Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

এক সংগ্রামী মায়ের সংগ্রামের কাহিনী।।।।

এমন মায়ের সংগ্রাম আপনারা আগে শোনেননি। নিজের নয় বছরের মেয়েকে ঝকঝকে একটা ভবিষ্যৎ উপহার দিতে পেট্রোল পাম্পে কাজ করছেন ২৭ বছরের মা। উপলক্ষ একটাই, মেয়ের শিক্ষা। বাঁকুড়ার তীব্র দাবদাহ, গনগনে আগুন ছুটেছে বেশ কিছুদিন। এবার পালা বৃষ্টির। তবে গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন বাসে করে বাঁকুড়া শহরের গোবিন্দনগর পেট্রোল পাম্পে কাজ করতে আসছেন টুম্পা সিংহ।

মাঝে মাঝে এই পেট্রোল পাম্পেই মেয়েকে নিয়ে আসেন টুম্পা। এখানেই বসে পড়াশোনা করে টুম্পার কন্যা আয়ুশী সিংহ। কেন এই কাজ করছেন টুম্পা? একজন নারী হয়েও পেট্রোল পাম্পের চাকরি করছেন বলে কি সমাজের কাছে কোনও কথা শুনতে হয়েছে তাঁকে? উত্তরে টুম্পা বলেন, “বাড়িতে বাবা মা রয়েছেন, আয়ুশীকে বড় করে তোলাই আমার লক্ষ। কষ্ট হলেও আমাকে কাজ করতে হবে। সবাই মোটামুটি মুখ চেনা হয়ে গেছে, মানুষ আমার কাজকে ছোট না করে বরঞ্চ উৎসাহ যোগায়।”
পেট্রোল পাম্প এর ওনার নিবেদিতা বিশ্বাস জানান, টুম্পার বাড়িতে তার বাবার দোকান থেকে যা আয় হয় তাতে খাবার খরচই ভাল ভাবে যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। সেই কারণেই মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়ে মানুষ করার জন্য টুম্পা কাজের সন্ধানে আসেন এই পেট্রোল পাম্পে। তার পর থেকেই কাজ শুরু করেছেন টুম্পা। পেট্রোল পাম্পের ওনার নিবেদিতা বিশ্বাস আরও বলেন যে, “আমি এই ফাইটিং স্পিরিটটাকে কুর্নিশ জানাই।”
একজন মা পেট্রোল পাম্পে কাজ করছেন। সেই ছবি যেন আরও বেশি করে অনুপ্রেরণা যোগায় মহিলাদের। প্রায় নিয়মিত গোবিন্দনগর এলাকার এই পেট্রোল পাম্পে তেল নিতে আসেন বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজের নার্সিং স্টাফ নিবেদিতা খাঁ। তিনি বলেন, “এত প্রতিকূলতার মধ্যেও জীবন যুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন এই দিদি। এই লড়াই সত্যিই অপ্রিসিয়েবেল।” এছাড়াও পেট্রোল পাম্পে তেল নিতে আসা আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা ভানু বিশ্বাস বলেন, “পৃথিবীতে এর উদাহরণ বিরল। একজন মা তার সন্তানকে শিক্ষিত করতে যে কাজ করছে এরকম আর কোথাও হয়নি।”
বাঁকুড়ার টুম্পা সিংহ যেন সেই সব মেয়েরই জলন্ত উদাহরণ।

।।আবদুল হাই, বাঁকুড়া।।

Share This
Categories
রিভিউ

আজ ১৪ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ১৪ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৩১৬ – চতুর্থ চার্লস, পবিত্র রোমান সম্রাট, হাউজ অফ লুক্সেমবার্গ থেকে বোহেমিয়ার দ্বিতীয় রাজা।  .
১৭৭১ – রবার্ট ওয়েন, ব্রিটিশ সমাজ সংস্কারক এবং কল্পলৌকিক সমাজতন্ত্র ও সমবায় আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ।

১৮৪৯ – ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি কবি ও সাহিত্যিকে।
১৮৬৩ – জন চার্লস ফিল্ডস, কানাডীয় গণিতবিদ এবং ফিল্ডস পদক এর প্রতিষ্ঠাতা।
১৮৯২ – অগ্নিযুগের বিপ্লবী, যুগান্তর দলের নেতা ও শ্ৰীসরস্বতী প্রেসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অরুণ চন্দ্র গুহ।
১৯০০ – কানাডার কবি রবার্ট পিঙ্ক।
১৯০৭ – আইয়ুব খান, পাকিস্তানি সেনাপতি ও রাষ্ট্রপতি।
১৯১০ – কেন ভিলজোয়েন, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার।
১৯১০ – নে উইন, বার্মার (বর্তমান – মায়ানমার) বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সামরিক কমান্ডার ছিলেন।
১৯২৩ – মৃণাল সেন, বাঙালী চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার এবং লেখক।
১৯৪৪ – জর্জ লুকাস, মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক।
১৯৪৮ – বব উলমার, আন্তর্জাতিক ইংরেজ ক্রিকেট তারকা, পেশাদার ক্রিকেট কোচ ও ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার।
১৯৫২ – রবার্ট জেমেকিস, মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক এবং লেখক।
১৯৫৫ – পিটার কার্স্টেন, সাবেক ও প্রথিতযশা দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৫৯ – কার্লাইল বেস্ট, বার্বাডীয় বংশোদ্ভূত সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৬৯ – কেট ব্লানচেট, অস্ট্রেলীয় অভিনেত্রী ও নাট্য নির্দেশক।
১৯৮৩ – তাতেন্দা তাইবু, জিম্বাবুয়ের সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৮৪ – মার্ক জাকারবার্গ, জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা।
১৯৮৫ – জ্যাক রাইডার (কুস্তিগির), মার্কিন পেশাদার কুস্তিগির।
১৯৯৩ – মিরান্ডা কসগ্রভ, আমেরিকান অভিনেত্রী এবং গায়িকা।
১৯৯৪ – মারকিনয়োস, ব্রাজিলীয় পেশাদার ফুটবলার।
১৯৯৬ – মার্টিন গ্যারিক্স, ডাচ ডিজে, রেকর্ড প্রযোজক এবং গায়ক।
১৯৯৭ – মানুষী ছিল্লার, ভারতীয় মডেল এবং মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৭ এর বিজয়ী।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৫৭৫ – এ্যাংগোলা পোর্তুগীজ ঔপনিবেশিক শক্তি দখল করে নেয়।
১৬৪৩ – চতুর্দশ লুই মাত্র চার বছর বয়সে ফ্রান্সের সম্রাট হন।
১৭৯৬ – এডওয়ার্ড জেনার পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দানের ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করেন।
১৮১১ – স্পেনের শাসন থেকে প্যারাগুয়ে মুক্তি লাভ করে।
১৮১১ – প্যারাগুয়ের স্বাধীনতা ঘোষণা।
১৮৪২ – ইলাস্ট্রেটেড লন্ডন নিউজ প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হয়।
১৮৮৯ – লন্ডনে শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধ সংস্থার উদ্বোধন হয়।
১৯১৩ – নিউ ইয়র্কের গভর্নর উইলিয়াম সুলজার রকফেলার ফাউন্ডেশনের তহবিল অনুমোদন করেন। যার হিসাব শুরু হয় জন ডি রকফেলারের ১০০ মিলিয়ন ডলার অনুদানের অর্থ দিয়ে।
১৯২৫ – ভার্জিনিয়া উলফ্-এর উপন্যাস ‘মিসেস ডলওয়ে’ প্রকাশিত হয়।
১৯৩৯ – লিনা মেডিনা চিকিৎসা ইতিহাসের সবচেয়ে কনিষ্ঠ মা হিসেবে চিহ্নিত হন। যার বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর।
১৯৪৮ – সর্বশেষ ব্রিটিশ সেনাদল ফিলিস্তিন ছাড়লে ইজরায়েল স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
১৯৫০ – ওয়ারস চুক্তি স্বাক্ষর।
১৯৫৪ – আদমজী পাটকলে বাঙালী ও অবাঙালী শ্রমিকদের মধ্যে দাঙ্গা সংঘটিত হয়।
১৯৫৫ – সোভিয়েত রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে ওয়ার শ’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৬৫ – চীন তার দ্বিতীয় আণবিক বোমার বিস্ফারণ ঘটায়।
১৯৭৩ – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক স্কাইল্যাব উৎক্ষেপণ।
১৯৭৬ – ইংল্যান্ডের ক্রীড়ামন্ত্রী রডেশীয় ক্রিকেট দলের ইংল্যান্ড সফর নিষিদ্ধ করেন।
২০১৮ – আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম টেস্টে তাদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম শতক করেন কেভিন ও’ব্রায়ান

