Categories
বিবিধ

ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে ধর্ম নয়, মানবতা — পূর্ব বর্ধমানের শ্রীরামপুরে অনন্য ভাইফোঁটা পালন।

পূর্ব বর্ধমান, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- “ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা
যম দুয়ারে পড়লো কাঁটা,
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা,
আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা!!”

উপরের এই উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য অপরিসীম।
আজ ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা। একে আবার যম দ্বিতীয়াও বলা হয়। কার্তিক মাসের শুক্লা পক্ষের দ্বিতীয় তিথিতে এই দিনটি উদযাপিত হয়। শাস্ত্র অনুসারে যম এবং যমুনা দুই ভাই বোন। যমরাজের মঙ্গল কামনায় তার বোন যমুনা তার কপালে ফোঁটা দিয়েছিলেন। তারপর থেকেই এই দিনটি পালন করা হয়। যম যেমন অমর প্রতিটি বোন চায় তার ভাই বা দাদা যেন সুস্থভাবে দীর্ঘ জীবন লাভ করে। দীর্ঘায়ু হয়। এই দিন ভাই বা দাদার মঙ্গল কামনায় বোনেরা শুদ্ধাচারে তাদের কপালে চন্দনের ফোটা এঁকে দেয়। বোনের বাম হাতের কনিষ্ঠা থাকে ভাইয়ের কপালে আর ঠোঁটে থাকে চিরন্তন সেই চারটি লাইনের অভয় বাণী। আর ভাই বোনের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দেয়।
হিন্দু ধর্মীয় তিথি অনুযায়ী আজ সেই তিথি।তবে ধর্মের বেড়াজাল ভেঙে পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের শ্রীরামপুরে হিন্দু ও মুসলিম উভয় ধর্মের ভাই-বোনেরা আজ ভাই ফোঁটার মিলন উৎসবে মেতে উঠেছে।
সকাল থেকেই সর্বজয়া মাল্টিপারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের ভবনটি সাজিয়ে তুলেছেন উভয় সম্প্রদায়ের বোনেরা মিলে। তারপরেই আসে সেই মহেন্দ্রক্ষণ যখন সমস্ত রকম ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে উভয় সম্প্রদায়ের বোনেরা ভাইদের কপালে তাদের মঙ্গল কামনায় ফোটা দেন। ভাইদের জন্য উপহার এবং মিষ্টি মুখের ব্যবস্থাও করেন। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এর উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর ধরেই তারা সম্প্রীতির এই ভাইফোঁটার আয়োজন করে থাকেন। আজ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কপালে ফোঁটা দিচ্ছেন আজিজুন্নেসা খাতুন। মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সকলের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই অনুষ্ঠানটি তিনি করে থাকেন বলে জানান। উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ এই মিলন উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পেরে ভীষণ খুশি বলে জানান তারা।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *