Categories
গল্প

শেষ ট্রেনের যাত্রী।

পর্ব ১: রাতের ট্রেন

সেদিন রাত সাড়ে দশটা। কুয়াশায় ঢাকা শীতের রাত। তরুণ সাংবাদিক ঋষি সরকার কলকাতা থেকে বর্ধমান ফিরছিলেন।
অফিসের কাজ শেষ করতে করতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। কলকাতা স্টেশন থেকে শেষ লোকাল ট্রেন ধরা ছাড়া উপায় ছিল না।
ট্রেনটা যখন আসল, প্ল্যাটফর্ম প্রায় ফাঁকা। তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা লাল বাতির নিচে কাঁপছিল এক ছায়া। ঋষি খেয়াল করল—একজন মহিলা। খুব ধীরে ধীরে ট্রেনের দিকে এগোচ্ছেন। মুখ ঢাকা লাল পাড়ের সাদা শাড়িতে। বড্ড নিঃসঙ্গ দেখাচ্ছিল।
ঋষি নিজের কামরায় উঠল। সে ছাড়া পুরো কামরায় আর কেউ নেই। একটা জানলার পাশে বসে সে মোবাইলে হেডফোন গুঁজে সংবাদ সম্পাদনা শুরু করল।

পর্ব ২: ছায়ার সঙ্গী

ট্রেন ছেড়ে দিলো।
কুয়াশা গিলে ফেলছে রেললাইনের দুই দিক। ট্রেনের আলোতে মাঝে মাঝে জ্বলজ্বল করে উঠছে কোনও পুরনো সিগন্যাল পোস্ট বা গাছের ছায়া।
হঠাৎ ট্রেনের ভিতর একটা শব্দ হলো—টিক…টিক…টিক…
ঋষি প্রথমে ভাবল মোবাইলের শব্দ। কিন্তু না—এটা যেন কারও চুড়ির শব্দ। পাশের কামরায় কেউ কি উঠল?
ঋষি উঠে গিয়ে দেখতে পেল—সেই সাদা শাড়ির মহিলা। তিনি কামরার একেবারে কোণার আসনে বসে জানালার দিকে মুখ করে আছেন। আলোতে মুখটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না।
ঋষি একটু অস্বস্তি বোধ করল, কিন্তু কিছু বলল না।
তখনই মহিলা মুখ ঘুরিয়ে বললেন—
“এই কামরাটা কি শুধু আপনার?”
ঋষি অবাক হয়ে বলল, “না তো! ট্রেন তো পাবলিক…”
মহিলা ধীরে ধীরে হেসে বললেন,
“তাহলে আপনি জানেন না, রাত সাড়ে দশটার পর এই ট্রেন আমার একার হয়।”
ঋষির বুকের মধ্যে শীতল কিছু জমে উঠল।

পর্ব ৩: মুখহীন গল্প

ঋষি সেই মুহূর্তে বুঝে উঠতে পারছিল না, মজা করা হচ্ছে না কি…?
মহিলার মুখটা এখনও স্পষ্ট নয়। যেন কুয়াশায় আবৃত।
সে আবার বলল—
“এখানে কেউ বেশিক্ষণ থাকে না। যাঁরা থাকেন, তাঁদের আর কোথাও ফিরতে হয় না।”
ঋষি হাসল, “আপনি লেখিকা নাকি অভিনেত্রী? খুব অভিনয় করছেন মনে হচ্ছে।”
মহিলা হঠাৎ একটানা বললেন—
“১৯৭৮ সালের জানুয়ারির এক রাত ছিল। এই ট্রেনেই আমি ফিরছিলাম। ঠিক এই কামরায়, এই জানালার পাশে। একদল লোক এসে আমার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। কারণ আমি বিধবা হয়েও মঞ্চে গান গাইতাম। সমাজ মেনে নেয়নি।”
ঋষির হাসি মুখে জমে গেল। সে সামনে তাকিয়ে দেখল—মহিলার মুখে মাংস নেই। কেবল পুড়ে যাওয়া চামড়া আর একটা গলিত চোখ।
সে চিৎকার করে উঠতে গেল, কিন্তু শব্দ বের হলো না। গলা শুকিয়ে কাঠ।

পর্ব ৪: ছেঁড়া টিকিট

ঋষি জ্ঞান হারাল না, বরং হঠাৎই নিজেকে খুঁজে পেল সেই পুরনো দিনের ট্রেনে। যেন টাইম মেশিনে ঢুকে গেছে।
এখন কামরায় বেশ কিছু যাত্রী। সবাই পুরনো ধাঁচের পোশাক পরা। কেউ রেডিও শুনছে, কেউ বিড়ি টানছে।
ঋষি তাকিয়ে দেখে—সেই মহিলা মঞ্চে গান গাইছে, “আমারে ছাড়িয়া বন্ধু…”
কিন্তু তখনই হঠাৎ তিনজন লোক এসে ওর উপর চড়াও হলো। কেরোসিন ঢালা, চিৎকার…আর তার পর আগুন!
ঋষি চিৎকার করে উঠল—
“না! কেউ ওকে বাঁচাও! বাঁচাও!!”
চোখ মেলে দেখে সে ট্রেনের সিটে বসে। গলা ভিজে গেছে ঘামে। কিন্তু আশেপাশে কেউ নেই।
শুধু তার পায়ের কাছে পড়ে আছে একটা ছেঁড়া টিকিট—১৯৭৮ সালের বর্ধমান লোকালের।

