Categories
প্রবন্ধ

সব্যসাচী লেখক সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় এর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় একজন খ্যাতনামা সাহিত্যিক, অনুবাদক ও আইনজীবী ছিলেন। গ্রামোফোন রেকর্ডে তার রচিত গান ‘ও কেন গেল চলে’, ‘জীবনে জেগেছিল মধুমাস’ প্রভৃতি সেসময় খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। তবে তার আলাদা গীত-সংকলন প্রকাশিত হয় নি। কলকাতা বেতার কেন্দ্রের সূচনাকাল থেকে আমৃত্যু তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।

জন্ম–

সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ৯ জানুয়ারি, ১৮৮৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার ব্যারাকপুর মহকুমার ইছাপুরে। পিতার নাম হরিদাস মুখোপাধ্যায় । পিতামহ কৃষ্ণসখা হাই কোর্টের উকিল এবং জনপ্রিয় শৌখিন নট ও নাট্যকার নগেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তার মাতামহ ছিলেন। রামায়ণ অনুবাদক কবি কৃত্তিবাস ওঝা ছিলেন এঁদের পূর্বপুরুষ।

শিক্ষা জীবন—

১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভবানীপুরের সাউথ সুবারবন স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, ভাগলপুরের তেজনারায়ণ জুবিলি কলেজ থেকে ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে এফ. এ, ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে জেনারেল অ্যাসেব্লিজ ইনস্টিটিউশন থেকে বি. এ পাশ করেন। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

কর্মজীবন–

আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর কলকাতার পুলিশ কোর্টে ওকালতি শুরু করেন।

সাহিত্যচর্চা–

তিনি পেশায় আইনজীবী হলেও নেশায় ছিলেন সাহিত্য-শিল্পকর্মী। চোদ্দ বৎসর বয়সে এন্ট্রান্সে পড়ার সময়ই তার ‘ছেলেবেলাকার কথা’ গল্পটি ‘কমলা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে সাহিত্য জগতে তার ঘনিষ্ঠতা। সৌরীন্দ্রমোহন প্রকৃত অর্থে সব্যসাচী লেখক ছিলেন। গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, চলচ্চিত্র কাহিনী, বেতার নাট্য, জীবনী, অনুবাদ-সাহিত্য, রম্য রচনা, ব্যঙ্গ-কৌতুক, ভ্রমণকাহিনী, প্রবন্ধ, পরলোকতত্ত্ব প্রভৃতি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় দক্ষতার সাথে ছিল তার অবাধ বিচরণ।
তিনি অনর্গল রায়, অপ্রকাশ গুপ্ত, বৈকুন্ঠ শর্মা, সত্যব্রত শর্মা প্রভৃতি ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। প্রায় দু’শো গ্রন্থ রচনা করেছেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ গুলি হল –

কিশোর সাহিত্য–

লালকুঠি, পাঠান মুলুকে, চালিয়াৎ চন্দর, মা-কালীর খাঁড়া।
গল্পগ্রন্থ–
মণিদীপা, নির্ঝর, রঙের টেক্কা, পুষ্পক, খাট্টা ও খোট্টা।

উপন্যাস–

দরদী, আঁধি, কাজরী, বাবলা, পিয়ারী, কুজ্ঝটিকা।

নাটক—

লাখ টাকা, স্বয়ংবরা, হারানো রতন।

অন্যান্য–

রবীন্দ্রস্মৃতি, জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি, উকিলের ডায়েরি, পরলোকের বিচিত্রকাহিনী, ওপারের খবর, তান্ত্রিকদের বিচিত্র কাহিনী। শেক্সপিয়ারের গ্রন্থাবলি ছাড়াও তিনি বিদেশি বই অনুবাদ করেছেন। রবীন্দ্র সংগীতের প্রথিতযশা ও স্বনামধন্য কণ্ঠশিল্পী সুচিত্রা মিত্র তার কন্যা।

মৃত্যু–

সৌরীন্দ্রমোহন ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ শে মে ৮৪ বৎসর বয়সে কলকাতায় প্রয়াত হন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

চারন-সম্রাট মুকুন্দ দাস – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।

ভূমিকা– মুকুন্দ দাস বাঙালি কবি যাকে চারণ কবি বলেও অভিহিত করা হয়। মুকুন্দ দাস স্বদেশী ও অসহযোগ আন্দোলনের সময় বহু স্বদেশী বিপ্লবাত্মক গান ও নাটক রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন স্বদেশী যাত্রার প্রবর্তক। প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন চারণকবি ছিলেন। বরিশালের অশ্বিনীকুমার দত্তের সংস্পর্শে মুকুন্দদাস রাজনীতিতে আকৃষ্ট হন।

তার আগ্রহে মুকুন্দদাস মাতৃপূজা নামে একটি নাটক রচনা করেন। দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীতে নবগ্রামে এই নাটকের প্রথম প্রকাশ্য যাত্রাভিনয় হয়। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় মুকুন্দদাস একের পর এক গান,কবিতা ও নাটক রচনা করে বাঙ্গালীর জাতীয় জীবনে নূতন উদ্দীপনার সঞ্চার করেন। এরপর ব্রিটিশ সরকার রাজদ্রোহের অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করেন ও বিচারে তাকে দিল্লী জেলে আড়াই বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। মাতৃপূজা নাটকটি সরকার বাজেয়াপ্ত করে। কাজী নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যথাক্রমে বাংলা মায়ের দামাল ছেলে চারন-সম্রাট মুকুন্দ উপাধিতে ও সন্তান আখ্যায় ভূষিত করেন।
জন্ম ও শৈশব–
তিনি ১৮৭৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগণার বানরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম গুরুদয়াল দে এবং মাতার নাম শ্যামাসুন্দরী দেবী এবং স্ত্রীর নাম সুভাষিনী দেবী। তাঁর পিতার দেওয়া নাম যজ্ঞেশ্বর দে এবং ডাকনাম ছিল যজ্ঞ। তার জন্মের পর গ্রামটি পদ্মা নদীতে তলিয়ে গেলে পরিবারটি বরিশালে চলে আসে, যেখানে গুরুদয়াল কাজ করতেন। বরিশালের ব্রজমোহন স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। বরিশালে বৈষ্ণব সন্ন্যাসী রামানন্দ অবধূত যজ্ঞেশ্বরের হরিসঙ্কীর্তন ও শ্যামা সঙ্গীতে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে দীক্ষা দেন এবং তাঁর নাম রাখেন মুকুন্দদাস। উনিশ বছর বয়সে, মুকুন্দদাস সাধন-সঙ্গীত নামে একটি স্তোত্রগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। বরিশালের হিতৈশি পত্রিকায় লিখতেন। সারা বরিশাল তাঁর যাত্রা গানে মাতাল হতেন।
মুকুন্দ দাসের বাড়ির বর্তমান অবস্থা–
বরিশাল নগরীতে ঢোকার মুখে নথুলাবাদ বাস টার্মিনাল -সংলগ্ন চারণকবি মুকুন্দ দাসের কালীবাড়ি। বর্তমান স্থানটুকু ঘিরে আছে ছাত্রাবাস, লাইব্রেরি, দাতব্য চিকিৎসালয় এবং পুজামন্দির ।চারণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে তিনি বরিশালের কাশীপুর কালীমন্দিরের জায়গা কিনে ছিলেন। সেই সময়ের মোট জায়গা ছিল ৮৭ শতাংশ, এখন আছে মাত্র ১৯ শতাংশ। বাকিটা বেহাত হয়ে গেছে।
রাজনৈতিক গান ও নাটক রচনা—
মুকুন্দদাস বরিশালের অশ্বিনীকুমার দত্তের সংস্পর্শে রাজনীতিতে আকৃষ্ট হন। তাঁর আগ্রহে মুকুন্দদাস মাতৃপূজা নামে একটি নাটক রচনা করেন। দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীতে নবগ্রামে এই নাটকের প্রথম প্রকাশ্য যাত্রাভিনয় হয়। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় মুকুন্দদাস একের পর এক গান, কবিতা ও নাটক রচনা করে বাঙালির জাতীয় জীবনে নূতন উদ্দীপনার সঞ্চার করেন। এরপর ব্রিটিশ সরকার রাজদ্রোহের অপরাধে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন ও বিচারে তাকে দিল্লী জেলে আড়াই বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়। মাতৃপূজা নাটকটি সরকার বাজেয়াপ্ত করে। মুকুন্দদাস কারাবাসে থাকাকালীন তাঁর স্ত্রী সুভাষিণী দেবীর মৃত্যু ঘটে। মুক্তিলাভের পর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ও অন্যান্যরা তাঁকে সান্ত্বনা দেন ও উদ্বুদ্ধ করেন যার ফলে তিনি পুনরায় রচনায় মনোনিবেশ করেন। কাজী নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যথাক্রমে বাংলা মায়ের দামাল ছেলে চারণ-সম্রাট মুকুন্দ উপাধিতে ও সন্তান আখ্যায় ভূষিত করেন।
রচনা–
মুকুন্দদাসের রচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল কর্মক্ষেত্র, ব্রহ্মচারিণী, পথ মাতৃপূজা, সমাজ, আদর্শ, পল্লীসেবা, সাথী ইত্যাদি।
পরবর্তী জীবন—
১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই মে শুক্রবার মুকুন্দদাস মৃত্যু বরণ করেন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস, জানুন দিনটির গুরুত্ব এবং কেন পালিত হয়।।।।

