Categories
প্রবন্ধ

প্রখ্যাত বাঙালি সাংবাদিক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।

সাংবাদিকতার জগতে অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় এক অতি পরিচিত নাম। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব আলাপন ব্যানার্জির ছোট ভাই ছিলেন। অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন একজন ভারতীয় বাঙালি সাংবাদিক যিনি ইটিভি বাংলা, আনন্দবাজার পত্রিকা, জি 24 ঘন্টা, টিভি 9 বাংলা, আজকাল, যুগান্তর, ইত্যাদির মতো বিভিন্ন সংবাদ ও মিডিয়া চ্যানেলের জন্য কাজ করেছেন।

টিভির পর্দায় মানুষ চোখ রাখত তাঁর উপস্থাপনা দেখার জন্য। চোখা চোখা প্রশ্নে কুপকাত করে দিতেন আচ্ছা আচ্ছা রাজনীতিবিদদেরও।
অঞ্জন ব্যানার্জি 24 আগস্ট 1965 সালে জন্মগ্রহণ করেন। 1981 সালে তিনি রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল, নরেন্দ্রপুর থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। তিনি স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম শ্রেণী লাভ করেন। তিনি 33 বছরেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা করছেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা, যুগান্তর প্রভৃতি মিডিয়া এবং আকাশ বাংলা, যুগান্তর প্রভৃতি চ্যানেলে কাজ করেন। 2015 সালে, তিনি জি 24 ঘন্টা থেকে পদত্যাগ করেন এবং আনন্দবাজার পত্রিকায় (ডিজিটাল) যোগ দেন। তিনি 2020 সালের নভেম্বরে জি নেটওয়ার্কে পুনরায় যোগদান করেন। তিনি টিভি9 বাংলার প্রথম সম্পাদক হিসাবেও যুক্ত ছিলেন ।
অঞ্জন ব্যানার্জি 2021 সালের এপ্রিল মাসে কোভিড -19 এর কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি সুস্থ হওয়ার পরে, কয়েক দিন পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। মে মাসের মাঝামাঝি তার স্বাস্থ্যের আবারও অবনতি হয় এবং জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তাকে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি 2021 সালের 16 মে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। তাঁর মৃত্যু সাংবদিকিতার জগতে এক অপুরনীয় ক্ষতি।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
রিভিউ

জীবণ বদলে দেওয়া স্বামী বিবেকানন্দের সেরা কিছু উক্তি।।।

আত্ম-উপলব্ধিতে স্বামী বিবেকানন্দের সেরা উক্তি

“আপনাকে ভিতর থেকে বাড়াতে হবে। কেউ আপনাকে শিক্ষা দিতে পারে না, কেউ আপনাকে আধ্যাত্মিক করতে পারে না। তোমার আত্মা ছাড়া আর কোন শিক্ষক নেই।”

“যত বেশি আমরা বাইরে আসি এবং অন্যদের ভাল করি, আমাদের হৃদয় তত বেশি পরিশুদ্ধ হবে।”

“ওঠো, জাগো, লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থামো না।”
“মহাবিশ্বের সমস্ত শক্তি ইতিমধ্যে আমাদের। আমরাই চোখের সামনে হাত রেখে কাঁদি যে অন্ধকার।”
“সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম হল আপনার প্রকৃতির প্রতি সত্য হওয়া। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন।”
“হৃদয় এবং মস্তিষ্কের মধ্যে দ্বন্দ্বে, আপনার হৃদয়কে অনুসরণ করুন।”
“আগুন যে আমাদের উষ্ণ করে তা আমাদের গ্রাস করতে পারে; এটা আগুনের দোষ নয়।”
“সত্য হাজার ভিন্ন উপায়ে বলা যেতে পারে, তবুও প্রতিটি সত্য হতে পারে।”
“পৃথিবী হল একটি মহান জিমনেসিয়াম যেখানে আমরা নিজেদেরকে শক্তিশালী করতে এসেছি।”
“প্রত্যেক আত্মা সম্ভাব্য ঐশ্বরিক। লক্ষ্য হল প্রকৃতি, বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই দেবত্বকে প্রকাশ করা।”
শিক্ষা এবং জ্ঞানের উপর স্বামী বিবেকানন্দের সেরা উক্তি
“শিক্ষা হল মানুষের মধ্যে ইতিমধ্যেই পরিপূর্ণতার প্রকাশ।”
“শিক্ষার সারমর্ম হল মনের একাগ্রতা, তথ্য সংগ্রহ নয়।”
“জগৎ যে সব জ্ঞান পেয়েছে তা মন থেকে আসে; মহাবিশ্বের অসীম গ্রন্থাগার আমাদের মনের মধ্যে রয়েছে।”
“সমস্ত শিক্ষা, সমস্ত প্রশিক্ষণের সমাপ্তি হওয়া উচিত মানুষ তৈরি করা।”
“আমরা চাই সেই শিক্ষা যার দ্বারা চরিত্র গঠন হয়, মনের শক্তি বৃদ্ধি পায়, বুদ্ধির প্রসার ঘটে এবং যার দ্বারা কেউ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে।”
“শিক্ষার প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত জীবন-নির্মাণ, মানুষ তৈরি করা, চরিত্র তৈরি করা ধারণার আত্তীকরণ।”
“বই সংখ্যায় অসীম এবং সময় কম; অতএব, জ্ঞানের রহস্য হল যা প্রয়োজনীয় তা গ্রহণ করা।”
“একমাত্র প্রকৃত শিক্ষক তিনিই যিনি অবিলম্বে ছাত্রের স্তরে নেমে আসতে পারেন।”
“আমরা যা চাই তা হল বেদান্তের সাথে পাশ্চাত্য বিজ্ঞান, ব্রহ্মচর্যকে পথনির্দেশক নীতিমালা, এবং শ্রাদ্ধ এবং নিজের নিজের প্রতি বিশ্বাস।”
“প্রকৃত শিক্ষা সেটাই যা একজনকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম করে।”
সফলতার উপর স্বামী বিবেকানন্দের সেরা উক্তি
“একটা ধারণা নিন। সেই একটি ধারণাটিকেই আপনার জীবন তৈরি করুন – এটি ভাবুন, এটির স্বপ্ন দেখুন, সেই ধারণাটি নিয়ে বাঁচুন।
“সত্যিকারের সাফল্যের, সত্যিকারের সুখের মহান রহস্য হল: যে পুরুষ বা মহিলা কোন ফেরত চায় না।”
“কিছুতেই ভয় পেও না। আপনি অসাধারণ কাজ করবেন। নির্ভীকতাই এক মুহূর্তের মধ্যে স্বর্গ নিয়ে আসে।”
“শক্তিই জীবন, দুর্বলতাই মৃত্যু। সম্প্রসারণই জীবন, সংকোচনই মৃত্যু। প্রেমই জীবন, ঘৃণাই মৃত্যু।”
“আমাদের চিন্তা আমাদের তৈরি করেছে আমরা তাই; তাই আপনি কি মনে করেন সে বিষয়ে যত্ন নিন। শব্দগুলো গৌণ। চিন্তা বেঁচে থাকে; তারা অনেক দূর ভ্রমণ করে।”
“কারো বা কিছুর জন্য অপেক্ষা করবেন না। যা পারেন তাই করুন। কারো উপর আপনার আশা গড়ে তুলবেন না।”
“বিশ্ব তার গোপনীয়তা ত্যাগ করতে প্রস্তুত যদি আমরা কেবল জানি কীভাবে নক করতে হয়, কীভাবে প্রয়োজনীয় আঘাত দিতে হয়। আঘাতের শক্তি এবং শক্তি একাগ্রতার মাধ্যমে আসে।”
“বিশুদ্ধতা, ধৈর্য এবং অধ্যবসায় সাফল্যের জন্য তিনটি অপরিহার্য এবং সর্বোপরি ভালবাসা।”
“অস্তিত্বের সম্পূর্ণ রহস্য হল কোন ভয় নেই। আপনার কী হবে তা কখনও ভয় করবেন না, কারও উপর নির্ভর করবেন না।”
“দাঁড়াও, সাহসী হও, শক্তিশালী হও। আপনার নিজের কাঁধে পুরো দায়িত্ব নিন এবং জেনে রাখুন যে আপনি নিজের ভাগ্যের স্রষ্টা।”
যুবকদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দের সেরা উক্তি
“ওঠো, জাগো, লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থামো না।”
“আমার বিশ্বাস তরুণ প্রজন্ম, আধুনিক প্রজন্ম, তাদের মধ্য থেকে আমার কর্মীরা আসবে!”
“দিনে একবার নিজের সাথে কথা বলুন, অন্যথায়, আপনি এই বিশ্বের একজন দুর্দান্ত ব্যক্তির সাথে দেখা মিস করতে পারেন।”
“পৃথিবী বীরদের দ্বারা উপভোগ করা হয় – এটি অক্ষয় সত্য। এখনও বিক্রয়ের জন্য. সর্বদা বল, ‘আমার কোন ভয় নেই।’
“এখনও বিক্রয়ের জন্য. সর্বদা বল, ‘আমার কোন ভয় নেই।’ সবাইকে বলুন- ‘ভয় নেই’।
“খ্রীষ্টের মত অনুভব করুন এবং আপনি একজন খ্রীষ্ট হবেন; বুদ্ধের মতো অনুভব করুন এবং আপনি বুদ্ধ হবেন।”
“শক্তি হ’ল শক্তির চিহ্ন, জীবনের চিহ্ন, আশার চিহ্ন, স্বাস্থ্যের চিহ্ন এবং যা কিছু ভাল তার চিহ্ন।”
“দুর্বলতার প্রতিকার হল দূর্বলতার উপর চিন্তা করা নয়, বরং শক্তির চিন্তা করা।”
“আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে পারবেন না যতক্ষণ না আপনি নিজেকে বিশ্বাস করেন।”
“যৌবন হল সেরা সময়। আপনি এই সময়কে যেভাবে ব্যবহার করবেন তা আপনার সামনে থাকা আগামী বছরগুলির প্রকৃতি নির্ধারণ করবে।”