পর্ব ৫: শেষ স্টেশন

বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন ঢুকতেই ঋষি নেমে পড়ল। রাত তখন প্রায় ১টা।
প্ল্যাটফর্মে একজন বৃদ্ধ হকার চা বিক্রি করছিল। ঋষি ছুটে গেল ওর কাছে।
“এই ট্রেনে একটা মহিলা ছিল, সাদা শাড়ি পরা, পুড়ে গেছিল নাকি… এমন কেউ কি ছিল?”
চাওয়ালা তাকিয়ে বলল,
“আপনি ওনার কামরায় ছিলেন? ভাগ্য ভালো, ফিরে এসেছেন। সবাই তো ফেরে না। উনি গান পছন্দ করতেন, কিন্তু ওর গান সমাজ মেনে নেয়নি।”
“কিন্তু আপনি জানলেন কী করে?”
চাওয়ালা বলল,
“কারণ আমি সেই রাতে ট্রেনেই ছিলাম। তখন আমি কেরোসিন নিয়ে এসেছিলাম…”
ঋষি হতভম্ব!
বৃদ্ধ হঠাৎ হেসে বলল,
“এখন আমিও মরেছি, আপনি বেঁচে থাকুন। এটাই অনেক।”
চাওয়ালা হঠাৎ মিলিয়ে গেল কুয়াশায়।
ঋষি মাথা ধরে স্টেশনের বেঞ্চে বসে পড়ল।

শেষ ভাগ: শিরোনাম ও পুনর্জন্ম

ঋষি বাড়ি ফিরে সেই কাহিনি লিখল।
নাম দিল—“শেষ ট্রেনের যাত্রী”
কোনও সম্পাদক সাহস পেল না ছাপাতে।
এক বছর পর, সেই স্টেশনের গায়ে একটা নামহীন কবরে সে একটা লাল পাড়ের সাদা শাড়ি রাখল। আর লিখল—
“তোমার গান আমি শুনেছি, এবার তুমি শান্তিতে ঘুমাও।”

Share This
Categories
প্রবন্ধ

দক্ষিণ ভারতের আইসক্রিম ম্যান: আরজি চন্দ্রমোগানের অনুপ্রেরণামূলক যাত্রা।।।

আ চন্দ্রমোগান, অরুণ আইসক্রিম এবং হাটসুন এগ্রো প্রোডাক্টের প্রতিষ্ঠাতা, ভারতীয় দুগ্ধ শিল্পে সাফল্য এবং উদ্ভাবনের সমার্থক নাম। নম্র সূচনা থেকে শুরু করে $2 বিলিয়ন মূল্যের একটি ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তোলা পর্যন্ত, চন্দ্রমোগানের যাত্রা তার কঠোর পরিশ্রম, সংকল্প এবং দৃষ্টির প্রমাণ।

প্রারম্ভিক জীবন এবং সংগ্রাম
তামিলনাড়ুর শিবাকাশীর কাছে একটি ছোট শহরে জন্মগ্রহণ করেন, চন্দ্রমোগান এমন একটি পরিবারে বেড়ে ওঠেন যা শেষ করতে লড়াই করেছিল। তার বাবার ছোট অস্থায়ী দোকানটি পরিবারকে সমর্থন করার জন্য যথেষ্ট ছিল না এবং চন্দ্রমোগানের একাডেমিক পারফরম্যান্সও চিত্তাকর্ষক ছিল না। তিনি তার প্রিয় বিষয় গণিতে ব্যর্থ হন এবং অল্প বয়সে স্কুল ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
যাইহোক, চন্দ্রমোগন তার জীবনে পরিবর্তন আনতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তিনি তার পৈতৃক সম্পত্তি সামান্য 13,000 টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে চেন্নাইতে আইস ক্যান্ডির ব্যবসা শুরু করেন। সালটা ছিল 1970, আর চন্দ্রমোগানের বয়স তখন মাত্র 21 বছর।

অরুণ আইসক্রিমের জন্ম—-

অরুণ নামে চন্দ্রমোগানের আইস ক্যান্ডির ব্যবসা তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি কলেজ ছাত্রদের পুশকার্টের মাধ্যমে স্টিক এবং কাপ আইস ক্যান্ডি বিক্রি শুরু করেন এবং ব্র্যান্ডটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রথম বছরের মধ্যে, অরুণ 1.5 লক্ষ টাকা আয় করেছিল, যা সেই সময়ে একটি ছোট ব্যবসার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ছিল।

সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্য—

অরুণের সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে, চন্দ্রমোগান জাহাজে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহকারী চ্যান্ডলারদের কাছে তার ব্যবসা সম্প্রসারিত করেন। 1974 সাল নাগাদ, কলেজ ক্যান্টিন এবং শিপ চ্যান্ডলার মার্কেটের 95% অরুণ পণ্য ব্যবহার করত। যাইহোক, চন্দ্রমোগান জানতেন যে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে তাকে তার ব্যবসায় বৈচিত্র্য আনতে হবে। তিনি আইসক্রিম এবং দুগ্ধজাত পণ্যগুলিতে উদ্যোগী হন এবং অরুণ আইসক্রিম 1981 সালে জন্মগ্রহণ করেন।

দ্য জার্নি টু সাকসেস—-

চালের সাথে আইসক্রিম প্যাক করা এবং ট্রেনে করে গ্রামীণ এলাকায় নিয়ে যাওয়ার চন্দ্রমোগানের কৌশল ছিল একটি মাস্টারস্ট্রোক। তিনি কোল্ড স্টোরেজ এবং বিতরণ খরচে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সঞ্চয় করেছিলেন এবং অরুণ আইসক্রিম 1985 সালের মধ্যে তামিলনাড়ুতে আয়তনের দিক থেকে বৃহত্তম আইসক্রিম বিক্রেতা হয়ে ওঠে।

বছরের পর বছর ধরে, চন্দ্রমোগান কেরালা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ সহ অন্যান্য রাজ্যে তার ব্যবসা সম্প্রসারিত করেছে। তিনি Arokya ব্র্যান্ডের সাথে তরল দুধের বিপণনে বৈচিত্র্য আনেন এবং Ibaco ব্র্যান্ডের অধীনে প্রিমিয়াম আইসক্রিম পার্লার খোলেন। তার উদ্ভাবনী বিপণন কৌশলগুলি, যেমন গ্রাহকদের জন্য সীমাহীন স্কুপ অফার করা এবং আইসক্রিম বুকিংয়ের জন্য আগে থেকেই বিলবোর্ড স্থাপন করা, ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়েছে।
আজ, হাটসুন এগ্রো প্রোডাক্টস হল ভারতের বৃহত্তম বেসরকারী-খাতের দুগ্ধ কোম্পানি, যেখানে 10,500টিরও বেশি মিল্ক ব্যাঙ্ক, 50,000 কর্মচারী এবং 12,000টি গ্রামে 14টি গাছপালা রয়েছে। সংস্থাটি দৈনিক 60,000 লিটার আইসক্রিম উত্পাদন করে এবং 5,000 কোটি টাকারও বেশি আয় করেছে।

উপসংহার—-

ছোট শহরের ছেলে থেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে আরজি চন্দ্রমোগানের যাত্রা অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা। তার দৃঢ় সংকল্প, কঠোর পরিশ্রম এবং উদ্ভাবনী কৌশল তাকে ভারতীয় দুগ্ধ শিল্পে একজন কিংবদন্তি করে তুলেছে। দক্ষিণ ভারতের আইসক্রিম ম্যান হিসাবে, চন্দ্রমোগানের উত্তরাধিকার প্রজন্মের উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ী নেতাদের অনুপ্রাণিত করে চলেছে।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

ইন্দ্রলাল রায়, প্রথম ভারতীয় বাঙালি বিমান চালক যিনি ১৭০ ঘণ্টা বিমান চালানোর রেকর্ড করেছিলেন।। ।।

ইন্দ্রলাল রায়, প্রথম ভারতীয় বাঙালি বিমান চালক যিনি ১৭০ ঘণ্টা বিমান চালানোর রেকর্ড করেছিলেন।। ইন্দ্রলাল রায় – প্রথম ভারতীয় বাঙালি বৈমানিক এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একমাত্র ভারতীয় বৈমানিক। তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মিত্রদের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন এবং মারা গিয়েছিলেন।

তিনি ফ্রান্সের পাশে জার্মানির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সামরিক অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন এবং যুদ্ধবিমান ওড়ানোর দক্ষতা দেখিয়েছিলেন।

ইন্দ্রলাল রায় ১৮৯৮ সালের ২ ডিসেম্বর ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা পিয়ারিলাল রায় ছিলেন বরিশাল জেলার লাকুটিয়া এলাকার জমিদার ও আইনজীবী এবং মা ললিতা রায় ছিলেন একজন নারী ভোটাধিকার কর্মী। ভাই পরেশলাল রায় একজন বক্সার ছিলেন। শিক্ষাজীবনে তিনি বেশ কিছু বৃত্তি লাভ করেন। বিমানচালক হিসেবে যোগদানের আগে তিনি সর্বশেষ ব্যালিওল স্কলারশিপ পেয়েছিলেন। এই বৃত্তি নিয়ে তিনি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। তিনি ১৯১১ সাল পর্যন্ত কেনিংস্টনের সেন্ট পলস স্কুলে পড়াশোনা করেন। তাঁর প্রায় সমস্ত প্রাথমিক শিক্ষা ইংল্যান্ডে ছিল।
এপ্রিল ১৯১৭ সালে তিনি রয়্যাল ফ্লাইং কর্পসে যোগ দেন। তিনি এই ফ্লাইং কর্পস থেকে ১৯১৭ সালের ৫ জুলাই সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে কমিশন লাভ করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে, ভেন্ড্রোম প্রশিক্ষণ শুরু করে। তারপর তিনি টার্নবারিতে গানারি অধ্যয়ন করেন। অক্টোবরের শেষে বিমান বাহিনীর ৫৬ স্কোয়াড্রনে যোগ দেন।
কমিশনের পরপরই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। ১৯১৭ সালের ডিসেম্বরে, ইন্দ্রলাল ফ্রান্সের পক্ষে জার্মানির বিরুদ্ধে সামরিক বিমান অভিযানে অংশ নেন। এই অপারেশন চলাকালীন জার্মান বিমান দ্বারা নো ম্যানস ল্যান্ডে তার বিমানটি গুলি করে নামিয়ে দেওয়া হয়। তিন দিন পর ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একটি দল তাঁকে উদ্ধার করে ফ্রান্সের একটি ব্রিটিশ সামরিক হাসপাতালে পাঠায়। সামরিক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে মর্গে পাঠান। পরে তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। সুস্থ হওয়ার পর তিনি আবার বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেন এবং নিয়মিত উড়তে শুরু করেন।

রেকর্ড–
তিনিই প্রথম ভারতীয় বিমান চালক, যিনি ১৭০ ঘণ্টা বিমান চালানোর রেকর্ড করেছিলেন।
সম্মাননা—
কলকাতার ভবানীপুরে ‘ইন্দ্র রায় রোড’ রাস্তাটির নাম তাঁর নামানুসারে করা হয়।
ইংল্যান্ড সরকার তাকে মরণোত্তর বিশিষ্ট উড্ডীয় ক্রস (Distinguished Flying Cross – ডিএফসি) সম্মানে ভূষিত করে।
মৃত্যু–
৬ জুলাই ১৯১৮ থেকে তিনি বিমান হামলা শুরু করেন এবং ৯ টি জার্মান বিমান ধ্বংস করে নিজেকে আলাদা করেন। ১৮ জুলাই ১৯১৮, তারিখে তাঁর বিমান আবার গুলি করে নামানো হয় এবং তিনি মারা যান।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

স্মরণে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বিপ্লবী,অনুশীলন সমিতির সদস্য – জীবনতারা হালদার।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে জীবনতারা হালদার ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী।

জীবনতারা হালদার ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। জীবনতারা হালদার ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম বিপ্লবী, অনুশীলন সমিতির সদস্য, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। তিনি অনুশীলন সমিতির ইতিহাস নামে একটি গ্রন্থের রচনা করেন।ভারতের দশমিকরণ আন্দোলনের প্রধানতম উদ্যোক্তা ফণীন্দ্রনাথ শেঠ ছিলেন তার মাতুল।

