Categories
কবিতা

চিরদিনের ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

এ দেশ আমার চিরদিনের সুখের ছেলেবেলা ,
পিতৃপুরুষের চরণচিহ্ন ,শুধুই স্মৃতির মেলা।
এদেশ আমার লাজুক প্রিয়ার সোহাগভরা মুখ –
এদেশ আমার শত যুদ্ধের জয়ে বিভোর বুক।

এদেশ আমার চিরদুখী মায়ের মুখের হাসি ,
হাজার দুঃখেও ফিরে ফিরে আসা,ভালোবাসি শুধু ভালোবাসি ।

সংরক্ষিত/প্রবীর কুমার চৌধুরী।

প্রবীর কুমার চৌধুরী

Share This
Categories
কবিতা

অহেতুক কেন বেঁচে থাকা :: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।

অভাবের থলি সবার হাতে কাঁকর পড়েছে সবার ভাতে ,
নিষ্কৃতি নাই , বল কোথায় শান্তি পাই ?
মিছিল চলেছে পথেঘাটে পাপের পশরা জীবনের হাটে ,
হন্যে হয়ে খুঁজে যাই, তবু মুক্তির দেখা নাই ।
দৈনন্দিন তালিকা আকাশ ছোঁয়া,গরীবের রান্নাঘরে কাল ধোঁয়া,
বাঁচার পথ নাই , আয়ু কেবলই পালাই,পালাই।

দিশাহারা মনপ্রাণ, এ সময়ের অবদান ,
খিদেগুলো কেদেঁ মরে ,অনন্ত অনাহারে।
জীবন আজ এলোমেলো ,ব্যথা বুকেই চলে গেল –
কত প্রিয় অনাহারে ,বিড়ম্বিত এ সংসারে।
শুধু সুযোগ সন্ধানী ওত্পেতে অভাব কেনে কাল হাতে –
শিশু আর নারী পণ্য পাচারে । কে আছিস বাঁচারে।

ভাষণে ভাষণে ভরে গেছে দেশ, মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে হয়েছি শেষ,
কেউ ব্যাথা বোঝেনি,কেউ কথা রাখেনি ।
মনের দাবানলে পুড়ে যাই ,শত সমস্যায় বাঁচার পথ নাই ,
অসময়ে কেউ পাশে থাকেনি ,যতসব সুযোগ সন্ধানী।
উৎপীরণের হাজার ক্ষত বয়ে ,যেন আছি বেওয়ারিশ লাশ হয়ে-
কেউ সুখচিতায় তোলেনি,এখনও ভাঙ্গা বুকে আগুন জ্বলেনি ।

রাতজাগা চোখগুলো হাহাকারে ভরা, চকচকে রাজপথ পাপে আধমরা,
এ যেন থাকা পরবাসে, ক্ষমতা দূরে দূরে হাসে।
সকালের রোদ্দুরের বেদনার মুখ ,দুর্বলে দলন,বিকৃত, কদর্য সুখ,
উদার আকাশে রক্তকনারা ভাসে,দিনভর ত্রাসে, ত্রাসে ,
আজ মনেহয় বেঁচে থাকাই মিছে,সুখপাখিটা কবেই মরে গেছে।

সংরক্ষিত/প্রবীর কুমার চৌধুরী।

Share This
Categories
কবিতা

আমি নারী ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

জেগে ওঠার গান গাও মা,জেগে ওঠার গান গাও
আমি যে নারী,আমি সব পারি,সেই ভরসা দাও।
কেন বল অবলা,ত্যাগ,তিতিক্ষাই ধর্ম ?
বীরাঙ্গনার ধর্মপালন আমারও যে কর্ম।

আমারও আছে ক্রোধ,নিতে পারি শোধ চরম অপমানে,
আমার খড়গ রক্ত মাখে প্রমান আছে কত শয়তানে।
ইতিহাস খোল,পাতায় পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা-
জননী,জন্মভূমি,আভূমি নত, শুরু কর শেখা।

আমার কীর্তি মহাপ্রাণ সৃষ্টি, আমিই মহাশক্তি,
আমিই মমতায় গড়ি, ক্ষমায় ভরি,আমায় করো ভক্তি।
আমার ক্ষুধায়,বুকের সুধায়, তুমি যে আজ বড়,
অহংকারে মদমত্ত, তুমি কি জানআমার শক্তিতেই সব কর?