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯১২ – অগুস্ত স্ত্রিন্দবারি, সুয়েডীয় নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও চিত্রশিল্পী।
১৯২৫ – হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড, বিখ্যাত ইংরেজ ঔপন্যাসিক।
১৯৪০ – এমা গোল্ডম্যান, নৈরাজ্যবাদী রাশিয়ান লেখক।
১৯৪৩ – অঁরি লা ফোঁতেন, বেলজীয় আইনজীবী এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ব্যুরোর প্রধান।

১৯৭২ – প্রভাবতী দেবী সরস্বতী, বাঙালি ঔপন্যাসিক।

১৯৮৭ – রিটা হেওয়ার্থ, মার্কিন অভিনেত্রী ও নর্তকী।

১৯৯৫ – ক্রিস্টিয়ান ব. আনফিন্সেন, মার্কিন প্রাণরসায়নবিদ।
১৯৯৮ – ফ্রাঙ্ক সিনাত্রা, মার্কিন গায়ক ও অভিনেতা।
১৯৯৮ – শওকত ওসমান, বাঙালি কথাসাহিত্যিক এবং প্রাবন্ধিক।
২০০১ – গিল ল্যাংলি, অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।
২০০৩ – ওয়েন্ডি হিলার, ইংরেজ অভিনেত্রী।

২০২০ – (ক)  আনিসুজ্জামান, বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক।
(খ) ড. খালিদ মাহমুদ, পাকিস্তানি বিচারক ও দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত।
(গ) দেবেশ রায়, ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক।
২০২২ – অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

বাঙালি কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং প্রবন্ধকার – রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় এর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

জন্ম ও পরিবার—— বর্ধমান জেলার কালনার সন্নিকটস্থ হুগলী জেলার বাকুলিয়া নামক গ্রামে মাতুলালয়ে ২১ ডিসেম্বর,১৮২৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আদি নিবাস বর্তমান হুগলী জেলার গুপ্তিপাড়া সন্নিকটস্থ রামেশ্বরপুর। তার পিতার নাম রামনারায়ণ এবং মাতার নাম হরসুন্দরী দেবী।

পিতা মারা যাবার পরে মাতুলালয়ে লালিত-পালিত হন।রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় একজন কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং প্রবন্ধকার ছিলেন।

শিক্ষাজীবন———-

রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইংরেজি, সংস্কৃত ও প্রাচীন ওড়িয়া কাব্য ও সাহিত্যে তাঁর জ্ঞান ছিল প্রখর। তিনি বাকুলিয়ার স্থানীয় স্কুল ও মিশনারি স্কুলে শিক্ষা শেষ করার পর কিছুকাল হুগলি মহসিন কলেজে অধ্যয়ন করেন। ।

কর্মজীবন—-—

কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সহায়তায় তিনি সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় সাহিত্য রচনা শুরু করেন। ১৮৫৫ সালে প্রকাশিত এডুকেশন গেজেটের তিনি সহ-সম্পাদক ছিলেন। গদ্য ও পদ্য উভয় ক্ষেত্রেই তাঁর কাজ সে সময়ের এডুকেশন গেজেটে প্রকাশিত হয়েছিল।
১৮৫২ সালে প্রকাশিত ‘মাসিক সংবাদ সাগর’ এবং ১৮৫৬ সালে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘বার্তাবাহ’ উভয়েরই সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৮৬০ সালে, তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ৬ মাস অধ্যাপনার পর আয়কর অ্যাসেসর এবং ডেপুটি কালেক্টর হন। এরপর তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১১ এপ্রিল ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন।

রচনাসমগ্র——

তিনি মূলত স্বদেশপ্রেমিক কবিরূপে বিখ্যাত। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মিনী উপাখ্যান, কর্মদেবী এবং শূরসুন্দরী।
পদ্মিনী উপাখ্যান (১৮৫৮), কর্মদেবী (১৮৬২), শূরসুন্দরী (১৮৬৮), কাঞ্চীকাবেরী (১৮৭৯), ভেক-মূষিকের যুদ্ধ (১৮৫৮), হোমারের কাব্যের অনুবাদ, নীতি কুসুমাঞ্জলি (১৮৭২)।
মৃত্যু— ১৩ মে, ১৮৮৭ সালে তিনি প্রয়াত হন ।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্মরণে, বিংশ শতাব্দী বাংলা গানের কিংবদন্তি গায়িকা – উৎপলা সেন।।।।