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২০২৫: প্রতি বছর ১৮ মে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস পালিত হয়। দিবসটি ১৯৭৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অফ মিউজিয়াম (আইসিওএম) দ্বারা সমাজে জাদুঘরের ভূমিকা প্রচারের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

সামগ্রিকভাবে, জাদুঘর দিবস হল জাদুঘরের বিশ্ব উদযাপন করার এবং সমাজে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি দিন।

জাদুঘর আমাদের বিভিন্ন সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক বিস্ময় সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে। তারা প্রতিফলন এবং সৃজনশীলতার জন্য স্থান প্রদান করে। আসুন ইতিহাস, তাৎপর্য, থিম এবং আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২০২৫ উদযাপনের উপায় সম্পর্কে আরও জানি।

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২০২৫ : থিম-

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২০২৫ এর থিম হল “দ্রুত পরিবর্তনশীল সম্প্রদায়গুলিতে জাদুঘরের ভবিষ্যৎ” (Museums in rapidly changing communities: the future of the past)। এই থিমটি জাদুঘরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, যেমন সাংস্কৃতিক বিনিময়, উদ্ভাবন এবং সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষা করার বিষয়গুলো তুলে ধরে।

আরও বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, জাদুঘরগুলি দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজে কীভাবে প্রাসঙ্গিক থাকতে পারে এবং ভবিষ্যতের জন্য কিভাবে প্রস্তুত থাকতে পারে, সেই বিষয়গুলি নিয়ে এই থিম আলোচনা করে।

এই দিবসটি প্রতি বছর ১৮ মে বা তার কাছাকাছি পালন করা হয়, যা আন্তর্জাতিক জাদুঘর পরিষদ (ICOM)-এর একটি আন্তর্জাতিক দিবস। প্রতি বছর এই দিবসে একটি নির্দিষ্ট থিম থাকে যা জাদুঘরগুলির জন্য প্রাসঙ্গিক।

 

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২০২৫ : তাৎপর্য-

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্য হল জাদুঘরগুলি কীভাবে সমাজে অবদান রাখে সে সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়, বৈচিত্র্য এবং অন্তর্ভুক্তি প্রচার করা। জাদুঘরগুলি মানুষকে একত্রিত করতে এবং উদযাপনের জন্য একটি থিমের সাথে তাদের আবদ্ধ করতে একটি অবিচ্ছেদ্য ভূমিকা পালন করে। প্রতি বছরের আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবসের থিম একটি বার্তা বহন করে যা একটি নির্দিষ্ট বিষয় এলাকার গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।
জাদুঘর হল এমন জায়গা যেখানে লোকেরা বিভিন্ন সংস্কৃতি , ইতিহাস এবং প্রাকৃতিক বিস্ময় সম্পর্কে জানতে পারে । তারা প্রতিফলন এবং সৃজনশীলতার জন্য স্থান প্রদান করে। আমরা কেন জাদুঘর দিবস উদযাপন করি তার একটি প্রধান কারণ হল সমাজ গঠনে যাদুঘরের মূল্যকে উপলব্ধি করা। জাদুঘরগুলি আমাদের চারপাশের জগতকে বুঝতে এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অন্যান্য মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।
তারা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাদুঘরগুলি বিভিন্ন সংস্কৃতির লোকেদের মধ্যে ঐক্য ও বোঝাপড়ার প্রচারের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ স্থান। জাদুঘরগুলি জ্ঞান ভাগ করে নেওয়া এবং বিশ্বের একটি সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারের জন্য নিবেদিত।
যাদুঘরগুলি পরিবেশ রক্ষা এবং টেকসই অনুশীলনের প্রচারের জন্য নিবেদিত। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণেও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কিভাবে আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২০২৫ উদযাপন করবেন–

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদযাপনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল একটি জাদুঘর পরিদর্শন করা। একা বা বন্ধু বা পরিবারের সাথে কাছাকাছি একটি জাদুঘরে যান। আপনার আগ্রহের একটি যাদুঘর দেখার জন্য আপনি একটি ভিন্ন শহরে ভ্রমণের মাধ্যমে দিনটিকে স্মরণ করতে পারেন।
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদযাপনের আরেকটি উপায় হল আপনার স্থানীয় যাদুঘরে একটি সংগ্রহ, শিল্পের অংশ, উত্তরাধিকার বা অর্থ দান করা। এটি আপনার স্থানীয় জাদুঘরকে সমর্থন করার এবং ভবিষ্যত প্রজন্মেররাও এটি উপভোগ করতে সক্ষম হবে তা নিশ্চিত করার একটি দুর্দান্ত উপায়।
আপনার যদি আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস উদযাপনের অন্য কোন পরিকল্পনা থাকে, যেমন একটি ইভেন্ট বা কর্মশালায় যোগদান করা, তবে আজ একটি জাদুঘর পরিদর্শন করা এবং একটি পার্থক্য করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পরিদর্শন জাদুঘরের গুরুত্ব এবং সমাজে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে আপনার মন পরিবর্তন করতে পারে।

আন্তর্জাতিক যাদুঘর দিবস : ইতিহাস-

আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭৭ সালে রাশিয়ার মস্কোতে ICOM সাধারণ পরিষদে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবসের ধারণাটি ১৯৫১ সালে মস্কোতে জাদুঘরের জন্য ক্রুসেডের বৈঠকের সময় প্রথম রূপরেখা দেওয়া হয়েছিল। মিটিং, যা যাদুঘর এবং শিক্ষার থিমের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যাদুঘর অ্যাক্সেসযোগ্যতার জন্য একটি কাঠামোর উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করে।
১৯৭৭ সালে, কাঠামোটি ICOM সাধারণ পরিষদ দ্বারা গৃহীত হয়েছিল এবং ১৯৭৯ সালে, ইভেন্টের প্রথম অফিসিয়াল পোস্টার চালু করা হয়েছিল। “সাংস্কৃতিক পণ্যে অবৈধ ট্রাফিকের বিরুদ্ধে লড়াই” শিরোনামের পোস্টারটি 28 টি দেশ দ্বারা অভিযোজিত হয়েছে।
২০১১ সালে, ICOM আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবসের জন্য একটি ওয়েবসাইট এবং যোগাযোগ কিট তৈরি করেছে। এই উদ্যোগটি প্রথমবারের মতো চিহ্নিত করেছে যে ICOM ইউরোপীয়ান নাইট অফ মিউজিয়ামের পৃষ্ঠপোষক ছিল। ইভেন্টটি, যা প্রতি বছর ১৮ মে অনুষ্ঠিত হয়, যাদুঘরের কার্যকলাপে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং যাদুঘর সংস্কৃতি সম্পর্কে জনসাধারণের সচেতনতা উদযাপন করে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভগবান যখন ভক্তের সেবা করলো তখন কি হলো – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।।

শ্রীকৃষ্ণদাস সোণার নামক এক কৃষ্ণভক্ত ছিলেন । তিনি অত্যন্ত সেবাপরায়ণ ছিলেন। সারা দিনের সমস্ত কর্ম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে নিবেদিত ছিল তাঁর। সকল কাজের মধ্যেই তিনি এমন মনোভাব রাখতেন যে, এই কর্ম তো শ্রীকৃষ্ণের জন্য করা ! এ কাজ করলে আমার শ্রীকৃষ্ণের এ জাতীয় সেবা হবে। আর তাতে আমার প্রাণগোবিন্দ অত্যন্ত প্রীত হবেন, সুখী হবেন ।– ঠিক যেমন ব্রজগোপিনীদের কথা আমরা জানি , তেমন ।

