Categories
প্রবন্ধ

আমার হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ : অরূপ কুমার ভট্টাচার্য্য।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও বাঙালির শৈল্পিক অহঙ্কারের সৌধে অনিবার্যভাবে বিরাজমান। বাংলার সামাজিক উত্থান-পতনের এক যুগ সন্ধিক্ষণে তাঁর জন্ম। ঐতিহ্যবাহী কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সন্তান হিসেবে রবীন্দ্রনাথের শৈশব-কৈশোর অতিক্রান্ত হয়েছে জ্ঞানচর্চার এক নির্মল পরিবেশের মধ্যে। মহর্ষি পিতার উপনিষদ চর্চা বালক বয়সেই রবীন্দ্রমানস-গঠনে প্রতিফলন ঘটে এবং সেই শিক্ষাকে তাঁর সমস্ত সত্তায় আত্মস্থ করে নেন। বাল্যকালের সেই উপনিষদিক শিক্ষার আলো সারাজীবন তাঁকে পথ দেখিয়েছে। উপনিষদে যে সত্যের সন্ধান তিনি পেয়েছিলেন সেই সত্যেরই উজ্জ্বল প্রভা তাঁর মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল। তিনি নিরবচ্ছিন্ন সাহিত্য সাধনা, মেধা ও শ্রমে নিজেই ক্রমাগত নিজেকে অতিক্রম করেছেন যা তাঁকে বহুমাত্রিক শিল্পস্রষ্টার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। নিজের বিরাট সৃষ্টিশীল ক্ষমতা তাঁকে এক যুগোত্তীর্ণ মহাপুরুষের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে। বাংলা সাহিত্যে হাতে গোনা যে ক’জন বড় মাপের খ্যাতিসম্পন্ন লেখক আছেন তার মধ্যে একজন অন্যতম পুরোধা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। অবিভক্ত বাংলায় নবজাগরণের মধ্যাহ্নে রবি কিরণের উন্মেষ ঘটেছিল। সেই থেকে রবীন্দ্রনাথ আমাদের জীবনে সত্য ও সুন্দরের ফলগুধারার মতো বহমান এবং সমগ্র বাঙালির হৃদয়ে এবং বাংলা সাহিত্যজগতে হিমাদ্রির মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন এক অলৌকিক ঐশ্বর্য নিয়ে। বাঙালির সমৃদ্ধ ভাষা, সাহিত্য, কৃষ্টি-সংস্কৃতির বহুলাংশ জুড়েই আছেন ধীমান পুরুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

বাঙালি তাই তার প্রতিটি সংকটে, প্রতিটি সংশয়ে আশ্রয় নেয় সেই রবীন্দ্রনাথের কাছে। রবীন্দ্রনাথ নিজের সমৃদ্ধ সাহিত্য চর্চার পরিধি দিয়ে বিস্তৃত করেছেন গোটা বাংলা সাহিত্যের পরিসর। আমরা তাঁকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় অভিষিক্ত করেছি। রবীন্দ্রনাথের সাফল্যের এই ক্রম-উত্তরণ কিন্তু একদিনে ঘটেনি। এক লহমায় তিনি ‘বিশ্বকবি’ বা ‘কবিগুরু’ অভিধায় ভূষিত হননি। সমগ্র রবীন্দ্র জীবন ও সৃষ্টির পিছনে রয়েছে তাঁর সৃষ্টির দীর্ঘ অবিশ্রান্ত পথ চলা। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাংলা সাহিত্য ও সঙ্গীতে রবীন্দ্রনাথ এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেন। তাঁর রচনা চির নতুন ও চিরকালের, কারণ তিনি জগৎ ও জীবনকে দেখেছেন বর্তমানের দৃষ্টির সীমানায়। যে দৃষ্টি তৈরি হয়েছিল অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দর্শনের সমন্বিত অন্তর্দৃষ্টি থেকে। তাই তিনি সব সময়ই আজকের রবীন্দ্রনাথ। বাঙালির যাপিত জীবনাচরণের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে। জীবনের প্রভাত থেকে অন্তিমলগ্ন তিনি বাংলা সাহিত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিভা; সব্যসাচী লেখক, কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, সঙ্গীত রচয়িতা, সুর স্রষ্টা, গায়ক, সমালোচক, চিত্রশিল্পী, অভিনেতা, সমাজসেবী ও শিক্ষাবিদ হিসেবে অনন্য। তিনি সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্যকে, বিপুল সৃষ্টিসম্ভারে বদলে দিয়েছেন বাঙালির মানসজগত এবং বাংলাকে দিয়েছেন বিশ্ব পরিচিতি। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর অবদান। একে অস্বীকার করার কোনো অবকাশ নেই। আমাদের শিল্প-সাহিত্য, ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, রাজনীতি, জীবন- চেতনায় রবীন্দ্রনাথ অবশ্যই অপরিহার্য। আমাদের জীবনের সঙ্গে, চেতনার সঙ্গে, মননের সঙ্গে, আন্দোলনে, ভাষার মাধুর্যে, দেশপ্রেমে সৃষ্টিশীল কর্মের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। আমাদের প্রাণের টানে, জীবনের টানে, চেতনার টানে, শিল্প ও সাহিত্যের টানে রবীন্দ্রনাথের কাছে আমাদের বারবার ফিরে যেতে হবে শিল্পের আরাধনায়। তাঁর কবিতার ছন্দ, বাণী ও সুর আমাদের হৃদয়ে বুলিয়ে দেয় শান্তির শুভ্র পরশ। অনন্ত অসীমের সেই অসামান্য রবীন্দ্রনাথের কাছে আমরা প্রার্থনায় নতজানু হই, সমর্পিত হই, পরম বিশ্বাসে।

