মহিমচন্দ্র দাশগুপ্ত, ৯ ই এপ্রিল ১৮৮২ সালে নবাবপুরে জন্মগ্রহণ করেন, বর্তমানে বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার অংশ, ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। একজন যোগ্য ডাক্তার, তিনি চট্টগ্রামে তার অনুশীলন প্রতিষ্ঠা করেন এবং দ্রুত সম্প্রদায়ের একজন সম্মানিত সদস্য হয়ে ওঠেন।
তাঁর জীবন একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেয় যখন তিনি মহাত্মা গান্ধীর মতাদর্শ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে কংগ্রেসে যোগদান করেন এবং চট্টগ্রামে অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
তাঁর অবদান শুধু চিকিৎসা সেবার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না; দাশগুপ্ত রাজনৈতিক সক্রিয়তায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলা কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন, যেখানে তিনি যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তকে এই অঞ্চলে একটি শক্তিশালী শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সমর্থন ও সহযোগিতা করেছিলেন। তার অহিংস অবস্থান সত্ত্বেও, দাশগুপ্ত যারা সশস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নিয়েছিলেন তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখেছিলেন, বিশিষ্ট সূর্য সেন সহ এই ধরনের অনেক বিপ্লবীকে সাহায্য করেছিলেন।
১৯২৮ সালে, প্রবল বিরোধিতার মধ্যে, দাশগুপ্তের প্রচেষ্টার ফলে সূর্য সেন চট্টগ্রাম জেলা কংগ্রেসের সেক্রেটারি হিসেবে নিযুক্ত হন। সেন এবং অন্যান্য বিপ্লবীদের সাথে তার ঘনিষ্ঠতার কারণে তিনি চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার অভিযানের পরে অনেককে আশ্রয় দিতে দেখেছিলেন। অবাধ্যতার এই কাজটি তাকে এবং তার পরিবারের উপর ব্রিটিশ সরকারের হাতে তীব্র নিপীড়ন ও কষ্ট নিয়ে আসে, যার ফলে তার পিতামহ জমিদার বিপিন দাশগুপ্ত পুলিশের বর্বরতার কারণে মারা যান।
মহিমচন্দ্র দাশগুপ্ত তাঁর সারা জীবন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম পৌরসভা, জেলা বোর্ড, রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম এবং প্রবর্তক সংঘ সহ বিভিন্ন সংস্থার সাথে কাজ করেছেন, সমাজের উন্নতির জন্য তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। ভারতের স্বাধীনতা ও উন্নয়নের প্রতি সাহস, সহানুভূতি এবং অটল অঙ্গীকারের উত্তরাধিকার রেখে তার যাত্রা ১৯৩৮ সালের ৬ আগস্ট শেষ হয়েছিল।
মহিমচন্দ্র দাশগুপ্তের জীবনকাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের বহুমুখী ভূমিকার একটি প্রমাণ, যারা শুধু ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধেই লড়াই করেননি বরং সামাজিক কল্যাণ ও সম্প্রদায়ের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তাঁর উত্তরাধিকার প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে, ভারতের স্বাধীনতার জন্য করা ত্যাগের কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।