জন্ম ও শিক্ষা জীবন—

জীবনতারা ১৮ জুলাই, ১৮৯৩ সালে কলকাতার জেলেপাড়া, ব্রিটিশ ভারতের জন্মগ্রহণ করেন। বাবার নাম রতনলাল হালদার। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ক্ষুদিরাম বোস পরিচালিত সেন্ট্রাল কলেজিয়েট স্কুলে অধ্যয়ন করেন। ১৯০৯ সালে হিন্দু স্কুল থেকে প্রবেশ, ১৯১৪ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে B.Sc এবং ১৯১৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশুদ্ধ গণিতে M.Sc পাশ করেন।

স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা—

বিদ্যালয়ে শিক্ষালাভের সময়ই তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যুক্ত হন। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে বারো বৎসর বয়সে সহপাঠী বন্ধু সত্যেন্দ্রনাথ বসুর সঙ্গে একযোগে অনুশীলন সমিতির সভ্য হন। এই সময়ে বিপ্লবী মানবেন্দ্রনাথ রায় সহ বিভিন্ন স্বাধীনতা সংগ্রামীর সান্নিধ্যে আসেন। ১৯১২ – ১৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চার বছর ‘আখড়া’ নামে এক শরীরচর্চার কেন্দ্র পরিচালনা করেন। অনুশীলন সমিতিতে লাঠি শিক্ষক ছিলেন শৈলেন্দ্রনাথ মিত্র (১৮৮১-১৯৭৪)। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে এম.এসসি পাশের পর ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি কারারুদ্ধ ও অন্তরীণ থাকেন।

কর্মজীবন—

১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পর্কিত মাসিক পত্রিকা ‘শিল্প’-এ প্রথমে প্রুফ রিডার এবং পরে সহকারী সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। এ সময় তিনি বিভিন্ন ক্ষুদ্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই সময়ে একমাত্র ভারতীয় হিসেবে লন্ডনের ‘দ্য এমপ্রেস’ পত্রিকায় তাঁর একটি প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি ‘পাঞ্চ’ পত্রিকায়ও লিখতেন। ১৯২২ সালে তিনি যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করেন, যিনি একজন ভারতীয় জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতা সংগ্রামী যিনি নিরালাম্বা স্বামী নামে পরিচিত এবং বাংলায় সশস্ত্র সংগ্রামের অন্যতম প্রবর্তক ছিলেন এবং তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। সেই ভিত্তিতে, তিনি তিব্বতি পিতার কাছাকাছি আসার জন্য যথেষ্ট ভাগ্যবান ছিলেন এবং তিনি তাঁর কাছ থেকে সমস্ত কঠিন অন্ত্রের রোগের একটি সাধারণ ওষুধ পান, যা ‘তিব্বতিন’ নামে পরিচিত ছিল। কিছুদিন তিনি এর ব্যবসাও করেন। ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত, তিনি কলকাতায় এর সদর দফতরে সুরজমাল-নাগরমল্ডের ব্যবসায় একটি সিনিয়র পদে কাজ করেন। ইংরেজি অমৃতবাজার পত্রিকার ‘কৃষি-শিল্প-বাণিজ্য’ পাতায় ধারাবাহিকভাবে লিখতেন। ‘সায়েন্টিফিক ইন্ডিয়ান’ এবং ‘ইন্ডিয়ান ট্রেড রিভিউ’ তার প্রকাশিত জার্নাল। তিনি ‘ইলাস্ট্রেটেড ইন্ডিয়া’ এবং মারোয়ারি চেম্বার অফ কমার্সের সহকারী সম্পাদক ছিলেন।

লেখা লেখি—–

স্বাধীনতা সংগ্রামে বিপ্লবী অনুশীলন সমিতির সভ্য হিসাবে থাকার সুবাদে তিনি “অনুশীলন সমিতির ইতিহাস” বইটিতে অগ্নিযুগের বাংলার বিপ্লবী সংগঠনটির বিস্তৃত ইতিহাস বর্ণনা করেছেন। স্বদেশী নানা ধরনের মিষ্টি কীভাবে তৈরি করতে হয় তা বিদেশীদের শেখানোর জন্য ইংরাজীতে লেখেন ‘বেঙ্গল সুইটস’। দেশের বেকার ছেলেদের অর্থাগমের পথনির্দেশ করেছেন তার ‘এভিনিউস্ অফ এমপ্লয়মেন্ট ফর আওয়ার ইয়ং মেন’ গ্রন্থে। তার অপর গ্রন্থ গুলি হল— অজীর্ণ চিকিৎসা, ছড়া কাটা ১ম ও ২য় খণ্ড , ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুশীলন সমিতির ভূমিকা।

সম্মাননা——

১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারত সরকারের স্বতন্ত্রতা সৈনিক সম্মান পেনশন পান। ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতি হন। তার জীবৎকালেই সাহিত্যিক তরুণ রায় জীবনতারার জীবন অবলম্বনে ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ’ নামে এক প্রহসন নাটক লেখেন এবং এটি বহুবার মঞ্চস্থ হয়।

জীবনাবসান——-

জীবনতারা হালদার ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে জানুয়ারি প্রয়াত হন।

।।তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ফন্টেনহাসের আকর্ষণ আবিষ্কার করুন: গোয়ায় একটি লুকানো রত্ন।।।।

পানাজি, গোয়ার একটি অদ্ভুত এবং মনোরম পাড়া ফন্টেনহাস ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং স্থাপত্যের ভান্ডার। শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এই মনোমুগ্ধকর ল্যাটিন কোয়ার্টার, যে কেউ গোয়া ভ্রমণের জন্য একটি অবশ্যই দেখার গন্তব্য। এই নিবন্ধে, আমরা ফন্টেনহাসের সমৃদ্ধ ইতিহাস, এর সাংস্কৃতিক তাত্পর্য এবং এটিকে একটি জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ করে তোলে।