।। সংগৃহীত ইন্টারনেট উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি চিত্রপরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক ফণী মজুমদার – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

সূচনা- ভারতের হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি চিত্রপরিচালক ফণী মজুমদার চিত্রনাট্যকার ও প্রযোজক।, ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে তার পরিচালিত প্রথম ছবিস্ট্রিট সিঙ্গার-এ কে এল সাইগলের গাওয়া বাবুল মোরা নাইহার টুটহি যায় বিশেষ জনপ্রিয় হয়। তিনি সিঙ্গাপুরেও কাজ করেছিলেন। সেখানে তিনি ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে হ্যাং টুয়া মালয় ভাষায় তৈরি করেছিলেন, যা সপ্তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে গোল্ডেন বিয়ারের জন্য মনোনীত হয়েছিল।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন–

২৮ ডিসেম্বর ১৯১১ সালে বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের রংপুরে। তাঁদের বাড়ি ছিল ফরিদপুরে ফণী মজুমদারের জন্ম । তাঁর পিতা শীতলচন্দ্র মজুমদার রংপুরের গোবিন্দগঞ্জ হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক ছিলেন। তিনি রংপুরের কারমাইকেল কলেজ থেকে আই.এ পাশ করেন। এরপর টাইপরাইটিং ও শর্টহ্যান্ড শিক্ষা করেন। দূরদর্শনে রামানন্দ সাগর পরিচালিত মেগাধারাবাহিক রামায়ণ-এর চিত্রনাট্য তৈরির পর্বে গবেষণার পুরো কাজটা তিনিই করেন। একাধিক দূরদর্শন ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যও তিনি রচনা করেছেন। তার পরিচালিত একাধিক ছবি একাধিক রাষ্ট্রীয় পুরস্কার লাভ করেছিল। খ্যাতনামা অভিনেত্রী মণিকা দেসাই তার স্ত্রী।

কর্মজীবন-

কলকাতায় বীরেন্দ্রনাথ সরকার প্রতিষ্ঠিত নিউ থিয়েটার্সে (১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে) প্রমথেশ বড়ুয়ার সহকারী হিসাবে তিনি ‘দেবদাস’, ‘গৃহদাহ’, ‘মায়া’, ‘মুক্তি’ প্রভৃতি হিন্দি ও বাংলা সংস্করণে কাজ করেন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে স্ট্রিট সিঙ্গার-এর জনপ্রিয়তার পর এরই বাংলা সংস্করণে সাথীর নায়ক ও নায়িকা ছিলেন যথাক্রমে সায়গল ও কাননবালা। এরপর একে একে মুক্তি পায় তার পরিচালিত ‘কপালকুণ্ডলা’ (হিন্দি ১৯৩৯), ‘ডাক্তার'(বাংলা ও হিন্দিতে ১৯৪০), ‘আরতি’ প্রভৃতি ছবি। কলকাতায় তার শেষ বাংলা ছবি ‘অপরাধ’ মুক্তি পায় ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে। ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দে তিনি বোম্বাই বর্তমানে মুম্বই চলে যান এবং সেখানে ‘বোম্বাই টকীজে’ কাজ করতে থাকেন।
তার পরিচালিত হিন্দি ছবি–
‘ইনসাফ’, ‘হাম ভি ইনসান হ্যায়’, ‘আন্দোলন’, ‘গুঞ্জ’, ‘তামাসা’, ‘বাদবান’, ‘ধোবী ডক্টর’, ‘আকাশদীপ’, ‘উঁচে লোগ”তমন্না’, ‘মোহাব্বত’, ‘মীনা’, ‘দেবদাসী’, ‘দূর চলে’, প্রভৃতি।

কর্মজীবন–

বিভিন্ন ভাষায় ছবি তৈরিতে তাঁর দক্ষতা ছিল। পাঞ্জাবি, ইংরেজি, মারঠি, মালয়, চীনা, মাগধি, মৈথিলি প্রভৃতি ভাষায় তিনি ছবি করেছেন। কর্মজীবনে মধ্যপর্বে বিদেশি সংস্থায় কাজ নিয়ে দীর্ঘদিন ইন্দোনেশিয়া, সুমাত্রা, জাভায় কাটিয়েছেন।

পুরস্কার-

চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য সম্মান সরূপ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।

মৃত্যু-

ফণী মজুমদার আজকের দিনে ১৬ মে ১৯৯৪ সালে প্রয়াত হন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৬ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ১৬ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক) ফারাক্কা লং মার্চ দিবস৷

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৮২১ – পাফনুতি লভোভিচ চেবিশেভ, রুশ গণিতবিদ এবং গণিতের সেন্ট পিটার্সবার্গ ঘরানার প্রতিষ্ঠাতা।