উৎপলা সেন ১২ মার্চ, ১৯২৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দী বাংলা গানের একজন প্রধান জনপ্রিয় গায়িকা। বাংলা গানের স্বর্ণযুগে প্রেম ও বিরহের গানে তিনি আলাদা বিষণ্ণ সুর তুলে ধরেছেন। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, স্বামী সতীনাথ মুখোপাধ্যায় এবং অন্যান্য গায়কদের সাথে অনেক জনপ্রিয় দ্বৈত গানও গেয়েছেন।

তিনি প্রথমে মা হিরণবালা দেবীর কাছে প্রশিক্ষণ নেন, তারপর ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খানের কাছে। তিনি ১৯৩৫ সালে ১৯১৩ বছর বয়সে ঢাকা বেতারে প্রথম জনসম্মুখে উপস্থিত হন। প্রথম রেকর্ড ১৯৩৯ সালে। ১৯৪১ সালে, সুরকার সুধীরলাল চক্রবর্তীর সুর করা এক হাতে মোর পূজা থালি গানটি খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। মহিষাসুরবমর্দিনীর – শান্তি দিল ভরি গানে আরও জনপ্রিয়তা পান, যা আজও শোনা যায়। এর পর তিনি
চল্লিশের দশকের গোড়ার দিকে কলকাতায় চলে আসেন এবং তখন থেকেই আকাশবাণীর সঙ্গে যুক্ত হন। বাংলা চলচ্চিত্রেও গান গেয়েছেন আনেক। বেনু সেনের সাথে প্রথম বিয়ে হয় তাঁ। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি সঙ্গীত সহকর্মী সতীনাথ মুখোপাধ্যায় কে ১৯৬৮ সালে বিয়ে করেন। একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
তাঁর ৬০০০ এর বেশি সিনেমা এবং রেকর্ডের গানের অধিকাংশই আজ বিস্মৃতপ্রায়। ইদানীং কালে দুই বাঙলাতেই পুরানো দিনের গানের চর্চা বাড়ছে – কিছু গান ‘পুনঃনির্মাণ’ মাধ্যমে আবার শোনা যাচ্ছে – এবং উৎপলা সেনের নাম আবার জনসমক্ষে শোনা যাচ্ছে। তাঁর কিছু জনপ্রিয় গান হলো যেমন, এত মেঘ এত যে আলো, ময়ুরপঙ্ক্ষী ভেসে যায়, পাখি আজ কোন সুরে গায় বা ঝিকমিক জোনাকির দ্বীপ জ্বলে শিয়রে।
দীর্ঘ কয়েক বছর ক্যান্সারাক্রান্ত উৎপলা সেন ১৩ মে, ২০০৫ সালে মারা যান কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি : দিলীপ রায়।।।।।

“দৃঢ় সত্যের দিতে হবে খাঁটি দাম, হে স্বদেশ, ফের সেই কথা জানলাম ।”
সুকান্ত ভট্টাচার্য

প্রথমেই বলে রাখি, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যকে বলা হয় গণমানুষের কবি । অসহায়-নিপীড়িত, নির্যাতিত, সর্বহারা মানুষের সুখ, দুঃখ তাঁর কবিতার মূল বিষয়। অবহেলিত মানুষের অধিকার আদায়ের স্বার্থে ধনী-মহাজন অত্যাচারী প্রভুদের বিরূদ্ধে সুকান্ত ভট্টাচার্যের কলম ছিল সক্রিয় ।