ফন্টেনহাসের ইতিহাস——

ফন্টেনহাস, যা পর্তুগিজ ভাষায় “ঝর্ণা”-এ অনুবাদ করে, পর্তুগিজদের দ্বারা 18 শতকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গোয়ায় পর্তুগিজ বসতি স্থাপনকারীদের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য আশেপাশের এলাকাটি তৈরি করা হয়েছিল এবং এটি দ্রুত সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কার্যকলাপের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। ফন্টেনহাসের স্থাপত্যটি পর্তুগিজ এবং ভারতীয় শৈলীর একটি অনন্য মিশ্রণ, যেখানে রঙিন ঘর, অলঙ্কৃত বারান্দা এবং মনোরম রাস্তা রয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে, ফন্টেনহাস পর্তুগিজ, ফরাসি এবং ভারতীয় সহ বিভিন্ন সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। এই সাংস্কৃতিক গলানোর পাত্রটি একটি অনন্য এবং প্রাণবন্ত সম্প্রদায়ের জন্ম দিয়েছে যা প্রতিবেশীর স্থাপত্য, রন্ধনপ্রণালী এবং ঐতিহ্যে প্রতিফলিত হয়।

ফন্টেনহাসের সাংস্কৃতিক তাৎপর্য——–

ফন্টেনহাস শুধু একটি পাড়া নয়; এটি গোয়ার একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। সম্প্রদায়টি তার উষ্ণ আতিথেয়তা, সুস্বাদু রন্ধনপ্রণালী এবং সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের জন্য পরিচিত। আশেপাশের এলাকাটি সারা বছর ধরে অনেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং উৎসবের আবাসস্থল, যার মধ্যে বিখ্যাত ফন্টেনহাস ফেস্টিভ্যাল, যা সম্প্রদায়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য উদযাপন করে।
ফন্টেনহাসের স্থাপত্যও এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি উল্লেখযোগ্য দিক। রঙিন ঘর, অলঙ্কৃত বারান্দা এবং মনোরম রাস্তাগুলি আশেপাশের সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রমাণ। স্থাপত্যটি পর্তুগিজ এবং ভারতীয় শৈলীর মিশ্রণ, রঙ, টেক্সচার এবং ডিজাইনের একটি অনন্য মিশ্রণের সাথে।

Fontainhas পর্যটক আকর্ষণ——–

ফন্টেনহাস গোয়ার একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য, যা সারা বিশ্বের দর্শকদের আকর্ষণ করে। আশেপাশের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ এবং আকর্ষণগুলি অফার করে, যার মধ্যে রয়েছে:
– ফন্টেনহাস ফেস্টিভ্যাল: একটি সাংস্কৃতিক উৎসব যা সম্প্রদায়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য উদযাপন করে।
– হেরিটেজ ওয়াকস: আশেপাশের ঐতিহাসিক স্থান এবং ল্যান্ডমার্কের নির্দেশিত ট্যুর।
– ফুড ট্যুর: ঐতিহ্যবাহী গোয়ান খাবার এবং পর্তুগিজ-অনুপ্রাণিত ডেজার্ট সহ স্থানীয় খাবারের নমুনা।

– কেনাকাটা: স্থানীয় হস্তশিল্প, স্যুভেনির এবং ঐতিহ্যবাহী পোশাক বিক্রি করে এমন অনন্য বুটিক এবং দোকান।
– স্থাপত্য: রঙিন ঘর, অলঙ্কৃত বারান্দা এবং সুরম্য রাস্তার প্রশংসা করা।

উপসংহার——

ফন্টেনহাস গোয়ার একটি লুকানো রত্ন, যা একটি অনন্য এবং খাঁটি সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা প্রদান করে। আশেপাশের সমৃদ্ধ ইতিহাস, সাংস্কৃতিক তাৎপর্য এবং স্থাপত্যের সৌন্দর্য এটিকে গোয়া ভ্রমণের জন্য একটি অবশ্যই দেখার গন্তব্য করে তোলে। আপনি ইতিহাস, সংস্কৃতি, খাদ্য, বা স্থাপত্যে আগ্রহী হন না কেন, Fontainhas-এর কাছে কিছু দেওয়ার আছে। সুতরাং, আসুন এবং ফন্টেনহাসের আকর্ষণ আবিষ্কার করুন এবং গোয়ার ল্যাটিন কোয়ার্টারের সৌন্দর্য উপভোগ করুন।

Share This
Categories
গল্প

গল্পের নাম: শেষবার দেখা।

🌇 ১. পরিচয়

শ্রেয়া আর ঋষভ।
কলেজ লাইফের বন্ধুত্ব থেকে গড়ে ওঠা এক নিঃশব্দ ভালোবাসার গল্প।
শ্রেয়া – শান্ত, বইপ্রেমী, রবীন্দ্রসংগীতপসন্দ।
ঋষভ – চঞ্চল, ক্যামেরার পেছনে থাকা ছেলেটা, স্বপ্ন দেখত সিনেমা বানানোর।
প্রথম দেখা হয়েছিল কলেজ ফেস্টে, ক্যাম্পাসের পুরনো অডিটোরিয়ামে। শ্রেয়া রবীন্দ্রসংগীত গাইছিল আর ঋষভ ভিডিও করছিল। ক্যামেরার লেন্স越 যতই ফোকাস করছিল, ঋষভের হৃদয়ও যেন ততটাই জুম ইন করছিল তার গলার দিকে, চোখের দিকে।

🍂 ২. কাছে আসা

তাদের মধ্যে কোনোদিন ভালোবাসা বলে কিছু উচ্চারিত হয়নি।
তবু শ্রেয়ার প্রতিটি সকালে “সুপ্রভাত ঋষভ”, আর ঋষভের প্রতিটি রাত “ঘুমোও ভালো করে, শ্রেয়া”— এসব যেন বলেই দিত কিছু একটা আছে।
বৃষ্টির দিন তারা একসাথে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ভিজত,
চায়ের কাপে ভাগ বসাত,
বইয়ের পাতা টেনে বলত, “এই গল্পটা আমাদেরও হতে পারত।”

