Categories
গল্প প্রবন্ধ

হারিয়ে যাওয়া নব্বইয়ের শৈশব ও ডিসেম্বরের দিনগুলো : বব চৌধুরী।

শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলো আমাদের জীবনের সবচেয়ে মধুর সময়। শৈশবকালে মাথায় চেপে বসে থাকে না কোনো চিন্তাভাবনা; শুধু খুশি, আনন্দ আর হুল্লোড়ের মধ্য দিয়ে সমগ্র ছোটবেলা কখন অতিবাহিত হয়ে কৈশোর পেরিয়ে আমরা যৌবনে প্রবেশ করি, তা বুঝতে পারি না। বুঝতে যখন পারি, তখন সেই সারল্যমাখা দিনগুলো হারিয়ে গেছে মহাকালের গভীরে।
শৈশবের একেকটা দিন আমাদের জীবনে একেকটা জাদুঘর হয়ে থাকে যে জাদুঘরে জমে থাকে হাজারো স্মৃতি।
সন্ধ্যা হতেই ঘরে ফিরে পড়তে বসা, হারিকেনের আলোতে অথবা কুপি জ্বালিয়ে রাতে একসঙ্গে মেঝে বসে খাবার খাওয়া। শৈশবের সেই নানুবাড়ির দিনগুলো; সেই ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা, এক টাকা ও দুই টাকার গল্প; সেই শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে খেজুরের রস খাওয়া সেই লুকোচুরি খেলা।🧡 দরজার পেছনে লুকিয়ে থাকতাম কেউ এলে চমকে দেব বলে। সে আসতে দেরি করছে বলে অধৈর্য হয়ে বেরিয়ে আসতাম পূর্ণিমার রাতে চাঁদের সঙ্গে হাঁটতাম আর বলতাম, চাঁদও আমাদের সঙ্গে হাঁটছে। স্কুলে যাওয়ার সময় সবাই একসঙ্গে দৌড়ে যেতাম। ক্লাসে কলম–কলম খেলা, খাতায় ক্রিকেট খেলা, চোর-ডাকাত-বাবু-পুলিশ খেলা। এক টাকার রঙিন বা নারকেলি আইসক্রিম, চার পিস চকলেট, হাওয়াই মিঠাই খেতে না পারলে মন খারাপ হয়ে যেত। হঠাৎ আকাশপথে হেলিকপ্টার গেলে সবাই ঘর থেকে বের হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। শুক্রবার সন্ধ্যার পর আলিফ লায়লা, সিন্দবাদ, রবিনহুড ও ম্যাকগাইভার দেখার জন্য পুরো সপ্তাহ অপেক্ষা করা। ফলের বিচি খেয়ে ফেললে দুশ্চিন্তা করতাম, পেটের ভেতর গাছ হবে কি না; মাথায় মাথায় ধাক্কা লাগলে শিং গজানোর ভয়ে আবার নিজের ইচ্ছায় ধাক্কা দিতাম; আমাদের কারও দাঁত পড়লে ইঁদুরের গর্তে দাঁতটা দিয়ে আসতাম, নাহলে আমাদের দাঁত গজাবে না। কেউ বসে থাকলে তার মাথার ওপর দিয়ে ঝাঁপ দিতাম, যাতে সে আর লম্বা হতে না পারে। বিকেলে কুতকুত, কানামাছি ও গোল্লাছুট না খেললে বিকেলটা যেন মাটি হয়ে যেত।মারবেল, লুডু না খেললে কি হয়!রাতে ঘরের কোণে বাঁশবাগানে অথবা আমগাছের ডালে বসে থাকা হুতোম প্যাঁচার ডাক যেন এখনো কানে ভেসে ওঠে। আহা, ডাক শুনে ভয়ে কতই–না মাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে যেতাম॥ কি করে ভুলে যাই সেই ডিসেম্বর মাসের কথা॥ এ ছাড়া সঙ্গে ছিল আমাদের কালার ফুল ডিসেম্বর যে ডিসেম্বর পাওয়ার আশায় আমাদের অপেক্ষা করতে হতো দীর্ঘ ১১ মাস। বার্ষিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হতো আমাদের ডিসেম্বর। বার্ষিক পরীক্ষার শেষ দিন আমরা ছিলাম পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ ছিল না কোনো জীবনের চাওয়া, না পাওয়ার হিসাব ছিল না কোনো পিছুটান। দুরন্তপনায় ছুটতাম ডিসেম্বরের শেষের দিনগুলো; হিসাব ছিল শুধু একটাই, বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট আর জানুয়ারির ১ তারিখে নতুন বইয়ের ছোঁয়া পাওয়ার।
পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরতেই দৌড় দিতাম খেলার মাঠে; কোদাল, পিঁড়ি, কাঠি নিয়ে উইকেট বানাতাম। সবার কাছ থেকে টাকা তুলে বল আর স্কচটেপ কিনতাম। সকাল গড়িয়ে দুপুর, দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যা, খেলার মধ্যেই ডুবে থাকতাম। কখনো ভাত খেতে দুপুরে বাড়িতে যাওয়া হতো, কখনো যাওয়া হতো না।সন্ধ্যার পর আবার আমরা বেরিয়ে পড়তাম। তীব্র শীতে রাত জেগে আগুনের পাশে বসে মা-চাচিদের ধান সেদ্ধ করা দেখা এক অন্যরকম অনুভূতি। চারদিকে খড়ের স্তূপ আর তার মধ্যে লুকোচুরি খেলা ছিল অন্যতম। কখনো কখনো কম্বলের নিচে লুকিয়ে গল্পের বই পড়া হতো। আবার কখনো খড় জ্বালিয়ে আগুন পোহাতাম। সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যাডমিন্টন, গোল্লাছুট, বউচি খেলে ঘরে ফিরতে হতো। একটু দেরি হলে বকা শুনতাম।আমাদের সেই ডিসেম্বরের দিনগুলো এখন হারিয়ে গেছে। এখন ডিসেম্বরেও ক্লাস থাকে, পরীক্ষা থাকে, থাকে অ্যাসাইনমেন্ট ও প্রেজেন্টেশনের ডেডলাইন, থাকে অফিস। জীবনের প্রয়োজনে ব্যস্ত হয়েছে সবাই। এখন আমাদের ডিসেম্বরের সকালগুলো কাটে ঘুমে, ক্লাসে অথবা অফিসে। এখন আর ঘুম থেকে উঠে আমরা আম্মুর হাতের শীতকালীন পিঠা খেতে পারি না এমনকি এখন সকালে উঠে আম্মুকে দেখি না। বিকেলগুলোতে আমরা আগের মতো মাঠে যেতে পারি না, যেতে হয় প্রাইভেটে। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত আমরা চার দেয়ালে কাটিয়ে দিই। সকাল-দুপুর-সন্ধ্যা, ছুটছি তো ছুটছি।
সময়ের পরিক্রমায় পার হয়ে গেছে আমাদের শৈশব। ব্যস্ততা বেড়েছে গ্রাম এখন নগরায়ণ হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে হারিয়ে গেছে সেই আলোবিহীন শৈশব, হারিয়ে গেছে সেই ডিসেম্বরের দিনগুলো! এখনকার প্রজন্মের কাছে নব্বইয়ের শৈশব হয়তো রূপকথার গল্প মনে হবে। সেই দিনগুলি আমাদের পাড়ার বন্ধু গুলো এক সঙ্গে অনেক সবাই কাটিয়েছে কিন্তু এখন আর সেই সুযোগ নেই তাদের সাথে কোন যোগাযোগ নেই কোথায় কে হারিয়ে গেছে কেউ জানে না॥ হয়তো কেউ কোনো একদিন কাজের ব্যস্ততার ফাঁকে ডিসেম্বরের কোনো এক বিকেলে অফিসের বারান্দায় বসে কফির চুমুতে লেখাটি পড়তে পড়তে হারিয়ে যাবে তার সেই ছেলেবেলায়, সেই হারিয়ে যাওয়া।শৈশবে সে মুহূর্তে নস্টালজিক হয়ে হয়তো দীর্ঘশ্বাস ফেলে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের দুটি লাইন আক্ষেপে বলে উঠব দিন গুলি মোর সোনার খাঁচায় রইল না সেই-যে আমার নানা রঙের দিনগুলি। আমরা প্রায় সকলেই একমত যে ছাত্রজীবন বা স্কুল লাইফ হল জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। সাংসারিক জটিলতাও জীবনের বাস্তবিক খুঁটিনাটি থেকে চিন্তামুক্ত চিত্ত এই ছাত্রজীবন । স্নিগ্ধ বাতাসের মতোই নির্মল এই ছাত্রর জীবন।স্কুল লাইফ বা ছাত্রজীবনে কাটানো সময়গুলো তাই প্রায় অধিকাংশ মানুষের কাছেই সবথেকে আনন্দঘন মুহূর্ত সময় সাথে সাথেচাস্ত ভাই মামাতো ফুপাতো ভাই সবাই যার যার জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সবাইকে যার যার নিজ নিজ সাংসারিক জীবন নিয়ে অনেক ব্যস্ত হয়ে তবে এখনকার জীবনটা অনেক ভিন্ন রকম কিছু স্কুলের বন্ধু এখনো বন্ধুত্ব বজায় রেখেছে তার মধ্যে দুজনের নাম স্মরণ করতে পারি একজন হল আবুল হোসেন এর জন্য শহিদুল ইসলাম এখনো আমার সাথে তাদের যোগাযোগ আছে প্রতিনিয়ত কথা হয় আবুলের সাথে বছর কয়েকের মধ্যে কয়েকবার দেখা হয়েছে কিন্তু ছোট শহিদুল ইসলামের সাথে দেখা হয়নি। লেখাটি শেষ করব হেমন্ত দার গানের দুটো লাইন দিয়ে ভাবছিলাম শুধু ভাবছিলাম ভাবনার হাতে ভর দিয়ে ভাবনা গুলো কাছে নিয়ে আমি ভাবছিলাম শুধু ভাবছিলাম॥

