Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

স্মরণে- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বিপ্লবী, অনুশীলন সমিতির নেতা, সাংবাদিক ও সম্পাদক মাখনলাল সেন।।।।।

আতীয় প্রযুক্তি দিবস প্রতি বছর ১১ মে ভারতে পালিত হয়। এই দিনটি উদ্ভাবক, বিজ্ঞানী এবং প্রকৌশলীদের অবদানের স্বীকৃতি এবং দেশে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন প্রচারের জন্য নিবেদিত। পোখরানে সফল পারমাণবিক পরীক্ষাকে স্মরণ করার জন্য ১৯৯৮ সালে প্রথম দিনটি স্থাপিত হয়েছিল। এই পরীক্ষাটি ছিল ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক, এবং এটি দেশটিকে পারমাণবিক অস্ত্র প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি শীর্ষস্থানীয় অবস্থান অর্জনের পথ প্রশস্ত করেছে।

জাতীয় প্রযুক্তি দিবস উদযাপনটি ভারত সরকার, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কমিউনিকেশন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ, বিভিন্ন এনজিও, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র এবং বিজ্ঞান কেন্দ্র সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা দ্বারা সংগঠিত হয়। আসুন আমরা নীচে ভারতের জাতীয় প্রযুক্তি দিবস ২০২৫ তারিখ, থিম, ইতিহাস, তাৎপর্য, কার্যকলাপ, উদ্ধৃতি এবং আরও অনেক কিছু পড়ি।

জাতীয় প্রযুক্তি দিবস ২০২৫ তারিখ-

এই বছর, ১১ মে ২০২৫ রবিবার ভারতে জাতীয় প্রযুক্তি দিবস পালিত হবে।

জাতীয় প্রযুক্তি দিবস ২০২৫ থিম-

২০২৫ সালের জাতীয় প্রযুক্তি দিবসের প্রতিপাদ্য হল “YANTRA – নতুন প্রযুক্তি, গবেষণা এবং ত্বরণের অগ্রগতির জন্য যুগান্তর”। এই প্রতিপাদ্য ভারতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি উদ্ভাবন এবং ত্বরান্বিত করার শক্তির প্রতীক। “YANTRA” যান্ত্রিক দক্ষতা, সিস্টেমের শক্তি, দলবদ্ধতা এবং স্কেলেবল সমাধানের প্রতিনিধিত্ব করে, যেখানে “Yugantar” প্রযুক্তি গ্রহণ থেকে বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি নেতা হয়ে ওঠার ভারতের অগ্রগতি প্রতিফলিত করে।

এই প্রতিপাদ্য বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষা তুলে ধরে, যার মধ্যে রয়েছে ¹:

– *পরবর্তী প্রজন্মের উৎপাদন এবং রোবোটিক্স*: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য উৎপাদন এবং রোবোটিক্সে ভারতের ক্ষমতার অগ্রগতি।
– *মহাকাশ এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি*: মহাকাশ অনুসন্ধান এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে ভারতের উপস্থিতি বৃদ্ধি।
– *পরিষ্কার এবং টেকসই শক্তি সমাধান*: একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য পরিবেশবান্ধব সমাধানের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা।
– *স্বাস্থ্যসেবা উদ্ভাবন এবং জৈবপ্রযুক্তি*: উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং জৈবপ্রযুক্তি অগ্রগতির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা উন্নত করা।
– *কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং*: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ে ভারতকে শীর্ষস্থানে স্থাপন করা।

“YANTRA” থিমটির লক্ষ্য জাতীয় মিশনগুলিকে অনুঘটক করা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবনকে উদ্দীপিত করা, প্রযুক্তিগত আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং বিশ্বব্যাপী উদ্ভাবনী নেতৃত্বের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেওয়া ।

জাতীয় প্রযুক্তি দিবসের ইতিহাস–

ভারতে জাতীয় প্রযুক্তি দিবসের ইতিহাস ১৯৯৮ সালে, যখন ভারতীয় সেনাবাহিনী রাজস্থানে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর তত্ত্বাবধানে পাঁচটি পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা (পোখরান-২) করেছিল। দ্য পোখরান-২-এর নেতৃত্বে ছিলেন ভারতের মিসাইল ম্যান, ডঃ এপিজে আব্দুল কালাম। পোখরান টেস্টের বিশাল সাফল্যের পর ভারত ষষ্ঠ পারমাণবিক দেশ হিসাবে অধিকারী হয়েছিল।
পারমাণবিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে ভারতের কৃতিত্ব উদযাপন করতে, অটল বিহারী বাজপেয়ী ১১ মে জাতীয় প্রযুক্তি দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। ১১ মে ১৯৯৯ তারিখে প্রথম জাতীয় প্রযুক্তি দিবস পালিত হয়েছিল। পোখরান পারমাণবিক পরীক্ষা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অর্জন এবং ক্ষেত্রের ভবিষ্যতের উন্নয়নের পথ প্রশস্ত করার জন্য ভারতের প্রচেষ্টার একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক ছিল।

জাতীয় প্রযুক্তি দিবসের তাৎপর্য–

প্রতি বছর ১১ মে ভারতে জাতীয় প্রযুক্তি দিবস পালিত হয়। এই দিনটি দেশের প্রযুক্তিগত সাফল্যের স্বীকৃতি এবং ক্ষেত্রে কর্মরত পেশাদারদের অবদানকে সম্মান করার জন্য নিবেদিত। জাতীয় প্রযুক্তি দিবস ভারতে বিশাল তাৎপর্য রাখে কারণ এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দেশের অর্জন উদযাপন করে। এটি বৈজ্ঞানিক শিক্ষার প্রচার এবং সমাজের সকল শ্রেণীর মধ্যে প্রযুক্তির প্রতি একটি দৃঢ় আগ্রহ বৃদ্ধির সুযোগও প্রদান করে। এই দিনটি নিঃসন্দেহে বৃদ্ধির জন্য একটি অনুঘটক এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে ভারতের দক্ষতার প্রমাণ।

জাতীয় প্রযুক্তি দিবস ২০২৫ কার্যক্রম-

বক্তৃতা, কর্মশালা, সেমিনার, বিতর্ক, সিম্পোজিয়া, স্লাইড/ফিল্ম শো, রেডিও/টিভি অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সহ সমাজের সকল শ্রেণীর মধ্যে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ভারতের জাতীয় প্রযুক্তি দিবসে বিভিন্ন জাতীয় প্রযুক্তি দিবসের কার্যক্রম সংগঠিত ও সম্পাদিত হয়। , এবং আরো. প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করা এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে একটি বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত মানসিকতার প্রচারের লক্ষ্যে এই কার্যক্রমগুলো করা হয়েছে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে- ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বিপ্লবী, অনুশীলন সমিতির নেতা, সাংবাদিক ও সম্পাদক মাখনলাল সেন।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে মাখনলাল সেন ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী।

মাখনলাল সেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। মাখনলাল সেন ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বিপ্লবী, অনুশীলন সমিতির নেতা, সাংবাদিক ও সম্পাদক । তিনি বিপ্লবী সাংবাদিকতার আদর্শ স্থাপন করেছেন।
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন—
মাখনলাল সেন ১১ জানুয়ারী, ১৮৮১ সালে তার পিতার কর্মস্থল চট্টগ্রাম, বর্তমানে বাংলাদেশ, ব্রিটিশ ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা গুরুনাথ সেন তখন সেখানে সহকারী সার্জন ছিলেন। পৈতৃক বাড়ি ছিল মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারংয়ে। পড়াশুনা চট্টগ্রামে।
বিপ্লবী ক্রিয়াকলাপ—
এমএ পড়ার সময় মাখনলাল স্বদেশী আন্দোলনের সময় বিপ্লবী দলে যোগ দেন এবং ঢাকায় যান এবং অনুশীলন সমিতির নেতা পুলিনবিহারী দাস গ্রেফতার হওয়ার পর সমিতির নেতা হন। ১৯১০ সালে ঢাকা ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে তিনি আত্মগোপন করেন এবং কলকাতায় চলে যান। ১৯১৪ সালে বর্ধমান ও কাঁথিতে প্রবল বন্যা হলে তিনি বাঘা যতীনের সাহায্যে বন্যা দুর্গতদের সাহায্য করতে এগিয়ে যান। এ নিয়ে তৎকালীন বাংলা সরকারের সঙ্গে তুমুল বিরোধ শুরু হয়। ১৯১৫ সালে ভারত রক্ষা আইন প্রণীত হলে মাখনলাল চট্টগ্রামের টেকনাফ অঞ্চলে গ্রেফতার হন। ১৯২০ সালে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি কলকাতায় আসেন এবং কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে যোগ দেন। অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধীর সমর্থনে এগিয়ে যান। এরপর নাগপুর কংগ্রেসে অসহযোগ নীতি গৃহীত হলে ১৯২১ সালে তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের অনুরোধে কলকাতায় গৌড়ীয় সর্ববিদ্যায়তনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের পূর্ববঙ্গে সোনারং ন্যাশনাল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
সাংবাদিকতায় ভূমিকা—-
তাঁর বিপ্লবী জীবনের বন্ধু সুরেশচন্দ্র মজুমদারের অনুরোধে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক হন কয়েকদিনের জন্য। সেই বছরের ১২ই নভেম্বর, তিনি কলকাতা পুলিশ কমিশনারের আদেশ অমান্য করার জন্য গ্রেপ্তার হন এবং গোলটেবিল সম্মেলনের প্রতিবাদে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেন এবং ছয় মাসের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন। ১৯৩৯ সালে, তিনি আনন্দবাজার পত্রিকা ছেড়ে “সাংবাদিক কর্নার” নামে একটি সাংবাদিক সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ভারত নামে একটি সংবাদপত্র প্রকাশ করেন। ১৯৪২ সালের ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের সময় তিনি “ভারত” পত্রিকার মাধ্যমে বিপ্লবী সাংবাদিকতার চূড়ান্ত আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কাগজটিও ক্ষোভের সাথে দেখা হয়েছিল এবং মাখনলালকে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে এবং ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন। মুক্তির পর তিনি আবার “ভারত” পত্রিকা প্রকাশ করেন, কিন্তু বেশিদিন চালাতে পারেননি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মাখনলাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগে যোগ দেন।
জীবনাবসান—
মাখনলাল সেন ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১১ই মে প্রয়াত হন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১১ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ১১ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।

