Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২৫ জুন, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ২৫ জুন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৯০০ – লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন, ব্রিটিশ নৌ বাহিনী অফিসার ও রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ-এর স্বামী প্রিন্স ফিলিপের মামা।

১৯০৩ – জর্জ অর্‌ওয়েল, এক কালোত্তীর্ণ ইংরেজ সাহিত্যিক।
১৯০৭ – ইয়োহানেস হান্স ডানিয়েল ইয়েনসেন, জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী।

১৯০৮ – সুচেতা কৃপালনী ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

১৯১১ – উইলিয়াম এইচ. স্টেইন, মার্কিন প্রাণরসায়নবিদ।
১৯১৩ – আফ্রিকান-ফরাসি কবি এমে সেজেয়ার।
১৯১৮ – পি. এইচ. নিউবি, ইংরেজ ঔপন্যাসিক ও বিবিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

১৯২৪ – (ক) ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক মদন মোহন কোহলি।

(খ) সিডনি লুমেট, একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯২৮ – আলেক্সেই আলেক্সেভিচ আব্রিকোসোভ, একজন সোভিয়েত এবং রাশিয়ান তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী।

১৯৩১ – বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং, একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ এবং অষ্টম প্রধানমন্ত্রী।

১৯৩৪ – দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশিষ্ট সংবাদ পাঠক আবৃত্তিকার ও বাচিকশিল্পী।

১৯৩৬ – ইউসুফ হাবিবি, ইন্দোনেশিয়ার প্রকৌশলী ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ।
১৯৫৩ – ইয়ান ডেভিস, সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৫৫ – ভিক মার্কস, সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।
১৯৬১ – রিকি জারভেজ, ইংরেজ স্ট্যান্ড-আপ কৌতুকাভিনেতা, অভিনেতা, লেখক, পরিচালক, প্রযোজক ও সঙ্গীতজ্ঞ।
১৯৬৩ – ইয়ান মার্টেল, বুকার পুরস্কার বিজয়ী একজন কানাডীয় সাহিত্যিক।
১৯৬৩ – জর্জ মাইকেল, ইংরেজ পপ গায়ক, সুরকার, গীতিকার, রেকর্ড প্রযোজক এবং সমাজ সেবক ছিলেন।
১৯৬৪ – ফিল এমরি, সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৭৪ – বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুর।
১৯৭৫ – ভ্লাদিমির ক্রামনিক, বিখ্যাত রুশ দাবাড়ু ও গ্র্যান্ডমাস্টার।
২০০৬ – ম্যাককেনা গ্রেস, মার্কিন কিশোরী অভিনেত্রী।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৫২৯ – বঙ্গ বিজয়ের পর মোগল সম্রাট বাবর আগ্রা প্রত্যাবর্তন করেন।
১৮৯১ – ভারতীয় সংবাদপত্রের ওপর ব্রিটিশরাজ সেন্সর আরোপ করেন।
১৯৩২ – ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে সর্বপ্রথম টেস্ট ক্রিকেট খেলা শুরু হয়।
১৯৩৫ – সোভিয়েত ইউনিয়ন ও কলম্বিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৫০ – উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনী দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করলে কোরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হয়।
১৯৭৫ – সারা ভারতে ইন্দিরা গান্ধীর প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে তৃতীয় বারের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। (২৫ জুন,১৯৭৫ হতে ২১ মার্চ ১৯৭৭)
১৯৭৫ – পর্তুগালের কাছ থেকে মোজাম্বিকের স্বাধীনতা লাভ।
১৯৭৮ – নেদারল্যান্ডকে হারিয়ে (৩-১) আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ ফুটবলে জয়ী হয়।
১৯৮৩ – কপিল দেবের অধিনায়কত্বে ভারতীয় ক্রিকেট দল ৪৩ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয় করে।
১৯৯১ – ক্রোয়েশিয়া ও স্লোভেনিয়া যুগোস্লাভিয়া থেকে বের হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৯৩ – তুরস্কে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী তানুস সিলার জোটের সরকার গঠন।
১৯৯৫ – পুত্র শেখ হামাদ কর্তৃক কাতারের আমির শেখ খলিফা উৎখাত।
২০১৪ – পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা ভেঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা তৈরি করা হয়।
২০২২ – বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সেতু (পদ্মা সেতু) চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৮৪২ – সিসমন্দি, সুইস অর্থনীতিবিদ ও লেখক।
১৯১৬ – টমাস এয়াকিনস, মার্কিন বাস্তবতাবাদী চিত্রশিল্পী, চিত্রগ্রাহক, ভাস্কর ও চারুকলা শিক্ষক।

১৯২২ – সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, বাঙালি কবি ও ছড়াকার।
১৯৩৩ – জগদানন্দ রায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি কল্পকাহিনী লেখক।
১৯৩৮ – নিকোলাই ত্রুবেৎস্‌কোয়, রুশ ভাষাবিজ্ঞানী।
১৯৪৪ – নওয়াব বাহাদুর ইয়ার জঙ্গ।
১৯৬০ – সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি।
১৯৭৭ – ওলেভ ব্যাডেন পাওয়েল, ব্রিটিশ স্কাউটিং এবং গার্ল গাইডসের প্রতিষ্ঠাতা রবার্ট ব্যাডেন পাওয়েলের সহধর্মিনী।
১৯৮৪ – মিশেল ফুকো, ফরাসি দার্শনিক।
১৯৯৫ – আর্নেস্ট ওয়াল্টন, আইরিশ পদার্থবিজ্ঞানী।
২০০৬ – বাসন্তী দুলাল নাগচৌধুরী,ভারতীয় বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী,ভারত সরকারের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ও পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম পথিকৃৎ।
২০০৯ – মাইকেল জ্যাকসন, মার্কিন সঙ্গীত শিল্পী ও সঙ্গীত ব্যবসায়ী।
২০২০ – নিমাই ভট্টাচার্য, ভারতীয় বাঙালি লেখক ও সাংবাদিক।
২০২৩ – লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী, বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জন বি গুডএনাফ।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে ভারতের বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক – অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়।।।।

অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় একজন বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার। বাংলার খ্যাতনামা সাহিত্যিক বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় (বনফুল) তাঁর অগ্রজ ছিলেন।

জন্ম —-

অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জুন পিতা ডাঃ সত্যচরণ মুখোপাধ্যায়ের কর্মক্ষেত্র ও স্থায়ী বাসস্থান বিহারের পূর্ণিয়া বিভাগের কাটিহার জেলার মণিহারীতে।

মাতা মৃণালিনী দেবী। ভ্রাতা বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়। এঁদের আদি পৈতৃক নিবাস ছিল পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শিয়াখালা গ্রাম। তাঁদের পরিবার ‘কাঁটাবুনে মুখুজ্জ্যে’ নামে পরিচিত ছিল।

শিক্ষা জীবন——

অরবিন্দের পড়াশোনা কাটিহারে। স্থানীয় স্কুল থেকে ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পাশ করার পর চলে আসেন শান্তিনিকেতনে। সেই সময় কলাভবনে তার সহপাঠী ছিলেন সত্যজিৎ রায়। বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন তিনি কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরামর্শ মতো সাহিত্য পাঠ করতেন। নাটক গল্প ইত্যাদিতে তার আগ্রহ বাড়তে থাকে। শান্তিনিকেতনে বিজ্ঞান-পাঠ শেষ করে ভর্তি হন ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু মন পড়ে থাকে নাটক, গল্প সিনেমায়।

চলচ্চিত্র জীবন—

শেষপর্যন্ত চতুর্থ বর্ষের ডাক্তারি পড়ায় ইতি টেনে চলে এলেন চলচ্চিত্র জগতে। প্রথমে অর্ধেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সহকারী হিসাবে কাজ শুরু করেন । পরে কলকাতার বীরেন সরকারের নিউ থিয়েটার্সে যোগ দেন বিমল রায়ের অ্যাসিস্টান্ট হিসাবে। সেখানেহৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় তার সহকর্মী ছিলেন। পরে নিজেই বড়দা বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের (বনফুল) গল্প নিয়ে ‘কিছুক্ষণ’ ছবিটি করেন। প্রথম ছবির পরিচালনাতেই মুন্সিয়ানার ছাপ রেখেছিলেন। ছবিটি রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়। এরপর একের পর এক ছবি করেছেন তিনি। আহ্বান, নতুন জীবন, পিতাপুত্র, নায়িকার ভূমিকায়, ধন্যি মেয়ে, নিশিপদ্ম, মৌচাক অগ্নীশ্বর’ র মতো ছবি আজও তাঁকে স্মরণীয় করে রেখেছে। তিনি মোট ২৬ টি পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি, তিনটি টেলিফিল্ম ও একটি ধারাবাহিকের পরিচালনা করেন।

পরিচালিত চলচ্চিত্রের তালিকা—

নিশিপদ্ম, ধন্যি মেয়ে, মৌচাক, অগ্নীশ্বর, অজস্র ধন্যবাদ, মন্ত্রমুগ্ধ, পাকা দেখা, শহরের ইতিকথা, অজান্তে, শীলা* নদী থেকে সাগরে, হুলস্থুল, বর্ণচোরা, কেনারাম বেচারাম, কিছুক্ষণ, আহ্বান, নতুন জীবন, পিতাপুত্র, নায়িকার ভূমিকায় ।

সম্মাননা—-

বাংলার ‘নিশিপদ্ম’ ছবিটি হিন্দিতে ‘অমর প্রেম’র চিত্রনাট্য তিনি রচনা করেন এবং ফিল্মফেয়ার এডওয়ার্ড পান।

মৃত্যু—-

বার্ধক্যের কারণে ২০১৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ ই ফেব্রুয়ারি (২৬ শে মাঘ ১৪২২ বঙ্গাব্দ) বুধবার ৯৬ বৎসর বয়সে কলকাতায় নিজ বাসভবনে প্রয়াত হন ।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের সর্বশ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় কবি ও ছড়াকারদের একজন – স্মরণে ছন্দের যাদুকর।।।।

” তুমি বঙ্গভারতীর তন্ত্রী-‘পরে একটি অপূর্ব তন্ত্র এসেছিলে পরাবার তরে এ শুধু প্রিয়জনের প্রশংসা নয়, এ এক ঐতিহাসিক সত্য।” —- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের সর্বশ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় কবি ও ছড়াকারদের একজন, রবীন্দ্রযুগের বিখ্যাত “ছন্দোরাজ” কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ছড়া তৈরির কীর্তি, শব্দ ও ভাষার যথাযথ ব্যবহারের জন্য তাঁকে ছন্দের যাদুকর বলে অভিহিত করেছেন।

কবিতা মধ্যযুগে ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি, পৌরাণিক কাহিনী ইত্যাদির মতো বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক বিষয়ে তিনি সুপণ্ডিত ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন——–

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৮৮২ সালে কলকাতার কাছে নিমতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তাঁর পৈতৃক বাড়ি বর্ধমানের চুপি গ্রামে পিতা রজনীনাথ দত্ত ছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, মা মহামায়া দেবী। পিতামহ অক্ষয় কুমার দত্ত তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। বিভিন্ন ভাষার শব্দগুলি নিপুণ ছন্দে একত্রিত হয়। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদের কাজও করেছেন সত্যেন্দ্রনাথ সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুল থেকে এন্ট্রান্স এবং জেনারেল অ্যাসেম্বলিজ ইনস্টিটিউশন (বর্তমানে স্কটিশ চার্চ কলেজ) থেকে এফএ পাস করেছেন। কিন্তু পরে বিএ পরীক্ষায় ফেল করেন

কর্মজীবন——-

তিনি ছিলেন ভারতী পত্রিকাগোষ্ঠীর অন্যতম কবি। প্রথম জীবনে তিনি মাইকেল মধুসূদন দত্ত, অক্ষয় কুমার বড়াল প্রমুখের দ্বারা প্রভাবিত হন। পরে রবীন্দ্র অনুসারী হলেও তিনি স্বতন্ত্র হয়ে ওঠেন। বাংলা শব্দের সঙ্গে আরবি-ফার্সি শব্দের সমন্বিত ব্যবহার দ্বারা বাংলা কাব্যভাষার শক্তি বৃদ্ধির প্রাথমিক কৃতিত্ব তাঁরই। অনুবাদের মাধ্যমে তিনি বিশ্বের কাব্যসাহিত্যের সঙ্গে বাংলার যোগাযোগ ঘটান। নবকুমার, কবিরত্ন, অশীতিপর শর্মা, ত্রিবিক্রম বর্মণ, কলমগীর প্রভৃতি ছদ্মনামে তিনি কবিতা লিখতেন। মেথরদের মতো অস্পৃশ্য ও অবহেলিত সাধারণ মানুষ নিয়েও তিনি কবিতা লিখেছেন। কবিতায় ছন্দের সমৃদ্ধতার জন্য তিনি ছন্দের রাজা ও ছন্দের যাদুকর বলে খ্যাত।

সাহিত্যকর্ম————

কাব্যগ্রন্থ—–– সবিতা (১৯০০), সন্ধিক্ষণ (১৯০৫), বেণু ও বীণা (১৯০৬), হোমশিখা (১৯০৭), ফুলের ফসল (১৯১১), কুহু ও কেকা (১৯১২) , তুলির লিখন (১৯১৪), মনিমঞ্জুষা (১৯১৫), অভ্র-আবীর (১৯১৬), হসন্তিকা (১৯১৭), বেলা শেষের গান (১৯২৩), বিদায় আরতি (১৯২৪)।

অনুবাদ—–

তীর্থ সলীল (১৯০৮), তীর্থ রেণু (১৯১০), ফুলের ফসল (১৯১১)।

দেহাবসান———

মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে ১৯২২ সালের ২৫ জুন তারিখে কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত পরলোকগমন করেন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

প্রখ্যাত সংবাদ পাঠক আবৃত্তিকার ও বাচিক শিল্পী দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় – প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি।।।।

আবৃত্তিকার তথা কিংবদন্তি বাচিক শিল্পী দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন আকাশবাণীর সংবাদ পাঠক, ঘোষক। আজও তিনি আমর হয়ে আছেন মানুষের মনে।

 

জন্ম——

দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জুন পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার শান্তিপুরে। পিতার নাম নন্দদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতা নীহারবালা।

শিক্ষা—–

স্কুলের পড়াশোনার পর ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে। কিন্তু সংসারের অর্থকষ্ট মেটাতে তিনি বন্ধ করেছিলেন পড়াশুনা।

কর্ম জীবন—

রোজগারের জন্য তখন যা পেতেন তাই করতেন। কখনো গৃহশিক্ষকতা, টাইপিস্ট, স্টোরকিপার এবং চায়ের দোকানেও কাজ করতে হয়েছে অর্থকষ্ট এতটাই ভয়াবহ ছিল।সারাদিন চায়ের দোকানে কাজ করতেন।১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঘোষক হিসাবে আকাশবাণীর চাকরিতে প্রবেশ করেন। তারপর একটানা বত্রিশ বছর আকাশবাণীতে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন।

সংবাদ পাঠক রূপে নিজেকে তুলে ধরা—–

অচিরেই কুশলতায় হয়ে ওঠেন আকাশবাণীর সংবাদ ও ভাষ্যপাঠক। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি দিল্লীতে বাংলা বিভাগে সংবাদ পাঠক রূপে নির্বাচিত হন। তারপর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের শেষদিকে ফিরে আসেন কলকাতার বেতার কেন্দ্রে। তার কণ্ঠে ‘ কলকাতার আকাশবাণীতে ‘’আকাশবাণী কলকাতা, খবর পড়ছি দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়’’-ভরাট কণ্ঠের এই সম্ভাষণ যে কি প্রভাবে মানুষকে আচ্ছন্ন করত তা বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। আর সংবাদ পাঠকে তিনি এমন একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন যে, ঘরে ঘরে সংবাদ পরিক্রমা শোনার জন্য রেডিও খোলা হতো।

সম্মাননা—–

বাঙলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার তাঁকে “পদ্মশ্রী” সম্মানে ভূষিত করে। বাংলাদেশ গঠিত হওয়ার পর তিনি ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে ১০ ই জানুয়ারি বাংলাদেশে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করেন ও সংবর্ধনা জানান।