একটা উদাহরণ দেই। যেমন, -গোপিনীরা নিজেদেরকে খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে রাখতেন সবসময়। তাঁরা ভাবতেন আমি যদি সুন্দর করে সেজে থাকি আর আমাকে সুন্দর লাগে দেখতে তবে শ্রীকৃষ্ণ আমায় দেখে খুব আনন্দ পাবেন। অর্থাৎ নিজেদের আনন্দের জন্য নয়। বা নিজে সুন্দরী হব এই ভাব তাদের থাকতোই না । বরং শ্রীকৃষ্ণকে সুখ দেবার জন্য ব্রজগোপিনীরা পরিপাটী করে সেজে থাকতেন। তাঁদের প্রতিটি কাজেই এ জাতীয় বোধ কাজ করতো । আবার যেমন বলা যায়, রামায়ণের সেই বৃদ্ধা শবরী মায়ের কথা । দক্ষিণ ভারতের সেই বৃদ্ধাকে তাঁর গুরুদেব মাতঙ্গ বলেছিলেন , একদিন ভগবান শ্রীরামচন্দ্র রূপে তোমার কাছে সাক্ষাৎ দর্শন দিতে তোমার কুটীরে আসবেন। শবরী এতটাই ভালোবাসতেন রামচন্দ্রকে যে, রামচন্দ্র যাতে কুল খেয়ে আনন্দ পান তাই তিনি বনের কুলগাছ থেকে রামচন্দ্রের জন্য সংগ্রহ করা প্রতিটি কুল নিজে আগে একটু খেয়ে দেখতেন । মিষ্টি হলে তবেই তা তাঁর প্রভু রামচন্দ্রের সেবার জন্য রাখতেন। এভাবে তিনি বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষা করেছেন রামচন্দ্রের আগমনের জন্য । গুরুর কথা সত্য হয়েছিল । বাস্তবিক একদিন রামচন্দ্র হাজির হয়েছিলেন বনের মধ্যে বৃদ্ধা শবরী মায়ের কুটীরে । অতএব , নিজে খেয়ে দেখব বলে বা নিজের জিহ্বাকে আস্বাদন-আনন্দ দিতে , শবরী মে কুলগুলো খেয়ে রাখতেন তা নয় । রামচন্দ্রকে আনন্দ দেবেন বলে বাছাই করে কুল নিজে খেয়ে আগে দেখে নিতেন। কৃষ্ণদাস সোণারও এমনই ছিলেন । তিনি যে অর্থ উপার্জন করতেন , ভাবতেন তা সব গোবিন্দের। আমার তো কিছু নয় । অর্থ দ্বারা গোবিন্দের সেবা করবো। এ সংসার তো তাঁর । এভাবে গঙ্গার স্রোত যেমন অবিচ্ছিন্নভাবে নিরবধি বয়ে যায় তেমন করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কৃষ্ণদাস প্রতিটি কাজ কৃষ্ণকে স্মরণ করে , কৃষ্ণের প্রীত্যর্থে করতেন।
একদিনের ঘটনা । কৃষ্ণদাস ভাবে বিভোর হয়ে মুখে গীত গাইছেন আর নৃত্য করছেন তাঁর ইষ্ট কৃষ্ণবিগ্রহের সামনে। মনের ভাবখানা এমন যে– আমার নৃত্য দেখে, সংগীত শুনে আমার প্রাণনাথ, প্রাণারাম শ্রীশ্যামসুন্দর অত্যন্ত আনন্দ পাচ্ছেন তো ! আর তাই আরও দরদ ভরে গীত গাইছেন , আরও সুন্দর করে নৃত্যটি করার চেষ্টা করছেন তিনি ।‌ এমন সময় হলো কি চরণের নূপুরখানি খুলে পড়ে গেল তালঠোকার সময় ভুমিতে। কৃষ্ণদাস ভাবলেন , “ইস্ , নৃত্যরসের ব্যাঘাত ঘটলো !” অর্থাৎ, যেভাবে নৃত্যটি হচ্ছিল সেই পর্যায় থেকে চ্যূত হল নৃত্যটি। আর তাই তিনি নৃত্যের বিরাম দিয়ে তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে পড়লেন পুনরায় নূপুরটি চরণে পড়ে নেবেন বলে । হঠাৎ এক বালক বলে বসলো, “দাঁড়াও , দাঁড়াও। তোমায় কষ্ট করতে হবে না। আমি পড়িয়ে দিচ্ছি। তুমি যে ভঙ্গীমায় ছিলে সেই ভঙ্গীমাতেই স্থির হয়ে দাঁড়াও।” বলতে বলতেই অপূর্ব দর্শন বালকটি নূপুরটি চোখের নিমেষে কুড়িয়ে নিয়ে কৃষ্ণদাসের চরণে পড়িয়ে দিল। বালকের তৎপরতা দেখে কৃষ্ণদাসের ভারী ভালো লাগলো ; বলে বসলেন, “কে গো বাছা ? কে তুমি? নাম কি তোমার ? দেখিনি তো আগে । এখানে কোথায় থাকো?” কিন্তু জিজ্ঞাসাই সার হলো। প্রশ্ন শেষ হতে না হতেই বালকটি চোখের নিমেষে উধাও হয়ে গেল। মিলিয়ে গেল জলছবির বা মরীচিকার মতন বাতাসে। বালক নেই , অথচ চরণে নূপুর তো রয়ে গেছে। অর্থাৎ এ তো চোখের বা মনের ভ্রম নয় । বালকটি যে সত্যই এসেছিল তার প্রমাণ খুলে যাওয়া , ছিটকে পড়া নূপুরের পুনরায় চরণে উঠে আসা। তবে কে সে বালক ? কে প্রভু ? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে শ্রীকৃষ্ণ বিগ্রহের দিকে তাকাতেই যেন সব উত্তর ঠোঁটে নিয়ে হাসির মধ্য দিয়ে জানিয়ে দিলেন শ্রীকৃষ্ণ- তিনিই তো সে-ই । কৃষ্ণদাস যখন বুঝলেন বালকবেশে এসে আসলে শ্রীকৃষ্ণই তাঁকে চরণের নূপুরটি পরিয়ে দিয়ে গেছেন, তখন চোখের জল যেন আর তাঁর বাঁধ মানে না । বক্ষ ভেসে গেল আনন্দে আবেগে। “আমার জীবন ধন্য আজ তোমার দর্শন পেয়ে প্রভু । আমি ধন্য সত্যই। আমি এ আনন্দ কাকে বোঝাবো !”- এসব বলে কৃষ্ণদাস আবেগে আপ্লুত হচ্ছেন।
কিন্তু পরক্ষণেই কৃষ্ণদাস সোণারের বড় রাগ হলো শ্রীকৃষ্ণের উপর। “এলে তো এলে, শেষে আমার পায়ে হাত দিলে ! ছিঃ, ছিঃ। ধিক্ আমায় ! কেন তুমি আমার পায়ে হাত দিতে গেলে বলতো, প্রভু ? কে বলেছিল, তোমায় নূপুরটা পরিয়ে দিতে ? আমি কি নূপুরটা নিজে নিয়ে পড়তে পারতাম না ! আমার পায়ে হাত দিয়ে এভাবে আমাকে অপরাধী করলে ! দোষী বানালে ! এখন তো আমার ইচ্ছে করছে এই পা-টাকেই কেটে বাদ দিয়ে দেই।……..” -এভাবে কত না অনুযোগ করলেন সাধু কৃষ্ণদাস স্নেহাবেশে তাঁর শ্রীকৃষ্ণকে । কত না প্রণয়কলহ চললো। কত না ধিক্কার দিলেন । “ভৃত্যের চরণে নুপুর পড়াতে গেলে প্রভু হয়ে ? ছিঃ, ছিঃ ! তোমার কি লজ্জাও করলো না একবারের জন্য !……” ইত্যাদি , ইত্যাদি বলেই চলেছেন কৃষ্ণদাস।
আজ শ্রীকৃষ্ণ সত্যিই বড় আনন্দ পেয়েছেন। একে তো নিজের প্রিয় ভক্তের চরণে নূপুর পরিয়ে দিয়ে সেবা করেছেন ভক্তের। আর তার উপর রোজ আদর খান, আজ এত তিরস্কার পাচ্ছেন সেই ভক্তের থেকে ‌ । ভক্তের প্রণয়ভরা তিরস্কার যে তাঁর কাছে বেদ-স্তুতি মন্ত্রের চেয়েও অনেক বেশি প্রিয় ! অনেক বেশি আনন্দদায়ক ! তাঁর ঠোঁটের কোণের হাসি তাই থামছেই না যেন আজ….।

–ভক্তকৃপাভিখারিণী
রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৮ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ১৮ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক) আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস।

আজ যাদের জন্মদিন—- .

১৮৭৬ – হারমান মুলার, জার্মান সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ ও ১২ তম চ্যান্সেলর।

১৮৮৩ – ওয়াল্টার গ্রপিউস, জার্মান বংশোদ্ভূত আমেরিকান স্থপতি ও জন এফ কেনেডি ফেডারেল ভবন পরিকল্পাকারী।
১৮৯১ – রুডলফ কারনাপ, জার্মান-আমেরিকান দার্শনিক।

১৮৯৭ – ফ্রাঙ্ক ক্যাপ্রা, ইতালীয় আমেরিকান চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক এবং লেখক।
১৯০১ – ভিঞ্চেন্ত দু ভিগ্নেয়াউদ, মার্কিন প্রাণরসায়নবিদ।

১৯০৫ – হেডলি ভেরিটি, পেশাদার ইংরেজ ক্রিকেটার।
১৯১৩ – চার্লস ট্রেনেট, ফরাসি গায়ক ও গীতিকার।

১৯৩৩ – এইচ. ডি. দেব গৌড়া, ভারতীয় রাজনীতিবিদ।
১৯৩৬ – এস এম আহমেদ হুমায়ুন, বাঙালি লেখক ও সাংবাদিক।
১৯৩৭ – জ্যাক স্যানটার, লুক্সেমবার্গ আইনজ্ঞ, রাজনীতিবিদ ও ২২ তম প্রধানমন্ত্রী।
১৯৩৮ – রবীন্দ্রজীবনকার প্রশান্তকুমার পাল।