১৮২৩ – হের্মান স্টাইন্‌টল, জার্মান ভাষাতাত্ত্বিক ও দার্শনিক।

১৮৩১ – বাংলার নাট্যোৎসাহী,শিল্প-কলা, মানব দরদী ব্যক্তিত্ব মহারাজা বাহাদুর স্যার যতীন্দ্রমোহন ঠাকুর।
১৮৩১ – ডেভিড এডওয়ার্ড হিউজ, টেলি প্রিন্টার ও মাইক্রোফোনের উদ্ভাবক।

১৮৮৩ – জালাল বায়ার, একজন তুর্কি রাজনীতিবিদ ও তুরস্কের ৩য় রাষ্ট্রপতি।
১৮৯৮ – কেনজি মিজোগুচি, জাপানী চলচ্চিত্র পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকার।

১৯০৫ – হেনরি ফন্ডা, আমেরিকান অভিনেতা।
১৯০৬ – আর্নি ম্যাককরমিক, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার।
১৯১৮ – হুয়ান রুলফোর, মেক্সিকান কথাসাহিত্যিক।
১৯২৩ – ভিক্টোরিয়া ফ্রমকিন, আমেরিকান ভাষাবিদ, ইউসিএলএ-র অধ্যাপক।
১৯২৩ – মার্টন মিলার, আমেরিকান অর্থনীতিবিদ।।
১৯৩৮ – আইভান এডওয়ার্ড সাদারল্যান্ড, মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
১৯৫০ – ইয়োহান গেয়র্গ বেডনৎর্স, নোবেলজয়ী জার্মান বিজ্ঞানী।
১৯৫৩ – পিয়ার্স ব্রসনান, আইরিশ চলচ্চিত্র অভিনেতা, নিমার্তা ও পরিবেশবাদী।
১৯৭০ – গ্যাব্রিয়েলা সাবাতিনি, আর্জেন্টিনার টেনিস খেলোয়াড়।
১৯৭২ – ম্যাথু হার্ট, নিউজিল্যান্ডীয় সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৭৬ – ডার্ক নানেস, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।
১৯৮৬ – মেগান ফক্স, আমেরিকান অভিনেত্রী।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৫০২ – ক্রিস্টোফার কলম্বাস দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ট্রুজিল্লোতে প্রথম পা রাখেন এবং ঐ এলাকার নাম রাখে হন্ডুরাস।
১৫৩২ – ইংল্যান্ডের লর্ড চ্যানসেলর পদ থেকে স্যার টমাস মুর পদত্যাগ করেন।
১৮২২ – গ্রিসের স্বাধীনতা যুদ্ধে তুরষ্ক গৃসের সৌলি শহর দখল করে নেয়।
১৮৭৪ – মিল নদীর ভয়াবহ বন্যায় ম্যাসাচুসেটসের ৪টি গ্রাম বিধ্বস্ত হয়ে যায় এবং প্রায় ১৩৯ জনের প্রাণহানি ঘটে।
১৮৮১ – বার্লিনের কাছে বিশ্বের প্রথম বৈদ্যুতিক ট্রাম সার্ভিস চালু হয়।
১৮৯০ – ব্রাহ্ম মহিলা সমাজের উদ্যোগে কলকাতায় ব্রাক্ষবালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯১৬ – উসমানীয় সাম্রাজ্যের ভাগাভাগি নিয়ে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মধ্যে গোপন সাইকস-পিকট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯২০ – ফ্রান্সের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর নারী জোয়ান ডি আর্ক-কে রোমে পোপ পঞ্চদশ বেনেডিক্ট ক্যানোনাইজের মাধ্যমে সেইন্ট হিসেবে ভূষিত করেন।
১৯২৯ – হলিউডে প্রথম চলচ্চিত্রে একাডেমি পুরস্কার বা অস্কার পুরস্কার চালু হয়।
১৯৩২ – জাপানের প্রধানমন্ত্রী তসুশি ইনুকাই টোকিওতে আততায়ীর হাতে নিহত।
১৯৪৫ – জার্মান নাৎসি বাহিনী অবলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
১৯৪৬ – ব্রিটিশ কেবিনেট মিশনে ভারত বিভক্তির প্রস্তাব।
১৯৬১ – জেনারেল পার্ক চুংহির নেতৃত্বে দ. কোরিয়ার সামরিক অভ্যুত্থান।
১৯৬৯ – সোভিয়েত নভোযান ভেনাস-৫ শুক্রপৃষ্ঠে অবতরণ করে।
১৯৭৪ – বাংলাদেশ-ভারত যুক্ত ঘোষণা স্বাক্ষর। বেরুবাড়ি ভারতের এবং দহগ্রাম, আসালং লাঠিটিলা ও পাথুরিয়া বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত।
১৯৭৪ – জোসিপ টিটো দ্বিতীয়বারের মতো সমাজতান্ত্রিত যুগোশ্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এবার তিনি আজীবনের জন্য ম্যান্ডেট পান।
১৯৭৫ – সিকিম ভারতের ২২তম রাজ্য হিসাবে ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৯৭৬ – মাওলানা হামিদ খান ভাসানী ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লং মার্চে নেতৃত্ব দেন।
১৯৮৬ – সৌরজতের অভ্যন্তরভাগে শেষবারের মত দেখা যায় হ্যালির ধূমকেতু।
১৯৯১ – ইরানের প্রেসিডেন্ট খাতামির সৌদি সফর। ২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম কোনো ইরানি প্রেসিডেন্টের সৌদি সফর।
২০০৭ – নিকোলাই সারকোজি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৭০৩ – শার্ল পেরো, ফরাসি কবি, সমালোচক, পণ্ডিত, রূপকথার লেখক।

১৮৩০ – জোসেফ ফুরিয়ে, প্রখ্যাত ফরাসি গণিতবিদ।

১৯২৬ – ষষ্ঠ মুহাম্মদ, উসমানীয় খলিফা এবং সর্বশেষ উসমানীয় সুলতান।

১৯৪৭ – ফ্রেডরিখ গোল্যান্ড হপকিন্স, ইংরেজ প্রাণরসায়নবিদ এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী।
১৯৫৪ – প্রখ্যাত নৈয়ায়িক চন্ডীদাস ন্যায়-তর্কতীর্থ, মহামহোপাধ্যায়।
১৯৬৫ – প্রখ্যাত বাঙালি সাংবাদিক ও সম্পাদক কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায়।
১৯৭৭ – মালির প্রথম প্রেসিডেন্ট মোদিবো কেইটা।
১৯৯৪ – ফণী মজুমদার, ভারতের অগ্রণী চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার।
২০১৩ – হাইনরিশ রোরার, সুইজারল্যান্ডের নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী।
২০২০ – আজাদ রহমান, বাংলাদেশের বরেণ্য সংগীতজ্ঞ ও সংগীত পরিচালক।
২০২১ – অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রখ্যাত বাঙালি সাংবাদিক।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস, জানুন কেন পালিত হয় এবং দিনটির গুরুত্ব।।।।

আজ ১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস। ১৯৯৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ মে আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস হিসেবে ঘোষিত হয়। রাষ্ট্রসংঘ ১৯৯৪ সালকে আন্তর্জাতিক পরিবার বর্ষ ঘোষণা করেছিল। সমাজ ও ব্যক্তি জীবনে একটি পরিবারের ভূমিকা কি তা আমরা সকালেই জানি।