তাঁর কবিতায় ফুটে উঠেছে শোষণ-বঞ্চনার বিরূদ্ধে অভিব্যক্তি । তিনি চেষ্টা করেছেন কবিতার মাধ্যমে শ্রেণী বৈষম্য দূর করতে । সর্বক্ষণ তাঁর শ্যেন দৃষ্টি ছিল মানবতার জয়ের দিকে । অসুস্থতা এমনকি অর্থাভাব তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি । তাঁর মানবিক বোধ অবিস্মরণীয় । মানুষের কল্যাণ করা ছিল তাঁর একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান । মানবিক চেতনায় উদ্‌বুদ্ধ হয়ে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য বাংলা কাব্যধারার প্রচলিত প্রেক্ষাপটকে আমূল বদলে দিতে পেরেছিলেন । সেই কারণে আজও আমাদের কাছে তিনি নমস্য কবি ।
সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম ১৫আগস্ট, ১৯২৬ এবং মৃত্যু ১৩ মে, ১৯৪৭ । তাঁর মৃত্যু হয়েছিল ঠিক দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে । বাংলা সাহিত্যের নিরিখে তিনি ছিলেন তরুন কবি । তাঁর কবিতার পটভূমি মূলত মার্কসবাদী ভাবধারার এবং প্রগতিশীল চেতনার প্রেক্ষাপটে ।
বাবা ছিলেন নিবারন ভট্টাচার্য এবং মা সুনীতি দেবী । কালীঘাটের মহিম হালদার স্ট্রিটে মাতামহের বাড়িতে তাঁর জন্ম । তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল অবিভক্ত ফরিদপুর জেলার অর্থাৎ বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার, উনশিয়া গ্রামে । তিনি স্কুলে পড়ার সময় ছাত্র আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন । আর তা ছাড়া বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার কারণে তাঁর আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটে । এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, সুকান্তের বাল্যবন্ধু ছিলেন কবি অরুণাচল বসু । তাঁর জীবনে বাল্যবন্ধু অরুণাচল বসুর প্রভাব অবর্ণনীয় । অরুণাচল বসুর মা কবি সরলা বসু । তিনি সুকান্ত ভট্টাচার্যকে পুত্রস্নেহে ভালবাসতেন । সুকান্ত ছেলেবেলায় মাতৃহারা হলেও সরলা বসু তাঁকে সেই অভাব কিছুটা পূরণ করে দিয়েছিলেন । কবির জীবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছিল কলকাতার বেলেঘাটার ৩৪ হরমোহন ঘোষ লেনের বাড়িতে । সেই বাড়িটি এখনও অক্ষত আছে । শোনা যায়, পাশের বাড়িটিতে এখনও বসবাস করেন সুকান্তের একমাত্র জীবিত ভাই বিভাস ভট্টাচার্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, তেতাল্লিশের মম্বন্তর, ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরূদ্ধে কলম ধরেন । ১৯৪৪ সালে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেন । সেই বছর আকাল নামক একটি সংকলন গ্রন্থ তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়।
আট-নয় বছর বয়স থেকেই সুকান্ত লিখতে শুরু করেন । স্কুলের হাতে লেখা পত্রিকা “সঞ্চয়ে” একটি ছোট্ট হাসির গল্প দিয়ে প্রথম আত্মপ্রকাশ । তারপর কয়েকদিন পরে তাঁর লেখা বিবেকান্দের জীবনী প্রথম ছাপার মুখ দেখে বিজন গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘শিখা’ কাগজে । মাত্র এগারো বছর বয়সে ‘রাখাল ছেলে’ নামে একটি গীতিনাট্য রচনা করেন । এটি পরে ‘হরতাল’ বইতে সংকলিত হয় । এখানে জানিয়ে রাখি, পাঠশালাতে পড়ার সময়ে ‘ধ্রুব’ নাটকের নাম ভূমিকায়‍ অভিনয় করেছিলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য । সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাল্য বন্ধু লেখক অরুণাচল বসুর সঙ্গে মিলে আরেকটি হাতে লেখা কাগজ ‘সপ্তমিকা’ সম্পাদনা করেন । সেই সময় হাতে লেখা দেওয়াল পত্রিকার প্রচলন ছিল চোখে পড়ার মতো । বেশীর ভাগ দেওয়াল পত্রিকা স্টেশনের প্লাটফর্মে সাটানো থাকত, যাতে বেশী মানুষ পড়তে পারেন । অরুণাচল বসু তাঁর আমৃত্যু বন্ধু ছিলেন ।
মার্কসবাদী চেতনায় আস্থাশীল কবি হিসেবে সুকান্ত ভট্টাচার্য কবিতা লিখে বাংলা সাহিত্যে আলাদা জায়গা করে নিয়েছিলেন । সুকান্ত ভট্টাচার্য কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা ” দৈনিক স্বাধীনতার” (১৯৪৫) ‘কিশোর সভা’ বিভাগ সম্পাদনা করতেন । সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতায় অনাচার ও বৈষ্যমের বিরূদ্ধে প্রতিবাদি কন্ঠস্বর ফুটে ওঠে । গণমানুষের প্রতি গভীর মমতা প্রকাশ পেয়েছে তাঁর প্রত্যেকটি কবিতায় । তাঁর রচনাবলির মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য: ছাড়পত্র (১৯৪৭), পূর্বাভাস (১৯৫০), মিঠেকড়া (১৯৫১), অভিযান (১৯৫৩), ঘুম নেই (১৯৫৪), হরতাল (১৯৬২), গীতিগুচ্ছ (১৯৬৫) প্রভৃতি । পরবর্তী কালে উভয় বাংলা থেকে সুকান্ত সমগ্র নামে তাঁর রচনাবলি প্রকাশিত হয় ।
পার্টি ও সংগঠনের কাজে অত্যধিক পরিশ্রমের ফলে দুরারোগ্য ক্ষয়রোগে আক্রান্ত হন এবং ১৯৪৭ সালের ১৩ মে কলকাতায় মারা যান । মাত্র একুশ বৎসর বয়সে প্রতিভাধর কবির দেহাবসান ঘটে । স্বল্প বয়সে কবির দেহাবসান ঘটলেও সামান্য কয়েকবছরে অত্যাশ্চর্য কবিত্ব শক্তির পরিচয় দিয়ে গেছেন যেটা আজও আমাদের মধ্যে অমলিন । (তথ্যসূত্র: সংগৃহীত)
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের প্রয়াণ দিবসে আমার শতকোটি প্রণাম ।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৩ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ১৩ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১২২১ – আলেক্সান্দ্‌র নেভ্‌স্কি, কিয়েভের যুবরাজ।  .
১২৬৫ – ইতালির কবি দান্তে আলিঘিয়েরি।

১৪৮৩ – জার্মান ধর্মীয় নেতা বা সংস্কারক মার্টিন লুথার।
১৭০৭ – ক্যারোলাস লিনিয়াস, একজন চিকিৎসক ও প্রাণীবিজ্ঞানী।
১৮৫৭ – রোনাল্ড রস, একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী স্কটিশ চিকিৎসক ছিলেন।
১৯০৫ – ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ, ভারতের পঞ্চম রাষ্ট্রপতি ।
১৯০৭ – ড্যাফনি দ্যু মারিয়েই, ইংরেজ লেখিকা এবং নাট্যকার।
১৯১৮ – বালাসরস্বতী, ভারতীয় বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী।
১৯৩৮ – জিউলিয়ানো আমাতো, ইতালীয় রাজনীতিবিদ।
১৯৩৯ – হার্ভি কাইটেল, আমেরিকান অভিনেতা।
১৯৫১ – ছড়াকার আবু সালেহ।
১৯৬৬ – নিয়াজ মোরশেদ, দাবায় উপমহাদেশের গ্র্যান্ডমাস্টার একজন বাংলাদেশী দাবাড়ু।
১৯৬৭ – ম্যালানি থর্নটন, মার্কিন পপ গায়িকা যিনি জার্মানিতে খ্যাতি অর্জন করেন এবং ইউরো ড্যান্স গ্রুপ লা বাউচির একজন সদস্য।
১৯৭৭ – সামান্থা মর্টন, ইংরেজ অভিনেত্রী, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক।
১৯৭৮ – নুয়ান জয়সা, কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৮১ – সানি লিওন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডীয় এবং মার্কিন অভিনেত্রী, ব্যবসায়ী, মডেল এবং প্রাক্তন পর্নোতারকা।
১৯৮৬ – লিনা ডানাম, মার্কিন অভিনেত্রী, লেখিকা, প্রযোজক ও পরিচালক।
১৯৮৬ – রবার্ট প্যাটিনসন, ইংরেজ অভিনেতা।
১৯৮৭ – আন্তোনিও আদান, স্প্যানিশ ফুটবলার।
১৯৯৩ – রোমেলু লুকাকু, বেলজিয়ামের ফুটবলার।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৬০৭ – ভার্জিনিয়ার জেমস টাউনে আমেরিকান ভূখণ্ডে ইংরেজদের প্রথম স্থায়ী বসতি স্থাপন।
১৬৩৮ – সম্রাট শাহজাহানের তত্ত্বাবধায়নে দিল্লির লাল কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
১৮০৪ – আমেরিকা আক্রমণ থেকে দিরানা শহর পুনরুদ্ধার করার জন্য ত্রিপোলি থেকে ইউসুফ কেরামানলি সৈন্য পাঠান।
১৮৩০ – স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসাবে ইকুয়েডরের প্রতিষ্ঠা লাভ।
১৮৬১ – পাকিস্তানে (ব্রিটিশ-ভারতের অংশ ছিল) প্রথম রেলপথের উদ্বোধন।
১৯৬৮ – প্যারিসে ভিয়েতনাম শান্তি আলোচনা শুরু।
১৮০৯ – অস্ট্রিয়ার সেনাদলকে পরাভূত করে নেপোলিয়ানের ভিয়েনা দখল।
১৮৪৬ – যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯৬২ – ডা. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন।
১৯৬৭ – ভারতের তৃতীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন ড. জাকির হোসেন।
১৯৬৯ – মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বর্ণবাদ দাঙ্গায় শতাধিক নিহত।
১৯৯১ – নেপালে প্রথম সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৯৫ – প্রথম নারী হিসেবে ব্রিটিশ বংশদ্ভূত এলিসন অক্সিজেন ও শেরপা ছাড়াই এভারেস্ট জয় করেন।
২০০০ – ভারতের লারা দত্তের বিশ্বসুন্দরী শিরোপা লাভ