১৯৪২ – নবি স্টিলেস, সাবেক ইংরেজ ফুটবল খেলোয়াড়।
১৯৪৪ – ডব্লিউ. জি. সেবাল্ড, জার্মান লেখক ও শিক্ষাবিদ।
১৯৫৫ – চও ইউন-ফাট, হংকং অভিনেতা।
১৯৬০ – ইয়ানিক নোয়া, সাবেক ফরাসি টেনিস খেলোয়াড় ও গায়ক।
১৯৭০ – টিনার ফেয়, আমেরিকান অভিনেত্রী, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার।
১৯৭৫ – জ্যাক জনসন, আমেরিকান গায়ক, গীতিকার ও গিটার।
১৯৭৮ – রিকার্ডো কারভালহো, পর্তুগিজ ফুটবলার।
১৯৮৬ – কেভিন অ্যান্ডারসন, দক্ষিণ আফ্রিকার টেনিস খেলোয়াড়।
১৯৯০ – ইয়ুইয়া ওসাকো, জাপানি ফুটবলার।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৭৯৮ – লর্ড ওয়েলেসলি গভর্নর জেনারেল হয়ে কলকাতায় আসেন।
১৮০৪ – ফ্রান্সের সংসদ সিনেটে এক আইন পাশের মধ্য দিয়ে নেপোলিয়ান বেনাপার্ট সেদেশের সম্রাট হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন।
১৮৩০ – ফ্রান্স আলজেরিয়া দখলের জন্য ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে।
১৮৬০ – আব্রাহাম লিংকন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
১৮৯৯ – হেগে শান্তি সম্মেলনে ২৬টি দেশ আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে বিবাদ মীমাংসায় সম্মত হয়।
১৯৪৩ – জাতিসংঘ ত্রাণ ও পুনর্বাসন এজেন্সি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৪৫ – ইউরোপে আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
১৯৭২ – বাংলা একাডেমী অর্ডার ১৯৭২ জারি করা হয়।
১৯৭৪ – রাজস্থানের পোখরানে ভারতের প্রথম পরমাণু পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরমাণু বিস্ফোরণটিকে স্মাইলিং বুদ্ধ সাংকেতিক নামে অভিহিত করা হয়।
১৯৭৬ – ভারত প্রথম পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায়।
১৯৮০ – চীন আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের সকল পরীক্ষা সম্পন্ন করে।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৮৮৬ – অক্ষয়কুমার দত্ত, বাংলা সাহিত্যের প্রবন্ধকার ও সাংবাদিক।
১৯০৯ – ইসহাক আলবেনিজ, স্প্যানিশ পিয়ানোবাদক ও সুরকার।

১৯২২ – শার্ল লুই আলফোঁস লাভরঁ, ফরাসি চিকিৎসক।

১৯৩৪ – চারণ কবি মুকুন্দ দাস, স্বদেশী ও অসহযোগ আন্দোলনের সময় বহু স্বদেশী বিপ্লবাত্মক গান ও নাটক রচনা করে খ্যাতি অর্জন করেন।

১৯৪৩ – নীলরতন সরকার, প্রখ্যাত বাঙালি চিকিৎসক ও শিক্ষাবিদ।

১৯৫৬ – মরিস টেট, ইংল্যান্ডের বিখ্যাত আন্তর্জাতিক তারকা ছিলেন।

১৯৮১ – আর্থার ওকনেল, আমেরিকান অভিনেতা।

১৯৮৪ – নলিনীকান্ত সরকার, বাঙালি সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কবি, গায়ক, সাহিত্যবোদ্ধা ও ছন্দশ্রী।

১৯৯৯ – জপমালা ঘোষ, বাংলা ছড়ার গানের জনপ্রিয় গায়িকা।
২০০১ – ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড, অস্ট্রেলীয় নাগরিক, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত একমাত্র বিদেশী মুক্তিযোদ্ধা।
২০০৭ – পিয়ের-জিল দ্য জেন, ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী।
২০০৯ – ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ, শ্রীলঙ্কার বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল দল লিবারেশন টাইগার্স অফ তামিল ইলম এর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক নেতা।
২০১৫ – হাল্ডোর আসগ্রিমসন, আইসল্যান্ডীয় একাউন্টেন্ট, রাজনীতিবিদ ও ২২ তম প্রধানমন্ত্রী।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
রিভিউ

দার্জিলিং ভ্রমণ : একটি বিশেষ পর্যালোচনা।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি ছোট শহর দার্জিলিং একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র যা তার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের জন্য পরিচিত। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত, দার্জিলিং নগর জীবনের বিশৃঙ্খলা থেকে শান্ত অবসরের জন্য ভ্রমণকারীদের জন্য একটি স্বর্গ। এই নিবন্ধে, আমরা দার্জিলিং ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জনের সেরা উপায়গুলি অন্বেষণ করব, যার মধ্যে রয়েছে এর শীর্ষ আকর্ষণ, কার্যকলাপ এবং একটি স্মরণীয় ভ্রমণ পরিকল্পনা করার টিপস।

দার্জিলিং যাওয়া
দার্জিলিং বিমান, রেল এবং সড়ক পথে সহজেই পৌঁছানো যায়। নিকটতম বিমানবন্দর হল বাগডোগরা বিমানবন্দর, যা দার্জিলিং থেকে প্রায় 68 কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হল নিউ জলপাইগুড়ি রেলওয়ে স্টেশন, যা ভারতের প্রধান শহরগুলির সাথে সুসংযুক্ত। এনজেপি থেকে, আপনি দার্জিলিং পৌঁছানোর জন্য একটি ট্যাক্সি ভাড়া করতে পারেন অথবা একটি শেয়ার্ড জিপে যেতে পারেন।

দার্জিলিং-এর শীর্ষ আকর্ষণ
দার্জিলিং প্রাকৃতিক বিস্ময়, সাংস্কৃতিক ল্যান্ডমার্ক এবং ঔপনিবেশিক যুগের স্থাপত্যের ভান্ডার। দার্জিলিংয়ের কিছু শীর্ষ আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে:

– *টাইগার হিল*: সূর্যোদয়ের দৃশ্যের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান, টাইগার হিল কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপস্থাপন করে।

– *দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে*: ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে হল একটি ন্যারো-গেজ রেলওয়ে যা নিউ জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত চলে।

– *দার্জিলিং রোপওয়ে*: একটি কেবল কার যা আশেপাশের পাহাড় এবং উপত্যকার অত্যাশ্চর্য দৃশ্য উপস্থাপন করে।

– *পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুওলজিক্যাল পার্ক*: একটি চিড়িয়াখানা যেখানে তুষার চিতা এবং লাল পান্ডা সহ বেশ কয়েকটি বিপন্ন প্রজাতির আবাসস্থল রয়েছে।

– *হিমালয় পর্বতারোহণ ইনস্টিটিউট*: একটি জাদুঘর যা হিমালয়ে পর্বতারোহণের ইতিহাস প্রদর্শন করে।

দার্জিলিংয়ের উপভোগ্য ক্রিয়াকলাপ
দার্জিলিং অ্যাডভেঞ্চার উত্সাহী এবং প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্রিয়াকলাপ অফার করে। দার্জিলিংয়ের কিছু শীর্ষস্থানীয় জিনিসের মধ্যে রয়েছে:

– *ট্রেকিং*: দার্জিলিং বেশ কয়েকটি ট্রেকিং ট্রেল অফার করে যা আশেপাশের পাহাড় এবং উপত্যকার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপস্থাপন করে।

– *চা বাগান পরিদর্শন*: দার্জিলিং তার চায়ের জন্য বিখ্যাত, এবং চা বাগান পরিদর্শন চা তৈরির প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানার একটি দুর্দান্ত উপায়।
– *দার্জিলিং হিমালয়ান রেলপথে চড়া*: দার্জিলিং ভ্রমণকারী যেকোনো পর্যটকের জন্য অবশ্যই একটি অভিজ্ঞতা, দার্জিলিং হিমালয়ান রেলপথ আশেপাশের পাহাড় এবং উপত্যকার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য অফার করে।
– *কেনাকাটা*: স্থানীয় হস্তশিল্প, চা এবং স্যুভেনির কেনাকাটার জন্য দার্জিলিং একটি দুর্দান্ত জায়গা।

দার্জিলিংয়ে একটি স্মরণীয় ভ্রমণ পরিকল্পনা করার টিপস
দার্জিলিংয়ে একটি স্মরণীয় ভ্রমণ পরিকল্পনা করার জন্য এখানে কিছু টিপস দেওয়া হল:

– *আগামী পরিকল্পনা*: দার্জিলিং একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, এবং ভিড় এড়াতে আগে থেকেই পরিকল্পনা করা অপরিহার্য।
– *গরম পোশাক প্যাক করুন*: দার্জিলিং বেশ ঠান্ডা হতে পারে, বিশেষ করে সকাল এবং সন্ধ্যায়, তাই গরম পোশাক প্যাক করা অপরিহার্য।
– *স্থানীয় খাবার চেষ্টা করুন*: দার্জিলিং তিব্বতি, নেপালি এবং ভারতীয় খাবার সহ বিভিন্ন ধরণের স্থানীয় খাবার সরবরাহ করে।

– *স্থানীয় সংস্কৃতিকে সম্মান করুন*: দার্জিলিং একটি সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ শহর, এবং স্থানীয় রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যকে সম্মান করা অপরিহার্য।

দার্জিলিং ভ্রমণের সেরা সময়
দার্জিলিং ভ্রমণের সেরা সময় আপনার পছন্দের উপর নির্ভর করে। আপনি যদি শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান, তাহলে বসন্ত (মার্চ থেকে মে) এবং শরৎ (সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর) হল সেরা ঋতু। আপনি যদি শীতকালীন আশ্চর্যজনক অভিজ্ঞতা খুঁজছেন, তাহলে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি হল ভ্রমণের সেরা সময়।

দার্জিলিংয়ে থাকার ব্যবস্থা
দার্জিলিংয়ে থাকার ব্যবস্থার বিভিন্ন বিকল্প রয়েছে, বাজেট-বান্ধব গেস্টহাউস থেকে শুরু করে বিলাসবহুল হোটেল পর্যন্ত। দার্জিলিং-এর কিছু শীর্ষ হোটেলের মধ্যে রয়েছে:

– *এলগিন মাউন্ট পান্ডিম*: একটি বিলাসবহুল হোটেল যা আশেপাশের পাহাড়ের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখায়।

*দার্জিলিং শেরপা চ্যাসাল*: একটি বাজেট-বান্ধব হোটেল যা আরামদায়ক কক্ষ এবং অত্যাশ্চর্য দৃশ্য প্রদান করে।

*দ্য গ্লেনারি’স*: একটি জনপ্রিয় হোটেল যা আরামদায়ক কক্ষ এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে।

উপসংহার
দার্জিলিং ভ্রমণ হল পাহাড়ের রাণীর উদ্দেশ্যে ভ্রমণ, যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ঔপনিবেশিক স্থাপত্য একত্রিত হয়ে এক অনন্য এবং অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা তৈরি করে। এর অত্যাশ্চর্য দৃশ্য, বিভিন্ন ধরণের কার্যকলাপ এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণে, দার্জিলিং যেকোনো ভ্রমণকারীর জন্য অবশ্যই ভ্রমণের একটি গন্তব্য। আগে থেকে পরিকল্পনা করে, উষ্ণ পোশাক প্যাক করে, স্থানীয় খাবার চেষ্টা করে এবং স্থানীয় সংস্কৃতিকে সম্মান করে, আপনি দার্জিলিং ভ্রমণের সর্বাধিক সুবিধা নিতে পারেন এবং এমন স্মৃতি তৈরি করতে পারেন যা আজীবন স্থায়ী হবে।

দার্জিলিং ভ্রমণ নির্দেশিকা
দার্জিলিং ভ্রমণের সর্বাধিক উপভোগ করতে, এখানে একটি প্রস্তাবিত ভ্রমণপথ রয়েছে:

– *দিন ১*: দার্জিলিং পৌঁছান এবং আপনার হোটেলে চেক-ইন করুন। শহর এবং এর আশেপাশের এলাকা ঘুরে দেখার জন্য দিনটি কাটান।

– *দিন ২*: সূর্যোদয় দেখার জন্য টাইগার হিল পরিদর্শন করুন, এবং তারপর ঘুরে দেখুন

Share This
Categories
প্রবন্ধ

আজ বিশ্ব তথ্য সমাজ দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং গুরুত্ব।।।।

প্রতি বছর 17 মে বিশ্বব্যাপী বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস উদযাপন করা হয়। এই বিশেষ দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় তথ্য সোসাইটির বিশ্ব শীর্ষ সম্মেলনের সময় যে দৃষ্টিভঙ্গি সেট করা হয়েছিল। লক্ষ্য হল এমন একটি সমাজ তৈরি করা যা মানুষের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং মৌলিক মানবাধিকারের উপর ভিত্তি করে উন্নয়নের লক্ষ্য রাখে।

তথ্যের শক্তি–

বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবসের উদ্দেশ্য হল কীভাবে তথ্য ও যোগাযোগ সমাজকে পরিবর্তন করতে পারে সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। ধারণাটি হল ব্যক্তিদের তাদের পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছানোর জন্য তথ্য এবং জ্ঞান তৈরি, অ্যাক্সেস, ব্যবহার এবং ভাগ করে নিতে সহায়তা করা। ইউনেস্কোর মতো সংস্থাগুলি এই দিনের লক্ষ্যগুলিকে সমর্থন করে এমন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে সক্রিয়ভাবে লোকেদের উত্সাহিত করে।

জনসাধারণকে জড়িত করা–

কিছু ছুটির দিন থেকে ভিন্ন, বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস একটি ছুটির দিন নয়। যাইহোক, আমাদের সংযুক্ত বিশ্বে তথ্য এবং যোগাযোগের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য বিশ্বজুড়ে লোকেরা বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপে অংশগ্রহণ করে।

বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস 2025 থিম-

২০২৫ সালের বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় আগ্রহের বিষয়, তবে প্রতিবেদন করা বিষয়বস্তুতে কিছু ভিন্নতা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। বিভিন্ন উৎস থেকে উল্লেখিত বিষয়বস্তু এখানে দেওয়া হল :
– *”টেকসই উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবন”*: এই বিষয়টি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর জোর দেয়।
– *”ডিজিটাল রূপান্তরে লিঙ্গ সমতা”*: এই বিষয়টি ডিজিটাল লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ এবং ডিজিটাল যুগে নারী ও মেয়েদের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।
– – *”ভাগীকৃত সমৃদ্ধির জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবন”*: এই বিষয়টি সকলকে সংযুক্ত করতে এবং সকলের জন্য টেকসই সমৃদ্ধি আনতে ডিজিটাল উদ্ভাবনের ভূমিকা তুলে ধরে।

উল্লেখ্য যে, বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস ১৭ মে পালিত হয়, ১৮৬৫ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক টেলিগ্রাফ কনভেনশন স্বাক্ষর এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (ITU) প্রতিষ্ঠার স্মরণে। যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তথ্য সমাজের বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন প্রচারের জন্য ITU এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ।

বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবসের ইতিহাস-

এই দিনের উৎপত্তি এই দিবসে ফিরে যায়, যা 1865 সালের 17 মে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) এর প্রতিষ্ঠাকে চিহ্নিত করেছিল। 2006 সালে, জাতিসংঘ 17 মেকে এই দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছিল। প্রথম উদযাপন 17 মে, 2006-এ হয়েছিল, বিশ্বব্যাপী মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপনে ITU-এর ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে।
মূলত, বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস, 1969 সালে শুরু হয়, বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের চ্যালেঞ্জগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। প্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে, জাতিসংঘ উদযাপনটিকে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সোসাইটি দিবসে প্রসারিত করেছে। উদ্দেশ্য হ’ল ইন্টারনেট এবং অন্যান্য প্রযুক্তি কীভাবে সমাজ এবং অর্থনীতিকে উপকৃত করতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণভাবে, ডিজিটাল বিভাজনের সেতুবন্ধন করতে পারে সে সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবসের তাৎপর্য–

যদিও টেলিযোগাযোগ দিবসের জন্য নির্দিষ্ট কোনো প্রতীক নেই, তবুও এই দিনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা দেখানোর জন্য ইউনেস্কো আধুনিক প্রযুক্তির ছবি ব্যবহার করে। এই চিহ্নগুলি দৃশ্যত আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমাদের বিশ্ব গঠনে তথ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

17 মে 2025 বিশেষ দিন–

17 মে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, জন-কেন্দ্রিক তথ্য সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পিছনে বিশ্বব্যাপী একত্রিত হওয়ার একটি অর্থবহ সুযোগের প্রতিনিধিত্ব করে। এই সংযোগ-কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানের প্রতীকী সময় ডিজিটাল ইক্যুইটির দিকে অগ্রাধিকার পুনরুদ্ধার করার নিখুঁত সুযোগ উপস্থাপন করে, একটি মানবাধিকার হিসাবে অ্যাক্সেসের জন্য গভীর উপলব্ধি বৃদ্ধি করে এবং একটি ন্যায্য ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদ প্রকাশ করে। ইনফরমেশন সোসাইটির বিশ্ব শীর্ষ সম্মেলন যেমন সার্বজনীন অধিকারের উপর ভিত্তি করে উন্নয়নের জন্য উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্য নির্ধারণ করে, বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস সম্মিলিত আশাকে পুনর্নবীকরণ করে এবং এমন একটি সমাজ তৈরি করার আমাদের ভাগ করা ক্ষমতার প্রতি বিশ্বাসকে পুনরুজ্জীবিত করে যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না। এই বিশেষ দিনে একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে, আমরা সংহতির চেতনা জাগিয়ে তুলতে পারি যা প্রযুক্তির সম্ভাবনায় ভরপুর একটি ভবিষ্যতের সূচনা করে যা সকল মানুষকে ক্ষমতায়ন এবং সংযুক্ত করতে পারে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বাংলার বীর-সন্তান উল্লাসকর দত্ত :: করবী বাগচী।।।।।

ইংরেজ অধিকৃত দেশমাতাকে পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্ত করার মানসে সাধারণের চেতনা যখন নানাভাবে পথের অনুসন্ধান করছে , তাদের শক্তিকে কাজে লাগাতে ,সঠিক পথ দেখাতে , গড়ে উঠে যুগান্তর ও অনুশীলন সমিতি নামে দুটি প্রতিষ্ঠান । দুটি সমিতিই ছিল গোপন দুটি বিপ্লবী গোষ্ঠীর আড্ডা-স্থল । এই সমিতিগলো সাধারণ কুস্তীর আখড়ার আড়ালে নিজেদের গোপন কাজ করতো ।

যুগান্তরের কিছু সদস্য ধৃত হয়ে ফাঁসিতে প্রাণ দিয়েছিল আর কিছু সদস্য যাবজ্জীবন দণ্ডিত হয়ে আন্দামানের সেলুলার জেলে প্রেরিত হয়েছিলেন ।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সেলুলার জেলের অনেক রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হলে তাঁরা আবার নতুন করে তাঁদের রাজনৈতিক জীবন শুরু করার সুযোগ পান । তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন উল্লাসকর দত্ত । উল্লাসকর দত্তের লেখা ‘আমার কারাজীবনী’ গ্রন্থের সম্পাদক নরেন্দ্র্চন্দ্র দত্ত লিখেছেন ‘চেনা বামুনের পৈতার দরকার নাই’ । উল্লাসকরের পরিচয় অনাবশ্যক । আলীপুরের বোমার মামলার ফাঁসির দায় মাথায় লইয়া যে উল্লাসকর স্বীয় স্বভাবসুলভ সরলতা , অনাবিল হাস্যকৌতুক ও মর্মস্পর্শী রাগ-রাগিনীতে ফৌজদারী আদালতের কঠোরতা ও নির্মমতা সাময়িকভাবে বিদূরিত করিয়াছিল, যে উল্লাসকরের নির্ভীকতা ও সত্যবাদিতা সাধারণের প্রাণে এক অনির্বচনীয় উচ্চনৈতিক ভাবের সঞ্চার করিয়াছিল এবং যে উল্লাসকরের অকৃত্রিম স্বদেশপ্রেম এই প্রাণহীন দেশেও এক অভিনব ভাবের বন্যা প্রবাহিত করিয়াছিল, সেই উল্লাসকর আজ তাহার কারা-জীবনী লইয়া পাঠকবর্গের সমক্ষে উপস্থিত’।
উল্লাসকরের জন্ম বর্তমানের বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কালিকাছায় হয়েছিল । তাঁর পিতা দ্বিজদাস দত্তগুপ্ত ব্রাহ্মসমাজের সদস্য ছিলেন । ১৯০৩সালে এন্ট্রান্স পাশ করে তিনি কলিকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন । সেই সময় ভারতের ইংরেজরা ভারতীয়দের অবজ্ঞা করতো এবং ভারতীয়দের সম্পর্কে ঘৃণ্য মন্তব্য করতে দ্বিধা করতোনা কারণ ইংরেজ শাসনে কোনপ্রকার শাস্তির ভয় তাদের ছিলনা । কিন্ত্ত প্রেসিডেন্সি কলেজের একজন ইংরেজ শিক্ষক প্রোফেসার রাসেল বাঙালিদের সম্বন্ধ অশিষ্ট উক্তি করলে উল্লাসকর তাকে শারিরিক আঘাত করেন আর সেই কারণে তাকে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয় ।
এই ঘটনা সম্বন্ধে উল্লাসকর তাঁর লিখিত ‘আমার কারাজীবন’ বইটিতে লিখেছেন ‘ইতিমধ্যে Bengal partition লইয়া সমগ্র বঙ্গদেশব্যাপী তুমুল আন্দোলন উপস্থিত । আমাদেরও অন্তরাত্মা যেন এইসময়ে স্বদেশ-প্রেমের এক অপূর্ব আস্বাদন লাভ করিয়া দিন দিন আপন অকিঞ্চিৎকরতার নগণ্যতা ভুলিয়া গিয়া , জীবনের সর্বাঙ্গীন সার্থকতা লাভের জন্য একটি বিশেষ লক্ষের দিকে অগ্রসর হইতে চাহিল ।ইতিমধ্যে কলিকাতা university report এ Prof.Russel কলিকাতা ছাত্রবৃন্দের প্রতি এক কুৎসিত দোষারোপ করায় তাহার বিরুদ্ধে কয়েকটি সভা আহুত হয় এবং সকলেই তথায় Russel সাহেবকে যথেষ্ট ভর্ৎসনা করেন । আমি ও তখন একবার এফ.এ.পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হইয়া দ্বিতীয়বার Presidency College এ পড়িতেছি । ঐসকল আলোচনা গবেষণার পর এমন একটি ব্যাপার ঘটল যার জন্য আমাকে আর Presidency Collegeএ পড়িতে হইলনা, একেবারে সোজা চম্পট দিতে বাধ্য হইলাম এবং Bombay Victoria Technical Institute এ গিয়া Textile class এ প্রথম বার্ষিক শ্রেণীতে কিছুদিন অধ্যয়নান্তে ছুটীতে একবার বাড়ী আসিলাম ।
ঠিক সেই সময়েই বরিশাল প্রাদেশিক সমিতির অধিবেশন, এতদুপলক্ষে আমিও তথায় হাজির । সেখানে পুলিস কর্তৃপক্ষের কাণ্ড-কারখানা অবশ্য অনেকেই অবগত আছেন । বলা বাহুল্য অধমের প্রতি ও পুলিশ regulation লাঠির এক ঘা কৃপা করিতে বিস্মৃত হন নাই । চিত্তরঞ্জন প্রভৃতির প্রতি যা অমানুষিক অত্যাচার হইল তাহাতো স্বচক্ষেই দেখিলাম । ইত্যাদি কারণে মনের অবস্থা ক্রমশঃই একটা দৃঢ় নিশ্চয়ের দিকে অগ্রসর হইতে লাগিল । আমাদের অপরিণত মস্তিষ্কের চিন্তা-স্রোতকে পরিণত ও বিশিষ্ট আকার দান করিবার পক্ষে প্রধান সহায় পাইলাম তৎকালীন সদ্য -প্রবর্তিত যুগান্তর পত্রিকা । স্বদেশী আন্দোলন প্রবর্তিত হইবার অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত কাব্য, সাহিত্য অথবা চিন্তাশীল -গবেষণাপূর্ণ রচনা কিছুরই আস্বাদন পাই নাই ।………..বঙ্কিমচন্দ্রের অনুশীলন ও ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি কয়েকখানি বই পড়িয়া পড়ার ভিতরেও যে একটা প্রাণ মাতানো জিনিষ কিছু আছে তাহা এই প্রথম অনুভব করিলাম । এতদ্ব্যতীত বিপিনবাবুর তখনকার বক্তৃতা ও রবিবাবুর স্বদেশী আন্দোলন সংক্রান্ত গান আমাদিগের যুবক হৃদয়ে এক নূতন উন্মাদনা আনিয়া দিল যাহার ফলে স্বদেশকে এক নতুন চক্ষে দেখিতে শিখিলাম’ ।
তিনি দেখিলেন যে শিবপুরে থাকিয়া explosive manufacture বিষয়ে নানাপ্রকার experiment ইত্যাদির চমৎকার সুযোগ আছে । কলেজ লাইব্রেরীতে যথেষ্ট বই পাওয়া যাবে আর laboratoryতে chemicalএর ও অভাব হবেনা । যদি তিনি দুই একটা experiment এ সফল হতে পারেন তাহলে দেশের গুপ্তদলগুলির সভ্য শ্রেণীভুক্ত হয়ে কাজ করতে পারবেন । বোম বানানোয় পারদর্শী হয়ে তিনি যুগান্তর পার্টিতে যোগদান করেন । ক্ষুদিরাম বোস ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে মারার উদ্দেশ্যে যে বোমাটি ছুড়েছিলেন সেটি উল্লাসকর ও হেমচন্দ্র দাস প্রস্ত্তত করেছিলেন ।
পুলিস অভিরূপ ছদ্মনামধারী উল্লাসকরকে মুরারীপুকুর বাগানের গুপ্তস্থান থেকে গ্রেপ্তার করে । পুলিস মানিকতলার গোপন অস্ত্র প্রস্ত্ততের জায়গাটিও খোঁজে বের করতে সমর্থ হয় এবং ডিটেক্টিব অনুসন্ধানে জানতে পারে- যে বোমটি ক্ষুদিরাম ব্যবহার করেছিলেন সেটি উল্লাসকরের বানানো ।আলিপুর বোমা মামলায় ক্ষুদিরাম, বারীন ঘোষ ও তাঁকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয় ।(১৯০৯খ্রীঃ) ।পরে এ্যাপীল করা হলে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আন্দামানে পাঠানো হয় ।
