, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ।

 

(খ) প্রতীক চৌধুরী, ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী।

২০২৩ – সাবেক যোগাযোগ ও তথ্যমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্মরণে কিংবদন্তি ভারতীয় বাঙালি গায়িকা বনশ্রী সেনগুপ্ত।

বনশ্রী সেনগুপ্ত ছিলেন একজন কিংবদন্তি ভারতীয় বাঙালি গায়িকা।  তিনি ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন সঙ্গীত উৎসবে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।  তিনি বাংলা, হিন্দি, ভোজপুরি, ওড়িয়া এবং অসমীয়া ছবিতেও গান গেয়েছেন।

ব্যক্তিগত জীবন——–

 

বনশ্রী সেনগুপ্ত ১৯৪৬ সালের দিকে হুগলির চুঁচুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পিতা শৈলেন্দ্রনাথ রায় ছিলেন একজন গুণী সঙ্গীতজ্ঞ (উচ্চাঙ্গ-সঙ্গীতশিল্পী)।  শান্তি সেনগুপ্তকে বিয়ে করে কলকাতায় চলে আসেন বনশ্রী সেনগুপ্ত।

 

 

 

সঙ্গীতজীবন———-

 

বনশ্রী সেনগুপ্ত তার প্রথম জীবনে তার পিতা, গুণী সঙ্গীতজ্ঞ শৈলেন্দ্রনাথ রায়ের অধীনে সঙ্গীত শিক্ষা শুরু করেন।  পরবর্তীতে, তিনি বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ সুধীন দাশগুপ্তের অধীনে ২০ বছর প্রশিক্ষণ নেন।  তিনি সুধীন দাশগুপ্ত, প্রবীর মজুমদার, নীতা সেন, সাগরউদ্দিন খান, সন্তোষ সেনগুপ্ত, দিনেন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ সুরকারদের সাথে কাজ করেছেন। বনশ্রী সেনগুপ্ত ১৯৬৬ সালে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তার অসংখ্য গান এবং অ্যালবাম রয়েছে।  ষাট ও সত্তরের দশকে অনেক হিট গান উপহার দিয়েছেন তিনি।  এছাড়া তিনি বাংলা, হিন্দি, ভোজপুরি, ওড়িয়া ও অহমিয়া চলচ্চিত্রে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন।

 

এরূপ চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ছুুুটি, নিমন্ত্রণ, বিন্দুর ছেলে, প্রান্তরেখা, রো ভরা বসন্ত, দুুুুলহন বোহি জো পিয়া মন ভায়ে, সানাই, এক যে ছিল দেশ, ন্যায় অন্যায়, আলোয় ফেরা, বিদ্রোহী, অঞ্জলি, ছন্দনীড়, পথ ও প্রাসাদ, নটী বিনোদিনী , বড় বউ  ইত্যাদি। তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য ও বিখ্যাত গানের মধ্যে রয়েছে: “আজ বিকেলের ডাকে তোমার চিঠি পেলাম”, ”আমার অঙ্গে জ্বলে রংমশাল”, “ছি ছি ছি এ কী কাণ্ড করেছি”, “দূর আকাশে তোমার সুর”, “আমার আঁধার ঘরের প্রদীপ”, “সুন্দর বনে সুন্দরী গাছ”, “খুশিয়া হি খুশিয়া” ইত্যাদি।এছাড়া, তিনি আকাশবাণী ও দূূরদর্শনেও সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে কাজ করেন।

 

পুরস্কার——–

 

বনশ্রী সেনগুপ্ত তার সঙ্গীতকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ উত্তম কুমার পুরস্কার, মাদার তেরেসা পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, বিএফজেএ পুরস্কার, প্রমথেশ বড়ুয়া পুরস্কার ইত্যাদি অর্জন করেন।

 

মৃত্যু ——-

 