রবীন্দ্রনাথ আমাদের প্রাণের কবি, প্রেমের কবি, জীবনের কবি, প্রকৃতির কবি, গানের কবি সর্বোপরি মানুষের ভালোবাসার কবি হয়ে চেতনার আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে অপার্থিব আনন্দলোকে আনন্দের বিস্তৃৃতি ঘটিয়েছেন। তিনি বাঙালি হয়েও চিন্তা-চেতনায় আধুনিক ও আন্তর্জাতিক বোধসম্পন্ন মানুষ ছিলেন। তাঁর শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা ছড়া, কবিতা কিংবা বড়দের জন্য লেখা কবিতা, গান, গল্প-উপন্যাসে আমরা বাঙালির সহজ সরল জীবনকে তুলে ধরতে দেখি। তাঁর নানা কাব্যগীতিতে আমরা প্রেম সৌন্দর্য, রোমান্টিক ভাবনা, আধ্যাত্মিক কল্পনার চিন্তাধারা পরিলক্ষিত হতে দেখি। রবীন্দ্রনাথের অসাধারণ গল্প উপন্যাস এখনো আমাদের সৃজনশীল মনকে আন্দোলিত করে। আমরা রাবীন্দ্রিক চরিত্রগুলোকে চলচ্চিত্র ও মঞ্চে রাজা ও রানী, বিসর্জন, রক্তকরবী, চিত্রাঙ্গদা, চিরকুমার সভা, বাল্মিকী প্রতিভা, তাসের দেশ, ডাকঘর, রাজা, মুক্তধারা, অচলায়তন, শাপমোচন, শেষের কবিতা, সফল সঞ্চায়ন দেখি; তখন আমরা নিজেরা কিছুটা রাবীন্দ্রিক হয়ে ওঠার চেষ্টা করি। রবীন্দ্রনাথ আছেন বাঙালির হৃদয় জুড়ে তাঁর সৃষ্টির উৎসারণে কবিতা, ছড়া, গল্প, উপন্যাস, মঞ্চনাটক, টিভি নাটক, নৃত্যনাট্য, চলচ্চিত্র, সঙ্গীত এবং বাংলার সমগ্র সংস্কৃতিতে। তিনি তাঁর মানবীয় উচ্চ ভাবনা-চেতনা আর মানুষের চিরায়ত অনুভূতি ভাষার সৌকর্য সাধন আর নিপুণ শৈল্পিক উপস্থাপনার মাধ্যমে কাব্য-সঙ্গীত-প্রবন্ধ-গল্পে আর চিত্রকলায় রূপায়িত করে মানুষের চেতনাকে শানিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির ব্যাপকতা বিশ্বজুড়ে শিখরস্পর্শী প্রতিভায় উদ্ভাসিত যা বাঙালির সাংস্কৃতিক স্বকীয়তায় ছড়িয়েছে রবির আলো।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনকে শিল্পবোধ থেকেই অনুভব করেছেন। আর সেজন্য তাঁর শিল্প-সৃষ্টি প্রায়শই জীবনসংলগ্ন। তিনি কাব্য, গল্প, উপন্যাস, সঙ্গীত, নাটককে জীবনের প্রতিভাষে সিঞ্চিত করেছেন। যা রূপালঙ্কার, প্রতীক ও বিমূর্ততার দ্যোতনায় হয়েছে উজ্জ্বল। সব মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় এক বিশেষ স্থান দখল করে আছেন। দেড়শ বছর পেরিয়েও কবি আমাদের মাঝে তাই চিরজাগরুক হয়ে আছেন।

সমগ্র বাঙালির মানস জগতে রবীন্দ্রনাথ চিরকালীন আবেগ, প্রেরণায় জাগ্রত থাকবেন এবং বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতির আলোর দিশারি হয়ে আলো ছড়াবেন যুগ থেকে যুগান্তরে। তাঁর সৃষ্টি, তাঁর স্বপ্ন আর জীবন দর্শন আগামী প্রজন্মকে পথ দেখাবে সত্য ও সুন্দরের।

——————————————————————————-

Share This
Categories
প্রবন্ধ

সতীশ ধাওয়ান – ভারতের মহাকাশ গবেষণার স্বপ্নকে সার্থক করেছিলেন।

সতীশ ধাওয়ান ছিলেন একজন ভারতীয় গণিতবিদ এবং মহাকাশ প্রকৌশলী, যাকে ব্যাপকভাবে “ভারতে পরীক্ষামূলক তরল গতিবিদ্যা গবেষণার জনক” হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

সতীশ ধাওয়ান ছিলেন একজন ভারতীয় গণিতবিদ এবং মহাকাশ প্রকৌশলী, যাকে ভারতে পরীক্ষামূলক তরল গতিবিদ্যা গবেষণার জনক হিসেবে গণ্য করা হয়।
সতীশ ধাওয়ান 25 সেপ্টেম্বর 1920 সালে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের শ্রীনগরে হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সাইটোজেনেটিস্ট নলিনী ধাওয়ানকে বিয়ে করেছিলেন এবং তার মেয়ে জ্যোৎস্না ধাওয়ান সেলুলার এবং মলিকুলার বায়োলজি সেন্টারে সিনিয়র প্রিন্সিপাল সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।

শ্রীনগরে জন্মগ্রহণকারী ধাওয়ান ভারতে এবং পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষা লাভ করেন।  ধাওয়ান ছিলেন বিশিষ্ট গবেষকদের একজন, যিনি ভারতীয় মহাকাশ কর্মসূচির সফল ও আদিবাসী উন্নয়নে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।  তিনি 1972 সালে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO)-এর তৃতীয় চেয়ারম্যান হিসেবে এম.জি.কে. মেননের স্থলাভিষিক্ত হন।

ধাওয়ান ব্রিটিশ ভারতের লাহোরে (বর্তমানে পাকিস্তানে) পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ছিলেন, যেখানে তিনি পদার্থবিদ্যা এবং গণিতে বিজ্ঞানের স্নাতক, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি এবং ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।  1947 সালে, তিনি মিনেসোটা, মিনিয়াপোলিস ইউনিভার্সিটি থেকে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতকোত্তর বিজ্ঞান ডিগ্রী এবং ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী সম্পন্ন করেন এবং তার পরে ডব্লিউএইচ এর তত্ত্বাবধানে গণিত এবং মহাকাশ প্রকৌশলে ডবল পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

 

 

1972 সালে, ডক্টর ধাওয়ান ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) এর চেয়ারম্যান এবং মহাকাশ বিভাগে ভারত সরকারের সচিব হন।
সতীশ ধাওয়ান এমন একজন  মানুষ যিনি এপিজে আব্দুল কালামকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন ! এপিজে আব্দুল কালাম একটি ঘটনার কথা তুলে ধরে বলেন,  1979 সালে যখন তিনি একটি স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেলের পরিচালক ছিলেন, মিশনটি কক্ষপথে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল।  পরিবর্তে, এটি বঙ্গোপসাগরে ফেলা হয়েছিল।  আবদুল কালামের দল জানত যে সিস্টেমের জ্বালানীতে একটি ফুটো ছিল, কিন্তু তারা আশা করেছিল যে ফুটোটি নগণ্য ছিল ।  এই ভুল গণনা মিশনটিকে ব্যর্থতার দিকে নিয়ে যায়।  সতীশ ধাওয়ান সেই সময় চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি নিজে আবদুল কালামকে ডেকে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন;  “আমরা ব্যর্থ! কিন্তু আমার দলের উপর আমার খুব দৃঢ় আস্থা আছে এবং আমি বিশ্বাস করি যে পরের বার আমরা অবশ্যই সফল হব”।  এটি আব্দুল কালামকে বিস্মিত করেছিল, কারণ ব্যর্থতার দায়ভার ISRO-এর চেয়ারম্যানের দ্বারা নেওয়া হয়েছিল। এর পরে পরবর্তী মিশন প্রস্তুত করা হয় এবং 1980 সালে সফলভাবে চালু করা হয়। এটি সফল হলে, সতীশ ধাওয়ান আবদুল কালামকে তার উপস্থিতি ছাড়াই প্রেস মিটে যোগ দিতে বলেন।  দেখা গেছে, দল ব্যর্থ হলে তার দায় নিজের কাঁধে তুলে নেন।  কিন্তু যখন দল সফল হয়, তখন তিনি তার দলের সাফল্যের কৃতিত্ব দেন সকলকে। এভাবে একজন আদর্শ নেতার ছবি তুলে ধরেন তিনি। সতীশ ধাওয়ান 1984 সাল পর্যন্ত ISRO-এর চেয়ারম্যান ছিলেন।

 