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকারী বাঙালি বিপ্লবী – অতীন্দ্রনাথ বসু।

ভূমিকা—-

 

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে এমন ই এক বাঙালি বিপ্লবী ছিলেন অতীন্দ্রনাথ বসু।

 

পরিবার—

 

অতীন্দ্রনাথ বসু ১৮৭৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতার জোড়াবাগানের বসু পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম অপূর্বকৃষ্ণ বসু।অতীন্দ্রনাথের পুত্র উত্তর কলকাতার নেতৃস্থানীয় অমর বসু পিতার সকল কাজে যুক্ত ছিলেন।

 

কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন—-

 

অতীন্দ্রনাথ নিজে একজন কুস্তিগীর ছিলেন। ময়মনসিংহের রাজা জগৎকিশোর আচার্য চৌধুরী ছিলেন তার শিক্ষাগুরু। সিমলা ব্যায়াম সমিতির প্রাঙ্গনে ভারতীয় প্রথায় কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন তিনিই প্রথম করেছিলেন।

 

স্বদেশী মেলার আয়োজন—-

 

অতীন্দ্রনাথ বসু যুবকদের দেহে ও মনে শক্তিমান করে তোলার উদ্দেশ্যে সিমলা ব্যায়াম সমিতি।

 

বিপ্লবী কর্মকান্ড—-

 

যুগান্তর বিপ্লবী দলের অন্যতম নেতৃস্থানীয় ছিলেন অতীন্দ্রনাথ বসু । তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে কয়েকবার কারাবরণ করেছিলেন, পাশাপাশি তাঁকে ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পরবর্তী পাঁচবছর ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী কেন্দ্র পরিচালনার অপরাধে নির্বাসনদণ্ড ভোগ করতে হয়।১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ সরকার সিমলা ব্যায়াম সমিতিকে শরীরচর্চার আড়ালে বিপ্লবী তৈরির আখড়া সন্দেহ করে এটিকে বেআইনি বলে ঘোষণা করে। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত, ডাঃ জে. এম. দাশগুপ্ত প্রভৃতি নেতৃবর্গ সিমলা ব্যায়াম সমিতির কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

 

বিদ্যালয় স্থাপন—

 

তিনি রবীন্দ্রনাথের পরামর্শে ‘মহেশালয়’ নামের একটি বিদ্যালয় স্থাপনা করেছিলেন। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘ভারত ভান্ডার’ নামের একটি সংস্থা তৈরি করেন।

অতীন্দ্রনাথ যুবকদের দেহে ও মনে শক্তিমান করে তোলার উদ্দেশ্যে ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ২রা এপ্রিল সিমলা ব্যায়াম সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন।

 

দুর্গা পূজা ও স্বদেশী মেলার আয়োজন—

 

১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সার্বজনীন দুর্গা পূজার প্রচলন করেন যাতে দেশের মানুষ বিভেদ ভুলে একত্রে উৎসবে মেতে উঠতে পারে। এই পূজা প্রাঙ্গনে স্বদেশী মেলারও আয়োজন হত। অতীন্দ্রনাথ যুবকদের দেহে ও মনে শক্তিমান করে তোলার উদ্দেশ্যে ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ২রা এপ্রিল সিমলা ব্যায়াম সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন।

 

মৃত্যু—

মহান এই বিপ্লবী ১৯৬৫ সালের ১০ জুন মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু আজও তিনি স্মরনীয় হয়ে রয়েছেন তাঁর কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়, বাংলা সাহিত্যের একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক।

প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী কথাসাহিত্যিক ও ঔপন্যাসিক।

প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার ধাত্রীগ্রামের মাতুলালয়ে ১৮৭৩ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার গুরাপ গ্রামে।  ১৮৮৮ সালে, প্রভাতকুমার জামালপুর হাইস্কুল থেকে এন্ট্রান্স এবং পাটনা কলেজ থেকে F.A এবং B.A পাস করেন ১৮৯৫ সালে। তিনি ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে আইন পড়ার জন্য বিদেশে যান এবং ব্যারিস্টারি পাস করে ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে দেশে ফিরে আসেন।

উল্লেখযোগ্য রচনাকর্ম——

 

গল্প সংকলন :—

 

১) ‘নবকথা’ (১৮৯৯)

২) ‘ষোড়শী’ (১৯০৬)

৩) ‘দেশী ও বিলাতী'(১৯০৯)

৪) ‘গল্পাঞ্জলি’ (১৯১৩)

৫) ‘গল্পবীথি’ (১৯১৬)

৬) ‘পত্রপুষ্প'(১৯১৭)

৭) ‘গহনার বাক্স ও অন্যান্য গল্প'(১৯২১)

৮) ‘হতাশ প্রেমিক ও অন্যান্য গল্প’ (১৯২৪)

৯) ‘বিলাসিনী ও অন্যান্য গল্প'(১৯২৬)

১০) ‘যুবকের প্রেম ও অন্যান্য গল্প'(১৯২৮)

১১) ‘নতুন বউ ও অন্যান্য গল্প'(১৯২৯)

১২) ‘জামাতা বাবাজী ও অন্যান্য গল্প'(১৯৩১)

 

উপন্যাস সমূহ :—

 

১) ‘রমাসুন্দরী'(১৯০৮)

২) ‘নবীন সন্ন্যাসী'(১৯১২)

৩) ‘রত্নদীপ’ (১৯১৫)

৪)’ জীবনের মূল্য'(১৯১৭)

৫)’সিন্দুর কৌটা'(১৯১৯)

৬) ‘মনের মানুষ'(১৯২২)

৭) ‘আরতি’ (১৯২৪)

৮) ‘সত্যবালা ‘(১৯২৫)

৯) ‘সুখের মিলন'(১৯২৭)

১০)’সতীর পতি'(১৯২৮)

১১)’প্রতিমা'(১৯২৯)

১২) ‘বিদায় বাণী'(১৯৩৩)

১৩)’গরীব স্বামী'(১৯৩৮)

১৪) ‘নবদুর্গা'(১৯৩৮)

 

অন্যান্য গ্রন্থ :—

 

‘অভিশাপ'(ব্যঙ্গকাব্য)

 