১৯১৮ – রিচার্ড ফাইনম্যান, মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী, নোবেল বিজয়ী।
১৯২১ – অজিত চট্টোপাধ্যায়, বিশিষ্ট বাঙালি হাস্যকৌতুক অভিনেতা।
১৯২৪ – অ্যান্টনি হিউইশ, ব্রিটিশ রেডিও জ্যোতির্বিজ্ঞানী, নোবেল বিজয়ী।
১৯৩০ – এড্সগার ডাইকস্ট্রা, ওলন্দাজ কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
১৯৪১ – ইয়ান রেডপাথ, অস্ট্রলীয় ক্রিকেটার।
১৯৪৪ – জন বেনো, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার।
১৯৬৭ – সু গার্ডনার, উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক।
১৯৭৩ – জেমস হ্যাভেন, মার্কিন অভিনেতা ও চলচ্চিত্র প্রযোজক।
১৯৭৭ – ববি রুড, কানাডিয়ান পেশাদার কুস্তিগির।
১৯৭৮ – লিতিসিয়া কাস্তা, ফরাসি মডেল এবং অভিনেত্রী।
১৯৮৪ – আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, স্পেনীয় ফুটবলার।
১৯৮৬ – আবু দিয়াবি, ফরাসি ফুটবলার।
১৯৯২ – থিবো কোর্তোয়া, বেলজিয়ামের ফুটবলার।
১৯৯২ – পাবলো সারাবিয়া, স্প্যানিশ ফুটবলার।
১৯৯৯ – কেইটলিন দিয়াস, মার্কিন অভিনেত্রী এবং কন্ঠশিল্পী।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৭৪৫ – অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও হল্যান্ডের মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধে ফরাসি বাহিনী জয়যুক্ত হয়।
১৮৫৭ – সিপাহী বিদ্রোহ: সৈনিকরা ব্রিটিশদের কাছ থেকে দিল্লি অধিকার করে নেয়।
১৮৬৭ – লুক্সেমবার্গ স্বাধীনতা অর্জন করে।
১৯৩৫ – জার্মানীর বার্লিন শহরে প্রথম টেলিভিশন প্রেরণ যন্ত্র আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে এবং এর মাধ্যমে প্রথমবারের মত পৃথিবীতে টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয়।
১৯৪০ – জার্মান বাহিনীর আগ্রাসনের শিকার বেলজিয়ামকে রক্ষা করার জন্য বৃটিশ ও ফরাসী সেনাদের যৌথ বাহিনী বেলজিয়ামে প্রবেশ করে।
১৯৭২ – (ক)  কলকাতায় রাজা রামমোহন রায় লাইব্রেরি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়।
(খ) বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় মেক্সিকো।
১৯৮৫ – কুরআন দিবস: কুরআনের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে আট জন নিহত।
১৯৯৪ – ফিলিস্তিনি পুলিশ গাজায় এলে ২৭ বছরের ইজরায়েলি দখলদারির অবসান ঘটে।
১৯৯৭ – দাবাখেলুড়ে কম্পিউটার ডীপ ব্লু প্রথমবারের মতো বিশ্বজয়ী দাবাড়ু হিসেবে গ্যারি কাসপারভকে পরাজিত করে।
১৯৯৮ – ভারত সরকার দেশটির মরুরাজ্য রাজস্থানের পোখরানে ভূগর্ভে ৩টি পারমাণবিক অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়।
২০১৬ – বাংলদেশের শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
২০১৮ – বাংলাদেশ সরকার তাদের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ ১১ মে ২০১৮ ইডিটি, বাংলাদেশ মান সময় ১২ মে ভোর ০২:১৪ তে কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করে।
২০১৮ – আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল তাদের ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহণ করে। তবে প্রথম দিন মেঘে ভেসে যাওয়ায় কোনো খেলা এদিন গড়ায়নি।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৯১৫ – ভাই বালমুকুন্দ, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী।

১৯১৫ – বসন্তকুমার বিশ্বাস, ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী।
১৯১৬ – কার্ল শোয়ার্জশিল্ড, জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও পদার্থবিজ্ঞানী।

১৯২৭ – হুয়ান গ্রিস, স্প্যানিশ চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর।
১৯৫৫ – গিলবার্ট জেসপ, ইংলিশ ক্রিকেটার।
১৯৫৯ – বিংশ শতকের প্রথমার্ধের বিশিষ্ট কবি বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়।
১৯৬৩ – হারবার্ট এস. গ্যাসার, মার্কিন শারীরতত্ত্ববিদ।

১৯৬৫ – মাখনলাল সেন অনুশীলন সমিতির সদস্য, বিপ্লবী, সাংবাদিক ও সম্পাদক।
১৯৮১ – বব মার্লে, জামাইকান রেগে শিল্পী, গীটার বাদক ও গীতিকার।

১৯৮৩ – প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি নিম্বার্ক সম্প্রদায়ের যোগসাধক, দার্শনিক ও ধর্মগুরু ধনঞ্জয়দাস কাঠিয়াবাবা।
১৯৮৫ – কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঙালি শিক্ষাবিদ, ভাষাতত্ত্ববিদ ও খ্রিষ্টধর্মপ্রচারক।
১৯৮৮ – কিম ফিলবি, ব্রিটিশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন এর জন্য ডাবল এজেন্ট।
১৯৯৯ – একবাল আহমাদ, পাকিস্তানি লেখক, সাংবাদিক, ও যুদ্ধবিরোধী কর্মী।
২০০১ – ডগলাস অ্যাডামস, ইংরেজ লেখক, চিত্রনাট্যকার, প্রবন্ধকার, কৌতুকপূর্ণ কাহিনী-রচয়িতা, ব্যঙ্গরচয়িতা এবং নাট্যকার।
২০০৩ – আর্নি তোশ্যাক, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।
২০০৪ – আল্ফ ভ্যালেন্টাইন, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার।
২০১৬ -(ক)  টনি কোজিয়ার, বার্বাডীয় ক্রিকেট সাংবাদিক, লেখক ও রেডিও ধারাভাষ্যকার।
(ক) মতিউর রহমান নিজামী, বাংলদেশের শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী।
২০২১ – ঈশা মহম্মদ, খ্যাতিমান ভারতীয় বাঙালি চিত্রকর ও শিল্পী।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

মা ​​দিবসের তাৎপর্য: আমাদের পরিবারের স্তম্ভগুলিকে সম্মান করা।

প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারে পালিত মা দিবস, একটি বিশেষ উপলক্ষ যা মা এবং মাতৃত্বের ব্যক্তিত্বদের তাদের অটল ভালোবাসা, ত্যাগ এবং পরিবার ও সমাজে অবদানের জন্য সম্মান জানাতে নিবেদিত। এই দিনটি আমাদের জীবন গঠনে মায়েদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার স্মারক হিসেবে কাজ করে এবং এটি আমাদের জন্য তাদের নিঃস্বার্থ নিষ্ঠার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার একটি সুযোগ।

*মা দিবসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস*

মা দিবসের উৎপত্তি বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে, যখন একজন আমেরিকান কর্মী আনা জার্ভিস মায়েদের সম্মানে একটি ছুটি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচারণা চালান। ১৯১৪ সালে আন্নার প্রচেষ্টা সফল হয় যখন রাষ্ট্রপতি উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে মা দিবস হিসেবে মনোনীত করেন এবং এটিকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। সময়ের সাথে সাথে, মা দিবস একটি বিশ্বব্যাপী ঘটনায় পরিণত হয়েছে, দেশগুলি মায়েদের সম্মান জানাতে অনন্য ঐতিহ্য গ্রহণ করেছে ¹ ²।