ধাওয়ান 1951 সালে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (IISc) ব্যাঙ্গালোরে ফ্যাকাল্টি হিসাবে যোগদান করেন এবং 1962 সালে এর পরিচালক হন। যদিও তিনি ভারতীয় মহাকাশ প্রোগ্রামের প্রধান ছিলেন। তিনি IISc-এ দেশের প্রথম সুপারসনিক উইন্ড টানেল স্থাপন করেছিলেন।  তিনি বিচ্ছিন্ন সীমানা স্তর প্রবাহ, ত্রিমাত্রিক সীমানা স্তর এবং ট্রাইসোনিক প্রবাহের পুনঃপ্রবাহের উপর গবেষণার পথপ্রদর্শক।

ধাওয়ান গ্রামীণ শিক্ষা, রিমোট সেন্সিং এবং স্যাটেলাইট যোগাযোগে অগ্রণী পরীক্ষা চালিয়েছেন।  তার প্রচেষ্টার ফলে ইনস্যাট, একটি টেলিযোগাযোগ উপগ্রহের মতো অপারেশনাল সিস্টেম তৈরি হয়েছিল।  আইআরএস, ভারতীয় রিমোট সেন্সিং স্যাটেলাইট;  এবং পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল (PSLV), যা ভারতকে মহাকাশ ভ্রমণকারী দেশগুলির তালিকায় স্থান দিয়েছে।

 

 

ধাওয়ান 3 জানুয়ারি 2002-এ ব্যাঙ্গালোরে মারা যান। মৃত্যুর পর তার সম্মানে দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই থেকে প্রায় 100 কিমি উত্তরে অবস্থিত অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ কেন্দ্রের নাম পরিবর্তন করে সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার করা হয়।  লুধিয়ানার ছেলেদের জন্য সতীশ চন্দ্র ধাওয়ান সরকারি কলেজ তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।  ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি রোপার-এর মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টের নামও তার নামে রাখা হয়েছে- সতীশ ধাওয়ান ব্লক, IIT রোপার।  উত্তরপ্রদেশ টেক্সটাইল টেকনোলজি ইনস্টিটিউট কানপুরের কম্পিউটার সেন্টারের নামও 2019 সালে অধ্যাপক সতীশ ধাবন কম্পিউটার সেন্টার হিসেবে রাখা হয়েছে।

 

সারাজীবন ধরে বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন সতীশ ধাওয়ান। 1969 সালে ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে তিনি “Distinguished Alumnus Award” পান। এছাড়া 1971 সালে পদ্মভূষণ (ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান); 1981 সালে পদ্মবিভূষণ (ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান), ; এবং জাতীয় সংহতির জন্য ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার, 1999।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

 

 

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

বাংলা সঙ্গীত জগতের নক্ষত্র, বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সুমিত্রা সেন।

সুমিত্রা সেন ছিলেন বিখ্যাতএকজন ভারতীয় বাঙালি গায়িকা। তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুলগীতি, পল্লীগীতি এবং বাংলা আধুনিক গানের অ্যালবাম করেছেন। তবে তিনি মূলত রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী হিসাবে বেশি পরিচিতি লাভ করেন।

 

বাংলা সঙ্গীত জগতের নক্ষত্র, বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সুমিত্রা সেন এর জন্ম ৭ মার্চ, ১৯৩৩ সালে।সঙ্গীত পরিবারের সদস্যা সুমিত্রা সেন। তাঁর গাওয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গান ‘সখী ভাবনা কাহারে বলে’, ‘মধুর মধুর ধ্বনি বাজে’ আজও শ্রোতার কাছে অত্যন্ত প্রিয়। ২০১১ সালে রবীন্দ্রসদনের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি ।

 

 

সুমিত্রা সেন একমাত্র ব্যতিক্রমী রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী, যিনি সুচিত্রা সেন, সুপ্রিয়া দেবী, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন– সমস্ত তাবড় অভিনেত্রীর লিপে প্লে ব্যাক করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বহু গীতিনাট্য, গীতিআলেখ্য, নৃত্যনাট্যের গানে সুমিত্রা সেনের গলা শোনা গিয়েছে।

 

 

সুচিত্রা সেনের লিপে তাঁর রবীন্দ্রসংগীত অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিল। ‘মেঘ বলেছে যাব যাব’, ‘বিপদে মরে রক্ষা করো’, ‘ঘরেতে ভ্রমর এল’, ‘সখি ভাবনা কাহারে বলে’, ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও’-এর মতো রবীন্দ্রসংগীতগুলি তাঁর কণ্ঠে চিরস্মরণীয়। পাশাপাশি ‘শাপমোচন’, ‘মায়ার খেলা’ নৃত্যনাট্যের গানও শোনা গিয়েছে এই প্রখ্যাত শিল্পীর গলায়।
সুমিত্রা সেন এক বিখ্যাত শিল্পী হয়েও খুব সহজ মানুষ ছিলেন। মধ্যবিত্ত সারল্য ওঁর থেকে হারিয়ে যায়নি কখনও।

 

দীর্ঘদিন ধরেই সঙ্গীত জগতের বিভিন্ন কৃতিদের গুরু তিনি। সুমিত্রা সেনের দুই মেয়ে ইন্দ্রাণী সেন(Indrani Sen) ও শ্রাবণী সেন, দুজনেই নামী সঙ্গীত শিল্পী। দুই মেয়ে- ইন্দ্রাণী সেন ও শ্রাবণী সেনও বাংলার সঙ্গীত জগতে ছাপ ফেলেছেন। মায়ের পথে হেঁটে রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চাই করে গিয়েছেন ছোট মেয়ে শ্রাবণী সেন, ইন্দ্রাণী সেন অবশ্য সব ধরনের গানেই নিয়েই ছাপ রেখেছেন।

 

 

দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যের নানা সমস্যায় ভুগছিলেন প্রবীণ এই শিল্পী  সুমিত্রা সেন। তাঁর ছোট মেয়ে শ্রাবনী সেনের সঙ্গেই বালিগঞ্জে থাকতেন তিনি। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মধ্যে ডিসেম্বরে (২০২৩) ভীষণ ঠান্ডা লাগিয়ে ফেলেন তিনি। এর ফলে জ্বরের সঙ্গে বুকে সর্দি বসে অবস্থার অবনতি হতে থাকে ক্রমশ। এরপর তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ব্রঙ্কো-নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। ২ জানুয়ারি ২০২৩, তাঁকে ছুটি করিয়ে বাড়ি আনা হয়। কিন্তু ভোর রাতেই প্রয়াত হন গায়িকা।  ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ সালে ৯০ বছর বয়সে  প্রয়াত হন কিংবদন্তী এই শিল্পী।

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

 

 

 

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বাঙালি সশস্ত্র বিপ্লবী সতীশচন্দ্র পাকড়াশী – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়। এই অন্দোলনে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে  সতীশচন্দ্র পাকড়াশী সরকার প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন। সতীশচন্দ্র পাকড়াশী সরকার ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। সতীশ চন্দ্র পাকড়াশী ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং একজন বাঙালি সশস্ত্র বিপ্লবী।

 

 

সতীশ চন্দ্র পাকড়াশী ১৮৯১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের নরসিংদীর মাধবদীতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম জগদীশচন্দ্র পাকড়াশী, মাতা মৃণালিনী।

 

 

