Categories
প্রবন্ধ

জানুন, বাঘের সেবা কেমন করে করলেন কৃষ্ণদাস : রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।।।

বৃন্দাবনের গোবর্দ্ধনে বাস করতেন শ্রীকৃষ্ণদাস নামক এক সাধু । তিনি গোফার মধ্যে ভজন করতেন । দিবানিশি কৃষ্ণ নাম অতি উচ্চঃস্বরে করতেন। নাম নিতে নিতে এমন হতো যে ক্ষুধা-তৃষ্ণা, আহার-বিহার সব ভুলে যেতেন । নামানন্দে বিভোর হয়ে থাকতেন সর্বদা । কৃষ্ণ কৃষ্ণ বলে এমন করে করুণ সুরে ডাকতেন যে, শুনলে প্রাণ কেমন করে উঠতো ।

কৃষ্ণপ্রেমে উন্মত্ত সাধু কৃষ্ণদাস প্রেমানন্দে মজে থাকতেন সদা সর্বদা।
একদিন কৃষ্ণ দাসের গোফার দ্বারে বিশাল আকারের এক বাঘ এসে দাঁড়ালো। ভয়ংকর উগ্র মূর্তি সেই বাঘের। দেখলেই ভয় লাগবে এমন। তবে কৃষ্ণদাস কিন্তু একটুও ভীত হলেন না। মনে মনে বাঘটিকে অতিথি ভাবলেন তিনি । বহু সম্মান দেখিয়ে একটি আসন গোফার দ্বারে পেতে বাঘটিকে আদরের সুরে বসতে বললেন ‌ । আর , বাঘটিও সুরসুর করে আসনের ওপর হাত-পা ছড়িয়ে বিশ্রাম নিতে বসে পড়লো যেন।
যত্ন করতে হবে বাঘটিকে । কৃষ্ণদাস ভাবতে থাকলেন অতিথি এসেছে, কেমন করে আতিথেয়তা করি ? কী খেতে দেই তাকে ? ঘরে তো কিছুই তেমন নেই !
কৃষ্ণদাস নিজেই মাধুকরী করে এনে প্রসাদ পান। ঘরে সঞ্চয় বলতে কিছুই থাকে না ! তার ওপর বাঘ আবার মাংসাশী প্রাণী। মাংস এখন কোথায় পাই ? অতিথিকে তুষ্ট করার কথা ভাগবতেও আছে। বলা হয়েছে , ক্ষমতা না থাকলে নিদেনপক্ষে বসার আসন আর পান করার জলটুকু দিয়েও অতিথি সৎকার করা উচিৎ। কিন্তু, মাংস ভিন্ন অপর কিছু দিয়ে তো আর বাঘ-অতিথিকে খুশী করা যাবে না ! -–এইসব নানান ভাবনার উদয় হল কৃষ্ণদাসের মনে। পরক্ষণেই কৃষ্ণদাস ভাবলেন , আমার নিজের অঙ্গের মাংসতেই যদি বাঘকে সম্মান জানাই, তবে কেমন হয় ? সেটাই বরং ভালো হবে। আর তাই কৃষ্ণদাস নিজের অঙ্গের নানান জায়গায় ছুরি চালিয়ে টুকরো টুকরো মাংস কেটে বের করে আনলেন। কষ্ট , যন্ত্রণা কী হচ্ছিল না তাঁর ? হচ্ছিল , অবশ্যই হচ্ছিল । কিন্তু, নিজের মনকে তিনি শ্রীমন্ মহাপ্রভুর মুখবাক্যের কথা ভেবেই বোঝাচ্ছিলেন যে , “সর্বজীবে দিবে সম্মান । জানি কৃষ্ণ অধিষ্ঠান।।” অর্থাৎ, প্রতিটি জীবের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণ অবস্থান করেন । তাই প্রতিটি জীবকে সম্মান দিতে হয় । জীবসেবার চেষ্টা করতে হয়।
বাঘের সম্মুখে পাতায় করে কৃষ্ণদাস রেখেদিলেন নিজের শরীরের কয়েকটি ছোট মাংসখণ্ড । বাঘ তৃপ্তি ভরে খেল। আর তারপর চুপচাপ চলে গেল। কৃষ্ণদাস তীব্র যন্ত্রণা সহ্য করতে করতে মনে মনে তৃপ্তি পেলেন এই ভেবে যে , যাক অতিথি আপ্যায়নটুকু তো কোনমতে হল !
কৃষ্ণ ভক্তের স্বভাব যে এমনই হয়। নিজের দুঃখ বা লাভালাভে কোন আকর্ষণ থাকে না তাঁদের । অপরকে সুখী করেই তাঁরা আনন্দ পান।

— ভক্তকৃপা ভিখারিণী
রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১৩ জুন, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।

আজ ১৩ জুন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

দিবস—–

(ক) ভূমিকম্প সচেতনতা দিবস।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৩৬৭ – জোসনের রাজা তেজং, জোসন রাজবংশের রাজা।  .
১৫৫৫ – জোভান্নি আন্তোনিও মাজিনি, ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জ্যোতিষী, মানচিত্রাঙ্কনবিদ এবং গণিতজ্ঞ।  .
১৭৬৩ – হোজে বনিফাসিও দে আন্দ্রাদা, ব্রাজিলের একজন কূটনীতিজ্ঞ, নিসর্গী, অধ্যাপক এবং কবি।

১৮৩১ – জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল, স্কটল্যান্ডীয় গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞানী তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ তত্ত্বের জন্য সুবিদিত।
১৮৫৪ – চার্লস এ পারসনস, আইরিস ইঞ্জিনিয়ার ও আবিষ্কারক।

১৮৬৫ – উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস বিশ শতকের একজন আইরিশ কবি ও নাট্যকার।
১৮৯৭ – পাভো নুরমি, ফিনিশীয় মাঝারি ও লম্বা দূরত্বের দৌড়বিদ।

১৯১১ – লুইস ওয়াল্টার আলভারেজ, স্পেনীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী।
১৯১৮ – বেন জনসন, মার্কিন অভিনেতা, স্টান্টম্যান ও রোডিও কাউবয়।

১৯২৭ – বাংলাভাষা শহীদ আবুল বরকত।
১৯২৮ – জন ফর্ব্‌স ন্যাশ, মার্কিন গণিতবিদ।
১৯৪০ – জার্মান গায়িকা সারাহ কোনর।
১৯৪৪ – বান কি মুন, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিবিদ এবং জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব।
১৯৫৩ – টিম অ্যালেন, মার্কিন অভিনেতা ও কৌতুকাভিনেতা।