সম্পাদনা——

অবসরের পর যৌথ বা একক ভাবে সম্পাদনা করেছেন বিভিন্ন বিষয়ের বই। সেগুলি হল- বিষয়:আবৃত্তি (অমিয় চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যৌথভাবে), বাংলাদেশের গল্প, একাত্তরের যুদ্ধে ভারত-পাকিস্তান ও বাংলাদেশ।

মৃত্যু—–

দক্ষিণ কলকাতার ল্যানসডাউনে নিজের বাসভবনে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ২ রা জুন ৭৭ বৎসর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ২২ জুন, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।।

আজ ২২ জুন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৭৬৭ – ভিলহেল্ম ফন হুম্বোল্ট, জার্মান ভাষাবিজ্ঞানী ছিলেন।
১৮৩৭ – পল মর্ফি, মার্কিন দাবাড়ু।  .

১৮৫৫ – স্যামুয়েল মরিস, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার।  .

১৮৫৬ – হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড, বিখ্যাত ইংরেজ ঔপন্যাসিক।

১৮৮৯ – কবি শেখর কালিদাস রায়, রবীন্দ্রযুগের বিশিষ্ট রবীন্দ্রানুসারী কবি, প্রাবন্ধিক ও পাঠ্যপুস্তক রচয়িতা।
১৮৯৮ – এরিখ মারিয়া রেমার্ক, জার্মান সাহিত্যিক ও স্বনামধন্য লেখক।
১৮৯৮ – এরিখ মারিয়া রেমার্ক, জার্মান লেখক।
১৯০০ – ভারতীয় বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামী, বিপ্লবী ও রাজনীতিবিদ গণেশ ঘোষ।
১৯০৩ – জন ডিলিঞ্জার, মার্কিন ব্যাংক ডাকাত।
১৯০৬ – বিলি ওয়াইল্ডার, অস্ট্রিয়ায় জন্মগ্রহণকারী ইহুদি মার্কিন সাংবাদিক এবং চিত্রনাট্যকার।

১৯১২ – সাগরময় ঘোষ, বাঙ্গালী লেখক ও বাংলা সাহিত্য-পত্রিকা ‘দেশ’এর সাবেক সম্পাদক।
১৯২২ – ভি বালসারা, ভারতীয় সঙ্গীত পরিচালক আবহসঙ্গীত পরিচালক ও যন্ত্র সঙ্গীত শিল্পী।
১৯২৩ – গৌরকিশোর ঘোষ, প্রথিতযশা বাঙালি সাংবাদিক ও সাহিত্যিক।

১৯৩২ – অমরিশ পুরি, ভারতীয় অভিনেতা ও থিয়েটার শিল্পী।
১৯৩২ – সোরায়া এসফানদিয়ারি-বখতিয়ারি, একজন ইরানি অভিনেত্রী।
১৯৪০ – আব্বাস কিয়রোস্তামি, বিশ্ববিখ্যাত ইরানি চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার, চিত্রগ্রাহক, আলোকচিত্রশিল্পী।
১৯৪১ – স্বরূপ দত্ত, ভারতের বাঙালি মঞ্চ ও চলচ্চিত্র অভিনেতা।
১৯৪৩ – ক্লাউস মারিয়া ব্রানডাউয়া, অস্ট্রীয় অভিনেতা ও পরিচালক।
১৯৪৪ – হেলমাট ডায়েটল, জার্মান চলচ্চিত্র পরিচালক এবং লেখক।
১৯৪৮ – পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত ভারতীয় সন্তুরবাদক পণ্ডিত ভজন সোপরি।
১৯৪৯ – মেরিল স্ট্রিপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত অভিনেত্রী ও গায়িকা।
১৯৬০ – এরিন ব্রকোভিচ, মার্কিন আইনজ্ঞ।
১৯৬৪ – ড্যান ব্রাউন একজন মার্কিন রোমাঞ্চকর উপন্যাস লেখক।
১৯৭৪ – বিজয় (অভিনেতা) আসল নাম জোসেফ বিজয় চন্দ্রশেখর, একজন ভারতীয় তামিল ছবির নায়ক।
১৯৮৪ – জেরোমি টেলর, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার।
১৯৮৭ – নিকিতা রাকাভেৎসা, অস্ট্রেলীয় পেশাদার ফুটবলার।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—

১৩৭৭ – দ্বিতীয় রিচার্ডের ইংল্যান্ডের সিংহাসনে আরোহণ।
১৫১৯ – ব্রিটেনে দাসপ্রথা বাতিল।
১৫৫৫ – হুমায়ুন সিন্ধু নদী পার হয়ে লাহোর দখল করে নেন এবং সিকান্দর সুরিকে দিল্লীর সিংহাসন থেকে উৎখাত করেন।
১৫৫৫ – সিরহিন্দ যুদ্ধে জয়লাভের পর হুমায়ুনকে সম্রাট আকবরের উত্তরাধিকার ঘোষণা।
১৬৩৩ – পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরছে- এই অভিমতের জন্য গ্যালিলিও গ্যালিলির বিচার শুরু হয়।
১৭৬৭ – ভিলহেল্ম ফন হুম্বোল্ট, জার্মান ভাষাবিজ্ঞানী ছিলেন।
১৭৭২ – ব্রিটেন থেকে ক্রীতদাস প্রথা তুলে নেওয়া হয়।
১৮১৪ – লন্ডনে লর্ডের ক্রিকেট মাঠে প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
১৯০৪ – আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেডারেশনের (ফিফা) জন্ম।
১৯১১ – পঞ্চম জর্জ ব্রিটেনের রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন।
১৯১৫ – নেপোলিয়ন দ্বিতীয়বার সিংহাসনচ্যুত হন।
১৯২১ – ৫২টি দেশের ৬০৫ জনপ্রতিনিধির উপস্থিতিতে মস্কোয় তৃতীয় কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়।
১৯৩৯ – সুভাষচন্দ্র বসু মুম্বাইয়ের সর্বভারতীয় অধিবেশনে সারা ভারত ফরওয়ার্ড ব্লক প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৪১ – হিটলার অপারেশন বারবারোসা নামে পরিচিত সোভিয়েত রাশিয়া অভিযান শুরু করেছিলেন।
১৯৭২ – আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থায় (আইএলও) বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভ।
১৯৮১ – ইরানি প্রেসিডেন্ট বনী সদর ক্ষমতাচ্যুত।
১৯৮৬ – বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিখ্যাত হ্যান্ড অফ গড গোলটি করেন আর্জেন্টিনার ফুটবলার দিয়েগো মারাদোনা। ম্যাচটিতে আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে জয়লাভ করে।
১৯৮৯ – পনেরো বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে এ্যাংগোলার বিবাদমান পক্ষগুলো যুদ্ধ বিরতি মেনে নিতে রাজি হয়।
২০০২ – ইরানে ভূমিকম্পে ৫ শতাধিক লোক নিহত।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১০৩৭ – ইবনে সিনা, মধ্যপ্রাচ্যের কিংবদন্তীতুল্য দার্শনিক, চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী।
১৪২৯ – জামশিদ গিয়াসউদ্দিন আল কাশি, মধ্যযুগের একজন প্রতিভাধর মুসলমান জ্যোতির্বিজ্ঞানী।
১৯৩৬ – মরিস শ্লিক, জার্মান দার্শনিক, পদার্থবিজ্ঞানী এবং যৌক্তিক ইতিবাদের উদ্গাতা।
১৯৪০ – মন্টি নোবেল, বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।
১৯৫৯ – তুলসী লাহিড়ী, নাট্যকার, অভিনেতা, সুরকার, বাংলা ছায়াছবির জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার।
১৯৬৫ – ডেভিড ও. সেলৎসনিক, মার্কিন প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার এবং চলচ্চিত্র স্টুডিও নির্বাহী।
১৯৬৯ – জুডি গারল্যান্ড, মার্কিন গায়িকা ও অভিনেত্রী ছিলেন।
১৯৭৬ – গোপীনাথ কবিরাজ, ভারতীয় বাঙালি সংস্কৃত-তন্ত্র পণ্ডিত ও দার্শনিক ছিলেন।
১৯৮৭ – ফ্রেড অ্যাস্টেয়ার, আমেরিকান অভিনেতা এবং নৃত্যশিল্পী।
১৯৯০ – ইলিয়া ফ্রাংক, সোভিয়েত পদার্থবিজ্ঞানী।
১৯৯৩ – প্যাট নিক্সন, আমেরিকান শিক্ষাবিদ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭তম রাষ্ট্রপতি জেরাল্ড ফোর্ডের সহধর্মণী।
২০০৮ – জর্জ কার্লিন, আমেরিকান স্ট্যান্ড-আপ কৌতুকাভিনেতা, অভিনেতা, লেখক এবং সামাজিক সমালোচক ছিলেন।
২০২০ – অমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশিষ্ট বাঙালি জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

বাংলা ছায়াছবির জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার তুলসী লাহিড়ী, একাধারে অভিনেতা ও সুরকার- একটি বিশেষ পর্যালোচনা।।।।।

তুলসী লাহিড়ী হলেন বিখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা, গ্রামোফোন কোম্পানির সুরকার, বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার। নাটক রচনা ও অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি নাট্য আন্দোলনের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন।

জন্ম ও শৈশব–

তিনি ১৮৯৭ সালের ৭এপ্রিল অবিভক্ত বাংলার রংপুর জেলার বর্তমান গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁর পিতার নাম সুরেন্দ্রনাথ লাহিড়ী। বাবা রংপুরের ডিমলা এস্টেটের ম্যানেজার ছিলেন। তিনি জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

শিক্ষা ও কর্মজীবন–—-

B. A. এবং B. L. পাশ করার পর প্রথমে রংপুরে এবং পরে কলকাতার আলিপুর কোর্টে ওকালতি করেন। জামিরউদ্দিন খান তার লেখা দুটি গান রেকর্ড করে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পরিচিতি পান। তার মাস্টার ভয়েস এবং মেগাফোনের পরে, তিনি গ্রামোফোন কোম্পানিতে সঙ্গীত পরিচালক নিযুক্ত হন। অনেক গান লেখা এবং সঙ্গীত যোগ করা হয়েছে. আইন পেশা ছেড়ে চলচ্চিত্র ও নাটকে যোগ দেন। নির্বাক যুগ থেকে শুরু করে বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্গে তার কয়েক দশকের ঘনিষ্ঠতা ছিল। নাট্য রচনা, মঞ্চে অভিনয়ের পাশাপাশি সিনেমাটোগ্রাফি ও অভিনয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা ছিল বিশাল, তাঁর কৃতিত্ব ঈর্ষণীয়। মার্ক্সের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নাটকীয়তায় লাভজনকতা। পঞ্চাশের দশকে মন্বন্তরের পটভূমিকায় দারিদ্র্যের অভাব, সংঘাত, সংঘাত এবং দরিদ্র মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক নিপীড়নের ওপর ভিত্তি করে ‘ দুঃখীর ইমাম’ এবং ‘ ছেঁড়া তার’ নাটক রচনা করে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন।। “মায়ের দাবি” , “পথিক” , “লক্ষ্মীপ্রিয়ার সংসার” তার অন্যান্য নাটক। উত্তরবঙ্গের কৃষক সমাজের বাস্তব জীবনের প্রতিকৃতি এই নাটকের উপজীব্য। পুঁজিবাদী সমাজের অসারতা প্রমাণের জন্য নাটক রচনায় আত্মনিয়োগ করেন। কলকাতায় মৃত্যু। গানের জগতে নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। তার লেখা অনেক গানই এখন নজরুল গীতি নামে পরিচিত। হাজারো জনপ্রিয় বাংলা গানের এই গীতিকারের কোনো সংকলন নেই। নাটকের নাম- মায়ের দাবি, পথিক, লক্ষ্মীপ্রিয়ার সংসার, মণিকাঞ্চন, মায়া-কাজল, চোরাবালি, সর্বহারা।
২২ জুন ১৯৫৯ সালে তিনি প্রয়াত হন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীরত্বপূর্ণ ভূমিকায় এক গর্বের ইতিহাস হ’ল বিপ্লবী নেতা গণেশ ঘোষ।।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে গণেশ ঘোষ প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।

গণেশ ঘোষ ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
গণেশ ঘোষ ছিলেন একজন ভারতীয় বিপ্লবী এবং একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী যিনি ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে তার উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য পালিত হন। ঘোষ সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনের একজন সদস্য ছিলেন, যার নেতৃত্বে ছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেন। গণেশ ঘোষ ভারতীয় রিপাবলিকান আর্মির প্রধান সদস্যদের মধ্যে ছিলেন, যা ছিল চট্টগ্রামের একটি বিপ্লবী দল। এতে অনেক বিপ্লবী এবং ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অন্তর্ভুক্ত ছিল যারা ১৯৩০ সালে বিখ্যাত চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার রেইড কেস পরিচালনা ও অংশগ্রহণ করেছিলেন। গণেশ ঘোষও একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন।

গণেশ ঘোষের প্রারম্ভিক জীবন—

গণেশ ঘোষ ১৯০০ সালের ২২ জুন বঙ্গীয় প্রদেশের চট্টগ্রাম জেলায় জন্মগ্রহণ করেন, যেটি সেই সময়ে ব্রিটিশ ভারতের একটি অংশ ছিল, বর্তমানে বাংলাদেশে। তিনি ১৯২২ সালে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট, কলকাতা (বর্তমানে কলকাতা) ভর্তি হন।

গণেশ ঘোষের বিপ্লবী কার্যক্রম—–

গণেশ ঘোষ ১৯৩০-এর দশকের গোড়ার দিকে ভারতীয় রিপাবলিকান আর্মির সদস্য হন। ভারতীয় রিপাবলিকান আর্মি ছিল চট্টগ্রামের একটি বিপ্লবী দল যার নেতৃত্বে ছিলেন সূর্য সেন। এই দলটি ১৯৩০ সালে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার অভিযান পরিচালনা করে। চট্টগ্রামে অস্ত্রাগার অভিযান সম্ভবত ভারতীয় স্বাধীনতার ইতিহাসে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক এবং সাহসী বিপ্লবী প্রচেষ্টা ছিল। এই অঞ্চলের যুবকদের দ্বারা তৈরি করা সংগ্রাম। ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শাসনামলে বঙ্গ প্রদেশের চট্টগ্রাম থেকে পুলিশ ও সহায়ক বাহিনীর অস্ত্রাগারে অভিযান চালানোর জন্য ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল এই আক্রমণটি পরিচালিত হয়েছিল। ভারতীয় রিপাবলিকান আর্মির নেতৃত্বে ছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেন এবং অন্যান্য বিশিষ্ট সদস্যদের মধ্যে ছিলেন আনন্দ গুপ্ত, অর্ধেন্দু দস্তিদার, শশাঙ্ক দত্ত, কল্পনা দত্ত, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, নরেশ রায়, নির্মল সেন, জীবন ঘোষাল, অনন্ত সিং, তারকেশ্বর দস্তিদার, অম্বিকা রৌদ্র, সুব্রত। , হরিগোপাল বাল (টেগরা), লোকেনাথ বাল এবং গণেশ ঘোষ। পরে তিনি চট্টগ্রাম যুগান্তর দলের সদস্য হন।
অত্যন্ত সম্মানিত বিপ্লবী গণেশ ঘোষকে বিচারের পর ১৯৩২ সালে পোর্ট ব্লেয়ারের সেলুলার জেলে নির্বাসিত করা হয়েছিল। ১৯৪৬ সালে জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, ঘোষ কমিউনিস্ট রাজনীতিতে যোগ দেন এবং ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন।

গণেশ ঘোষের পরবর্তী জীবন—

ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শাসন থেকে জাতি স্বাধীনতা লাভ করার পর, গণেশ ঘোষ ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা হন। ১৯৬৪ সালে পার্টি বিভক্ত হওয়ার পর, তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী) কে সমর্থন করেছিলেন। তিনি ১৯৫২, ১৯৫৭ এবং ১৯৬২ সালে বেলগাছিয়া থেকে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঘোষ ১৯৬৭ সালে কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা নির্বাচনী এলাকা থেকে ৪র্থ লোকসভার প্রার্থী হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)। গণেশ ঘোষ ৯৪ বছর বয়সে ১৬ই অক্টোবর ১৯৯৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় মারা যান।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

জানুন দন্ড মহোৎসব এর ইতিহাস।।।।।

মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যের পার্ষদ রঘুনাথ দাস গোস্বামীকে শাস্তি দিয়েছিলেন নিত্যানন্দ প্রভু। সেই শাস্তি অনুসারে নিত্যানন্দ প্রভু কয়েক হাজার ভক্তকে চিড়া-দধি ভোজন করাতে রঘুনাথকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেদিনের সেই শাস্তি পরবর্তীকালে হয়ে ওঠে এক মহোৎসব। যা আজ ৫০০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।সেরকমই এই উৎসব পানিহাটিতে হয়ে আসলেও এখন নদীয়া জেলার অনেক জায়গাতেই হয়ে আসছে।

Tamoni নদীয়ার শান্তিপুর কালনা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ভাগীরথীর পারে অনুষ্ঠিত হলো দন্ড মহোৎসব ।

প্রায় ২০০ জন ভক্তকে দেওয়া হলো প্রসাদ। তবে কি এই দন্ড মহোৎসব? এর পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস আজ থেকে ৫০০ বছর আগের কাহিনি। দিনটি ছিল আজকের দিন। ১৫ই জুন। হুগলি জেলার অন্তর্গত শ্রীকৃষ্ণপুরের জমিদার শ্রীগোবর্ধন মজুমদার। যার সেইসময়ে মাসিক আয় ছিল বিশ লক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা। তাঁর একমাত্র পুত্র হলেন শ্রীচৈতন্য পার্ষদ রঘুনাথদাস গোস্বামী।সব ঠিক ঠাকই চলছিল। কিন্তু আচমকা একদিন ঘটে গেল সেই অনভিপ্রেত ঘটনা। শ্রী নিত্যানন্দ প্রভুর আশীর্বাদ না নিয়ে রঘুনাথ সেদিন শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপাশীষ লাভ করার চেষ্টা করেছিলেন। এ কথা জানা মাত্রই বিরাগভাজন হন তিনি নিত্যানন্দ প্রভুর। তিনি রঘুনাথকে এজন্য শাস্তি দেবার সিদ্ধান্ত নেন।

রঘুনাথকে জানিয়ে দেন- তোমাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। প্রস্তুত হও। রঘুনাথ হাসি মুখে নত মস্তকে শাস্তি মাথা পেতে নেন। তখন শ্রী নিত্যানন্দ প্রভু বলেন- ‘রঘুনাথ, তোমাকে শ্রী শ্রী নিত্যানন্দ-গৌরাঙ্গের ভক্তদের চিড়া-দধি ভোজন করাতে হবে। এটাই হল তোমার দন্ড। আনন্দের সঙ্গে রঘুনাথ সেদিন এই দন্ড গ্রহণ করেছিলেন।”এই অনুষ্ঠানের মতোই এখন এই দন্ড মহৎসবের উৎসব নদীয়ায় হওয়াতে পানিহাটির মেলায় অনেকেই না গিয়ে কাছাকাছি এই উৎসবে মিলিত হচ্ছেন। তাতে করে দন্ড মহতসব এখন মিলন উৎসবে পরিণত হতে চলেছে নদীয়া জুড়ে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস, জানুন পালনের গুরুত্ব।।।।।।

২০১৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এর সূচনা হওয়ার পর ২০১৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবসটি বার্ষিক ২১ জুন সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে। যোগ হল একটি শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক অনুশীলন যা প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত হয়েছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ২০১৪ সালে তার জাতিসংঘের ভাষণে ২১ জুন তারিখের পরামর্শ দিয়েছিলেন, কারণ এটি উত্তর গোলার্ধে বছরের দীর্ঘতম দিন এবং বিশ্বের অনেক অংশে এটির একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।