১৪ বছর বয়সে, সতীশচন্দ্র তার ছাত্রাবস্থায় বিখ্যাত বিপ্লবী ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী মহারাজের সান্নিধ্যে আসার পর গুপ্ত বিপ্লবী পার্টি অনুশীলন সমিতির সদস্য হন।  ১৯১১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর একই বছর অস্ত্র আইনে তাকে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।  মুক্তি পেয়ে তিনি নরসিংদীতে ফিরে গোপনে আবার দলে যোগ দেন।  তাকে মালদায় পাঠানো হয়েছে।  ১৯১৪ সালে তিনি কলকাতায় যান।  সতীশ পাকড়াশি আইবি পুলিশ সুপারকে হত্যা করার দায়িত্ব নেন কিন্তু পরিকল্পনা অনুযায়ী সুপারিনটেনডেন্টের সভাকক্ষে বোমা নিক্ষেপ করা হয় কিন্তু ভুলের কারণে সতীশ নিজেই বোমা নিক্ষেপে গুরুতর আহত হন।  রাজশাহী বিজ্ঞান কলেজের ছাত্ররা তাকে তাদের হোস্টেলে আশ্রয় দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়।  ব্রিটিশ সরকার তার নামে একাধিক রাজনৈতিক ডাকাতির জন্য পরোয়ানা জারি করে।

 

 

১৯১৭ সালে, তার সহকর্মী নলিনীকান্ত বাগচীর সাথে তিনি ঢাকায় পুলিশের দমন-পীড়নের জন্য গা ঢাকা দেন।  আরও কয়েকজন সদস্যের সাথে তারা গৌহাটিতে যান এবং সেখান থেকে সারা বাংলাদেশে সশস্ত্র বিপ্লবের কাজ শুরু করেন।  ১৯১৮ সালের ১২ জানুয়ারি পুলিশ তাদের গোপন ঘাঁটি ঘেরাও করলে, ৭ জন পার্শ্ববর্তী নবগ্রহ পাহাড়ে পালিয়ে যায় এবং রিভলবার নিয়ে পুলিশের সাথে লড়াই করে।  ৫ জন ধরা পড়লেও সে ও নলিনীকান্ত বাগচী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।  দুজনেই পায়ে হেঁটে কলকাতায় চলে যান।  এর কিছুদিন পরই ঢাকায় নলিনীকান্ত শহীদ হন।

 

 

 

 

১৯১৮ সালে কলকাতায় ধরা পড়লে তাকে প্রথমে প্রেসিডেন্সি জেল ও পরে রাজসাহী জেলে পাঠানো হয়। তিন বছর পরে মুক্তি পান। ১৯২৩ সালে সোভিয়েত রাশিয়া থেকে আগত বিপ্লবী অবনী মুখোপাধ্যায়ের সাথে তাকে রাশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করে সমিতি তবে তা ব্যর্থ হয়। ১৯২৩ এর সেপ্টেম্বর মাসে তিনি আবার গ্রেফতার হন এবং রাজবন্দী হিসেবে ৫ বছর জেল খাটেন। এই সময় তিনি অলিপুর, মেদিনীপুর, ঢাকা, মহারাষ্ট্রের যারবেদা এবং কর্ণাটকের বেলগাঁও জেলে আটক থাকেন। ১৯২৯ এ মেছুয়াবাজার বোমা মামলায় গ্রেপ্তার হলে তার আন্দামানে দ্বীপান্তর হয়। ১৯৩৩ থেকে ছয় বছর সেলুলার জেলে বন্দী থাকেন। এই সময় তিনি কমিউনিজমে আকৃষ্ট হন। তার জীবনের ৩২ বছর কারান্তরালে কেটেছে। ১১ বছর আত্মগোপন করে ছিলেন।

১৯২৮ সালে তিনি কলকাতায় ধরা পড়লে প্রথমে তাকে প্রেসিডেন্সি জেলে এবং পরে রাজশাহী জেলে পাঠানো হয়।  তিন বছর পর মুক্তি পান তিনি।  ১৯২৩ সালে, সমিতি তাকে সোভিয়েত রাশিয়ার একজন বিপ্লবী অবনী মুখার্জির সাথে রাশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করে, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়।  ১৯২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি আবার গ্রেপ্তার হন এবং রাজকীয় বন্দী হিসাবে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন।  এসময় তাকে ঢাকার আলিপুর, মেদিনীপুর, মহারাষ্ট্রের জারবেদা ও কর্ণাটকের বেলগাঁও থেকে আটক করা হয়।  ১৯২৯ সালে মেশুবাজার বোমা মামলায় গ্রেফতার হলে তাকে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে স্থানান্তর করা হয়।  ১৯৩৩ সাল থেকে তিনি ছয় বছর সেলুলার জেলে বন্দী ছিলেন।  এ সময় তিনি কমিউনিজমের প্রতি আকৃষ্ট হন।  তার জীবনের 32 বছর কারাগারে কেটেছে।  তিনি ১১ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। তার রচিত গ্রন্থ অগ্নিযুগের কথা। এছাড়া স্বাধীনতা ও অনুশীলন পত্রিকায় তিনি বহু লেখা লিখেছিলেন। ঢাকার প্রগতি লেখক সংঘের প্রবীণ সদস্য ও বাংলাদেশ শহীদ প্রীতি সমিতির সভাপতিও ছিলেন।

 

 

মৃত্যু—

 

 

৩০ ডিসেম্বর, ১৯৭৩ সালে  বিপ্লবী সতীশচন্দ্র পাকড়াশী প্রয়াত যান।

 

 

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ফুটবল সম্রাট পেলে – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

পেলে সাও পাওলো রাজ্যের বাউরুতে দারিদ্রের মাঝে বেড়ে ওঠেন। চাকর হিসেবে তিনি চায়ের দোকানে কাজ করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করতেন। তার বাবা তাকে ফুটবল খেলা শেখান, তবে তার একটি ফুটবল কেনার সামর্থ্য ছিল না, ফলে তিনি মোজার ভিতর সংবাদপত্র, দড়ি বা আঙ্গুর ঢুকিয়ে বল বানিয়ে খেলতেন। জানব সেই দারিদ্রতা থেকে কি ভাবে হয়ে উঠলেন ফুটবলের কিংবদন্তি।

তিনিই হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফুটবলার। এমনটাই মনে করেন তাঁর ভক্তরা। তাকে ফুটবলের সম্রাট বলা হয়। ব্রাজিলের হয়ে তিনি ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬ ও ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তিনি ব্রাজিলের জাতীয় দলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা ও তিনবার বিশ্বকাপজয়ী একমাত্র ফুটবলার।

পেলে (জন্মনাম – এদসোঁ আরাঁচ দু নাসিমেঁতু) ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের ত্রেস কোরাচয়, মিনাস জেরাইসে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার তাকে “জিকো” ডাকনামে ডাকত। বিদ্যালয়ে পড়াকালীন তিনি “পেলে” ডাকনামটি পান। তার পিতার নাম দন্দিনহো এবং মাতার নাম সেলেস্তে আরাস। তার পিতাও একজন ফুটবলার ছিলেন ও ফ্লুমিনেস ফুটবল ক্লাবে খেলতেন। পেলে দুই ভাই-বোনের মধ্যে বড় ছিলেন।