১৯৬৫ – মনিন্দর সিং, সাবেক ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৭০ – ক্রিস কেয়ার্নস, নিউজিল্যান্ডের সাবেক ও বিখ্যাত ক্রিকেট তারকা।
১৯৮১ – ক্রিস ইভানস (অভিনেতা), মার্কিন অভিনেতা।

১৯৮৬ – হন্ডা কেস্‌কে, জাপানি ফুটবলার।
১৯৮৬ – ডিজে স্নেক, ফরাসি সংগীত প্রযোজক এবং ডিজে।

১৯৯০ – অ্যারন টেলর-জনসন, ইংরেজ অভিনেতা।

১৯৯৪ – দীপিকা কুমারী, ভারতীয় মহিলা তীরন্দাজ।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৭৫৭ – রবার্ট ক্লাইভ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ অভিমুখে যুদ্ধ অভিযান শুরু করেন।
১৮৪০ – কলকাতায় তত্ত্ববোধিনী সভার উদ্যোগে তত্ত্ববোধিনী পাঠশালা প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৫৭ – লর্ড ক্যানিং সংবাদপত্র আইন চালু করেন।
১৮৭৮ – ইউরোপের মুখ্য রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে বার্লিন কংগ্রেস শুরু হয়।
১৯০০ – চীনে বক্সার বিদ্রোহ শুরু হয়।
১৯০৬ – বৃটেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় আয়ারল্যান্ড দ্বীপে আয়ারল্যান্ড রিপাবলিকান আর্মির রাজনৈতিক শাখা শিনফেন আত্ম প্রকাশ করে।
১৯২১ – ইহুদিবাদীদের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো ব্যাপক আন্দোলনের সূচনা হয়।
১৯৩৪ – আডলফ হিটলার এবং বেনিতো মুসোলিনি দুজনের সাক্ষাৎ হয়েছিল ইতালির ভেনাসে।
১৯৪৩ –  ফ্রান্সের জাতীয় মুক্তি কমিটি গঠিত হয়।
১৯৪৪ – জার্মানি প্রথম বারের মতো বৃটেনকে লক্ষ্য করে ভি-ওয়ান নামের ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
১৯৫৩ – কলম্বিয়ায় জেনারেল গুস্তাভো রোজাস পিনিল্লার নেতৃত্বে এক সামরিক অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট লরেয়ানো গোমেজের সরকার উৎখাত।
১৯৫৬ – সর্বশেষ ব্রিটিশ সেনাদল সুয়েজ ত্যাগ করে।
১৯৭১ – অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে জি. বডরিক নামে এক মহিলা একসঙ্গে নয় সন্তানের জন্ম দেয়। এর মধ্যে ২ ছেলে ও ৪ মেয়ে বেঁচে যায়।
১৯৭৪ – ইয়েমেনে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল।
১৯৭৫ – আলজিয়ার্স চুক্তি।
১৯৭৮ – লেবানন থেকে ইসরাইল তার সেনা প্রত্যাহার করে।
১৯৮২ – সৌদি বাদশাহ খালেদের মৃত্যু। যুবরাজ ফাহাদের সিংহাসনে আরোহণ।
১৯৮৩ – ঢাকা জাদুঘর জাতীয় জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়।
১৯৯৩ – কিম ক্যাম্পবেল কানাডার প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত।
২০০২ – যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিক্ষেপী ক্ষেপণাস্ত্র (অ্যান্টি ব্যালাস্টিক মিসাইল) চুক্তি প্রত্যাহার করে।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৬৪৫ – মিয়ামোতো মুসাশি, জাপানি অসিযোদ্ধা ও রোনিন।
১৬৯৫ – জন লাফুনতান, ফ্রান্সের বিখ্যাত লেখক ও কবি।
১৯৩১ – কিতাসাতো শিবাসাবুরো, জাপানি চিকিৎসক ও ব্যাকটেরিয়া বিজ্ঞানী।

১৯৩২ – অপূর্ব সেন ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব।

১৯৩৯ – আর্থার কনিংহ্যাম, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার।
১৯৮৩ – বাঙালি রসায়ন বিজ্ঞানী ফণীন্দ্রচন্দ্র দত্ত।

১৯৮৭ – জেরাল্ডিন পেজ, আমেরিকান অভিনেত্রী।

২০০৫ – আলভারো কুনহাল, পর্তুগিজ কমিউনিস্ট বিপ্লবী এবং রাজনীতিবিদ।

২০১২ – মেহদী হাসান, পাকিস্তানের গজল গায়ক ও ললিউডের নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী।
২০১৫ – মাইক শ্রিম্পটন, নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার ও কোচ।
২০২০ – (ক) মোহাম্মদ নাসিম, বাংলাদেশের সাবেক স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

(খ) শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও শেখ হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী।
(গ) সুলতান উদ্দিন ভূঁইয়া, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও সাবেক সংসদ সদস্য।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

ভারতের যে ৭ জায়গা ঘুরে আসতে পারেন।।।

ভারত এমন একটি দেশ যেখানে একইসঙ্গে বিভিন্ন ঋতুর দেখা মেলে। রাজস্থানের মতো জায়গায় যখন তীব্র গরম তখন উত্তরের রাজ্যগুলোতে যেমন জাম্মু এবং কাশ্মীরে তীব্র শীত।