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৮৩৬ – ভারততত্ত্ববিদ স্যার চার্লস উইলকিন্স।
১৮৮৭ – বাঙালি কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং প্রবন্ধকার রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৩৮ – শার্ল এদুয়ার গিয়্যোম, ফরাসি-সুইজারল্যান্ডীয় পদার্থবিজ্ঞানী।

১৯৪৭ – সুকান্ত ভট্টাচার্য, বাংলা সাহিত্যের প্রগতিশীল চেতনার কিশোর কবি।

১৯৬১ – গ্যারি কুপার, মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেতা।
১৯৬৩ – সুকুমার সেন,ভারতের প্রথম নির্বাচন কমিশনার ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য।
১৯৭৪ – বাংলাদেশে বীমা শিল্পের অন্যতম পথিকৃৎ খুদা বকশ।
১৯৯৭ – সাংবাদিক, কথাসাহিত্যিক বিপ্লব দাশ।
১৯৯৯ – আব্দুল আজিজ ইবনে বায, সৌদি আরবের বিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিত এবং সালাফি মতাদর্শের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি।
২০০১ – আর.কে.নারায়ণ প্রখ্যাত ভারতীয় লেখক।
২০০৫ – উৎপলা সেন, প্রখ্যাত বাঙালি গায়িকা ।
২০১১ – বাদল সরকার,আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি নাট্যব্যক্তিত্ব।
২০১৯ – ডরিস ডে, মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও সঙ্গীতশিল্পী।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
গল্প প্রবন্ধ

মূল্যবান মনুষ্য জীবন ও বৈশাখী পূর্ণিমার মাহাত্ম্য : স্বামী আত্মভোলানন্দ (পরিব্রাজক)।

ওঁ নমঃ শ্রী ভগবতে প্রণবায়….!

আমাদের এই মূল্যবান সুন্দর মনুষ্য জীবনে সত্য সনাতন হিন্দুধর্মে প্রকৃতির নিয়মে ১২ মাসে ১২টি পূর্ণিমা পালিত হয়। প্রতিটি পূর্ণিমার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে, যেমন বৈশাখী পূর্ণিমা তথা বুদ্ধ পূর্ণিমা দিনটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্য এক অবিস্মরণীয় দিন। কারণ এ তিথি ঘিরে রয়েছে তথাগত বুদ্ধের তিনটি স্মরণীয় ঘটনা। ত্রি-স্মৃতিবিজড়িত এ তিথির তাৎপর্য অত্যন্ত বিশাল। বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ এবং মহাপরিনির্বাণ – এই তিনটি ঘটনা বৈশাখী পূর্ণিমার সাথে বিশেষভাবে জড়িত। পুরাণ অনুযায়ী বৈশাখী পূর্ণিমায় গৌতম বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করেন। আবার এই তিথিতেই বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভ করেন তিনি। গৃহত্যাগের পর রাজকুমার সিদ্ধার্থ সত্যের সন্ধানে সাত বছর পর্যন্ত বনে ঘুরতে থাকেন। কঠোর তপস্যা করেন, অবশেষে বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে বোধগয়ায় বোধি বৃক্ষের নীচে বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভ করেন। জ্ঞান লাভের পর বুদ্ধ পায়েস খেয়ে নিজের ব্রতভঙ্গ করেন। তাই বুদ্ধ পূর্ণিমায় পায়েস রান্না করা হয়। বুদ্ধদেবকে পায়েসের প্রসাদ নিবেদন করা হয়। শুধু তাই নয়, বৈশাখ পূর্ণিমায় কুশীনগরে বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ হয়।

বুদ্ধ পূর্ণিমা বা বৈশাখী পূর্ণিমা হল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রতম উৎসব। এই পুণ্যোৎসব বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়। গৌতম বুদ্ধের অমৃত বাণীগুলি মূলত অহিংসা, দয়া, জ্ঞান এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণ ও সত্যের উপর জোর দেয়, বুদ্ধের বাণীগুলি মানুষকে দুঃখের কারণ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে সচেতন করে তোলে এবং জীবনের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে। তাঁর মূলনীতি হলো অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও প্রীতির বন্ধনে সবাইকে আবদ্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। এই পবিত্র তিথিতে বুদ্ধদেব জন্মগ্রহণ করেছিলেন, বোধি বা সিদ্ধিলাভ করেছিলেন এবং মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন। বুদ্ধ পূর্ণিমা তিথিকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এদিন যে কোনও নতুন শুরু অত্যন্ত শুভ। এই পবিত্র দিনে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীগণ স্নান করেন, শুচিবস্ত্র পরিধান করে মন্দিরে বুদ্ধের বন্দনায় রত থাকেন। ভক্তগণ প্রতিটি মন্দিরে বহু প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করেন, ফুলের মালা দিয়ে মন্দিরগৃহ সুশোভিত করে বুদ্ধের আরাধনায় নিমগ্ন হন। এছাড়া বুদ্ধগণ এই দিনে বুদ্ধ পূজার পাশাপাশি পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ, সমবেত প্রার্থনা করে থাকেন।