পেলের অন্যতম সন্তান এডসন চলবি দো নাসিমেন্টো ‘এডিনহো’ একজন ফুটবলার ছিলেন। তিনি মূলত গোলরক্ষকের ভূমিকায় খেলতেন। ২০০৫ সালে মাদকদ্রব্য পাচারসংক্রান্ত অভিযোগে জড়িয়ে তিনি গ্রেফতার হন।

পেলে ১৯৫৭ সালের ৭ জুলাই মারাকানা স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। ২-১ ব্যবধানে হারা সেই ম্যাচে ১৬ বছর ৯ মাস বয়সে ব্রাজিলের পক্ষে প্রথম গোল করে পেলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার স্থান দখল করেন।

সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে পেলে তার প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলেন। ১৯৫৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডের সেই ম্যাচটা ছিল প্রতিযোগিতার তৃতীয় খেলা।ওয়েলসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে করা গোলটি ছিল প্রতিযোগিতায় পেলের প্রথম এবং সেই ম্যাচের একমাত্র গোল, যার সাহায্যে ব্রাজিল সেমিফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। ম্যাচের সময় পেলের বয়স ছিল ১৭ বছর ২৩৯ দিন, বিশ্বকাপের গোলদাতাদের মধ্যে সবচেয়ে কম।

১৯৬৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্যায়ের ১ম খেলায় বুলগেরিয়ার বিরুদ্ধে জয়ী হলেও হাঙ্গেরীর বিরুদ্ধে ২য় খেলায় ব্রাজিল হেরে যায়। এর পূর্বে বুলগেরিয়ার বিরুদ্ধে জয়ী হলেও তিনি গুরুতর আঘাত পান। তারপরও কোচ ভিসেন্তে ফিওলা সকলকে আশ্চর্যান্বিত করে গ্রুপের শেষ খেলায় পর্তুগালের বিপক্ষে পেলেকে মাঠে নামান।

১৯৭০ সালের আগের বিশ্বকাপের ব্যর্থতা মুছে ফেলে আবারও শিরোপা জিতে নেয় ব্রাজিল। টানা চারটি টুর্নামেন্টের তিনটিরই ট্রফি ওঠে তাদেরই হাতে। পেলে খেলেন তার চতুর্থ বিশ্বকাপের শেষটি। প্রতিটা ম্যাচে গোল করেন জেয়ারজিনহো। ফাইনালে ইতালিকে ৪-১ গোলে গুঁড়িয়ে দেয় ‘ক্যাপ্টেন’ কার্লোস আলবার্তো। দল তিনবার শিরোপা জেতায় জুলে রিমে ট্রফিটা একেবারেই দিয়ে দেওয়া হয় ব্রাজিলকে। সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন পেলে। ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপের পর নিজেকে সর্বকালের সেরা ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে প্রমাণ করেন পেলে।

পেলের রেকর্ড—

১) কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসেবে ফুটবল বিশ্বকাপ জিতেছিলেন পেলে। ১৯৫৮ সালে সুইডেনকে হারিয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিলেন ফুটবল সম্রাট।  সেইসময় তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ২৪৯ দিন।

২) তিনবার বিশ্বকাপ জিতেছিলেন পেলে – ১৯৫৮ সাল, ১৯৬২ সাল এবং ১৯৭০ সাল। বিশ্বের আর কোনও খেলোয়াড়ের এমন রেকর্ড নেই।

৩) বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ডও তৈরি করেছিলেন পেলে।

৪) বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিকেরও নজির গড়েছিলেন পেলে।

৫) ফিফার ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ১,৩৬৬ টি ম্যাচে ১,২৮১ টি গোল করেছিলেন পেলে।

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ফুটবলের রাজপুত্র হিসেবে পরিচিত দিয়েগো মারাদোনা প্রয়াত হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর দু’বছর পর ফের অভিভাবকহীন হয় ফুটবল।  সর্বকালের দুই সেরা আজ আকাশের তারা।ব্রাজিলের সাও পাওলোর একটি হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফুটবলের সম্রাট। বয়স হয়েছিল ৮২।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত; ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী এবং বিপ্লবী, প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি ।

ভূমিকা—

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী। ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অক্লান্ত কর্মী। তাঁর আবাদান ভারতের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। আজ সেই বীর বিপ্লবীর প্রয়াণ দিবস। জানব তাঁর সেই আত্মত্যাগের কিছু কথা।

 

ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং একজন ভারতীয় বিপ্লবী যিনি ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছিলেন।  তিনি বাংলার বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তরের নেতা ছিলেন।  দত্ত ১৯১৭ সালে বিলাসপুর জেলে ৭৮ দিন ধরে অনশনের রেকর্ডও রাখেন।

জীবনের প্রথমার্ধ——–

 

ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত ১৮৯২ সালের ৮ অক্টোবর বাংলাদেশের যশোর জেলার ঠাকুরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  তার পিতা কৈশল চন্দ্র দত্ত পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর জেলার একজন খুচরা ব্যবস্থাপক ছিলেন।  তাঁর মা বিমলাসুন্দরী ছিলেন একজন দানশীল মহিলা।  কমলিনী, যাদুগোপাল, স্নেহলতা, সুপ্রভা নামে তাঁর চার বোন ছিল।
কথিত আছে যে একবার রামায়ণ পড়ার সময় তিনি লক্ষনের বীরত্বের কাহিনী জানতে পেরেছিলেন এবং ব্রহ্মচর্যের বিষয়ে তাঁর ব্যস্ততার কথা পড়েছিলেন।  মায়ের কাছ থেকে ব্রহ্মচর্য সম্পর্কে জানার পর তিনি নিজেই সেই পথ অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেন।  এবং সারা জীবন ব্রহ্মচারী হয়ে ভগবানের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন।  ফরিদপুর হাইস্কুলে থাকাকালীন তিনি প্র্যাকটিস সোসাইটিতে যোগদান করেন এবং পরে বিভিন্ন মানবিক কর্মকান্ড এবং ১৯০৫ সালের দেশভাগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।  ভগবদ্গীতা পড়া এবং বঙ্কিম চন্দ্র চ্যাটার্জি এবং স্বামী বিবেকানন্দের সাথে কাজ করা তাকে তাদের অনুসারী হতে অনুপ্রাণিত করেছিল।

 

 

 

ভূপেন্দ্র কুমার দত্তের সাহিত্যকর্ম——-

১৯৩৮-১৯৪১ এবং ১৯৪৬-১৯৬১ সালে, তিনি সাপ্তাহিক জার্নাল ফরওয়ার্ড সম্পাদনা করেন।  তাঁর দ্বারা গঠিত সম্পাদকীয় অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেমিক পাঠ করেছেন।  ভারতীয় বিপ্লব এবং গঠনমূলক কর্মসূচী শিরোনামের তাঁর প্রবন্ধগুলির একটি সংকলন ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ দ্বারা একটি মুখবন্ধের সাথে বৈশিষ্ট্যযুক্ত হয়েছিল, যিনি শেষ পর্যন্ত স্বাধীন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। পাশাপাশি ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত একজন ক্যালিগ্রাফার ছিলেন।  তাঁর বই ‘বিপ্লব পদচিহনা’, ‘ভারতীয় বিপ্লব এবং গঠনমূলক কর্মসূচি’।  তিনি বহু বিপ্লবীর জীবনীও লিখেছেন।

 

বিপ্লবী জীবন——–

 