🕯️ ৩. ভুল বোঝাবুঝি

কিন্তু প্রেম যত গভীর হয়, Ego তত বড় হয়ে দাঁড়ায়।
ঋষভ একদিন বলল — “তুই তো আমায় কখনও ভালোবাসিস না। শুধু ব্যবহার করিস।”
শ্রেয়া কেঁদে ফেলেছিল। তাও ঋষভ ফিরল না।
তারা কথা বলা বন্ধ করল।
নীরবতা ছিন্ন করল তাদের সব স্মৃতি।

🌒 ৪. অনেক বছর পর…

৫ বছর কেটে গেছে।
শ্রেয়া এখন প্রকাশনা সংস্থায় চাকরি করে।
ঋষভ নামী ডকুমেন্টারি ফিল্মমেকার।
তাদের কেউ একে অপরের খোঁজ রাখত না, কিন্তু মনে ঠিকই করত।
একদিন, শ্রেয়া অফিস থেকে ফেরার পথে গাড়ির কাচের ওপারে এক চেনা মুখ। ঋষভ।
চোখাচোখি…
একটা হাসি…
এবং তারপর আবার ছুটে আসা দিনগুলোর স্মৃতি।

🍁 ৫. শেষবার দেখা

রবিবার, কলেজের পুরনো ক্যাম্পাসে তারা দেখা করল।
শ্রেয়ার চোখে জল, ঋষভ বলল — “ভুলগুলো আমার ছিল, ক্ষমা করিস।”
শ্রেয়া একবার ঋষভের কাঁধে মাথা রাখল। অনেকদিন পর…
“আমরা কি আবার শুরু করতে পারি?” — প্রশ্ন করল ঋষভ।
শ্রেয়া বলল, “তোমার ক্যামেরার লেন্সে আমায় আজও স্পষ্ট দেখা যায়?”
ঋষভ মুচকি হাসল —
“আজও, প্রথম দিনের মতোই, পরিষ্কার।”

🌸 শেষ কথা

ভালোবাসা কখনও মরে না।
কখনও কখনও শুধুই একটা দেখা, একটা হাসি — অনেক কিছু ফিরিয়ে আনে।
তাদের গল্পটা শেষ হয়নি, শুধু আবার শুরু হয়েছে… একটু দেরিতে।

ধরন: আবেগঘন প্রেমকাহিনি
সময়কাল: আধুনিক শহর কলকাতা
শব্দসংখ্যা: প্রায় ২০০০

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং দিনটি পালনের গুরুত্ব।।।।।

আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার দিবস একটি বৈশ্বিক ইভেন্ট যা প্রতি বছর 17 জুলাই মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং উন্নীত করার জন্য পালিত হয়। এই দিনটি রোম সংবিধি, যে চুক্তিটি 17 জুলাই, 1998 তারিখে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) প্রতিষ্ঠা করেছিল, গ্রহণের স্মরণ করে।

আইসিসি একটি স্বাধীন, স্থায়ী বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান যা আন্তর্জাতিক অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করে, তাদের জাতীয়তা বা অফিসিয়াল ক্ষমতা নির্বিশেষে। রোম সংবিধি চারটি মূল অপরাধের উপর আইসিসির এখতিয়ার নির্ধারণ করে: গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং আগ্রাসনের অপরাধ।
আন্তর্জাতিক বিচার দিবস তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি আন্তর্জাতিক অপরাধের শিকারদের জন্য জবাবদিহিতা এবং ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। দিবসটি সুশীল সমাজ সংস্থা, সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্বারা আয়োজিত সম্মেলন, সেমিনার এবং প্রচারাভিযান সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং কার্যক্রম দ্বারা চিহ্নিত করা হয়।
আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের গুরুত্বকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক অপরাধ, যেমন গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, ব্যক্তি, সম্প্রদায় এবং সমাজের জন্য অপরিমেয় ক্ষতি এবং কষ্টের কারণ। এই অপরাধগুলি প্রায়ই শাস্তিহীন হয়ে যায়, এবং অপরাধীরা দায়মুক্তি ভোগ করে, যা সহিংসতার সংস্কৃতিকে স্থায়ী করে এবং আইনের শাসনকে ক্ষুণ্ন করে।
আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে যে আন্তর্জাতিক অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিরা তাদের কর্মের জন্য দায়বদ্ধ। এটি শিকার এবং তাদের পরিবারকে ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণ প্রদান করে এবং এটি সম্ভাব্য অপরাধীদের নিবৃত্ত করে ভবিষ্যতের অপরাধ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারে অগ্রগতি সত্ত্বেও, এখনও উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করতে হবে। অনেক দেশ রোম সংবিধি অনুসমর্থন করেনি, এবং কিছু এমনকি আইসিসি থেকে তাদের সদস্যপদ প্রত্যাহার করেছে। উপরন্তু, ICC রাজনৈতিক ও আর্থিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় যা অপরাধের তদন্ত ও বিচার করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে।
উপসংহারে, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার দিবস একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট যা আমাদের মানবতা, যুদ্ধাপরাধ এবং গণহত্যার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতার গুরুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এটি অগ্রগতি এবং রয়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জগুলিকে প্রতিফলিত করার এবং সবার জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্নিশ্চিত করার দিন।

Share This
Categories
নারী কথা প্রবন্ধ

স্মরণে মালতী চৌধুরী , ভারতীয় বিশিষ্ট সর্বোদয় নেত্রী ও সমাজকর্মী।।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের অব্যর্থ পরিশ্রম যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত রাজনৈতিক দিক থেকে মুক্তি পেয়েছে। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে মালতী চৌধুরী প্রথমসারির একজন অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন।ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম শুধু শহীদ ভগৎ সিং-এর মতই নয় বরং শক্তিশালী নারীদের দ্বারা প্রশস্ত হয়েছিল যারা তাদের মাটিতে দাঁড়িয়েছিল এবং দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ব্রিটিশদের সাথে লড়াই করেছিল।