*মা ​​দিবস উদযাপনের গুরুত্ব*

মা দিবস উদযাপনের প্রচুর মানসিক উপকারিতা রয়েছে, কারণ এটি পারিবারিক বন্ধনকে শক্তিশালী করে এবং মাতৃত্বের সুস্থতা বৃদ্ধি করে। এই দিনটি আমাদের জীবনে মায়েদের ভূমিকা নিয়ে চিন্তা করতে এবং তাদের মানসিক শ্রম এবং লালন-পালনের স্বীকৃতি জানাতে উৎসাহিত করে। মায়েদের সম্মান করে আমরা ³:

– *কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন*: মায়েদের ভালোবাসা, যত্ন এবং ত্যাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি
– *পারিবারিক বন্ধনকে শক্তিশালী করি*: প্রজন্মের মধ্যে সংযোগ তৈরি করি এবং ঐক্যের অনুভূতি গড়ে তুলি
– *মাতৃত্বের সুস্থতা প্রচার করি*: মায়েদের মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জগুলি স্বীকৃতি দেই এবং তাদের সুস্থতাকে সমর্থন করি

*বিশ্বজুড়ে মা দিবস উদযাপন*

স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটিয়ে বিভিন্ন দেশে মা দিবস ভিন্নভাবে পালিত হয়। কিছু উদাহরণের মধ্যে রয়েছে ⁴:
– *ভারত*: মা দিবস ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, মানুষ তাদের মায়ের প্রতি ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে।
– *মেক্সিকো*: ১০ মে পালিত হয়, মা দিবস সেরেনাড, ঐতিহ্যবাহী গান এবং পারিবারিক সমাবেশের মাধ্যমে পালিত হয়।
– *থাইল্যান্ড*: ১২ আগস্ট মা দিবস পালিত হয়, জাতির মা রাণী সিরিকিত এবং সাধারণভাবে মায়েদের সম্মানে।
– *যুক্তরাজ্য*: মা দিবস পালিত হয় মাতৃত্বকালীন রবিবারে, সাধারণত মার্চ মাসে, পরিবারগুলি কার্ড, ফুল এবং উপহার প্রদান করে।

*মা দিবস উদযাপনের উপায়*

আপনার পছন্দ এবং বাজেটের উপর নির্ভর করে মা দিবস উদযাপনের অনেক উপায় রয়েছে। কিছু ধারণার মধ্যে রয়েছে ² ⁵:
– *মানসম্মত সময় কাটান*: আপনার মায়ের সাথে একটি বিশেষ ভ্রমণ বা কার্যকলাপের পরিকল্পনা করুন
– *উপহার-দান*: আপনার মাকে ফুল, চকলেট বা ব্যক্তিগতকৃত জিনিসপত্রের মতো চিন্তাশীল উপহার দিন
– *কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন*: কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য একটি হৃদয়গ্রাহী বার্তা লিখুন বা হাতে তৈরি কার্ড তৈরি করুন
– *স্বেচ্ছাসেবক*: অভাবী মা এবং পরিবারগুলিকে সাহায্য করে এমন সংস্থাগুলিকে সহায়তা করুন

*উপসংহার*

মা দিবস একটি বিশেষ উপলক্ষ যা আমাদের জীবনে মা এবং মাতৃত্বের ব্যক্তিত্বের গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই দিনটি উদযাপনের মাধ্যমে, আমরা পারিবারিক বন্ধনকে শক্তিশালী করতে পারি, মাতৃত্বের মঙ্গলকে উৎসাহিত করতে পারি এবং মায়েদের দেওয়া ভালোবাসা এবং যত্নের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি। আপনি কোনও মহৎ অঙ্গভঙ্গি বা দয়ার ছোট কাজ করে উদযাপন করুন না কেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনার মাকে ভালোবাসা এবং প্রশংসা বোধ করা। তাই, এই সুযোগটি গ্রহণ করুন আপনার মা যা কিছু করেন তার জন্য ধন্যবাদ জানাতে এবং এই মা দিবসে তাকে বিশেষ বোধ করাতে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রথম যুগের অগ্রণী সঙ্গীত পরিচালক ও নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেতা পঙ্কজ কুমার মল্লিক।।।।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক এবং অভিনেতা। তিনি বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রাথমিক যুগের একজন শীর্ষস্থানীয় সঙ্গীত পরিচালক এবং প্লেব্যাক গায়ক ছিলেন। রবীন্দ্রসঙ্গীতেও তার বিশেষ অবদান ছিল।

পঙ্কজ কুমার মল্লিক ১৯০৫ সালের ১০ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁর পিতার নাম মণিমোহন মল্লিক এবং মাতার নাম মনোমোহিনী দেবী। সঙ্গীতের প্রতি মণিমোহনের গভীর আগ্রহ ছিল। পঙ্কজ কুমার দুর্গাদাস ব্যানার্জির অধীনে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেন। তিনি স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে শিক্ষা শেষ করেন। তারপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাগ্নে অর্থাৎ দ্বীপেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। ফলে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রতি আকৃষ্ট হন। পরে রবীন্দ্রনাথের স্নেহের হয়ে ওঠেন। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পঙ্কজ কুমার রবীন্দ্রসংগীতের অন্যতম প্রধান শিল্পীর খ্যাতি অর্জন করেন।১৯২৬ সালে মাত্র একুশ বছর বয়সে তিনি “নেমেছে আজ প্রথম বাদল” গানটি ভিয়েলোফোন কোম্পানি থেকে রেকর্ড করেন।
১৯৩১ সাল থেকে দীর্ঘ ৩৮ বছর পঙ্কজ কুমার বাংলা, হিন্দি, উর্দু ও তামিল চলচ্চিত্রে অবদান রাখেন। তিনি কুন্দন লাল সায়গল, শচীন দেব বর্মণ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গীতা দত্ত, আশা ভোঁসলে প্রমুখ সঙ্গীত পরিচালক ও শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। চলচ্চিত্রে তিনি কুন্দন লাল সায়গল, প্রমথেশ বড়ুয়া ও কানন দেবীর মতো শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয়ও করেন। নীতীন বসু ও রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রে নেপথ্য কণ্ঠসংগীতের প্রবর্তন করেছিলেন। ১৯৩১ সালে তিনি মহিষাসুরমর্দিনীর অনুষ্ঠানটির সুর দেন।
চলচ্চিত্রের তালিকা–
চাষির মেয়ে, ইহুদি কি লেড়কি, মঞ্জিল, মায়া, কারোড়পতি, গৃহদাহ, দেবদাস, মুক্তি, দিদি, বাড়ি বেহেন, জীবন মরণ, ধর্তি মাতা, দেশের মাটি, অভিজ্ঞান, অভাগিনী, কপালকুণ্ডলা, দুশমন, বড়ি দিদি, জিন্দেগি, নর্তকী, ডাক্তার, মীনাক্ষী, দিক্ষুল, কাশীনাথ, মেরি বেহেন, দুই পুরুষ, রামের সুমতি, প্রতিবাদ, মঞ্জুর, রূপকথা, জলজলা, মহাপ্রস্থানের পথে, যাত্রীক, চিত্রাঙ্গদা, রাইকমল।
১৯৭০ সালে তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র সম্মাননা হিসেবে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত করে।
১৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৮ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য: সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

শ্রীশীতলচরণ দাস বাবার মহাজীবন কথা : ড. রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।।।

শ্রীঅক্ষয়তৃতীয়া তিথিতে নবদ্বীপ ধামস্থ সমাজবাড়ি মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতাচার্য শ্রীমদ্‌ শ্রীরাধারমণ চরণ দাস বাবার একান্ত কৃপাভাজন শিষ্য ও প্রিয়জন শ্রীল শীতলচরণ দাস বাবাজী মহাশয়ের শুভ আবির্ভাব হয়। ব্রজমণ্ডলের অন্তর্গত শ্রীরাধারাণীর জন্মভিটা ‘বর্ষাণা’-র পার্শ্ববর্তী গ্রাম ‘রাম কে নগরিয়া’ নামক স্থান তাঁর জন্মভূমি।