প্রকৃতির এই মনোরম বৈচিত্রময়তা অনুভব করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন প্রতিবেশি দেশ ভারতের কয়েকটি সুন্দর জায়গা থেকে। এই শীতের ছুটিতে তুষারে ঢাকা পর্বত-মালা, কুয়াশায় মোড়ানো লেক হতে পারে ভ্রমনপিপাসুদের ঘুরে আসার জন্য চমৎকার। জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে শীতের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন ভারতের এই ৭ স্থান থেকে-
আন্দামান
যারা পাহাড়ের চেয়ে সমুদ্র দেখতে বেশি ভালোবাসেন তাদের জন্য আন্দামান হবে উপযুক্ত গন্তব্য। সৈকতে বসে অলস সময় কাটাতে কাটাতে গায়ে মাখাতে পারবেন ফুরফুরে হাওয়া। যেহেতু আন্দামান গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রকৃতির, এটি গ্রীষ্মে খুব গরম এবং আর্দ্র থাকে, তাই  শীতের মাসগুলোই এই দ্বীপটি দেখার সেরা সময়। অসংখ্য ওয়াটার স্পোর্টস এবং আলোক প্রদর্শনী পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দেয়।
রাজস্থান
রাজস্থানের সৌন্দর্য বর্ণনা করা প্রায় অসম্ভব। এই রাজ্য সুন্দর স্থাপত্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দিক দিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে। রাজ্যের প্রতিটি শহরই বেশ সুন্দর। উদয়পুরে রয়েছে মনোরম হ্রদ, সেখানে জয়সালমিরের সোনালি মরুভূমিও বেশ আকর্ষণীয়। যেহেতু গ্রীষ্মকালে রাজ্যের তাপমাত্রা খুব বেশি থাকে, তাই শীতকাল এটি ভ্রমণের জন্য ভালো। এখানে যোধপুর, জয়পুর এবং উদয়পুরের দুর্গ্ ও প্রাসাদের জাঁকজমক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। সেইসঙ্গে জয়সালমেরে মরুভূমিতে ক্যাম্পিং এবং পুশকরে হট এয়ার বেলুন রাইডও উপভোগ করতে পারবেন।
কেরালা
শীতকালে ভারতের আরেকটি পর্যটন আকর্ষণ হলো কেরালা। যারা পানি ভালোবাসেন তাদের জন্য রয়েছে সৈকত, যারা অবসর ভালোবাসেন তাদের রয়েছে জন্য স্বস্তিদায়ক ব্যাক ওয়াটার, প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য, সাফারি ও দর্শনীয় পাহাড়ও রয়েছে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের মাসগুলো কেরালা দেখার সেরা সময়। এখানে আরো পাবেন হাউসবোটে রাইড, সবুজের মাঝে চা বাগানে হাঁটার সুযোগ এবং ব্যাক ওয়াটারে হাউসবোট বা শিকারা রাইড। কেরালায় গেলে কথাকলি নাচের পারফরম্যান্স দেখতে ভুলবেন না।
কচ্ছের রণ
সাদা বালির মরুভূমির জন্য এটি ভারতে বেশ বিখ্যাত। শীতের মাসগুলো এই স্থান ভ্রমণের সেরা সময়, রণ উৎসবও বেশ উপভোগ করার মতো, যা অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হয়ে থাকে। উৎসবটির স্থানীয় খাবার বেশ মজার এবং কেনাকাটার জন্যও এটি সেরা। তারাময় রাতে উটের যাত্রা অভিজ্ঞতা অর্জনের মতো একটি ব্যপার।
মেঘালয়
মেঘালয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর উত্তর পূর্বের একটি রাজ্য। মেঘালয় প্রাচীন সব জলপ্রপাত, লেক এবং নদীতে ঘেরা একটি রাজ্য। মেঘালয়ের সবুজ মনোরম পরিবেশ সবসময়ই পর্যটকদের আকর্ষণ করে। মেঘালয়ে গেলে শিলং-এ ঘুরতে, চেরীপুঞ্জির লাইভিং রুট ব্রিজে হাইকিং এবং ডাউকির সুন্দর স্বচ্ছ পানিতে নৌকা নিয়ে ঘুরতে কখনোই ভুলবেন না।
কর্ণাটক
কর্ণাটক উপকূলে ঘেরা এমন একটি রাজ্য যা বর্ষাকালে পানিতে ভরপুর থাকে। শীতকাল এই জায়গা থেকে ঘুরে আসার সবচেয়ে ভালো একটি সময়। কর্ণাটকে গেলে হামপি থেকেও ঘুরে আসতে পারেন এটি ইউনেস্কোর ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর মধ্যে একটি। এছাড়াও ঘুরে আসতে পারেন গোকানা, মাল্পে, মুরুদেশশারের বিচগুলোতেও। সেইসঙ্গে উপভোগ করতে পারেন এখানকার মজাদার সামুদ্রিক খাবার।
পন্ডিচেরি
পন্ডিচেরি ছিল সৈকত দ্বারা বেষ্টিত ফ্রান্সের উপনিবেশ। শীতে ভারত ভ্রমণের জন্য এটি একটি সুন্দর জায়গা। ভোরের রোদে সৈকতে পা ভিজিয়ে ঘুরে বেড়ানো কিংবা ককটেলে চুমুক দিয়ে শীতের অলস দিন কাটানোর জন্য এটি সুন্দর জায়গা। শহরের সুন্দর ক্যাফে এবং রেস্তোঁরাগুলো থেকেও ঘুরে আসতে পারেন। প্রকৃতির শান্ত পরিবেশ উপভোগ করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন অরোভিলে থেকেও।

Share This
Categories
গল্প প্রবন্ধ

নদীয়ার কৃষ্ণচন্দ্র রাজা নির্মিত যুগল কিশোর মন্দিরের অজানা কাহিনী।।।

যুগল কিশোর মন্দিরটি নদীয়ার কৃষ্ণচন্দ্র রাজা, নির্মাণ করেছিলেন। এই মন্দিরের পিছনে রয়েছে অজানা কাহিনী বর্তমান এই মন্দিরের দায়িত্বের যিনি রয়েছেন তিনি জানান মহর্ষি গঙ্গারাম দাস বৃন্দাবন থেকে গোবিন্দ কে এখানে নিয়ে এসেছিলেন, তখন সেখানে ছিল বকুল গাছ এই বকুল গাছের নিচেই তিনি বসবাস করতে থাকেন।

এরপর বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর তিনি স্বপ্নদ্রষ্টা হন একা থাকতে তার আর ভালো লাগছে না, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কাছে রাধারানী রয়েছে সেখান থেকে নিয়ে এসে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর দেওয়ালের ফাঁকে লুকানো ছিল রাধারানী।

মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র নদীপথে মন্দিরে এসে কোন এক বৈশাখী সংক্রান্তির দিনে এই মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার থেকেই এই মন্দিরের নাম হয় যুগল কিশোর মন্দির। তারপরের দিনই ছিল পয়লা জ্যৈষ্ঠ অর্থাৎ জামাইষষ্ঠী সেই দিনটিকে স্মরণ রাখার জন্য আজও এই মেলা হয়ে আসছে, কেউ কেউ আবার বলে থাকেন জামাইষষ্ঠীর মেলা। প্রাচীন এই লোকো কথাকে মান্যতা দিয়ে জামাইষষ্ঠীর দিনে ভিড় জমান শাশুড়ি থেকে শুরু করে জামাই মেয়ে সকলেই। নাই নাই করে এই মেলার বয়স ৩০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন। প্রাচীন এই লোক কথার উপরে ভিড় করে বহুদূরান্ত থেকে যুগল মন্দিরে পুজো দিতে আসেন সকলেই।