একটি শিশুর বেড়ে ওঠা থেকে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে পরিবারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। পরিবার এমন একটি সমাজিক বন্ধন যা একটি ব্যক্তিকে জীবনের চলার পথে সমূহ ঝড় ঝঞ্ঝা প্রতিহত করতে সহযোগিতা করে। তাই এ ক্ষেত্রে যৌথ পরিবারের ভূমিকা আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারন সুখে দুঃখে সকলকে একসঙ্গে না হোক কাউকে না কাউকে পাশে পাওয়া যায়। নিজেদের সুখ দুঃক্ষ গুলো ভাগ করে নেওয়া যায়। কিন্তু দুক্ষের বিষয় হলো এই যে যতো দিন যাচ্ছে ততই ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র হচ্ছে পরিবার। কর্মের আর ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে আমরা নিজেদের ক্রমেই ভাগে ভাগে ভাগ করে নিচ্ছি। বঞ্চিত হচ্ছি, পরিবারের ছোটদের কিংবা নব প্রজন্ম কে বঞ্চিত করছি যৌথ পরিবারের আসল সুখ থেকে।
কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে একান্নবর্তী কিংবা যৌথ পরিবারের ধারণা যেন এখন ‘সেকেলে’ হয়ে গেছে। বিশেষ করে, শহুরে জীবন ব্যবস্থায় এই ব্যাপারটি চরম আকার ধারণ করেছে। আমরা যেন ছুটে চলেছি সুখ নামক এক অসুখের পেছনে। একা থাকব একা পরব, আমি আমার সন্তান আমার বৌ এই যেন একটা গন্ডি তৈরি করছি সকলে। কিন্তু ভুলে যাচ্ছি প্রকৃত সুখ কি সেটা ভাবতে বা বুঝতে। যৌথ পরিবারে হয়তো মতগত বিভিন্ন পার্থক্য থাকে, আর এটাই সভাবিক। কিন্তু যৌথ বা একান্নবর্তি পরিবারের মধ্যে যে সুযোগ সুবিধা গুলো থাকে সেটাও আমাদের ভাবতে হবে। কিন্তু দিন দিন জেনে আমরা সেই ভাবনা থেকে সরে আসছি। এর ফলও ভুক্তে হচ্ছে ক্ষুদ্র পরিবার গুলোকে। হঠাৎ অসুখ বিসুখ, বিপদে আপদে বা বিপর্যয়ে সেই সমস্যা গুলো প্রকট হয়ে ওঠে। আমরা বুঝি না প্রতিটা অনু পরিবারও একদিন বড় হবে। সন্তান বড় হবে, তার বিয়ে হবে, তার সন্তান হবে এই ভাবেই। আর, আমরা কেবল ভাংতেই আছি!!
আমরা জানি পরিবার মানেই হচ্ছে মা, বাবা, ভাই, বোন, দাদা, দিদি, দাদু, দিদা, কাকা, কাকি সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে বসবাস। আমাদের সমাজব্যবস্থায় পরিবারের এই ধারণা প্রচলিত অতীত থেকেই। কিন্তু দিন যতোই যাচ্ছে, আমরা যেন ততোই এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসছি। যেন ক্রমেই ‘স্বামী-স্ত্রী-সন্তানে’ই সীমাবদ্ধ করে ফেলছি আমরা পরিবারকে। সেখানে মা-বাবা কিংবা দাদা-দাদীর কোন স্থান নেই। মা-বাবাকে হয়তো গ্রামের বাড়িতে কাটাতে হচ্ছে নিঃসঙ্গ-অসহায় জীবন। আবার অনেক মা-বাবার ঠিকানা হচ্ছে ‘বৃদ্ধাশ্রম’। এর থেকে বড় যান্ত্রনার অর কি হতে পারে ! অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে একান্নবর্তী কিংবা যৌথ পরিবারের ধারণা যেন এখন ‘সেকেলে’ হয়ে গেছে। বিশেষ করে, শহুরে জীবন ব্যবস্থায় এই ব্যাপারটি চরম আকার ধারণ করেছে। রক্তের বন্ধন মানেই পারিবারিক বন্ধন। পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে অকৃত্রিম সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং তা অটুট রাখা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের চিরায়ত সমাজ ব্যবস্থায় সুন্দর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে, সুন্দর পারিবারিক বন্ধন। পরিবারের সকল সদস্যের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বন্ধুর মতো হলে পারিবারিক নানা জটিল সমস্যা ও মোকাবেলা করা যায়। সকলের এগিয়ে চলার পথ হয় মসৃণ। তাই যৌথ পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখার মানসিকতা সৃষ্টির লক্ষে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
তবে সুপ্রাচীন কাল থেকে যে যৌথ পরিবারে চিত্র সারাবাংলা জুড়ে ছিল এখন তা অনেকটাই ম্লান। শহুরে জীবনে অনেক আগেই বিলীন হয়েছে যৌথ পরিবারের চিত্র। আগে গ্রামে কিছু যৌথ পরিবার দেখা গেলেও এখন তাও নেই। কেউ ইচ্ছে করে কিংবা কেউ কর্মের তাগিদে ভেঙে দিচ্ছে যৌথ পরিবারের ধারনা গুলো। বংশ মর্যাদা এমনকি ঐতিহ্যের পরিবারেও বিলীন একত্রে বাস করার ইতিহাস। যা দেখতে এক সময় মনুষ অভ্যস্থ ছিল তা এখন স্বপনের মতন। হয়তো সিনেমার পর্দায় কেবল ভেসে ওঠবে গল্পের মতো অতিতের ইতিহাস।
নৃবিজ্ঞানী ম্যালিনোস্কির মতে – “পরিবার হল একটি গোষ্ঠী বা সংগঠন আর বিবাহ হল সন্তান উৎপাদন ও পালনের একটি চুক্তি মাত্র”। সামনার ও কেলারের মতে- ‘পরিবার হল ক্ষুদ্র সামাজিক সংগঠন, যা কমপক্ষে দু’ পুরুষকাল পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে”- এ সংজ্ঞার প্রেক্ষিতে বোঝা যায়, বিবাহপ্রথার আগেও সমাজে পরিবারের সৃষ্টি হয়েছিল- কারণ এ সম্পর্কে আবদ্ধ হওয়ার আগে থেকেই মানুষ দলবদ্ধ জীবনযাত্রা করত যা পারিবারিক জীবনযাপনের স্বাক্ষরবহ। তবে বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন সংস্কৃতির পরিবারের ভূমিকা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পরিলক্ষিত হয়। এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বৈচিত্র্যপূর্ণ নানামুখী ধারা যে কারণে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের সঙ্গে এর গঠন ও অন্যান্য অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে এবং হচ্ছে। যে শিশুটি ভবিষ্যতের নাগরিক, তার মনোজগত প্রস্তুত হয় পরিবারে। পরিবারের ধারা কেমন, কী ধরনের প্রথা-রীতিনীতি, এ সবের উপর ভিত্তি করে তার জীবনভঙ্গি গড়ে ওঠে। তাই শিশুর সুষ্ঠু পারিবারিক শিক্ষা শৈশব তথা শিশুর মন তথা সাদা কাগজের পাতায় যে ছাপ রাখে, তা ওর পরবর্তী জীবনে অসাধারণ ভূমিকা রাখে। তাই রাষ্ট্র পরিচালনায় যেমন কিছু সংবিধান আছে তেমনি পারিবারিক সংবিধানও থাকা দরকার। যেমন পরিবারের সবার সঙ্গে সদ্ভাব গড়ে তোলা, সাংসারিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা, মিথ্যে না বলা, গুরুজনদের শ্রদ্ধা করা, নির্দিষ্ট সময়ে ঘরে ফেরা, নিজের কাজ নিজে সম্পন্ন করা, মিথ্যেকে ঘৃণা করা এবং মানবিক মূল্যবোধগুলোর চর্চার মাধ্যমে অন্তরকে বিকশিত করা। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, আমাদের সমাজে প্রচলিত যৌথ পরিবারে পারস্পরিক সম্প্রীতি গভীর হয়, অটুট থাকে। অসুখ বিসুখসহ নানা সমস্যায় একে অন্যের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। এতে অনেক বড় সমস্যাও সমাধান হয়ে যায় অতি সহজে। সময়ের তাগিদে যৌথ পরিবার কিংবা পারিবারিক বন্ধন অটুট রাখার বিষয়টি যখন এই সমাজে ক্রমান্বয়ে গুরুত্বহীন হয়ে উঠছে, ঠিক সেই মুহূর্তে আজকের এই আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। আসুন আমরা সেই ভাবনাকে বুকে নিয়ে আবার একি সূত্রে আবদ্ধ হই ।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৫ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ১৫ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
দিবস—–

(ক) আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস।

আজ যাদের জন্মদিন—- .

১৭৭৩ – ক্লেমেন্স ভন মেটরনিখ, জার্মান-অস্ট্রিয়ান রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রনায়ক এবং তার যুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ কূটনীতিক।  .
১৭৮৬ – জেনারেল ডিমিট্রিস প্লাপাউটিস, গ্রিসের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান বিপ্লবী সেনানায়ক।

১৮১৭ – দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ভারতের ধর্মীয় সংস্কারক; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা।
১৮৪৮ – ভিক্টর ভাসনেতসভ, রুশ চিত্রশিল্পী।
১৮৫৬ – এল ফ্রাঙ্ক বাম, মার্কিন লেখক।
১৮৫৭ – উইলিয়ামিনা ফ্লেমিং, স্কটল্যান্ডীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

১৮৫৯ – পিয়েরে কুরি, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী।
১৮৬২ – আর্থার শ্নিজলার, অস্ট্রীয় নাট্যকার।
১৮৯০ – ক্যাথেরিন অ্যান পোর্টার, মার্কিন লেখক।
১৮৯১ – মিখাইল বুলগাকভ, রুশ লেখক।
১৮৯২ – জিমি ওয়াইল্ড, মুষ্টিযোদ্ধা ।
১৮৯৫ – প্রেসকট বুশ, মার্কিন সিনেটর এবং জর্জ ডব্লিউ বুশের পিতামহ।

১৮৯৫ – উইলিয়াম ডি বায়রন, মার্কিন কংগ্রেসম্যান।
১৮৯৮ – আর্লেট্টি ফরাসি মডেল এবং অভিনয়শিল্পী।
১৮৯৯ – জিন ইটিন্নি ভ্যালুই, ফরাসি জেনারেল।
১৯০২ – রিচার্ড ডি ডেলেই, শিকাগোর মেয়র।
১৯০৩ – মারিয়া রাইখ, জার্মান বংশোদ্ভূত গণিতবিদ এবং প্রত্নতত্ত্ববিদ।
১৯০৫ – (ক)  ভারতীয় বাঙালি লেখক ও সাহিত্যিক শ্যামলকৃষ্ণ ঘোষ।
(খ) জোসেফ কটেন, মার্কিন অভিনেতা।
১৯০৭ – সুখদেব থাপার, ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা।
১৯০৯ – জেমস মেসন, ইংরেজ অভিনেতা।
১৯১৫ – পল স্যামুয়েলসন, বিখ্যাত মার্কিন অর্থনীতিবিদ ও আধুনিক অর্থনীতির জনক।
১৯১৫ – চারু মজুমদার, ভারতীয় বিপ্লবীনেতা।
১৯৩২ – প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাগর সেন ।
১৯৩৫ – টেড ডেক্সটার, বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটার।
১৯৬৭ – মাধুরী দীক্ষিত, প্রখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।
১৯৮১ – প্যাট্রিস এভরা, ফরাসি-সেনেগালীয় আন্তর্জাতিক ফুটবলার।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১০০৪ – দ্বিতীয় হেনরি ইতালির রাজা হিসেবে অভিষিক্ত।
১৬২৫ – অস্ট্রিয়ায় ১৬ বিদ্রোহী কৃষকের ফাঁসি হয়।
১৭৭৬ – প্রথম বাষ্প চালিত জাহাজ বানানো হয়েছিলো।
১৮১৮ – বাংলা ভাষার প্রথম সংবাদপত্র বেঙ্গল গেজেট প্রকাশিত হয়।
১৯৫১ – দৈনিক সংবাদ-এর আত্মপ্রকাশ।
১৯৫৪ – আদমজি মিলে বাঙালি-অবাঙালি দাঙ্গা। সরকারি হিসাবে নিহত ৪০০, বেসরকারি মতে ৬০০।
১৯৬০ – কঙ্গো প্রজাতন্ত্র স্বাধীন হয়।
১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ব্রাজিল।
১৯৮৮ – আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহার শুরু।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১১৫৭ – রুশ যুবরাজ ইউরি ডলগোরুক।
১৮৮৬ – মার্কিন নারী কবি এমিলি ডিকিনসন।
১৮৯৪ – ভূদেব মুখোপাধ্যায়, একজন বিশিষ্ট লেখক এবং শিক্ষাবিদ।
১৯৩৬ – স্যার রাজেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়,ভারতের যশস্বী বাঙালী শিল্পপতি।
১৯৯৪ – সুরকার, কণ্ঠশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক আবদুল আহাদ।
২০২৩ – বাংলা চলচ্চিত্রের মিয়াভাই খ্যাত নায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা ১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক)।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সাগর সেনের জন্ম দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

সাগর সেন প্রখ্যাত বাঙালি রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী।সাগর সেন ১৫ মে ১৯৩২ সালে বর্তমান ফরিদপুর, ব্রিটিশ ভারতের একটি রাজ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিজনবিহারী সেন এবং নয়নমঞ্জরী সেনের কনিষ্ঠ পুত্র।তার শৈশব কেটেছে বর্তমান বাংলাদেশে। যাইহোক, দেশভাগের পর পরিবারটি কলকাতার বরানগরে চলে আসে।