১৮৬৫ সালের ২৮শে এপ্রিল, শুক্রবার, শাণ্ডিল্য গোত্রীয় ব্রাহ্মণ পরিবারভুক্ত ভগবদ্ভক্ত শ্রীশিবকৃষ্ণ ত্রিপাঠী ও ভক্তিমতী শ্রীমতী নীলমণিদেবীর পুত্র হয়ে জন্মগ্রহণ করেন সর্ব সুলক্ষণযুক্ত শীতল বাবা। শৈশবস্থায় তাঁর নাম ছিল ‘বাঞ্ছানিধি’। ইংরাজীতে একটা কথা আছে -Morning shows the day …. অর্থাৎ, সকালটাই বলে দেয় সারাদিন কেমন যাবে । ঠিক তেমন শীতল বাবার শৈশবস্থা থেকেই বোঝা গিয়েছিল যে, এককালে তিনি ভক্তচূড়ামণি হয়ে শ্রীশ্রীনিতাই-গৌরাঙ্গ ভজন-কীর্ত্তনের সম্পদ প্রদান করে সকলকে সমৃদ্ধ ও আপ্লুত করবেন– এই বাঞ্ছা নিয়েই তাঁর আবির্ভাব। তাই হয়ত বা দৈবেচ্ছায় নামকরণ হয় ‘বাঞ্ছানিধি’ ।
একসময় ব্রজধামে ‘রাম কে নগরিয়া’ গ্রামে মহামারীর প্রকোপ দেখা দিল। সমগ্র গ্রাম প্রায় উজাড় হয়ে গেল । অবশিষ্ট পরিবারেরা সেসময় প্রাণভয়ে এক এক জায়গায় চলে যেতে থাকল । বাঞ্ছানিধিও তাঁর পিতামাতার সঙ্গে পদব্রজে শ্রীক্ষেত্রধামে চলে আসেন তখন। কিন্তু এখানেও কলেরা রোগের প্রকোপ দেখা দিল হঠাৎ । বাঞ্ছানিধির পিতা ও মাতা উভয়েই কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে ধরাধাম থেকে বিদায় নিলেন একদিন । বিধাতার অমোঘ বিধানে পিতা-মাতার স্নেহ পাবার ভাগ্য হতে বঞ্চিত হলেন বালক বাঞ্ছানিধি।
শ্রীপাদ রামদাস বাবাজী মহাশয় বলতেন, “দেখ শ্রীভগবানের সবেতেই করুণা। অনুকূলে বা প্রতিকূলে তা সে যে ভাবেই হোক না কেন । কখনও কাউকে কিছু দিয়ে কৃপা করেন , আবার কখনও বা কারোর থেকে কিছু নিয়ে তিনি কৃপা করেন। কিন্তু কৃপা সবটাতেই।” বাস্তবিক তাই। শাস্ত্রে যেমন দেখা যায়–ধ্রুব মহারাজ বা ভক্ত প্রহ্লাদকে শ্রীভগবান অর্থ , সম্পদ , রাজ্য, রাজত্ব সব দিয়ে কৃপা করেছেন। আবার দৈত্যরাজ বলির ধন, সম্পদ , রাজ্য ইত্যাদি সবকিছুই কেড়ে নিয়ে কৃপা করেছেন তিনি। ঠিক তেমনই, শীতলচরণ দাস বাবার জীবন ইতিহাস চর্চা করলে দেখা যায় শ্রীভগবান এভাবেই তাঁর সবকিছু কেড়ে নিয়ে প্রতিকূল-কৃপা করেছেন তাঁকে । কেন , একথা বললাম , তা আবার আর এক বার প্রমাণ পাবেন , প্রিয় পাঠককুল আমার।
বাঞ্ছানিধি এরপর সহায়সম্বলহীন , পিতৃমাতৃহীন দশায় তাঁর ভ্রাতার সঙ্গে পুরীর নরেন্দ্র সরোবরের তীরের ‘নির্মোহী’ আখড়ায় আশ্রয় পেলেন। আখড়ার মহান্ত শ্রীমৎ শ্রীগোমতী দাসজী পুত্র-স্নেহে তাঁকে ভালোবাসতেন। বলাবাহুল্য, তা সে বাঞ্ছানিধির স্বভাবগুণেই। তিনিই পালন করেছিলেন অনাথ বাঞ্ছানিধিকে । দিন কাটতে থাকলো। একসময় গোমতী দাসজী বাঞ্ছানিধিকে মঠের সমস্ত ক্ষমতার অধিকারী বানিয়ে , দায়িত্বপ্রাপ্ত করে মর্ত্যধাম ত্যাগ করলেন। কিন্তু , বাঞ্ছানিধি মঠাধীশ হলেও তাঁর মন ছিল অন্যভাবে বিভাবিত। প্রবল বৈরাগ্য আর কঠোর সাধনাতেই তাঁর সাধ। গাদীর অধিকারী ব্যক্তি কে হওয়া উচিৎ এ নিয়ে বিতণ্ডা বাঁধলো আশ্রমিকদের মধ্যে। এদিকে প্রতিদিনই প্রভু জগন্নাথের কাছে প্রার্থনা করতেন বাঞ্ছানিধি যাতে মঠের প্রভুত্ব ও বিষয়-সম্পত্তির অধিকার থেকে অব্যাহতি পান তিনি। ধন-সম্পত্তি, বিষয়-বৈভব তথা পদমর্যাদার প্রতি তাঁর যে বিরক্ত মনোভাব তা প্রকাশ করলেন জগন্নাথের সমীপে । আর তাই হয়তো বা ভগবান ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করলেন ! মঠাধীশ পদ নিয়ে যাঁরা মামলা করেছিলেন কোর্টে , অবিশ্বাস্যভাবে তাঁদের জিত হল মামলায় ! বাঞ্ছানিধি বিষয়-বৈভব হতে বন্ধন-মুক্ত হলেন।
পুরীতে বড়বাবাজী মহাশয় অর্থাৎ শ্রীমৎ রাধারমণ চরণ দাসের কৃপাদৃষ্টিতে পড়লেন বাঞ্ছানিধি। তাঁর কাছে দীক্ষা ও বেশাশ্রয় প্রাপ্ত হলেন। নতুন নামকরণ হ’ল ‘শ্রীশীতলচরণ দাস’। সাধারণতঃ নিয়ম হল, পূর্বাশ্রমে যে নাম থাকে , সেই নামের আদ্যক্ষর দিয়েই সন্ন্যাস জীবনের নতুন নামকরণ হয়ে থাকে । কিন্তু, বাঞ্ছানিধির ক্ষেত্রে হল অন্য নাম । শ্রীগুরুদেব বড়বাবার প্রিয় পদ ছিল–‘নিতাইপদ-কমল কোটিচন্দ্র সুশীতল, যে ছায়ায় জগত জুড়ায়……,।’ সুশীতল নিতাইচরণে শিষ্যকে সমর্পণ যাতে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয় সেকারণেই হয়তো বা তিনি শিষ্যের নাম দিয়েছিলেন শীতলচরণ। তবে বাস্তবিকই শীতলবাবার নিরভিমানী সাত্ত্বিক ভাবাবলী ভূষিত শ্রীমূর্তি, শিশুসুলভ সারল্যপূর্ণ স্নেহময় ব্যবহার সবার মনকে শীতলতা তথা স্নিগ্ধতার পরশ পাইয়ে দিত। তাঁর অনন্যসাধরণী প্রীতির রতি তৃষিত তাপিত হৃদয়কে শীতল করে দিত আনন্দ ধারায়।
পুরীতে শ্রীশ্রীগজন্নাথদেবের নাটমন্দিরে গরুড়স্তম্ভের পদমূলের কাছে, ব্রহ্মাদি দেবতাগণের আকাঙ্খিত ও পূজ্য শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভুর শ্রীচরণচিহ্ন প্রস্তরখণ্ডের উপর বিরাজমান ছিলেন। তবে ভক্তসংঘট্টের দরুণ তাঁর উপর বহুজনের পা লেগে যেত। সে দৃশ্য দেখে বড়বাবাজী মহাশয় বড় ব্যথিত হতেন । তিনি তাই পুরীর তদানীন্তন মহারাজা গজপতি মুকুন্দদেবজীকে অনুরোধ করেন শ্রীমন্‌ মহাপ্রভুর শ্রীচরণচিহ্ন যুক্ত প্রস্তরখণ্ডটি যাতে স্থানান্তরিত করা হয়। মহারাজা চরণচিহ্নের মহিমার গুরুত্ব অনুভব করে শ্রীপাদপদ্মসহ প্রস্তরটি তুলিয়ে সযত্নে শ্রীজগন্নাথ মন্দিরের ডান দিকে উত্তর দরজার ভিতরপানে একটি ছোট সুদৃশ্য মন্দির নির্মাণ করে, সেখানে প্রতিস্থাপন করান। সে সময় শ্রীপাদপদ্ম সেবা-পূজার প্রথম সেবাধিকারী হলেন শীতলচরণ বাবা। এ যেন মহাপ্রভুরই উদগ্র আকাঙ্খা শীতলবাবার সেবা গ্রহণ করবার। অতএব, মঠের পদ হারিয়ে, পরম কৃপা পেয়েছিলেন তিনি শ্রীভগবানের। সুধী পাঠকগণ, এবার জগন্নাথ মন্দির দর্শন করতে গেলে শীতলচরণ দাস বাবার সেবিত শ্রীমন্‌ মহাপ্রভুর মহামহিম পাদপদ্মপীঠ অবশ্যই দর্শন করবেন।
বড়বাবাজী মহাশয় বলতেন– ‘চিনি, ময়দা, ছানা থাকলেই মিষ্টি হয় না, ময়রাও লাগে, মিষ্টি পাকাতে।’ তেমনি তীর্থ হল ময়রার মতো, যেখানে ভগবদকৃপা, সাধুকৃপা, তীর্থস্থানের কৃপা–সবই একসঙ্গে পাওয়া যায়। তাই তীর্থপর্য্যটন করতে হয়।’ শ্রীগুরুদেবের এই নির্দেশকে প্রতিপালন করতে শীতলবাবা প্রায়শঃই পদব্রজে তীর্থভ্রমণ করতেন । কমবেশি আঠারো বছর ভারত ও বহির্ভারতের নানা তীর্থস্থান দর্শন ও পরিক্রমা করেছিলেন তিনি । মনের ভাব তাঁর– নিতাই-গৌর ভ্রমণ করিল যে সকল স্থান রঙ্গে, সে সকল স্থান ভ্রমিব আমি প্রণয়ী ভক্ত সঙ্গে।
ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও শ্রবণ, সঙ্গীত-কীৰ্ত্তন শিক্ষা, সুঠাম দেহ গঠনের অনুশীলন ইত্যাদি বিষয়ে শীতল বাবা ছিলেন বিশেষ আগ্রহী। সাধুসঙ্গ করার বাসনা ছিল তাঁর প্রবল। তাই শ্রীরামকৃষ্ণদেব, ত্রৈলঙ্গস্বামী, সিরডির সাইবাবা, বামাক্ষ্যাপা, শ্রীশ্যামাচরণ লাহিড়ী, স্বামী বিবেকানন্দ, শ্রীবিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী, লোকনাথ ব্রহ্মচারী প্রমুখ বহু সিদ্ধ যোগীপুরুষের সান্নিধ্যে এসেছিলেন এবং তাঁদের সঙ্গ-প্রসঙ্গে সাধন-ভজন, ধর্মশিক্ষা ও ধর্মীয় জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছিলেন তিনি। নিয়মিত ভক্তিগ্রন্থ অধ্যয়ন, নিষ্ঠাপূর্ণ ভজন, সদাচারব্রতে দীক্ষিত হয়ে, ‘আপনি আচরি ধর্ম জীবেরে শিখায়।’–এ বাণীর সাক্ষাৎ প্রতিমূর্তিস্বরূপ হয়েছিলেন শীতলবাবা। যে ছয়টি প্রধান গুণকে ভক্তের ভূষণ বলে মনে করা হয়, তা হ’ল –১) ক্ষমাশীলতা, ২) ভগবদনির্মুখী হয়ে সময়ের অপব্যাহার না করা, ৩) বিষয়ভোগে অনীহা, ৪) অভিমানশূণ্যতা, ৫) ভগবদ্ প্রাপ্তির জন্য লালসা ও ব্যকুলতা, এবং ৬) শ্রবণ-কীর্তন-স্মরণ-বন্দন তথা ভগবানের লীলাকথালোচনায় তীব্র অনুরাগ । এ সব কটি গুণসম্পন্ন ছিলেন শীতলচরণ দাসজী। আত্মপ্রচার-বিমুখ ছিলেন তিনি। বহু অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী থাকলেও প্রচারবিরুদ্ধ ছিলেন। ছোট বড় সকলকে এমনকি নিজের শিষ্যদের পর্যন্ত তিনি ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করতেন । কেউ যদি জানতে চাইতেন এমন আচরণ করার কারণ কী , তখন বলতেন – “বা রে ! বলা হয়েছে-হইয়াছেন , হইবেন যত গৌর ভক্তবৃন্দ , কৃপা করে দেহ গৌরচরণারবৃন্দ ! বয়সে ছোট হলেও তাঁরা যে একসময় গৌরভক্ত হবেন ! একারণে তাঁদেরও কৃপা প্রয়োজন আমার । তাই তাঁদেরকেও আপনি বলে সম্মান জানাই। তা ছাড়া সকল জীবে কৃষ্ণের অধিষ্ঠান তো। ছোটবড় নির্বিশেষে সকলে সম্মান পাবার অধিকারী ।”
শ্রীমদ্ রাধারমণচরণ দাস বাবাজী মহারাজ বলতেন- “একমাত্র কৃপা ভিন্ন কলির জীবের পক্ষে আর অন্য উপায় নেই। আব্রহ্মাস্তম্ভ থেকে ব্যাষ্টি-সমষ্টি ভাবে সকলের কৃপা প্রয়োজন।” শীতলচরণ দাস বাবার জীবন যেন তাঁর গুরুদেবের আদর্শেই গঠিত হয়েছিল।
শীতল বাবা তাঁর লব্ধ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ভক্ত-শিষ্যের মধ্যে অকাতরে ও সানন্দে বিতরণ করে, বহুজনের মানব-জীবন সার্থক করেন, সেবায় নিয়োজিত করেন। তাঁরই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় পলতার শ্রীশ্রীহরিভক্তি প্রচারিণী সভা।
১৯৭৪ সাল। কোজাগরী শ্রীলক্ষ্মীপূর্ণিমা তিথি। সেই উপলক্ষে ভক্ত-শিষ্যসহ শীতল বাবা সংকীর্ত্তনরত কৃষ্ণনগরে ডাঃ ক্ষিতীশ চন্দ্র সাহার বাড়িতে । সংবাদ এল- তাঁর সঙ্গে অন্যান্যদের বৃন্দাবনে যাওয়ার ট্রেনের টিকিট কাটা হয়েছে। শোনামাত্র শীতল বাবা বলে উঠলেন-‘ট্রেনের টিকিট ফেরত দাও। বাতিল কর। শ্রীধাম বৃন্দাবনে এখন যাওয়া হবে না।’ সকলেই তাঁর কথা শুনে অবাক। বৃন্দাবনে যাওয়ার সব ব্যবস্থা করা হয়ে গেছে, আর তা সম্পূর্ণ তাঁরই ইচ্ছায়। এখন তিনি আবার কেন বলছেন, আর বৃন্দাবন যাওয়া হবে না। পুনরায় শ্রীনাম সংকীর্তন শুরু করে দিলেন বাবা। কিন্তু , কিছুক্ষণের মধ্যেই শারিরীক অস্থিরতা শুরু হল তাঁর। দৈহিক ব্যাথা-বেদনায় এমনই কাতর হয়ে পরলেন যে তখনই তাঁকে এক শল্য-চিকিৎসক দেখাতে হ’ল। চিকিৎসক সাথে সাথেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার বন্দোবস্ত করলেন।
অবশেষে , আশ্বিনী কৃষ্ণা প্রতিপদ তিথিতে, ১০৯ বৎসর বয়সে শীতল বাবা পাড়ি দিলেন নিত্যধামে। স্থূল দেহে শ্রীধাম ভৌম বৃন্দাবন তাঁর যাওয়া হল না ঠিকই, কিন্তু সূক্ষ্মদেহে তিনি যাত্রা করলেন তাঁর সাধনোচিত ধামে। তখন বোঝা গেল কেন তিনি ট্রেনের টিকিট ফেরত দিতে বলেছিলেন। তিনি অনুভব করেছিলেন যে এবার সময় এসেছে নিজ ধামে ফেরার। সে জন্যই হঠাৎ মত পরিবর্তন হয়েছিল তাঁর।
শীতল বাবা আর স্থূল দেহে নেই –এই দুঃসহ বিরহ-সংবাদ যখন তাঁর অসংখ্য ভক্ত-শিষ্য-অনুরাগীজনেরা প্রাপ্ত হলেন , সকলে শোকে কাতর হয়ে পরলেন । শীতল বাবার সারল্য ভরা শীতল সঙ্গ সান্নিধ্য আর পাওয়া যাবে না ভেবে আবালবৃদ্ধবণিতা সাশ্রুনয়ন হয়েছিলেন সেদিন। পলতা-ঘুষিপাড়ায় অবস্থিত তদানীন্তন নির্মীয়মান শ্রীশ্রীনিতাই-গৌরাঙ্গ মন্দির সংলগ্ন স্থানে শ্রীসনাতনদাস বাবাজী মহাশয়ের পরিচালনায় বাবারই একান্ত অনুরক্ত ভক্তপ্রবর শ্রীরবীন্দ্রনাথ রাহা মহাশয়ের আন্তরিক উদ্যোগে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। আর , তা বাবার পূর্ব ইচ্ছানুসারেই হয়েছিল। অতএব, পলতা শ্রীশ্রীনিতাই গৌরাঙ্গ ভক্ত সেবাশ্রমের সংলগ্ন ভূমিতেই শ্রীশীতলচরণ দাস বাবাজী মহাশয়ের পূর্ণ পুণ্য সমাধিপীঠ দর্শন হয়। তাঁর শিষ্যসহ অগুণিত ভক্তদের কাছে সেই স্থানটি একান্ত পবিত্র স্থান। বাস্তবিক , এক অন্য রকম প্রাণ-মন শীতল করা অনূভূতি হয় সেই স্থানে উপস্থিত হলে। দেহ-মন জুড়িয়ে যায়। শীতলচরণ দাস বাবা যেন স্বমহিমায় তাঁর শীতল-কৃপাসহ আজও উপস্থিত সেখানে–সেই উপলব্ধি হয়।
এ হেন অক্ষয় কীর্তিসম্পন্ন সাধকের শ্রীচরণ-কমলে অক্ষয়তৃতীয়ার পুণ্যলগ্নে মো হেন ভজনহীনা অধমার নিবেদন, আজন্মকালের জন্য শ্রীশ্রীনিতাই-গৌরাঙ্গ ও শ্রীগুরু-বৈষ্ণবের চরণসেবার অভিলাষী হয়ে যেন সদা সেবায় বিভোর থাকতে পারি–এ ভিন্ন অন্য কোন বাসনা যেন বসতি না গড়ে এ হৃদয়কন্দরে। শ্রদ্ধাঘন প্রণাম জানাই ভজনবিদ্ধ প্রবীণ সিদ্ধমহাত্মা শ্রীশীতলচরণ দাস বাবার পদপঙ্কজে।
জয় নিতাই। জয় গৌর। জয় শীতলচরণ দাস বাবাজী।
আশ্রমে কী ভাবে যাবেন — ব্যারাকপুর ষ্টেশনে পশ্চিম দিকে নেমে অর্থাৎ ১ নং প্ল্যাটফর্মের দিক থেকে বেড়িয়ে মেইন রোড ধরে ট্যাক্সি, টোটো বা ৮৫নং রুট বাসে ঘুষিপাড়া স্টপেজ । রাস্তার ওপরই বাঁ দিকে সুবৃহৎ শ্রীশ্রীনিতাই-গৌরাঙ্গ মন্দির আশ্রম । সময় লাগবে ৮-১০মিনিট।
— ভক্তকৃপা ভিখারিণী
ড. রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১০ মে, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ১০ মে। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৬৬১ – জাহানদার শাহ, মুঘল সম্রাট।
১৭৬০ – ক্লদ জোসেফ রুজে দ্য লিল, ফরাসি] জাতীয় সংগীতের লেখক।
১৮৮২ – গুরুসদয় দত্ত, লোকসাহিত্য গবেষক ও বাংলার ব্রতচারী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা।
১৮৯৯ – ফ্রেড অ্যাস্টেয়ার, মার্কিন নৃত্যশিল্পী, গায়ক, অভিনেতা, নৃত্য পরিচালক ও টেলিভিশন উপস্থাপক।  .
১৯০২ – ডেভিড ও.সেলৎসনিক, মার্কিন চলচ্চিত্র প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার ও স্টুডিও নির্বাহী।

১৯০৫ – পঙ্কজ কুমার মল্লিক, ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সঙ্গীত পরিচালক ও অভিনেতা।

১৯০৮ – বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের পত্নী প্রমিলা দেবী।
১৯২৭ – নয়নতারা সায়গল, ভারতীয় লেখিকা ও ঔপন্যাসিক।
১৯৩০ – জর্জ এলউড স্মিথ, মার্কিন বিজ্ঞানী, নোবেল বিজয়ী।

১৯৫৫ – মার্ক ডেভিড চ্যাপম্যান, আমেরিকান বীট্‌ল্‌স শিল্পী জন লেননের আততায়ী।
১৯৬০ – বোনো, আইরিশ গায়ক, গীতিকার, সুরকার, ভেঞ্চার পুঁজিবাদী, ব্যবসায়ী।
১৯৬০ – মারলিন অটি, বিখ্যাত স্লোভেনীয় প্রমিলা অ্যাথলেট।
১৯৬৬ – ডেভিড ম্যাকেন্‌জি, স্কটল্যান্ডীয় চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯৬৯ – ডেনিস বের্গকাম্প, ওলন্দাজ ফুটবল খেলোয়াড়।
১৯৭২ – স্টুয়ার্ট কার্লাইল, জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার।
১৯৭৪ – সিল্‌ভ্যাঁ উইল্টর্ড, ফরাসি ফুটবল খেলোয়াড়।
১৯৮৩ – গুস্তাভ ফ্রীদোলিন, সুয়েডীয় রাজনীতিবিদ।

১৯৮৭ – তৌসিফ আহমেদ, একজন বাংলাদেশী সুরকার, গীতিকার ও সঙ্গীতশিল্পী।
১৯৯৫ – শিহান মাদুশঙ্কা, শ্রীলঙ্কান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-
১৫০৩ – ক্রিস্টোফার কলম্বাস স্যানে আইল্যান্ড ভ্রমণ করেন।
১৫২৬ – পানিপথের যুদ্ধ জয় করে মোগল সম্রাট বাবর আগ্রায় প্রবেশ করেন।
১৬১২ – মুঘল সম্রাট শাহ জাহানের সাথে মুমতাজ মহলের বিয়ে হয়।
১৭৭৩ – গ্রেট ব্রিটেনের সংসদে চা-আইন পাস হয়।
১৭৭৪ – লুইস ফ্রান্সের রাজা এবং মেরি অ্যাস্টোইলেট রানী হন।
১৮২৪ – লন্ডনে জাতীয় গ্যালারি জনগণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
১৮৫৭ – ভারতবর্ষে বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সিপাহী বিপ্লবের সূচনা হয়।
১৮৭১ – ফ্রান্সের দ্বিতীয় সম্রাট লুই নেপোলিয়ন বা তৃতীয় নেপোলিয়নের শোচনীয় পরাজয় ফ্র্যাংকফুট চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত রূপ পরিগ্রহ করে।
১৮৭২ – ভিক্টোরিয়া উডহল যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মহিলা, যিনি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।
১৯৩৩ – বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নাৎসিরা পঁচিশ হাজার বই পুড়িয়ে দেয়।
১৯৪০ – জার্মানি নেদারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ ও বেলজিয়াম দখল করে নেয়।
১৯৪১ – ব্যাপক বোমা বর্ষণের ফলে লন্ডনের হাউস অব কমন্স ধ্বংস হয়।
১৯৭২ – বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় মেক্সিকো।
১৯৯৪ – দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নেলসন ম্যান্ডেলা।
এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা-
১৮৪৯ – হোকুসাই, জাপানি চিত্রশিল্পী।

১৯৬২ – অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী।
১৯৭৭ – জোন ক্রফোর্ড, মার্কিন অভিনেত্রী।

১৯৮৩ – জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি রসায়ন বিজ্ঞানী।

১৯৮৫ – প্রমথনাথ বিশী, ভারতীয় রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও লেখক।
১৮৮৯ – সৌরীন্দ্র মিত্র, ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্রগবেষক ও প্রাবন্ধিক।
১৯৯৯ – শেল সিলভারস্টেইন, মার্কিন সাহিত্যিক, যিনি কার্টুন, কবিতা ও শিশুতোষ বইয়ের জন্য বিখ্যাত।
২০০২ – কাইফি আজমি, ভারতীয় প্রথিতযশা উর্দু কবি, সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব।
২০০২ – রবি নিয়োগী, বাংলাদেশি বামপন্থী রাজনীতিবিদ।
২০০৪ – এরশাদ শিকদার, বাংলাদেশি অপরাধী ও সিরিয়াল কিলার।
২০১৩ – আবদুল মালেক চুন্নু, বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের খেলোয়াড়।
২০২০ – (ক)  হরিশঙ্কর বাসুদেবন, ভারতীয় ইতিহাসবিদ ও অধ্যাপক।
(খ) আনোয়ারুল কবির তালুকদার, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ও সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।
২০২২ – প্রখ্যাত ভারতীয় সন্তুর বাদক শিবকুমার শর্মা।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

জীবণ বদলে দেওয়া মনীষীদের কিছু বিখ্যাত উক্তি।।।।

মনীষীদের উক্তি বা মনীষীদের বাণী এইসব বই থেকেই নেওয়া হয়েছে। বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ থেকেই বাণী বা উক্তির সংকলন। বাণী বা উক্তি আমাদের মানবিক হতে শিক্ষা দেয়। শিক্ষা দেয় বিপদে কীভাবে হাল ধরতে হয় তারও। সুতরাং আমাদের উচিত বেশি বেশি বাণী চিরন্তনী পড়া।