আড়ংঘাটা স্টেশন থেকে হাঁটা পথে চূর্ণী নদীর ধারে এই যুগল মন্দির অবস্থিত। প্রাচীন সেই বকুল গাছ আজও বর্তমান। জামাই মেয়ের মঙ্গল কামনায় শাশুড়িরা প্রথমে যুগল কিশোরকে বরণ করবার পর মেয়ে জামাই বরণ করা হয় এমনটাই রেওয়াজ এখানকার মানুষদের। নতুন হোক বা পুরনো ধর্মের টানে ভিড় করেন সকলেই। জ্যৈষ্ঠ মাস এক মাস ব্যাপী চলে এই মেলা। প্রাচীন এই মেলা জৌলুস হারালেও সাড়ম্বরে পালিত হয় এই মেলা।

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ বিশ্ব শিশু শ্রম বিরোধী দিবস, জানুন দিনটি কেন পালিত হয় এবং গুরুত্ব।।।

প্রতি বছর ১২ জুন পালিত হয়, শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে বিশ্ব দিবস একটি উল্লেখযোগ্য বৈশ্বিক ইভেন্ট যার লক্ষ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং শিশু শ্রমের সকল প্রকারের অবসান ঘটাতে প্রচেষ্টা চালানো। এই দিনটি বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ শিশুর দুর্দশার কথা তুলে ধরে যারা প্রায়ই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে শ্রমে বাধ্য হয়, তাদের শৈশব, শিক্ষা এবং মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে।

শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে বিশ্ব দিবস : থিম ২০২৫—

২০২৫ সালের বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবসের থিম এখনও ঘোষণা করা হয়নি । এই বছর বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবসটি শিশুশ্রমের উপর জরুরি অবস্থার প্রভাবের উপর আলোকপাত করবে। কোভিড-১৯ মহামারী এবং পরবর্তী আর্থিক ও কর্মসংস্থান বিজ্ঞাপনের ধাক্কা ব্যক্তিদের জীবন এবং কর্মসংস্থানের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) দ্বারা বিশ্ব শিশুশ্রম বিরোধী দিবসটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা বিশ্বব্যাপী শ্রম সম্প্রদায়ের তত্ত্বাবধানকারী জাতিসংঘের সংস্থা। এটি নিশ্চিত করে যে ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী অনেক শিশুকে যথাযথ শিক্ষা, চিকিৎসা পরিষেবা, অবসর সময় বা কেবল মৌলিক স্বাধীনতা প্রদান করে তাদের স্বাভাবিক শৈশব কাটাতে হবে।

বিশ্ব শিশু শ্রম বিরোধী দিবস : ইতিহাস —

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) শিশু শ্রম নির্মূল করার চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে 2002 সালে শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে বিশ্ব দিবসের সূচনা করে। ILO, ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকদের অধিকারের পক্ষে এবং বিশ্বব্যাপী শ্রম সমস্যা সমাধানের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। শিশু শ্রম মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং টেকসই উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় এই ক্রমবর্ধমান স্বীকৃতির প্রতিক্রিয়া ছিল এই দিবসের প্রতিষ্ঠা।
শিশুশ্রমকে আইএলও দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এমন কাজ যা শিশুদের শৈশব, সম্ভাবনা এবং মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করে এবং যা শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য ক্ষতিকর। এটি প্রায়শই বিপজ্জনক পরিবেশে দীর্ঘ ঘন্টা জড়িত থাকে, শিশুদের স্কুলে যেতে এবং শিক্ষা অর্জনে বাধা দেয়। সাম্প্রতিক ILO অনুমান অনুসারে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ১৬০ মিলিয়ন শিশু শিশুশ্রমে নিযুক্ত রয়েছে, যার মধ্যে ৭৯ মিলিয়ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়িত।

বিশ্ব শিশু শ্রম বিরোধী দিবস : তাৎপর্য—

শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে বিশ্ব দিবসটি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্যে কাজ করে। প্রথমত, এটি শিশুশ্রমের বিশ্বব্যাপী ব্যাপকতার উপর আলোকপাত করে, সরকার, সুশীল সমাজ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে উত্সাহিত করে। এটি শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য, সর্বোত্তম অনুশীলনগুলি ভাগ করে নেওয়ার এবং অংশীদারিত্ব গঠনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে কাজ করে।
এই দিনটি শিশুদের সুরক্ষার জন্য শক্তিশালী আইনি কাঠামো এবং প্রয়োগকারী ব্যবস্থার পক্ষে সমর্থন করার একটি সুযোগ। এটি মানসম্পন্ন শিক্ষা এবং সামাজিক পরিষেবাগুলিতে উন্নত অ্যাক্সেসের আহ্বান জানায়, কারণ শিশু শ্রম প্রতিরোধ ও নির্মূল করার জন্য শিক্ষা একটি মূল কারণ। অধিকন্তু, এটি শিশুশ্রমের মূল কারণগুলি যেমন দারিদ্র্য, সামাজিক বৈষম্য, এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগের অভাব মোকাবেলার গুরুত্বের উপর জোর দেয়।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

জানুন , সেবা করার সময় মন অন্য দিকে যাওয়ায় ভক্ত কি শাস্তি দিলেন নিজেকে।।।।

একদিন অভিরাম ঠাকুর পথ দিয়ে যাচ্ছেন। সেসময় কৃষ্ণদাস নামক এক ভক্ত এসে তাঁর চরণে পড়লেন। ইতিপূর্বে লোকমুখে অভিরামের গুণের কথা অনেক শুনেছেন কৃষ্ণদাস। অন্তরে বড় সাধ অভিরামের চরণেই আত্মনিবেদন করবেন, দীক্ষা নেবেন তাঁর থেকে। আর আজ যখন জানলেন , পথ দিয়ে সুদীর্ঘঅভিরাম ঠাকুর হেঁটে যাচ্ছেন, তখন আর এক মূহুর্তও বিলম্ব করতে রাজী নন কৃষ্ণদাস।