মৃত্যু——-

 

কথাসাহিত্যিক প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় ৫ই এপ্রিল ১৯৩২ সালে ৫৯ বছর বয়সে মারা যান।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

ঊর্মিলা দেবী, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের নারী বিপ্লবী।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে ঊর্মিলা দেবী  প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধু শহীদ ভগৎ সিং-এর মতই নয় বরং শক্তিশালী নারীদের দ্বারা প্রশস্ত হয়েছিল যারা তাদের মাটিতে দাঁড়িয়েছিল এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ব্রিটিশদের সাথে লড়াই করেছিল।  ঊর্মিলা দেবী ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা ছিলেন তিনি। ঊর্মিলা দেবী ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের নারী বিপ্লবী।

 

জন্ম ও পরিবার—-

 

১৮৮৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের তেলিরবাগ গ্রামে উর্মিলা দেবী জন্মগ্রহণ করেন।  তাঁর পিতার নাম ভুবনমোহন দাস এবং মাতার নাম নিস্তারিণী দেবী।  স্বামীর নাম অনন্তনারায়ণ সেন। উর্মিলা দেবী ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের বোন।  পিতামহের আদর্শে প্রভাবিত হয়ে তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন।

 

রাজনৈতিক জীবন—–

 

দেশবন্ধুর অনুপ্রেরণায় তিনি নারীদের মধ্যে কাজের বিকাশ ঘটান।  ১৯২১ সালে, তিনি ‘নারী-কর্মমন্দির’ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা, যার লক্ষ্য ছিল চরকা ও খদ্দরকে জনপ্রিয় করা এবং দেশপ্রেম জাগানো।  ঊর্মিলা দেবী ১৯৩২ সালের অসহযোগ আন্দোলনে আইন অমান্যকারী প্রথম তিনজন মহিলার একজন। তিনি কলকাতা ‘নারী সত্যাগ্রহ সমিতি’র সভাপতি ছিলেন।

 

সাহিত্যকর্ম——

 

সে সময় নারায়ণ পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করতেন। তার প্রকাশিত সাহিত্যগ্রন্থ পুষ্পহার। মহাত্মা গান্ধী, সরোজিনী নাইডু প্রমুখের স্মৃতিকথাও রচনা করেছেন ।

 

মৃত্যু——

 

ঊর্মিলা দেবী মে ১৯৫৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্বাধীনতা সংগ্রামী ও ভারতের প্রথম স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজকুমারী বিবিজী অমৃত কাউর – একটি বিশেষ পর্যালোচনা।

রাজকুমারী বিবিজি অমৃত কৌর আহলুওয়ালিয়া ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন কর্মী যিনি স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।
তিনি নারী অধিকারের জন্য তার ওকালতি সহ তার মেয়াদে আনা সংস্কারের জন্য ব্যাপকভাবে স্মরণীয়।
এই নিবন্ধটি IAS পরীক্ষার প্রসঙ্গে রাজকুমারী অমৃত কৌর সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেবে।

অমৃত কৌর ১৮৮৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি লখনউতে জন্মগ্রহণ করেন।  তার বাবা ছিলেন কাপুরথালার মহারাজার ছোট ছেলে।  অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার সময় তার প্রাথমিক শিক্ষা ইংল্যান্ডের ডরসেটের শেরবোর্ন স্কুল ফর গার্লস-এ হয়েছিল।  তার শিক্ষা সমাপ্তির পর, তিনি ১৯১৮ সালে ভারতে ফিরে আসেন।
স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে রাজকুমারী আমরি কৌরের প্রচেষ্টা শুরু হয় যখন তিনি ইংল্যান্ড থেকে ফিরে আসেন।  তার বাবা গোপাল কৃষ্ণ গোখলের মতো স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতাদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন।  তিনি ১৯১৯ সালে মুম্বাইতে মহাত্মা গান্ধীর সাথে দেখা করেছিলেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি এবং শিক্ষার মধ্যে অনেক সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পেয়ে তিনি ১৬ বছর ধরে তাঁর সচিব হিসাবে কাজ করবেন।

 

রাজকুমারী অমৃত কৌর জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পর ব্রিটিশ শাসনের একজন সোচ্চার সমালোচক হয়ে ওঠেন।  তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন, সামাজিক সংস্কারের দিকে মনোনিবেশ করার সাথে সাথে স্বাধীনতা সংগ্রামের সক্রিয় সদস্য হন।  তিনি সক্রিয়ভাবে দেবদাসী প্রথা এবং বাল্যবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালান।
অমৃত কৌর ছিলেন অল ইন্ডিয়া উইমেনস কনফারেন্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা যা ১৯২৭ সালে মহিলাদের প্রতি আরও ভাল আচরণের পক্ষে কথা বলেছিল। ১৯৩০ সালে এখানে ডান্ডি মার্চ এ অংশগ্রহণের পর তিনি ব্রিটিশদের দ্বারা গ্রেফতার হন। তার মুক্তির পর, তিনি একটি কঠোর জীবনযাপন করতে শুরু করেন  ১৯৩৪ সালে মহাত্মা গান্ধীর আশ্রমে, তার মহৎ পটভূমি থাকা সত্ত্বেও।
রাজকুমারী অমৃত কৌরকে ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষ শিক্ষা উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য হিসাবে মনোনীত করেছিলেন।  যাইহোক, তিনি ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে জড়িত থাকার কারণে বোর্ড ছেড়ে দেন। আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের ফলে তাকে কারাবরণ করা হয়।
অমৃত কৌর সর্বজনীন ভোটাধিকারের জন্য চাপ দেন।  এই লক্ষ্যে, তিনি ভারতীয় ভোটাধিকার এবং সাংবিধানিক সংস্কার সংক্রান্ত লোথিয়ান কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
অমৃত কৌর যথাক্রমে ১৯৪৫ এবং ১৯৪৬ সালে লন্ডন এবং প্যারিসে ইউনেস্কো কনফারেন্সে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের একজন অংশ ছিলেন।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