মালতী চৌধুরী ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে। ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা ছিলেন তিনি। মালতী চৌধুরী ছিলেন মহাত্মা গান্ধী ও রবীন্দ্রনাথের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। বিশিষ্ট সর্বোদয় নেত্রী ও সমাজসেবী।

জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন————

মালতী চৌধুরী ১৯০৪ সালের ২৬ জুলাই ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় একটি সচ্ছল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা কুমুদনাথ সেন ব্যারিস্টার ছিলেন। মাতা স্নেহলতা সেন। তাদের পৈতৃক নিবাস ছিল বর্তমান বাংলাদেশের ঢাকা বিক্রমপুরের কামারখাড়া। কিন্তু তাদের পরিবারের সবাই চলে যায় বিহারের শিমুলতলায়। মাত্র আড়াই বছর বয়সে তার বাবা মারা যান এবং তার মা তাকে বড় করেন। মালতী চৌধুরী ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ১৬ বছর বয়সে শান্তিনিকেতনে আসেন। সেখানে অধ্যয়নকালে তিনি সরাসরি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংস্পর্শে আসেন। তিনি শান্তিনিকেতনে ১৯২৭ সালে ওড়িশার এক সময়ের মুখ্যমন্ত্রী নবকৃষ্ণ চৌধুরীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

অহিংস আন্দোলন——-

মহাত্মা গান্ধী দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, তিনি ১৯৩০ সালে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন এবং তাকে গ্রেফতার করে ভাগলপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে হাজারীবাগ কারাগারে ছিলেন। ৪২ সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি জেলে যান।

সামাজিক কাজ—––

তিনি সর্বোদয় নেত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি দরিদ্র, দলিত, আদিবাসী হরিজন শিশুদের সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি উৎকল কংগ্রেস শ্রমজীবী কর্মী সংঘ গঠন করেন। গ্রামের কৃষকদের উন্নতির জন্য সংস্কার ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচী গ্রহণ করেন, সংগঠন গড়ে তোলেন। ওড়িশা রাজ্যে গান্ধীজির পদযাত্রায় সঙ্গী হন। ১৯৪৭ সালে, তিনি কিছু সময়ের জন্য ওড়িশা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হন। ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থা জারি হলে তার বিরুদ্ধে পথে নামেন এবং ৭১ বছর বয়সে তাকে ছয় মাস কারাবরণ করতে হয়। তিনি আচার্য বিনোবা ভাবের ভূদান আন্দোলনেও সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিলেন।

সম্মান——-

(ক) উৎকল রত্ন সম্মান (উড়িষ্যা সরকার)।
(খ) জাতীয় পুরস্কার, ঠাকুর সাহিত্য পুরস্কার, দেশিকোত্তম, (শিশু কল্যাণমূলক কাজের জন্য)।
(গ) ১৯৮৮ সমাজসেবামূলক কাজের জন্যে তিনি সালে যমুনালাল বাজাজ পুরস্কারে সম্মানিত হলেও তা নিতে অস্বীকার করেছিলেন।

মৃত্যু——-

১৫ মার্চ ১৯৯৮ সালে ৯৩ বছর বয়েসে তিনি প্রয়াত হন ।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

চাপোরা ফোর্ট : যেখানে ইতিহাস স্থাপত্যের সাথে মিলিত হয়।।।।

গোয়ার মনোরম রাজ্যে অবস্থিত চাপোরা ফোর্ট হল একটি ঐতিহাসিক দুর্গ যা বিভিন্ন সাম্রাজ্য ও রাজবংশের উত্থান ও পতনের সাক্ষী। চাপোরা নদী উপেক্ষা করে একটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত, দুর্গটি আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্যের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য দেখায়।

দুর্গটির একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে 16 শতকে যখন এটি আদিল শাহী রাজবংশ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।

পরবর্তীতে, 1617 সালে পর্তুগিজদের দ্বারা এটি দখল করা হয় এবং 1892 সাল পর্যন্ত তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। পর্তুগিজ যুগে, দুর্গটি সংস্কার করা হয়েছিল এবং বুরুজ, যুদ্ধক্ষেত্র এবং একটি গির্জা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
1947 সালে ভারত স্বাধীনতা লাভের পর, দুর্গটি পরিত্যক্ত হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়। যাইহোক, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, দুর্গের ঐতিহাসিক তাত্পর্য পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের প্রচেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমানে, চাপোরা ফোর্ট একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য এবং গোয়ার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি প্রমাণ।
দুর্গের স্থাপত্যটি ভারতীয় এবং পর্তুগিজ শৈলীর সংমিশ্রণ, যা সেই সময়ের সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং প্রভাবকে প্রতিফলিত করে। দেয়ালগুলি ল্যাটেরাইট পাথর দিয়ে তৈরি, এবং দুর্গটি একটি পরিখা দ্বারা বেষ্টিত যা একসময় জলে ভরা ছিল।
চাপোরা ফোর্ট গোয়ার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, এটি একটি সামরিক ফাঁড়ি, একটি কারাগার এবং এমনকি যুদ্ধের সময় স্থানীয়দের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে। দুর্গের কৌশলগত অবস্থান এটিকে শত্রু জাহাজ এবং সৈন্যদের গতিবিধি নিরীক্ষণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাজনক স্থানে পরিণত করেছে।
ঐতিহাসিক তাৎপর্য থাকা সত্ত্বেও, চাপোরা দুর্গ প্রাকৃতিক ক্ষয় এবং মানুষের কার্যকলাপের হুমকির সম্মুখীন। দুর্গটি সংরক্ষণ এবং আরও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উপসংহারে, চাপোরা ফোর্ট হল গোয়ার ইতিহাসের একটি আকর্ষণীয় অংশ এবং রাজ্যের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অন্বেষণে আগ্রহী যেকোন ব্যক্তির জন্য অবশ্যই একটি দর্শনীয় গন্তব্য।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