পথের মধ্যেই তাই অভিরামের পদে পড়ে নিজের বাসনার কথা ব্যক্ত করলেন। অভিরামও প্রসন্ন হলেন আগুন্তুকের আগ্রহ দেখে।
নির্দিষ্ট দিনে কৃষ্ণদাসকে দীক্ষা দিলেন অভিরাম। কৃষ্ণদাসকে সকলে ‘বাঙ্গাল কৃষ্ণদাস’ বলে সম্বোধন করত। কারণ, তিনি বাঙ্গাল দেশবাসী অর্থাৎ বঙ্গদেশবাসী ছিলেন। কিন্তু, অভিরাম তাঁকে আদেশ দিলেন শ্বোঙালুতে গিয়ে গোপীনাথ বিগ্রহ স্থাপন করে সেবাকার্য শুরু করতে। হাওড়া-তারকেশ্বর রেলপথে তারকেশ্বর নেমে বাসে চৌতারা হয়ে শ্বোঙালু যাওয়া যায়।
শ্রীগুরুদেবের আজ্ঞা পেয়ে প্রফুল্লিত হলেন শিষ্য। তিনি বললেন, “বাবা, আপনিই কৃপা করে শ্বোঙালুতে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে দিন । সেই বিগ্রহ তখন আমি সেবা করবো।” শিষ্যের বিনয়বচনে অভিরাম প্রীত হলেন। রাজী হয়ে তিনি কৃষ্ণদাসকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে গেলেন। গ্রামবাসীরা সকল প্রয়োজন মেটালেন। মহামহোৎসবের মধ্য দিয়ে গোপীনাথ বিগ্রহ স্থাপন করে দিলেন ঠাকুর অভিরাম।
বৈষ্ণবের বেশভূষা ধারণ করে, দ্বাদশ অঙ্গে তিলকসেবা করে অপূর্ব দর্শন হয়ে কৃষ্ণদাস অনুরাগসহ নিষ্ঠাভরে গোপীনাথের সেবা করেন। সেবা ভিন্ন তিনি অপর কিছু জানেন না, জানতেও চান না। সদা সাত্ত্বিক মনোভাব তাঁর।
একদিন গোপীনাথের আরতি করছেন, এমন সময়ে এক নারী এসে আরতি দর্শন করতে তাঁর পাশে দাঁড়ালেন। সে নারীর প্রতি দৃষ্টি পড়লো কৃষ্ণদাসের। তিনি মনে মনে ভাবলেন, ‘এ কেমন বিচার আমার মনের। সেবা ছেড়ে আমার চোখ অন্যদিকে পড়লো ! রতির চাঞ্চল্য হল ! তবে তো আমার দেহ শুদ্ধ নয়, তাই জন্যেই রতিও শুদ্ধ নয়। একারণেই সেবা থেকে মন সরে নারীর প্রতি গেছে। সেবার থেকেও বড় করে মন কিছু চায় নিশ্চয়। বেশ এ চোখের ক্ষিদে আমি মেটাবো। দুষ্ট গোরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভাল। তাই , ওই চোখের ব্যবস্থা আমি করছি !
আরতি শেষে নারী চলে গেলেন। কৃষ্ণদাসও তাঁর পিছু পিছু গেলেন। নারী যে গৃহে প্রবেশ করলেন, কৃষ্ণদাসও সে গৃহে ঢুকলেন। অন্যান্য যাঁরা ছিলেন সেই গৃহে তাঁরা অত্যন্ত আনন্দ পেলেন কৃষ্ণদাসকে দেখে। মহাসমাদর করে আসন পেতে বসতে দিলেন। কৃষ্ণদাস বললেন, সেই নারীর সঙ্গে তাঁর কিছু প্রয়োজন আছে। তিনি নির্জনে তাই কথা বলতে চান। নির্জন গৃহে সেই নারীকে কৃষ্ণদাস বললেন, নগ্ন হয়ে দাঁড়াতে। নারী ভীতা হলেন। কৃষ্ণদাস বললেন, “ভয় পাওয়ার কারণ নেই। আমি কেবল দূর থেকে তোমায় দেখব। তোমার কোন ক্ষতি হবে না নিশ্চিন্তে থাকো।” পূজারী কৃষ্ণদাসের আশ্বস্ত বাক্যে নারী মনে বল পেলেন এবং বিবস্ত্র হয়ে দাঁড়ালেন। নারীকে নিরীক্ষণ করলেন কৃষ্ণদাস দূর থেকে। তারপর গৃহে ফিরে গেলেন আর করলেন এক অবিশ্বাস্য কাণ্ড।
গৃহে ফিরেই লৌহ শলাকা গেঁথে দিয়ে নিজের চোখ দুটি নষ্ট করে ফেললেন কৃষ্ণদাস। অন্ধ হয়ে গেলেন স্বেচ্ছায় বরাবরের মত। যে চোখ এমন দুষ্টতা করে তিনি তাকে চিরকালের মত শেষ করে দিলেন, যাতে আর কোনদিনও অনাচার না করতে পারে। গোপীনাথের সেবা ছেড়ে যে চোখ অন্য কিছু চায় তাকে এমনই শাস্তি দেওয়া উচিৎ ইচ্ছাপূরণ করানোর পর।
এদিকে ভক্ত দুঃখে সদা দুঃখী হন যিনি, সেই ভক্তবৎসল প্রভু গোপীনাথ তো আর স্থির থাকতে পারলেন না নিজ ভক্তের অমন করুণ অবস্থা দেখে। তিনি বাঙ্ময় হলেন। বললেন, “ওহে কৃষ্ণদাস, এ তুমি কী অঘটন ঘটালে আজ! কেন তুমি অন্ধ হতে গেলে? এমন দুর্দশাকে কেন আপন করলে? এখন এই অন্ধ অবস্থায় আমার পরিচর্যা কেমন ভাবে করবে! তোমার দেখাশোনা, তোমার সেবা করার জন্যই তো এখন লোকের দরকার হবে ! কী ছেলেমানুষি কাণ্ড করলে !”
স্বয়ং গোপীনাথ কথা বলেছেন ! গোপীনাথ তাঁর দুর্দশায় দুঃখী হয়েছেন—- এ কথা ভেবেই মহানন্দের প্রাবল্যে কৃষ্ণদাস মূর্ছিত হয়ে গেলেন। ওদিকে, অভিরাম জানতে পারলেন অনুভব করতে পারলেন নিজ শিষ্যের অঘটনের কথা। তিনি চলে এলেন শ্বোঙালুতে। তিনি কোলে তুলে নিলেন কৃষ্ণদাসের মাথা। গভীর স্নেহে বললেন, “কৃষ্ণদাস এমন কাণ্ড কেন ঘটালে? নিজের হাতে নিজের নয়ন নষ্ট করে ফেললে !”
তখন কৃষ্ণদাস বললেন সব ঘটনা। কি ভাবে গোপীনাথের সেবা দেবেন এই চিন্তায় তখন সে দিশাহারা। অভিরাম বললেন, “চিন্তা করো না, আমি বলে রাখলাম সেবার সময় তুমি গোপীনাথকে দর্শন করতে পারবে। তোমার হাতে গোপীনাথের শৃঙ্গার তিলক সজ্জা সব সুচারু রূপেই হবে। তুমি তাঁর নবঘন শ্যাম বদন দেখতে পাবে মানসে। তুমি এমন সুনিপুণ হবে সেবায় যে, সকলে তোমার যশগান গাইবে। পিতা যেমন পুত্রের দোষ দেখে না, গোপীনাথও তেমন তোমার কোন ত্রুটি নেবেন না, নিশ্চিন্তে থাকো।”
সত্যই গোপীনাথ প্রকট হতেন কৃষ্ণদাসের সামনে। আর অন্ধ হয়েও কৃষ্ণদাস সুচারু সেবা দিতেন। এরপর একদিন, নিজের অন্ধ ভক্তের কষ্ট দেখে অভিরাম তাঁকে বললেন, “শোনো কৃষ্ণদাস, তোমাকে আর বৈধীভক্তি পালন করতে হবে না। তুমি এবার থেকে পঞ্চভাব যুক্ত হয়ে রাগানুগা পথে প্রেমসেবা দেবে। এই আমার আদেশ। মানসে সেবা করবে, সাক্ষাৎ-এ নয়। বুঝেছো তো ! কৃষ্ণদাস নতমস্তকে আজ্ঞা মেনে নিলেন।
বিনম্র প্রণতি জানাই এমন সেবানিষ্ঠ, সেবাপ্রাণ ভক্ত বাঙ্গাল কৃষ্ণদাস কে।