তাঁর প্রথাগত সঙ্গীত শিক্ষা হয় কলকাতায়। কলকাতার পিলগ্রিম ইনস্টিটিউশনে তাঁর স্কুলের পড়াশোনা। তারপর কলেজের পাঠ সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। তাঁর প্রধান জীবিকা ছিল সঙ্গীত। এছাড়া তিনি কলকাতা কর্পোরেশনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষক হিসেবে আজীবন যুক্ত ছিলেন।
বাংলা চলচ্চিত্রে নেপথ্য সঙ্গীতের কণ্ঠশিল্পী ছিলেন তিনি। যেমন – যে যেখানে দাঁড়িয়ে, পরিচয়, আবির্ভাব,
মন্ত্রমুগ্ধ, পরিচয়’ চলচ্চিত্রে ‘আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে’ গানটির জন্য ১৯৭৯ সালের নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসাবে বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার বা বিএফজিএ লাভ করেন।
তবে আধুনিক বাংলা গান অল্প কয়েকটি গেয়েছেন। উল্লেখযোগ্য গানগুলি হল-
এই জীবন এমনি করে আর সয় না, তৃষিত নয়নে এসো, কি হলো চাঁদ কেন মেঘে ঢেকে গেলো।
সাগর সেনের প্রকৃতিদত্ত বলিষ্ঠ-উদার-ভাবময় কণ্ঠ-এ গীত অবিস্মরণীয় রবীন্দ্রসঙ্গীতের কয়েকটি হল –
তোমরা যা বলো তাই বলো, জীবনে আমার যত আনন্দ, ওই ঝঞ্ঝার ঝংকারে ঝংকারে, আমার নয়ন তব নয়নের, সখী বহে গেলো বেলা, আপনাকে এই জানা আমার ফুরাবে না, কেন আমায় পাগল করে যাস, ওই মালতীলতা দোলে, আমি জেনে শুনে বিষ করেছি পান, আজ জ্যোৎস্নারাতে সবাই গেছে বনে।
পারিবারিক জীবন-
সাগর সেন ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে সুমিত্রা সেনকে বিয়ে করেন। তাদের তিন ছেলে। তারা হলেন প্রিয়ম সেন, প্রীতম সেন এবং প্রমিত সেন। প্রমিত সেন একজন সঙ্গীত শিল্পী।
১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতায় স্থাপন করেন নিজস্ব সঙ্গীত বিদ্যালয় – “রবিরশ্মি”।
তার অভিভাবকত্বে ‘রবিরশ্মি’ র ছাত্র ছাত্রীরা বিভিন্ন সময়ে রবীন্দ্র সদনে, শিশির মঞ্চে, কলামন্দিরে ‘শ্রাবণসন্ধ্যা’, ‘শাপমোচন’, ‘ঋতুরঙ্গ’, ‘স্বদেশী নায়ে বিদেশী খেয়া’,’বিশ্বজন মোহিছে’ নামীয় সঙ্গীতানুষ্ঠান পরিবেশন করেন। এই অনুষ্ঠানগুলিতে তিনি নিজে এমনকি খ্যাতনামা সঙ্গীত শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়,সুচিত্রা মিত্র, বাণী ঠাকুর প্রমুখেরা অংশ নিতেন।
১৯৮১ সালে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তবে জীবনের শেষ দেড় বছর তিনি সমানভাবে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। অবশেষে, তিনি ৫০ বছর বয়সে ৪ জানুয়ারী, ১৯৮৩ সালে প্রয়াত হন।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে – ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের একজন শহীদ, সুখদেব থাপার।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে সুখদেব থাপার ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী।

সুখদেব থাপার ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। সুখদেব থাপার ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের একজন শহীদ। তিনি শহীদ ভগৎ সিংহের এক অনন্য বন্ধু হিসাবেও পরিচিত।
বিপ্লবী সুখদেব পঞ্জাবের লুধিয়ানায় ১৯০৮ সালের ১৫ মে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অত্যাচার দেখেছেন এবং সেই কারণেই তিনি দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে বিপ্লবী দলে যোগ দেন। সুখদেবের পিতার নাম শ্রী রামলাল থাপার। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট সমাজসেবক। সুখদেবের জন্মের ২ বছর পর তার বাবা মারা যান। সুখদেবকে তার কাকা শ্রী অচিন্তরাম থাপার লালন-পালন করেন। সুখদেবের জন্মের সময় তার কাকা অচিন্তরাম জেল খাটছিলেন। সুখদেব এমন এক বৈপ্লবিক পরিবেশে বড় হয়। সুখদেব যখন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র, তখন রাজ্যপাল তাঁর স্কুলে আসেন। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে সমস্ত ছাত্ররা রাজ্যপালকে সালাম দিল, কিন্তু সুখদেব তা করল না। সুখদেবকে তখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কেন তিনি গভর্নরকে স্যালুট করেননি, সুখদেব স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, তিনি কোনও ইংরেজকে স্যালুট করবেন না।
প্রচন্ড সাহসী ছিলেন তিনি। এরপর সুখদেব আর ভগৎ সিং মিলে পরবর্তীতে বিপ্লবী দলের কাজ চালিয়ে গেলো। একটা বাড়ী ভাড়া নিল। দিনের বেলায় বাইরে থাকত আর রাত করে ফিরত। এভাবেই বাড়ির মালিক ও আশপাশের লোকজনের সন্দেহ হলো। এ কারণে সুখদেব বুদ্ধি করে নিজের মাকে নিয়ে এলো সেই বাড়িতে । এবার কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে, সে উত্তর দিত সে কাজ করে, অনেক দূরে রাস্তার কাজ চলছে। দিন-রাত কাজ করে বাড়ি আসতে দেরি হয়। এই ভাবেই চলতে থাকল তাদের গোপন কার্যকলাপ। চোখে মুখে তখন দেশকে স্বাধীন করার স্বপ্ন। য ভাবেই হোক এই পরাধীনতার গ্লানি কাটাতে হবে এবং ইংরেজ দের এ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেশ মাতৃকার শৃঙ্খল মুক্ত করতে হবে।
খুব সাহসী ছিলেন সুখদেব। লাহোরে বোমা তৈরির কাজ শুরু হলে ফিরোজপুর থেকে বোমার কন্টেইনার আনতেন। একবার মালামাল আনতে গিয়ে সিপাহীদের ধাবায় চলে গিয়েছিলেন। সুখদেবকে অনেক মার খেতে হয়েছে। সুখদেব চুপচাপ মারতে থাকলেন, কিন্তু কিছু বললেন না, কারণ তার কাছে তখন পিস্তল, কার্তুজ এবং বোমা বানানোর উপকরণ ছিল। এক সিপাহী বলল এই থলিতে কি আছে, সুখদেব হেসে বুদ্ধি দিয়ে বলল- সিপাহী জি এর মধ্যে পিস্তল আর কার্তুজ আছে, সিপাহীরা এটা কে মজা ভেবে হেসে চলে যায়। তার সাধারন বুদ্ধিমত্তায় সে যাত্রায় বেঁচে যায়।
সাইমন কমিশনের বিরোধিতা করতে গিয়ে লাঠিচার্জে লালা লাজপত রায় মারা গেলে স্যান্ডার্সকে হত্যাকারী বিপ্লবীদের মধ্যে সুখদেবও ছিল। এই ঘটনা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল এবং বিপ্লবীরা এবং সমগ্র দেশ স্যান্ডার্সকে হত্যার আননদ উদযাপন করেছিল। স্যান্ডার্স হত্যা মামলাটি ‘লাহোর ষড়যন্ত্র’ নামে পরিচিতি পায়। এই মামলায় শিবরাম রাজগুরু, সুখদেব ও ভগৎ সিংকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯৩১ সালের ২৩শে মার্চ বিপ্লবীরা ফাঁসির কাষ্ঠে বন্দী হয়ে দেশের তরুণদের হৃদয়ে স্বাধীনতার জন্য নতুন আকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয়। লাহোর কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরে শিবরাম রাজগুরু, ভগত সিং এবং সুখদেব থাপারের মরদেহ চরম গোপনীয়তায় দাহ করা হয়। মাত্র ২৪ বছর বয়সে সুখদেব দেশের জন্য নিজেকে বলি দেন।
তাঁদের স্মরণে ভারতের পাঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার শতদ্রু নদীর তীরে হুসেইনিওয়ালা গ্রামে নির্মিত হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ । প্রতি বছর শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করতে ২৩ শে মার্চ তাঁদের মৃত্যুর দিনটিকে স্মরণে রেখে “শহীদ দিবস” উদযাপিত হয়।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