প্রাথমিক প্রস্তাবের পর, জাতিসংঘ ২০১৪ সালে “যোগ দিবস” শিরোনামে খসড়া রেজোলিউশন গ্রহণ করে। ভারতের প্রতিনিধিদলের দ্বারা পরামর্শ আহ্বান করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে ১০ টাকার স্মারক মুদ্রা জারি করেছিল। এপ্রিল ২০১৭ সালে, জাতিসংঘের ডাক প্রশাসন (UNPA) আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে একটি একক শীটে আসনের উপর ১০ টি স্ট্যাম্প জারি করেছে।
জাতিসংঘ ঘোষণা—
১১ ডিসেম্বর ২০১৪-এ, ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি অশোক মুখার্জি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে খসড়া প্রস্তাব পেশ করেন। খসড়া পাঠ্যটি ১৭৭টি সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে যারা পাঠ্যটিকে স্পনসর করেছিল, যা ভোট ছাড়াই গৃহীত হয়েছিল। এই উদ্যোগটি অনেক বিশ্ব নেতাদের সমর্থন পেয়েছে। মোট ১৭৭টি দেশ এই রেজোলিউশনটির সহ-স্পন্সর করেছে, যা এই ধরনের প্রকৃতির যেকোনও UNGA রেজোলিউশনের জন্য সহ-স্পন্সরদের সবচেয়ে বেশি সংখ্যা।
২১ জুন তারিখ হিসাবে প্রস্তাব করার সময়, মোদি বলেছিলেন যে তারিখটি উত্তর গোলার্ধে বছরের দীর্ঘতম দিন ছিল (দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট), বিশ্বের অনেক অংশে বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ভারতীয় ক্যালেন্ডারে, গ্রীষ্মের অয়নকাল দক্ষিণায়নে রূপান্তরকে চিহ্নিত করে। গ্রীষ্মের অয়নকালের পরের দ্বিতীয় পূর্ণিমাটি গুরু পূর্ণিমা নামে পরিচিত। হিন্দু পুরাণে, শিব, প্রথম যোগী (আদি যোগী), এই দিনে বাকি মানবজাতিকে যোগের জ্ঞান প্রদান শুরু করেছিলেন এবং প্রথম গুরু (আদি গুরু) হয়েছিলেন।
জাতিসংঘের প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর, ভারতের আধ্যাত্মিক আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতা এই উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ইশা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদগুরু বলেছেন, “মানুষের অভ্যন্তরীণ মঙ্গলের প্রতি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করার জন্য এটি এক ধরনের ভিত্তিপ্রস্তর হতে পারে, একটি বিশ্বব্যাপী জিনিস… এটি বিশ্বের জন্য একটি অসাধারণ পদক্ষেপ।” আর্ট অফ লিভিং-এর প্রতিষ্ঠাতা, রবি শঙ্কর, মোদির প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেছেন, “রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া যে কোনও দর্শন, ধর্ম বা সংস্কৃতির পক্ষে বেঁচে থাকা খুব কঠিন। যোগ এখন পর্যন্ত প্রায় অনাথের মতো বিদ্যমান ছিল। এখন, সরকারী স্বীকৃতি জাতিসংঘের মাধ্যমে যোগব্যায়ামের সুবিধা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেবে।”
প্রস্তুতিতে ২১ জুন ২০১৫ এ বিশ্বজুড়ে প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালিত হয়েছিল। আয়ুষ মন্ত্রক ভারতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছিল। ৩৫৯৮৫ জন, যার মধ্যে PM মোদি এবং ৮৪টি দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা, নতুন দিল্লির রাজপথে ৩৫ মিনিটের জন্য ২১টি আসন (যোগের ভঙ্গি) সঞ্চালন করেছেন, যা এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত বৃহত্তম যোগ ক্লাসে পরিণত হয়েছে এবং অংশগ্রহণকারী দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক-৮৪- সহ। সেই থেকে প্রতি বছর ভারতে এবং সারা বিশ্বের শহরগুলিতে অনুরূপ দিবসগুলি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া।।

Share This
Categories
গল্প প্রবন্ধ

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শতাব্দী প্রাচীন বিনশিরার রথ স্থাপনের ইতিহাস।।।।

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি ব্লকের তিওর বিনশিরা রথের মেলা উত্তরবংগের অন্যতম প্রাচীন মেলা।প্রায় ২০০ বছর আগে এই রথ যাত্রার সুচনা করেন বিনশিরার জমিদার সর্বেশ্বর লাহা। যদিও আজ কালের নিয়মে জমিদার প্রথা ঘুচে যাওয়ায় বর্তমানে বাৎসরিক রথ যাত্রা পালিত হয় পরিবারের একেক বছর একেক শরিকি মালিকানায়।

যদিও পুর্বে এই জগঅন্নাথ দেবের নামে নিজস্ব জমি ছিল প্রায় ২৫০ বিঘা। পরে সরকার বেশির ভাগ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নিলেও বর্তমানে ৬৭ বিঘা জমি এই দেবত্তর জগন্নাথের নামে রয়েছে। সেই জমি থেকে উপার্জিত টাকা দিয়েই সারা বছর দু বেলা নিত্য পুজো ভোগ আরতি চলে বিনশিরার এই প্রাচীন জগন্নাথ সুভদ্রা আর বলরাম দেবের মন্দিরে।
প্রত্যেক বছর রথযাত্রার দিনে প্রাচীন রীতি মেনে বিনশিরা জমিদার বাড়িতে পুজো হয় জগন্নাথ সুভদ্রা বলরামের। মন্দির প্রাঙ্গণে হরিনাম সংকীর্তনের বসে আসর। রথযাত্রা ঘিরে বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়। নামে ভক্তের ঢল। শুধু জেলা থেকেই নয় জেলার পার্শ্ববর্তী জেলা মালদা, রায়গঞ্জ, শিলিগুড়ি থেকেও ভক্তরা ছুটে আসেন এই মেলায় এসে জগন্নাথ সুভদ্রা আর বলরামদেবের দর্শন পেতে।পা ছুয়ে প্রনাম করতে।বিকেলে রথের দড়ি টেনে জগন্নাথ সুভদ্রা বলরামকে মাসীর বাড়িতে নিয়ে যান ভক্তরা। এই রীতি যুগ যুগ ধরে আজও চলে আসছে।
পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শতাব্দী প্রাচীন বিনশিরার রথ স্থাপনের ইতিহাস। জমিদার সর্বেশ্বর লাহার জ্যেষ্ঠ পুত্র অসুস্থ হওয়ায় তিনি জগন্নাথ দেবের কাছে পুত্রের আরোগ্য কামনা করে মানত করেছিলেন। মনস্কামনা পূরণ হওয়ার পরে ওড়িশার পুরী থেকে একটি নিম গাছ কেটে পাণ্ডাদের দিয়ে জগন্নাথ, সুভদ্রা, বলরামের মূর্তি তৈরি করে বিনশিরায় নিয়ে এসেছিলেন। সেখানে জগন্নাথ, সুভদ্রা, বলরামের মূর্তি স্থাপন করে রীতি মেনে পুজা শুরু করেন।

Share This