জীবন বদলে দেওয়া সারদা মায়ের কয়েকটি বিখ্যাত উক্তি।

সারদা মায়ের এমনই কয়েকটি বিখ্যাত উক্তি আজ জেনে নেব আমরা।

 

* ‘মনটাকে বসিয়ে আলগা না দিয়ে কাজ করা ঢের ভাল। মন আলগা হলেই যত গোল বাধায়।’

 

* ‘দয়া যার শরীরে নাই, সে কি মানুষ? সে তো পশু। আমি কখনও কখনও দয়ায় আত্মহারা হয়ে যাই, ভুলে যাই যে আমি কে।’

 

* ‘একশো জনকে খাওয়াতে হবে না, কিন্তু চোখের সামনে একজন ক্ষুধার্তকে দেখলে তাঁকে একটু খেতে দিও।’

 

* ‘যেমন ফুল নাড়তে নাড়তে ঘ্রাণ বের হয়, চন্দন ঘষতে ঘষতে সুগদ্ধ বের হয়, তেমনই ভগবত্‍ তত্ত্বের আলোচনা করতে করতে তত্ত্বজ্ঞানের উদয় হয়।’

 

* ‘ভাঙতে সবাই পারে, গড়তে পারে ক’জনে? নিন্দা ঠাট্টা করতে পারে সব্বাই, কিন্তু কী করে যে তাকে ভালো করতে হবে, তা বলতে পারে ক’জনে?’

 

* ‘কাজ করা চাই বইকি, কর্ম করতে করতে কর্মের বন্ধন কেটে যায়, তবে নিষ্কাম ভাব আসে। একদণ্ডও কাজ ছেড়ে থাকা উচিত নয়।’

 

* ‘কর্মফল ভুগতে হবেই। তবে ঈশ্বরের নাম করলে যেখানে ফাল সেঁধুত, সেখানে সুঁচ ফুটবে। জপ তপ করলে কর্ম অনেকটা খণ্ডণ হয়। যেমন সুরথ রাজা লক্ষ বলি দিয়ে দেবীর আরাধনা করেছিল বলে লক্ষ পাঁঠায় মিলে তাঁকে এক কোপে কাটলে। তার আর পৃথক লক্ষ বার জন্ম নিতে হল না। দেবীর আরাধনা করেছিল কিনা। ভগবানের নামে কমে যায়।’

 

* ‘কত সৌভাগ্য, মা এই জন্ম, খুব করে ভগবানকে ডেকে যাও। খাটতে হয়, না-খাটলে কি কিছু হয়? সংসারে কাজকর্মের মধ্যেও একটি সময় করে নিতে হয়।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট ।।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

সুরাইয়া জামাল শেখ ঊনিশ শতকের ভারতীয় চলচ্চিত্রের গায়ক এবং অভিনেত্রী।

সুরাইয়া জামাল শেখ, সুরাইয়া নামে পরিচিত একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র গায়িকা এবং অভিনেত্রী ছিলেন ১৯৪০ এবং ১৯৫০ এর দশকে।  তিনি উপমহাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও গায়িকা ছিলেন এবং মালেকা-ই-তাবাসসুম উপাধি পেয়েছিলেন।

প্রাথমিক জীবন——

সুরাইয়া ১৫ জুন ১৯২৯ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি একটি ছোট ফার্নিচার দোকানের মালিকের ঘরে গুজরানওয়ালা, পাঞ্জাবে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তার পিতা লাহোর স্থানান্তরিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি মুম্বাইয়ের মেরিন ড্রাইভে তার অ্যাপার্টমেন্ট কৃষ্ণ মহলে বসবাস করছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবন——-

সুরাইয়া অভিনেতা দেব আনন্দের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন।  তারা ১৯৪৮ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত ৬টি ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন। সুরাইয়াকে উপমহাদেশের প্রথম মেলোডি কুইন (মালিকা-ই-তাবাছুম) বা মেলোডির রানী হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল এবং পরে তাকে নূর জিহান নাম দেওয়া হয়েছিল।