-———-ভক্তকৃপা ভিখারিণী
রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক
____________

Share This
Categories
প্রবন্ধ রিভিউ

আজ ১২ জুন, ইতিহাসের দিকে চোখ বুলিয়ে দেখে নেব ইতিহাসের এই দিনে বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু, দিনসহ ঘটে যাওয়া ঘটনা।।।।

আজ ১২ জুন। এক নজরে দেখে নিই ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনদের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
দিবস—–
(ক) শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে বিশ্ব দিবস।

আজ যাদের জন্মদিন—-

১৮৬০ – স্যার আশুতোষ চৌধুরী, বাংলার যশস্বী আইনজীবী, শিক্ষব্রতী।  .
১৮৬১ – উইলিয়াম অ্যাটওয়েল, ইংরেজ সাবেক ক্রিকেটার।

১৮৭১ – হেমচন্দ্র কানুনগো, বাঙালি, ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী।
১৮৭৩ – লুসিলা গামেরো ডে মেডিনা, হন্ডুরীয় ঔপন্যাসিক।

১৮৮৩ – রবার্ট লোভি, অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নৃবিজ্ঞানী।
১৯২২ – মারগেরিতা হ্যাক, ইতালিয় জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী এবং জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখিকা।

১৯২৪ – জর্জ এইচ. ডব্লিউ. বুশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪১তম রাষ্ট্রপতি।
১৯২৯ – আন ফ্রাংক, জার্মান নাৎসি বাহিনীর হাতে নিহত ও দ্য ডায়েরি অফ আ ইয়াং গার্লখ্যাত কিশোরী।

১৯২৯ – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাজি বর্বরতার শিকার দিনলিপি লেখিকা আনা ফ্রাংকের জন্ম।

১৯৩৫ – ইয়ান ক্রেগ, অস্ট্রেলীয় সাবেক ক্রিকেটার।
১৯৩৯ – জিওফ গ্রিফিন, দক্ষিণ আফ্রিকান সাবেক ক্রিকেটার।
১৯৫৬ – টেরি অল্ডারম্যান, অস্ট্রেলীয় সাবেক ক্রিকেটার।

১৯৫৭ – জাভেদ মিয়াঁদাদ, পাকিস্তানি সাবেক ক্রিকেটার।
১৯৫৯ – জালালউদ্দিন, পাকিস্তানি সাবেক ক্রিকেটার।
১৯৬১ – রড ল্যাথাম, নিউজিল্যান্ডীয় সাবেক ক্রিকেটার।
১৯৬৪ – আমেরিকান অভিনেত্রী পাওলা মার্শাল এর জন্ম।
১৯৭৬ – রে প্রাইস, জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার।
১৯৭৯ – দিয়েগো মিলিতো, আর্জেন্টিনীয় সাবেক ফুটবলার।
১৯৮৪ – ক্রিস আমিনি, পাপুয়া নিউগিনির ক্রিকেটার।
১৯৮৮ – তানভীর আফজাল, হংকংয়ের ক্রিকেটার।
১৯৯২ – ফিলিপি কৌতিনিউ, ব্রাজিলীয় ফুটবলার।

ইতিহাসের পাতায় আজকের দিনের ঘটনাবলী—-

১৮৯৮ – ফিলিপাইন স্বাধীন হয়।
১৯৪৪ – বিশ্বের প্রথম ধরনের ভি-১ ক্ষেপণাস্ত্র আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়।
১৯৬৪ – রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে সাতজন সংগ্রামীসহ দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তি আন্দোলনের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
১৯৭৬ – উরুগুয়েতে সামরিক অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্ট জুয়ান বর্দাবেরি ক্ষমতাচ্যুত
১৯৭৮ – বাংলাদেশে প্রেসিডেন্ট পদে জিয়াউর রহমানের শপথগ্রহণ
১৯৮২ – পারমাণবিক অস্ত্রের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কের হাজার হাজার লোক রাস্তায় বের হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
১৯৯০ – বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সংবিধানের দশম সংশোধনী গৃহীত হয়।
১৯৯১ – বেআইনি অস্ত্র রাখার দায়ে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।
১৯৯১ – রাশিয়া ফেডারেশনের প্রথম সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৯১ – বরিস ইয়েলেৎসিন রাশিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
১৯৯৩ – কম্বোডিয়া বিভক্ত হয়ে আলাদা রাষ্ট্র সাম্বেডিয়ার জন্ম।
১৯৯৬ – বাংলাদেশের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৯৬ – বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমা অপহৃত হন।
১৯৯৮ – পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর অপরাধে পাকিস্তান ও ভারতকে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর ঋণদানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
২০০২ – আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থার (আইএলও) উদ্যোগে প্রথম বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসটি পালিত হয়।

এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন যারা—-

১৮৯৭ – ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি কবি।

১৯০৪ – যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ, ভারতের বাঙালি সংস্কৃত পণ্ডিত, চিন্তাবিদ ও সাংবাদিক।
১৯১২ – ফ্রেদেরিক পাসি, ফরাসি অর্থনীতিবিদ এবং শান্তিকর্মী।
১৯১৪ – প্রখ্যাত সমাজসেবী, দানবীর ও ঔষধ ব্যবসায়ী বটকৃষ্ণ পাল।
১৯৭২ – প্রগতিবাদী মারাঠী সাহিত্যিক ডি.ডি তেন্ডুলকার।
১৯৮৩ – নর্মা শিয়েরার, কানাডীয়-মার্কিন অভিনেত্রী।

১৯৮৬ – অমিয় চক্রবর্তী, ভারতীয় বাঙালি কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, গীতিকার এবং সুরকার।

১৯৯৩ – (ক)  হাসিরাশি দেবী, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও লেখিকা।

(খ) বিনয়রঞ্জন সেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থায় প্রথম ভারতীয় বাঙালি পরিচালন অধিকর্তা।
২০০৩ – গ্রেগরি পেক, মার্কিন অভিনেতা।
২০০৩ – রোমেনা আফাজ, বাংলাদেশী ঔপন্যাসিক।
২০১২ – এলিনর অস্ট্রম, মার্কিন অর্থনীতিবিদ।
২০১৪ – শক্তিপদ রাজগুরু, একজন ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক।
২০১৭ – চার্লস পি. থ্যাকার, মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী।
২০১৯ – সিলভিয়া মাইলস, মার্কিন অভিনেত্রী।

।।তথ্য : সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে, বাঙালি লেখক, শিক্ষাব্রতী ও সাংসদ – প্রমথনাথ বিশী।।।।

প্রথমিক জীবণ:- লেখক, শিক্ষাবিদ ও অধ্যাপক প্রমথনাথ বিশী ১৯০১ খ্রীষ্টাব্দের ১১ই জুন নাটোর জেলার জোয়াড়ি গ্রামে জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা নলিনীনাথ বিশী ও মাতা সরোজবাসিনী দেবী, স্ত্রী সুরুচি দেবী। তিনি ১৯৬২-৬৮ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ছিলেন এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন।

শিক্ষা জীবন—

১৯১০ সালে, তিনি শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মবিদ্যালয়ে শিক্ষা শুরু করেন। সেখানে তিনি রবীন্দ্রনাথকে একজন অভিভাবক, শিক্ষক ও প্রেরণাদাতা হিসেবে পেয়েছিলেন। সেখানে তিনি সতের বছর পড়াশোনা করেন। ১৯২৯ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক হন। রবীন্দ্রনাথ তার প্রতিভা, প্রখর বুদ্ধি, অধ্যয়ন, কাব্যিক প্রতিভা ইত্যাদির প্রতি ভালোবাসা পেয়েছিলেন। পরে, প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসাবে, তিনি ১৯৩১ সালে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হিসাবে বাংলায় এমএ পাস করেন।

সাহিত্যকীর্তি—

তাঁর প্রথম উপন্যাস “দেশের শত্রু”(১৯২৪ সালে)। শান্তিনিকেতনের ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি প্রথম উপন্যাস লিখেন । এরপর পদ্মা (১৯৩৫), জোড়াদিঘীর চৌধুরী পরিবার (১৯৩৮), কেশবতী (১৯৪১), নীলমণির স্বর্গ (১৯৫৪), সিন্ধুদেশের প্রহরী (১৯৫৫) উপন্যাসগুলো রচনা করেন। তবে তার শ্রেষ্ঠ উপন্যাস “কেরী সাহেবের মুন্সি” (১৯৫৮)। এই উপন্যাসের জন্য তিনি ১৯৬০ সালে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। তার আরেকটি বিখ্যাত উপন্যাস “লাল কেল্লা” (১৯৬৩)। এছাড়া তিনি একজন ছোটগল্পকার ও নাট্যকারও ছিলেন।

পূর্ণাঙ্গ নাটক–

ঋণং কৃত্যা, ঘৃতং পিবেৎ (সানিভিলা), ডিনামাইট, সাবিত্রীর স্বয়ম্বর, দক্ষিণপাড়ার মেয়েরা, মৌচাকে ঢিল, গভর্মেন্ট-ইন্সপেক্টর (নিকোলাই গোগোল রচিত একই নামের একটি নাটকের অনুবাদ), পারমিট, ভূতপূর্ব স্বামী, হিন্দী উইদাউট টিয়ার্স, জাতীয় উন্মাদাশ্রম।

একাঙ্ক নাটক–

পশ্চাতের আমি, পরিহাস-বিজল্পিতম্, বেনিফিট অব ডাউট, কে লিখিল মেঘনাদবধ কাব্য।

অসম্পূর্ণ নাটক– স্বর্গ, আফিঙের ফুল।

সম্মাননা—

রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ (১৯৬০ সালে কেরী সাহেবের মুন্সী উপন্যাসের জন্য), বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮২) ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত জগত্তারিণী স্বর্ণপদকও (১৯৮৩)।

মৃত্যু–

প্রমথনাথ বিশী ১০মে, ১৯৮৫ সালে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে, ভারতে বিপ্লবী প্রতিষ্ঠান সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি – প্রমথনাথ মিত্র ।।।।

ভূমিকা:- প্রমথনাথ মিত্র ভারতে বিপ্লবী প্রতিষ্ঠান সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ব্যারিস্টার পি মিত্র নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। প্রমথনাথ মিত্র ছিলেন একজন বাঙালি ভারতীয় ব্যারিস্টার এবং ভারতীয় জাতীয়তাবাদী যিনি ভারতীয় বিপ্লবী সংগঠন অনুশীলন সমিতির প্রথম দিকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন-