বনশ্রী সেনগুপ্ত ২০১৭ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি একাত্তর বছর বয়সে প্রয়াত হন ।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রথম যুগের অগ্রণী সঙ্গীত পরিচালক ও নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেতা পঙ্কজ কুমার মল্লিক।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক এবং অভিনেতা।  তিনি বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রাথমিক যুগের একজন শীর্ষস্থানীয় সঙ্গীত পরিচালক এবং প্লেব্যাক গায়ক ছিলেন।  রবীন্দ্রসঙ্গীতেও তার বিশেষ অবদান ছিল।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক ১৯০৫ সালের ১০ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পিতার নাম মণিমোহন মল্লিক এবং মাতার নাম মনোমোহিনী দেবী।  সঙ্গীতের প্রতি মণিমোহনের গভীর আগ্রহ ছিল।  পঙ্কজ কুমার দুর্গাদাস ব্যানার্জির অধীনে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেন।  তিনি স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে শিক্ষা শেষ করেন।  তারপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাগ্নে অর্থাৎ দ্বীপেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়।  ফলে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন।  পরে রবীন্দ্রনাথের স্নেহের হয়ে ওঠেন।  খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পঙ্কজ কুমার রবীন্দ্রসংগীতের অন্যতম প্রধান শিল্পীর খ্যাতি অর্জন করেন।১৯২৬ সালে মাত্র একুশ বছর বয়সে তিনি “নেমেছে আজ প্রথম বাদল” গানটি ভিয়েলোফোন কোম্পানি থেকে রেকর্ড করেন।

১৯৩১ সাল থেকে দীর্ঘ ৩৮ বছর পঙ্কজ কুমার বাংলা, হিন্দি, উর্দু ও তামিল চলচ্চিত্রে অবদান রাখেন। তিনি কুন্দন লাল সায়গল, শচীন দেব বর্মণ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গীতা দত্ত, আশা ভোঁসলে প্রমুখ সঙ্গীত পরিচালক ও শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। চলচ্চিত্রে তিনি কুন্দন লাল সায়গল, প্রমথেশ বড়ুয়া ও কানন দেবীর মতো শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয়ও করেন। নীতীন বসু ও রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রে নেপথ্য কণ্ঠসংগীতের প্রবর্তন করেছিলেন। ১৯৩১ সালে তিনি মহিষাসুরমর্দিনীর অনুষ্ঠানটির সুর দেন।

 

চলচ্চিত্রের তালিকা——

 

চাষির মেয়ে, ইহুদি কি লেড়কি, মঞ্জিল, মায়া, কারোড়পতি, গৃহদাহ, দেবদাস, মুক্তি, দিদি, বাড়ি বেহেন, জীবন মরণ, ধর্তি মাতা, দেশের মাটি, অভিজ্ঞান, অভাগিনী, কপালকুণ্ডলা, দুশমন, বড়ি দিদি, জিন্দেগি, নর্তকী, ডাক্তার, মীনাক্ষী, দিক্ষুল, কাশীনাথ, মেরি বেহেন, দুই পুরুষ, রামের সুমতি, প্রতিবাদ, মঞ্জুর, রূপকথা, জলজলা, মহাপ্রস্থানের পথে, যাত্রীক, চিত্রাঙ্গদা, রাইকমল।

১৯৭০ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মাননা হিসেবে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত করে।

 

১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য: সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ জয়ন্তী, জানুন দিনটি কেন পালিত হয়- দিনটির ইতিহাস এবং তাৎপর্য।

ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ জয়ন্তী, যা শিব জয়ন্তী নামেও পরিচিত, একটি উৎসব যা মারাঠা সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করে।  এটি প্রতি বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি পালিত হয় এবং মহারাষ্ট্র রাজ্যে এটি একটি সরকারি ছুটির দিন।

 

ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ জয়ন্তী একটি গুরুত্বপূর্ণ পালন যা শ্রদ্ধেয় মারাঠা সম্রাট, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের জন্মবার্ষিকীকে সম্মান করে।  ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ জয়ন্তী প্রতি বছর দুবার পালিত হয় কারণ, সম্বত হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, শিবাজি ফাল্গুনের তৃতীয় দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। হিন্দু সম্বত ক্যালেন্ডার অনুসারে, এই তাৎপর্যপূর্ণ দিনটি ১০ ​​মার্চ, ২০২৪-এ পড়ে, যখন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে, এটি ১৯ ফেব্রুয়ারী পালিত হয়। এই উপলক্ষটি মহান মারাঠা রাজার ৩৯৪ তম জন্মদিনকে চিহ্নিত করে অত্যন্ত ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য বহন করে।

 

ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ, তাঁর বীরত্ব, নেতৃত্ব এবং প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য পরিচিত, ভারতীয় ইতিহাসে একজন বীরত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসাবে পালিত হয়।  তিনি মারাঠা সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন এবং বিশেষ করে তাঁর সামরিক দক্ষতা, উদ্ভাবনী কৌশল এবং হিন্দবী স্বরাজ্য, যার অর্থ ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের জন্য স্ব-শাসনের দৃষ্টিভঙ্গির জন্য স্মরণীয়।
শিবাজী জয়ন্তী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সাথে স্মরণ করা হয়, যার মধ্যে মিছিল, নাটক এবং বক্তৃতা রয়েছে যা তার জীবন এবং কৃতিত্বকে তুলে ধরে।  এটি তার উত্তরাধিকার এবং তিনি যে মূল্যবোধের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন, যেমন সাহসিকতা, ন্যায়বিচার এবং তার লোকেদের সুরক্ষার অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে।