10. সফল মানুষেরা কাজ করে যায়।
তারা ভুল করে, ভুল শোধরায় – কিন্তু কখনও হাল ছাড়ে না।
– কনরাড হিলটন
11. অসৎ আনন্দের চেয়ে পবিত্র বেদনা ভালো।
-হোমার
12. প্রয়োজন আইনের তোয়াক্কা করে না।
-বেন্জ্ঞামিন ফ্রাঙ্কলিন
13. অপমান হলো একটি তীর, যতই ভুলতে চাইবেন ততই হৃদয়ের গভীরে বিদ্ধ হবে।
-রেদোয়ান মাসুদ
14. এই বিশ্বে স্থায়ী কিছুই না, এমনকি আমাদের সমস্যাগুলোও না
– চার্লি চ্যাপলিন
15. সাফল্যের মূলমন্ত্র হল যা আমরা ভয় পাই তার উপর নয় বরং আমরা যা চাই তার উপর আমাদের চেতন মনকে কেন্দ্রীভূত করা।
-ব্রায়ান ট্রেসি
16. মানুষ পরাজয়ের জন্য সৃষ্টি হয়নি। তাকে হয়তো ধ্বংস করা যায়, কিন্তু হারানো যায় না।
– আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
17. এই পৃথিবী কখনো খারাপ মানুষের খারাপ কর্মের জন্য ধ্বংস হবে না , যারা খারাপ মানুষের খারাপ কর্ম দেখেও কিছু করেনা তাদের জন্যই পৃথিবী ধ্বংস হবে।
-আইনস্টাইন
18. কাককে মুখে তুলে খাওয়াতে গেলে, সে তোমার চোখ উপড়ে খাবে।
– তুরস্কের বিখ্যাত প্রবাদ
19. অন্যকে বারবার ক্ষমা কর কিন্তু নিজেকে কখনোই ক্ষমা করিও না।
-সাইরাস
20. ধার্মিকতা আর ধর্মান্ধতা এক জিনিস নয়। ধার্মিকতা মানুষকে আলোর পথে নিয়ে যায় আর ধর্মান্ধতা মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়। এ দেশের মানুষকে আমি ধার্মিক বলব না কারণ এ দেশের বেশিরভাগ মানুষই ধর্মান্ধ।
-রেদোয়ান মাসুদ
21. অনেক কিছু ফিরে আসে, ফিরিয়ে আনা যায়, কিন্তু সময়কে ফিরিয়ে আনা যায় না
-আবুল ফজল
22. হ্যাঁ এবং না কথা দুটো সবচেয়ে পুরনো এবং সবচেয়ে ছোট। কিন্তু এ কথা দুটো বলতেই সবচেয়ে বেশি ভাবতে হয়।
-পীথাগোরাস
23. প্রেমের আনন্দ থাকে স্বল্পক্ষণ কিন্তু বেদনা থাকে সারাটি জীবন।
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
24. আপনি যদি গরীব হয়ে জন্ম নেন তাহলে এটা আপনার দোষ নয়, কিন্তু যদি গরীব থেকেই মারা যান তবে সেটা আপনার দোষ।
– বিল গেটস
25. বিখ্যাত না হয়ে জীবন কাটালেও সুন্দর জীবন কাটানো সম্ভব, কিন্তু জীবনের মত জীবন না কাটিয়ে বিখ্যাত হওয়া কখনও সুন্দর জীবন হতে পারে না।
– ক্লাইভ জেমস
26. অসহায়কে অবজ্ঞা করা উচিত নয়, কারণ মানুষ মাত্রেই জীবনের কোন না কোন সময় অসহায়তার শিকার হবে ।
_গোল্ড স্মিথ
27. প্রাপ্তি আর প্রত্যাশার পার্থক্য হলো দুঃখ। তাই নিজের প্রত্যাশাটা একটু কমিয়ে ফেলুন, দেখবেন আপনার দুঃখও কমে গেছে।
-রেদোয়ান মাসুদ
28. একজন আহত ব্যক্তি তার যন্ত্রনা যত সহজে ভুলে যায়, একজন অপমানিত ব্যক্তি তত সহজে অপমান ভোলে না ।
-জর্জ লিললো
29. যে কখনও ভুল করেনা। সে নতুন কিছু করার চেষ্টা করে না
– অ্যালবার্ট আইনস্টাইন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট ।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

উত্তরাখণ্ডে দেখার সেরা কিছু জায়গা।।।

ঘুরতে কে না ভালোবাসে। বিশেষ করে বাঙালিরা সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ে ভ্রমনের নেশায়। কেউ পাহাড়, কেউ সমুদ্র আবার কেউ প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থান ভালোবাসে ভ্রমণ করতে। প্রকৃতি কত কিছুই না আমাদের জন্য সাজিয়ে রেখেছে। কতটুকুই বা আমরা দেখেছি। এ বিশাল পৃথিবীতে আমরা অনেক কিছুই দেখিনি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় আজ গোটা পৃথিবীটা হাতের মুঠোয়় এলেও প্রকৃতিকে চাক্ষুষ প্রত্যক্ষ করা এ এক আলাদা রোমাঞ্চ, আলাদা অনুভূতি যার রেষ হৃদয়ের মনিকোঠায় থেকে যায় চিরকাল।।

ঘুতাইতো আজও মানুষ বেরিয়ে পড়়ে প্রকৃতির কে গায়ে মেখে রোমাঞ্চিত হওয়ার নেশায়। আসুন ঘুরে আসি ভারতের ই একটি দর্শণীয় স্থান উত্তরাখন্ডের আউলি।
মনে করা হয়, বিখ্যাত আদিগুরু শঙ্করাচার্য এখানে অষ্টম শতাব্দীতে এসেছিলেন। যোশীমঠ মন্দিরটি শুধুমাত্র তাঁর দ্বারা নির্মিত যা এখনও পর্যন্ত অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এছাড়াও, এটি স্থানীয় উপজাতিদের জন্য পরিচিত খাতাউলি যা মূলত একটি আধা যাযাবর উপজাতির নাম ভোটিয়া উপজাতি যা মঙ্গোলিয়া থেকে স্থানান্তরিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
আউলি, ভারতের উত্তরাখণ্ডে অবস্থিত একটি হিল স্টেশন থেকে স্কি গন্তব্যস্থল, চারপাশে ওক গাছ, আপেল অর্কিড এবং পাইন গাছে ঘেরা। বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল ছাড়াও, এটি স্কিইং, ট্রেকিং, ক্যাম্পিং এবং আরও অনেক কিছুর মতো দুঃসাহসিক কার্যকলাপের আবাসস্থল।
আউলির উত্তরে, বদ্রীনাথ মন্দির রয়েছে যা হিন্দুদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র তীর্থস্থানগুলির মধ্যে একটি। আরেকটি আকর্ষণ হল ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স জাতীয় উদ্যান যা আলপাইন উদ্ভিদ এবং বন্যপ্রাণী তুষার চিতা এবং লাল শেয়ালের জন্য বিখ্যাত। পর্যটকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার সাথে, আউলি পর্যটন ভারত সরকারের জন্য প্রচুর রাজস্ব যোগ করে।

আউলি যেখান থেকে ভারতের উত্তরাখণ্ডের নীলকণ্ট, মানা পর্বত, নন্দা দেবীর ‘ধবল শিখর’-এর সৌন্দর্যে নিজেকে বুঁদ করে রাখতে পারবেন। বরফ মোড়া পাহাড়ে রয়েছে বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের হাতছানি। আউলি সাধারনত শীতকালে পর্যটকদের কাছে বেশি জনপ্রিয় তার শীতকালীন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের কারনে। আউলি ভ্রমনের আরেকটি সেরা আকর্ষন এখানকার ক্যাবল কার। রোপওয়ে চেপে আউলি ভ্রমণ যেন একটা ম্যাজিক। ৫ নম্বর টাওয়ারের পর থেকে হিমালয় উন্মুক্ত হয়ে আছেন। আস্তে আস্তে টাওয়ার নম্বর যত বাড়বে ততই চোখের সামনে আসবেন নন্দাদেবী, দ্রোণাগিরি, ত্রিশূল, নন্দাকোট, পঞ্চচুল্লি। চোখের সামনে একের পর এক পিক উন্মুক্ত হতে দেখে আছন্ন হয়ে পড়েতে হয়, এ যেন স্বপ্নের থেকেও অনেক সুন্দর। সকালে-বিকালে অলস পায়ে পাহাড়ি পথের আঁকেবাঁকে ঘুরে বেড়ানো, ভোরবেলা লজের বারান্দা থেকে দিনের প্রথম আলোয় পাহারচুড়োর রংবদল আর সন্ধ্যায় সোনাঝরা সূর্যাস্তের মায়াবি আলোয় পাখিদের ঘরে ফেরা দেখতে দেখতে কেটে যাবে দুদিন।
GMVN লজের পাশেই একটা হনুমানজির মন্দির আছে। চেয়ার লিফট পয়েন্টের সামনের গেট দিয়ে গেলে কম সিঁড়ি ভাঙতে হয়। এখান থেকে নন্দাদেবি, ত্রিশুল, কামেট, দুনাগিরি, গৌরি আর হাতি পর্বত, নিলকান্ত পিকগুলো দেখা যায়।
আউলির রোপওয়ে হচ্ছে গিয়ে এশিয়ার দীর্ঘতম (৩.৭৫কিমি) তথা উচ্চতম আর গোটা পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় উচ্চতম। এক থেকে দশ এই ১০টি টাওয়ার, আউলিতে যাঁরা থাকবেন তাঁরা ৮নম্বর টাওয়ারে নেমে যেতে পারেন, কারণ এখানেই আউলির রিসোর্ট। আরো দুটো টাওয়ার পেরোলে আউলির বিখ্যাত ‘গরসন বুগিয়াল’। এই অলি শীতকালে স্কিইং ও আইস স্কেটিংয়ের ideal destination. এমনকি এখানে স্কেটিং শেখানোর স্কুলও আছে। ভাড়া পাওয়া যায় শীতের পোশাক, স্কিইংয়ের সরঞ্জাম আর গাইড।

