একজন ভারতীয় বাঙালি ব্যঙ্গচিত্রী ও লেখক ছিলেন চণ্ডী লাহিড়ী। তিনি বৃটিশ ভারতের নদীয়ার নবদ্বীপের বুড়ো শিবতলায় তাঁর মামার বাড়িতে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোহিনীমোহন লাহিড়ী ছিলেন বর্ধমান জেলার চণ্ডীপুরের বাসিন্দা। প্রথমে নবদ্বীপ হিন্দু স্কুলে তাঁর পড়াশোনা শুরু হয়। নবদ্বীপ বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে স্নাতক হন। পরে চলে আসেন কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম.এ.করেন।
ব্যঙ্গচিত্র জীবন———
১৯৫২ সালে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় দৈনিক লোকসেবক পত্রিকায় সাংবাদিকতার কাজে। দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে বাংলা কার্টুনচর্চার সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। ব্যঙ্গচিত্রী হিসেবে ডেভিড লোয়ির অনুরাগী ভক্ত ছিলেন তিনি। তাঁর সমকালীন শিল্পী হিসেবে বিখ্যাত সাহিত্যিক আর. কে. নারায়ণের ভাই ব্যঙ্গচিত্রী রাসীপুরম কৃষ্ণস্বামী লক্ষ্মণ, মারিও মিরান্দা, কুট্টি প্রমুখের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। চণ্ডী লাহিড়ীর সৃষ্ট পকেট কার্টুন ‘তির্যক’ ও ছোটোদের জন্য সৃষ্ট কমিকস জনপ্রিয় হয়।
সর্বভারতীয় নানা পত্রিকায় কার্টুন এঁকেছেন। রাজনৈতিক ও সামাজিক দুই ধরনের কার্টুন আঁকতেন চণ্ডী লাহিড়ী। তাঁর অসংখ্য ব্যঙ্গচিত্র ভারতের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের জন্য কার্টুন এঁকেছেন তিনি।১৯৬১ সালে ব্যঙ্গচিত্রী হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় কার্টুনচর্চা শুরু করেন। আনন্দবাজার পত্রিকায় ১৯৬২ সালে যোগ দিয়েছিলেন।
তিনি কার্টুন নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন —- কার্টুনের ইতিবৃত্ত, বাঙালির রঙ্গব্যঙ্গচর্চা, গগনেন্দ্রনাথ: কার্টুন ও স্কেচ। তাঁর কার্টুন সংগ্রহের নাম চণ্ডী লুকস অ্যারাউন্ড এবং ভিজিট ইন্ডিয়া উইথ চণ্ডী।
অ্যানিমেশন——-
কেবল ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কন নয়, নিজের দক্ষতায় অনেকগুলি অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছেন তিনি, যার মধ্যে ‘হংসরাজ’, ‘ধন্যিমেয়ে’, ‘মৌচাক’, ‘চারমূর্তি’ প্রভৃতি খুবই বিখ্যাত।
সম্মাননা—
চণ্ডী লাহিড়ী তাঁর মেয়ে তৃণার সঙ্গে যৌথভাবে ‘মানুষ কি করে মানুষ হল’ নামে তাঁর একটি নৃবিজ্ঞান বিষয়ক কাজের জন্য দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নরসিংহ দাস পুরস্কারে সম্মানিত হন ।
মৃত্যু——
২০১৮ সালের ১৮ জানুয়ারি চণ্ডী লাহিড়ীর মৃত্যু হয়।
।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।