প্রমথনাথ মিত্র ১৮৫৩ সালের ৩০ অক্টোবর বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার নৈহাটিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম বিপ্রদাস।
প্রমথনাথ মিত্র একজন সুপরিচিত ব্যারিস্টার ছিলেন যিনি কলকাতা হাইকোর্টে অনুশীলন করতেন এবং ফৌজদারি আইনের ক্ষেত্রে তার চিহ্ন তৈরি করেছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলার নতুন জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা। মিত্র পড়াশোনা করতে ইংল্যান্ডে যান, ১৮৭৫ সালে দেশে ফিরে আসেন।

বিপ্লবী জীবন–

ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করবার সময়ে তিনি আয়ারল্যান্ড এবং রাশিয়ার বিপ্লবীদের কথা জানতে পারেন এবং দেশে ফিরে বিপ্লবী দল গঠনের সংকল্প করেন। বিংশ শতকের প্রথম দিকে যে সব গুপ্ত সমিতি দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তিনি তাদের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করতেন। ১৯০২ সালের প্রথম দিকে সতীশ চন্দ্র বসু মিত্রের কাছে প্রস্তাব নিয়ে আসেন। সতীশ নিবেদিতার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে একটি শারীরিক সংস্কৃতি গোষ্ঠী শুরু করেছিলেন, যেটিকে বলা হয়েছিল, বঙ্কিম চন্দ্র চ্যাটার্জি, অনুশীলন সমিতি বা সাংস্কৃতিক সোসাইটির একটি বইয়ের পরে। বন্ধুরা তাকে বলেছিল যে মিত্র হয়তো সংগঠনের পিছনে তার ওজন রাখতে ইচ্ছুক। সতীশ ফোন করে সমিতির প্রধান হওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করলে ব্যারিস্টার খুশি হন। ২৪ মার্চ ১৯০২ সালে, তিনি সতীশ চন্দ্র বসু কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ভারত অনুশীলন সমিতির পরিচালক নির্বাচিত হন এবং এর আর্থিক দায়িত্বও গ্রহণ করেন। সেই সময়ে যতীন ব্যানার্জী কলকাতায় তাঁর জিমনেসিয়াম স্থাপন করছিলেন। শ্রী অরবিন্দ তাঁকে সরলা দেবীর পরিচয়পত্র দিয়েছিলেন। যতীন তার সাথে দেখা করেন, প্রমথনাথ মিত্র এবং অন্যান্য শারীরিক সংস্কৃতিতে আগ্রহী। মিত্র যতীন ও সতীশকে বাহিনীতে যোগদানের পরামর্শ দেন। দুজনে একমত হন এবং ১৯০২ সালের মার্চ মাসে একটি নতুন, সম্প্রসারিত অনুশীলন সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯০৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, শ্রী অরবিন্দ প্রমথনাথ মিত্রের সাথে আলোচনা করেছিলেন, যাকে তিনি গোপন সমাজে সূচনা করেছিলেন। দু’জন সামগ্রিক পদ্ধতির বিষয়ে একমত হন: প্রদেশ জুড়ে সমিতি প্রতিষ্ঠা করা, শারীরিক সংস্কৃতিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং, যখন সঠিক সময় ছিল, বিপ্লবী ধারণাগুলি প্রবর্তন করা।১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নিখিল বঙ্গ বৈপ্লবিক সমিতির এবং কলকাতায় সুবোধ মল্লিকের বাড়িতে অনুষ্ঠিত নিখিল বঙ্গ বিপ্লবী সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন। তিনি বাঙালিদের শারীরিক ব্যায়ামের উপর গুরুত্ব দিতেন।

শিক্ষকতা, অনুপ্রেরণা ও লেখালেখি-

হাইকোর্টে ব্যারিস্টার হিসেবে প্র্যাকটিস করার পাশাপাশি মিত্র রিপন কলেজে শিক্ষকতা করতেন। তিনি ভাল বক্তা এবং ইংরেজি লেখায় দক্ষ ছিলেন । প্রমথনাথ যোগী বিজয় গোস্বামীর শিষ্য ছিলেন এবং স্বামী বিবেকানন্দের দ্বারাও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত ছিলেন। মিত্রের লেখার মধ্যে রয়েছে একটি উপন্যাস -যোগী; গ্রন্থ : তর্কতত্ত্ব, জাতি ও ধর্ম এবং ভারতের বৌদ্ধিক অগ্রগতির ইতিহাস।

প্রয়াণ–

২৩ সেপ্টেম্বর ১৯১০ এই মহান সংগ্রামী নেতার প্রয়াণ ঘটে।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This
Categories
প্রবন্ধ

স্মরণে সীমান্ত গান্ধী নামে পরিচিত খান আবদুল গাফফার খান।।।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল কিছু মানুষের কঠোর পরিশ্রম ও লড়াই, যার ফলেই ব্রিটিশদের থেকে ভারত সৃঙ্খল মুক্ত হতে পেরেছভাপেরেছিল। ভারত উপমহাদেশের বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ বিরোধী যে সশস্ত্র বিপ্লববাদী লড়াই-সংগ্রাম সংগঠিত হয় এবং যার ধারাবাহিকতায় ভারত স্বাধীন হয়, তার মূলে যে সকল বিপ্লবীর নাম সর্বজন স্বীকৃত তাঁদের মধ্যে আব্দুল গাফফার খান  ছিলেন একজন অন্যতম বীর ও নির্ভীক বিপ্লবী। আব্দুল গাফফার খান ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে এক উল্লেখযোগ্য নাম, যিনি দেশমতৃকার শৃঙ্খল মুক্তির জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন সম্পূর্ণ রূপে।
আব্দুল গাফফার খান  (৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৯০ – ২০ জানুয়ারি ১৯৮৮) ভারতে ব্রিটিশ শাসনে তার অহিংসের জন্য একজন পশতুন বংশোদ্ভূত ভারতীয় রাজনৈতিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

তৎকালীন ভারতের উত্তর- পশ্চিম সীমান্তে বিশৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রোধে মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতি প্রচার ও ধারণ করার জন্য তাকে সীমান্ত গান্ধী উপাধী দেয়া হয় বলে ধারণা করা হয়। এছাড়াও তিনি সর্বদাই মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতির একজন একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা——-
১৯৬৭ সালে ‘নেহেরু পুরস্কার’ এবং ১৯৮৭ সালে ভারতরত্ন পুরস্কারে সম্মানিত হন আব্দুল গাফফার খান। ‘ভারতরত্ন’ পুরস্কার প্রাপক প্রথম অ-ভারতীয় ব্যক্তি ছিলেন তিনি।

।। তথ্য : সংগৃহীত উইকিপিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট।।

Share This