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি হিন্দুদের কাছেও এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ হিন্দু ধর্ম অনুসারে শ্রী বিষ্ণুর নবম অবতার হিসেবে গণ্য করা হয় গৌতম বুদ্ধকে। স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজ ও বললেন বুদ্ধের পর হইতে সঙ্ঘ কি বস্তু তাহা মানুষ ভুলিয়া গিয়াছে। আমার সঙ্ঘ হইবে দ্বিতীয় বুদ্ধের সঙ্ঘ, আমি সমগ্র দেশ ও জাতিকে বুদ্ধ, শঙ্কর, চৈতন্যের মত নতুন আদর্শ ও তপঃশক্তিতে সঞ্জীবিত করিতে চাই। একদিন লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি তৃষিত ও যাপিত নরনারী যেমন বৌদ্ধ সঙ্ঘের আশ্রয় গ্রহণ করিয়া শান্তি ও নির্বাণের অধিকারী হইয়াছিল; তেমনি এমন একদিন আসিবে যখন ভারতের তথা জগতের কোটি কোটি নরনারী এই মহাসঙ্ঘের
শরণাগত ও শরণাপন্ন হইয়া শান্তি ও মুক্তি লাভে ধন্য হইবে।

হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনে পবিত্র নদীতে স্নান করে বাড়িতে সত্যনারায়ণ পুজো করা উচিত। সন্ধ্যাবেলা চন্দ্রোদয়ের পর চাঁদকে দুধের অর্ঘ্য দিন। মনে করা হয় পূর্ণিমা তিথিতে চন্দ্রকে অর্ঘ্য দিলে মানসিক শান্তি লাভ করা যায়। তাঁর মূলনীতি হলো অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও প্রীতির বন্ধনে সবাইকে আবদ্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।
তাই, আমাদের পৃথিবী সুন্দর হোক, মানুষের রাষ্ট্র মানবিক হোক, আমাদের রাষ্ট্র শুভ ও মঙ্গলময় হোক। সবার কল্যাণে নিয়োজিত হোক, ভগবান বুদ্ধের কাছে, জগৎ গুরু ভগবান স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের কাছে এই প্রার্থনা করি…! আগামী ইং – 12/05/2025 ( বাং – ২৪ শে বৈশাখ) সোমবার বুদ্ধপূর্ণিমা/বৈশাখী পূর্ণিমা। ২০২৫ সালে, বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী, পূর্ণিমা ১১ মে, রবিবার সন্ধ্যা ৭:১৭ মিনিট থেকে ১২ মে, সোমবার সন্ধ্যা ৯.১৯ মিনিট পর্যন্ত থাকবে। সবাইকে বৈশাখী পূর্ণিমা/বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা।
ওঁ বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি।
ওঁ সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি।
ওঁ ধর্মং শরণং গচ্ছামি।
ওঁ গুরু কৃপা হি কেবলম্ ।
স্বামী আত্মভোলানন্দ *পরিব্রাজক* l

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ঘুরে আসুন হুগলীর চন্দননগর শহরের কয়েকটি দর্শনীয় ভ্রমণ স্থান।।।।

ঘুরতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বাঙালিরা সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্রমনের নেশায়। কেউ পাহাড়, কেউ সমুদ্র আবার কেউ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান ভালোবাসে ভ্রমণ করতে। প্রকৃতি কত কিছুই না আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে। কতটুকুই বা আমরা দেখেছি। এ বিশাল পৃথিবীতে আমরা অনেক কিছুই দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ গোটা পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়় এলেও প্রকৃতিকে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা এ এক আলাদা রোমাঞ্চ, আলাদা অনুভূতি যার রেষ হৃদয়ের মনিকোঠায় থেকে যায় চিরকাল।।

তাইতো আজও মানুষ বেরিয়ে পড়়ে প্রকৃতির কে গায়ে মেখে রোমাঞ্চিত হওয়ার নেশায়। কেউ চায় বিদেশে ভ্রমণে, আবার কেউ চায় দেশের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণে। এমনি এক ভ্রমণ এর জায়গা হলো হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত চন্দননগর। এর মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ রাখতে বাধ্য।চন্দননগর , এটির পূর্ব নাম চন্দেরনাগর এবং ফরাসি নাম চন্দ্রনাগর দ্বারাও পরিচিতভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার একটি শহর। এটি চন্দননগর মহকুমার সদর দফতর এবং এটি কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) দ্বারা আচ্ছাদিত এলাকার একটি অংশ। হুগলি নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত এই শহরটি ফরাসি ভারতের পাঁচটি জনবসতির মধ্যে একটি ছিল । ঔপনিবেশিক বাংলোগুলিতে ইন্দো-ফরাসি স্থাপত্য দেখা যায়, যার বেশিরভাগই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।।
এই নিবন্ধে আপনি চন্দননগরের নিম্নলিখিত তিনটি জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন—
(ক) চন্দননগর স্ট্র্যান্ড।
(খ) চন্দননগর মিউজিয়াম।
(খ) পাতাল বাড়ি।
আসুন এই স্থানগুলির প্রতিটি বিস্তারিতভাবে দেখি…

(ক) চন্দননগর স্ট্র্যান্ড—–
চন্দননগর স্ট্র্যান্ড হল চন্দন নগরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং সুন্দর ভ্রমণের পথ। চন্দননগর একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান। এটি একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও অনেক উন্নত। এই দৌড় ঝাপ ভরা জীবনে একবেলার ছুটি কাটানোর জন্য চলে আসুন চন্দননগর স্ট্যান্ড ঘাটে। পরিবার পরিজনের সঙ্গে বিকেলের আমেজ উপভোগ করার একটি আদর্শ জায়গা এটি।সুন্দর সারির গাছ এবং আলো দ্বারা সারিবদ্ধ দর্শনীয় গঙ্গা নদী, স্ট্র্যান্ডের আকর্ষণের প্রধান কেন্দ্র। সন্ধ্যার সময় পরিবেশটি শান্তিপূর্ণ থাকে, কারণ চারিদিক আলোকিত হয় এবং হালকা বাতাস বয়ে যায় যা জায়গাটিকে আরও ঐশ্বরিক করে তোলে।চন্দননগর স্ট্র্যান্ড পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে সুন্দর অলঙ্কৃত নদীপথ হিসাবে স্বীকৃত। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এলাকায় অসংখ্য রেস্টুরেন্ট রয়েছে।হাওড়া থেকে চন্দননগর যাওয়ার যে কোনো ট্রেনে উঠতে হবে। নামতে হবে চন্দননগর স্টেশনে। স্টেশন থেকে অটো অথবা টোটোর মাধ্যমে আপনি পৌঁছাতে পারেন এই ঘাটে। উনবিংশ শতকের চন্দননগরের এক সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী দুর্গাচরণ রক্ষিত। তিনিই প্রথম ভারতীয় যিনি ফ্রান্সের ‘লিজিয়ঁ দ্য অনার’ সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন । তাঁর নামেই এই ফলক । তাই একদিনের ছুটি কাটানোর জন্য বেশি দেরি না করে চলে আসুন চন্দননগর স্ট্যান্ড ঘাটে।