গোয়ার রাজধানী শহর পানাজির আকর্ষণ আবিষ্কার করুন।।।।

পানাজি, গোয়ার রাজধানী শহর, ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভান্ডার। মান্ডোভি নদীর তীরে অবস্থিত, পানাজি একটি মনোমুগ্ধকর শহর যা পর্তুগিজ এবং ভারতীয় প্রভাবের এক অনন্য মিশ্রণ প্রদান করে। এর মনোরম রাস্তা থেকে শুরু করে প্রাণবন্ত বাজার পর্যন্ত, পানাজি হল ভ্রমণকারীদের স্বর্গ যেখানে প্রত্যেকের জন্য কিছু না কিছু আছে।

ইতিহাস এবং স্থাপত্য
পানাজির সমৃদ্ধ ইতিহাস এর স্থাপত্যে প্রতিফলিত হয়, যা পর্তুগিজ এবং ভারতীয় শৈলীর মিশ্রণ। শহরটিতে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে, যার মধ্যে চার্চ অফ আওয়ার লেডি অফ দ্য ইম্যাকুলেট কনসেপশন রয়েছে, যেটি 17 শতকের। গির্জাটি পর্তুগিজ স্থাপত্যের একটি সুন্দর উদাহরণ, এর সাদা দেয়াল এবং নীল ছাদের টাওয়ার।

আরেকটি উল্লেখযোগ্য ল্যান্ডমার্ক হল ফন্টেইনহাস, একটি মনোমুগ্ধকর পাড়া যা তার রঙিন ঘর এবং সরু রাস্তার জন্য পরিচিত। অনেক দোকান, রেস্তোরাঁ এবং ক্যাফে সহ আশেপাশের এলাকাটি ঘুরে দেখার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা।

দর্শনীয় স্থান—

পানাজিতে গোয়া স্টেট মিউজিয়াম সহ অনেক আকর্ষণীয় স্থান রয়েছে, যা রাজ্যের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি প্রদর্শন করে। জাদুঘরে ভাস্কর্য, পেইন্টিং এবং মুদ্রা সহ নিদর্শনগুলির একটি সংগ্রহ রয়েছে।

শহরটিতে অনেক সুন্দর সৈকত রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মিরামার সমুদ্র সৈকত, যা সাঁতার কাটা এবং সূর্যস্নানের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থান। সৈকতটি পাম গাছ দ্বারা বেষ্টিত এবং আরব সাগরের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখায়।
সেলিম আলী পাখির অভয়ারণ্য হল পানাজির আরেকটি অবশ্যই দেখার জায়গা। অভয়ারণ্যটি ভারতীয় ময়ূর, ভারতের জাতীয় পাখি সহ অনেক প্রজাতির পাখির আবাসস্থল।

খাদ্য ও পানীয়—

গোয়ান রন্ধনপ্রণালী সামুদ্রিক খাবারের ব্যবহারের জন্য পরিচিত, এবং পানাজিতে অনেক রেস্তোরাঁ রয়েছে যা সুস্বাদু সামুদ্রিক খাবার পরিবেশন করে। কিছু জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে রয়েছে মাছের তরকারি, চিংড়ি মসলা এবং কাঁকড়া জাকুটি।
শহরটি তার ঐতিহ্যবাহী গোয়ান মিষ্টির জন্যও বিখ্যাত, যার মধ্যে রয়েছে বেবিঙ্কা, নারকেলের দুধ এবং চিনি দিয়ে তৈরি একটি বহু-স্তরযুক্ত কেক। শহরের অনেক বেকারি বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি এবং পেস্ট্রি সরবরাহ করে।

নাইটলাইফ—

পানাজিতে একটি প্রাণবন্ত নাইটলাইফ রয়েছে, যেখানে অনেক বার এবং ক্লাব রয়েছে যা বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীত এবং বিনোদন প্রদান করে। শহরের অনেক রেস্তোরাঁও লাইভ মিউজিক এবং নাচের অফার করে, এটি একটি রাত উপভোগ করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা করে তোলে।

কেনাকাটা—-

পানাজি হল একটি ক্রেতার স্বর্গ, যেখানে অনেক বাজার এবং শপিং সেন্টার রয়েছে যা বিস্তৃত পণ্য সরবরাহ করে। পানাজি মার্কেট এবং মিরামার মার্কেট সহ শহরের অনেকগুলি বাজার, পোশাক, গয়না এবং স্যুভেনির সহ বিভিন্ন ধরণের পণ্য সরবরাহ করে।
মল ডি গোয়া এবং গোয়া মল সহ শহরের অনেক শপিং সেন্টারগুলি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড এবং স্থানীয় পণ্য সরবরাহ করে।

প্রায় পেয়ে—

পানাজি একটি ছোট শহর, এবং কাছাকাছি যাওয়া সহজ। শহরটিতে অনেক বাস এবং ট্যাক্সি রয়েছে যা চারপাশে যাওয়ার সুবিধাজনক উপায় সরবরাহ করে। শহরটিতে অনেক অটো-রিকশাও রয়েছে, যেগুলো পরিবহনের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম।

উপসংহার—

পানাজি একটি মনোমুগ্ধকর শহর যা ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য মিশ্রণ প্রদান করে। এর মনোরম রাস্তা থেকে শুরু করে প্রাণবন্ত বাজার পর্যন্ত, পানাজি হল ভ্রমণকারীদের স্বর্গ যেখানে প্রত্যেকের জন্য কিছু না কিছু আছে। আপনি ইতিহাস, খাবার বা নাইট লাইফ সম্পর্কে আগ্রহী হন না কেন, পানাজি দেখার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা।
তাহলে কেন আজ পানাজিতে ভ্রমণের পরিকল্পনা করবেন না এবং এই সুন্দর শহরের আকর্ষণ আবিষ্কার করবেন না?

Share This