Categories
কবিতা

নিঃসঙ্গ দিন : প্রবীর কুমার চৌধুরী।

প্রতি – দিন আসে না ভালোবেসে
সময় কাটায় অনিহায় অনায়াসে,
বিবশতা আর নিরক্ততা-
ভরায় যত অপ্রেমের মাদকতা।

জানি না কেউ ভালো আছে কিনা,
মনের জানালা গুলো বন্ধ,ফোটেনা হাস্নুহানা-
সৌরভে ফোটে না খুশির আমেজ,দেখেনা স্বপ্ন,
জানি না ফিরবে কিনা সুখের সেদিন আর কখনো।

যদি হও সখা,কাছে এসে,প্রেমাবেশে, দিও দেখা-
অনলে,অনলে ভস্মীভূত এ মন,প্রাণ,আমি যে বড় একা।
তুমি অনন্ত প্রেম, দানিছ ভুবনে,রয়েছ প্রতিক্ষণে মননে,
তুমি কবি সূর্যের মতো,আজও আছো প্রেমময় শান্তিনিকেতনে।

Share This
Categories
কবিতা

তোমাকে চাই :::: প্রবীর কুমার চৌধূরী।।।

পথে পথে,মিছিলে মিছিলে,প্রাত্যহিক সংগ্রামে,শুধু তোমাকে চাই
বঞ্চিত,শোষিত,রক্তাক্ত আর বুভুক্ষায় কঠোর প্রতিজ্ঞা বুকে চেপে
শেষশীতে কম্বলহীন,দাঁতে, দাঁত চেপে ছাই চাপা নিভন্ত মনের
আগুনের সন্ধ্যানে দিন রাত এককরা শেষ বিকেলের সূর্যস্নাত
দুর্বিনীত অভিশাপ বুকে শুধু তোমাকে চাই।

” ঊষর ধূসর ” হিংস্র হিংলাজে সময়কে চেপে দুইহাতে
প্রতিস্পর্ধি হওয়ার শেষ বাসনাতে,মৃত্যুর বুকে পা রেখে আসুক-
বজ্রসম মনোবল, প্রতিবাদের দ্রোহকাল ছিনিয়ে আনার সংকল্পে
জানি অজাতশত্রু কেহ নয়, সবারি আছে প্রাণে ভয়
তবুও মুক্তির খোঁজে নির্ভয়ে অধিকারের নিশান আঁকড়ে ধরবো- দুইহাতে।

এ আহবকাল দুরমুশ করে শান্ত জীবন,স্বপ্নগুলো ছিনিয়ে নেয়
তাই আজ আগামীর মিছিলে মিছিলে মুখে থাক সাম্যের শ্লোগান।
ব্যথিত হৃদয়ে থাক কঠোর প্রতিজ্ঞা,সবকিছু হারানোর প্রজ্বলিত ক্রোধের শিখায় এসো করাঘাতে জাগিয়ে তুলি,শপদে আশা
আর যেন কেউ কোত্থাও কারোর মুখের ভাত ছিনিয়ে না খায়।

সংরক্ষিত /প্রবীর কুমার চৌধুরী

Share This
Categories
কবিতা

যাবার আগে ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

জন্মমুহূর্ত থেকেই জানি একদিন ফিরে যেতে হবে
তুমি শার্সি তুলে কেন মনে করাও?
আরশিতে মুখ দেখি, কিছুটা বাকি-
শতজীর্ণ সুললিত যৌবন।

তমসার গভীরে একাকী যতবার ভাবি যাবো,যাবো
সামনে এসে গভীর আশ্লেষে-
পথরোধ করে দাঁড়ায় কর্তব্য।
কিছুটা অপেক্ষায় থমকে দাড়াই, হিসাব নিকাশে ।

আকাশময় অগুনতি তারার মায়াবী আলোয়
ভীষণ শখ জাগে, তোমার চোখে চোখ রেখে
সেকে নিই এ কঠোর বাস্তব। জ্যোৎস্নায় কাঁদে প্রেম,
এখন তুমিই বল তোমার নরম হৃদয়ে সত্যি কি আছি এখনও?

মাঝে মাঝে অসহনীয়তায় গর্জে উঠি
তুমি হাসো বলো -অরণ্যে রোদন
সম্বিত আসে,সেও হাসে, ওটা রাজরক্ত
আমি ভেতো মজ্জ্যায় মজ্জ্যায় দেশভক্ত।

সংরক্ষিত
গড়িয়া, কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

চিরন্তন পদাবলী ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

সাধ জাগে হাস্নুহানার গন্ধ খুঁজি সুঘ্রানে
অসহ্য গাদাল পাতা ছড়ানো পথে ।
সকালগুলো বড় ভয়াভয়-
চোখ খুলতেই ভয় আর আতঙ্ক ।
প্রেয়সীর ছলনা, কুমারী যৌবনের কান্নায় দিশাহারা হই,
এখনও প্রাত্যহিক মৃত্যু মিছিল চলে, অশ্রু ঢালে-
বশ্যতা স্বীকারে কঠোরতায় বাধ্য করে অবনী।

হয়তো খালি চোখে চাঁদকে মনে হয় মহাপ্রেমিক,
ক্ষনেক চুম্বন ধারায় ভরে যায় এ দেহ, মন,
জোছনার স্নিগ্ধধারায় যে কামনার সঙ্গম –
অবশেষে নষ্ট চন্দ্রের যন্ত্রণাময় দংশন।
আলোছায়ার পরে আছে উলঙ্গ কুয়োতলা
চেনা চামড়ার মধ্যে লুকিয়ে আছে একটি লাশ
তবে কি মুক্তি দিলো কুৎসিত পৃথিবীর কারাগার ?