(খ) চন্দননগর মিউজিয়াম–
হুগলি রেলওয়ে স্টেশন থেকে ৭ কিমি দূরে চন্দননগর মিউজিয়াম হল পশ্চিমবঙ্গের হুগলির চন্দননগর শহরতলিতে অবস্থিত একটি পুরাতন জাদুঘর। ডুপ্লেক্স প্যালেস নামেও পরিচিত, এটি পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম যাদুঘরগুলির মধ্যে একটি এবং হুগলিতে দেখার জন্য সেরা জায়গাগুলির মধ্যে একটি।
চন্দননগর জাদুঘর বা ইনস্টিটিউট ডি চন্দননগর ডুপ্লেক্স হাউসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, চন্দননগর প্রদেশের ফরাসি গভর্নরের পূর্ববর্তী সরকারি বাসভবন। ১৯৫১ সালে চন্দননগরের বন্ধের চুক্তির অনুসরণে, ১৯৫২ সালে ভারত সরকার বিদেশ মন্ত্রকের অধীনে ‘মিউজিয়াম অ্যান্ড আর্ট গ্যালারি’ নামে একটি সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে। এটি ২৫০ বছরের ফরাসি ঔপনিবেশিক ইতিহাসের ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণ করে এবং উভয় দেশের যৌথ ঐতিহ্যের প্রতীক।
জাদুঘরটি প্রাচীনকালের উপঢৌকন, হরিহর সেট, ‘ফ্রি সিটি অফ চন্দননগর’-এর প্রথম রাষ্ট্রপতি, একজন সমাজ সংস্কারক এবং জনহিতৈষী-এর উপহার থেকে একটি মূল সংগ্রহ নিয়ে স্থাপন করা হয়েছিল। তিনি ১৯৩৪ সালে ফরাসি সরকার কর্তৃক শেভালিয়ার দে লা লিজিওন ডি’অনারে পুরস্কৃত হন। এটি বিরল ফরাসি প্রাচীন জিনিসের একটি সংগ্রহের গর্ব করে, যেমন অ্যাংলো-ফরাসি যুদ্ধে ব্যবহৃত কামান (জনপ্রিয়ভাবে কর্নাটিক যুদ্ধ নামে পরিচিত), ফরাসি গভর্নর-জেনারেলদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র এবং কাঠের তৈরি জিনিসপত্র, যা বিশ্বের অন্য যেকোন স্থানে খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রদর্শনীর মধ্যে রয়েছে ডুপ্লেক্সের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, যেমন তার একটি মার্বেল আবক্ষ, এবং চন্দননগরের ফরাসি ঔপনিবেশিক ও স্থানীয় ইতিহাসের ধ্বংসাবশেষ।
এছাড়াও, যাদুঘরটি প্রবেশদ্বারের ঠিক পাশে অবস্থিত মারিয়ানের (ফ্রান্সের জাতীয় প্রতীক) একটি সুন্দর বাগান এবং একটি মূর্তি রক্ষণাবেক্ষণ করেছে। এছাড়াও, জাদুঘর এবং ইনস্টিটিউট নিয়মিত ফরাসি ক্লাস অফার করে।
পশ্চিমবঙ্গের সেরা এবং প্রাচীনতম যাদুঘরগুলির মধ্যে একটি হল চন্দননগর মিউজিয়াম। অতএব, আপনি যদি ফরাসি ঔপনিবেশিক নিয়মের ইতিহাসে আগ্রহী হন তবে এই যাদুঘরটি দেখার মতো স্থান।

(গ) পাতাল বাড়ি—
পাতাল বাড়ি চন্দননগরের স্থাপত্য এবং নান্দনিক সৌন্দর্যের একটি অত্যাশ্চর্য চিত্র। ভবনটি সেই আগের দিনের মানুষের স্থাপত্যের জ্ঞান এবং নান্দনিক বোধের অগ্রগতির আরেকটি সুন্দর উদাহরণ। এর নিচতলা গঙ্গা নদীতে নিমজ্জিত। মহান সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর চন্দননগর সফরের সময় এই বাড়িতেই থাকতেন।
নোবেল বিজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায়ই জায়গাটি পরিদর্শন করেন এবং ভবনটির অনেক প্রশংসা করেন। তিনি অনুভব করেছিলেন যে স্থানটি তাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে এবং তার বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতাকে প্রসারিত করেছে। তিনি তাঁর বহু বিখ্যাত উপন্যাসে পাতাল-বাড়ির কথা উল্লেখ করেছেন। বাড়িটির মালিক ছিল পাশের বাঁশবেড়িয়ার শাসক পরিবারের। এই রহস্যময় সুন্দর জায়গাটি চন্দননগরের একটি প্রাচীন মনোমুগ্ধকর স্থান যা আপনাকে অবশ্যই দেখতে হবে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে সন্তোষ কুমার মিত্র, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন বিপ্লবী শহীদ।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে সন্তোষ কুমার মিত্র প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।

সন্তোষ কুমার মিত্র ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
সন্তোষ কুমার মিত্র (বাংলা: সন্তোষ কুমার মিত্র) বা সন্তোষ মিত্র এর জন্ম ১৫ আগস্ট ১৯০০ সালে। তিনি ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন কর্মী এবং একজন শহীদ।
জীবনের প্রথমার্ধ—-
মিত্র ১৯০০ সালের ১৫ আগস্ট কলকাতায় একটি মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯১৫ সালে কলকাতার হিন্দু স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন এবং ১৯১৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। ১৯২১-২২ সময়কালে, তিনি তার M.A এবং LL.B সম্পন্ন করেন।
বিপ্লবী কর্মকান্ড–
সন্তোষ মিত্র ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। তিনি স্বরাজ সেবক সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন এবং হুগলি বিদ্যা মন্দিরের সাথে যুক্ত ছিলেন যার নেতৃত্বে ছিলেন ভূপতি মজুমদার, ১৯২১ সালে যুগান্তর নেতাদের একজন। তিনি জওহরলাল নেহরুর সভাপতিত্বে কলকাতায় একটি সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। অসহযোগ আন্দোলন স্থগিত করার পর মিত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে চরমপন্থী আন্দোলনে চলে যান। তাকে শাঁখারিটোলা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করা হয় এবং ১৯২৩ সালে গ্রেফতার করা হয়।
মৃত্যু—
১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩১, পুলিশ হিজলি ডিটেনশন ক্যাম্পে সন্তোষ কুমার মিত্র এবং আরেক বন্দী তারকেশ্বর সেনগুপ্তকে গুলি করে হত্যা করে।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১২ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ১২ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক) আন্তর্জাতিক ধাত্রী দিবস।
আজ যাদের জন্মদিন—-
১৪৯৬ – সুইডেনের প্রথম গুস্তাভ, ১৫২৩ সাল থেকে তার মৃত্যু পর্যন্ত সুইডেনের রাজা ছিলেন।

১৮২০ – ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল, আধুনিক নার্সিং সেবার অগ্রদূত, লেখক ও পরিসংখ্যানবিদ।  .