বিপ্লবী বাঘা ছিলেন যতীনের শিষ্য।  তিনি জার্মান অস্ত্রের সাহায্যে ভারতে সশস্ত্র বিপ্লবী অভ্যুত্থানের প্রস্তুতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।  খুলনা ও যশোরে বিপ্লবের দায়িত্ব তার ওপর ন্যস্ত হয়।  যতীনের মৃত্যুর পরও বাঘা আত্মগোপনে কাজ চালিয়ে যান।  আর্মেনীয়রা রাস্তায় ডাকাতির সাথে জড়িত ছিল।  ১৯১৭ সালে গ্রেফতার হন। বিলাসপুর জেলে ৭৮ দিন অনশন করেন।  ১৯২০ সালে মুক্তি পাওয়ার পর, তিনি গান্ধীজির সাথে দেখা করেন।  গণ যোগাযোগের উদ্দেশ্যে কংগ্রেসে যোগদান।  এরপর তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ্য পার্টিতে কাজ করেন।  তিনি ১৯২৩ সালে ব্রহ্মদেশে (মিয়ানমার) বন্দী হন। ১৯২৮ সালে মুক্তি পেলেও তিনি সশস্ত্র বিপ্লবের পথ ত্যাগ করেননি।  অস্ত্র সংগ্রহ, বোমা তৈরি ইত্যাদির সাথে জড়িত থাকার জন্য পুলিশ তাকে বহুবার গ্রেফতার করেছিল। ১৯৩০ সালে, যখন তিনি বিপ্লবী সূর্য সেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন সম্পর্কে শ্রী সরস্বতী প্রেসে ‘ধন্য চট্টগ্রাম’ নিবন্ধটি লেখেন।  সরকার তৎক্ষণাৎ পত্রিকাটি বাজেয়াপ্ত করে এবং তাঁকে আবার কারারুদ্ধ করে এবং ৮ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করে। দেশভাগের পর তিনি পাকিস্তানের নাগরিক হন এবং সেখানে আন্দোলন সংগঠিত করার চেষ্টা করেন।  তিনি পাকিস্তানের সংসদ সদস্যও হন।  তিনি ১৯৬১ সালে ভারতে ফিরে আসেন এবং রাজনৈতিক কার্যকলাপ রোধ করার জন্য সামরিক আইন জারি করা হলে সরাসরি রাজনীতি থেকে অবসর নেন।

 

 

 

ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত ২৯ ডিসেম্বর ১৯৭৯ তারিখে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভারতের অন্যতম সফল শিল্পপতি স্যার রতন টাটা।

রতন টাটা দেশের প্রিয় শিল্পপতিদের মধ্যে এমনই এক মুখ, যাকে সবাই চেনেন। তিনি একজন বিখ্যাত ভারতীয় শিল্পপতি এবং টাটা গ্রুপের অবসরপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। রতন টাটা শুধু শিল্পপতিই নন , তিনি একজন সমাজসেবী , মানব দরদি ও দূরদর্শী মানুষ । তিনি ১৯৯১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ২৮ ডিসেম্বর ২০১২ -তে টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন, কিন্তু টাটা গ্রুপের দাতব্য ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হিসেবে বহাল রয়েছেন।তার নেতৃত্বে, টাটা গ্রুপ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং গ্রুপের আয়ও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভারতের অন্যতম সফল শিল্পপতি স্যার রতন টাটা ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি টাটা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জামশেদজি টাটার দত্তক পৌত্র এবং নেভাল টাটার পুত্র। তাঁর মায়ের নাম সুনি টাটা। রতন টাটার বাবা মা যখন পৃথক হয়ে যান যখন তাঁর দশ বছর বয়স ছিল।যদিও মা বাবার ডিভোর্স নিয়ে তাঁকে ও তাঁর দাদাকে অনেক টিটকারির সম্মুখীন হতে হয়েছিল।  রতন টাটা গুজরাটের অন্যতম ধনী পরিবারের ছেলে হলেও তার শৈশব খুব একটা ভালো কাটেনি। তার কারণ ছিল রতনের বাবা-মা, বিচ্ছেদের কারণে তাঁরা আলাদা থাকতেন। দাদির সঙ্গে বেড়ে ওঠার ফলে তাঁর দাদি তাঁকে জীবনের মূল্যবোধ শিখিয়েছিলেন।

রতন টাটা ছোট বেলা থেকেই বেশ মেধাবী ছিলেন।রতন টাটা কেম্পিয়ন স্কুলে (মুম্বাই) শিক্ষা জীবন শুরু করেন। পরে তিনি ক্যাথেড্রাল অ্যান্ড জন কনন স্কুল-এ তিনি স্কুল শিক্ষা শেষ করেন। স্কুল শিক্ষা শেষ করার পর তিনি ১৯৬২ সালে কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্ট্রাকচার ইঞ্জিনিয়ারিং ও আর্কিটেচার বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়তে বাণিজ্য ও অ্যাডভেঞ্চেড ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন।

বিশ্বের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী রতন টাটার শুরুটা হয়েছিল ছোটখাট চাকরি দিয়ে। পড়াশুনা শেষ করে রতন টাটা (Ratan Tata) আমেরিকার জোনস এ্যান্ড ইমনস নামে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে কিছুদিন কাজ করেন। তারপর ১৯৬১ সালে তিনি টাটা গ্রুপে টাটা স্টিলের কর্মচারী হিসেবে রতন টাটার (Ratan Tata) ক্যারিয়ার শুরু করেন। যেখানে তাঁর প্রথম দায়িত্ব ছিল বিস্ফোরণ চুল্লি এবং চাউলের পাথর পরিচালনা করা। ১৯৯১ সালে জে আর ডি টাটা রতন টাটার মেধা পরিশ্রম ও মানসিকতার মূল্য দিতেই টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান পদে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৯১ সালে টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান হয়ে তিনি টাটা গ্রুপের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনেছিলেন। ধীরে ধীরে কোম্পানীকে বিরাট এক আন্তর্জাতিক কোম্পানীতে পরিনত করেন। ২১ বছরের মিশনে পৃথিবীর ৬টি মহাদেশের ১০০ টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে দেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসা। রতন টাটা আসলে মানবিক হৃদয় এবং ক্ষুরধার বৈষয়িক বুদ্ধির জীবন্ত প্রতীক। যে কারণে Tata Group-এর চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে অক্লান্তভাবে ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের পরিধি বাড়িয়েছেন। যার মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের একাধিক অধিগ্রহণ রয়েছে। যেমন Land Rover Jaguar-এর সঙ্গে Tata Motors, Tetly-র সঙ্গে Tata Tea এবং Corus-এর সঙ্গে Tata Steel। সবক’টি অধিগ্রহণই কোম্পানির মুনাফা কয়েকগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
রতন টাটাই এ দেশের একমাত্র শিল্পপতি যাঁর গ্যারাজে যেমন Ferrari California, Cadillac XLR, Land Rover Freelander, Chrysler Sebring, Honda Civic, Mercedes Benz S-Class, Maserati Quattroporte, Mercedes Benz 500 SL, Jaguar F-Type, Jaguar XF-R-সহ আরও অনেক বিলাসবহুল, আভিজাত্যে ভরা নিজস্ব গাড়ি রয়েছে, আবার যাবতীয় প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে যিনি ভারতকে উপহার দেন মাত্র এক লক্ষ টাকার ন্যানো।তিনি ২০০৭ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে F-16 Falcon-এর পাইলট হয়েছিলেন
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে, রতন টাটা মাত্র এক লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা গাড়ি “ন্যানো” চালু করেছিলেন। আসলে, রতন এই স্বপ্নটি দেখেছিলেন ১৯৯৭ সালে, যাতে একজন সাধারণ মানুষ মাত্র এক লক্ষ টাকায় একটি গাড়ি কেনার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন।

রতন টাটা শুধু শিল্পপতিই নন , তিনি একজন সমাজসেবী , মানব দরদি ও দূরদর্শী মানুষ । মানুষের পাশে থেকে মানব সমাজের কল্যাণের জন্য ব্যবসাকে প্রতিষ্ঠা করে এ যেন এক নতুন উদ্যম সৃষ্টি করেছেন , যা আগামীদিনে নতুন প্রজন্মকে পথ দেখতে পারবে। রতন টাটা (Ratan Tata) সারাজীবন ধরে প্রমান করেন দৃঢ় সংকল্প , জেদ আর মানুষের কল্যাণকামী মানসিকতা থাকলে বিশ্ব জয় করা সম্ভব।২০০৮ সালে মুম্বাই তাজ হোটেলে জঙ্গি হামলা হলে অনেক পরিবার স্বজন হারিয়ে , আহত হয়ে , কর্মচ্যুত বিপন্ন হয়ে পড়েছিলেন। উল্লেখযোগ্যভাবে রতন টাটা তখন সেই সব কর্মীদের পাশে থেকেছেন, আর্তের সহায় হয়েছেন। এমনকি কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজে উপিস্থিত থেকে সাহায্য করেছিলেন ।

রতন টাটা ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মভূষণ এবং পদ্মবিভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন।
এছাড়াও রতন টাটা (Ratan Tata) অসংখ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা পেয়েছেন।

 

।।তথ্য: সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট ।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বাংলা যাত্রাজগতের জনপ্রিয় যাত্রাপালার ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বাংলা ও বাঙালির কালচারের সঙ্গে যাত্রা শিল্প রক্তের সঙ্গে মিশে রয়েছে। এখন সেই যাত্রা শিল্পে কিছুটা ভাটা পড়লেও এমন এক সময় ছিল যখন যাত্রা ছিলো মানুষের বিনোদনের এক বিশাল বড় অঙ্গ। গ্রামীন অনুষ্ঠান কিংবা শীতের শেষের মরসুমে যাত্রার আসার বসত দিকে দিকে।  বহু দিকপাল যাত্রা শিল্পীর নাম তখন ছিল মানুষের মুখে মুখে। তাদের মধ্যে এমন ই একজন কিংবদন্তী যাত্রা শিল্পী ছিলেন ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায়। ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় একজন বিশিষ্ট দরদী মনের মরমী যাত্রা পালাকার। তিনি যাত্রাপালার প্রযোজক-নির্দেশক, গীতিকার ও সুরকারও ছিলেন। আজ তাঁর প্রয়াণ দিবস। এমন দিনে জেনে নেবো তাঁর সম্পর্কে কিছু কথা।

 

সংক্ষিপ্ত জীবনী—

 

ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৩৪ সালের ২৫ নভেম্বর বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ, ব্রিটিশ ভারতের পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার ‘মূল’ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন মূলগ্রামে।  তবে কৈশোর থেকে বাংলার গ্রামে গ্রামে অনুষ্ঠিত যাত্রার প্রতি তাঁর ভালবাসা ও ভক্তি তাঁকে যাত্রা শিল্পের প্রতি আকৃষ্ট করে।  কলকাতার চিৎপুরের যাত্রা জগতে ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রবেশ করে।  তাঁর রচিত প্রথম যাত্রাপালা “নচমহল” মঞ্চস্থ করে ‘সত্যম্বর অপেরা’।  প্রথম লিখিত যাত্রাপালায় তিনি দর্শকদের সম্মান অর্জন করেন। তিনি একজন সহানুভূতিশীল ব্যক্তি ছিলেন।  দরিদ্র সাধারণ মানুষের কথা, অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার উঠে এসেছে তাঁর লেখায়।  ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় যেমন একজন অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক ছিলেন, তেমনি ছিলেন একজন গীতিকার ও সুরকার।  যাত্রাপালার গানেও যথেষ্ট দক্ষতা ছিল। পালা রচনার পাশাপাশি তিনি পরিচালনায়ও কাজ করেছেন।  ১৯৮৯ সালে, তিনি তাঁর নিজস্ব গ্রুপ “ভৈরব অপেরা” গঠন করেন এবং এটি প্রযোজনা করেন।  এরপর একে একে অনেক যাত্রা লিখেছেন।  তাঁর রচিত যাত্রাপালের সংখ্যা প্রায় আড়াই।  তার জনপ্রিয় যাত্রাপালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পালাগুলি হল –

দেবী সুলতানা, শ্রীচরণেষু মা, একটি পয়সা, পদধ্বনি,  ভীষ্ম জননী গঙ্গা, মা মাটি মানুষ, অচল পয়সা, গান্ধারী জননী, সাত টাকার সন্তান, পাগলা গারদ, রক্তে ধোয়া ধান, মাতৃঋণ, ঠিকানা পশ্চিমবঙ্গ, কুবেরের পাশা,  জীবন এক জংশন, শান্তি তুমি কোথায়, স্বর্গের পরের স্টেশন, সত্যযুগ আসছে, দু টুকরো মা, ভিখারি ঈশ্বর, ঘরে ঘরে দুর্গা।

 

সম্মাননা—

 

সারা জীবন যাত্রাশিল্পের সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। গ্রাম বাংলার সমাদর কুড়িয়েছেন আর অনেক পুরস্কার পেয়েছেন  ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় । তার গ্রামের বাড়িতে আবক্ষ মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে সরকারি উদ্যোগে।

 

জীবনাবসান—

 

বাংলা যাত্রাজগতের জনপ্রিয় যাত্রাপালাকার ভৈরব গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দের ২৮ শে ডিসেম্বর প্রয়াত হন। তাঁর প্রয়াণে যাত্রা শিল্প জগতে এক বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি হয়। এই শিল্পে তাঁর অবদান আজও শ্রদ্ধারসাথে স্মরণ করে সকলে।

 

।। তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

খ‍্যাতনামা কবি ও সাহিত‍্যিক মণীশ ঘটক এর প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

‘কল্লোল’ যুগের প্রখ্যাত কবি-সাহিত্যিক ড.  আয়কর পরামর্শদাতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও, মনীশ  ঘটক একজন ছোট গল্প লেখক হিসাবেও পরিচিত। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি গল্পকার, কবি ও ঔপন্যাসিক।   পাবলো নেরুদার অনেক কবিতাও তিনি অনুবাদ করেছেন। তাঁর ছদ্মনাম যুবনাশ্ব।

 

জন্ম পারিবারিক জীবন ও শিক্ষা—-

 