আউলিতে দেখার বিশেষ জায়গা—
আউলি অন্যতম উত্তরাখণ্ডে দেখার সেরা জায়গা. আপনি যদি আউলিতে ভ্রমণ করেন তবে আউলির এই পর্যটন স্থানগুলি পরীক্ষা করে দেখুন।
১) গর্সন বুগিয়াল
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০৫৬ উচ্চতায় অবস্থিত, এটি একটি মনোরম অবস্থান যেখানে কেউ নন্দা দেবী এবং ত্রিশূলের দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। এই সৌন্দর্যের সাক্ষী হতে আউলি হিল স্টেশন থেকে এই গন্তব্যে মাত্র ৩ কিলোমিটার ট্রেকিং করতে হবে।
২) কোয়ানি বুগিয়াল
এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। গরসন বুগিয়াল থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে, এই জায়গাটিকে ট্রেকারদের জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। এটি জোশিমঠ-আউলি-গুরসো বুগিয়াল-কোয়ানি বুগয়ালের ট্রেকিং রুটের মধ্যে আসে। এটি ক্যাম্প করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা এবং প্রকৃতির কোলে উপভোগ করে।
৩) চেনাব হ্রদ
কম লোক সমাগমের সাক্ষী, সুন্দর জায়গাটি আপনাকে বিস্ময়ে রাখার জন্য দুর্দান্ত সৌন্দর্য এবং শান্ত পরিবেশের ঋণী। সবুজ গাছ-গাছালির মাঝে সুন্দর গ্রামগুলো পর্যটকদের জন্য লোভনীয়।
৪) ত্রিশূল চূড়া
সবচেয়ে জনপ্রিয় আউলি পর্যটন স্থানগুলির মধ্যে একটি হল ত্রিশুল পাইক যা পশ্চিম কুমায়ুনে তিনটি হিমালয় পর্বত শৃঙ্গ দ্বারা গঠিত। এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭১২০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত।
৫)জোশিমাঠ
যোশীমঠ অবিচ্ছেদ্য এক ভারতের তীর্থস্থান যেটি আদি গুরু শঙ্করাচার্য কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বেশ কয়েকটি হিন্দু মন্দির নিয়ে গর্বিত। যদিও এটি প্রাথমিকভাবে ধর্মীয় গুরুত্বের, জোশিমঠ একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যও।
৬) ট্রেকিং
কুয়ানি বুগয়াল ট্রেকিংয়ের জন্য সেরা গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি। আপনি যখন কুয়ানি বুগিয়ালের দিকে ট্র্যাক করছেন, তখন আপনি সুন্দর তৃণভূমিগুলি অন্বেষণ করতে পারবেন যেগুলি তুষারাবৃত পর্বত শৃঙ্গে ঘেরা।
৭) স্কিইং
আউলি স্কিইং কার্যকলাপের জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তুষার-ঢাকা এলাকাগুলি আপনাকে স্কিইং উপভোগ করতে এবং কিছু মজা এবং দুঃসাহসিক সময় কাটাতে দেয়। যদিও, পর্যটকরা মাউন্টেন বাইক ট্রেইলও উপভোগ করতে পারেন।
৮) ক্যাবল কার রাইড
স্থানীয়ভাবে ক্যাবল কার রাইডিং নামে পরিচিত গন্ডোলা. একটি ক্যাবল কার যাত্রার অভিজ্ঞতা লালন করার জন্য একটি উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত হতে পারে। যোশিমঠ থেকে শুরু করে ৪ কিলোমিটারের দূরত্ব জুড়ে গুলমার্গের পরে আউলি এশিয়ার সর্বোচ্চ এবং দীর্ঘতম কেবল কার রাইড রয়েছে।
৯) ক্যাম্পিং
আউলি লেকের পাড়ে ক্যাম্পিং করাই সবকিছু। বনফায়ারের চারপাশে বসে থাকা, আপনার বন্ধু এবং প্রিয়জনদের সাথে বিশেষ মুহূর্তগুলি উপভোগ করার সময় সুস্বাদু খাবার খাওয়া এখানে করা সেরা জিনিস।

আউলি রোপওয়ে পয়েন্ট—-
আউলি গেলে অনেকেই রোপওয়ে চেপে, ঘুরে ফিরে আসেন। কিন্তু যদি সম্ভব হয় এক রাত থাকুন। বরফ না পেলেও থাকুন, অন্য কোন অধরা রূপ অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।
বদ্রীনাথ যাওয়ার পথে অথবা হেমকুন্ড, ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ারস যাওয়ার পথে আউলি দেখে নেওয়া যায়। কেবল কারে চেপে আকাশপথে আউলি ভ্রমণ চিরকাল মনে থেকে যাবে।

ভ্রমণের সেরা সময়—

আউলি সাধারনত শীতকালীন এক্টিভিটির জন্যে সেরা গন্তব্য। শীতকালীন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস এবং বরফের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়ার জন্যে এখানে সাধারনত ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ভ্রমণের সেরা সময় ধরা হয়। তুষারাবৃত পর্বত উপভোগ করার জন্য ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেও কেউ তার ভ্রমণের সময়সূচী করতে পারেন। এছাড়াও, আপনি যদি ভারতের আর্দ্র গ্রীষ্ম এড়িয়ে যেতে চান, তবে আপনি মে এবং জুন মাসে এখানে যেতে পারেন। আউলিতে শরৎকালও খুব সুন্দর ও মনোরম। তাই, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে আউলি ট্রিপের জন্য আপনার টিকিট বুক করা সবচেয়ে ভালো হবে।

কিভাবে আউলি পৌঁছাবেন—

আউলি ভারতের সবচেয়ে মনোরম হিল স্টেশনগুলির মধ্যে একটি, তাই, আপনার জীবনে অন্তত একবার এটি পরিদর্শন করা উচিত। এখানে এই গন্তব্যে পৌঁছানোর বিভিন্ন উপায় রয়েছে।

আকাশ পথে–

নিকটতম বিমানবন্দর হল জলি গ্রান্ট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেরাদুন বিমানবন্দর ২৩৭ কিমি দূরে অবস্থিত।
এছাড়াও রেল যোগে, সড়কপথে যাওয়া যেতে পরে।

কোথায় থাকবেন——

যোশিমঠ থাকতে চাইলে রোপওয়ে পয়েন্টের কাছে তিন-চারটে হোটেল আছে। সাধারণ মানের। তবে পরিষ্কার ঘর, লাগোয়া বাথরুম, গীজার ইত্যাদি আছে। আউলিতে থাকার জন্যে GMVN এর স্কি রিসোর্ট ছাড়াও কয়েকটি রিসোর্ট ও লজ আছে।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বিনোদচন্দ্র চক্রবর্তী, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে বিনোদচন্দ্র চক্রবর্তী রায় প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।

বিনোদচন্দ্র চক্রবর্তী ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
বিনোদচন্দ্র চক্রবর্তী ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। ময়মনসিংহের বিপ্লবী সংস্থা সাধনা সমিতির বিশিষ্ট কর্মী ছিলেন। তিনি দীর্ঘ ১৬ বছর ব্রিটিশ রাজের কারাদণ্ড ভোগ করেন এবং জেলে অনশন করেন ২৬ দিন।

জন্ম—-

বিনোদচন্দ্র চক্রবর্তীর জন্ম ১৯০৯ সালে ময়মনসিংহ জেলায়।
বিপ্লবী কর্মকাণ্ড–
বিনোদচন্দ্র চক্রবর্তী অল্প বয়সেই বিপ্লবী যুগান্তর দলে যোগ দেন। পরে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ঘনিষ্ঠ সহযোগে দেশের কাজে অনেকবার কারাবরণ করেন। অবিভক্ত বাংলার আইনসভার সদস্য এবং বহুদিন নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সদস্য ছিলেন। দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তানে তাকে কয়েক বছর বন্দিজীবন কাটাতে হয়েছিল। মুক্তিলাভের পর পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য হন। কলকাতা সংগ্রামী বিপ্লবী সমিতির সভাপতি ছিলেন।

সাধনা সমিতির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ–

বিনোদচন্দ্র চক্রবর্তী ছাড়াও সাধনা সমিতির অন্যান্য সদস্য ছিলেন হেমেন্দ্রকিশোর আচার্য চৌধুরী, সুরেন্দ্রমোহন ঘোষ, শ্যামানন্দ সেন, সিধু সেন, পৃথ্বীশচন্দ্র বসু, কোহিনুর ঘোষ, মহেন্দ্রচন্দ্র দে, আনন্দকিশোর মজুমদার, ভক্তিভূষণ সেন, ক্ষিতীশচন্দ্র বসু, মনোরঞ্জন ধর, সুধেন্দ্র মজুমদার, মতিলাল পুরকায়স্থ, সঞ্জীবচন্দ্র রায়, মোহিনীশঙ্কর রায়, দ্বিজেন্দ্র চৌধুরী ননী, ও নগেন্দ্রশেখর চক্রবর্তী। এঁদের সকলেই বহু বৎসর কারাগারে ও অন্তরীণে আবদ্ধ ছিলেন।

২৫ এপ্রিল, ১৯৭৩ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This