অনিকের অফিসে নতুন ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দিল তির্থা। প্রথম দিনেই সে ভুল করে অনিকের ডেস্কে নিজের নোটবুক রেখে চলে যায়। নোটবুকের ওপরে বড় করে লেখা—“তির্থার ডায়েরি – কেউ খুলবে না।”
অনিক প্রথমে ফেরত দিতে চাইছিল, কিন্তু কৌতূহলে একটু উঁকি মারতেই দেখল প্রথম পাতায় লেখা—
“নিজের মনের কথা কারও কাছে বলতে পারি না…
তাই ডায়েরির কাছে বলি।
যদি কখনো কেউ এই ডায়েরি পড়ে…
জেনে নিও—আমি খুব একাকী।”
এটা পড়ার পর থেকেই তির্থাকে আর সাধারণ ইন্টার্ন মনে হলো না তার কাছে।
পরের দিন নোটবুক ফেরত দিতে গিয়ে সে দেখল তির্থা একটু অগোছালো, একটু চঞ্চল, একটু মিষ্টি।
ধীরে ধীরে দু’জনের মধ্যে কথা বাড়ল।
তির্থা ধীরে ধীরে নিজের মন খুলতে লাগল—তার একজন ছিল, যে তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে হঠাৎ হারিয়ে গেছে।
অনিক মন দিয়ে শুনত, শুধু বলত—“সব হারানো মনে রেখে বসে থাকলে নতুন আলো তো আসবে না।”
একদিন লাঞ্চ ব্রেকে তির্থা বলল—
“তুমি জানো, তুমি প্রথম যে মানুষ—যার সাথে কথা বললে আমার ভয় লাগে না।”
অনিক হেসে বলল—“তাহলে ভয়হীন থাকার অনুশীলনটা আমার সঙ্গেই করে যাও।”
তির্থা চুপ করে অনিকের দিকে তাকালো। যেন বুঝে গেল—একাকীত্ব থেকে বের হওয়ার পথ হয়তো এ মানুষটাই।
মাসখানেক পরে, অফিসের ছাদে দাঁড়িয়ে তির্থা বলল—
“অনিক, তুমি যদি সত্যি মনে করো… আমরা একসঙ্গে হাঁটতে পারি… তাহলে আমি রাজি।”
অনিক বলল—
“আমি তো প্রথম দিনই নোটবুক খুলেই বুঝেছিলাম—আমি তোমাকে সামলাবো।”