খিদেওয়ালা ডেকে তোলে নিত্য তার যা অভ্যাস,
এবার শুরু হবে দৈনন্দিন কালযাপনে হিংস্রতায় অবগাহন।

সংরক্ষিত
গড়িয়া,কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

ধর্মের মানদণ্ড ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।

সবার মাঝে ভালোই আছি আমি ,
তুমি ? কি বললে ,জানেন অন্তর্যামী ?
কবে নিলে এই মৌনব্রত,
মুখে তো ফুলঝুরি ছুটতো শত,শত
কবিতায় খুঁজি লিখছো কই?
দেখছি নাতো তোমার উল্লসিত হৈচৈ।
এখন ভীষণ হট্টগোল,
এবার লেখায় তোলো শোরগোল ।

স্বর্গের সিঁড়ি ভেঙেছে,
সুখের গানগুলিও থেমেছে ,
এখন স্বপ্নগুলো দুঃস্বপ্নের কোলে দোল খায়-
ছদ্মবেশী বর্গির আনাগোনায়।
অহংকার আর দর্পের ছবি একই ফ্রেমে-
আমি দেখি জানালায় বসে। জানিনা কোন ভ্রমে-
বিধাতার হিসাবের খাতা ভুলে ভরা,
ধর্মের মানদন্ডে মানুষকে মাপছে এ ধরা।

সংরক্ষিত
গড়িয়া,কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

ঘুম ভেঙে এসো ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

অবক্ষয়ের করাল ছায়ায়-
আজ সব কবলিত, তবুও মায়ায় নিরুপায় ।
সীমাহীন আস্পর্ধায়-
কলঙ্কিত এ অধ্যায়,
তুমি চুপ কেন দুঃসময়ে, শিক্ষার দম্ভ?
এইতো সময় দক্ষযজ্ঞের,হয় হোক আরম্ভ।

চাতকের মতো অপেক্ষার জল না চেয়ে
কলমে রক্ত ভরে বিদ্রোহে এসো ধেয়ে।
সবলা, অবলা,যত নিচের তলা, হোক উত্থান,
সূর্যের আগুনে ঝলসিয়ে করব মহাপ্রস্থান।
ইতিহাস কথা বল,আর নয় চোখ ছলছল,
অমৃত ছেঁচে অশনিকে দেব হলাহল।

সংরক্ষিত/ প্রবীর কুমার চৌধুরী

Share This
Categories
কবিতা

থাক আহ্বান  :: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।

তোমার মনের বারান্দায় আশ্রয় দিও
চাইনিত কিছু ,তোমার অলোক রাশির চোয়ানো জলে তৃষা নিবারণ আর-
গোধূলির সন্ধ্যায় পাখির কলরবে বাসায় ফিরে মিলন-
ব্যাস এইটুকুই নিরীক্ষণ করবো।
কারোর দোরে চাইনিত ঠাঁই, শুধু তোমারই চৌকাঠে ছড়ানো ভালোবাসাটুকু তুলে নেবো এ বুকে।

সহস্র টন ভারে,তোমার হৃদমহলে কে বসে আছে
তুমি কার অনুগামিনি আমি তো জানতে চাইনি
আমি তো জানতে চাইনি কখনও, কোনখানে,
আমি তো কখনও প্রকাশ করেনি কতটা রক্ত ক্ষরণ-
বিদ্রুপে হাসে স্বপ্নের দুচোখে,আমায় কেবলি শেষের পথে হাঁটায়।

দ্বীপ নেভানো রাতে সাথীহীন আমার পরিক্রমা
দুঃখের কোন সাথী খুঁজিনি, প্রয়োজনও বুঝিনি
শুধু ঘুম ভাঙানোর গান গেয়েছি, মিছিলে,মিছিলে
দুপায়ে রক্ত ঝড়িয়েছি ,শ্লোগান তুলেছি
নাৎসির বিরুদ্ধে, হিটলারদের পতনের উদ্দেশ্যে…..

বিদায় বেলায় একটাই প্রার্থনা তোমার নগ্নতা ঢাকো
শুদ্ধ প্রেমের রেণু মুখে মাখো, তারপর শান্তির সাদা পায়রা ওরাও হৃদ আকাশে।
পবিত্র ভাষায় আকাশ ভরিয়ে দাও, পবিত্রায় বুক ভরাও
মানবিকতার ভরে যাক পথের দুইধার
ছোট ছোট শিশু যারা আগামীর ভবিষ্যৎ-
তোমার স্তনদুগ্ধ পানকরে সম্মান করুক মাতৃত্বকে।

সংরক্ষিত
গড়িয়া,কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

ঘুরবে কি চাকা ::: দেবদাস চৌধুরী।।।

হৃদয়ের বীনায় যে সুর বাজে-
দক্ষিণা বাতাসে ভেসে পৌঁছাবে তোমার কাছে।
মনের নীল লেফাফায় সোহাগের আতর মাখিয়ে-
কিছু সংলাপ পাঠিয়েছিলাম তোমার নিভৃত অন্দরমহলে,
এখনও অজানা তোমার দুচোখের স্নেহধন্য কিনা।

দীর্ঘ অপেক্ষায় ফিরে আসবে সময়
ফিরে আসবে একদিন ঘুরতে ,ঘুরতে চাকা।

জনতার স্রোতে নিত্য ভেসে যাই
খাঁটি মানুষের সন্ধানে ,সন্ধানে দিবস কাটাই,
সত্যের ইতিহাস জানি চাপা থাকার নয়, কোন আগুন্তুফে।
নিত্য যুদ্ধে রণক্লান্ত সময় তবুও সূর্যে আবর্তনে পোড়ে,
এই ভিটার মাটির আবর্তনে আজও তোমার অবয়ব গড়ে।

কিযে হবের আতঙ্কের জাল বিছায় নিষ্ঠুর পৃথিবী
তবুও না বোঝার ভান, রীতি ভাঙছে পর্বতারোহী।

সংরক্ষিত
গড়িয়া,কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

পাল্টে গেছে সাধের জীবন ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

সকাল হলেই রান্নাঘরে ভাত চাপানোর তাড়া
মাছের ঝোলের মশলা দেখায় সাধের শীলনোড়া।
ফ্যান ঝরাতে হাত পুড়ছে এই কপালে ছিল?
কাজের লোক লুডো খেলে কেন প্রভু বলো।
বাটির চা উথলে ওঠে ককিয়ে ওঠে কাপ
কবিতার খাতা শিকেয় তোলা মনে মনে অনুতাপ।
কড়ার তেল ছিটকে এসে পোড়ায় সাধের মুখ,
খুন্তি হাতে নৃত্য করি জ্বলে সারা বুক।
পেঁয়াজ কুচি কাঁদায় আমায় লঙ্কায় জ্বলে হাত
রসিয়ে খেয়ে সবাই বলে কেয়াবাত, কেয়াবাত।

এক করোনা পাল্টে দিলো সাধের এ জীবন,
আবডালে সব মুচকি হাসে কোথায় প্রিয়া আপন,
বাপের বাড়ি কাঁদছে সেও, বাস,ট্রেন সব বন্ধ-
কতদিন দেখিনি তারে ,হারিয়ে গেছে আনন্দ।
পথহারা পাখির মতো কেঁদে, কেঁদে সাড়া
কেউ যে আজ লুটছে ওগো ,কেউ যে মনোহরা
বাহুবলির দম্ভে আজ বিশ্বমাতা কাঁদে –
চিরদিন সমান না যায়,পড়বে দ্রুতই ফাঁদে ।
এতো মৃত্যু, চোখের জল , স্বজনহারার ব্যাথা
আগামী দিনের ইতিহাস লিখবেই এ কথা।

সংরক্ষিত
গড়িয়া,কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

ওম শান্তি ওম :: প্রবীর কুমার চৌধরী।।।

যুগসন্ধিক্ষনের এই নৈশব্দ ভেঙে এস
পায়ে পায়ে সব দ্বিধা মাড়িয়ে
আমার ভগ্নকুঁড়ের এক চিলতে দাওয়ায়
পরম শান্তির ঘন জ্যোৎস্না মাখতে ।
চাঁদনীর গভীর রাতে কোন উপাখ্যান আমি শোনাতে চাইনি
কিংবা তোমার নরম বুকের গভীর খাদের উষ্ণতা ।

আমি সাগর পারের চঞ্চল ঢেউ গুনতে-গুনতে
তোমাতেই বিলীন হতে চেয়েছি অনাদিকাল ধরে
আর তখনই তুমি নগ্নহয়ে দাঁড়িয়ে ছিলে সূর্যের গায়
আমার এ তনু,মন শিউরে উঠেছিল ,অনাগত অভিশাপ
আকাশ, বাতাস মথিত করে লীন হল তোমার গর্ভে
সেদিন থেকেই শুরু হলো পৃথিবীর দুঃস্বপ্নের রাত।

নদী হয়ে প্রবাহিত হতে চেয়েছি তোমার মরুপ্রায় গহন মনে
আমি চেয়েছি আমার শীতল তরঙ্গ মালায় তুমি-
নৈঃশব্দের অবগাহনে নির্মল ,পবিত্র হয়ে
পাঞ্চজন্য হাতে আজীবন ব্রতী হবে সাধনায়
তোমার গর্ভজাতর সৌম্যকান্তি অবয়ব
উচ্চারণ করবে ” ওম শান্তি ওম, শান্তি,শান্তি ওম …”।

সংরক্ষিত
গড়িয়া,কলকাতা।

Share This