সম্মান ও স্বীকৃতি—-

২০১৩ সালের ৩ মে তার সম্মানে ভারতে তার ছবি সংবলিত ডাকটিকেট প্রকাশ করা হয়।

সুরাইয়া অভিনীত চলচ্চিত্র প্রায় ৬৯টি—

ওয়ারিশ, শোভা, শামা পারওয়ানা, মাসুকা, দিওয়ানা, গুঞ্জ, খুবসুরত, লাল কানওয়ার, মতিমহল, দো সিতারে, সনম, রুস্তম সোহরাব,  শামা, রোশনআরা, মালিক, ট্রলি ড্রাইভার, মিস ৫৮, মি. লম্বু, ইনাম, কাঞ্চন, বিলওয়ামঙ্গল, মির্জা গালিব, রাজপুত, সখিয়াঁ, আফসার, বাড়ি বেহেন, দাস্তান, কামাল কি ফুল, খিলাড়ি, নীলি, শান, অমর কাহানী, বালাম, বাড়ি বেহেন, বোম্বে, চারদিন, দুনিয়া, লেখ, শায়ের, শিঙ্গার, জীত, মিসচিফ, নাচ, শায়ার, আজ কি রাত, আইস, পেয়ার কি জিত, রঙ মহল, বিদ্যা, গাজরে, শক্তি, ভাটাকতি ম্যায়নে, ডাক বাংলা, দর্দ, ম্যায়ঁ কেয়া করু, ফুল, তাদবির, ইয়াতিম, হামারি বাত, ইশারা, স্টেশন মাস্টার, তাজমহল, মাদার ইন্ডিয়া,  দো দিল, দো নায়না, পারওয়ানা, নাটক, আনমোল গান্ধী, জাগ বিটি, ওমর খৈয়াম।

সুরাইয়া ২০০৪ সালে ৭৪ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যান।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

জাতীয় মতদাতা দিবস কি, কেন পালিত হয় জানুন।

যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশে সরকার গঠনে ভোটারদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি থাকে।ভোটার তার মূল্যবান ভোট দিয়ে নির্দিষ্ট দলকে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় আনে এবং দেশ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে নাগরিক হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করে।কিন্তু ভারতের মতো বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ কম।ভোটারদের ভোটের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে প্রতি বছর জাতীয় ভোটার দিবস পালিত হয়।

 

জাতীয় মতদাতা দিবস ভারতে প্রতি বছর ২৫ জানুয়ারি তারিখে পালন করা হয়। ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি তারিখ ভারতের নির্বাচনী আয়োগের ৬১তম প্রতিষ্ঠা দিবসের সঙ্গে সংগতি রেখে তখনকার রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিল এই দিবসের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছিলেন।

মিটিংএ জাতীয় মতদাতা দিবস উদ্‌যাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ভারতের আইন মন্ত্রণালয় এই দিবস উদ্‌যাপন করা প্রস্তাব এগিয়ে নিয়ে যায়।

 

জাতীয় মতদাতা দিবস ভারতের সকল নির্বাচনী কেন্দ্রে পালন করা হয়। প্রতিটি নির্বাচনী কেন্দ্রে ১৮ বছর সম্পূর্ণ করা ব্যক্তি শনাক্ত করে তাদেরকে ভোটদানের বিষয়ে সজাগ করা এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য। ভোটাধিকার লাভ করা ব্যক্তিকে শনাক্ত করে ভোটার পরিচয়পত্র প্রদান করা এই দিবসের অন্যতম উদেশ্য।

 

জাতীয় ভোটার দিবসের গুরুত্ব কী?
২০১১ সাল থেকে প্রতি বছরই ২৫ জানুয়ারি দিনটিকে দেশব্যাপী জাতীয় ভোটার দিবস হিসাবে পালন করা হচ্ছে। ১৯৫০ সালের এই দিনেই স্থাপিত হয়েছিল নির্বাচন কমিশন। জাতীয় ভোটার দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য হল সর্বোচ্চ সংখ্যায় ভোটারদের, বিশেষত নতুন ভোটারদের নাম নথিভুক্ত করায় উত্সাহ দেওয়া, সেই প্রক্রিয়া জোরদার করা।

 

জাতীয় ভোটার দিবস কীভাবে পালন করা হয়?
দেশের ভোটারদের প্রতি দায়বদ্ধতা পালন করে কমিশন দিনটিকে কাজে লাগায় তাঁদের মধ্যে সচেতনতার প্রসারে, ভোট প্রক্রিয়ায় তাঁরা যাতে সব জেনেবুঝে অবহিত হয়ে তাতে সামিল হন। নতুন ভোটারদের সংবর্ধনা দিয়ে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সচিত্র পরিচয়পত্র বা এপিক কার্ড।

 

প্রতি বছর ১ জানুয়ারিতে এই শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হয় এবং ২৫ জানুয়ারিতে তাদেরকে ফটোযুক্ত ভোটার কার্ড প্রদান করা হয়। ভোটার দিবসে সারা দেশে সমস্ত ভোটকেন্দ্র এলাকায় যোগ্য ভোটারদের চিহ্নিত করা হয়।যোগ্য ভোটারদের মধ্যে ১৮ বছর বয়সী যুবকরা অন্তর্ভুক্ত।ভোটার তালিকায় এসব ভোটারদের নাম লেখার পর তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নির্বাচনী পরিচয়পত্র।প্রতি বছর ভোটার দিবসে ভোটারদের ভোট দেওয়ার শপথও দেওয়া হয় যাতে তারা গণতন্ত্র রক্ষায় সচেতন থাকেন।

সঙ্গে নতুন ভোটদাতাদেরকে “ভোটদাতা হিসাবে গর্বিত হন, ভোট দিতে প্রস্তুত হন” (Proud to be a voter – Ready to vote) লিখিত ব্যাজ দেয়া হয়। প্রতি বছর এই দিবসের মূল বিষয় বা থিম বেছে নেওয়া হয়।

।। তথ্য ও ছবি : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে বাঙালি রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক এবং লেখক – অশ্বিনীকুমার দত্ত।