‘নির্বাসন ও কারাবাস বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও অপরাপর সকলের সহিত একরূপ নহে ।…..আমার কারাজীবনের সাধারন লৌকিক ঘটনবলীর ভিতর দিয়া অতিলৌকিক এমনই কতকগুলি ঘটনার সমাবেশ হইতে থাকে , যে যদি সম্পূর্ণ দ্বাদশবর্ষব্যাপী ঘটনাবলীর একটি চিত্র মানসপটে অঙ্কিত করি , দেখিতে পাই যে সেই অতিলৌকিক ব্যাপারগুলিই প্রায় সবস্থান অধিকার করিয়া বসিয়া আছে’ ।
কালাপানি চালান হওয়ার পর সেখানকার সেন্ট্রাল জেলে প্রায় আড়াই বৎসরের অধিককাল তাঁকে আবদ্ধ রাখা হয় । শুধু তাই নয় জেলের যেসমস্থ কাজ সবচেয়ে কঠিন পরিশ্রমের তাঁদের জন্য তারই ব্যবস্থা হইল । কিছুকাল পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল port mowat এ । সেখানে সাধারণ কয়েদীদের সংগে তাঁকে ও পাথর ভাঙ্গা, রাস্তা দুম্মুট , লাকরি কামান ইত্যাদি কাজ দেওয়া হয় । কিছুদিন পর তাঁকে dundas I’t নামক জায়গায় পাঠানো হয় । সেখানেও তাঁকে ইটা কামানে(brick field)ভর্তি করা হয় । ইটা কামানের পর তিনি শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করতে অস্বীকার করলে তাঁর বিচার হয় এবং তাঁকে তিনমাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে সেলুলার জেলে পাঠানো হয় ।
আন্দামান দ্বীপের এই কুখ্যাত সেলুলার জেলের কাজ শুরু হয়েছিল ১৮৯৬ এবং শেষ হয়েছিল ১৯০৬ এ । ভারতের ইংরেজ শাসকরা অবশ্য আন্দামান দ্বীপকে শাস্তি দেবার স্থান হিসেবে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের পরিণামের সংগে সংগেই ব্যবহার করতে শুরু করেছিল । মোগল রাজবংশের সবাই ছাড়া ও যারাই কোনভাবে পত্রালাপে বাহাদুর শাহ জাফরের সংগে যোগাযোগ করেছে , তাদের প্রত্যেককেই আন্দামান দ্বীপে নির্বাসন দেওয়া হয়েছে । সেলুলার জেলের সাতটি বিভাগে ৬৯৩টি ক্ষুদ্রকক্ষ বা cell ছিল । প্রত্যেক কক্ষ ৪.৫ মিটারও ২.৭ মিটার ছিল । আর ৩ মিটার উপরে ছিল একটি ভেন্টিলেটর । কক্ষগুলি এমন ভাবে প্রস্ত্তত ছিল যে এককক্ষ থেকে অন্যকক্ষের পিছনদিক শুধু নজরে আসত । বন্দীদের মধ্যে যোগাযোগ অসম্ভব ছিল । তাদেরে একাকী নিঃসঙ্গ জীবন ভোগ করতে হতো । তাদের উপর অকথ্য অত্যাচারও চালানো হতো ।
সেলুলার জেলে থাকাকালীন উল্লাসকর এখানকার নৃশংস জেলারের হাতে লাঞ্ছিত হয়ে কিছুদিন সংজ্ঞাহীন অবস্থায় হাসপাতালে ছিলেন । ক্রমে শারীরিক সুস্থ হয়ে উঠলে ও তিনি এক ভ্রান্তির রাজ্যে বাস করছিলেন-চারদিকে আত্মীয়স্বজনবর্গের আর্তনাদ ও কাতরধ্বনি শুনতে পেতেন । একসময় আত্মসংযম হারিয় তিনি ফাঁসি লাগাতে উদ্যত হলে তাঁর অতিলৌকিক দর্শনই তাঁকে রক্ষা করে ।তিনি অপর এক কয়েদীকে তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আত্মহত্যা থেকে বিরত হন । সহৃদয় superintendent তখন তাঁকে lunatic asylum এ প্রেরণ করেন যাতে তাঁকে শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করতে না হয় ।
‘তখনও আমার মধ্যে মধ্যে কম্প দিয়া জ্বর আসিত ও ভয়ানক spasms হইত এমনকি একএকসময় দেয়ালে মাথা খুঁড়িতাম । জ্বর যখন খুব অধিক হয় ,নানাপ্রকার স্বপ্নচিত্র দেখিতাম । জিজ্ঞাসা করিলে বলিলাম -এক এক সময় মনে হয় যেন সমস্ত পৃথিবী ধ্বংসের পথে চলিয়াছ । শুনিয়া director সাহেব বলিলেন ‘কতকটা ঠিক, শীঘ্রই Europe এ এক মহাযুদ্ধের আয়োজন হইবে’ ।…….একমাসের মধ্যেই আমার transfer এর হুকুম আসিল ও আমাকে মাদ্রাজ চালান দেওয়া হইল’ ।
মাদ্রাজেও তাঁকে lunatic asylum এ থাকার সুবিধা দেওয়া হয় । সেখানেও তাঁর অতিলৌকিক দর্শন চলতে থাকে । কিছুদিন পর তাঁর মা বাবা এসে তাঁর সংগে দেখা করেন । এখানে প্রথমে তাঁতশালায় ও পরে চাটাই বোনার কাজ শুরু করেন । মাদ্রাজ জেলে lunatic ward এ চাটাই বোনার কাজ করার সময় তিনি তালপাতা লইয়া নাড়াচাড়া করতে করতে বেশ একপ্রকার চটিজুতা প্রস্ত্তত করেন এবং নগ্নপায়ে চলার কষ্ট নিবারণ করেন । তিনি লিখেছেন ‘-মনে আছে এই উপলক্ষ্যে তখন একটি দুলাইন গান পর্যন্ত রচনা করিয়া ফেলিয়াছিলাম ও তালপাতার কাজ করিবার সময় বাউল সুরে বুনানির তালে তালে ঐ লাইনদুটি গাহিয়া আমোদ উপভোগ করিতাম -‘আমার তালের পাতা ও আমার তালের পাতা’
তোমার পাতায় চটি বুনি, তোমার পাতায় চাটাই বুনি
তোমার পাতায় পাখা বুনি ,টুপি বুনি, খলতে বুনি , তালের পাতা’ ।
‘আমার কারাজীবনীতে’ সেই সময়ে তাঁর মানসিক অসামঞ্জস্য প্রসংগে তিনি লিখেছেন ‘তখন আমার এমনই একটি অবস্থা যে সেই সময় পশু,পক্ষী ,কীট-পতংগ ,এমনকি বৃক্ষলতাদিতে পর্যন্ত এমনই এক অদ্ভুত চৈতন্যশক্তির খেলা দেখিতে পাইতাম , যে চোখ মেলিয়া চাহিলেই সেই সর্বব্যাপী চৈতন্য আমাকে চারিদিক হইতে ঘিরিয়া ফেলিত’ ।
দীর্ঘ বারো বৎসর কারাবাসের পর যখন তিনি শরীর ও মনে পুরো অবসন্ন হয়ে আসন্ন মৃত্যুর অপেক্ষায় সেইসময়ই তাঁর মুক্তির আদেশ হয় (১৯২০) ও তাঁকে কলিকাতার জেলে নিয়ে আসা হয় ।’gate এ আসিয়াই দেখিলাম বাবা আমার জন্য অপেক্ষা করিতেছেন , এতদিনের পর এই শুভ সুযোগ লাভ করিয়া আমাদের উভয়ের মনে যে আনন্দের উদয় হইল তাহা আর বোধহয় কাহাকেও বলিয়া বুঝাইতে হইবেনা’ ।
১৯৩১ এ তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করা হয় এবং আঠারো মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয় । ১৯৪৭ এ ব্রিটিশ রাজত্ব সমাপ্ত হওয়া পর তিনি জন্মস্থান কালিকাছায় যান এবং দীর্ঘ দশ বৎসর একাকীত্বের জীবন কাটিয়ে কলিকাতায় ফিরে আসেন । সেখানে তিনি শারীরিকভাব অক্ষম এক মহিলাকে বিয়ে করে আসামের কাছাড় জিলার শিলচরে চলে যান ও জীবনের বাকী সময়কাল সেখানেই কাটান ।১৯৬৫ সালের ১৭ মে তাঁর মৃত্যু হয় ।
————করবী বাগচী ——

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

মূল্যবান মনুষ্য জীবন ও (অহং)আমি : স্বামী আত্মভোলানন্দ(পরিব্রাজক)।।।

আমাদের সবার পরম সৌভাগ্য পুণ্যভূমি,পবিত্রভূমি ভারতবর্ষ এর পবিত্র রত্নগর্ভা ভূমিতে আমরা জন্মলাভ করেছি। আধ্যাত্মিক দেশ তপোভূমি আমাদের এই ভারতবর্ষ। আমাদের ভারতমাতা স্বমহিমায় উজ্জ্বল।ভারতভূমিতে জন্মলাভ করে সুদুর্লভ এই মনুষ্য জীবন লাভ। ভা – অর্থে জ্যোতি। রত – অর্থে নিমগ্ন, নিবিষ্ট।

এ জ্যোতি অনন্ত জ্যোতি। জ্যোতির সাধনায় নিবিষ্ট যে ভূখণ্ড, তাই আমাদের পবিত্রভূমি, ভারতভূমি। সৌন্দর্যময় আমাদের এই ভারতবর্ষ এর সুন্দর প্রকৃতি ও সকল নৈসর্গিক উপাদানে সমৃদ্ধ। এই মনোরম, অনুপম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনন্তকাল ধরে আমাদের চিত্তে শিক্ষা ও আনন্দের অমৃতধারা জাগিয়ে তুলছে। আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রকৃতির অবদান ও অপরিসীম।
তাই, কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় বলছেন:-
*ভায়ের মায়ের এত স্নেহ,
কোথায় গেলে পাবে কেহ
ওমা তোমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি
আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি।*
তবুও আমি/আমরা আমার আমার করি, আমি (অহং) এই অহঙ্কারটা নষ্ট হয় না।
আমাদের মূল্যবান মনুষ্য জীবনে আমরা মা-বাবা, বোন-ভাই, (পারিবারিক জীবনে স্ত্রী-স্বামী, কন্যা-পুত্র সহ) শিক্ষিকা-শিক্ষক, অধ্যাপিকা-অধ্যাপক,স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বন্ধু-প্রতিবেশী, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয়গুরু, আধ্যাত্মিক গুরু ইত্যাদি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান সবার কাছ থেকে শিখেছি, জ্ঞান অর্জন করেছি, আমরা শিক্ষার্থী, আমাদের জীবনে শিক্ষাক্ষেত্রে ইনাদের অবদান অতিব মূল্যবান। আমাদের জন্য জীবনের সব দিক থেকে শিক্ষক আছে। কিন্তু, তবুও আমার আজও মনে হয় জীবনে আমার কিছুই শিক্ষা হয়নি, এখনও আমি শিক্ষার্থী। তবুও আমার আমার করি, আমি (অহং) এই অহঙ্কারটা নষ্ট হয় না।
আমাদের মনুষ্য জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করা সোজা, কিন্তু ত্যাগ করা কঠিন। যে ত্যাগ করতে পারে সে প্রকৃত সাধু। ত্যাগ না করলে ভগবানে ভক্তি আসে না। ত্যাগ নিশ্চিত চাই। ত্যাগ হচ্ছে-আদর্শ সন্ন্যাসী জীবন। অহঙ্কারটা নষ্ট করা। সে-ই ঠিক ঠিক ত্যাগী যে নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে দিয়ে দিয়েছে ভগবানকে, আমার বলতে কিছু রাখে নি।
মিথ্যা বলা মহাপাপ , মিথ্যার মতো মহাপাপ দুনিয়াতে আর নেই। পরনিন্দা, পরচর্চা কখনো করতে নেই। উহাতে নিজেরই ক্ষতি হয়। সব সময় মানুষের গুণ দেখতে হয়। একটু গুণ থাকলেও তাকে বড় করে দেখতে হবে, সম্মান দিতে হবে, প্রশংসা করতে হবে। গুণের আদর না করলে মানুষ বড় হতে পারে না, নিজের মনও উদার হয় না। আমি (অহং) অহঙ্কারটা নষ্ট হয় না।
আমাদের সুন্দর ভারতীয় সমাজে অনন্তকাল ধরে ঋষি, মুনি, সাধু, সন্ন্যাসী, অনেক বিখ্যাত দার্শনিক, অনেক বিখ্যাত বিজ্ঞানী, অনেক বিখ্যাত মহাপুরুষ, সাধুমহাত্মা, মহামানব, অনেক বিখ্যাত মানুষ,সময়ে সময়ে নিজেদের প্রভাব, মহিমা, জ্ঞানের, তপস্যার, আবিস্কারের অবদান রেখে গেছেন এই আমাদের ভারতবর্ষে, মানব সমাজের জন্য, আমাদের শিক্ষার জন্য। তবুও আমাদের শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না। তবুও আমি/আমরা আমার আমার করি, তবুও আমাদের আমি (অহং) অহঙ্কারটা নষ্ট হয় না।
অহংকার কত প্রকারের হয় :-
১. উচ্চশিক্ষার, জ্ঞান এর অহংকার!
২. উচ্চ কুলের জন্মের অহংকার।
৩. রূপের অহংকার!
৪. এবং ধন সম্পদের অহংকার।
আরও কত প্রকারের হয় অহংকার।
অহংকার সবই ব্যর্থ কারণ আমি/আপনি এসব কিছুই সাথে নিয়ে যেতে পারবেন না আপনার সাথে যদি কিছু নিয়ে যান, সেটা হলো এই মধু মাখা সুধা মাখা গুরু-নাম, ভগবান এর নাম l ধর্মের পথে হাঁটলে কষ্ট ঠিকই হবে কিন্তু জয় আপনারই হবে। মনুষ্য জীবন সুদুর্লভ, খুব কষ্ট করে মানুষ জীবন পাওয়া গেছে তাই আমাদের মনুষ্য জীবনের সৎ ব্যবহার করা উচিত । *কিসের এত অহংকার ঘুম ভাঙলেই গতকাল না ভাঙলে পরকাল। মাটির দেহ মাটি হবে পুড়ে হবে ছাই এ দেহ মোর পচা দেহ গৌরব, অহংকার কিসের ভাই।*
স্বামী প্রণবানন্দজি মহারাজ ও বলছেন:- “সকল জন্মের মধ্যে মনুষ্য জন্মই শ্রেষ্ঠ। এই জন্মেই মানুষ ভগবানকে ডাকিতে পারে ও লাভ করিতে পারে। আবার মনুষ্যগণের মধ্যে যিনি ভগবানের আরাধনা করেন, তিনি আরো সৌভাগ্যশালী। যিনি সতত তাঁহার চিন্তায় নিমগ্ন থাকেন, তিনি তাহার চেয়ে ও সৌভাগ্যশালী। আর যিনি সাধনায় সিদ্ধিলাভ করিয়া তাঁহারই ঐশ্বর্যে নিয়ত ডুবিয়া থাকেন, তিনি জগতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ও মহান।”
আজ আমাদের মনুষ্য সমাজে সব কিছুর দাম বেড়েছে মিথ্যা, ঘৃণা, জাল, প্রতারণা। আর দাম কমেছে শুধু মানুষের প্রতি মানুষের বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর দাম কমেছে মানুষের জীবনের মূল্য। তবুও আমাদের আমি (অহং) অহঙ্কারটা নষ্ট হয় না। আমি/আমরা আমার আমার করি….! তবুও আমাদের শিক্ষা সম্পূর্ণ হয় না।
ওঁ গুরু কৃপা হি কেবলম্ ….!
স্বামী আত্মভোলানন্দ(পরিব্রাজক) l

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৭ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ১৭ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক)  বিশ্ব তথ্য সমাজ দিবস।
(খ) নৌ বাহিনী দিবস। (আর্জেন্টিনা)
(গ) বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস। (আন্তর্জাতিক)

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৬৮২ – বার্থোলুমিউ রবার্টস, ওয়েলশ জলদস্যু।  .
১৭৪৯ – এডওয়ার্ড জেনার, ইংরেজ চিকিৎসক এবং বৈজ্ঞানিক,গুটিবসন্ত রোগের ভ্যাকসিন আবিস্কারের পথিকৃৎ।

১৮৪৫ – জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়ের, কাতালান কবিদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি।
১৮৭৩ – ফরাসি চিন্তাবিদ ও গবেষক অঁরি বারব্যুস।
১৮৮৩ – পারসিক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী খুরশেদ ফ্রানজি নরিন।
১৮৮৬ – স্পেনের ত্রয়োদশ আলফনসো, স্পেনের রাজা।

১৮৮৮ – টিচ ফ্রিম্যান, ইংলিশ ক্রিকেটার।
১৮৯৭ – (ক)  নোবেল বিজয়ী (১৯৬৯) নরওয়েজীয় ভৌতরসায়নবিদ ওড হাজেল।

(খ) রবীন্দ্রনাথের স্নেহধন্যা বিশিষ্ট গায়িকা সাহানা দেবী।
১৯০০ – আয়াতুল্লা রুহেল্লা খোমিনী, ইরানের ধর্মগুরু।
১৯৩২ – পিটার বার্জ, বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৩৬ – ডেনিস হপার, মার্কিন অভিনেতা, চলচ্চিত্র নির্মাতা, আলোকচিত্রী ও চিত্রশিল্পী।
১৯৪০ – এলান কে, মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
১৯৪৫ – ভাগবত চন্দ্রশেখর, ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৫১ – পঙ্কজ উদাস, ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী।
১৯৬৭ – মোহাম্মদ নাশিদ, মালদ্বীপের প্রথম প্রেসিডেন্ট।
১৯৮২ – রেইকো নাকামুরা, জাপানি অলিম্পিক ও এশীয় রেকর্ড-ধারী সাঁতারু।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৫৪০ – শেরশাহ কনৌজের যুদ্ধে হুমায়ুনকে পরাজিত করেন।
১৭৭৫ – ব্রিটিশ ও মারাঠা বাহিনীর মধ্যে আরারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
১৮৮১ – নিউ টেস্টামেন্টের পরিমার্জিত সংস্করণ ছাড়া হয়।
১৯০০ – এল ফ্রাঙ্ক বম রচিত কিশোর কাল্পনিক উপন্যাস দ্য ওয়ান্ডারফুল উইজার্ড অব অজ প্রকাশিত হয়।
১৯২০ – বিশ্বের প্রথম যাত্রীবাহী বিমান KLM চলাচল শুরু করে।
১৯৮১ – শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।
১৯৯৮ – ভারতে কেনিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল ওয়ানডেতে প্রথম জয়ের দেখা।
১৯৯৯ – বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের অভিষেক হয়।
২০১৯ – আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন শহরের মালাহাইডে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে শিরোপার স্বাদ পায় বাংলাদেশ।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৭২৭ – রাশিয়ার সম্রাজ্ঞী প্রথম ক্যাথারিন।
১৮৭০ – রাধানাথ শিকদার,ভারতীয় বাঙালি গণিতজ্ঞ ও মাউন্ট এভারেস্ট- এর উচ্চতা নিরূপণকারী ও আবিষ্কারক।
১৯১৩ – দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, বাঙালি কবি, গীতিকার ও নাট্যকার।
১৯৫৪ – নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরী (রশীদ আহমদ চৌধুরী)।
১৯৬৫ – বিশিষ্ট বিপ্লববাদী উল্লাসকর দত্ত।
১৯৮৭ – কার্ল গুনার মিরদাল, নোবেলজয়ী সুইডিশ অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী।
২০১৩ – হোর্হে রাফায়েল বিদেলা, আর্জেন্টিনার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি।
২০১৪ – জেরাল্ড এডেলম্যান, মার্কিন জীববিজ্ঞানী৷

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This