১৮৫৫ – প্রমথনাথ বসু,বাঙালি ভুতত্ববিদ, বিজ্ঞানী ও সমাজকর্মী।

১৮৬৩ – উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, বিখ্যাত বাঙালি শিশুসাহিত্যিক ও বাংলা ছাপাখানার অগ্রপথিক।
১৮৬৭ – হিউ ট্রাম্বল, অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও অধিনায়ক ছিলেন।।

১৮৯৫ – উইলিয়াম ফ্রান্সিস জিওক, মার্কিন রসায়নবিদ।

১৯০৭ – ক্যাথরিন হেপবার্ন, মার্কিন অভিনেত্রী।

১৯১০ – জেমস ডাডলি, আমেরিকান বেসবল খেলোয়াড় এবং পেশাদার রেসলিং ম্যানেজার ও নির্বাহী।
১৯১০ – ডরোথি মেরি হজকিন, ব্রিটিশ রসায়নবিজ্ঞানী।

১৯১৩ – ত্রিপুরা সেনগুপ্ত, বাঙালি, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের শহীদ বিপ্লবী।
১৯২৪ – অ্যান্টনি হিউসিস, নোবেলজয়ী (১৯৭৪) ব্রিটিশ মহাকাশ বিজ্ঞানী।
১৯২৯ – স্যাম নজুমা, নামিবীয় বিপ্লবী, বর্ণবাদ বিরোধী কর্মী এবং রাজনীতিবিদ।
১৯৩৭ – জর্জ কার্লিন, আমেরিকান কৌতুক অভিনেতা, অভিনেতা এবং লেখক। (মৃ. ২০০৮)
১৯৪১ – আহমদুল্লাহ, আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ার প্রধান মুফতি ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর।
১৯৭৭ – মরিয়ম মির্জাখানি, ইরানি গণিতবিদ। (মৃ. ২০১৭)
১৯৭৯ – মিলা ইসলাম, বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী।
১৯৮০ – ঋষি সুনক, ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি ব্রিটেনের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হন ২০২২ সালের ২৮ অক্টোবরে।
১৯৮১ – রামি মালেক, আমেরিকান অভিনেতা।
১৯৮৬ – এমিলি ভ্যানক্যাম্প, কানাডিয়ান অভিনেত্রী।
১৯৮৭ – কিরণ পোলার্ড, ত্রিনিদাদীয় ক্রিকেটার।
১৯৮৮ – মার্সেলো ভিয়েরা, ব্রাজিলীয় ফুটবলার।
১৯৯৭ – ওদেয়া রাশ, ইস্রায়েলি অভিনেত্রী।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৬৬৬ – মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য শিবাজি আগ্রায় আসেন।
১৮৭৭ – ভারতীয় মুসলমানদের প্রথম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ন্যাশনাল মোহামেডানের প্রতিষ্ঠা হয়।
১৯১৫ – ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম ব্যক্তিত্ব রাসবিহারী বসু বৃটিশের শ্যেন চক্ষু ফাঁকি দিয়ে কলকাতার খিদিরপুর বন্দর হতে জাপানি জাহাজ ‘সানুকি-মারু’ সহযোগে তিনি ভারতবর্ষ ত্যাগ করেন।
১৯৪১ – আডলফ হিটলার ইরাকের স্বাধীনতা সংগ্রামী রশীদ আলি গিলানির জন্য দুইটি বোমারু বিমান প্রেরণ করেছিলেন।
১৯৪৯ – পশ্চিম বার্লিনের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন আরোপিত অবরোধের অবসান ঘটে ।
১৯৫৫ – সিলেটের হরিপুরে প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়।
১৯৬৫ – বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ে ১৭ হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটে।
১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় স্পেন ও দক্ষিণ কোরিয়া।
১৯৯৪ – আজারাইজান প্রজাতন্ত্র এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বিরতি হয়।
২০১৮ – বাংলাদেশ সময় রাত ২:১৪ মিনিটে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করা হয়।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৭০০ – জন ড্রাইডেন, ইংরেজ লেখক, কবি ও নাট্যকার ছিলেন।
১৮৪৫ – আউগুস্ট ভিলহেল্ম ফন শ্লেগেল, জার্মান কবি, অনুবাদক ও সমালোচক।

১৯৪০ – বিশিষ্ট কর্মব্রতী, সাহিত্যানুরাগী ও রবীন্দ্রনাথ পরিকল্পিত শ্রীনিকেতনের মুখ্য সংগঠক কালীমোহন ঘোষ ।
১৯৪১ – দীনেশরঞ্জন দাশ, বাঙালি লেখক ও চলচ্চিত্র পরিচালক ।
১৯৫৭ – এরিক ভন স্ট্রোহেইম, মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক এবং অভিনেতা।
১৯৭১ – সাদত আলী আখন্দ, প্রবন্ধকার, সাহিত্যিক।
২০০১ – ডিডি, ব্রাজিলীয় ফুটবলার।

২০০৫ – মার্টিন লিংগস, যার ইসলামিক নাম আবু বক্কর সিরাজুদ্দিন, তিনি একজন পশ্চিমা লেখক, শিক্ষাবিদ ও ফ্রিটজফ শুয়ানের শিষ্য ও শেক্সপিয়র বিষয়ে বিজ্ঞ ব্যক্তি ছিলেন।
২০১৫ – সুচিত্রা ভট্টাচার্য, ভারতীয় বাঙালি সাহিত্যিক।
২০১৯ – হায়াৎ সাইফ, বাংলাদেশি কবি ও সাহিত্য সমালোচক।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This