মানবতা মানুষের উৎকৃষ্ট বৈশিষ্ট্য – একটি পর্যালোচনা : দিলীপ রায়।।।।

“মানবতা” শব্দ নিয়ে বেশ কয়েকটি লেখা পাঠক সমাজে ইতিমধ্যে উপহার দিয়েছি । তবুও আমি মনে করি ‘মানবতা’ নিয়ে ঐ কয়েকটা লেখা জন-সচেতনার পক্ষে যথেষ্ট নয় । মানবতা, মানবিকতা, মানবপ্রেমী, ইত্যাদি শব্দগুলি আজকের দিনে খুব প্রাসঙ্গিক । রাস্তা ঘাটে হাঁটলে এবং চারিদিকের মানুষজনের দিকে তাকালে মানবিকতার কথা মনের ভিতর উদ্রেক ঘটলে, মুখে একটা শুকনো হাসি পায় ।

একটা কথা বার বার ঘুরপাক খায়, “হায় রে মানবিকতা ! তোর এত আকাল !” চোখ বুজে ভাবলে একটা কথা মুখ দিয়ে উচ্চারণ হয়, “নিঃস্বার্থ মানবিকতা কোথায় ?” অথচ আমরা জানি, প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে মানবিকতা বিরাজমান । মনুষ্যত্বহীন মানুষকে মানুষ বলা সমাজের দৃষ্টিতে প্রচণ্ড কঠিন । সমাজের দৃষ্টিতে মানবিকতা মানুষের সুপ্ত গুণাবলীর মধ্যে অন্যতম গুণ । সুতরাং এটা বলা যায়, মানুষ মানবিকতার অধিকারী । মানুষ্যত্ববোধ, মনুষ্যত্বের বিকাশ ও মানুষের কার্যকর অস্তিত্বের মধ্যেই “মানুষ’এর প্রকাশ । তাই বলা চলে, মানবিকতা ছাড়া মানুষ নয় । মানবিকতা আছে বলেই মানুষ অর্থাৎ মানবিকতা ধারন বা লালন করে বলেই মানুষ । কিন্তু দুঃখের বিষয় – মানব কল্যাণে মানবিকতার বহিঃপ্রকাশ দূরবীণ দিয়ে দেখার মতো !
“মানবতা” শব্দের সঙ্গে গভীরভাবে যে শব্দটি জড়িয়ে আছে সেটা হচ্ছে ‘নিঃস্বার্থ’ । কারণ আমরা জানি, যখন কোনো মানুষ, মানুষের কল্যাণে কাজ করবে সেটা থাকতে হবে সম্পূর্ণ নিঃস্বার্থ । কিন্তু বতর্মানে একেবারে স্বাথের্র বাইরে মানুষ মানবিকতার নিরিখে কতটা কাজ করে বা করছে সেটা স্থিরভাবে বলা খুব কঠিন । কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষভাবে কোনো স্বার্থ না থাকলেও পরোক্ষভাবে রয়েছে । বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক সংগঠনকেই মানবসেবা, মানব কল্যাণে কাজ করতে দেখা যায় । তাদের প্রয়াস কতটা ব্যাপৃত সেটা এখন ভাববার বিষয় ? সমাজে যারা অভাবী, অসহায়, সম্বলহীন, খেটে খাওয়া অতি সাধারণ মানুষ প্রয়োজনে ঐসব সংগঠন থেকে তারা কতটা উপকৃত হচ্ছে – তার কোনো রিপোর্টিং বা সংবাদ মাধ্যমে খবর আমাদের চোখে পড়ছে না ! তারা আর্থিক দিক থেকে যেমন দুর্বল তেমনি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে । মুখে না বলে বাস্তবে অভাবী, যাকে বলে অভাবগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ালে মানব কল্যাণ কথাটার স্বার্থক রূপ পেতো ।
মানবতাপ্রেমী বলে যারা চিল্লাচ্ছেন তাঁদের কর্মকাণ্ড খানিকটা বিজ্ঞাপনের ন্যায় । বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে নিজেদেরকে মানবতাপ্রেমী হিসাবে মানুষের সামনে তুলে ধরতে তাদের মুখ্য চিন্তা । চোখের সামনে কোনো কিছুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আজকের মানুষেরা সেই অসহায় মানুষের হাতে ধরে ওঠানোর সময়টুকু পর্যন্ত পান না, অথচ চলমান সেই (কিছু) মানুষের মুখে অহরহ – তিনি একজন প্রকৃত মানবতাপ্রেমী মানুষ । এটা লজ্জার, যেমনি নিজের কাছে তেমনি সমাজের কাছেও । তাই মাঝে মাঝে মনে হয় মানুষ আজ বড় অদ্ভূত ধরনের, বোঝা কঠিন ! আবার একই মানুষকে দুই ধরনের ভূমিকায় দেখা যায় – কোনো সময় তিনি জনদরদি আবার কোনো সময় তিনি পশুর চেয়ে হিংস্র । মানবিক দিকের কাজটা দেখাতে গিয়ে নিজের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হলে, তিনি তখন আসল রূপ ধারন করেন । পশুর চেয়েও হিংস্র হয়ে ওঠেন । তখন হিতাহিত জ্ঞানের অভাব ঘটে ।
তাই বলি, মনুষ্যত্ব বা মানবিকতা আমাদের অন্তরের বিষয় । আর এই অভ্যন্তরীণ বিষয়কে জাগ্রত করতে আমাদের চাই আন্তরিক ইচ্ছা । এই মানবতা বা মানবিকতা গড়ে তুলতে আমাদের চাই মানসিক শক্তি, অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাস, যা আমাদের প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে ও বিভিন্ন বিপদের বিরূদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করবে । এই ক্ষেত্রে স্বামী বিবেকানন্দের কথায় আসা যেতে পারে । তিনি মানুষকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, “নীতিপরায়ন ও সাহসী হও । কাপুরুষেরা পাপ করিয়া থাকে, বীর কখনও পাপ করে না-এমনকি মনে পর্যন্ত পাপ আনতে দেয় না । সিংহ-গর্জনে আত্মার মহিমা ঘোষণা কর, জীবকে অভয় দিয়ে বল – “উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত প্রাপ্য বরান্‌ নিবোধিত” -ওঠ, জাগো, লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থামিও না । এস মানুষ হও । …… নিজেদের সংকীর্ণ গর্ভ থেকে বেরিয়ে এসে বাইরে গিয়ে দেখ, সব জাতি কেমন উন্নতির পথে চলেছে । তোমরা কি মানুষকে ভালবাস ? তোমরা কি দেশকে ভালবাস ? তাহলে এসে, আমরা ভাল হবার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা করি ।”
মানবতা ও মানবসেবা একার্থক নয় । মানবসেবার মধ্যে পরোপকার জাতীয় একপ্রকার অনুভূতির জন্ম হয় । সেক্ষেত্রে স্বজ্ঞানে বা অ-জ্ঞানে বিশেষ অহংকারবোধের উদ্রেক হয় । তবে মানবসেবা মানবিক হতে পারে – “যখন মানুষ অন্যের সেবা করে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিকে উপেক্ষা করে, নিঃস্বার্থভাবে অন্যের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে, সেবা ও মানবিকতার আদর্শের মিলনকে স্বার্থক করে তোলে ।” মানুষের মানবিকতার উৎকর্ষতা নির্ধারিত হয় জগতে বিরাজমান সমস্ত জীবের প্রতি আচরণের নিরিখে । মানুষের নৈতিকতা, দায়দায়িত্ব, কর্তব্যপরায়নতার বহিঃপ্রকাশ হয় এই মহান আদর্শের মধ্য দিয়ে । সুতরাং এই কথা বলাই যায় যে, মানবতা কোনো মতবাদ নয়, একটি আদর্শ ।
পরিশেষে এটা পরিষ্কার, মানুষ মানবতার অধিকারী । আর ‘মানবতা’ হচ্ছে মানুষের বৈশিষ্ট্য । মানুষের সেবা করাই হচ্ছে মানব ধর্ম । জীব ঈশ্বরের এক মহান সৃষ্টি । প্রতিটি জীবের মধ্যে ঈশ্বর বর্তমান । জীবের সেবা করার মাধ্যমে ঈশ্বরের সেবা করা যায় । সেইজন্যেই স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, “জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর” । বাণীটি মানব কল্যাণের ক্ষেত্রে ভীষণভাবে তাৎপর্যপূর্ণ ।
কলমেঃ দিলীপ রায় (৯৪৩৩৪৬২৮৫৪)
(তথ্যসূত্র ও ছবি : সংগৃহীত) ।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে মৃণাল সেনের অবদান – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।।