 

এই পালনটি শুধুমাত্র ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে না বরং মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে, তাদের মহৎ গুণাবলী অনুকরণ করতে এবং সমাজে ইতিবাচকভাবে অবদান রাখতে উৎসাহিত করে।

 

কেন আমরা ছত্রপতি শিবাজী জয়ন্তী উদযাপন করি?

 

মহাত্মা জ্যোতিরাও ফুলে পুনে থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরে ১৮৬৯ সালে রায়গড়ে শিবাজি মহারাজের সমাধি আবিষ্কার করার পর ১৮৭০ সালে শিবাজি জয়ন্তী উদযাপনের সূচনা করেন।  ১৮৯৪ সালে বাল গঙ্গাধর তিলক এই উদযাপনগুলিকে আরও জনপ্রিয় করে তোলেন। মহারাষ্ট্র, গোয়া এবং কর্ণাটকে শিবাজী জয়ন্তী অত্যন্ত গর্বের সাথে পালিত হয়।  মারাঠা সম্প্রদায় এই দিনে মহান মারাঠা সম্রাটকে প্রশাসনে তার ব্যতিক্রমী দক্ষতা, সামরিক বীরত্ব এবং সামরিক কৌশলের জন্য সম্মান জানাতে অসংখ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।  শিবাজি মহারাজের সাহস ও বুদ্ধিমত্তা কিংবদন্তি এবং প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ তার দরবারে এবং প্রশাসনে মারাঠি এবং সংস্কৃতের মতো আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহারকে প্রচার করেছিলেন, প্রচলিত মান ভাষা ফার্সিকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন।  শিবাজি মধ্যযুগে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নৌ শাখার বিকাশে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য “ভারতীয় নৌবাহিনীর পিতা” হিসাবেও বিখ্যাত।

 

ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ জয়ন্তীর তাৎপর্য ২০২৪।

 

ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ জয়ন্তী মহারাষ্ট্র এবং ভারত জুড়ে পালিত হয়, এই অনুষ্ঠানের তাৎপর্য স্মরণ করে।  ২০২৪ সালে, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের উত্তরাধিকারকে সম্মান জানাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সেমিনার আয়োজন করা হয়।  স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি ছাত্রদের তার জীবন সম্পর্কে শিক্ষিত করার জন্য বিশেষ প্রোগ্রাম পরিচালনা করে, তাদের ঐতিহ্যের প্রতি গর্ব জাগিয়ে তোলে। ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ জয়ন্তী ভারতের অন্যতম সেরা ব্যক্তিত্বের জীবন ও অর্জন উদযাপন করে, তার বীরত্ব, নেতৃত্ব এবং ইতিহাসে অবদান তুলে ধরে।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী আবদুল রশিদ খান।

ওস্তাদ আব্দুল রশিদ খান একজন ভারতীয় হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত কণ্ঠশিল্পী ছিলেন।  খেয়াল ছাড়াও তিনি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ধ্রুপদ, ধামার এবং ঠুমরি গোত্রের একজন বিরল গায়ক ছিলেন।  ২০২০ সালে, তিনি প্রবীণ সঙ্গীতজ্ঞ হিসাবে ভারত সরকার কর্তৃক পদ্ম পুরস্কার (পদ্মভূষণ) ভূষিত হন।

 

 

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন———-

 

আব্দুর রশিদ খান ১৯ আগস্ট ১৯০৮ তারিখে বেহরাম খানের রায়বেরেলি জেলার স্যালন শহরে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ব্রিটিশ ভারতের যুক্তপ্রদেশ আগ্রা এবং অউধের বেহরাম খানের ঐতিহ্যবাহী গোয়ালিয়র ঘরানার গায়ক।  তিনি তার বড় ভাই ইউসুফ খান এবং তার বাবা ছোট ইউসুফ খানের কাছ থেকে তার প্রাথমিক সঙ্গীত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
পরবর্তীকালে, পরিবারের বড় সদস্য চাঁদ খান, বরখুদার খান এবং মাহতাব খান প্রখ্যাত সঙ্গীত ব্যক্তিত্বদের কাছে গোয়ালিয়র ঘরানায় গান গাওয়ার প্রশিক্ষণ নেন।  তিনি তার নিজস্ব শৈল্পিক সংবেদনশীলতা, সঙ্গীত প্রতিভাতে পারদর্শী ছিলেন।  এটি লক্ষণীয় যে তিনি তানসেনের বংশধর ছিলেন, ১৬ শতকে আকবর দ্য গ্রেটের দরবারের অন্যতম নবরত্ন।

 

কর্মজীবন———

 

আবদুর রশিদ খানের ঐতিহ্যবাহী রচনাগুলি বিবিসি এবং রেডিও ইরাক দ্বারা রেকর্ড করা হয়েছিল।  লখনউতে ‘উত্তরপ্রদেশ সঙ্গীত নাটক আকাদেমি’ এবং কলকাতার ‘আইটিসি সঙ্গীত গবেষণা একাডেমি’ সহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তার রচনাগুলি রেকর্ড ও সংরক্ষণ করেছে।  কয়েক দশক ধরে, তিনি লখনউতে আকাশবাণী এবং দূরদর্শনে নিয়মিত শিল্পী ছিলেন।  এছাড়াও আব্দুল রশিদ খান সদারং সম্মেলন, গোদরেজ সম্মেলন, লখনউ মহোৎসব, ডোভার লেন মিউজিক কনফারেন্স, আইটিসি এসআরএ মিউজিক কনফারেন্স প্রয়াগ সঙ্গীত সমিতির মতো অনেক জাতীয় ও আঞ্চলিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।  সর্বভারতীয় সঙ্গীত সম্মেলন।

 

 

 

তিনি সমালোচক, সহশিল্পী এবং উত্তরপ্রদেশ সঙ্গীত নাটক একাডেমী (১৯৮১), বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৩), পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং প্রেস ক্লাব কলকাতার মতো অনেক স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান দ্বারা সম্মানিত হয়েছেন।
আবদুল রশিদ খান তার জীবদ্দশায় ২০০০ টিরও বেশি সুরসমৃদ্ধ পরিবেশনা উপস্থাপন করেছেন এবং একজন কবি ও বিশিষ্ট লেখক তিনি “রসন পিয়া” ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। তিনি যে সকল ‘বন্দিশ’ গেয়েছিলেন, সেগুলির সৃষ্টিকর্তা ছিলেন তিনি নিজেই।

 

তিনি তার জীবদ্দশায় অনেক ছাত্রকে প্রশিক্ষণও দিয়েছেন।  ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি প্রশিক্ষণের জন্য কলকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন এবং শেষ দিন পর্যন্ত গুরু হিসাবে ‘আইটিসি সঙ্গীত গবেষণা একাডেমী’-এর সাথে যুক্ত ছিলেন।

 

 

 

পুরস্কার এবং স্বীকৃতি——-

 

আবদুল রশিদ খান নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া রেডিও অডিশন কমিটির সদস্য ছিলেন। আবদুল রহিম খান কর্মজীবনে বহু পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেছেন—

 

আইটিসি সঙ্গীত রিসার্চ একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৪), সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার (২০০৯), কাশী স্বর গঙ্গা পুরস্কার (২০০৩), রাস সাগর (শিরোনাম) পুরস্কার (২০০৪), ভুওয়ালকা পুরস্কার (২০১০), ভারত সরকারের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণ (২০১৩) – পদ্ম পুরস্কারে ভূষিত হওয়া সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি।, দিল্লির সরকার কর্তৃক আজীবন কৃতিত্ব পুরস্কার (২০১৩), পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বঙ্গবিভূষণ (২০১৫)

 

 

 

জীবনাবসান–‐——

 

আবদুল রশিদ খান ১৮ ফেব্রুয়ারি, 2016  কলকাতায় মারা যান।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সংগীতের শিল্পী জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ (৮ মে ১৯০৯ – ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭; যিনি ‘গুরু’ নামে পরিচিত) হলেন একজন হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সংগীতের (ফারুকাবাদ ঘরানার) বাদ্যযন্ত্র শিল্পী। তিনি হারমোনিয়াম এবং তবলা বাদক ছাড়াও একজন সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন—–

 

জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, কলকাতার এক সংগীত প্রিয় হিন্দু পরিবারে জন্ম। তিনি দ্বারকানাথ ঘোষের (১৮৪৭–-১৯২৮) নাতি, যিনি ১৮৭৫ সালে দ্বারকিন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ভারতের তথা পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় “দ্বারকিন হারমোনিয়াম” আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক করেন।  তার খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী ছিল (তিনি ফুটবল, হকি, পোলো এবং বিলিয়ার্ড খেলতেন)। তিনি ছবি আঁকার অনুশীলনও করেছিলেন, তবে একবার এক ফুটবলের ম্যাচে, তার চোখে আঘাত লাগে এবং জখমের কারণে তাঁকে সব কিছু বন্ধ করতে হয়েছিল।
ফলে পরবর্তীকালে, তিনি সংগীতের দিকে ঝুঁকলেন। তিনি গিরিজা শঙ্কর, মোহাম্মদ সাগির খান এবং মোহাম্মদ দবির খানের কাছে প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলেন। তিনি ফারুকাবাদ ঘরানার ওস্তাদ মাসিত খানের কাছ থেকে তবলার পাঠ গ্রহণ করেন এবং তার প্রবীণ শিষ্য হন এবং পরে পাঞ্জাব ঘরানার ওস্তাদ ফিরোজ খান থেকে তালিম নেন।

 

সঙ্গীত জীবন—–

 

জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ সংগীত প্রযোজক হিসাবে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ১৫ বছর ধরে কাজ করেছিলেন। তিনি শাস্ত্রীয় সংগীত, আধুনিক, অর্কেস্ট্রাল, করাল এবং পার্কাসন নানা বিষয়ের শৈলীর ওপর লিখেছিলেন।
তিনি সৌরভ একাডেমি অফ মিউযিক এর প্রতিষ্ঠাতা এবং ‘সংগীত গবেষণা একাডেমি’র সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি অনেক বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য সংগীত করেছেন, যেমন যদুভট্ট, অন্ধের আলো এবং রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত (১৯৫৮) উল্লেখযোগ্য তার কিছু সৃষ্টি। তিনি বিভিন্ন শিল্পীর দ্বারা গাওয়া বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গ্রামোফোন রেকর্ডে সংগীত রচনা ও পরিচালনা করেছেন। দ্য ড্রামস অফ ইন্ডিয়া এবং হারমোনিয়াম এবং বেহালা দিয়ে পণ্ডিত ভি.জি. যোগের সাথে একটি যুগলবন্দি তাকে খুব জনপ্রিয়তা দিয়েছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তার একটি রচনা ‘চতুরং’ নামে পরিচিত – তাতে তবলা, পাখোয়াজ, কাঠক এবং তারানা ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি শিষ্যদের তিনি অনেক রাত অবধি অনুশীলন করবার জন্য তার সাথে থাকার নির্দেশ দিতেন এবং বলা হত যে তিনি যদি কোন ত্রুটি শুনতে পেতেন তা তিনি তখনই সংশোধন করে দিতেন।
তিনি কানাডার জাতীয় চলচ্চিত্র বোর্ডের জন্য ইশু প্যাটেল পরিচালিত একাডেমি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত অ্যানিমেটেড সংক্ষিপ্ত বিড গেমের জন্য সংগীত পরিচালনা করেছিলেন। তিনি কলকাতার বউবাজারের ২৫ নম্বর ডিক্সন লেনে তাঁর বাসা ছিল এবং সেখানে সংগীতজ্ঞরা সে স্থানীয় বা কলকাতা শহরের যারা আসতেন সবার অবাধ যাতায়াত ছিল। তাঁর বাসস্থান এক প্রকার সংগীত এবং আবৃত্তির চর্চার স্থান ছিল, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ১৯৪৪ সালে উস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খানের দ্বারা পরিবেশিত রাগ “ছায়ানট”।

 

১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সালে তিনি প্রয়াত হন।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৮ ফেব্রুয়ারী, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

আজ ১৮ ফেব্রুয়ারী । এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

 

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৩৭৪ – সেইন্ট জাডুইগার, পোল্যান্ডের রানি।

 

১৪৮৬ – শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য মহাপ্রভু, বৈষ্ণব সন্ন্যসী ও ধর্মগুরু, ভারতে গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের প্রবর্তক।

 

১৭৪৫ – আলেসান্দ্রো ভোল্টা, ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী।

১৮৩০ – হ্যালহেড, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব।

 

১৮৩৬ – প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি যোগসাধক, দার্শনিক ও ধর্মগুরু শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব।

১৮৩৮ – আর্নস্ট মাখ, অস্ট্রীয় পদার্থবিদ, দার্শনিক ও মনোবিদ।

১৮৯৪ – রফি আহমেদ কিদোয়াই, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বিপ্লবী রাজনীতিক ও সমাজতান্ত্রিক ব্যক্তি।