অশ্বিনীকুমার দত্ত ছিলেন একজন বাঙালি রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক এবং লেখক। অশ্বিনীকুমার দত্ত বরিশালের গৌরনদীর বাটাজোর গ্রামে ২৫শে জানুয়ারি, ১৮৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন সাব-জজ ব্রজমোহন দত্ত।  তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ পাস করেন এবং ২৩ বছর বয়সে ১৮৭৯ সালে এলাহাবাদ থেকে আইন (বিএল) পাস করেন। সেই বছর তিনি শ্রীরামপুরের চাতরা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।

কর্মকাণ্ড—

তিনি বরিশালে তার বিভিন্ন জনহিতকর ও কল্যাণমূলক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য সুপরিচিত ছিলেন।  জাতীয়তাবাদী রাজনীতি, জনকল্যাণ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে মহাত্মা অশ্বিনীকুমার বা আধুনিক বরিশালের রূপকার বলা হয়।  তিনি দুর্নীতি, সামাজিক গোঁড়ামি, কুসংস্কার ইত্যাদির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিবেদিত ছিলেন। দুর্ভিক্ষের সময়, চা বাগানের শ্রমিকদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর অতুলনীয় সেবায় একজন নিবেদিতপ্রাণ, অক্লান্ত নেতা ছিলেন।  চরনকবি মুকুন্দ দাস এবং রাজনীতিবিদ আবুল কাশেম ফজলুল হকের খ্যাতি ও প্রতিষ্ঠায় তিনি অসামান্য অবদান রাখেন।  তিনি বরিশাল শহরে তাঁর দানকৃত এলাকায় তাঁর পিতার নামে ব্রজমোহন বিদ্যালয় ও ব্রজমোহন কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।  গভীর নিষ্ঠার সাথে বিশ বছর বিনা বেতনে কলেজে পড়ান।  তিনি বরিশাল শহরে ছাত্রীদের জন্য একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।  ১৯০৫-১৯১১ সালের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় তিনি একজন জাতীয় নেতা হয়েছিলেন।  ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পার্টির মাদ্রাজ অধিবেশনে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করেন।  অশ্বিনীকুমার দত্তই প্রথম স্থপতি যিনি জাতীয় কংগ্রেসকে প্রাসাদ রাজনীতি থেকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে আসেন।  তিনি যে ‘স্বদেশ বান্ধব সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করেন তার স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় তিনি বরিশালকে স্বদেশী আন্দোলনের একটি শক্তিশালী কেন্দ্রে পরিণত করেন।  সারা জেলা জুড়ে এই সমিতির ১৬০ টিরও বেশি শাখা ছিল।  ব্রিটিশ পুলিশ তাকে বরিশালে গ্রেফতার করে এবং ১৯০৮ সালে তার সমিতি নিষিদ্ধ করে। তিনি ১৯১০ সাল পর্যন্ত লক্ষ্মৌ জেলে বন্দী ছিলেন। মহাত্মা গান্ধী ১৯২১ সালে প্রথম বরিশালে আসেন এবং জেলার অনন্য নেতা হিসেবে অশ্বিনীকুমার দত্তকে শ্রদ্ধা জানান।  কলকাতায় রাজনারায়ণ বসু ব্রাহ্মণ্যবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ১৮৮২ সালে তিনি বরিশালের ব্রাহ্মসমাজে যোগ দেন।

অবদান—

‘ব্রজমোহন স্কুল’ প্রতিষ্ঠা (১৮৮৪),  দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য ‘পিপলস্‌ অ্যাসোসিয়েশন’ স্থাপন (১৮৮৬),  বরিশাল ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড স্থাপন (১৮৮৭), নারী শিক্ষা প্রসারের জন্য ‘বাখরগঞ্জ হিতৈষিণী সভা’ এবং একটি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন (১৮৮৭), ব্রজমোহন কলেজ স্থাপন (১৮৮৯)।

তাঁর রচিত গ্রন্থ সমূহ—

ভক্তিযোগ, কর্মযোগ, প্রেম, দুর্গোৎসবতত্ত্ব, আত্মপ্রতিষ্ঠা, ভারতগীতি।

মৃত্যু—

৭ই নভেম্বর, ১৯২৩ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্যসূত্র : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ত্রিশূল পূর্ণিমা ও সঙ্কল্প মাস : স্বামী আত্মভোলানন্দ।

ওঁ নমঃ শ্রীভগবতে প্রনবায়  নমঃ…!

আজ ১০ই মাঘ বৃস্পতিবার -১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ইং ২৫/০১/২০২৪. পৌষ পূর্ণিমা বা শুভ ত্রিশূল পূর্ণিমা !

 

ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের ইতিহাসে পৌষ পূর্ণিমা বা  “ত্রিশূল পূর্ণিমা” সকল শিষ্য ,ভক্তদের জন্য একমাস মহাপূণ্যময় মাস, পরম পবিত্র মাস। পৌষ পূর্ণিমা হতে  মাঘী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই একমাস “সঙ্কল্প মাস” বলে সঙ্ঘে পরিচিত। ১৯১৬ খ্রীষ্টাব্দের পৌষ পূর্ণিমাতে চরমতম সঙ্কল্প গ্রহণ করে এই দিনটিতে বাজিতপুরের ব্রহ্মচারী বিনোদ, যিনি পরবর্তী কালে সুমহান ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা, আচার্য স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজ জঙ্গলের  মধ্যে তার সাধন কুটিরে হাতের ত্রিশূলটি মাটিতে পুতে দৃঢ় সঙ্কল্প  নিয়ে পদ্মাসনে বসলেন, যতক্ষণ সিদ্ধিলাভ করতে না পারবেন ততক্ষণ এই আসন পরিত্যাগ করবেন না । দীর্ঘ একমাস একই ভাবে, একই আসনে বসে পুণ্যময়ী শ্রীশ্রীমাঘী পূর্ণিমার পুণ্যলগ্নে ব্রহ্মচারীজী সিদ্ধি লাভ করেন। তারপর থেকে পৌষ পূর্ণিমা হতে শ্রীশ্রীমাঘী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই একমাস “সঙ্কল্প মাস” বলে সঙ্ঘে পরিচিত।