প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও লেখক মৃণাল সেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি তাঁর ছবির মধ্য দিয়ে মানুষের কথা, তাদের দুঃখ-বেদনা, হেরে যাওয়ার কথা, আর সেই হেরে যাওয়া থেকে লড়াই করে উঠে আবার বেঁচে ওঠার কথা বলেছেন। তৎকালীন যে তিন স্তম্ভ (সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক এবং মৃণাল সেন এই ত্রিশঙ্কু), বাংলা চলচ্চিত্র কে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠা করেছিল, তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মৃণাল সেন।

আজ তার জন্ম দিবস।

জন্ম——

১৯২৩ সালের ১৪ মে মৃণাল সেন তৎকালীন ব্রিটিশ ভারত পূর্ব বঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশ) ফরিদপুরের একটি শহরে বৈদ্যব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রথমিক জীবন —

ফরিদপুরে থাকাকালীন সময়ে তিনি সেখানেই উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি পড়াশোনার জন্য কলকাতায় আসেন এবং স্কটিশ চার্চ কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা পড়াশোনা করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক শাখার সঙ্গে যুক্ত হন। যদিও তিনি কখনও কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন নি। চল্লিশের দশকে তিনি সমাজবাদী সংস্থা আইপিটিএর (ইন্ডিয়ান পিপ্‌লস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশন) সঙ্গে যুক্ত হন এবং এর মাধ্যমে তিনি সমমনভাবাপন্ন মানুষদের কাছাকাছি আসেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবার পর তিনি একজন সাংবাদিক, একজন ওষুধ বিপননকারী এবং চলচ্চিত্রে শব্দ কলাকুশলী হিসাবে কাজ করেন। চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী হন কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরীতে, এক জার্মান লেখক রুডল্ফ আর্নহেইম লেখা, ‘ফিল্ম এস আর্ট’ বইটি পড়ে। চলচ্চিত্র জগতে তাঁর প্রথম হাতেখড়ি ঘটে, কলকাতার টলিপাড়ার একটি স্টুডিওতে অডিও টেকনিশিয়ান হিসেবে। যদিও সে কাজটি তাঁর একেবারেই পছন্দ ছিল না।

কর্ম জিবন—

মৃণাল সেন বাংলা, হিন্দি, ওড়িয়া ও তেলুগু ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। তিনি কখনও কঠোর বাস্তব, তো কখনও মানুষের মনের থেকে স্বপ্ন ও দুঃস্বপ্নকে নিংড়ে নিয়ে এসে পর্দায় তৈরি করতেন এক অদ্ভুত ছবি।আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বেড়াজালে, যে মানুষগুলোর ভাষা হারিয়ে গেছিল, সেন হয়ে উঠেছিলেন তাদের কণ্ঠস্বর, তাদের প্রতিবাদের ভাষা।
১৯৫৫ সালে মৃণাল সেনের প্রথম পরিচালিত ছবি রাত-ভোর মুক্তি পায়। তবে এই ছবিটি বেশি সাফল্য না পেলেও তার দ্বিতীয় ছবি নীল আকাশের নিচে তাকে স্থানীয় পরিচিতি এনে দেয়। আর তার তৃতীয় ছবি বাইশে শ্রাবণ থেকে তিনি আন্তর্জাতিক পরিচিতি পান।
১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত ছবি ভুবন সোম।অনেকের মতে এই ছবিটি মৃণাল সেনের শ্রেষ্ঠ ছবি। তৎকালীন অন্যান্য বাংলা চলচ্চিত্র পরিচালকদের মত সেনের ছবিতেও ধরা পড়েছিল শহর কলকাতা। তিনটি ছবি ‘সাক্ষাৎকার’ , ‘কলকাতা 71’ , এবং ‘পদাতিক’, বিভিন্ন কলকাতাকেন্দ্রিক ছবিগুলির মধ্যে সেরা ছবি হিসেবে পরিগণিত হয়। প্রথাগত ধারণার ঊর্ধ্বে এই ছবিগুলি, দারিদ্র, দুর্ভিক্ষ, বেকারত্বের মতন বাস্তব বিষয়গুলি নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছিল। মৃণাল সেন মধ্যবিত্ত সমাজের নীতিবোধকে তুলে ধরেন তার দুটি ছবি এক দিন প্রতিদিন (১৯৭৯) এবং খারিজ (১৯৮২) এর মাধ্যমে। খারিজ ১৯৮৩ সালের কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার পেয়েছিল। ১৯৮০ সালের চলচ্চিত্র আকালের সন্ধানে। এই ছবিতে দেখানো হয়েছিল একটি চলচ্চিত্র কলাকুশলীদলের একটি গ্রামে গিয়ে ১৯৪৩ খ্রীষ্টাব্দের দুর্ভিক্ষের উপর একটি চলচ্চিত্র তৈরির কাহিনী। আকালের সন্ধানে ১৯৮১ সালের বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বিশেষ জুরি পুরস্কার হিসাবে রুপোর ভালুক জয় করে। মৃণাল সেনের পরবর্তীকালের ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য মহাপৃথিবী (১৯৯২) এবং অন্তরীন (১৯৯৪)। এখনও অবধি তার শেষ ছবি আমার ভুবন মুক্তি পায় ২০০২ সালে।
মৃণাল সেন শুধু বাংলা নয় ওড়িয়া এবং তেলেগু ছবিও তৈরি করেছিলেন, যেগুলি একই রকম প্রশংসার অধিকারী। সত্যজিৎ রায়, তার তেলেগু ছবি, ‘ওকা ওরি কথা’, দেখার পর বলেছিলেন, মৃণাল সেনের ছবি এবং তার তৈরীর ধরন দেখে তিনি ঈর্ষান্বিত।মৃনাল সেন বেশকিছু ডকুমেন্টারি ও শর্ট ফিল্ম তৈরি করেছিলেন, যেগুলি বেশিরভাগই আন্তর্জাতিক উৎসবে জায়গা করে নিয়েছিল।
ভারত সরকার দ্বারা তিনি, ‘পদ্মভূষণ’ (১৯৮১) এবং ‘দাদাসাহেব ফালকে'( ২০০৫) পুরস্কার এ ভূষিত হন। এছাড়া তিনি ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ অবধি ভারতীয় সংসদের সাম্মানিক সদস্যপদ লাভ করেন। ফরাসি সরকার তাকে কম্যান্ডার অফ দি অর্ডার অফ আর্টস অ্যান্ড লেটারস (Ordre des Arts et des Lettres ) সম্মানে সম্মানিত করেন। এই সম্মান ফ্রান্সের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান। ২০০০ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে অর্ডার অফ ফ্রেন্ডশিপ সম্মানে ভূষিত করেন।
মৃণাল সেন ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের ৩০ তারিখ রবিবার সকালে নিজ বাসভবনে ৯৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবপেজ।।

Share This