সংরক্ষিত/ প্রবীর কুমার চৌধুরী।

Share This
Categories
কবিতা

মানবতার হোক উত্থান ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

আজ এক ভয়ংকর দিনের মুখোমুখি ,
ধ্বংসের দামামা শুনে কেউ হতবাক, কেউ সুখী।
ভেঙেচুরে কেউ চায় অস্তিত্বের লোপাট –
কেউ মহাপ্রস্থানের খুলে দেয় অন্তিম কপাট।
অন্ধকারের সিঁড়ি বেয়ে নেবে আসে দম্ভ,
মানবিকতার গলাটিপে উল্লসিত শুম্ভ,নিশুম্ভ।

কালো হাতে হিংস্র ক্রোধে গুড়ায় সুন্দর মূর্তি,
বাঁচার সংগ্রামে এখনো মজুদ অসহায়,মেহনতি অগুনতি।
কালো রাত্রি ভেদ করে উঠবে তেজদীপ্ত সূর্য,
আগামীর সন্তান ঘুমভেঙে বাজাবে রণতুর্য ।

শান্তিকামীর নীরব অশ্রুজল, হবে নাক ব্যর্থ-
মুক্তির বার্তাঘোষিত হবেই এযে বিপ্লবের মহাতীর্থ।

Share This
Categories
কবিতা

নিঃসঙ্গ দিন : প্রবীর কুমার চৌধুরী।

প্রতি – দিন আসে না ভালোবেসে
সময় কাটায় অনিহায় অনায়াসে,
বিবশতা আর নিরক্ততা-
ভরায় যত অপ্রেমের মাদকতা।

জানি না কেউ ভালো আছে কিনা,
মনের জানালা গুলো বন্ধ,ফোটেনা হাস্নুহানা-
সৌরভে ফোটে না খুশির আমেজ,দেখেনা স্বপ্ন,
জানি না ফিরবে কিনা সুখের সেদিন আর কখনো।

যদি হও সখা,কাছে এসে,প্রেমাবেশে, দিও দেখা-
অনলে,অনলে ভস্মীভূত এ মন,প্রাণ,আমি যে বড় একা।
তুমি অনন্ত প্রেম, দানিছ ভুবনে,রয়েছ প্রতিক্ষণে মননে,
তুমি কবি সূর্যের মতো,আজও আছো প্রেমময় শান্তিনিকেতনে।

Share This
Categories
কবিতা

তোমাকে চাই :::: প্রবীর কুমার চৌধূরী।।।

পথে পথে,মিছিলে মিছিলে,প্রাত্যহিক সংগ্রামে,শুধু তোমাকে চাই
বঞ্চিত,শোষিত,রক্তাক্ত আর বুভুক্ষায় কঠোর প্রতিজ্ঞা বুকে চেপে
শেষশীতে কম্বলহীন,দাঁতে, দাঁত চেপে ছাই চাপা নিভন্ত মনের
আগুনের সন্ধ্যানে দিন রাত এককরা শেষ বিকেলের সূর্যস্নাত
দুর্বিনীত অভিশাপ বুকে শুধু তোমাকে চাই।

” ঊষর ধূসর ” হিংস্র হিংলাজে সময়কে চেপে দুইহাতে
প্রতিস্পর্ধি হওয়ার শেষ বাসনাতে,মৃত্যুর বুকে পা রেখে আসুক-
বজ্রসম মনোবল, প্রতিবাদের দ্রোহকাল ছিনিয়ে আনার সংকল্পে
জানি অজাতশত্রু কেহ নয়, সবারি আছে প্রাণে ভয়
তবুও মুক্তির খোঁজে নির্ভয়ে অধিকারের নিশান আঁকড়ে ধরবো- দুইহাতে।

এ আহবকাল দুরমুশ করে শান্ত জীবন,স্বপ্নগুলো ছিনিয়ে নেয়
তাই আজ আগামীর মিছিলে মিছিলে মুখে থাক সাম্যের শ্লোগান।
ব্যথিত হৃদয়ে থাক কঠোর প্রতিজ্ঞা,সবকিছু হারানোর প্রজ্বলিত ক্রোধের শিখায় এসো করাঘাতে জাগিয়ে তুলি,শপদে আশা
আর যেন কেউ কোত্থাও কারোর মুখের ভাত ছিনিয়ে না খায়।

সংরক্ষিত /প্রবীর কুমার চৌধুরী

Share This
Categories
কবিতা

যাবার আগে ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

জন্মমুহূর্ত থেকেই জানি একদিন ফিরে যেতে হবে
তুমি শার্সি তুলে কেন মনে করাও?
আরশিতে মুখ দেখি, কিছুটা বাকি-
শতজীর্ণ সুললিত যৌবন।

তমসার গভীরে একাকী যতবার ভাবি যাবো,যাবো
সামনে এসে গভীর আশ্লেষে-
পথরোধ করে দাঁড়ায় কর্তব্য।
কিছুটা অপেক্ষায় থমকে দাড়াই, হিসাব নিকাশে ।

আকাশময় অগুনতি তারার মায়াবী আলোয়
ভীষণ শখ জাগে, তোমার চোখে চোখ রেখে
সেকে নিই এ কঠোর বাস্তব। জ্যোৎস্নায় কাঁদে প্রেম,
এখন তুমিই বল তোমার নরম হৃদয়ে সত্যি কি আছি এখনও?

মাঝে মাঝে অসহনীয়তায় গর্জে উঠি
তুমি হাসো বলো -অরণ্যে রোদন
সম্বিত আসে,সেও হাসে, ওটা রাজরক্ত
আমি ভেতো মজ্জ্যায় মজ্জ্যায় দেশভক্ত।

সংরক্ষিত
গড়িয়া, কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

চিরন্তন পদাবলী ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

সাধ জাগে হাস্নুহানার গন্ধ খুঁজি সুঘ্রানে
অসহ্য গাদাল পাতা ছড়ানো পথে ।
সকালগুলো বড় ভয়াভয়-
চোখ খুলতেই ভয় আর আতঙ্ক ।
প্রেয়সীর ছলনা, কুমারী যৌবনের কান্নায় দিশাহারা হই,
এখনও প্রাত্যহিক মৃত্যু মিছিল চলে, অশ্রু ঢালে-
বশ্যতা স্বীকারে কঠোরতায় বাধ্য করে অবনী।

হয়তো খালি চোখে চাঁদকে মনে হয় মহাপ্রেমিক,
ক্ষনেক চুম্বন ধারায় ভরে যায় এ দেহ, মন,
জোছনার স্নিগ্ধধারায় যে কামনার সঙ্গম –
অবশেষে নষ্ট চন্দ্রের যন্ত্রণাময় দংশন।
আলোছায়ার পরে আছে উলঙ্গ কুয়োতলা
চেনা চামড়ার মধ্যে লুকিয়ে আছে একটি লাশ
তবে কি মুক্তি দিলো কুৎসিত পৃথিবীর কারাগার ?

খিদেওয়ালা ডেকে তোলে নিত্য তার যা অভ্যাস,
এবার শুরু হবে দৈনন্দিন কালযাপনে হিংস্রতায় অবগাহন।

সংরক্ষিত
গড়িয়া,কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

ধর্মের মানদণ্ড ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।

সবার মাঝে ভালোই আছি আমি ,
তুমি ? কি বললে ,জানেন অন্তর্যামী ?
কবে নিলে এই মৌনব্রত,
মুখে তো ফুলঝুরি ছুটতো শত,শত
কবিতায় খুঁজি লিখছো কই?
দেখছি নাতো তোমার উল্লসিত হৈচৈ।
এখন ভীষণ হট্টগোল,
এবার লেখায় তোলো শোরগোল ।

স্বর্গের সিঁড়ি ভেঙেছে,
সুখের গানগুলিও থেমেছে ,
এখন স্বপ্নগুলো দুঃস্বপ্নের কোলে দোল খায়-
ছদ্মবেশী বর্গির আনাগোনায়।
অহংকার আর দর্পের ছবি একই ফ্রেমে-
আমি দেখি জানালায় বসে। জানিনা কোন ভ্রমে-
বিধাতার হিসাবের খাতা ভুলে ভরা,
ধর্মের মানদন্ডে মানুষকে মাপছে এ ধরা।

সংরক্ষিত
গড়িয়া,কলকাতা।

Share This
Categories
কবিতা

ঘুম ভেঙে এসো ::: প্রবীর কুমার চৌধুরী।।।

অবক্ষয়ের করাল ছায়ায়-
আজ সব কবলিত, তবুও মায়ায় নিরুপায় ।
সীমাহীন আস্পর্ধায়-
কলঙ্কিত এ অধ্যায়,
তুমি চুপ কেন দুঃসময়ে, শিক্ষার দম্ভ?
এইতো সময় দক্ষযজ্ঞের,হয় হোক আরম্ভ।

চাতকের মতো অপেক্ষার জল না চেয়ে
কলমে রক্ত ভরে বিদ্রোহে এসো ধেয়ে।
সবলা, অবলা,যত নিচের তলা, হোক উত্থান,
সূর্যের আগুনে ঝলসিয়ে করব মহাপ্রস্থান।
ইতিহাস কথা বল,আর নয় চোখ ছলছল,
অমৃত ছেঁচে অশনিকে দেব হলাহল।

সংরক্ষিত/ প্রবীর কুমার চৌধুরী

Share This