মনীশ ঘটক ১৯০২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরের বাসিন্দা ছিলেন।  তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল নিউ ভারেঙ্গা, বর্তমান বাংলাদেশের পাবনায়।  তাঁর পিতার নাম সুরেশচন্দ্র।  সুরেশ চন্দ্র ডেপুটি এবং পরে ম্যাজিস্ট্রেট হন, তাই মনীশ ঘটককে তার পিতার কাজে পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে সময় কাটাতে হয়েছিল।  মণীশ ঘটক ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। তাঁর ভাই প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটক এবং লেখক মহাশ্বেতা দেবী তাঁর কন্যা।

 

কর্মজীবন—-

 

মনীশ ঘটক ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে গল্পকার হিসাবে তাঁর সাহিত্যিক জীবন শুরু করেন।  সে সময় কবি হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন।  তিনি কল্লোল যুগের লেখক ছিলেন।  তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ শিলালিপি।  তিনি যুবনাশ্ব ছদ্মনামে গল্প ও গদ্য লিখেছেন।  তার একটি গল্পের বই পটলডাঙ্গার পাঁচালী। কনখল  তাঁর লেখা একটি উপন্যাস।  মান্ধাতা বাবার আমল তাঁর লেখা একটি আত্মজীবনীমূলক বই।  তিনি পাবলো নেরুদার কবিতা অনুবাদ করেন।  তিনি আজীবন বহরমপুর থেকে বর্তিকা নামে একটি ছোট পত্রিকা সম্পাদনা করেন।  তিনি ১৯২৭ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশিত বুদ্ধদেব বসু এবং অজিতকুমার দত্ত সম্পাদিত প্রগতি পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন নিয়মিত । মনীশ ঘটক আয়কর উপদেষ্টা হিসেবে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেন।

 

তাঁর রচিত গ্রন্থ—-

 

তার কয়েকটি গ্রন্থ শিলালিপি, যদিও সন্ধ্যা, বিদুষী বাক্, কনখল, পটলডাঙ্গার পাঁচালী, মান্ধাতার বাবার আমল (আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ), একচক্রা (শেষ কাব্য সঙ্কলন) উল্লেখযোগ্য।

 

প্রয়াণ—-

 

২৭ ডিসেম্বর ১৯৭৯ সালে তিনি প্রয়াত হন।

 

।।তথ্য: সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য – শ্যামা সঙ্গীতে একজন অসামান্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।

ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য ছিলেন বাংলা গানের জগতে এক যুগান্তকারী কণ্ঠশিল্পী।  সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও তার খ্যাতি ছিল।  শ্যামা সঙ্গীতে একজন অসামান্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য ১০ ই সেপ্টেম্বর ১৯২২ সালে ব্রিটিশ ভারতের বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার বালির বারেন্দ্র পাড়ায় অত্যন্ত রক্ষণশীল শাক্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। মাতা অন্নপূর্ণা দেবী সুন্দর গান গাইতেন। ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য বিবাহ করেন রেখাদেবীকে। তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যই পিতার সঙ্গীত-ধারার একমাত্র উত্তরাধিকারী। প্রবাদপ্রতিম শ্যামা সঙ্গীত শিল্পী অকালপ্রয়াত পান্নালাল ভট্টাচার্য ছিলেন তার সর্বকনিষ্ঠ ভ্রাতা।

পড়াশোনা করেছেন  বালির রিভার্স টম্পসন স্কুলে। আর  পারিবারিক ও ধর্মীয় ভাবেই তার সঙ্গীত শিক্ষা ও সাধনা শুরু হয়েছিল। সঙ্গীতের তালিম নেন গোকুল নাগ, পণ্ডিত সত্যেন ঘোষাল প্রমুখের কাছে।

আধুনিক  বাংলা ও হিন্দি গান দিয়ে সঙ্গীত জীবন শুরু করেন তিনি। হিন্দি ছবি ‘ মহাপ্রভু চৈতন্য’ তে তার গাওয়া গানগুলি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘ পাঁচ দশকের সঙ্গীত জীবনে তিনি প্রায় ৫০০টি গানের রেকর্ড করেন। নিজে লিখেছেন প্রায় ৪০০ টি গান। গীতিকার হিসাবে তিনি “শ্রীপার্থ” ও “শ্রীআনন্দ” ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে প্রণব রায়ের কথায় ও সুবল দাশগুপ্তর সুরে পায়োনিয়ার  রেকর্ডে গাওয়া তার প্রথম গান “যদি ভুলে যাও মোরে, জানাবো না অভিমান” অসম্ভব জনপ্রিয়তা পায়। ‘শহর থেকে দূরে’ ছবিটিতে ‘রাধে ভুল করে তুই চিনলে না তোর প্রেমিক শ্যাম রায়’ গানটি গেয়ে তিনি পাদপ্রদীপের সামনে চলে আসেন। বাংলা গান থেকে শুরু করে নজরুলগীতি, শ্যামা সঙ্গীত, উচ্চাঙ্গ সংগীতের সব শাখাতেই তার সমান দক্ষতা ছিল। বহু জনপ্রিয় গানের তিনি সুরকার  ছিলেন। ‘মহাপ্রস্থানের পথে’ চলচ্চিত্রে তার দেওয়া সুর এক ইতিহাসের সৃষ্টি করেছিল।তিনি বহু বাংলা চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক গায়ক ছিলেন।  তিনি ১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সাধক রামপ্রসাদ’ ছবিতে ২৪ টির মধ্যে ২৩ টি গান গেয়েছিলেন।

‘পাশের বাড়ি’ ছবিতে সলিল চৌধুরীর কথায় ও সুরে “ঝির ঝির ঝির ঝিরঝিরি বরষায়” গানটি জনপ্রিয় হয়। সমানভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল  মাটিতে জন্ম নিলাম, এই ঝির ঝির বাতাসে, অন্তবিহীন এই অন্ধ রাতের, ঝনন ঝনন বাজে প্রভৃতি গান গুলি।

নেপথ্য গায়ক হিসাবে—

বাবলা, বাদশা, শহর থেকে দূরে, সাহেব বিবি গোলাম, সাড়ে ৭৪, সতী কঙ্কাবতী, শ্রীবৎস চিন্তা, স্বামীজি, তমসা, তানসেন, যত মত তত পথ, যাত্রিক, বন্ধন, বাঁকা লেখা, বড়দিদি, বেহুলা লখিন্দর, ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ, আবীরে রাঙানো,  অদৃশ্য মানুষ, আদ্যাশক্তি মহামায়া, আলেয়া, অর্ধাঙ্গিনী, অসমাপ্ত, বালক গদাধর,  ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য, বীরেশ্বর বিবেকানন্দ, চৈতালি, চলাচল, চন্দ্রনাথ, দেবীতীর্থ-কামরূপ, দেবীতীর্থ কালীঘাট, ঢুলি, গোধূলি, জয় মা তারা, কালো, মহাপ্রস্থানের পথে, মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র, মীরাবাঈ, মেজদিদি, নববিধান, নষ্টনীড়, রানী রাসমণি, রূসসী, শচীমাতার সংসার, সাধক বামাক্ষেপা, সাধক রামপ্রসাদ।

অভিনেতা হিসাবে—

‘নববিধান’, ‘পাশের বাড়ি’, ‘লেডিজ সিট’ সহ পাঁচটি ছবিতে অভিনয় করেছেন।

সংগীত পরিচালক হিসাবে—

জয় মা তারা,  লেডিজ সিট।

২৭ ডিসেম্বর, ১৯৯২ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This