১৯২৫ খ্রীষ্টাব্দের এই পৌষ পূর্ণিমাতে ভারত সেবাশ্রম সংঘের মহান প্রতিষ্ঠাতা ভগবান শ্রীশ্রী প্রণবানন্দজী মহারাজ বাজিতপুরে তাঁর সিদ্ধাসনে সমাধিমগ্ন অবস্থায় এযুগের তারকব্রহ্ম নাম — “ওঁ হর গুরো শঙ্কর শিব শম্ভো” নাম প্রাপ্ত হন এবং আবাল্য তাঁর নিত্যসঙ্গী সিদ্ধ ত্রিশূলটি স্বীয় সিদ্ধাসনে প্রতিষ্ঠিত করে যে উৎসবের আয়োজন করেন, তাহাই  “শ্রীশ্রী ত্রিশূল উৎসব” নামে   সঙ্ঘে পরিচিত লাভ করে। তারপর  হতে ভারত সেবাশ্রম সংঘে ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালিত হয় “শ্রীশ্রীত্রিশূল উৎসব”।

এই একমাস (বাক্য,দৃষ্টি,আহার,শ্রবণ,আচরণ,নিদ্রা) কঠোর সংযম ও সাধনা করলে  শ্রীশ্রী গুরু মহারাজের বিশেষ আশীর্বাদ লাভ হয়। এই ১মাস ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সকল শিষ্য ,ভক্তদের জন্য মহাপূন্যময় পরম পবিত্র মাস। যারা সংযমের  মধ্য দিয়ে পালন করবেন, এবং শ্রী শ্রী ঠাকুরের  সান্নিধ্যে থাকতে পারবেন ততটাই লাভ।  তাই, এই পূর্ণময় সময়ে, শুভ পৌষী “ত্রিশূল” পূর্ণিমায় জপ সংকল্প গ্রহণ করলে এবং মাঘী পূর্ণীমা পর্যন্ত শ্রী শ্রী গুরুমহারাজের বাণী মেনে চললে তাহাতে ৫০ বৎসরের সাধনা ও তপস্যা পূর্ণ হবে।

ত্রিশূল পূ্র্ণীমা থেকে মাঘী পূর্ণীমা পর্যন্ত আচার্যদেবের ঐশ্বরিক ক্ষমতা ক্রমশঃ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে মাঘী পূর্ণীমাতে তা পূর্ণতা পায়। এই সময়ে মনকে সর্বদা গুরুমুখী রেখে সাধন ভজন করলে দশ বছরের কাজ একমাসে হয়। সাধনার সময়ে বাধাও আসে যে বাধাকে অতিক্রম করে দৃঢ় প্রত্যয়ে একাগ্র মনে ভজনা করে তার উন্নতি কেউ আটকাতে পারবে না, তাই, আমাদের সকলের উচিৎ এই সময়ে যথাসাধ্য ধ্যান জপ করা যাতে মন নির্মল হয়। গুরু মহারাজ বলেছেন নির্দিষ্ট লক্ষ্যে জপ করলে মন শুদ্ধ হয় আর মন শুদ্ধ হলে ধর্মতত্ত আপনিই উদ্ভেদ হয়।

এই সঙ্কল্প মাসে সঙ্ঘের শিষ্য, ভক্ত, আনুরাগীগণ বিভিন্ন সঙ্কল্প নেবেন, যেমন নিরামীষ ভোজন,  প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যায় জপ , প্রতিদিন গীতার  কিছু শ্লোক ও সঙ্ঘগীতার কিছু অংশ পাঠ  ইত্যাদি যে কোন জীবন গঠণমুলক ও আত্ম-উন্নতি মুলক  পবিত্র সঙ্কল্প গ্রহণ করবেন, নিকটবর্তী আশ্রমে , বাড়িতে বা মন্দিরে গিয়ে অধিক সময় নিয়ে অধিক হতে অধিকতর সংখ্যক জপ-ধ্যান করবেন। বাড়িতে বা মন্দিরে গিয়ে ,কত সংখক, কত সময়, কতবার বসে জপ-ধ্যান করেছেন নিজের নিজের ডায়রীতে লিখে রাখবেন, মাসের শেষে সঠিক হিসেব পাবেন। শ্রীভগবান স্বয়ংই সদগুরুরূপে অবতীর্ণ l সদ্‌গুরু চরণে আত্মসমর্পণই শিষ্যের সাধনা l পরম করুণাময় শ্রী শ্রী ঠাকুরের শরণাগত হও। তিনি আমাদের ধর্ম, অর্থ, কাম, মোক্ষ চতুর্বর্গ ফল প্রদান  করিবেন । এই  পবিত্র পূণ্য তিথিতে তার শ্রীপাদপদ্মে আমাদের অনন্ত  কোটিপ্রণাম নিবেদন করি l***
ওঁ গুরু কৃপাহি কেবলম….
স্বামী আত্মভোলানন্দ

Share This