 

১৯২৭ – মহম্মদ খৈয়াম হাশমি, ভারতের প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার।

১৯৩৭ – আনিসুজ্জামান, বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক।

১৯৫২ – আনিসুজ্জামান, বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ ও লেখক।

১৯৮২ – গায়ত্রী মহন্ত, ভারতের অসম রাজ্যের চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।

 

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১১২৩ – সম্রাট ফ্রেডরিক জেরুজালেম দখল করেন।

১৫৩৬ – ফ্রান্স ও তুরস্ক বাণিজ্য চুক্তি করে।

১৭৮৭ – অস্ট্রিয়ার সম্রাট শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করেন।

১৮৩৯ – ডেট্রয়েট বোট ক্লাব গঠিত হয়।

১৮৬১ – প্রথম ইতালিয় পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু হয়।

১৮৮৫ – মার্ক টোয়েনের বিখ্যাত বই এডভেঞ্চার অব হাকলবেরি ফিন প্রকাশিত হয়।

১৯০০ – বোয়ের যুদ্ধে পারডারবাগে ৪ শ’ লোকসহ পিয়েত ক্রোনিয়ের বৃটিশদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

১৯১৫ – ডুবোজাহাজের মাধ্যমে জার্মানির ব্রিটেন অবরোধ শুরু হয়।

১৯২১ – ব্রিটিশ সৈন্যরা ডাকলিন দখল করে।

১৯২৬ – বিখ্যাত রীফ নেতা আবদুল করিম খাত্তাবি ফ্রান্স এবং স্পেনীয় যৌথ বাহিনীর হাতে পরাজিত হন।

১৯৩০ – প্লুটো আবিষ্কৃত হয়।

১৯৩৪ – আলজেরিয়ার বিখ্যাত যোদ্ধা আমির আবদুল কাদেরর হাতে আগ্রাসী ফরাসি সেনারা শোচনীয়ভাবে পর্যুদস্ত হয়।

১৯৪২ – জাপানি সৈন্যরা বালিতে অবতরণ করে।

১৯৫১ – নেপাল সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।

১৯৬৫ – গাম্বিয়ার স্বাধীনতা লাভ করে।

১৯৬৯ – রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হন।

১৯৭৩ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় আফগানিস্তান।

১৯৭৬ – বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশের নাগিরকত্বে ভূষিত করা করা হয়।

১৯৭৯ – বাংলাদেশের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।

১৯৮৮ – রাশিয়ার ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো থেকে বরিস ইয়েলৎসিনকে বরখাস্ত করে।

১৯৮৯ – আফগানিস্তানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে।

১৯৯১ – কেনিয়ায় গ্রিস দূতাবাসে লুকিয়ে থাকার ৩ দিন পর তুরস্কের কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালানকে গ্রেফতার করা হয়।

১৯৯৩ – হাইতিতে ফেরি ডুবে দু’হাজার লোকের মৃত্যু ঘটে।

১৯৯৭ – বাংলাদেশে প্রথম বেসরকারি বিমান সংস্থার যাত্রীবহন শুরু হয়।

 

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১২৯৪ – মোঙ্গল সম্রাট কুবলাই খানের মৃত্যু হয়।

 

১৫৪৬ – প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মের সংস্কারক জার্মান ধর্মতাত্ত্বিক মার্টিন লুথারের মৃত্যু হয়।

 

১৫৬৪ – মাইকেলেঞ্জেলো, ইতালীয় ভাস্কর, চিত্রকর, স্থপতি এবং কবি।

 

১৮৫১ – কার্ল গুস্তাফ ইয়াকপ ইয়াকবি, জার্মান গণিতবিদ।

 

১৯৪৯ – নিথেতো আলকালা-থামোরা, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী।

 

১৯৬৯ – মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা, বাঙালি শিক্ষাবিদ এবং অধ্যাপক।

 

১৯৭৪ – মুক্তিসংগ্রামী, চারণকবি ও সাংবাদিক বিজয়লাল চট্টোপাধ্যায় প্রয়াত হন।

 

১৯৭৭ – বাংলা সিনেমার নেতৃস্থানীয় অভিনেত্রী কাবেরি বসু।

 

১৯৯৭ জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সংগীতের (ফারুকাবাদ ঘরানার) সঙ্গীতশিল্পী।

 

২০১৬ – আবদুল রশিদ খান,ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

সরোজিনী নাইডু, স্বনামধন্য ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, বিশিষ্ট বাগ্মী ও ইন্দো-অ্যাংলিয়ান কবি – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে সরোজিনী নায়ডু  প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধু শহীদ ভগৎ সিং-এর মতই নয় বরং শক্তিশালী নারীদের দ্বারা প্রশস্ত হয়েছিল যারা তাদের মাটিতে দাঁড়িয়েছিল এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ব্রিটিশদের সাথে লড়াই করেছিল।  সরোজিনী নায়ডু  ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা ছিলেন তিনি।

 

সরোজিনী নায়ডুর জন্ম ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৯ সালে ভারতের হায়দ্রাবাদ শহরের একটি হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে। তার পৈতৃক বাড়ি ছিল অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার কনকসার গ্রামে। তিনি ছিলেন বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও কবি বরদাসুন্দরী দেবীর জ্যেষ্ঠা কন্যা।

সরোজিনী নাইডু ছিলেন স্বনামধন্য ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, বিশিষ্ট বাগ্মী ও ইন্দো-অ্যাংলিয়ান কবি। তিনি ভারত কোকিলা (দ্য নাইটেঙ্গেল অফ ইন্ডিয়া) নামে পরিচিত। সরোজিনী নাইডু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম (ভারতীয়) মহিলা সভাপতি নির্বাচিত হন। স্বাধীন ভারতে তিনি উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রাজ্যপালও হয়েছিলেন।

সরোজিনী নাইডু ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে তিনি যোগ দেন ডান্ডি পদযাত্রায়। গান্ধী, আব্বাস তয়েব ও কস্তুরবা গান্ধী গ্রেফতার হলে তিনি ধারাসন সত্যাগ্রহে নেতৃত্ব দেন। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাগ্মী এবং ইংরেজি ভাষার যশস্বী কবি। তাঁর রচিত গ্রন্থ গুলি —-

 

The Golden Threshold (১৯০৫),  The Bird of Time: Songs of Life, Death & the Spring (১৯১২),  The Broken Wing: Songs of Love, Death and the Spring (১৯১৭),  The Sceptred Flute: Songs of India (১৯৪৩), The Feather of the Dawn (১৯৬১), The Gift of India।

 

১৯০৫ সালে, সরোজিনী বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন।  ১৯০৩ থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে, তিনি গোপালকৃষ্ণ গোখলে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মুহম্মদ আলী জিন্নাহ, অ্যানি বেসান্ট, সিপি রামস্বামী আইয়ার, মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু ইত্যাদির সংস্পর্শে আসেন।
১৯১৫ থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে, তিনি ভারতের বিভিন্ন অংশে যুব ক্ষমতায়ন, শ্রম গর্ব, নারী মুক্তি এবং জাতীয়তাবাদের উপর বক্তৃতা দেন।  ১৯১৬ সালে জওহরলাল নেহরুর সাথে দেখা করার পর, তিনি চম্পারনে নীল চাষীদের জন্য একটি আন্দোলন শুরু করেন।  তিনি ১৯২৫ সালে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি ছিলেন।
১৯১৯ সালের মার্চ মাসে, ব্রিটিশ সরকার সমস্ত রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ নিষিদ্ধ করে রাওলাট আইন জারি করে।  গান্ধীজি যখন প্রতিবাদে অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করেন, তখন সরোজিনীই প্রথম আন্দোলনে যোগ দেন।  পরবর্তীতে ব্রিটিশ সরকার এই আন্দোলনের ওপর ব্যাপক দমননীতি বাস্তবায়ন করে।

 

১৯১৯ সালের জুলাই মাসে সরোজিনী ইংল্যান্ডে হোমরুল লিগের দূত মনোনীত হন। ১৯২০ সালের জুলাই মাসের তিনি ভারতে প্রত্যাবর্তন করার পর ১ অগস্ট গান্ধীজি অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণা করেন। ১৯২৪ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি পূর্ব আফ্রিকান ভারতীয় কংগ্রেসের দুই জাতীয় কংগ্রেস প্রতিনিধির অন্যতম রূপে নির্বাচিত হন।
১৯২৮ সালের অক্টোবর মাসে তিনি নিউ ইয়র্ক সফর করেন। এই সময় যুক্তরাষ্ট্রে আফ্রিকান আমেরিকান ও আমেরিইন্ডিয়ানদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের নিন্দা করেন তিনি। ভারতে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।

 

