Categories
অনুগল্প গল্প

গল্প : বৃষ্টিভেজা দুপুরে।

মেঘভাঙা বৃষ্টির দুপুরে অফিস ছুটি হয়ে গিয়েছিল। ঝর্ণা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিল—ভিজে যাওয়ার ভয় নেই, কিন্তু একা থাকার ভয় ছিল। বৃষ্টি সবসময়ই তাকে অতীতের কোনো অদ্ভুত স্মৃতিতে ফিরিয়ে দিত।

হঠাৎ একটা ছাতা মাথার উপরে থামল।
তপন—ওদের অফিসের নতুন ছেলেটা।
সে হাসলো—“এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে তো পুরোপুরি ভিজে যাবে।”

ঝর্ণা একটু অপ্রস্তুত হলেও ছাতার নিচে দাঁড়াল। বৃষ্টির শব্দে কথাগুলো ভেঙে যাচ্ছিল, কিন্তু একটা অদ্ভুত শান্তি নেমে এলো দুই জনের মাঝে।

বাস এল না। রাস্তায় জল জমে গিয়েছে।
তপন বলল—“চলো, ওখানে চায়ের দোকান আছে। বৃষ্টি থামা পর্যন্ত বসি।”

চায়ের কাপে গরম ধোঁয়া। বাইরে মেঘের গর্জন।
ঝর্ণা আস্তে বলল—“বৃষ্টি আমার ভালো লাগে না।”
তপন জিজ্ঞেস করল—“তবে এতক্ষণ ভিজে দাঁড়িয়ে ছিলে?”
ঝর্ণা উত্তর দিল—“কারো জন্য অপেক্ষা করছিলাম… কিন্তু সে আর আসে না।”

তপন কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল—
“কখনো কখনো যারা আসে না, তাদের জন্য অপেক্ষা করাটাই ভুল। বরং যারা পাশে দাঁড়ায়—তাদের চিনতে পারাটাই গুরুত্বপূর্ণ।”

ঝর্ণা তাকাল তপনের দিকে।
এ প্রথম অনুভব করল—কেউ তাকে বোঝার চেষ্টা করছে।

বৃষ্টি থামার পর দু’জন পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফিরল।
সেদিনের বৃষ্টিটা ঝর্ণার আর খারাপ লাগল না।

Share This

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *