আমাদের সেই প্লাটফর্ম টি
বড় সুন্দর ছিল
লালমাটির কাঁকর বিছানো একটা কর্গেটের শেড,
একটি পুরণো অশথগাছ, আর অনেক কালের একটি বটবৃক্ষ দু প্রান্তে প্রহরীর মত দাঁড়িয়ে আছে।
আমার বন্ধুদের সঙ্গে নিত্যদিনের বৈকালিক ভ্রমনের একটি প্রিয় জায়গা।
রেলগাড়ির আসা যাওয়া তার তীব্র
হুইশেলের আওয়াজ আমাদের ভেতরটা নাড়িয়ে দিয়ে চলে যেত
যেন অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়ার একটা আহ্বান।
ভীষণ ভালোলাগার নেশায় তাদের চলে যাওয়া বুকের মধ্যে ঝমঝম আওয়াজ তুলতো।
এই রেশ মনের মধ্যে একটা নেশার মত থেকে যেত। আবার পরের দিনে
ছুটতাম সেই বাঁশির ডাকে।
রেলগাড়ি চলে যাওয়ার পর যে একটা শূন্যতা অনেকক্ষণ বুকের মধ্যে তা অনুভব করতাম।
কোনও কোনও দিনে
একপাশে ঝাঁকড়া ছাতিমগাছের নীচে হলুদ কাপড় পরা সাঁওতাল বর কনে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের জন্য বসে থাকতো হাঁ করে দেখতাম।
শীতের দিনে শাল পিয়ালের জঙ্গলে পাতা ঝরার একটা শব্দ হাওয়ার সঙ্গে মিশে কেমন যেন মনকেমন করত।
এখনও সেই শৈশবের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়।জীবন টাই তো এখন সেই প্লাটফর্ম হয়ে আছে।কত জনের আসা যাওয়ার সাক্ষী হয়ে বসে আছি।
গাড়িতে হয়তো যখন চড়ে বসব তখন প্লাটফর্ম অনেক দূরে ছাড়িয়ে চলে যাব।
স্মৃতিচারণ : শীলা পাল।