১৯৩০ সালের ২৬শে জানুয়ারী, জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে।  ৫ মে গান্ধীজিকে গ্রেফতার করা হয়। এর পরপরই সরোজিনীকে গ্রেফতার করা হয়।  এ সময় তিনি কয়েক মাস কারাবরণ করেন।  ১৯৩১ সালের ৩১ জানুয়ারী, তিনি গান্ধীজির সাথে মুক্তি পান।  ওই বছরের শেষের দিকে তারা আবার গ্রেপ্তার হন।  অসুস্থতার কারণে সরোজিনীকে কিছুদিনের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়।  গান্ধীজি ১৯৩৩ সালে মুক্তি পান। ১৯৩১ সালে তিনি গান্ধীজি এবং পন্ডিত মালব্যের সাথে গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন।  ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য ১৯৪২ সালের ২ অক্টোবর তাকে আবার গ্রেফতার করা হয়।  এই সময়ে, সরোজিনী গান্ধীজীর সাথে ২১ মাস বন্দী ছিলেন।  মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে সরোজিনী নাইডুর সম্পর্ক এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিল যে তিনি গান্ধীজিকে “মিকি মাউস” বলেও ডাকতেন।

 

 

১৯৪৭ সালের মার্চ মাসে এশীয় সম্পর্ক সম্মেলনের স্টিয়ারিং কমিটির পৌরোহিত্য করেন সরোজিনী নায়ডু।
১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট স্বাধীনতার পর সরোজিনী নায়ডু যুক্তপ্রদেশের (বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ) রাজ্যপাল নিযুক্ত হন। তিনিই ছিলেন ভারতের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল। ১৯৪৯ সালের ২ মার্চ কার্যকালেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনক দাদাসাহেব ফালকে – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ভুমিকা—

 

ধুন্ডীরাজ গোবিন্দ ফালকে, যিনি দাদাসাহেব ফালকে নামে অধিক পরিচিত, (৩০শে এপ্রিল, ১৮৭০ – ১৬ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৪) একজন ভারতীয় চলচ্চিত্রে পরিচালক ও প্রযোজক ছিলেন। তাকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনক হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি ১৯১৩ সালে রাজা হরিশচন্দ্র চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন যা ছিল ভারতের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য নির্বাক চলচ্চিত্র। এরপর তিনি প্রায় চব্বিশ বছর ধরে ৯৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র ও ২৬টি স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

 

প্রথম জীবন—-

 

ধুন্ডীরাজ গোবিন্দ ফালকে ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে এপ্রিল ব্রিটিশ ভারতের বম্বে প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত ত্র্যম্বকেশ্বর নামক স্থানে একটি মারাঠি শিক্ষিত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

 

নির্বাচিত চলচ্চিত্রসমূহ—–

 

রাজা হরিশচন্দ্র (১৯১৩), মোহিণী ভস্মাসুর (১৯১৩), সত্যবান সাবিত্রী (১৯১৪), লঙ্কা দহন (১৯১৭), শ্রী কৃষ্ণ জন্ম (১৯১৮), কালীয় মর্দন (১৯১৯), সেতু বন্ধন (১৯২৩), গঙ্গাবতরণ (১৯৩৭)।

 

দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার—

 

দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার সিনেমার ক্ষেত্রে ভারতের সর্বোচ্চ পুরস্কার। ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনক দাদাসাহেব ফালকে-এর নাম অনুসারে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।ধুন্ডিরাজ গোবিন্দ ফালকে এর নাম অনুসারে এই পুরস্কারের নামকরণ হয়েছে।এই পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে একটি স্বর্ণ কমল পদক এবং একটি শাল সহ পুরস্কার প্রাপকে নগত দশ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।
দাদাসাহেব ফালকে ভারতীয় সিনেমার সর্বোচ্চ পুরস্কার, সিনেমায় অসামান্য অবদানের জন‍্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতিবছর ন‍্যাশনাল চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার-এ সম্মানিত প্রথম ব‍্যাক্তি ছিলেন অভিনেত্রী দেবিকা রানী 1969 সালে।2021 সালের লক্ষ্মী ও ছপাক ছবির সেরা অভিনেতা-অভিনেত্রী হিসাবে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন বলি তারকা অক্ষয় কুমার ও দীপিকা পাড়ুকন।
তেমনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার ২০২২-এ মিমি ছবির সেরা অভিনেত্রী  কৃতি স‍্যানন এবং রনবীর সিং তার “83”  ছবিতে অভিনয়ের জন‍্য দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার 2022 এর খেতাব জিতে নিয়েছে।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া।।

Share This